এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • দুনিয়া কাঁপানো পাঁচ মিনিট

    dd লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ২৪ আগস্ট ২০১৫ | ২৫৫১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:১৫685217
  • ইটি আরেকটি প্রবন্ধ। সেই যুদ্ধ টুদ্ধ নিয়েই।

    আমি পার্ট বাই পার্ট পোস্ট করছি ,কিন্তু চাইলে আপনারা এক নিঃশ্বাসেই পড়ে ফেলতে পারেন।

    কিন্তু আমি কেনো ব্লগে ঢুকতে পারি না? কি অবিচার।
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:১৬685228
  • দুনিয়া কাঁপানো পাঁচ মিনিট
    ********************************************
    বাজে গুরু গুরু শংকার ডংকা......
    -----------------------------------------------------------------------
    ১৯৪২ সালের মাঝামাঝি সময় সেটা।

    প্রশান্ত মহাসাগরে জাপান আর আমেরিকার দ্বৈরথে একটা সন্ধিক্ষন।
    এর প্রায় ছয় মাসে আগে, ৪১'র ডিসেম্বরে পার্ল হারবারে ঝটিকা হানা দিয়ে জাপান সাগর যুদ্ধে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক শক কেটে যাবার পর দেখা গেলো ওটা নক আউট পাঞ্চ কিছু নয়। আমেরিকার ক্ষয় ক্ষতি বিপুল। কিন্তু আমেরিকার সৌভাগ্য যে তার একটিও এয়ারক্রাফট কেরিয়ার সে সময় পার্ল হারবারে হাজির ছিলো না, তাই বিমানবাহী রণপোত অক্ষুন্নই রয়ে গেছে।
    অতঃ কিম ? দুই পক্ষই ভাবছে।
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:১৮685236
  • বাধা দিলে বাধবে লড়াই .....
    *************************************************
    জাপান তখনো আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। কেননা মহাসাগরের লড়াইতে তখনো জাপান অপরাজিত। শুধু একটানা বিজয়ের স্বাদই পেয়ে এসেছে তারা। পতন হয়েছে একের পর এক মিত্র শক্তির দুর্গ। হংকং, সিংগাপুর,ওয়েক আইল্যান্ড,গুয়াম, বাতান,করীগিডর,ফিলিপাইনস, ডাচ ওয়েস্ট ইন্ডীস,সলোমন,গিলবার্ট ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ। তুলনায় আমেরিকান নৌ সেনারা অনেক অনভিজ্ঞ। আর অস্ত্র প্রতিযোগিতাতেও জাপান দু কদম এগিয়ে। জাপানী জিরো ফাইটারের সমতুল্য বিমান আমেরিকার নেই। জাপানী বিমান বাহিত টর্পেডোও আমেরিকান টর্পেডোর তুলনায় অনেক বেশী পারদর্শী। জাপানী নৌবহর বেশ কয়েক বছর লড়াই করে সে সময়কার সবথেকে অভিজ্ঞ সেনাদের অন্যতম। আরে আরেকটি বড় কারন, যাকে জন কীগান বলেছেন " বিজয়ীর অসুখ" (Victory diesease) বলে সেটি হছে অতিরিক্ত দর্প। তারা রণং দেহী মতবাদেই বিশ্বাসী। যদিও খোদ জাপানেই এই আগ্রাসী মনোভাবের বিরোধী , "সাবধানে পা ফেলো" নীতির প্রবক্তাও নিতান্ত কম ছিলো না।

    কিন্তু জাপানীরা জানতেন না, আমেরিকার হাতে তখন রয়েছে এক ব্রহ্মাস্ত্র। সেটি হচ্ছে তাদের ">myaajik<" নামের ডিক্রিপশনের কৌশল। অর্থাৎ তাঁরা জাপানীদের গোপন কোড সব পড়ে ফেলতে পারতেন। আর আরেকটি ট্রাম্প কার্ডও তাঁদের হাতে সেটি হছে সে সময়কার আমেরিকান কালচার। তখনকার সব আমেরিকান তরুনই পাইলট হতে চাইতেন। যদিও রনতরী থেকে নিক্ষিপ্ত বিমান চালানো ছিলো এক দারুন বিপদ সংকুল কাজ। হতাহত হতো প্রচুর - তাও ঐ পাইলটের পোস্টের জন্য হুড়োহুড়ি পরে যেতো। দেশের সব চেয়ে সেরা লড়াকু ট্যালেন্ট তখন ট্রেইনিং নিচ্ছেন - সেই তুলনায় জাপানীদের ট্রেইনিং ছিলো খুব দুর্বল। তার অযথা দেশপ্রেম ও সম্রাটের উপর ভক্তির উপর অত্যাধিক জোর দিতেন।

    এই " এরপর কি হইবে ? " নিয়ে যখন যখন তর্ক বিতর্ক চলছে জাপানে তখন আমেরিকানেরা এক দুঃসাহসিক কাজ করে ফেললেন।

    ৪২এর এপ্রিল মাসে জাপান থেকে প্রায় ৬৫০ মাইল দুরত্বে, বিমানের রেঞ্জের শেষ সীমায়, আমেরিকান বিমানপোত থেকে উড়ে গেলো ষোলোটি বি- ২৫ বোমারু বিমান। কয়েকটি বোমা তারা ফেললো টোকিয়ো,কোবে, নাগোয়া ও ওসাকা শহরে। ক্ষয়ক্ষতি ? অতি সামান্য। টোকিয়ার নাগরিকেরা টেরই পান নি। মাঝ রাতে আওয়াজে যদি বা ঘুম ভেঙেছিলো কারুর, পরে দিনের সম্পুর্ন নিউস ব্ল্যাক আউটের ফলে তারা কিছুই জানতে পারেন নি।

    কিন্তু জাপানে দোনোমনো ভাব আর রইলো না। তাঁদের সম্রাট আর সুরক্ষিত নন। যে কোনো সময়েই আমেরিকান বোমারু আবার আঘাত হানতে পারে। তাই সংশয়বাদীদের আর কোনো ভুমিকাই রইলো না। চাই যুদ্ধ। চাই মুখোমুখী এক লড়াই। ধ্বংশ করে দিতে হবে আমেরিকান নৌবলকে। সবাই একমত। কিন্তু চাইলেই বা সেই যুদ্ধ হবে কি করে? আমেরিকা যদি ক্রমাগতঃই পালিয়ে বেড়ায় ?

    চাই এক ফাঁদ। সাব্যস্ত করলেন জাপানী নৌবলের সর্বাধিনায়ক ইয়ামামতো।
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:২০685237
  • ঐ দেখ, পশ্চিমে মেঘ ঘনালো ......
    ************************************************************
    প্রশান্ত মহাসাগরে ছোট্টো দ্বীপ - মিডওয়ে। সেখানে আমেরিকার ঘাঁটী। পার্ল হারবারে হানার সময় এই ছোটো দ্বীপটিতেও বোমা ফেলেছিলো জাপানীরা। জাপানের মুল ভুখন্ড জুড়ে চক্রাকারে ঘিরে রেখেছে দ্বীপপুঞ্জের প্রহরী দেওয়াল, তারি মধ্যে ছোটো ফুটো যেন এই মিডওয়ে দ্বীপটি।এই দ্বীপের বিমানপোতে হাজির থাকে প্রাত দেড়শো বিমান। এই কাঁটাটিকে সমুলে দুর করতে না পারলে জাপানের প্রতিরক্ষা সম্পুর্ণ হবে না। তাছাড়াও এই দ্বীপ দখল করে বসলে আমেরিকানদের আসতেই হবে এই দ্বীপ পুনরুদ্ধ্বার করতে - আর তখনো মুখোমুখী লড়াইতে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে আমেরিকান প্রতিপক্ষকে। এটাই প্ল্যান।

    খুব চুপিচুপি মিডওয়ে দ্বীপ দখলের প্ল্যান করতে হবে যাতে অতর্কিত এক ঝটকায় খুব সহজেই জিতে যায় জাপানীরা।

    ঠিক হলো ৪ জুনে, জাপানী এক নৌবহর গিয়ে দখল নেবে মিডওয়ের। আর আমেরিকানদের বিভ্রান্ত করতে সুদুউর উত্তরে অ্যালিউশিয়ান দ্বীপের দিকে পাঠানো হবে এক ঝাঁক যুদ্ধ জাহাজ - সেটা নেহাৎই এক ডাইভারশনারী ট্যাকটিক।

    জাপানীরা কিছুটা অসাবধানী হয়েও পরেছিলেন। অতো বড় আক্রমন হবে। ঘন ঘন রেডিও বার্ত্তা আদান প্রদান হছে। এই ধরনে হঠাৎ করে রেডিও ট্র্যাফিক বেড়ে যাওয়া একটি আগামী আক্রমনের সুস্পষ্ট ইংগিত। আমেরিকানরা তাঁদের ম্যাজিক ডিক্রিপশনের ফলে জানতেও পারছে জাপানীদের গোপন প্ল্যান।
    তারা জানলেন যে ৪ জুন জাপানীরা একট দ্বীপ আক্রমন করবেন । কিন্তু কোন দ্বীপ ? তাদের বার্ত্তায় জাপানীরা একবারও মিডওয়ের নাম উচ্চারন করেন নি। মিডওয়ের জাপানী কোড ছিলো এ এফ। আমেরিকানেরা যদিও সন্দেহ করছিলো যে এ এফ মানে মিডওয়েই, এটি ই জাপানীদের লক্ষ্য ,তাওও একেবারে ১০০% নিশ্চিত তো ছিলেন না।

    তারাও পাল্টা ফাঁদ পাতলেন। মিডওয়ে দ্বীপ থেকে (জাপানীরা পড়তে পারে এইরকম একটি পুরোনো সংকতে) তারা খবর পাঠালেন আমাদের পানীয় জলের ফিলট্রেশন প্ল্যান্টটি অচল হয়ে গেছে। ব্যাস !! ওতেই ধরাশায়ী হলো জাপানীরা। তারাও খবর পাঠালেন যে এ এফ দ্বীপে চলছে পানীয় জলের সংকট। আমেরিকানদের আর সংশয় থাকলো না।
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:২৩685238
  • জয়যাত্রায় যাও গো......
    **********************************************

    আমেরিকান শিবিরে সাজ সাজ রব। ঝটিতি যতগুলি পারা যায় যুদ্ধ জাহাজ যোগার করে মিডওয়ে দ্বীপের দিকে রওয়ানা হতে হবে। হাতে তো কুল্লে দুটি বিমানবাহী জাহাজ। ইয়র্কটাউন গুরুতর জখম। ইনজিনীয়ারেরা বললেন তিন সপ্তাহ লাগবে ইয়র্কটাউনকে জলে ভাসাতে। অ্যাডমিরাল নিমিত্জ বললেন তিন দিন সময় দিচ্ছি। ঐ জাহাজ আমার চাই। প্রায় দেড় হাজার কর্মী টেকনিসিয়ান রাত দিন খেটে কোনোরকমে তাপ্পি মেরে ইয়র্কটাউনকে আবার জলে ভাসালেন। নিমিত্জের হাতে তিনটি বিমানবাহী জাহাজ , হর্নেট, এন্টারপ্রাইজ আর সদ্য রিপেয়ার্ড ইয়র্কটাউন,আর মিডওয়ে দ্বীপকে একটি অচল বিমানবাহী জাহাজ ধরলে সাকুল্লে চারটি। কিছু ডেস্ট্রয়ার,ক্রুইজার ইত্যাদি নিয়ে মোটমাট ২৭ খানি রণপোত। আমেরিকানদের বিভ্রান্ত করতে প্রশান্ত মহাসাগরে যেখানে যতগুলি জাহাজ ছিলো,জাপানীরা তাদের সবগুলিকেই বন্দর ছেড়ে দরিয়ায় ভাসিয়ে দিলেন। আর উত্তরে অলেশিউয়ান দ্বীপের উদ্দেশ্যে তাঁরা পাঠালন আরেক ঝাঁক জাহাজ যাতে আমেরিকানরা ভাবে ওটাই জাপানীদের মূল লক্ষ্য।
    তুলনায় জাপানীদের হাতে চারটি এয়ারক্র্যাফট কেরিয়ার, আকাগী (লাল দুর্গ),কাগা (বর্ধিত আনন্দ),হিরয়ু (উড়ন্ত ড্রাগন) ও সরুয়ু (সবুজ ড্রাগন)। এবং বাকী সহযোদ্ধা নিয়ে ১২৭টি রনপোত। আর জাপানী জাহাজ গুলি আয়তনেও বড়। তাঁদের ফ্লাইং ডেকে গড়ে আশিটি বিমান - আমেরিকানদের জাহাজে আঁটে ৬৭টি।

    অ্যাডমিরাল ইয়ামামতো হয়তো কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন যে আমেরিকানরা তাঁদের অভিষন্দী টের পেয়েছেন। কেননা পার্ল হারবার থেকে গোপন রেডিও বার্তা খুব বেড়ে গেছিলো, যার মধ্যে অধিকাংশই আর্জেন্ট। কিন্তু কোনো কারনে ইয়ামামতো সেই সাবধানবানী পাঠান নি নৌ অধ্যক্ষ নাগুমোকে। নাগুমো নিশ্চিন্ত ছিলেন।

    তবে নাগুমোর অতোটা "নিশ্চিন্ত" হওয়াটাও হয়তো উচিৎ ছিলো না। আমেরিকান নৌবহর প্রশান্ত মাহাসাগরের কোথায় লুকিয়ে আছে এই খবর প্রায় কিছুই জানা ছিলো না জাপানীদের। শেষ খবর যা পেয়েছিলেন সেটি প্রায় তিন সপ্তাহের পুরনো খবর - আমেরিকান প্যাসিফিক ফ্লীট তখন সলোমন দ্বীপের কাছে।

    হাওয়াই দ্বীপ থেকে আমেরিকান শেষ ১৮০ টি রেডিও বার্ত্তার মধ্যে ৭২ টি ছিলো "আর্জেন্ট" মার্কা। জাপানীরা আমেরিকান সংকেতবানী পড়তে না পারলেও এই খবরে তাদের একটু সাবধানী হওয়া উচিৎ ছিলো - যে সব বোধহয় ঠিক ঠাক চলছে না।
    তবে প্রায় ৭০+ বছর আগের দিনগুলির বিচার করতে গেলে সেই সময়কার প্রচলিত জ্ঞান ও ধারনাও বোঝা উচিৎ।

    সেই সময়কার সাগর যুদ্ধের তত্ত্ব অনুযায়ী জাহাজবাহী বিমানের উপযোগিতা নিয়ে খুব একটা নিঃসন্দেহ কেউ ছিলেন না। বৃটীশরা তো নৌ বাহিনীর বিমানএর ভুমিকা স্কাউটিংএর বেশী - এটা চিন্তাই করতে পারতেন না। যদিও আমেরিকান ও জাপানীরা আস্তে আস্তে বুঝতে পারছিলেন যে নৌ বহরের মুখ্য অস্ত্র এই এয়ারক্র্যাফট কেরিয়ারেরাই , ব্যাটেলশিপ নয়।

    এই মিডওয়ের যুদ্ধের কিছুদিন আগেই কোরাল সীতে একটি ছোটো খাটো লড়াই হয়েছিলো - জাপান বনাম আমেরিকার। সেটিই প্রথম নৌ যুদ্ধ যেখানে লড়াই হয়েছিলো দুই প্রতিপক্ষের বিমানের মধ্যে। ফলাফল ছিলো সম্মানজনক ড্র কিন্তু সেই সময়কার আন্ডারডগ আমেরিকার কাছে ওটি ছিলো এক মরাল ভিকট্রি।
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:২৬685239
  • পিনাকেতে লাগে টংকার.......
    *************************************************
    চৌঠা জুন ১৯৪২,

    তখনো ভোরের আলো ফোটে নি। রাত সাড়ে তিনটে - জাপানী জাহাজ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বোমারু বিমান উড়ে গেলো মিডওয়ে দ্বীপ আক্রমনে। আমেরিকানেরা প্রস্তুত ছিলেন। তাঁদের ফাইটার বিমান ও বিমান বিদ্ধংশী কামানের গোলায় ভরে গেলো আকাশ। কিন্তু সেই লৌহ বেষ্ঠনী ভেদ করে জাপানী বোমারুরা মিডওয়ের রানওয়েতে যথেচ্চ বোমা বর্ষন করলেন। খুব ক্ষতিগ্রস্থ হলেও সেটি সম্পুর্ন অচল হলো না, বোমারু বিমানের অধ্যক্ষ,রেডিও বার্তা পাঠালেন আরেকবার আক্রমন করতে হবে।

    এইখানে খুব জরুরী টীকা আবশ্যক। মিডওয়েতে আক্রমন করতে গেলে বিমান বাহীনির চাই বিস্ফোরোক (হাই এক্সপ্লোসিভ) বোমা আর জাহাজকে আক্রমন করতে গেলে চাই টর্পেডো এবং লোহার পাত ভেদ করতে সমর্থ (আর্মার পিয়ার্সিং) ভারী বোমা।

    স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিওর বলে সব জাহাজেই একই ধরনের বোমারু বিমান রাখতে নেই। সাবধানের মার নেই। কিছু বিমানে টর্পেডো ও আর্মার পিয়ারসিং বোমায় সজ্জিত করে জাহাজের ডেকে রেখে দিতে হয়। তার সাথে চাই হাই এক্সপ্লোসিভ বোমায় সজ্জিত বিমানও।

    কিন্তু জাপানী রনকৌশল সব সময়েই ছিলো পুরো শক্তি দিয়ে আক্রমন করা। তাঁরা দোনোমনায় বিশ্বাস করতেন না।

    প্রথম দফার সাফল্যের পর জাপানী বোমারুরা আবার জাহাজের ডেকে ফিরে এলেন। নির্দেশ দেওয়া হলো আরেকবার আক্রমনের। আবার নতুন বোমা বোঝাই করো, তেল ভরো,ক্ষতিগ্রস্থ বিমানগুলিকে পরীক্ষা করো - কতগুলি আবার উড়তে পারবে ? হুলুস্থুলু কান্ড।

    ইতিমধ্যে টোন ৪ নামের একটি জাপানী স্কাউট বিমান খবর পাঠালো (সকাল সাড়ে সাতটায়) আমেরিকান ফ্লীটকে দেখা গেছে। প্রায় ১৮০ মাইল দূরে আছে। সেই বিমানটিকে প্রশ্ন করা হলো আমেরিকান ফ্লীটে কোনো এয়ারক্রাফট কেরিয়ার আছে ? টোন ৪ উত্তর দিলো হ্যাঁ। একটিকে দেখা যাচ্ছে।

    এই টোন ৪এর ভুমিকা নিয়ে শয়ে শয়ে প্রবন্ধ লেখা হয়েছে

    অনেকেই দায়ী করেছেন সেই পর্য্যবেক্ষক বিমানটিকে ,অনেকে করেছেন জাপানী নৌ অধ্যক্ষ নাগুমোকে। বা দুজনেরই কিছু ত্রুটি ছিলো। আর বাকীটা যাকে বলে "কপাল,মশাই কপাল, স্রেফ ব্যাড লাক"।

    একটি সম্ভাব্য থিওরী, টোন ৪ আমেরিকান ফ্লীটের দুরত্ব ঠিক মতন মাপতে পারে নি। আসলে যা দুরত্ব ছিলো তার থেকে বেশী দুরে তাঁরা প্লট করেছিলেন। দুশো মাইল দুরে থাকলে সেটি টর্পেডো বাহী বিমানের রেঞ্জের বাইরে হয়। প্রথম রিপোর্টে সেই মতন দুরত্বের আভাষ পেয়ে নোগুমো বোধহয় কিছুটা অসাবধানী ছিলেন।

    এর সাথেই - ঐ যাকে বলে কপাল! আমেরিকান ফ্লীটের পর্য্যবেক্ষকেরাও ভুল করলেন । তাঁদের হিসাব মতন জাপানী ফ্লীট প্রকৃত দুরত্বের থেকী বেশী কাছে - এই ভুল প্লট করলেন। তাঁরাও ,সেই মতন বোমারু ও টর্পেডোবাহী বিমান লঞ্চ করে দিলেন । হর্নেট ও এন্টারপ্রাইজ থেকে বোমারু ও টর্পেডোবাহী বিমানেরা উড়তে শুরু করলো সকাল সাতটায়। তার আধ ঘন্টা পরে ইয়র্কটাউনের বোমারু ও টার্পেডোবাহী বিমানেরা তাদের যাত্রা শুরু করলেন।সব মিলিয়ে প্রায় ১৫০ টি বিমান। তাদের লক্ষ্য জাপানী ফ্লীট যা প্রায় ১৭৫ মাইল দুরে।

    নাগুমো তখনো কিছুটা সন্দিগ্ধ। আবার মিডওয়ে আক্রমন করবেন না আমেরিকান ফ্লীটের প্রতিআক্রমনের জন্য প্রস্তুত থাকবেন? এই চিন্তা ভাবনার সময়েই মিডওয়ে থেকে এক ঝাঁক আমেরিকান ডাইভ বম্বার আর টর্পেডোবাহী বিমান আক্রমন করলো। সেই আমেরিকান আক্রমন অতি সহজেই গুঁড়িয়ে দিলেন জাপানী ফাইটার আর বিমানঘাতী কামান। প্রায় সদলে ধ্বংশ হলো আমেরিকান হানা।

    কিন্তু এর ফল হলো সুদুর প্রসারী। নাগুমো আর দ্বিধাগ্রস্থ রইলেন না। নির্দেশ দিলেন মিডওয়েকে আবার হানা দেবার জন্য।
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:৩১685240
  • দারুন অগ্নিবানে রে …….
    ***********************************************

    নাগুমো জানতেন যে আমেরিকান ফ্লীট আগাত করার মত দুরত্বে এসে গেছে। নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিলেন যে তার "সারপ্রাইজ অ্যাটাক " বিফলে গেছে। তাও প্রতিরক্ষার দিকে মন না দিয়ে তিনি আবার মিডওয়েতে আক্রমনের নির্দেশ দিলেন।

    একটি কারন, তাঁর স্কাউট বিমানটি আমেরিকান ফ্লীতের দুরত্ব ঠিক মতন মাপতে পারে নি। ভুল করে অনেক বেশী দুরে প্লট করেছ - যার ফলে নগুমো মনে করেছিলেন মিডওয়ের দ্বীপের আমেরিকান বিমানেরাই এক নম্বর শত্রু। তাঁদের ঘায়েল করাই প্রাথমিক কর্ত্তব্য।

    সেই মতন তাঁর বোমারু বিমানের দল উড়ে গেলো মিডওয়ের দিকে এবং দ্বিতীয় দফার হানাতেও যথেচ্চ বোমা ফেলে মিডওয়ের রানওয়ে প্রায় চুর্ণ করে ফিরে এলো তাঁদের বিমান বাহী জাহাজগুলিতে। প্রায় তখন সকাল নটা। জাপানী চারটি বিমান বাহী জাহাজে গিজ গিজ করছে মিডওয়ে ফেরৎ বিমানেরা। জখম হওয়া বিমানগুলিকে ঘিরে ধরেছে টেকনিশিয়ানেরা। সচল বিমানগুলিতে ফের তেল ভরা হচ্ছে। টেকনিশিয়ানেরা ব্যাস্ত। হোস পাইপ, যন্ত্রাংশ ,মেডিকাল টীমের লোকে জাহাজের ডেকে এক হুলুস্থুলু কান্ড।

    সাড়ে নটা নাগাদ, আমেরিকান বিমানবাহী জাহাজ থেকে উড়ে আসা প্রথম দুই ঝাঁক আমেরিকান টরপেডো আর ডাইভ বম্বার জাপানী জাহাজের কাছে পৌঁছে গেলো।

    সেই সময়কার জাপানী জিরো (zero) ফাইটার ছিলো সবথেকে ক্ষিপ্রগামী বিমান। জাপানী বিমান বিদ্ধংশী কামান এবং বিশেষতঃ জিরো ফাইটারের একচেটিয়া প্রাধান্যয় কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমেরিকান আক্রমনকারী বিমানেরা প্রায় সব কটিই ধ্বংশ হলো। অল্প কয়েকটি ,যারা চুর্ন হয় নি, তারা কোনোরকমে প্রান নিয়ে পালিয়ে গেলেন।

    আকাশ আবার পরিষ্কার। নাগুমো এবার তার গতিপথও একটু বদলালেন। এতো সহজেই আমেরিকান হানাকে পর্য্যুদস্ত করে তিনি নিশ্চয়ই আশ্বস্ত হলেন। তাঁর হিসেব মতন আমেরিকান ফ্লীট এখনো অনেক দুরে। এবং তাঁর প্রথম লক্ষ্য মিডওয়ে দ্বীপের রানওয়ে বিদ্ধ্বস্ত। সেখান থেকে বিমান হানার আর কোনো চান্স নেই। ব্যাস! বিজয় তো হাতের মুঠোয়।

    বেলা তখন দশটা। আমেরিকান জাহাজ ইয়র্কটাউন থেকে ঘন্টা খানেক আগে দুই ঝাঁক বিমান রওয়ানা হয়েছে জাপানী ফ্লীটের দিকে। আগের যে দুই ঝাঁক আমেরিকান বিমান হানা দিয়েছিলো, তাঁদের সাথে একসাথে লক্ষ্যস্থলে পৌছাতে পারে নি। আধ ঘন্টার মতন দেরী হয়েছে।
    নাগুমো সবে একটু আশস্ত হয়েছেন তখনই সেই টর্পেডো বোম্বার গুলিকে দেখা গেলো।

    আসলে কথা ছিলো একই সাথে টর্পেডো আর ডাইভ বম্বারের ঝাঁক আক্রমন করবে কিন্তু নাগুমো তার গতিপথ বদলানয় ডাইভ বম্বারদের টীম লীডার বিভ্রান্ত হয়ে পরেছিলেন। লক্ষ্যস্থলে পৌছতে আধ ঘন্টাটাক দেরী হলো তাঁদের।
    আমেরিকান টর্পেডো বিমানের শেষ ঝাঁক টিকেও আবার অবহেলে টুকরো টুকরো করে দিলো জাপানী জিরো ফাইটার। অবহেলে।

    এবং...... এবং ঠিক এই সময়েই সেই পথভ্রান্ত আমেরিকান বোমারু বাহিনির শেষ ঝাঁক হাজির হলো। আকাশে প্রায় কুড়ি হাজার ফীট উচ্চতায়।
    এইখানে একটু টীকা আবশ্যক। টর্পেডো বিমান আক্রমনের সময় উড়ে আসে সমুদ্রের খুব কাছ দিয়ে,প্রায় ঢেউকে চুম্বন করে তারপর যে জাহাজটিকে আক্রমন করবে তার দুরত্ব ও গতিপথ হিসেব করে ,ঐ খুব নীচু লেভেলেই তার টর্পেডো লঞ্চ করে। তুলনায় ডাইভ বোমারু বিমানেরা ওড়ে আকাশের উঁচু লেভেলে । লক্ষ্যবস্তু কে চিহ্নিত করতে পারলে তবেই বাজপাখীর মতন ছোঁ মেরে ঝাঁপিয়ে পরে শিকারের উপর।

    আমেরিকান বোমারু বাহিনি জাপানী জাহাজগুলির কাছে এসে দেখে আকাশ পরিষ্কার। একটি জিরো ফাইটার নেই। থাকবে কোথায় ? তারা তখন আমেরিকান টরপেডো বিমানদের সাথে লড়াই শেষ করে তাঁদের জাহাজে ফিরছে। আকাশের উপর স্তরে একটিও জিরো ফাইটার নেই।
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:৩৪685241
  • জ্বল জ্বল চিতা দ্বিগুন দ্বিগুন ......
    ********************************************
    এক আমেরিকান পাইলটের জবানী। "কুড়ি হাজার ফীট উচ্চতায় আমরা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি জাপানী ফ্লীটের দিকে। দেখলাম ঐ উচ্চতায় একট ও জাপানী প্রতিরক্ষী বিমান নেই। আমি চারদিকেই নজর রাখছিলাম এবং ঝাঁপিয়ে পরা শুরু করে দিলাম। ....... আমরা অল্প একটু বাঁদিক ঘেঁষা 'কোর্স'নিলাম যাতে আমরা জাপানী ফ্লীটের সম্মুখে যেতে পারি। ফলে,কয়েক মিনিটের মধ্যেই,আমার ডানদিকে সম্পুর্ন জাপানী ফ্লীটকে দেখতে পেলাম।" an intoxicating view...."

    " আমাদের সকল আশা আর স্বপ্ন সার্থক হলো। ঐ জাহাজের দঙ্গলে দুটো লম্বা এবং সরু হলুদ রংএর আয়তক্ষেত্র প্রথমেই চোখে পরলো। বুঝলাম এ দুটি জাপানে এয়ারক্র্যাফট কেরিয়ারের ফ্লাইট ডেক। (জাপানীরা প্রায়ই তাঁদের ফ্লাইট ডেককে উজ্জ্বল হলুদ রংএ রঙীন করতেন। গভীর নীল সমুদ্রে ওটা একটা দারুন চোখে পরার মতন ছিলো)।

    ঐ উপর থেকে কি দেখছিলেন আমেরিকান পাইলটটি? জাপানী উদীয়মান সুর্য্যের বিশাল প্রতীক আঁকা থাকতো ফ্লাইট ডেকে। প্রায় ষাঠ ফীট লম্বা ও পাঁচ ফীট চওড়া সাদা রংএর বর্ডারের মধ্যে এক ঝলমলে গাঢ় লাল রঙের,পঞ্চাশ ফীটের ব্যাসের এক বৃত্ত !! "an enticing target"।

    " প্রত্যেকটি ক্যারিয়ারের ফ্লাইট ডেকেই বিমানে ঠাসা।.... আমরা ধাবমান ফ্লীটের একেবারে মধ্যস্থলে। ... আমরা আমাদের সৌভাগ্য দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবি নি এই রকম অরক্ষিত জাপানী জাহাজকে আমরা হাতের মুঠোয় পাবো। ...

    আমার প্লেনটিকে সামনে ঝুঁকিয়ে আমি আমার ডাইভ শুরু করলাম।.... এরকম টারগেট কখনো পাই নি। আমার খুবই ইচ্ছা ছিলো আমার বোমার প্রতিক্রিয়া দেখার। তাই পাঁচশো পাউন্ডের বোমাটি নিক্ষেপ করে আমি আমার রাডারকে লাথি মেরে আমার বিমানটিকে দাঁড় (stall) করিয়ে দিলাম। আমি যেন দাঁড়িয়ে রইলাম কি হচ্ছে সেটি দেখবার জন্য। দেখলাম আমার ফেলা ৫০০ পাউন্ডের বোমা আঘাত করেছে মাস্তুলের ডানদিকে আর দুটো ১০০ পাউন্ডের বোমা পরেছে জাপানী বিমানে ঠাসা ফ্লাইট ডেকের উপর। "

    এই পুরো লড়াইটিই ঘটলো মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে। আমেরিকান টরপেডো বিমানদের প্রতিহত করে জিরো ফাইটারেরা কেউ ফিরে গেছে/ যাচ্ছে তাদের জাহাজের ডেকে কেউ তখনো উড়ছে , কিন্তু সবাই অনেক কম উচ্চতায়।
    অবস্থা সামলে নিয়ে আবার আকাশে উপরে উঠে বোমারু বিমানের মোকাবেলা করতে - একটু গুছিয়ে নিয়ে আবার একটা ফরমেশনে ফিরতে ,পাঁচ ছ মিনিট সময় তো লাগবেই। কিন্তু ঠিক ঐ পাঁচ মিনিটের অগোছলো সময়ের মধ্যেই অত বড় যুদ্ধের ফলাফল নির্নয় হয়ে গেলো।

    জাহাজের ডেকে রাখা বোমা ভরতি বিমান, তাঁদের জন্য নামিয়ে রাখা টরপেডো,তেলের ট্যাংকার - এইসবে জাহাজগুলির ডেক ছিলো যেন এক একটি বারুদখানা।

    আরেক প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরন। " চলে আসবার সময় দেখতে পেলাম অন্ততঃ পাঁচটি জাহাজ আগুনে পুড়ছে।... সব থেকে বড় আগুন বিমানবাহী জাহাজগুলিতে। দারুন জোরে আগুন জ্বলছে আর তার সাথে প্রচন্ড বিস্ফরন। পিছনে ফিরে দেখি (জাপানী এয়ারক্র্যাফট কেরিয়ার) কাগার আগা পাশতলা আগুনে জ্বলছে। প্রকান্ড বিস্ফোরনে মধ্যিখান দিয়ে দুই টুকরো হয়ে গেলো কাগা - সেটা দেখলাম। তার মাস্তুলের কাছ দিয়ে একটা বিরাট আগুনের গোলা জাহাজ বিদীর্ন করে প্রায় বারোশো ফীট উঁচুতে ছড়িয়ে পরলো। মেঘের উপরেও সেই আগুনের একটি ঘন গোলা দাউ দাউ করে জ্বলছিলো।"
    পেট্রল এবং জাহাজের পেটের মধ্যে রাখা বোমা ও গোলার স্তুপে আগুন লেগে এই ভয়ানক বিস্ফোরন ।

    যুদ্ধের দেবতা পাশা খেলছিলেন। কখনো নাগুমো কখনো নিমিৎজ - দুই পক্ষই অজস্র ভুল ভ্রান্তি করেও টিঁকে যাচ্ছিলেন বারবার। কিন্তু শেষতম শেষ দানটি পরলো নিমিৎজের পক্ষেই।

    সকাল দশটা পঁচিশ থেকে দশটা তিরিশ,পর পর তিনটি বিমানবাহী জাপানী জাহাজ ডুবে গেলো। চতুর্থটি অর্থাৎ হিরয়ু তখনকার মরন রনেভংগ দিলেও বিমানের প্রতিরক্ষাহীন হয়ে বেশীক্ষন বেঁচে থাকতে পারলো না। বিকেল পাঁচটা নাগাদ আমেরিকান বোমারু বিমানে তাদের শিকারের দেখাপেলো এবং জাপান তার চতুর্থ বিমানবাহী জাহাজও হারালো। এন্টারপ্রাইজের ডাইভ বোম্বাররদের চারটি বোমা হিরয়ুর ডেকে আছাড়ে পরলো এবং আগুনে পুরে গেলো হিরয়ুর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত।

    আমেরিকাও হারালো তার ইয়র্কটাউন জাহাজটি। ঐ হিরয়ুর মরন কামড় ছিলো ঐটাই। বেলা এগারোটা নাগাদ হিরয়ুর ডেক থেকে উড়ে গেলো জাপানী বোমারুর ঝাঁক। আমেরিকান ফাইটারদের ব্যুহ ভেদ করে পাঁচটি বোমারু ইয়র্কটাউনকে আক্রমন করলো এবং তিনটি বোমা লক্ষ্যভেদ করলো। তাও ভালো যে তৃতীয় বোমাটি ডেকের নীচে রাখা কারবনিক এসিড গ্যাসের ট্যাংক চুর্ন করলে সেটি জ্বলে ওঠা আগুন নিভিয়ে দিলো। খুব দ্রুত আগুন নিভিয়ে সবাই ভাবলো বোধহয় ইয়র্কটাউন বেঁচে গেলো এই যাত্রায়। কিন্তু তেমন হলো কই ? এবারের দ্বিতীয় ঝাঁকের জাপানী হাওয়াই আক্রমনে রয়েছে দশটি টরপেডো বিমান আর তাদের রক্ষী ছয়টি জিরো ফাইটার।

    আমেরিকান বিমান বিদ্ধ্বংশী কামান ও ফাইট ব্যুহ কিন্তু থামিয়ে দিয়েছিলো ঐ আক্রমন। কিন্তু লেফটেনান্ট তোমোনাগা,তার টর্পেডো বিমানটিকে নিয়ে আছড়ে পরলেন ইয়র্কটাউনের ডেকে। সেই বিমানের দুটি টর্পেডো ডেকের উপর বিস্ফোরিত হলে ইয়র্কটাউন হেলে পরে। সর্বগ্রাসী আগুনও ছড়িয়ে পরে জাহাজে। বলা যায় এটি ই জাপানের প্রথম অঘোষিত কামিকাজে।
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:৩৭685242
  • তোমার হলো শুরু.......
    ********************************
    ঐ একই বিমান আক্রমনের এক জাপানী অভিজ্ঞতার বিবরন। মিৎসুও ফুচিদা ছিলেন আকাগীর এক নৌ সেনা।

    "প্রথম শত্রুর হানা হলো পনেরোটি টর্পেডো বম্বার দিয়ে। ... দূর নীল আকাশে কয়েকটি কালো বিন্দুর মতন দেখাচ্ছিলো,দিগন্তের একটু উপরে। কিছুক্ষন পরেই দেখছিলাম ঐ কালো বিন্দুর কয়েকটি আগুনে জ্বলে উঠছে আর খসে পরছে সাগরের জলে। বুঝলাম আমাদের ফাইটারেরা আরেকটি শত্রুবিমান শিকার করেছেন।

    কিছু পরেই রিপোর্ট এলো আমাদের জিরো ফাইটারের গ্রুপ লীডারের থেকে " পনেরোটি শত্রু বিমানই ধ্বংশ'"

    সকাল সাড়ে নটায় ব্রীজের থেকে আবার হুঁসিয়ারি এলো "শত্রু টর্পেডো বিমান, জাহাজের ডানদিকে ৩০ ডিগ্রী" এবং আরো একবার "বাঁদিকে থেকে চল্লিশ ডিগ্রীতে আরেক ঝাঁক টর্পেডো বিমান"।
    দুদিক থেকে সাঁড়াশী আক্রমন। দমবন্ধ করে আমি দেখছি কি করে এই আক্রমনের হাত থেকে বাঁচা যায়।

    আমাদের ফাইটারের পাল্টা আক্রমনে ডানদিকের চোদ্দটি হানাদার বিমানের সাতটি আর বাঁদিকের বারোটি বিমানেরও সাতটি বিমান অচিরেই ধ্বংশ হলো।
    বাকী বিমানগুলি আকাগির কাছাকাছি এসে পৌছলে বিমান বিধ্বংশী কামানগুলি গর্জে উঠলো। ... কিন্তু শেষ মুহুর্ত্তে তারা আকাগীকে বাদ দিয়ে হিরয়ুকে আক্রমন করলো। সাতটি শত্রুবিমান তাদের প্রায় চল্লিশটি টরপেডো লঞ্চ করেছিলো কিন্তু সবগুলিই লক্ষ্যভ্রষ্ট হলো।"

    এর পরেই সেই ঐতিহাসিক পাঁচ মিনিট !!

    " পরিষ্কার আকাশ। ১০টা চব্বিশ মিনিটে অর্ডার হলো মিডওয়ে দ্বীপে আক্রমনের জন্য প্রস্তুত হও। সেই মুহুর্ত্তেই ব্রীজের উপর থেকে একজন চেঁচিয়ে উঠলো "হেল ডাইভার" । আমি উপরে তাকিয়ে দেখলাম তিনটি কালো শত্রু বিমান আমাদের জাহাজের উপর ঝাঁপিয়ে পরছে। তড়িঘরি কয়েকটি কয়েকটি মেশিনগানের মুখ উপরে তুলে গুলিবর্ষন হয়েছিলো কিন্তু বড্ডো দেরী হয়ে গেছে ততক্ষনে। চিলের মতন ছোঁ মারতে আসা আমেরিকান ডন্টলেস ডাইভ বোম্বারের ডানার তলা থেকে খসে পরলো কয়েকটি কালো বস্তু। বোমা!!! আমি দৌড়ে এক নিরাপদ যায়গায় আশ্রয় নিলাম।
    বোমা ফাটানোর কানফাটা আওয়াজের আগেই আমি শুনলাম ডাইভ বম্বারএর ভয়ংকর চিৎকার। চোখ ধাঁধানো আলো এবং পরপর দুটি ভয়ানক শব্দ। বিস্ফোরনের দমকা গরম হাওয়ায় আমি কেঁপে গেলাম। তারপরই এক দারুন নৈশঃব্দ। আমি উঠে দাড়িয়ে আকাশের দিকে দেখলাম। শত্রু বিমানদের আর দেখা যাচ্ছে না।"
    .... " এক মুহুর্ত্তের মধ্যে আমাদের ফ্লাইট ডেকে এক সুবিশাল গহ্বর হয়ে গেলো। জাহাজের প্লেনবাহী এলিভেটরটি গলে যাওয়া কাঁচের মতন দুমড়ে মুচড়ে ঝুলে রইলো। বিমানগুলি আছড়ে পরেছে, ফ্লাইট ডেকের লোহার পাতগুলি টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।"

    এই হানার বিবরন শেষে মিৎসুও ফুচিদা বলেছেন "আমেরিকান টর্পেডো বিমানেরা শহীদ হয়ে তাদের ডাইভ বম্বারদের জিতিয়ে দিলো।
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:৩৮685218
  • তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায় .......
    *************************************************

    জাপান হেরে গেলো। শুধু মিডওয়ের লড়াইই নয়, সার্বিক হার হলো যুদ্ধে। আমেরিকার যে ক্ষমতা ছিলো দ্রুত জাহাজ নির্মানের এবং খুব তাড়াতাড়ি প্রশিক্ষিত পাইলটদের রনাঙ্গনের জন্য তৈরী করে পাঠানো - জাপান এর কোনোটাই পারে নি। আমেরিকার কলকারখানা ধারেকাছেও যেতে পারে নি তৎকালীন জাপান। এবং তার অভিজ্ঞ পাইলটদের রিপ্লেস করতে পারেন নি নতুন পাইলটদের দিয়ে।

    একটা ছোটো তুলনামূলক পরিসংখ্যন দেই - ৪১এর পার্ল হারবারের পর পরবর্তী তিন বছরে আমেরিকা আঠারোটি বড় আর নিরানব্বইটি ছোটো এয়ারক্রাফট কেরিয়ার তৈরী করেন, সেই সময়ে জাপান ছোটো বড় মিলিয়ে মাত্র বারোটি বিমানবাহী জাহাজ জলে নামান।

    কেন হেরে গেলো জাপান ? কত প্রবন্ধই লেখা হয়েছে। নাগুমোর পরিচালনায় ত্রুটী প্রায় সবাই উল্লেখ করেছেন। তিনি সব সময়েই রিভার্স লটারীর নীতিতে বিশ্বাস করতেন অর্থাৎ অল্প ঝুঁকি নিয়ে বেশী ফলাফল নয়, বরং সব ক্ষেত্রেই সর্বশক্তি নিয়ে আক্রমন করা - এটি সমস্ত রননীতির শিক্ষার বিরুদ্ধাচারন।
    আর দ্বিতীয় কারনটি আমেরিকান সৌভাগ্য। আমেরিকান ফ্লীট অনেক আগেই জাপানীদের নজরে পরা উচিৎ ছিলো কিন্তু ঠিক সময়ে আকাশে মেঘ থাকায় সেটা সম্ভব হয় নি। আর ঐ ঈশ্বরপ্রদত্ত পাঁচ মিনিট - যা জাপানকে হারিয়ে দিলো।

    আর তৃতীয় ও শেষ কারনটি বোধ হয় ক্ল্যাশ ওফ কালচার। জাপানীরা যেখানে দ্বিধাহীন আত্মত্যাগ, সম্রাটের প্রতি প্রশ্নাতীত আনুগত্য - এইসবের উপরই বেশী নজর দিয়েছেন তখন আমেরিকার ফোকাস আরো ভালো প্রশিক্ষনে, কারীগরী কুশলতায় আর ম্যাস প্রডাকশনের ম্যাজিকে।
  • dd | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ২৩:৩৯685219
  • ব্যাস। শেষ।

    খুব বড়ো হয়ে গ্যালো। জানি আপনাদের পড়তে খুব কষ্টো হবে। তো কি আর করা।
  • avi | 113.252.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ০০:৫৩685220
  • কিন্তু, কিন্তু, খুব পরিচিত লাগলো, যেন আগেও ঠিক এরকম-ই পড়েছি। এটা কি আগেও বেরিয়েছিল এখানে?
  • Arpan | 125.118.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ০১:৪৭685221
  • উফফফ! এক নিশ্বাসে পড়ে শেষ করলাম। ব্রাভো।
  • Arpan | 125.118.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ০২:১৬685222
  • এবার নর্থ আফ্রিকান ফ্রন্টিয়ার নিয়ে একটা কিস্তি হোক।
  • sch | 55.123.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ০৬:৪৭685223
  • দুরন্ত ডিডি-দা। এটার ওপর কি কোনো সিনেমা আছে?
  • কল্লোল | 125.242.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ০৭:৩৬685224
  • দিপ্তেন হৈলো গিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথকঠাউর। এমন সুন্দর ল্যখে যেন সামনে বসে বোলছে।
  • byaang | 132.167.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ০৭:৪৯685225
  • উফ্ফ্ফ্ফ কী ফাটাফাটি হয়েছে লেখাটা। ডিডিদা, যুদ্ধের আরো গল্প চাই।
  • নাভাহো | 75.49.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ০৮:০৪685226
  • ছোট্ট লেখা, পড়তে খুব ভাল্লাগলো। ব্যটল অফ মিডওয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যূদ্ধগুলির একটি। ব্যাটল অফ স্ট্যালিগ্রাড আর অপারেশন মার্কেট গার্ডেনের সাথে তুলনীয়। ফলে মিডওয়ে নিয়ে অজস্র বই, ডকুমেন্টারি ও সিনেমা আছে। তার একটিতে স্বয়ং চার্লটন হেসটন অভিনয় করেছিলেন।

    মিডওয়ের ক্রিপ্টানালিসিস নিয়ে এক লাইন লিখেছেন দেখে খুব ভাল্লাগলো। এর প্রায় পুরোটাই পরিচালনা করা হয়েছিল হাওয়াইয়ের স্টেশন HYPO থেকে। আমরা সবাই জানি যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন অ্যালান টুরিং, যিনি পোলিশ ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে বম্বে ডিজাইন না করলে মিত্রশক্তি যুদ্ধ হেরে যেত। একই সাথে আমেরিকা জাপানের মিলিটারি/ডিপ্লোম্যাটিক কমস কোড ব্রেক না করলেও প্যাসিফিক থিয়েটারে কি হতো বলা মুশকিল। এই প্রসঙ্গে পার্পল মেশিনের উল্লেখ করা যেতে পারে, দ্য উইন্ডটকার্স সিনেমাটিও দ্রষ্টব্য।
  • topon | 190.148.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ০৯:০৪685227
  • 'recently "Enigma" বলে একটা মুভি এসেছিল , বেশ ভালো লাগলো, অ্যালেন টুরিং-এরই ওপরে।
  • নাভাহো | 75.49.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ০৯:১৭685229
  • দয়া করে এই জঘন্য সিনেমাটার উল্লেখ করবেননা। এই সিনেমাগুলো এমন অবলীলায় তথ্যবিকৃতি ঘটায় যে দেখলে শিউরে উঠতে হয়। এনিগমা মেশিনের ডিজাইন ও ক্রিপ্টানালিসিস নিয়ে পড়তে হলে সাইমন সিংএর দ্য কোড বুক পড়তে পারেন, প্রাথমিক পড়ুয়াদের জন্য সুন্দরভাবে লেখা একটা চ্যাপটার আছে। এছাড়া নানান বই আর পেপার তো আছেই।
  • de | 24.139.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ১৫:০৯685230
  • ডিডি দা আরো লিখুন - এইসব লেখাপত্তর একত্তর করে একটা চটি হোক!
  • PM | 116.78.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ১৫:২৩685231
  • ডিডিদা আমাদের প্রজন্মের "বিকেকানন্দ মুখোপধ্যায়" ঃ)। আরো লিখুন প্লিজ
  • নাভাহো | 75.49.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ১৬:১৪685232
  • অ্যাডমিরাল য়ামামোতোকে মারার জন্য operation vengeance নিয়েও প্লিজ লিখুন। আমেরিকান নাভাল ইনটেলিজেন্সের ম্যাজিক প্রোজেক্ট জাপানি পার্পল, রেড আর ব্লু কোড ব্রেক না করলে এই মিশনও হতো না আর প্যাসিফিক থিয়েটারের ইতিহাসও অন্যরকম হতে পারত।

    পরবর্তিকালে অপারেশন থান্ডারবোল্ট নিয়ে সঙ্গত কারনেই অনেক সিনেমা আর বই লেখা হয়েছে, সারা পৃথিবীর লোক এখনো এই মিশনের কথা পড়ে অবাক হয় আর ইজরায়েলিদের ভুঁড়ি ভর্তি সাহসকে কুর্নিশ জানায়। কিন্তু তারও বহু বছর আগে operation vengeance এর মিশন প্রোফাইল প্রায় থান্ডারবোল্টেরই মত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মোড় ঘোরানো এই অপারেশন নিয়েও লেখার অনুরোধ রইল।
  • | 77.98.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ২০:২৭685233
  • উফ ডিডি দা, জাস্ট যাতা। ঠিক যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি।
  • d | 24.96.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ২২:৪২685234
  • জ্জিও ডিডি
  • 4z | 79.159.***.*** | ২৬ আগস্ট ২০১৫ ০৮:০৩685235
  • ডিডিদা, কোড টকার্সদের নিয়ে কিছু লিখবেন না?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন