এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • হিজড়া বৃত্তি ও সামাজিক সুরক্ষা

    Abhyu
    অন্যান্য | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ১৮৭৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Abhyu | 107.89.***.*** | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২১:১৪630821
  • বিশ্বেন্দু নন্দ লিখেছিলেন সম-যৌনতা, বৃহন্নলা এবং অতীত ও বর্তমানের রক্ষণশীল ভারতীয় সমাজ নিয়ে

    http://www.guruchandali.com/default/2013/07/09/1373308428841.html#.UwDbxbSGfKc
  • Abhyu | 107.89.***.*** | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২১:১৯630825
  • ভাট থেকে কিছু কপি পেস্ট থাক

    Ekak
    কদিন ধরে কিছু লেখা পড়লুম । ট্রান্স ,হিজরা দের আন্দোলন অধিকার মিছিল । একটা ব্যাপার চোখে লাগছে । জন্মগত ভাবে অপরিণত বা মিশ্র যৌনতার শিশু দের চিকিত্সা নিয়ে যে সচেতনতা তৈরীর দরকার সেটা কথাও উল্লেখ দেখলুম না । অথচ এখনো গ্রাম বাংলার্ঘরে ঘরে এরকম শিশু জন্মালে শুধু অপেক্ষা করা হয় কবে হিজরের নিয়ে যাবেন । লাখে একটা কেস ও চিকিত্সা করাতে শহরে আসেনা । সাবজেক্ট তা আদৌ সমকামিতা নয় তাই এখানেই লিখলুম । বেশ অদ্ভূত লাগে এইসব উন্নাসিকতা আর আরেকদিকে আন্দোলন ।

    sosen
    মানে একক শারীরিক ত্রুটিসম্পন্ন পুরুষদের কথা বলছেন।
    সে রকম কিন্তু কম। মেয়েলি পুরুষ, castration করানো/বা না করানোই হিজড়া গ্রুপের মধ্যে সংখ্যায় বেশি। তাছাড়া ছোট ছেলেদের হিজড়াদের কাছে দেওয়া যায় না। তারা নেয় না। পিউবার্টি /প্রি পিউবার্টি না রিচ করলে।

    Ekak
    না , "পুরুষ " দের কথা বলছিনা কারণ "নারী " দের কথাও বলছিনা । জন্মগত হিজরা দের ভবিষ্যত হিজরের খোলে ঠেলে দেওয়ার কথা বলছি । এই বাচ্চা রা একটু বড় হলেই তাই হয় । প্রায় ন বছর আগে বরজাগুলির আদাহাটা গ্রামের একটি বাচ্চাকে আনা হয় ডাক্তারের কাছে । তার অপারেশন থেকেই প্রথম বিশদে জানতে পারি কারণ অপারেশন আমার নিকট আত্মীয় করেছিলেন । তার আগে ধারণা ছিল অধিকাংশ হিজরেই নিজের ইচ্ছেই বা দারিদ্রের কারণে খোলে এসছেন । জন্মগত হিজরে একটা স্ট্রং সাপ্লাই লাইন যেটা টোটালি ইল্লিগাল বলে মনে করি । এটা আদৌ চয়েস নয় শারীরিক ত্রুটি ও তারপর পরিস্থিতির শিকার । এই কারণেই হিজরে শব্দটাও ব্যবহার করছিলুম না । খবরটা সেই সময় আনন্দ এ বেরিয়েছিল । তারপর সব চুপচাপ । আমরা খুব অদ্ভুত সময়ে দাঁড়িয়ে আছি যখন সেক্স চেঞ্জ নিয়ে কথা বলা ফ্যাশনেবল অথচ বাচ্চা সঠিক যৌনাঙ্গ নিয়ে না জন্মালে ডাক্তার কনসাল্ট করা নিয়ে সচেতনতার কথা বলার কেও দেখিনা । চয়েস আর ভিকটিম সব ঘেঁটে ঘ ।

    sosen
    এইটা নিয়ে আইন আছে তো। ষোলো বছরের নিচে ছেলেকে হিজরা গ্রুপ রাখতে পারে না। তবে আইন আর কে দ্যাখে, পুলিশ অন্য সুবিধে খোঁজে। কিন্তু হিজড়ারা এই ব্যাপারগুলো কেন এস্টাবলিশ করার চেষ্টা করবে? তারা তো গোষ্ঠী বাড়ুক এটাই চাইবে। এটা জেনেরাল ক্লিনিক্যাল awareness এর অঙ্গ। এই ব্যাপার গুলো রুরাল হেলথ এর আওতায় পড়ে না? এমনিতে সামাজিক প্রবলেম এর কারণে এফিমিনেট পুরুষ শিশুকে দূর করতে অনেক পরিবার চায়, কিন্তু যৌনাঙ্গে কোনো ত্রুটি থেকেও সে যদি এমনিতে পুরুষালি হয়, তাকে গ্রামদেশে ডিসপোজ করা হয় না। এই খবরগুলো , অর্থাত ত্রুটিযুক্ত শিশুর খবর লোকাল হিজড়া গোষ্ঠির কাছে থাকে। তারা ফলো আপ ও করে। সাউথ ইন্ডিয়ায় খুব-ই বেশি হয় এগুলো।

    Ekak
    আইন :( আর বারবার পুরুষ শিশু আসছে কেন শুধু ? এই যে এথলিট ভদ্রমহিলার কেস টা উনি কি পুরুষ ছিলেন নাকি । অনেক শিশু মাঝামাঝি বা অসম্পূর্ণ যৌনাঙ্গ নিয়ে জন্মায় । বড় হলে হিজরে হয়ে যাওয়া ছাড়া গতি নেই । আর হিজ্রেরা যদি সমাজের সব মানুষকে তাঁদের অধিকারের আন্দোলনে পাশে চান তাহলে অবশ্যই জন্মগত হিজরে নিয়ে সচেতনতা তৈরীর কথাও বলতে হবে । তারা যদি গাছের এবং তলার দুটোই খাবে ভাবে তাহলে যেরকম দেয়ালের এপার ওপাড় সম্পর্ক আছে তাই থাকবে । এটা আমাদের দেশে সামাজিক আন্দোলনের একটা বড় ত্রুটি । সংখ্যা গরিষ্ট কোনদিন সংখ্যা লঘুর পাশে দাঁড়াবে না লং টার্মে যদি সংখ্যা লঘুও নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থ ছেড়ে না আসে । জাস্ট সৌখিন আন্দোলন হয়ে থাকবে ।

    sosen
    মেয়েদের তো হিজড়া গ্রুপ নেয় না ! সেই জন্যই বলছিলাম। T এর পুরো রেঞ্জটা তো হিজড়ারা কভার করছেনা। তারা একটা গোষ্ঠীমাত্র। এবং সুসংগঠিত ক্ল্যান। তাদের অধিকারের লড়াই হলো থার্ড জেন্ডারের সংরক্ষণ-এর জন্য। ক্রিমিনাল ট্রাইব গোত্রভুক্ততা থেকে মুক্তির জন্য। রেজিস্ট্রেশনের, পুলিশী হ্যারাসমেন্টের হাত থেকে মুক্তির জন্য। এই গোষ্ঠীবদ্ধতা তুলে দিতে হিজড়ারা চায় এটা তেমন শুনিনি যদিও পার্সোনালি অনেকে বেরিয়ে আসে। এরা অশিক্ষিত, গরিব, বেশিরভাগই সস্তার সেক্স ওয়ার্কার, এদের কাছ থেকে সেই সচেতনতা আশা করা মুশকিল। হিজড়া গোষ্ঠী বাদ দিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে ট্রান্সজেন্ডাররা আছেন। অনেক বেশি পরিমাণে। হিজড়ারা জেন্ডার স্টিরিওটাইপিং এর জগতেরই দান। তাদের লড়াই-এর বিশেষ কোনো লজিক নেই। অন্যদিকে স্পিরিচুয়ালি -ও হিজড়াদের একটা অবস্থান আছে। খুব intricate হায়ারার্কি আছে। এই রকম পুরনো জনগোষ্ঠী, যা সারা পৃথিবীর পুরনো সভ্যতায় ছড়িয়ে আছে, তাদের রাইট assume করার দরকার প্রথমে, minority বলে। তার পরে না অন্য কিছু। বিহার ছাড়া আর কোনো স্টেট rehabilitation অফার করেনি এঁদের।

    sosen
    মানে এই নয় যে চাইল্ড ট্রাফিকিংটাকে সমর্থন করছি। ইন ফ্যাক্ট চাইল্ড ট্রাফিকিং এর কেসে মিছে মিছি এঁদের ফাঁসানো হয় অনেক সময়েই ।হিজরাবৃত্তি ও গোষ্ঠী থাকার স্বপক্ষেও নই। কিন্তু হিজড়াবৃত্তি তুলে না দিয়ে যদি মাইনরিটি হিসাবে এঁদের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় ( যেটা মোটেই হয়নি, কিন্তু যে জন্য এঁদের আন্দোলন) তা হলে এই বাচ্চাদের ইনফ্লো বেড়েই যাবে। আবার যদি সামাজিক সুরক্ষার বন্দোবস্ত না করেই হিজড়া গ্রুপ গুলিকে বেআইনি করে দেওয়া হয়, তা হলে এই মানুষগুলি শূন্য থেকে আরো ছোট শূন্য হয়ে যাবেন। এই বিষয়ে যে কোনো রিজিড অবস্থানই হাতল ছাড়া তরবারি। সম্প্রতি LGBT মিছিলগুলিতে এদের হাততালি দিতে, ঢোল বাজাতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু এটাই তো এদের কালচার। এই গোষ্ঠী যৌনতায় অক্ষত মানুষদের হাতেই তৈরী, মুঘল হারেম থেকে শুরু করে। এই গোষ্ঠীর গঠনের পাপ বলুন বা পুণ্য বোধ করি আমাদের উপর বর্তায়।

    এঁদের নিয়ে আমার কিছু ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপি আছে। পরে শেয়ার করার আশা রাখি।
  • Abhyu | 107.89.***.*** | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২১:২০630826
  • সোসেন, এখানে শেয়ার করুন। পরে হয়ত চটি হবে।
  • achintyarup | 24.99.***.*** | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০০:৫৩630827
  • ক্কী সমাপতন!! মাত্র পরশু দিন সোসেন এক্খানা লেখা পড়তে পাঠিয়েছিল আমাকে। খসড়া মতো খানিকটা, একটু আপডেট করলেও করা যায় হয়তো। কিন্তু এখেনে সেই লেখাটা থাকলে ভালো হয় মনে হল। তাই লেখকের পারমিশন নিয়ে পোস্ট করে দিচ্ছি। আপডেট করা যে লিখেচে তার দায়িত্ব।

    ট্রেনের হালকা দুলুনি। থিকথিকে ভিড়, সাদা আলোর নিচে, মহিলাকন্ঠের জোরালো আলাপের পাশে অন্ধকার ঘাস, ডোবা, অচেনা লোকের ঘরবাড়ি, মিটমিটে আলো জ্বলা চায়ের দোকান এসব ছুটে চলে যাচ্ছে বিপরীতদিকে, লোকাল ট্রেন যেমন রোজ সন্ধ্যেবেলা ঢুকে যায় মফস্বলের অন্ত:স্থলে; গ্রাসনালীর পাকে। চামড়ায় ঠেকে থাকে চামড়া। ঘেমো শরীর ঝুঁকে থাকে আরেক ক্লান্ত শরীরের উপর, যদি সে কোথাও উঠে যায়। প্রতীক্ষার দৃষ্টি।
    এর মধ্যে ওরাও বসে থাকে। গৃহগামী চাকুরে মহিলাদের যথেষ্ট বিরক্তি উদ্রেক করে। কোনদিন বা পয়সা চায়, গায়ে হাত বুলিয়ে। কেউ দেয়, কেউ ভাবলেশহীন মুখে বসে থাকে। যেন ভুতুড়ে অস্তিত্ব কোনো।
    "জানলি মেয়ে, অল্প বয়েসে খুব রাগ হোত। রেগে গিয়ে খিস্তি মারতুম, কাপড় তুলে হাঁটু দেখাতুম। কিন্তু আর কিছু দেখাইনি কখনো ট্রেনে। এমন করে সবাই দেখত, যেন আরশোলা বা টিকটিকি দেখছে। কান্না পেত খুব। বাসায় গিয়ে কাঁদতুম। বড়দিদি বলত, লোকে যত ঘেন্না করবে, যত ভয় পাবে তত আমাদের ভালো। সে মানতে মন চাইতো না।"
    সবুজ সিন্থেটিক শাড়ি, ম্যাচিং ব্লাউজের নিচে প্রায় সমান বুক ভারী উদাস দেখায়। শ্যামবর্ণ, ক্রমাগত কামানোর ফলে ইষৎ নীলচে গালে ভাঙ্গন, চোখের কোণে কাকের পায়ের আঁকিবুকি।
    "মা মারা যেতে দাদারা আমায় মেরে বাড়ির বার করে দিল। বলল আমার চরিত্তির নাকি খারাপ, আমি বৌদিদের দিকে খারাপ ভাবে তাকাই। তাকাতুম, মিছে কথা বলব না। মেজবৌদি আমায় খুব ভালবাসত। মেজ্দাদা শুধু মাল খেয়ে বাড়ি এসে বৌদিকে মারত---দুপুরে সেই সব নীল কালশিটেতে আমি তেল লাগিয়ে দিতাম। তখন আমার বয়েস চোদ্দ। তারপর একদিন যা হয়। কিন্তু সেসব আমার ভাল্লাগতো না। আমার শুধু ভাললাগতো বৌদির গায়ে হাত দিতে। কি সুন্দর নরম মসৃণ গা।
    বৌদি বলত তোমার হাত পা কি নরম বৃন্দাবন। ঠিক মেয়েছেলের মত। আমার খুব রাগ হোত, কেন আমার হাত পা ঠিক ঠিক মেয়েছেলের মত নয়।ক্রিম মাখতুম। মাঝে মাঝে নেলপালিশ পরে আঙ্গুলগুলো চোখের সামনে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতুম। লাগে কি লাগে না মেয়েমানুষের মত।
    ইস্কুল ছেড়ে দিয়েছিলুম সাত ক্লাস পাশ করার পর-ই। বাবাও মরে গিয়েছিল। কেউ-ই কিছু বলেনি। মা বলত, বিন্দু আমার ছোট মেয়েই তো। ঘরে থাকুক। মায়ের ফুট ফরমাস খাটতুম, গরুর দেখভাল করতুম। ন'টা গরু ছিল আমাদের। সকালে বড়দাদা আর আমি মিলে দুধ দোয়াতুম, তারপর সাইকেলে করে মিষ্টির দোকানে দিয়ে আসতাম সেই দুধ। সে বড় সুন্দর দিন ছিল রে মেয়ে। "
    ন'জন হিজড়া, গুণে দেখা যায়। চোখে টানাটানা কাজল, অযত্নের একটু খ্স্কুটে হাতপা। ওরা দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে থাকে।সারাদিনের ব্যবসা শেষে ঘরে ফেরে।
    বুড়ো বৃন্দাবন দাঁড়াতে পারে না, তার হাঁটুতে ব্যথা করে। একে ওকে বলতে থাকে" একটু জায়গা দিবি রে বোন? একটু জায়গা দিবি রে মেয়ে?" সবাই বিরক্ত হয়। কিন্তু শেষ অব্দি কোনো কলেজগামী ছোট মেয়ে উঠে বসতে জায়গা দিয়ে দেয়। বসে পরিতৃপ্তির হাসি নিয়ে সে এদিক ওদিক তাকালে, চাকুরিজীবী পরিপাটি মহিলা থেকে শুরু করে ঘরের কাজ করুনিরা, সবাই বিরক্তির ভুরু কুঁচকানো নিয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে ফ্যালে। আস্তে আস্তে বৃন্দাবনের ভালোমানুষ হাসিটি মিলিয়ে যায়, তার জায়গায় নেমে আসে এক রকম হেরে যাওয়া মানুষের অসহায় করুন চাউনি। মুখ নিচু করে সে নিজের আঙ্গুলগুলি দ্যাখে। উঁচু উঁচু গাঁট, কালো আঙ্গুলে বেগুনি সস্তার রং। কোনোদিন ওই আঙ্গুলগুলি সুন্দর ছিল নিশ্চয়।
    বইপত্তর, তত্কালীন ইন্টারনেটের অসম্পূর্ণ তথ্যাদি ঘেঁটে জানতে পারি পশ্চিমবঙ্গে একটি ট্রান্সজেন্ডার/ হিজড়া সমিতি আছে।তাদের কাজকর্ম সম্পর্কে কোন পরিষ্কার ধারণা করতে পারি না। জানতে ইচ্ছে করে, অসুখ হলে এই মানুষগুলিকে ডাক্তার দেখেন তো? এদের যদি সাধারণ জীবন যাপন করতে ইচ্ছে হয়, হিজড়াবৃত্তি ছেড়ে, তার সুযোগ কতটা? অন্য পেশায় ফিরে যাওয়া এদের পক্ষে আদৌ কি লাভজনক?
    মফস্বলী এক স্টেশনের বেঞ্চিতে বসে থাকি আমরা। উপর থেকে পাতা ঝরে পড়ে হেমন্তের বিকেলে।এদিক ওদিক থেকে লোকজন আমাদের দিকে তাকায় অবাক দৃষ্টিতে। আমিও কিঞ্চিত অস্বস্তিতে ভুগি। মনে হয় এ কি পাগলামির ভূত চাপলো মাথায়!
    বৃন্দাবন একটা বিড়ি ধরায়। আমরা দুজনে দু ভাঁড় চা নিয়ে চুমুক দিতে থাকি। দেখা যায় স্টেশনের অনেক দোকানি-ই বৃন্দাবনকে চেনে।
    "আমারও একটা দোকান ছিল, জানিস। বিস্কুট, , লজেন্স, পান, বিড়ি, সিগারেট। সব রেখেছিলুম। সাইকেল কিনেছিলুম, মাল নিয়ে আসা যাওয়ার জন্য।"
    তারপর কি হলো? জিগ্যেস করতে আছে কি?
    “ইস্টিশনে তো না। জমি কিনেছিলুম। ভালো পাড়া, গেরস্ত লোকজনের বসত। ৩৫ বছর পর শাড়ি ছেড়ে আবার প্যান্ট পরলাম, লুঙ্গি। সব শাড়ি বিলিয়ে দিলুম।
    মাসি, বড়দিদি, সবাই বলেছিল, পারবি না। খুব রাগ মাগ করেছিল। কিন্তু আর ভাল্লাগতো না। মেয়েমানুষ হয়ে থাকতে চেয়েছিলুম, অল্প বয়েস , বুঝিনি। হয়ে গেলুম হিজড়া। অঙ্গ কাটালুম। কত যন্ত্রণা, কি কষ্ট। পরে মনে হত খুব ভুল করেছি। মেয়েমানুষ হওয়ার কত জ্বালা, আধা মেয়েমানুষ হওয়ার আরো। দলের মধ্যে আছ, তো আছ। খিস্তি দাও, মদ খাও, কাটা ** দেখাও , সবাই ঘেন্না করবে, ঘেন্না তো আর ভক্তি নয়। শরীর ঘাঁটতে চাইবে সবাই। রোজগার কেউ একলা করেনা, একলা রোজগার করতে গেলে তার গুণাগার আছে। শিউলি দাঁড়াত রাস্তায়। একবার দু দিন ফিরল না। তার পর ধুম জ্বর নিয়ে এলো, **** বাচ্চারা ব্লেড দিয়ে তার পাছা চিরে চিরে দিইছে। আমরা ঘরে বসে ওষুধ লাগাই। কি কষ্ট, মানুষ এমন করে? আমি রাস্তায় দাঁড়াইনি কখনো।

    তা বলে কি শুইনি? না, কেউ জোর করেনি। সে সব কথা আর তোদের শুনে কি হবে বোন, গেরস্ত ঘরের মেয়ে তোরা। ঘর বাঁধতেও মন চেইছিলো বৈকি। সাহসে কুলোয়নি। অল্প বয়েস ছিল, খুব ভয় পেতুম মাসিদের, দিদিদের। সে কিন্তুক মেয়েমানুষ ছিল। বয়স্ক মেয়েমানুষ। জানত সব, জোর করেনি। আমার ব্যাটাছেলেদের সাথে শুতে মন করত না কোনদিন। তাও শুইছি। দলে তো ব্যাটাছেলেই সব। কিন্তু মনটা করত অন্যরকম, মেয়েছেলের জন্যই। শুধু নিজেও মেয়েছেলে হলে ভাল্লাগতো। এইসব।

    এখন ঠাকুর বয়েস দিয়েছেন। ঠাকুরের বই পড়ি। এখন মনে হয় ঠাকুরের কাছে তো সবাই মেয়েছেলে, না কি রে বোন ? তোরা লেখাপড়া শিখিছিস, তোরা জানবি। "
    এক অল্পবয়েসী পেয়ারাবিক্রেতা ঝুড়ির শেষের কটি পেয়ারা নিয়ে আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায় " বিন্দুমাসি, প্যায়রা খাবা?" কচি ছেলেটির থুতনি ধরে নেড়ে রসিকতা জোড়ে বৃন্দাবন, সে সব রসিকতা যে শ্লীলতা বলা যায় না। তবে বাচ্চা ছেলেটি মজা পায়।পেয়ারা কেটে নুন মাখিয়ে দেয়। এইটুকু স্বীকৃতি, আশেপাশের লোকজনের কাছে। এইটুকুই।

    ১৯৯৪ সালে হিজড়ারা ভোটের অধিকার পেয়েছে ভারতে। এদিকে ২০০৩ সালেও মধ্যপ্রদেশে কাটনি মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত কমলাজানের নির্বাচন বেআইনি , রায় দিয়েছে কোর্ট। হাসপাতালের ফর্ম থেকে শুরু করে স্কুলের ফর্ম। প্রত্যেক সরকারী কাগজে ভারতবর্ষে দুটি খোপ করা আছে, মেল/ফিমেল। কোনো না কোনটিতে টিক মারতে হবে, কোনো না কোনো সময়ে সরকারকে বলে দিতে হবে, দুই পা ফাঁক করলে একটি দন্ড পাওয়া যায়, না একটি গর্ত। ওরা তাহলে কে? কারা? এই কাজল, লিপস্টিক, চিত্কৃত অস্তিত্বের নিচে ওরা কি তাহলে সেই ভুতুড়ে অনস্তিত্ব? যাদের দেখেও দেখতে পাওয়া যায় না?
    “দেখতে পেত না। কেউ না। গোঁফদাড়ি কামাতাম না, তাও বেশি বেরোত না। যে ছেলেটা ঘরজমিবাড়ি দেখে দিয়েছিল সে সাবধান করে দিয়েছিল। বেশি বেরোবা না। বেশি কথা বলবা না। চুপচাপ দোকান করবা, নিজের মতন থাকবা।
    তাই থাকতুম। তুলসীগাছ, দোপাটিচারা, ধনেপাতা লাগিয়েছিলুম। নিজের ঘর নিজে মুছতাম, দুটি রান্না করতাম। কিছু টাকা তখনও হাতে ছিল। কিছু সোনা করেছিলুম তা বেচে দিছ্লুম। সন্ধে হলে পাশের পাড়ার মন্দিরে গে' বসতুম, কীর্তন হত, নামকথা হত। সাইকেলে স্টেশন বাজারে গিয়ে পান পাতা কিনে আনতুম, চুন, জর্দা, দেশলাই। অনেক দূর। আর টেরেনে উঠে কলকাতা যাওয়া নাই।
    তবু কি করে লোকে জেনে গেল। একদিন ওখানকার হিজড়াদের গুরু এসে হাজির। তাকে বললাম, আমি ধান্দা ছেড়ে দিইছি। সে বলল হিজড়াদের ধান্দা ছাড়তে নাই। ঠাকুর পাপ দ্যায়। বললো, ওদের সাথে থাকতে।
    আমি বললাম, না।
    তারপর একদিন পাড়ায় বাচ্চা "ধোয়াতে" এসে দলবল নিয়ে তারা আমার দোকানের সামনে এসে নাচানাচি। গালাগালি। সেদিনই সবাই বুঝে গেল। পাড়ায় সালিশী হলো। আমায় বললে, জমি বেচে দাও। তুমি ঠিক মত দাম পাও, সে আমরা দেখব।
    আমি বললাম, কেন যাব আমি? পয়সা দিয়ে বাড়ি করেছি, কেন যাব?
    তারা বললো যেতেই হবে।
    আমার দোকান ভেঙ্গে দিলে ভদ্দরলোকেরা। দোপাটিচারা তুলে ফেলে দিলে। রাত্তিরে গু ছুঁড়তে লাগলে। তারপর পাড়ার কল থেকে জল তোলা বন্ধ করে দিল। জল না খেয়ে কি করে থাকি।
    ছেলেটাকে শুধোলাম পুলিশের কাছে তো যেতে পারিনে। কি করি। সে বললো, ফিরে যাও মাসি। তোমার বাড়িঘর আমি বিক্কিরি করে দেব।
    তা দিয়েছিল। আমি আবার হাত পুড়িয়ে এসে উঠলাম সেই ডেরায়। সবাই হাসলো। সেই থেকে এখানেই আছি। কোথায় যাব?”
    চা-অলা আরেকবার চা দেবে কিনা জিগ্যেস করে। তার দিকে তাকিয়ে ঘাড় নাড়তে নাড়তে মনে হয় , পুলিশ?

    ব্রিটিশ আমলে, ১৮৭১-এ পাস হয়েছিল ক্রিমিনাল ট্রাইবস একট। তাতে হিজড়াদের স্থান হয়েছিল ক্রিমিনাল ট্রাইবদের পাশাপাশি, যেমন ঠগী। হিজড়াদের রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক হয়, নারীবেশে ঘোরাফেরা, নাচানাচি, সম্পত্তির উত্তরাধিকার, এবং সর্বোপরি ষোলো বছরের নিচে বাচ্চাদের সঙ্গে থাকার উপর কড়া বিধিনিষেধ রয়েছে। পরবর্তীকালে একের পর এক amendment হলেও অবস্থা তেমন পাল্টায়নি। উপরন্তু চাইল্ড ট্রাফিকিং-এর দায়ে যখন তখন হিজড়াদের গ্রেফতার করা যায়। আইন বদলালেও আইনরক্ষকেরা এদের অধিকারের সীমানা সুরক্ষিত রাখাটাকে নিজেদের পবিত্র দায়িত্ব বলেই মনে করেন। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপালও যখন হিজড়াদের সমমর্যাদায় স্বীকার করে নিয়েছেন, তখনও হায়, আমাদের মহান ভারতবর্ষে পিআইএল ঝুলছে, ২০১৪তে যার রায় পাওয়ার আশা ছিল। অবশ্যই ৩৭৭ ফিরে আসার পর এই পিআইএলএর ভবিষ্যত কি, সব বৃহন্নলাই জানেন।

    “একটা ছেলে পুষেছিলুম, জানিস বোন। ঠাকুর বুকে দুধ তো দেননি, কিন্তু দুধ খাইয়ে, চার পাঁচ মাস রেখেছিলুম তাকে। কাটাতুম না কক্ষনো। জংশন স্টেশন থেকে পেইছিলুম, মা মরে গিছল তার, পাগলি। ভিখিরির দল নিয়ে বেচে দিত। চা-দোকানি ছেলে আমারে বললে, আহা এমন সাত মাসের ছানা, নিয়ে হাত পা কেটে দেবে, এরে রাখবেন বিন্দুমাসি? তখন তারে নিয়ে এলুম। সবাই পেত্থমে রাগ করলে। লুকিয়ে রেখেছিলুম, চাঁদ নাম দিইছিলুম তার। তারপর সবাই ভালোবাসলো। হাঁটতে শিখেছে, তখন কে খবর দিল পুলিশরে। আমারে ধরে নিয়ে গেল, বড়দিদিকেও। তিন দিন লকআপে রেখে দিলে, কয়বার *** মারলে, বাচ্চাটারে কোথায় নিয়ে গেল। ছয় হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে বেরিয়ে এলুম। তারা বললো, আর কোনো বাচ্চার ধারে কাছে আমারে দেখলে ** ** পেট করার ইচ্ছে ঘুচিয়ে দেবে।”

    বৃন্দাবনের চোখ শুকনো। আকাশ ঘন হয়ে আসে। আমি ভাবি ওর হাত কি ছোঁয়া যায়? ছুঁই না। ঘেন্না করে একটু একটু, হিজড়াই তো। তাকে ছোঁওয়া যায়? মায়া আর ঘেন্না একসাথে। সে বড় বিচিত্র সন্ধ্যা। গা ঝাড়া দিয়ে সে ওঠে। " টাকা জমাই। ভাবি তীর্থে যাব। কিন্তু ঠাকুরের কাছেও আমার স্থান নাই। কত পাপ। গায়ের গরমে কত পাপ রে বোন। এইরকম করেই মরে যাব। আগে মেয়েমানুষের সাথে শুতে লোভ হত। বুকে হাত দিতে। এখন তাও নাই। হাঁটুতে ব্যথা হয়। আমাদের ডাক্তার বলেছে হাঁটু বদলাতে। কিন্তু হাসপাতালে বড় দুচ্ছাই করে। অত টাকাই বা কোথা। যা হবে তা হবে। কৃষ্ণ দেখেন তো দেখবেন।"

    একটি অপেক্ষাকৃত কমবয়েসী হিজড়া ঢোল নিয়ে অপেক্ষা করে। তার সঙ্গে ঘরে ফিরবে বৃন্দাবন। খেয়াল করি আমার উড়নি খসে যাওয়া বুকের দিকে তার সতৃষ্ণ দৃষ্টি। আমি সে উড়নি টানি না। অপেক্ষা করি। চোখ সরিয়ে নিয়ে সে অপ্রস্তুত হাসে। চিবুকে হাত দিয়ে বলে "মঙ্গল হোক, মঙ্গল করুন ঠাকুর।"
    একটু কুঁকড়ে যাই। সমাজের মতই।
  • সিকি | 158.195.***.*** | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৪:৫০630828
  • সকালটা অন্যরকম করে দিলে।

    এমন করে লিখতে পারে কেউ?
  • Abhyu | 109.172.***.*** | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৫:১২630829
  • ভালো লেখা, কিন্তু আরেকটা লেখা চাই। একেবারেই আবেগ বর্জিত, ডাক্তারের/বিজ্ঞানীর চোখ দিয়ে দেখা।
  • sosen | 111.63.***.*** | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৮:৫৫630830
  • চিন্টুবাবুকে ধন্যবাদ।
    এই লেখাটা একটি কথোপকথনের প্রায় হুবহু প্রতিলিপি, আজ থেকে দশ বছর আগের সে কথোপকথন। সেদিন কখনো লিখব বলে মনে হয়নি, কৌতুহল ছিল মাত্র। আজ স্মৃতি থেকে পুনরুদ্ধার করে লিখতে গিয়ে এই মানুষটির নাম-ও আমি বদলাইনি। পরে অবশ্য খোঁজ ও নিইনি তাঁর কি হলো। আশা করি তিনি আজও আছেন, সুস্থ আছেন।
    ডাক্তারের বা বিজ্ঞানীর চোখ দিয়ে নয়, দশ বছর আগের কিছুটা পল্লবদর্শী চোখ নিয়ে এমন আরো কিছু মানুষের সঙ্গে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে কথা বলেছিলাম। সেই সব কথোপকথন, তাঁদের তীব্র ও উচ্চকিত বাঁচতে চাওয়ার নিচে লুকিয়ে থাকা সহস্র অন্ধকারের গল্প থেকে কিছু জেনেছিলাম এঁদের সম্পর্কে। কখনো হয়ত সেসব নথিবদ্ধ করতে পারব, এই খসড়া তার-ই একটা শুরুর চেষ্টা ছিল।
  • কল্লোল | 111.63.***.*** | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৭:২৯630832
  • সোসেন। আব্দুল জব্বরের একটা বই আছে বাংলার চালচিত্র। তাতে এদের নিয়ে একটা লেখা আছে, পড়া না থাকলে পড়ে নিও।
    আমার এদের নিয়ে চিন্তা পাল্টানোর জন্য ঐ লেখাটাই দায়ী। বড় ভালো বইটার অন্য লেখাগুলোও।
  • সুকি | 212.16.***.*** | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৭:২৮630822
  • হিজড়েদের নিয়ে এক কালে বেশ ইন্টারেষ্ট এসে গিয়েছিল - এতো দিন বাদে সেই ইণ্টারেষ্টের কারণটা ঠিক মনে করতে পারছি না।

    ১৯৯৩-১৯৯৪ সালের সমীক্ষায় বলা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে মোট হিজড়েদের সংখ্যা নাকি ৩৪৩৮। সবচেয়ে বেশী হিজড়ে আছে কলকাতায় - ৪৩১ জন আর সবচেয়ে কম আছে দার্জিলিং জেলাতে ৪৮ জন। হুগলীতে ২১৫, বর্ধমানে ২৭০, হাওড়া ৩৯০ ইত্যাদি।
    আরো একটা ইন্টারেষ্টীং স্টাডী পড়েছিলাম - হিজড়ে মানসিকতায় চলচিত্র। তাতে বলছে নাকি ৪৫ বছরের উপরের হিজড়েরা পৌরাণিক ছবি দেখতে ভালোবাসে, যেখানে ২০ এর নীচে হিজড়েরা যৌন বিষয়ক।
  • sosen | 111.22.***.*** | ২১ এপ্রিল ২০১৪ ১৯:২৮630823
  • অটো-ওলা মনিরুদ্দিন বলেছিল, কোনো ভয় নেই দিদি। আমি এই মোড়ের ওপারেই থাকি, ঐ কলাবাগানের ওধারে। ঘরে যাবো, চা পাঁউরুটি খেয়েই আসবো এখুনি। আপনি আমার ঘরে গিয়াও বসতে পারেন। তয় আমি আপনারে সাথে করেই নিয়া যাবো।
    ওদিকে কলাবাগান, এদিকে কি বাগান কে জানে। এক্খানা শুঁড়িপথ, তার ওপর মধ্যবিকেলের লাল আভা। ধুলো উড়িয়ে আরেকখানা অটো সেই শুঁড়িপথ ধরে চলে যায়।
    সাহস সঞ্চয় করে মুঠোয় চেপে ধরি সদ্য কেনা সোনি এরিকসনের মোবাইল ফোন। তারপর নেমে পড়ি সেই সরু রাস্তায়।
    আমি রাস্তার শেষে পৌঁছতে না পৌঁছতেই দেখি সেই অটো ফিরে আসছে। আমায় দেখে সে দাঁড়িয়ে পড়লো। "দিদি এদিকে তো যাওয়ার রাস্তা নাই।"
    আমি বলি, মনিরুদ্দিন বললো এদিকে ঐ যে, ঐ হিজড়াদের পাড়া। এখান দিয়ে যায় না সেখানে?
    অটো-ওলা অবাক হয়ে আমার পানে তাকায়। মাথার উপর থেকে নীচ অবধি উচ্চাবচতা মেপে দেখে, আমার নারীত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে সে বলে, দিদি, ওখানে তো মেয়েছেলেরা যায় না, ওখানে কেন যাইবেন?
    আমি একটু ভেবে বলি, খুব নরম করে বলি-একটু কথা বলতাম। আপনি চেনেন ওখানে কাউকে?

    চিনব না কেন, এখনি নামায়ে আলাম। কিন্তু কিয়ের কথা? আপনার সাথে কেউ নাই, দিদি?

    না, সাথে কেউ নেই। আমি শুনতে এসেছি।ওদের কথা। আপনি নিয়ে যাবেন আমাকে? আপনি,কিংবা মনিরুদ্দিন, কিংবা আর কেউ?

    পাড়া ঠিক নয়। বাড়ি। উঠোনের চারপাশে ঘর। দাওয়ায় বসে শুয়ে, সায়া ব্লাউজ পরা, ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত, পাউডার গলে পড়া কয়েকটি মানুষ। কেউ খুঁটিতে হেলান দিয়ে বিড়ি টানে। কেউ উঠোনের কলের কাছে দাঁড়িয়ে গুড়াখু দিয়ে দাঁত মাজে। এক অর্ধপ্রৌঢ়া সায়া সম্পূর্ণ তুলে, উপুড় হয়ে শুয়ে থাকে। আর এক অল্পবয়েসী তার পিছনে হ্যারিকেনের উপর থেকে উত্তপ্ত নরম ন্যাক্ড়া তুলে নিয়ে নিয়ে সেঁক দেয়। এই নিভৃতির মধ্যে আমি গিয়ে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রথমে এক চিত্রার্পিত নিস্তব্ধতা নেমে আসে। তারপর সবাই ধড়্মড় করে উঠে পড়ে। এক ক্রুদ্ধ হট্টগোল বেধে যায়।
  • obheek | 125.253.***.*** | ০৬ মে ২০১৪ ১৫:৪৪630824
  • সসেন থামলেন কেন?
  • আশ্চর্য্যকুমার | 45.25.***.*** | ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:১৫739303
  • " পাড়া ঠিক নয়। বাড়ি। উঠোনের চারপাশে ঘর। দাওয়ায় বসে শুয়ে, সায়া ব্লাউজ পরা, ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত, পাউডার গলে পড়া কয়েকটি মানুষ। " 
     
    - এটা কোন বইয়ের অংশ ?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন