এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শেকড়ের সন্ধানে

    ranjan roy
    অন্যান্য | ২০ অক্টোবর ২০১৪ | ১১০৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ranjan roy | 24.96.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০১৪ ১৩:০৬654745
  • আর্থার হেইলি'র "রুটস্‌" অনেকের মত আমাকেও প্রথম বয়সে মুগ্ধ করেছিল, সে ঘোর এখনো কাটেনি।
    প্রথমসন্ধ্যায় দুজনে মুখোমুখি আড্ডা দিতে গিয়ে শুনলাম কল্লোলের কিছু অসাধারণ স্মৃতিচাঅরণ। আগরতলায় গিয়ে নদীর পারে পিতামহ ও পিতার বাসস্থান খুঁজতে গিয়ে জানতে পারা যে নদী আধমাইল সরে গিয়েছে-- আমাকে নাড়া দিয়েছে। তাই এই টই খুলছি এই আশায় যে কল্লোলের পর অন্যেরাও নিজেদের শেকড় খোঁজার গল্পগুলো শোনাবেন।
  • কল্লোল | 125.242.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০১৪ ১৪:৪৫654746
  • আগরতলা। আমার ছোটবেলাকার স্বপ্নভূমি। ঘটনা চক্রে আমার ঠাকুর্দা ও বাবা দুজনেই আগরতলায় বেড়ে উঠেছেন। ঠাকুর্দা ও তাঁর পিতা, আমার প্রপিতামহের কর্মভুমিও আগরতলাই।
    সেই আগরতলায় প্রথমবার যাওয়ার সুযোগ আসে ২০০৩ সালের অক্টোবর মাসে, একটি চাকরী সংক্রান্ত প্রকল্পের সূত্রে।
  • কল্লোল | 125.24.***.*** | ২৩ অক্টোবর ২০১৪ ২১:৩৬654747
  • অরুনাচলের ভালুকপোং থেকে গৌহাটি হয়ে যচ্ছি আগরতলায়। উড়োজাহাজে বসে সময় আর কাটে না। অথচ মাত্র আধঘন্টার উড়ান। সময় কাটে না, কারন এই প্রথম, তেই প্রথমবার পা রাখবো এমন এক শহরে যেখানের প্রতিটি ধূলিকণা আমার পূর্বপুরুষের স্মৃতিবিজড়িত।
    ঘোষনা হলো - আমরা নামছি। স্বপ্নে আচ্ছন্ন হয়ে আসছে আমার চেতন। আমি নেমে আসছি, নেমে আসছি আমার শৈশবে।
    গল্প বলছেন ঠাকুর্দা।
    - আমাগো বাসাডা আছিলো নদীর ধারে। হাওড়া নদী। সারা বৎসর যেন শান্ত ছাওয়ালডি। আর, যেই না ম্যাগে ডাক দ্যায়, তহন তার রূপ দ্যাহে কে!

    - বুনা হাতি ধইর‌্যা নদীতে ভাসাইয়া নিয়া আসতো, কুনকীদের লগে। আমাগো বাসার সামনে দিয়ে অগো নিয়া যাইতো পিলখানায় হেড মাহুত আসানুল্লার তদারকিতে।

    - তরা তো আর দ্যাখলি না..................

    আগরতলায় ছিলাম প্রায় মাসখানেক। থাকি বোধজং চৌমুনীতে রাজধানী হোটেলে। কাজের ফাঁকে এক রবিবার আমাদের বাসা খুঁজতে বের হলাম।
    বাবা গত হয়েছেন অনেকদিন। তাই, আমাদের বাসার হদিশ দিতে পারেন এমন মানুষ কলকাতাতে আছেন - স্যামকাকু। বাবার ইস্কুলের বন্ধু শ্যামাপদ ভট্টাচার্য। ত্রিপুরার রাজপুরোহিতের বংশধর। কলকাতায় এসেও বাবা আর শ্যামকাকুর বন্ধুত্ব অটুট ছিলো। বাবা আইসিআই আর শ্যামকাকু এল আই সি। প্রায় রবিবারই আমরা একে অন্যের বাসায় সারাদিন কাটাতাম।
    শ্যামকাকু বললেন
    - ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল আর উমাকান্ত অ্যাকাডেমীর মাঝের রাস্তা দিয়া সিধা নদীর পাড়। বাঁওদিগে ঘুর‌্যা দ্বিতীয় বাসাখান তগো। তর ঠকুদ্দার বাসা।
    তো সক্কাল সক্কাল উঠে (আগরতলায় তো ভোর পাঁচটাতেই বেশ আলো), গেলাম তেমন তেমনই। লালুকত্তার বাসার গায়ে।
    নদীর পাড়ে গিয়ে বাঁদিকে ঘুরে দ্বিতীয় বাড়ি। কিন্তু মিলছে না তো। যেমন বর্ণনা শুনে এসেছি, তমন তো কিছুই নাই। পাল্টে যাবে, সেতো অবশ্যই কিন্তু পাল্টানোরও তো একটা ছিরিছাঁদ থাকবে।
    অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি কারার পর একজন মানুষ বেরিয়ে এলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে তিনি বেশ বিস্মিত।
    - না, এখানে তেমন কারুর বাসা নাই তো। আমরা তো নতুন - এই তিরিশ বছর হলো।
    এই বলে উনি সামনে আর একটি বাড়ি দেখিয়ে দিলেন।
    - এরা এখানে পুরানো মানুষ। এদের জিজ্ঞাসা করেন।
    চমৎকার পুকুর। পুকুর ঘিরে সুপারী আর নারকেল গাছ। মস্তো আগোছালো বাগান। নানান ফুলের গাছ। এই সব পেরিয়ে পাকের ঘর। আর তা ছাড়িয়ে একটি দোতলা দালান।
  • কল্লোল | 125.242.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ১০:৪৮654748
  • পাকের ঘরে উনুন ধরাচ্ছিলেন এক বয়ষ্ক মহিলা। তাঁকে জিগালুম বাড়িতে বড় কে আছেন।
    উনি বললেন
    - আমার দেওর হাঁটতে বেরিয়েছেন, এখুনি এসে পড়বেন। আপনি বসেন। চা খাবেন?
    আমি ঘাড় কাৎ করতেই চটপট চা এলো। একটু পরে ওনার দেওরও এলেন।
    বেশ ভারিক্কি চেহারার মানুষ। নাম কেশব। আগরতলার ল কলেজের অধ্যক্ষ। আমাদের চেয়ে অল্প বড়ই মনে হলো।
    ওনাকে বললাম সব কথা।
    নদীর পাড় শুনে অনেকক্ষন ভাবলেন। তারপর জিজ্ঞাসা করলেন
    - আপনার শ্যামকাকু শেষ কবে আগরতলায় এসেছেন।
    - হয়তো ৫০এর দশকে।
    - হুম, বোঝা গেছে বোধহয়। দাঁড়ান আমি চা খেয়ে আপনার সাথে বের হচ্ছি। কেউ তার পূর্বপুরুষের বাসা খুঁজতে বের হয়েছেন - এটা খুব মজার।
    উনি তারপর যেটা বললেন সেটা খুবই কৌতুহলোদ্দীপক।
    - এই নদী দুবার খাত বদল করেছে। এর আদি খাত ছিলো আখাউড়ার দিকে যেতে আখাউড়া রোডের ডানদিকের নালাটি। যার পাশে এখন মুখ্যমন্ত্রীর বাসা। একবার খুব বন্যা হয়। তখন রাজধানী উদয়পুর থেকে আগরতলায় চলে এসেছে। সেই বন্যায় রাজবাড়িও ডুবে যায়। তখন বাঁধ দিয়ে নদীকে সরিয়ে দেওয়া হয় এখন যেখানে গান্ধীঘাট সেইখানে। এরপর আবার ব্ন্যা হয়। তখন আবারও খয়েরপুর থেকে বাঁধ দিয়ে আরও সরিয়ে দেওয়া হয় নদীকে। তৈরী হয় আজকের খাত। আমার ঠাকুর্দার আমলে নদীটি ছিলো গান্ধীঘাটে। ওখানেই গান্ধীজীর চিতাভষ্ম ছড়ানো হয়। তাই গান্ধীঘাট।
    পাওয়া গেলো আমাদের বাসা। সে আর এখন নেই। ওখানে বেশ কিছু দোতলা সরকারী কোয়ার্টার উঠেছে।
  • শিবাংশু | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ১১:১২654749
  • চলত মুসাফির, মোহ লিয়া রে পিঁজরেওয়ালি মুনিয়া...
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন