এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • জাতীয় পতাকা নামাতে গিয়ে কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু

    Prasun De লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ১৭ আগস্ট ২০১৬ | ২৫৬৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Prasun De | ১৭ আগস্ট ২০১৬ ১৭:১৩720344
  • ...... না , অমরজিত আমাদের ক্ষমা করো না
    আমি জানি না নাগরিক সমাজের কাছে ঘটনাটার প্রভাব কি হয়েছে বা হবে । একজন সচেতন মানুষ হিসাবে ভীষণভাবে মানসিক কষ্টে আছি । মাত্র পনের বছর বয়সে ত্রিপুরার খোয়াই জেলার , খোয়াই মহকুমার উত্তর রামচন্দ্র ঘাটে , নিজের স্কুলের জাতীয় পতাকা স্বাধীনতা দিবসের দিন সূর্যাস্তের সময় নামাতে গিয়ে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেল অমরজিত শীল । ঘটনাটি সংবাদ পত্রে এবং বেশ কয়েকটা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে খবর হয়েছে । সরকারি পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে এই ঘটনাটার সাথে যুক্ত হতে হয়েছে । ঘটনার আকস্মিকতায় অব্যক্ত এক কষ্টে ভারাক্রান্ত হয়ে গেছি । কি অপরাধ ছিল মেধাবী অমরজিতের --- নিজের স্কুলের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্তৃপক্ষ , ও অন্যান্য শিক্ষক – অশিক্ষক কর্মচারীদের ‘দায়িত্ব’ পালন করবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল অমরজিতকে । অমরজিত জানত কিভাবে আমাদের দেশের জাতীয় পতাকাকে সম্মান জানাতে হয় ।
    উত্তর রামচন্দ্রঘাট হাই স্কুলের নবম শ্রেণীর খুবই ছাত্র ছিল অমরজিত । মা – বাবার একমাত্র সন্তান । বাবা পেশায় একজন ক্ষৌরকার । স্কুলের পাশেই বাড়ি অমরজিতদের । স্বাধীনতা দিবসের দিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুপস্থিত ছিলেন --- কোনও এক বিশেষ কারনে । জাতীয় পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব ছিল অন্য আরেকজন শিক্ষকের ওপর । স্কুলের এমন একটা জায়গায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বেদী তৈরি করা হল ----- কোন সুস্থ , স্বাভাবিক , সাধারন বুদ্ধিতে , ন্যুনতম কান্ডজ্ঞান প্রয়োগ করলে এমন একটা যায়গাকে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের স্থান হিসাবে চিহ্নিত না করারই কথা । কারন বেদীর ওপরে রয়েছে হাই টেনশন বৈদ্যুতিক তার । প্রশ্ন তো অনেক আছে ---- স্কুলের ওপর দিয়ে কিভাবে বৈদ্যুতিক তার নেওয়া হল ? ফিরে যাই আসল ঘটনায় । জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ‘মহান’ কাজটি শেষ করবার পর ওই সংশ্লিষ্ট শিক্ষক মহাশয় বাড়ি চলে গিয়েছিলেন । সূর্যাস্তের সময় জাতীয় পতাকা নামানোর দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন কিশোর অমরজিতের ওপরে । অমরজিত পনেরই আগস্ট বিকেল পাঁচটার সময় স্যারের নির্দেশ পালন করতে স্কুলে যায় । কেউ ছিল না কিশোরটির সাথে । থাকারও তো কথা না , স্কুলে অন্যান্য অশিক্ষক কর্মচারী কর্মরত থাকলেও , জাতীয় পতাকা সম্মান পূর্বক নামানোর দায়িত্ব তো অমরজিতেরই । বাধ্য ছাত্র অমরজিত হাই টেনশন বৈদ্যুতিক তারের নিচে উত্তোলিত জাতীয় পতাকা নামানোর সময় ভারসাম্য রাখতে পারে নি । বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেল অমরজিত । অকালেই ঝরে গেল একটি সম্ভাবনাময় কিশোর প্রান । ঘটনার কাঁটা ছেঁড়ায় এলাকাবাসী একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন উত্তর রামচন্দ্র ঘাট হাই স্কুলের কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে । কে দায়ী এই মৃত্যুর জন্য ? কোনও ধরনের রাখ ঢাক না রেখেই বলতে বাধ্য হচ্ছি স্কুল কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত খামখেয়ালিপনা , অপরিণামদর্শিতা এবং কান্ডজ্ঞানহীনতার জন্যই অকালে ঝরে গেল অমরজিত । কোনও ভাষা ছিল না আমার সন্তান হারা মা – বাবা কে স্বান্তনা দেবার । রঞ্জিত বাবু , অমরজিতের বাবা আজকে আমাদের অফিসে এসেছিলেন দেখা করতে ----- বিধ্বস্ত , বিপর্যস্ত রঞ্জিত বাবু কথা বলতে পারছিলেন না --- শুধু বললেন , ‘ স্যার , দেখবেন আর কোন মা – বাবা কে যেন এইরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না হয় । যাদের কান্ডজ্ঞানহীনতায় আমরা সন্তান হারা হলাম , সরকার যাতে তাদের বিচার করে’ ...... না রঞ্জিত বাবু , আপনার কাছে আমি ক্ষমা চাইতে পারি নি , আপনার কাছে এই মুহূর্তে ক্ষমা চাইবার যোগ্যতাও নেই আমাদের ।
    ঘটনা ঘটে যাবার পরে , প্রায় বাহাত্তর ঘণ্টা অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও ওই স্কুলের কোন শিক্ষক – অশিক্ষক কর্মচারী কেউই নাকি অমরজিতদের বাড়িতে যান নি । ভয় – গ্লানি ? ---- আমি জানি না বিচার ব্যবস্থায় এই মৃত্যুর বিশ্লেষণ কিভাবে হবে ? এও জানা নেই প্রশাসনিক তরফে যাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কান্ডজ্ঞানহীনতার জন্য এই ঘটনা ঘটল , তাদের বিরুদ্ধেই বা কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
    ( নবারুন ভট্টাচার্যের , ‘ এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’ কবিতার কয়েকটা লাইন কেন জানি খুব মনে আসছে -----
    .................................
    .................................
    যে ভাই এখনও নির্ল্লজ্জ স্বাভাবিক হয়ে আছে
    আমি তাকে ঘৃণা করি –
    যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানী
    প্রকাশ্য পথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায় না
    আমি তাকে ঘৃণা করি-- )
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন