এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 127.194.***.*** | ১৩ মে ২০১৬ ২২:৪০706935
  • কেন জানিনা, তবে কৌশিক গাঙ্গুলির সিনেমা আমায় খুব একটা টানেনা। মানে, সিনেমা হিসেবে। 'সিনেমাওয়ালা " কেমন হবে জানিনা। হলে গিয়ে হয়তো দেখাও হবে না। তবে আজ টেলিভিশনের একটি চ্যানেলে এই সিনেমা নিয়ে একটু আলোচনা দেখছিলাম। কৌশিক বাবু ছিলেন, মিত্রা এবং প্রাচী সিনেমার দুই মালিক ছিলেন। আলোচনা শুনতে শুনতে সিনেমা দেখা এবং সিনেমা হল নিয়ে অনেক পুরনো কথা মনে পড়ছিল।
    সাতের দশকের প্রথম দিকে আন্দামানের পোর্টব্লেয়ারে ছিলাম। সেটা ৭২-৭৩ হবে। আমাদের কোয়ার্টারের পেছনদিকে একটা মাঠে পর্দা টাঙিয়ে সিনেমা দেখানো হত। বিনা পয়সায়। যতদূর মনে পড়ে সেখানেই আমার প্রথম সিনেমা দেখা। নেতাজী সুভাষ কে নিয়ে সিনেমা। মাঠে সিনেমা দেখানো হবে শুনে সেই বিকেল থেকে আমরা বন্ধুরা ভীড় করে ছিলাম। অধীর আগ্রহে দেখছিলাম সব কর্মকান্ড। একপ্রান্তে পর্দা টাঙানো হলো। তার সামনে একটা মেশিন দাঁড় করানো হলো। বড় বড় সব চাকার মত জিনিষ রাখা পাশে। সেই সব চাকার মধ্যেই নাকি সিনেমা আছে। কি করে যে সেই চাকা থেকে সিনেমাটা ওই সাদা পর্দায় পৌছাবে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তারপর সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এলো। একটা চাকা লাগানো হল সেই সিনেমাযন্ত্রের গায়ে। সেটা চালু করতেই একটা ক্যারর ক্যারর আওয়াজ, আর সাদা পর্দায় ঠিকরে পড়ল এক রাশ সাদা আলো। শুরু হয়ে গেল সিনেমা। পর্দার সামনে কালো কালো মাথার সারি। পর্দায় এক অন্য জগৎ। সিনেমাযন্ত্রের পাশে দাঁড়িয়ে বিভোর হয়ে গেছিলাম সেই জগতের ভিতর। কি কারনে মাঝে একবার বাড়ি যেতে হয়েছিল, মনে নেই ঠিক। ফেরার সময় আরো একটা নতুন বিস্ময় অপেক্ষা করে ছিল। দেখি পর্দার উলটো দিকেও সিনেমা চলছে। সেদিকে লোকজন নেই। সবাই সামনের দিকে। আমি একা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উল্টোদিক থেকে সিনেমার বাকি অংশ দেখলাম সেদিন।
    পোর্টব্লেয়ারে একটাই সিনেমা হল তখন। বাবা-মা র সাথে দুটো সিনেমা দেখেছি সে হলে। যতদূর মনে পড়ছে একটা ছিল "বেনারসি বাবু", আর দ্বিতীয়টা "পাকীজা"। মাথামুন্ডু তো কিছু বুঝি নি, মনেও নেই। শুধু মনে আছে পাকীজা সিনেমাতে একটা দৃশ্য ছিল, আকাশে অনেক পাখী উড়ে যাচ্ছে। আমার শিশু বুদ্ধিতে সেই দৃশ্যকেই সিনেমার নাম করনের স্বার্থকতা খুঁজে পেয়েছিলাম, পাখি যা!
    পোর্টব্লেয়ারে স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। ক্লাশ টু, রবীন্দ্র বাংলা বিদ্যালয়। আমাদের কোয়ার্টার থেকে বেরিয়ে পাশের রাস্তা পেরিয়ে মাটির রাস্তা, বেশ খানিকটা চড়াই ভেঙে তারপর আরেকটা রাস্তায় পৌছলেই স্কুল। ছোট্ট শহর, গাড়িঘোড়া চাপা পড়ার ভয় নেই। পিঠে ব্যাগ নিয়ে সব বন্ধুরা মিলে হেঁটে হেঁটেই স্কুল যাওয়াআসা করতাম। কি একটা সিনেমা, নাম মনে ননেই, শিশু চলচ্চিত্র হিসেবে খুব নাম করেছিল। স্কুল থেকে আমাদের ভাগ ভাগ করে নিয়ে যাওয়া হল সিনেমা দেখতে। এটা মনে হচ্ছে সেই সিনেমা হলে নয়। অন্য কোন জায়গাতে। স্কুল থেকে লাইন করে সব গেলাম সিনেমা দেখতে। বেশি কিছু মনে নেই। দুটি বাচ্ছা ছেলে আর মেয়ের গল্প। সমুদ্র পাড়ের কোন শহরে থাকে তারা। খুব বন্ধু ছিল দুজন। তার পর বোধহয় মেয়েটি অন্য কোথাও চলে গেল তার মা-বাবার সাথে। ছেলেটির ভীষন মন খারাপ সারাদিন। সে শুনেছে মেয়েটি চলে গেছে সমুদ্রের অন্য পাড়ে কোন বড় শহরে। একদিন একটা চিঠি লিখল ছেলেটি। তার সাথে ছবি আঁকলো। তারপর সেই চিঠি আর ছবি একটা বাক্সের মধ্যে পুরে সমুদ্রের জলে ভাসিয়ে দিয়ে এলো। বাক্সের গায়ে তার বন্ধুর নাম লিখে।
    পেয়েছিল কি মেয়েটি, তার বন্ধুর চিঠি? জানি না। সিনেমা তে দেখিয়েছিল কি না, তাও মনে পড়ে না।
  • pi | 24.139.***.*** | ১৪ মে ২০১৬ ১২:৩৪706936
  • ভাল লাগল।
  • apps | 11.39.***.*** | ১৫ মে ২০১৬ ১৩:২৮706937
  • ভারী মন কেমন করা... আট্টু লেখা যায় না?

    কৌশিক বাবুর ছোট ছবিগুলো একসময় বেশ লাগত। ই টিভি বা তারা বাংলায় দেখতাম। পূর্ণ দৈর্ঘ্য বানাতে গেলেই উনি কেমন ছড়িয়ে ফেলেন বলে মনে হয়। 'ফর দ্য কজ' মাথায় রাখতে গিয়ে শিল্পের গুণগত মান পড়ে যায়, তাও হতে পারে। তবে আমি বেশ কিছু ছবি বড় পর্দায় গিয়ে দেখেছিলাম। কলেজে পড়ার সময় শূন্য এ বুকে, বা পরবর্তীকালে শব্দ, কেয়ার অফ স্যার, ছোটদের ছবি। শব্দের মেকিং-ও যে আহামরি কিছু লেগেছিল তা না। বা ওই ল্যাপটপ ছবিটা... খুব চমৎকার শুরু, অসামান্য অভিনয় দক্ষতা, কিন্তু শেষটায় কিছুই পড়ে রইলো না। :(
  • সে | 198.155.***.*** | ১৫ মে ২০১৬ ১৩:৩৫706938
  • লেখাটা খুব মন কেমন করা। লেখককে একটা অন্য প্রশ্ন, পোর্ট ব্লেয়ারের এক শিক্ষিকা আইভি বিশ্বাসকে চেনেন কি? ওঁকে অনেকদিন খুঁজছি, যদি কোন উপায় থাকে যোগাযোগ করবার তাই জিগ্যেস করলাম। কৃতজ্ঞ থাকব।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন