সালটা মনে হয় দু'হাজার আট। সেও এক সময় ছিল বটে। তখন আশেপাশে লেখালিখির দিক থেকে হোক না হোক, নেশাভাঙের দিক থেকে সবাই মোটামুটি হাংরি। তো, এরকমই কোনও এক হাঙ্গারপূর্ণ সন্ধ্যার শেষে কলেজ স্ট্রীট হতে আমি বাড়ি ফিরছিলেম। আমার সাথে আমার বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল এক বন্ধুর, তার শিয়ালদা স্টেশনে অপেক্ষা করার কথা। এদিকে কলেজ স্ট্রীটে যে ব্যক্তির সাথে আমি হাংরিগিরি করে বেড়াচ্ছিলেম তিনি প্রচুর মদ, খান পাঁচেক রুটি এবং প্লেটদুয়েক গরু খেয়ে হঠাৎই আমার প্রেমিকা হয়ে গেলেন। আমি বাড়ি চলে যাচ্ছি শুনে কাতর গলায় বললেন, "তুই তো আমায় তোর বাড়ি নিয়ে গেলি না একদিনও? কাকু-কাকীমার সাথে করালি না তো পরিচয়?" আমি বললেম, "যাবে তো চলো। নাটক করছো কেন?" তাতে তাঁর বদনটি দৃশ্যতই বেশ উজ্জ্বল হইয়া উঠিলো। তিনি বলিলেন, "বেশ। তাহলে শিয়ালদা থেকে আবার বাংলা তোলা যাবে!" তারপর মোটামুটি ঘন্টাতিনেক বাদে আমরা তিনজন মিলে দাঁড়িয়েছিলেম আমাদের ব্যান্ডেলের ফ্ল্যাটের দরজার সামনে। অথবা হয়তো দাঁড়িয়ে ছিলেম না আসলে, দাঁড়িয়ে থাকার অভিনয় করছিলেম। কারণ ফেরা হয়েছিল ভেন্ডরে চেপে। আর রাত্তিরের ভেন্ডরে তখন কী চলতো সেটা পন্ডিতমানুষ মাত্রেই জানেন, সেসবের মধ্যে আর ঢুকছি না, প্রোলেতারিয়েতের প্যারাডাইস প্রায়!
যাই হোক, বাড়ি এসে দেখা গেলো একখানা সমস্যা হয়েছে। বাড়িতে ডিম শেষ। এবং সেটা সমস্যা এইজন্য যে, মা জানতো আমরা দু'জন ফিরবো, অথচ ফিরেছি তিনজন। অচেনা লোকটা আবার বয়সে বড়, প্রথমবার এসেছে, কাজেই তাকে ডিম না দেওয়াটা ভালো দেখাবে না। তো, এই সমস্যার কথা মা আমাকে রান্নাঘরে আলাদা করে ডেকে বললে। কিন্তু এর মধ্যে আমি কোনও সমস্যাই দেখতে পেলেম না।
মা বললো, "সমস্যা নয়? তিনটে লোক, আর দুটো অমলেট!"
আমি বললেম, "আহা, তাতে কী হয়েছে?"
মা বললো, "খাবে কী করে?"
আমি বললেম, "আহা, খেতে পারবে না কেন?"
মা বললো, "লোক তিনজন। ডিম দুটো।"
আমি আবারও বললেম, "আহা, তাতে সমস্যা কোথায়?"
মা বললো, "ধ্যাত্তেরি! দুটো ডিমভাজা কখনও সমান তিনভাগে ভাগ করা যায়?"
আমি বললেম, "কেন? কী হয়েছে?"
মা বললো, "আরে, মিলবে না তো!"
আমি বললেম, "কেন? লোক ক'জন?"
মা বললো, "তিন জন।"
আমি বললেম, "আর ডিম ক'টা?"
মা বললে, "দু'টো।"
আমি বললেম, "এ আর এমন কী কথা! দেড়জন দেড়জন করে ভাগ করে দিলেই হলো!"
বলাবাহুল্য, আমি ডিমের বদলে লোকগুলোকেই ভাগ করে দেবো শুনে মা সেই রাত্রে আর কথা বাড়ানোর সাহস দেখায়নি। কিন্তু ব্যাপারটা সেটা না। ব্যাপারটা হলো, এই ঘটনার মধ্যে কিন্তু প্রবল জ্ঞানের ইসে লোকানো আছে যা আমি সেদিন বুঝতে পারিনি। পাক্কা বারো বছর লেগে গেলো ব্যাপারটা বুঝতে। এইজন্যেই মহাগুরু উগওয়ে বলেছিলেন, কোনওকিছুই অ্যাক্সিডেন্ট নয়। কেবল ওই কন্ট্রোলে থাকার ইল্যুশনটার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তাহলেই মহাজগতের এনার্জিরে হারনেস করা যাইবেক। আজ বুঝি, হাফহার্টেডভাবে কোনওকিছু করার চাইতে নিজেরেই হাফ করে দেওয়া ভালো। তাতে দুটো আলাদা লোক পাওয়া যাবে। একজন কাজটা করবে, আরেকজন করবে না। আর এই ভাগাভাগির পর যে ভাগশেষ পড়ে থাকবে সেই হলো গিয়ে সাক্ষী। এই যেমন অনমিত্র আর বাঙালীন্দ্রনাথ দু'জন দু'দিকে ছিটকে বেরিয়ে যাওয়ার পর আমি বসে বসে লীলা দেখছি। ধরা যাক, আমার নাম কমরেড *বিপ* এবং আমি এই দু'জনেরই কমরেড, দ্য আল্টিমেট নন-জাজমেন্টাল বিয়িং। আর এই যে তিন-তিনটে লোকের বাস একই শরীরে এইজন্যই শরীরেরই অপর নাম মহাজগত।
একদিন সব সমস্যা মিটে যাবে, নিশ্চয়ই মিটে যাবে। চোখে তুলসীপাতা রেখে নামের আগে ঈশ্বর বসিয়ে দেবো সেদিন। যে যার নিজের প্রপার্টি বুঝে নিস তারপর!
যাঁরা খেরোর খাতায় নতুন লেখালিখি করছেন, গুরুচণ্ডা৯-র টেকনিকাল ফীচারগুলো তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা করার জন্য আগামী শনিবার ভারতীয় সময় রাত ৮-১০টা আমরা একটা ওয়েবিনার করছি গুগল মীট-এ। ইচ্ছে আছে আগামী কয়েক সপ্তাহ জুড়ে প্রতি শনিবার ঐ নির্দিষ্ট সময়ে ওয়েবিনার করার। আপনাদের কী কী অসুবিধে হচ্ছে লিখতে বা একটা সামাজিক মাধ্যম হিসেবে গুরুচণ্ডালির পূর্ণ স্দ্ব্যবহার করতে, সেটাও আমরা নোট করব, যাতে এটাকে আরও উন্নত করা যায়, প্রযুক্তিগতভাবে। সম্ভব হলে থাকবেন। শনিবার রাত আটটায় নিচের লিংকে ক্লিক করেই মীটিং এ জয়েন করা যাবে।
আজ্ঞে! তা আমি সেরম কেউ নই। তবু সুযোগ পেলে জুটে যাব না হয়।
যাঁরা খেরোর খাতায় নতুন লেখালিখি করছেন, গুরুচণ্ডা৯-র টেকনিকাল ফীচারগুলো তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা করার জন্য আগামী শনিবার ভারতীয় সময় রাত ৮-১০টা আমরা একটা ওয়েবিনার করছি গুগল মীট-এ। ইচ্ছে আছে আগামী কয়েক সপ্তাহ জুড়ে প্রতি শনিবার ঐ নির্দিষ্ট সময়ে ওয়েবিনার করার। আপনাদের কী কী অসুবিধে হচ্ছে লিখতে বা একটা সামাজিক মাধ্যম হিসেবে গুরুচণ্ডালির পূর্ণ স্দ্ব্যবহার করতে, সেটাও আমরা নোট করব, যাতে এটাকে আরও উন্নত করা যায়, প্রযুক্তিগতভাবে। সম্ভব হলে থাকবেন। শনিবার রাত আটটায় নিচের লিংকে ক্লিক করেই মীটিং এ জয়েন করা যাবে।
বোঝো! গুরুতে গুরুতে কথা হচ্ছে আর মাঝে ফেঁসে রয়েছে কে এক হরিদাস পাল!
@ মানে to প্রতি
এই নতুন ফীচারগুলো সবে লঞ্চ হয়েছে। এখনও নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাবে। কোনোটাই একদম ফাইনাল হয়ে গেছে এরকম না।
hihi গন্ডারের moto 3 দিন por রসিকতা ta বুঝতে পারি হেহে
আসলে কোনো কিছুই অ্যাকসিডেন্ট নয়- এটি বিশ্বাস করলে ভূত-ভবিষ্যতে বিশ্বাস করতে হয়। তাতে আবার অনমিত্র থাকে না। গোলযোগ এইখানে
দুই ডিম বনাম তিন মানুষের সুষম বন্টন বেশ হয়েছে
একটা শরীরের মধ্যে তিনজন লোক থাকা তো হামেশাই হচ্ছে। হরক্রাক্সও অমনি করেই তৈরী হয়। কোভিডের বাজার না হলে অনমিত্রকে একটা হাই ফাইভ দিতাম।
@kk হরক্রাক্সটা একই আত্মা ভাগ ভাগ করে অনেকগুলো বস্তুতে রাখা না?
অরিন,
টেকনিক্যালি তাই। কিন্তু রূপকের পেছনে গিয়ে যদি দেখেন, আমার মনে হয় একজনের সত্ত্বা অনেকগুলো হয়ে ভেঙে যায়। সেগুলো একের থেকে অন্যটা এত আলাদা যে অ্যাজ ইফ অন্য অন্য জিনিষের মধ্যে রাখা হয়েছে। আমার পার্সোনাল মনে হওয়া অবশ্য। কল্পনাশক্তি, বোঝার ওয়ে, পার্সপেক্টিভ সবার আলাদা তো?
ধুত, অনমিত্র; অরিন না !! ,
হুম। কে যেন একবার বলেছিল, দ্রৌপদী আসলে পাঁচজন নারী আর পান্ডব একটাই লোক। হতেই পারে। কতকিছুই তো হয় মহাবিশ্বে। আমরা তার কতটুকুই বা বুঝি।