এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শঙ্খশুভ্র | 11.187.***.*** | ০১ আগস্ট ২০১৬ ১৭:৩৪716789
  • অটো টা ছাড়বে এবার, ছ জন হয়ে গ্যাছে, চি পিছনে তাকায় একবার "পৌছে একটু ফোন করিস" শব্দগুলো অটোর সাদাটে ধোঁয়াতে, শিয়ালদা বেলেঘাটা লাইনের ঝগড়া ঠেলাঠেলি কিংবা ষাট টাকা কিলো হিমসাগরের বিকিকিনির চক্করে মিলিয়ে যায়। আচ্ছা চি গেলো কোথায় এলোই বা কোথেকে? এখন তো ভোররাত, মাছ এসেছে, কাঠের গুঁড়ো আর বরফ, খড়ের কাদা, ওহ তালে আমার তো ঘুমোনোর কথা, চাদর টেনে পাশ ফিরি? এই না না ছটা বেজে গ্যাছে রে, তিনবার আ্যলার্ম নিভিয়েছি অন্ধকারে চোখ বুঁজে আন্দাজে আঙুল টেনে ডানদিক, না ভুল হলো বাঁদিক, ধুস আমার এই দিক গুলবেই, কেউ বোঝেনা দুটোই আসলে এক, কোনদিকে মুখ সেটা একবার জেনে গেলেই ব্যাস কেল্লা ফতে।
    "আহা আয়নার ঝামেলাটা আছে না? আরে ওইযে দেখিস না সেল্ফি তুলতে গেলে উলটে যায়? দাঁড়া তুলে দ্যাখাই।" বৃষ্টি পড়ছিল, ফোন ব্যাগে, সু একটা চাটালো পাথরে বসে তালা, চেন খোলে। প্রাণের জিনিস বলে কথা কে জানে যত্ন করে কোথায় ঢুকিয়েছে, চাদর জামা জিন্স মুড়ে কারোর তলায় হয়ত। জেরোম ঠিক যেমনটি লিখেছেন বা লিখতে ভুলেছেন একদম সেই সুচি মেনে দাঁতের ব্রাশ, পেস্ট, দেশলাই, দুটো ফাঁকা সোনালি আর সাদা সিগারেটের প্যাক যার ভেতরে একটু ছাই আর পোড়া ফিল্টার এখনো পড়ে আছে, হাওড়া যাদবপুর বাসের কটা টিকিট, মিয়োনো বিস্কুট, চ্যাপটানো সবেদা , জলের বোতোলে রাখা আগের রাতের বেঁচে যাওয়া একটু হোয়াইট রাম, আরো কত্তো কি আমাদের সামনে ছড়িয়ে যায়। কিন্তু ফোনটা তো আর মেলেনা। রাকস্যাক উলটো করে ঝাঁকাই দুজন মিলে, ফাঁকা, কিসসু নেই। খালি পাথরের উপর একটা কি একটা পড়ে আলতো লাফিয়ে ঘাসের আড়ালে গড়িয়ে যায় । আমরা ভেবলে গিয়ে এ ওকে দেখি তারপর নিচের দিকে তাকাই। সু ই প্রথম কালো ছোট্টো লম্বাটে জিনিসটা নিচু হয়ে কুড়িয়ে আনে। কিন্তু দ্যাখে না, একটাও কথা না বলে উলটোদিকের বুনো গোলাপের ঝোপটার দিকে অপলকে কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ওর কি ভয় করছে? আমি শুকনো হেসে হাত বাড়াই, সু দূর থেকেই আনমনে আমায় হাতে জিনিসটা গুঁজে দ্যায়। একটা পুরোনো ফিল্মের কৌটো। কাঁপা আঙুলে ধুসর ছিপিটার প্যাঁচ ঘুড়িয়ে ভিতরে তাকাই দুটো সাদা বড়ি ছাড়া আর কিছুই চোখে পরেনা। "জানিস ঠিক দুটো এরাম বড়ি রাখা ছিল গোল টেবিলটায়। ওহ না, ভুল হল, দুটো না তিনটে লাগত তো, তালে তিনটেই ছিলো, সিওর" সু শুকনো গোলাপের পাপড়ি একটার পর একটা ছিঁড়ে পায়ের কাছে ফেলতে ফেলতে মুখ নিচু করে বিড়বিড় করে। শি লাভস মি, শি লাভস মি নট খেলছে নাকি? কিন্তু শি লাভস হিম। আমি মাথা চুলকোই, হ্যাঁ তিনটে, কিন্তু তিনটেই বা কেন? চার হোলে তো আরো ভালো হোতো, সেভাবে অবশ্য পাঁচ, ছয়, সাত, আট, নয়, না না গুলিয়ে যাবে। আচ্ছা তালে রঙ বদলানো যাক। ওই তো এদিকে লাল, সবুজ, নীল, ওদিকে আকাশী, হলুদ, বেগুনি, আর পড়ে রইলো সাদা, কালো, সবশুদ্ধু আট। ঠিক আটের বেশি হলেই একগাদা ঝামেলা। যদিও আটটা বড়িই বা কি রাজকাজ্জ্যে লাগবে জানি না এলিস তো মাত্র দুটো খুঁজে পেয়েছিল, আর ওই গোলমেলে মাশরুম। এই তালে তো এটা সু না। সু বই টই পড়ে না, আনা ফ্রানকের নাম শুনে তিনদিন হেঁচকি তুলেছিলো, শেষে জল, নাক চেপা, চমকানো, একশো কেত্তোন। ঠিক ঠিক, তালে কি পাশে শ্রী? নাকি চি? ওরাও কি এসেছে?
    যাগগে আমি এগোই, আদ্দেকও আসিনি এতখনে, সন্ধে হয়ে আসছে, নাকি মেঘলা বলে ওরাম লাগছে? ঘড়িটাও সেই খাটের পাশে ঘাড় গুঁজে পড়ে আছে। আস্ত আছে কিনা কে খবর রাখে ওসব। সিঁড়িগুলো হেব্বি উঁচু উঁচু, অব্যেশ নেই তো, ঘেমে নেয়ে হাঁপিয়ে, জিভ বেরিয়ে একশা করছি। বাকিরা বধহয় উঠে গ্যাছে অনেককাল আগে। যোন আমায় হাত ধরে তুলছিলো, পারে ওই রোগা চেহারা নিয়ে? সরু হয়ে যাচ্ছিল বেচারা, কিছু খাওয়ালে হত ওকে। এদিকে জোড়ে হাওয়া দিচ্ছে, ঝোপে রুমাল বেঁধে রাখলে হয়ত একটু সুবিধে হবে ওর। এটা পাহাড় বলেই মনে হয়। আর কি হবে? শঙ্কুর সেই গল্প ছিলোনা? সাহারা মরুভুমির কোথাও একটা জীবনের শেষ পরীক্ষার। অনেক অনেক বড় হতে হতে শেষে ঠিক মাঝরাতে তুমুল বৃষ্টির আদরে পৃথিবী কাঁপিয়ে, ইতিহাস জাগিয়ে শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়া। নাহ ধুস ওসব আবার হয় নাকি? "হয় হয়, ইয়েতি হয়, গন্ডার হয়, ভার্জিনটি কোসেন্ট হয়, ব্ল্যাকহোল হয়, ছাতের দেওয়ালে ভর দিয়ে জমিয়ে আড্ডা হয়! তুই জানবি না, চুমুও হয়, দে একটা সিগারেট দে।" গুড্ডু ঘ্যানঘ্যান করে। "এই হাঁটতে হাঁটতে খেতে নেই।" আমার নিজেরও আসলে ইচ্ছে করছিলো, বড্ড গোলতাল ভাবছি, সাহস হচ্ছেনা, দমে টান পরবে, অক্সিজেন কম। "আরে তুই দে না, কাউন্টার।" গুড্ডু বলেই চলে, একঘেয়ে। "বলছিস? আচ্ছা তালে এখানে বসি, আমার কোথাও যেতেও আর ইচ্ছে হচ্ছে না। বৃষ্টি এসে হরকা বানে ভেসে গেলে বেশ হয়।" আমি লাইটার খুঁজি। "তোর ডিপ্রেশনের ভাই হয়েছে, বলছি শালা প্রেম কর সেরে যাবে! আরে আরে গাধা লাইটারে তেল নেই! মোড়ের মাথায় পেট্রোল পাম্প থেকে ভরে আন যা।" গুড্ডু বিজ্ঞ্যের মত জ্ঞ্যান দায়। আমার এতক্ষনে মনে হয়। গুড্ডু এখানে কেন? ও আমাদের সাথে এলো কি কত্তে? জিজ্ঞেস করলেই খিস্তোবে। যা শালা! আমি তো নাগেরবাজারের মোড়ে বাসস্ট্যান্ডে বসে এতক্ষণ লিট্টি খাচ্ছি। ঠিক, সু মুম্বাই, বী আমেদাবাদ, শ্রী আর মুরগি আসতে পারেনি। ওদিকে চি তো বাড়ি গ্যাছে, আবার ঝামেলা না হয় বেচারার। "এই জন্যই তোকে মাল খেলেই চান করাই বুঝলে সোনা, ভাঁট না বকে যা।" গুড্ডু খেপে যায়। "এই না না, পেট্রোল পাম্প এ আগুন নিয়ে গেলে পুলিস ধরে। বাঁদিকে দ্যাখ টুলু পাম্পটা আছে। আবে সবুজ রঙেরটা" দি এন্ড রাজীব চকের তিন নাম্বার প্লাটফরমে গুঁতোগুঁতি করে মেট্রোতে উঠতে উঠতে বলে যায়। "হ্যাঁ হ্যাঁ, ওই দরজার পাশেই, তাকা।" গোল্ডি অঙ্ক কষতে কষতে মুখ তোলে। "সব ভালো রে, খালি আয়রনটা একটু বেশি। দ্যাখ লালচে, গাড়, খোলা রাখিস না, জমে যাবে, কালচে হয়ে পচে গন্ধ বেরবে। কোল্যাটারাল ড্যামেজ, দুটো টেররিস্ট মারলে পাঁচটা সাধারণ মরবে। সব আমাদের ওদের জন্য হা হা।" গোল্ডি হাসে আর ব্রাশো মাখে, ডেট আছে, করনেটো চাই আর ঝকঝকে দাঁত। "আয়রন কি সিসে নয় রে খাঁটি সোনা।" গোল্ডি চোখ টেপে। "পুরো বুড়ো বাবা, ওহ না আমি তো আজকাল কম খাই, হার্ট রেট বেড়ে যায়, তারপর যদি ট্রেনে মান্থলি না দ্যায়?" গোল্ডি কাঁদে আর একটু একটু করে গলে পড়ে। একটা বালতিতে ধরে রাখি ওকে। ভারি বালতি তুলতে গিয়ে হরকায়, খারাই সিঁড়ি বেয়ে গড়িয়ে যায়। ওই নিচে, ঝরনার পাশে যেখানে হোবো একলা বসে গিটার বাজায়, হয়ত গান ও লেখে। একটু পরই কুয়াশা নামবে, ওর উপর ভেঙে পরবে সাততলার জলের স্রোত। এটুকু আমি জানি, তারপর? "ওরে পাঁঠা চি এগিয়ে গ্যাছে, যা ও একা আছে, ওর সাথে হাঁট, যা ভাগ।" সু ধমকায়, "তখন থেকে মাঝপথে বসে আকাশ দেখছে। এভাবে হয় কিছু?" ঠিক সু ঠিকই বলছে, এভাবে হয়না। কিন্তু চি তো আসবেনা বল্ল? সেই নিয়ে অত ঝগড়া, কান্নাকাটি, সাদা মিথ্যে, কত কি হয়ে গেলো। আমি তো কাউকে কিচ্ছু বলিনি। না এটাতো কলেজ গেটের বাইরে, আরো চার বছর দেরি হয়ে যাবে। আমি পা চালাই। চি চড়াই পেরিয়ে এগোয়, আলতো পায়ে। আমি দৌড়ই।
    সমুদ্রের শব্দ কানে আসে, নাকে নুন আর জলের গন্ধ, পা ভিজে যায়, বালি জড়ায়। জল বারে, গোড়ালি থেকে হাঁটু ছাপিয়ে কোমর, আরো এগোলে বুক ছুঁই। চি তবু এগিয়ে চলে আচ্ছা জলও কি ওকে মোজেসের মত পথ করে দ্যায়? তা সম্ভব, ওর জন্য সব সম্ভব। "আই ক্যান ডু, এনিথিং ফর ইউ"- অঞ্জন দত্ত। গলা, ঠোঁটের তলায় জলের স্বাদ ছুঁয়ে যায়। বৃষ্টি, কুয়াশাতে সামনে আর কিচ্ছু দ্যাখা যায়না। খালি গোলাপি একটা ছায়া মুখ নিচু করে আকাশে সুর ভাসায়, "আসিস না আর, সব তো জানিস তুই, সব"। হাওয়া আর জলের চোটে আবছায়া কথাগুলো হারিয়ে যায়, আমার মতই। সুপ ধাক্কা দ্যায়, একবার, দুবার নাম ধরে ডাকে। "এই বৃষ্টি হচ্ছে তো,যা উপরে ঘুরে আয়,ওরা সবাই চলে গ্যাছে, তুইও যা " সুপ হাত ধরে টানে। "তুই কোথেকে এলি? ঘুরে নেমে আসা হয়ে গ্যালো?" আমি অবাক চোখে তাকাই, জামা কাপড় ভিজে চুপ্পুর , বৃষ্টি টিপটিপ করে তুলোর মত গালে ঝরে পরছে। " না রে আমি যাইনি, অনিকে তো কাল সবাই বললাম, ওই হাত নিয়ে ব্যাগ বোসনা,তা সে শুনলোনা এখন কস্ট হচ্ছে। দ্যাখনা যন্ত্রণায় প্রায় সেন্স হারিয়ে পরে আছে, মুখটা কালো হয়ে গ্যাছে। গাছের তলাটায় শুইয়ে দিয়েছি। ওষুধ কি বললো দিলাম। এখন বসি একটু, একা ছেড়ে যাবনা" সুপ অনির দিকে তাকায়। বাঁহাতটা চেপে ধরে অনি ঝিমনো জড়ানো গলায় বিড়বিড় করে "ব্যাবস্থা বুঝে অবস্থা ভাই, নো চাপ, তোরা উঠে যা"। সুপ কথা বাড়ায়না, আমায় হাত নেড়ে উঠতে বলে একটা পাথড়ে হেলান দ্যায়, জল থেকে মাথা বাঁচিয়ে। কানে হেডফোন গোঁজে, চোখ বোঁজে ক্লান্তিতে। নিস্থব্দতার সয়ে যাওয়া শব্দর সুর একটু চোট খায়। "ইঁহা কোহি মিল গ্যায়া থা" অস্পষ্ট বাতাসের চেও পাতলা। আচ্ছা বাতাস তো মোটেই পাতলা নয়, ঠান্ডাও না, বেশ গরম আর কেমন একটা নাকে বুকে জ্বালা ধরানো গন্ধ, ঝাঁঝালো, তেতো। আমি মুখ তুলে উপরে দেখি, ওই তো চি দাঁড়িয়ে আছে, ডাকছে যেমন কোন মরে আসা বিকেল বা মাঝরাতের দিকে গড়ানো ঘড়ির দিকে চোখ রেখে, গ্রিলের গেটের সামনে এত্তদিন ডেকে এসেছে। না ভুল হল, ও না আমি ডেকেছিলুম সেই সব অন্ধকারকে। আর কেউ ছিল না কেবল ন্যাড়া গাছগুলো কেঁদে পিচের রাস্তা গলিয়ে দিচ্ছিলো। আমি সাবধানে পাথড়ে পা ফেলি। এক পাশে শ্রী এক পাশে সু কাঁধে হাত রাখে সব সময়ের মত। শ্রী কিচ্ছু জানে না একদম কিচ্ছু না। স্যাপ তখন অন্য কোনো সমুদ্রে মিশে যাওয়া পাহাড় চুড়ায় বসে, কাঁচের জানলা দিয়ে ঝাপসা অঝোর বর্ষাতে প্রায় ভেসে যাওয়া গাড় সবুজে চোখ ঝলসে সু কে ফোন করে। সু একটু বাঁদিকে চেপে দাঁড়িয়ে যায়। কাল রাতের ভুমিকম্পে আর বন্যায়, কোথাকার টাওয়ার ভেঙে পড়েছে, অসুবিধে হয়না তাতে।
    সূর্য দুবে আসছে, তারই ফাঁকে আর একটা রঙ হাতে লাগিয়ে দ্যায়, গালেও। কলেজের কোনো দোলের দিনের মত, লাল বেগুনি বা কমলা ও আসবে। শ্রী আমায় বোঝাতে বসে, "ধুস তোর কোন সমস্যা নেই। আছিস ভালো, কি হয়েছে তোর? ওষুধ মষুধ ছেরে পালস খা কি ভিটামিন। ও আবার আনিমিয়া রুগি তো তালে আয়ড়ন খা, আর জিনক ও কি খায়? না না ওসব ছাড় তুই। অত ভাবিস না। জোড় করে কিছু হয়না রে।" আচ্ছা ওরও তো ফোন আসা উচিত, খুবই উচিত, আমি ভাবি আর শুনে যাই। শ্রী বলতে বলতে ঝিমিয়ে পড়ে। এখনও পুরো সুস্থ হয়নি। দুর্বল, তাছাড়া এত খাটনি। একটা বেগুনি বুনোফুলের ভাড়ে নুয়ে পরা ঝোপের নিচে ও বসে পড়ে। কেমন যেন মনে হয় কাঁদছে। সু ঠিক সামাল দেবে ওকে। আমি পাথর ভাঙতে গিয়ে পা মচকাই, হরকে পরার আগে কোনো গাছ জরিয়ে ধরে টাল সামলাই। একান্ত আপন হয়ে ওরাই এত্ত উঁচুতে একলা আমার সাথে সঙ্গ দ্যায়। গুড্ডু কখনো দমদম, কখনো বরানগর, কলেজ স্ট্রিট, শ্যামবাজার এর ব্যাস্ত ভিড়ের মোড়ে দাঁড়িয়ে গলা ফাটিয়ে চিল্লে যায়, ডাকে, খেপে গিয়ে খিস্তোয়। লাস্ট মেট্রো আধঘন্টা আগে স্টেশন ছেড়েছে, আমার আর কোথাও যাওয়া হয়না। আগের দিন ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে পরের দিনই দুর্ভাগ্যক্রমে তার সাথে দ্যাখা হয়ে তুতলে, ভুল বকে, ছড়িয়ে ময়দান বানানোর গল্পটা মনে পড়ে। চারদিকে, আনেক নিচ থেকে, অনেকের ডাকে কান না দিয়ে আমি হাসতে থাকি। নিজেকে নিয়েই,নিজের জন্য। চি ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে একবার ভাবে ডাকবে কিনা, কিন্তু তখনি ওর ফোনটা বেজে ওঠে। সেই ফোন যেটা কখনো হারায়নি। আনেকক্ষণ কথা বলে এসি টা বাড়িয়ে জানলার দিকে মুখ করে চাদরটা মাথা অব্ধি টেনে চি ঘুমিয়ে পরে। আনেকদিন পর ফিরে আসে ওর উজ্জ্বল চোখদুটো, আর কারণ অকারণ লুটিয়ে পরা হাসিটা। অনেক নিচে, আমাদের ওই সাদা গাড়িটার শব্দ পাই, ছেড়ে দিচ্ছে, নিশ্চই সবাই এসে গ্যাছে। আমিও, হয়ত আমিও পেছনের সীটে গা এলিয়ে পড়ে আছি। হয়ত এসব কিচ্ছু হয়নি কোনোদিন হবে না। সব ঠিক ছিল, আছে ছবির মত, স্বপ্নের মত গোছানো। আর ঠিক দু মিটার মত উঠলেই চুড়োটা। আবার ভুমিকম্প হয়। মাথা টাল খায়, পা ফস্কায় হয়ত, গাছটাও কি উপড়ে গ্যাছে? নাকি হাতের মুঠোয় শুধুই গন্ধক। কে জানে, ভোররাতে অত ভাবতে নেই। আর তো কিছু নেইও ভাবার মত। খালি লাইটারটায় তেল ভরা হয়না আর সাদা বড়িগুলো খরগোশে খেয়ে যায়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন