এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষে(৪)

    dam
    অন্যান্য | ২১ নভেম্বর ২০০৬ | ৪৬৫৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Du | 67.***.*** | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ ০০:২২693922
  • সেই প্রতাপাদিত্য, সেই বসন্তরায় ! সেই খুড়ো !
  • B | 59.93.***.*** | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ ০০:৪০693923
  • ধন্যবাদ শমীক, কাবলিদার প্রশ্নের উত্তরের সাথেসাথে চো কি ধানি আর চোখিধানি-র রহস্য মেটানোয় সাহায্যের জন্য। বছর দশ বারো আগে ওই জায়গায় যাবার পথে অথবা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যতগুলো ছোট ছোট নানা রঙের ফেস্টুন দেখা যেত, সব কটাতেই ইংরিজিতে ঠিক এ ভাবে লেখা থাকতো "CHO KI DHANI"-ব্লা, ব্লা। হয়তো হিন্দি লেখাগুলো চোখ এড়িয়ে গিয়ে থাকতে পারে। তবু জানানোর জন্য ধন্যবাদ।

    যে ছবি ওই লিঙ্কে দেখলাম, তার সাথে জয়পুরী ধানির মূলসুরের অনেক ফারাক আছে মনে হোল। ওটা কি বম্বেরটি? এ যেন "ছিলো বাঙালী পিঠে, হোলো ইংরিজিতে CAKE"এর মত ঘটনা, আমার ব্যক্তিগত মত।

    বম্বের অনেক আগে, খুব সম্ভবত: ৯৫-৯৬-তেই শুরু হয়ে ৯৭-এর মধ্যেই আর যে ধানি সবার জন্য উন্মুক্ত হয়েছিলো সেটি মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে, যার সাথে পুরোনোটির অনেক ব্যাপারে প্রচুর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। শহর থেকে যাবার রাস্তাটাতেও অনেক মিল। সেখানকার শহরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রানী অহল্যাবাঈ-এর নানা স্মৃতিসৌধ বা প্রাসাদ। ইন্দোরের ধানির নাম মনে নেই, তবে আলাদা নাম। একটা অদ্ভূত ব্যাপার যে সেখানে যাবার পথে একটা পার্সীদের টাওয়ার পড়ে অথচ ইন্দোরের বর্তমান জনসমীক্ষার সাথে তার কোনই মিল নেই।

    সে এক অন্য প্রসঙ্গ।
  • S | 61.95.***.*** | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ ১১:১১693924
  • চোখিধানি অ্যাকচুয়্যালি তো একটা হলিডে রিসর্ট। এক এক রাতে কয়েক হাজার ট্যাহা দিয়ে থাকতে হয়। তার একটা পার্ট প্রতি সন্ধ্যায় জনগণেশের জন্যে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, ঐ রাজস্থানি গ্রাম, মেলা ইত্যাদি সাজিয়ে। চোখিধানি আসলে আরও অনেক অনেক বিশাল এলাকা জুড়ে।

    আর ওয়েবসাইটটা ঐ রিসর্ট এবং গ্রাম সবেরই, সব লোকেশনের জন্যই।

    সন্ধ্যের মেলায় এখন এϾট্র ফি ২৫০ টাকা বোধ হয় পারহেড। খাওয়া সমেত।
  • Paramita | 143.127.***.*** | ১৪ মার্চ ২০০৭ ০৪:২৫693925
  • পিপি এখানে দু হপ্তার জামানি-অস্ট্রিয়া-সুইজারল্যান্ডের নামী-ও-অনামী জায়গায় গড়িয়ে গড়িয়ে বেড়ানোর কাস্টম পেলান দেবে বলে সুতোটাকে ওপরদিকে ভুস করে তুলে দেওয়া হলো।
  • shrabani | 124.3.***.*** | ১৭ মে ২০০৭ ১৭:১৩693926
  • দিন তিনেকের অবসর, মার্চের নরম গরম আবহাওয়া, অতএব চালাও পানসী, গন্তব্য রাজস্থান, জয়পুর।এর আগে বহুবার গেছি তবু জয়পুর বা রাজস্থানের কোনো জায়গাই আমার কাছে পুরোনো হয়না কখোনো। ভোরবেলা, ঠান্ডা মরশুমী ফুলের গন্ধভরা বাতাসে আধোঘুমে চিরচেনা রাজধানীর রাস্তাঘাট কেমন নতুন লাগে। প্রায় উড়ে পৌঁছে গেলাম গুরগাঁও, তখনও সুর্য উঠতে বেশ দেরী আছে। মোটামুটি ফাঁকাতেই হরিয়ানা পেরিয়ে গেলাম যা নিয়ে আমাদের বেশ চিন্তা ছিল। এরপরের রাস্তা তো আমার কর্তার মতে স্বর্গের রাস্তা (আক্ষরিক অর্থেই প্রায়, শুনেছি গাড়ি গুলো যা তা স্পীড তুলে হামেশাই দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকে!)। একটু দুর পড়লেও আমরা এ রাস্তায় সাধারনত রাজস্থান ট্যুরিজমের একটা মোটেল আছে, ওখানেই ব্রেকফাস্ট করি। কারন এরাস্তায় ঝাঁ চকচকে হোটেল/ধাবা প্রচুর থাকলেও তারা দাম ডলারের হিসেবে নিয়ে থাকে। আর খাবারের টেস্ট ও একটা বকচ্ছপ স্টাইলে হয়, আলু পরটায় শুধু আলুসেদ্ধ থাকে, মশলা ছাড়া, আমাদের ভারতীয় জিহ্বায় তার যা স্বাদ হয় সে আর কহতব্য নয়। আর টি ডি সি র এই মোটেল টা দেওয়াল ঘেরা (অনেকটা দুর্গের দেওয়ালের আকারে), ভেতরে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, দামও স্ট্যান্ডার্ড ওদের অন্যান্য রেস্তরাঁর মত আর সবার উপরে খাবার এককথায় অপুর্ব, রাজস্থানী স্বাদের। এই যাত্রায় আমরা আগে থেকে কোনো বুকিং করিনি তাই যেতে যেতে ঠিক হল কোনো রিস্ক নেবনা, আর টি ডি সি র হোটেল গঙ্গৌরে যাব। বাহররে পৌঁছলাম প্রায় সাড়ে দশটা। দুজনেরই মনে এক কথা, একটা দিন আছে হাতে, সারিস্কায় ঢুকব নাকি! জয়পুর যাত্রায় সাময়িক বিরতি, চল মন সারিস্কায়। বাঘ নাই থাক, ঐ নির্জনে বনের ধারে টাইগার ডেনের লনে বসে চা আর পকোড়া নিয়ে চারিদিকে পাখির ডাক, বনের সবুজ (বাঁদরের বাঁদরামি টা আর বললাম না!), বড় ভাল হয়ে যায় মন। একটাই চিন্তা টাইগার ডেনে ঘর খালি পাওয়া যাবে তো?
    সারিস্কায় যদি কেউ ঘন সবুজ ভেজা জঙ্গল খোঁজে তো সে হতাশ হবে। এ বন একটু রুক্ষ লালচে আর বিস্তৃত কিন্ত ঘন নয়। রাস্তার দুধার কখোনো সমান সমতল আবার কখোনো বা উঁচুনিচু পাহাড়ী অমসৃণ। পথে রাজস্থানী পোষাকে গ্রামের লোকজন, উট আর হাতীর মিছিল ও চোখে পড়ল একটি দুটি। ফরেস্ট এলাকায় ঢোকার মুখে বাঘের মুখ আঁকা বোর্ড দেখে মনে হল এবার অন্তত প্রতিবারের মত বাঘ না দেখতে পাবার দু:খ নিয়ে ফিরতে হবেনা। অবশ্য আমরা জঙ্গল এমনিই ভালো বাসি, কিছু লোকজন দেখেছি কান্‌হা আর রনথাম্বোরে যারা বাঘ দেখার জন্য কি কান্ডটাই না করে, জঙ্গলের আর কোনো কিছুই যেন তাদের টানেনা! রাস্তার দুধারে নীল গাই আর হরিনের আনাগোনা দেখেই বুঝলাম গন্তব্য নিকট প্রায়। টাইগার ডেন, আর টি ডি সি র একমাত্র হোটেল সারিস্কায় জঙ্গলে ঢোকার গেটের একেবারে ধারেই। এছাড়া কাছাকাছিতে আছে সারিস্কা প্যালেস, যা আগেকার দিনে রাজার হান্টিং লজ ছিল। তবে এটি একটি স্টার হোটেল, খরচ প্রচুর আর আগে না বুক করলে পাওয়া না পাওয়ার সংশয় থেকে যায় কারন অধিকাংশ বিদেশীরাই এই হোটেলে ওঠে।
    এদিকটায় ভীড় হয় পুজোর আশেপাশে থেকে শীত অবধি। হোটেলে গাড়ী ঢুকিয়েই বোঝা গেল ফিরে যেতে হবেনা, পার্কিং লটে গাড়ীর সংখ্যা কমই। রিসেপশনে গিয়ে দাঁড়াতে তা প্রমান হয়ে গেল। এর আগে যতবার এসেছি বিকানীর হাউস থেকে বুক করে । আজ একদিনের জন্যে একতলার একটি ঘর নিলাম। বারান্দা তার বাগানের দিকে, বাগান পেরিয়ে রাস্তা দেখা যায় যেখান দিয়ে আমরা এসেছি আর হোটেলের পাশ দিয়ে যা সোজা চলে গেছে জঙ্গল ভেদ করে ওপারে গ্রামে। এই রাস্তায় বাস চলাচল করে। জঙ্গল পেরিয়ে পাহাড়ী রাস্তা ধরে গেলে পুরোনো মন্দির,সপ্তাহে দুই দিন বোধহয় শনি মঙ্গল বার জঙ্গলে গাড়ী ঢুকতে দেয় এই মন্দিরে যাওয়ার জন্য কোনো প্রবেশ মুল্য ছাড়াই।
  • dri | 129.46.***.*** | ১৮ মে ২০০৭ ০২:৫৭693927
  • অত:পর?
  • ® | ***:*** | ১৮ মে ২০০৭ ০৯:৫৯693928
  • আরো চাই সারিস্কা
  • shrabani | 220.227.***.*** | ১৮ মে ২০০৭ ১১:৫৪693929
  • খাবার তাড়া ছিলনা কারন ব্রেকফাস্ট বেশ জবরদস্ত হয়েছিল, তাই ঠিক করলাম বেলাবেলি জঙ্গলে ঢুকে পড়া যাক। একেবারে ভোরবেলা জীপ সাফারি যায় জঙ্গলের ভেতরে গাইড সহ। টিকিট কাউন্টার সারিস্কা প্যালেসের উল্টো দিকে আলওয়ারের রাস্তায়। এর আগে যতবারই এসেছি, ভোরেই গেছি, বেলা বাড়লে জঙ্গলে বিশেষ কিছু দেখা যায়না। এই জঙ্গল খুব ঘন না হওয়ায়, রোদের তাপ বোধহয় বেশী অনূভুত হয়। জঙ্গলবাসী রা সব ছাওয়ার খোঁজে পাহাড়ের আনাচে কানাচে, গুহায় আশ্রয় নেয়। আগে ঐ পাহাড়গুলো দেখিয়ে গাইডরা বলত ওখানেই আছে জঙ্গলরাজ বাঘ মহাশয়, তবে এখন আর বলেনা। জঙ্গলের গেটে দুজন পাহারাদার ছিল, তাদের সঙ্গে একটু গালগল্প করতেই তারাই বুদ্ধি দিল যে এবেলা গিয়ে মন্দির দেখে আসুন, আর কাল ভোরে জঙ্গল দেখতে যাবেন সাফারিতে। অতএব নিজেদের গাড়ীতেই ঢুকলাম জঙ্গলে মন্দিরের উদ্দেশ্যে সোজা পথ। আস্তে আস্তে চলতে লাগলাম, পথের দুধারে বনে ঘুরে বেড়াচ্ছে অকুতোভয় সম্বর, নীলগাই, ময়ুর, মাঝে মাঝেই লঙ্গুরের দল রাস্তার ওপরে। চারিদিক অদ্ভুত শান্ত, সকালের যাত্রী রা সব ফিরে গেছে। দু একজন বনকর্মী, গ্রামের লোকজন সাইকেলে চোখে পড়ে। বেশীরভাগেরই মাথায় বিশাল রাজস্থানী পাগড়ি। মাঝে মাঝে রাস্তার ধারে পাথরের মাঝে অল্প জলের ধারা অথবা স্থির জল। এইসব জায়গায় পশুপাখির সমাগম একটু বেশী! বনের চত্বর থেকে বেরিয়ে মন্দিরের দিকের রাস্তার দুধার আরো সুন্দর, পাহাড়ের গভীরতা এখানে বেশী, ভ্রম হয় যে হয়ত কোনো হিল স্টেশনের রাস্তায় যাচ্ছি, পথ শেষে কোডাই পৌঁছে যাব! মাঝে মাঝে আবার দুপাশের গাছপালা এতটাই সাজানো যে মনে হয় দেরাদুনের কথা। মোটের ওপর শুধু চলার আনন্দেই এই পথে চলা যায়, সেরকম দ্রষ্টব্য কিছু না থাকলেও। অবশ্য গন্তব্যের সম্বন্ধে একই কথা বলা যায়না। অত্যন্ত সাধারন মন্দির, এইসব দিকে যেমন হয় আর কি, অপরিস্কার অপরিচ্ছন্ন বিশেষত্বহীন। চলার শেষে, ফেরার আগে একটু জিরোনো আর কিছু নয়। অত বেলাতে দর্শনার্থীর ভীড় না থাকলেও খালি নয় মন্দির। অনেকে নতুন গাড়ী কিনে যাবার পথে পুজো করাচ্ছে।
    ফিরতে ফিরতে প্রায় দুটো বেজে গেল। নিরামিষ ভোজন টাইগার ডেনে, আমার প্রিয় কড়ী, গাট্টার সবজি এছাড়া আরো অনেক পদ সহ রজস্থানী লাঞঅ। এতক্ষন ঘোরাঘুরির ক্লান্তি ছিল,বিছানায় পড়তেই একটি নিটোল ঘুম।
  • shrabani | 220.227.***.*** | ১৮ মে ২০০৭ ১২:৩৪693930
  • একটি নিটোল দ্বিপ্রাহরিক নিদ্রার পরে উঠলাম যখন মনে হচ্ছিল সপ্তাহের সব ক্লান্তির অবসান হয়েছে। মুখহাত ধুয়ে লনে গিয়ে বসলাম। অবশ্যই তার আগে চা আর পকোড়ার অর্ডার দেওয়া হয়ে গেছে, বাঁদরের উপস্থিতি সঙ্কেÄও। লন আর বাগানের মাঝে গোলাকার হাটের আকারে বার, চারপাশ ভারী সুন্দর, এবারের বিশেষ্‌ত্ব হল ভীড় কম। গরম শুরু হয়ে গেছে, সপ্তাহান্তের ভীড় তাই পাহাড়ের দিকে দৌড়েছে আর আমাদের জন্যে রেখে গেছে সারিস্কার নির্জনতা। বেলাশেষে হাঁটতে বেরোলাম পিচের রাস্তা ধরে, মানুষজন আর গাড়িঘোড়া কম হওয়ায়, খারাপ লাগেনা এই বৈকালিক ভ্রমন। চারিদিকে ঝরাপাতার আর রাতফুলের গন্ধ আবেশ লাগায়। সন্ধে হলে শুধু বনের নানারকম শব্দ শোনা যায় আর তা শুনব বলে আমরা ঘরের টিভি টা অন করিনি। খাওয়াদাওয়ার পরে অনেকক্ষন বারান্দায় বসে রইলাম আবছা চাঁদের আলোয়।
    ভোর ভোর উঠে ঘরেই চা খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম সাফারির উদ্দেশ্যে। একটু একটু ঠান্ডা লাগছিল কিন্তু পরে গরম হবে বলে কোনো শীতবস্ত্র গায়ে নিলাম না। জীপে আমাদের সঙ্গী বম্বের এক পিতা দুই কিশোর পুত্র সহ আর একটি বাচ্চা মেয়ে তার পাপা আর আংকেলের সাথে। ওদের এই প্রথম সারিস্কা ভ্রমন আর তাই উৎসাহে ভরপুর। তার ছোঁয়ায় আমরাও কেমন উৎসাহী হয়ে উঠলাম। একটু একটু করে জঙ্গলের ভেতরে ঢুকল গাড়ি। মাঝে মাঝে ইঞ্জিন বন্ধ করে হরিন পালের জল খাওয়া বা এক বিরাট লঙ্গুর গোষ্ঠীর খুনসুটি দেখা হচ্ছিল। বাচ্চারা বেজায় খুশী। হরিন আর ময়ুর তো এখানে কাক শালিখের মত ঘুরে বেড়ায়। এছাড়া কত রকমের আর বর্নের যে পাখি দেখা যায় খেয়াল করলে, র ঙের সমারোহ। এর আগে যখনই এসেছি বাঘ দেখার উত্তেজনা থাকত বলে এসব খেয়াল করিনি। একবার তো গাইড চিৎকার করে উঠেছে, ঐ ঐ শের গেল, আর আমরাও হুমড়ি খেয়ে পড়লাম। এতদিন সেটাকেই ভাবতাম বাঘ দেখেছি অবশ্য এখন মনে হয় ওটা গাইডদের সৃষ্ট দৃষ্টিভ্রম ছাড়া আর কিছু ছিলনা। বনের মধ্যে গাছপালার ফাঁকে ধীরে ধীরে সুর্য দেখা দিতে লাগল। সারিস্কা একটু রুক্ষ প্রকৃতির বন, কানহা বা রনথাম্বোরের মত এর গভীরতা নেই কিন্তু সেখানেই এর সৌন্দর্য। এ জঙ্গলে ভয় কম ভালোলাগা বেশী! মনে হয় অল্প দামেই অনেক কিছু পাওয়া গেল।
    বেলা হয়ে এল, এবার কার মত ফেরার পালা। হোটেলে ফিরে ব্রেকফাস্টে গেলাম, ঘোরাঘুরির উত্তেজনায় খিদে পেয়ে গেছিল। ব্রেকফাস্টের অন্যতম মেনু পকোড়া। বাড়িতে ভাবাই যায়না সাত সকালে পকোড়া খেতে বসব, কিন্তু এখানে আমি সবসময় ওটাই খাই। সঙ্গে আলু পরোটা আর দহি। স্নান করে তৈরী হয়ে বিল টিল মিটিয়ে আবার বাহররের রাস্তায়। এবার জয়পুর! কিছুটা পথ নীলগাই আর সম্বররা সাথে রইল বন চত্বর শেষ অবধি। আবার বাঘের ছবির বোর্ড। মনে হল ঠিক, সারিস্কার বাঘ তো এখন ছবির গল্পকথা! ডান দিকে পাহাড়ের ওপরে ভাঙ্গা চোরা দুর্গাবশেষ। প্রতিবারের মত এবারেও দুর্গ যাত্রাটা পরেরবারের জন্য মুল্‌তুবী রাখলাম, দুর থেকেই ছবি নেওয়া হল। স্থির জানি, আবার আসব এ দেখা শেষ দেখা নয়!

  • m.s | 202.78.***.*** | ১৮ মে ২০০৭ ১৪:৩০693932
  • সুন্দর হয়েছে।
  • dd | ***:*** | ১৯ মে ২০০৭ ২০:২৭693933
  • একদা এক ফোর্টে দেখেছিলাম মেঝেতে গর্ত খুঁড়ে রেখেছে,লোহার গ্রীল দিয়ে মুখটা বন্ধ। ঐ টুকু খোঁদলে কোনোরকমে হাত পা গুটিয়ে থাকতে হতো বন্দীদের। এখনো ভেবে শিউড়ে উঠি।

    আর এই ট্রেইন জার্নি গুলো ও তাই। একটা বেঞ্চে কোনোরকমে হাঁটু মুড়ে বসে থাকা। স্যুটকেস আর কীটব্যাগের জংগল। সারা বগী ম ম করছে টক দই আর সম্বারের দুর্গন্ধে। চারিদিকে অপরিচিত মুখ। ক্রমগত হেঁচকি তুলছে এক শিশু। রাত হলে আলো নিভলেই কোন থেকে কোনে গর্জে উঠছে নাকেরা।

    নবদ্বার বন্ধ করে কুর্মাবতার। স্টেশনে নামলেই দুশ্চিন্তা শুরু হলো - পক্ষকাল পরেই আবার রিটার্ন জার্নি।

    মধ্যপ্রদেশে দেখার কি আছে ? শুধু মন্দির আর মন্দির। হাড় পিত্তি জ্বলে যায়।
  • dd | ***:*** | ২১ মে ২০০৭ ২১:৫৬693934
  • না। তা ক্যানো ? মান্ডু আছে। ত্যামন মন্দির ফন্দির নেই।
    প্রতিটি রাস্তায় মাঠে ঘাটে খন্ডহর ঐতিহাসিক ভগ্নস্তুপ। রোম্যান্সিং দ স্টোন।

    এ কি আর ল্যাখা যায়। নিজেই দেখে আসুন।
  • dd | ***:*** | ২৪ মে ২০০৭ ২২:৫২693935
  • আর মাহেশ্বরে যান। পুরো তরমুজ কেস।
    নীচের থেকে খাড়াই প্রাচীর উঠে গেছে, গা ছম ছাম করে।

    ওমা ! তার পাশেই বিশাল সিঁড়ি। দুর্গ টুর্গ কিসু নয়। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে মন্দির। নীচে নর্মদা। অনেকগুলি মন্দির সীজনাল। বর্ষাকালে ডুবে যায়। এখন শুনছি ঐ ড্যাম হলে বেশ কিছু মন্দির পার্মানেন্টলি ডুবে যাবে। তার আগেই দেখে আসুন।
  • dri | 75.7.***.*** | ১৯ জুন ২০০৭ ০৮:০৫693936
  • - আচ্ছা এত জামাকপড় নিচ্ছ কেন বল তো?
    - দেখ আমি তোমার মত তিন দিন এক জামা পরে থাকতে পারব না। তারপর কি তোমার মত সব জায়গায় ঐ এক পোষাক পরে ছবি উঠবে? ওসব বাজে কথা ছাড়ো। সব হোটেলে কিন্তু আমার মাইক্রোওয়েভ আর ফ্রিজ চাই। তুমি কথা বলে নিয়েছ তো? তান্নার দুধ গরম করতে হবে, আধখাওয়া গারবার রাখতে হবে।
    - আরে হ্যাঁ হ্যাঁ। প্রায় সব গুলোতেই থাকবে দু একটা জায়গা বাদে। তারাও বলেছে দুধ গরমের ব্যবস্থা তারা করে দেবে। তোমার সব ব্যাপারে টেনশন করার হ্যাবিটটা আর গেল না।
    - টেনশনের কি আছে? তান্নার খাওয়ার ব্যাপারে কোন গোলমাল হলে তুমি ব্যবস্থা করবে, ব্যাস।

    বেরোনোর সময় যত এগিয়ে আসে, কথার ঝাঁঝ বাড়ে। প্রতিটি ছোট ছোট ডিসিশানে যুদ্ধ বাধে। খালি একটা ব্যাপারে মতৈক্য হল। গরম জ্যাকেট সবার জন্য নিয়ে যেতে হবে। যেসব জায়গায় যাচ্ছি সেখানকার ফোরকাস্টে মিনিমাম টেম্পারেচার খুব একটা আশ্বাস দিতে পারছে না। সূর্য্য ডুবলেই ঝপ করে ঠান্ডা পড়বে। ইয়োসেমিটিতে তো আবার একদিন ক্যাম্পে বাস আছে।

    চেপেচুপে গাড়ীর ট্রাঙ্ক বন্ধ করা হল। ইঞ্জিন স্টার্ট দিতেই শাশুড়ি বললেন, আচ্ছা শেষে যে জল গরম করা হল উনুনটা বন্ধ করা হয়েছে তো? সীটবেল্ট লাগিয়ে বউ বলল হ্যাঁ হ্যাঁ। তারপর পার্কিং লটে গাড়ী একটা মোড় নিতেই বলল, একটু দাঁড়াও তো আমি চট করে চেক করে আসি। ফিরে এসে বিরক্তমুখে বলল, বললাম বন্ধ করেছি, তোমাদের বিশ্বাস হল না। সীটবেল্ট লাগাতেই শাশুড়ি বললেন, দরজায় চাবি দিয়েছিস ঠিক করে? আমি গ্যাসে পা দিয়ে বললাম, আর আমি গাড়ি থামাতে পারব না।

    ফ্রিওয়েতে ঢুকে মনে হল অর্ধেক আমেরিকা বেড়াতে বেরিয়েছে। কেউ চলেছে পেছনের সীটে মাল বোঝাই করে, কেউ চলেছে সামনের সীটে কুকুর নিয়ে, কেউ চলেছে হলুদ কনভার্টিব্‌লে চুল উড়িয়ে, কেউ চলেছে মোটরবাইকে গেঞ্জি উড়িয়ে, কেউ চলেছে ভ্যানের পেছনে নৌকো বেঁধে ... ভেগাস পৌছতে রাত হল। হোটেল খুঁজতে পথ হারিয়ে দেখে ফেললাম যা দেখতে চাই নি। স্ট্রীপ ক্লাবের সামনের বিলবোর্ডে স্বল্পবাস মেয়েটির নিতম্বের রেখায় টুনিবাল্বের জ্বলা নেভা, আর পাশেই ডিসকাউন্ট ফায়ার আর্মসের শোরুমে বন্দুকের সারি। একটা ৪৯০৬, অন্যটা ৪৯০৮। আমাদের পৌঁছতে হবে ৬৮৩৬ এ। ঠিক দিকেই এগোচ্ছি!

    ভেগাসে বডি ফেলাই ছিল প্রধান উদ্দেশ্য। তাও মেয়ে বউকে হোটেলে নামিয়ে শাশুড়িকে একবার স্ট্রীপটা ড্রাইভ করে দেখিয়ে দিলাম। শাশুড়ি সবই দেখলেন। ইনক্লুডিং জায়েন্ট স্ক্রীনে এক পেশীবহুল নেড়ামুন্ডের আগুন নিয়ে খেলা এবং ব্রা, প্যান্টি ও লেজ পরা এক কালো রমণীর নাচ। দেখেশুনে উনি মোট দুটি মন্তব্য করলেন। 'কি আলো', আর 'কত লোক'। সত্যিই তো। এছাড়া আর বলার আছেটা কি?

    গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। বাংলা ভাষায় আরেকটু স্ট্রং হলে তবু প্রস্তরবন্দনায় তৎসম শব্দের ফোয়ারা ছোটানো যেত। মেঘলা বিকেলে পাথরের রংগুলো তত খোলতাই হয়নি। মারিকোপা পয়েন্ট থেকে কলোর‌্যাডো নদীর মেটে রংএর একটা ছোট্ট স্লাইস নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। সানসেটের সময় বাতাসে একটু কামড় ছিল, মেঘে অল্প রং ধরেছিল আর আকাশে কতগুলো কাক ছিল। ঠিক কপিবুক কাক নয়। এরা বলে র‌্যাভেন। চেহারায় এবং বিশেষ করে গলার স্বরে খুবই মিল। কাকের কথা এলেই খুব কোলকাতা মনে পড়ে। আর ভ্যান গগের সেই আঁকাটা।

    পরের দিন সকাল সকাল ব্রাইট এঞ্জেল ট্রেইল ধরে খানিক নামলাম। খচ্চরের গু মাড়িয়ে প্রায় মিনিট পঁয়তাল্লিশ। তিনটে মাউন্টেন গোট দেখলাম। খাদের একদম ধার ঘেঁষে নিশ্চিন্তে বসে ছিল। ক্যানিয়নের মধ্যে ঢুকলে ক্যানিয়নের পাঁপড়িগুলো যেন আরো খুলে যায়। আরো কিছুটা নামতে পারলে ভালো হত, কিন্তু অত সময় আমাদের নেই। পার্ক ছেড়ে বেরোলাম ইস্ট গেট দিয়ে। বেরোবার মুখে ডেজার্ট ভিউপয়েন্টটা খুব ভালো লাগলো।

    এবার আমরা অ্যারিজোনা থেকে ইউটা হয়ে কলোর‌্যাডোতে ঢুকব। খুব শুকনো জায়গা। তায় গাড়ীতে জলের স্টক কমে গেছে। পরের গ্যাস স্টেশনে সর্ষের তেলের মত হলুদ হিসি হল। ছোট শহরের গ্যাস স্টেশনগুলোর একটা চরিত্র থাকে। দরজা ঠেলে ঘন্টা বাজিয়ে ঢুকতেই ভদ্রমহিলা এমন ইন্‌ডালজিং টোনে বললেন হাউ হ্যাভ ইউ বিন ডুয়িন্‌ টুডে যেন আমি তাঁর কতদিনের পরিচিত। এমন মাড়ি বার করে হাসলেন যেন আমি পুরো দোকানটাই কিনে নিতে এসেছি। রেস্টরুমটা ব্যবহার করতে পারি কিনা জিজ্ঞেস করতেই প্রথমে চোখ কপালে তুললেন। তারপর ভুরু নাচিয়ে শুকনো মুখে বললেন আঁহাঁ। আরে কিনব, কিনব। একটা জিনিষ আমিও কিনব। হিসুটা প্রথমে সেরে নিতে দাও। আম্রিকার তুলনায় বাথ্রুমটা বেশ নোংরা। হাতমোছার কাগজের সাপ্লাই শেষ। ট্র্যাশে ডাঁই হয়ে একগাদা পড়ে আছে। গরম জলের ট্যাপটা কাজ করে না। দেয়ালে গ্রাফিটিতে উত্থিত লিঙ্গাগ্রের পাশে লেখা 'ফাক ইসলাম'। দেয়ালে ভেন্ডিং মেশিনে বারো আনায় বিক্রি হচ্ছে কন্ডোম। ইনক্রিজ ইয়োর সেক্সুয়াল হাইজিন, এনহ্যান্স ইয়োর সেন্সেশান, ডাব্‌ল ইয়োর প্লেজার। সিলিংএ লাগানো স্পীকারের কোয়ালিটি বেশ ভালো। তাতে পরিবেশিত সঙ্গীতে 'উ উ উ' এবং 'বেইবে' শব্দের বহুল প্রয়োগ। এখানে আমায় যেন কি কিনতে হবে ... ও হ্যাঁ, এক ব্যাগ আইস।

    উত্তর অ্যারিজোনা এবং দক্ষিণ ইউটার রুক্ষ সৌন্দর্য্য নিয়ে কোন কতা হবেনা। কুড়ি টাকা এϾট্র ফি দিয়ে কোন ন্যাশানাল পার্কে ঢোকার দরকার নেই। রুট ১৬৩ দিয়ে ড্রাইভ করলেই ব্যাপারটা বোঝা যায়, http://picasaweb.google.com/pothique/SummerOfOSeven/photo#5076518413745392274। কলোর‌্যাডো, গ্রীন এবং সান হুয়ান, এই তিনটি নদী আলোবাতাস ঝড়জলের সাথে হাত মিলিয়ে এই আশ্চর্য্য স্থাপত্যকর্মটি করে রেখেছে। আমরা যারা শহর-ছাড়ালেই-ধানক্ষেত দেখে বড় হয়েছি তাদের কাছে সুররিয়াল ল্যান্ডস্কেপ বলতে হয়ত এই। সুররিয়াল ল্যান্ডস্কেপের নিদর্শন আমরা পরে আরো পাব ক্যানিয়নল্যান্ডস্‌, http://picasaweb.google.com/pothique/SummerOfOSeven/photo#5076519113825061570 আর আর্চেজে, http://picasaweb.google.com/pothique/SummerOfOSeven/photo#5076519783839959794। তবে যেসব নাকউঁচু মানবইতিহাসবিলাসীরা এইসব জিওলজিসর্বস্য পাথরকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন তাদের নাকে ঝামা ঘষে দেবার জন্য এই একটি পাথরই যথেষ্ট, http://picasaweb.google.com/pothique/SummerOfOSeven/photo#5076519234084145890। অথচ প্রবল তাড়ায় এটা আমরা প্রায় মিস করে যাচ্ছিলাম। বউয়ের 'চল তো দেখে আসি কি আছে'কে মান্য করে পার্কিং লটে গাড়ী রেখে হাঁটা শুরু করেছিলাম নাক শিঁটকেই। সামনে এসে দাঁড়ানোর পর অবশ্য নাক নিজের জায়গায় ফিরে আসে। কানে ভেসে আসে সমবেত ওয়্যাওধ্বনি। ফ্রেঞ্চ ও জাপানীতে চাপা গুঞ্জন। আমার বড় অবিশ্বাস। ভগবানে অবিশ্বাস, সিএনএনে অবিশ্বাস। কি জানি কেন, এই পাথরটাকে বিশ্বাস করলাম। যদিও এই রুক্ষ মরুভূমির মাঝে মানুষ বাস করত ভাবতে কষ্ট হয়েছে। চাষবাসের কোন প্রশ্নই নেই। এমনকি শিকার যে করা হবে এমন জন্তু কোথায়? হয়ত আগে ছিল। বউকে বল্লাম, জানো এদের আঁকা দেখে ভরসা পাই। রেড ইন্ডিয়ান হলে আমিও বোধ হয় রিস্ক নিয়ে আর্টিস্ট হয়ে যেতাম। বউ মুখ টিপে হাসে। আমার আঁকার দৌড় ও জানে।

    এ অঞ্চলে যে ইন্ডিয়ানরা থাকত তার আরো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আছে মেসা ভের্দেতে, http://picasaweb.google.com/pothique/SummerOfOSeven/photo#5076517988543629922। পাহাড়ের ছোট্ট একটা খোঁদলে বানানো এই মিনিশহরে হয়ত শ'দেড়েক লোক থাকত ম্যাক্স। পার্কিং লট থেকে একশ' ফিট মত নিচে নামতে হয় সরু ঢাল বেয়ে। না সায়েবদের তাড়া খেয়ে নয়, এখান থেকে ইন্ডিয়ানরা চলে গিয়েছিল হয়ত কোন প্রাকৃতিক কারণে, এগারশ' সাল নাগাদ। কাউবয় হ্যাট পরা সাদা গাইড প্রথমেই হাত ধুয়ে ফ্যালেন। তারপর বুঝিয়ে বলেন আরো অনেক খুঁটিনাটি। ঢোকার পথ কোনটি, বাড়ীর জানলাগুলো কেন ঐদিকে, পাথরের গায়ে কালচে দাগগুলি কি হতে পারে, আলোচনাগৃহ কোনগুলি, চারতলা বাড়িটি যার ছিল তার সোশাল স্ট্যাটাস কেমন, যে দুটো বাড়ীর মধ্যে বিয়ে হত তাদের মধ্যে একটা গোপন সুড়ঙ্গ বানানো হত কেন ইত্যাদি চাঞ্চল্যকর অনেক কিছু। অবশ্যি আমার মেয়ে ওনার অনেক কথার সাথেই একমত হতে পারেনি। এবং ন্যায্য কারণেই সোচ্চার প্রতিবাদ জানিয়েছিল বহুবার। ওখান থেকে ওঠাটা নামার চেয়ে একটু বেশী চ্যালেঞ্জিং। মোট তিনটি আট থাকের মই বেয়ে উঠতে হয়। মেয়েকে কোলে করে মই ওঠাও এবার আমার বায়োডেটাতে ঢুকে গেল।

    আর্চেজ। এই পার্কটা নিয়ে দুকথা না বলা অন্যায় হবে। ছোট ন্যাশানাল পার্কের মধ্যে জায়নের সাথে একদম উপরের দিকে থাকবে আর্চেজ। জিওলজির গুঁতোয় পাথর কখনো কখনো আর্চের আকার ধারণ করে দ্রষ্টব্য হয়। এরকম প্রায় হাজার দুই ন্যাচারাল আর্চ এই পার্কে আছে। তার মধ্যে পপুলারিটিতে এগিয়ে থাকা দুটি হল http://picasaweb.google.com/pothique/SummerOfOSeven/photo#5076519813904730882 এবং http://picasaweb.google.com/pothique/SummerOfOSeven/photo#5076520166092049170। উল্টোদিকে সূর্য্য থাকায় ছবিগুলো একটু অন্ধকার অন্ধকার হয়েছে। দ্বিতীয়টিতে পৌঁছতে আমাদের প্রায় আধ মাইল হাঁটতে হয়েছিল এবং দুশো ফিট উঠতে হয়েছিল। দুশো ফিট ওঠা মানে কুড়ি তলা বাড়ি সিঁড়ি বেয়ে ওঠা। ভুঁড়ি এবং মেয়ে নিয়ে উঠলে কপালে কয়েক ফোঁটা ঘাম হবেই হবে। ঐ শুকনো ওয়েদারেও। ওঠার পর দমকা হাওয়ার ঝাপটা খেলে অবশ্য সব ক্লান্তি মুছে যাবে। সিগনিফিকেন্ট আদারের সঙ্গে ঝগড়াও মিটে যাবে।

    নেভাডার গ্রেট বেসিন পার্কে বলার মত তেমন কিছু নেই। শুধু লেম্যান কেভটা চমৎকার। ছোট্ট। কিন্তু রক ফর্মেশানে ঠাসা। স্ট্যালাকটাইট, স্ট্যালাগমাইট ছাড়াও শিল্ড আর কেভ বেকন নামে দুটো রেয়ার ফর্মেশান দেখলাম। আগেকার দিনে মোমবাতির আলোয় গুহার মধ্যে নেভিগেশনের সমস্যার কথা বুঝিয়ে দিলেন গাইড। বললেন কিভাবে মশাল দিয়ে পাথর দাগিয়ে দেওয়া হত। কিভাবে পাথরের নাম রাখা হত। গুহা নাকি কোন কোন ইন্ডিয়ানদের কবরস্থান ছিল।

    মোনো লেকের পাড়ে লী ভাইনিং শহরটি ইয়োসেমিটের একদম দোরগোড়ায়। এখানে একদিন রাত্রিবাস করেছিলাম। চান টান করে 'লেক আবার কি দেখব' মনোভাব নিয়ে দেখতে গিয়েছিলাম মোনো লেক। কিন্তু ভালো লেগেছিল, http://picasaweb.google.com/pothique/SummerOfOSeven/photo#5076524452469410642। ছবিতে যে স্ট্রাকচারগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলোকে বলে টুফা। চারপাশ পাহাড়ে ঘেরা এই লেকে কোন নদী এসে পড়েনি। তাই এর থেকে জল বেরোনোর একমাত্র উপায় ইভাপোরেশন। আর জল ঢোকার একমাত্র উপায় হল বৃষ্টিপাত। তাই লেকের বুকে বহু পুরোনো ক্রিস্ট্যাল ফর্মেশন আজো অটুট রয়েছে। ১৯৫০ নাগাদ লস এঞ্জেল্‌সে লোকসংখ্যা যখন খুব বাড়ছিল, তারা খাবার জল এই লেক থেকে টেনে নেওয়া শুরু করে। দু তিন দশকের মধ্যে লেকে জলের ভলিউম অর্ধেক হয়ে যায়, উচ্চতা পঁচিশ ফিটের বেশী কমে যায়। যেসব ফর্মেশন সাধারনত জলের তলায় থাকত সেগুলো মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে এবং বহু পাখির ডেরা হয়। এখন প্রকৃতিপ্রেমীরা অনেক যুদ্ধ করে এই লেকের মৃত্যু ঠেকিয়েছেন। সেই বিকেলে মোনো লেকের রাজনৈতিক ইতিহাসের সাক্ষী, টুফাদের সাথে দেখা হয়ে গেল।

    টিয়োগা পাস দিয়ে ঢোকার মুখেই বউ এমন হাঁইহাঁই করল আমি ভয়ে রাস্তাতেই গাড়ী থামিয়ে দিলাম। তারপর দেখি কিস্যু না, মোটে দুটো হরিণ জল খাচ্ছে, http://picasaweb.google.com/pothique/SummerOfOSeven/photo#5076525247038360434। আমার কোন দোষই নেই। যাহোক, পরে ভালুকও দেখলাম। আমার এই অ্যাওয়ার্ড উইনিং ছবিতে ভালুকটা খুঁজে বার করতে পারলে আপনারাও একটা করে অ্যাওয়ার্ড পাবেন, http://picasaweb.google.com/pothique/SummerOfOSeven/photo#5076536615816793026। তখন আমি বেশ দূরে, ভালুকটাকে সবেমাত্র দেখেছি। আমার ৮৫ মিলিমিটার লেন্স আর এর বেশী পারেনি। এরপর যত ভালুকের দিকে এগিয়েছি ছবিতে ভালুকের সাইজ বড় হয়েছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল প্রায় কোন ছবিতেই ভালুকের মুখ ওঠেনি, উঠেছে শুধু পাছা। মরুক গে। আমি বাইনোকুলার দিয়ে আশ মিটিয়ে দেখেছি। বেশী ছবি তুলতে গেলে দেখাটাই ভালো করে হয় না।

    পুরো বেড়ানোয় আমরা একদিনও খারাপ ওয়েদার পাইনি। রোদ ঝলমলে এগারোটি দিন কাটিয়ে সোমবার বিকেলে যখন আমরা স্যান ডিয়েগো থেকে মাইল চল্লিশ দূরে, আকাশে রাজ্যের মেঘ ঘনিয়ে এল। রেস্ট এরিয়াতে নেমে এই প্রথম বারের জন্য জ্যাকেট পরতে হল। ভাগ্যিস এনেছিলাম!

    (ফুটনোট: বেড়ানোর কিছু ছবি পাওয়া যাবে এই সাইটে, http://picasaweb.google.com/pothique)
  • Blank | 74.133.***.*** | ১৯ জুন ২০০৭ ০৮:১১693937
  • বেড়ে হয়েছে ছবি গুলো। আমার ভাল্লুক দেখে ফের দু:খু হলো যে আমি ভাল্লুকের ছবি তুলতে পারি নি ভাল করে। :(
  • I | 172.159.***.*** | ১৯ জুন ২০০৭ ১৯:৫২693938
  • যা, শেষ হয়ে গেল !
  • tan | 131.95.***.*** | ১৯ জুন ২০০৭ ১৯:৫৯693939
  • দ্রি,দ্রি, এ কি কান্ড! দুর্দান্ত!

  • dri | 75.5.***.*** | ১৯ জুন ২০০৭ ২২:২৫693940
  • দ্রি,আপনার লেখার গুনে ঘুরে এলাম আর দেখেও এলাম।
  • Jay | 10.2.***.*** | ২০ জুন ২০০৭ ০০:৫৬693941
  • কিছু ছবি আছে এখানে http://picasaweb.google.com/drjraut/CornwallTintagel সামনে পরীক্ষা আর চাকরীর গুঁতো। সময় পেলে লিখবো। c অবশ্যি ভালো লিখতে পারে। সে লিখবে কিনা তা জানিনা। জিগাবো
  • m | 71.239.***.*** | ২০ জুন ২০০৭ ০২:২৮693943
  • দ্রি,
    চমৎকার:))
  • Bratin | 117.194.***.*** | ০১ আগস্ট ২০০৯ ১০:২৮693944
  • দিল্লী এয়ার্পোটের র লাউঞ্চ থেকে বেড়িয়ে টাক্সি ধরার জন্যে অপেক্ষা করতে করতে ই বেশ ভাজা ভাজ হয়ে গেলাম। বুঝতেই পারলাম এ র পরে বেশ চাপ আছে। যাই হোক শমীক র বুক করা হোটেল এ চলে গেলাম । করোলবাগ এ। দিব্যি ব্যবস্থা।আমরা তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ সেরে রেডি। এর মধ্যে হোটেল র গাড়ি ও তৈরি। প্রথম গন্তব্য। 'হুমায়ুনের সমাধি' ।হুমায়ুনের মৃত্যুর ৯ বছর পরে এটি তৈরি করেন হাজী হামিদা বেগম( আকবরের মা)। সেই সময় সে টির আনুমানিক খরচ হয়েছিল ১৫ লক্ষ টাকা। পরে হমিদা বেগম,এবং দারা,সুজা মুরাদ ও এখানেই সমাহিত।শেষ মোগল সম্রাট বাহদুর শাহ এখানেই শায়িত। ১৯৯৩ এ এটি UNESCO 'world heritage ' র তকমা পায়। লাল রং র বেলে পাথরে ,মোগল শিল্প সুষমিত এই মনোরম নির্মাণ টি অসাধারন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন