এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  গান

  • গান

    সে
    গান | ১৫ নভেম্বর ২০১৩ | ৯০০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ishani Hazra | ২০ নভেম্বর ২০১৩ ১৯:০৭622951
  • আমি ঝড়ের কাছে রেখে গেলাম আমার ঠিকানা
    .......................................................................

    ১৯ নভেম্বর , ২০১৩ | কলকাতার সন্ধে | অল্প হিমেল , অল্প আলো-আঁধারি | কলামন্দির | প্রয়াত সলিল চৌধুরীর ৮৮তম জন্মদিবসে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হতে চলেছে তাঁর অজস্র লেখালেখির প্রথম সংকলনটি | প্রকাশক দে'জ পাবলিশিং | . তারপর গানে গানে শ্রদ্ধা নিবেদন | আমন্ত্রণমূলক প্রবেশাধিকার | এবং আমার হাতে সেই চিঠি |

    অনুষ্ঠান শুরু হল সাড়ে পাঁচটায় | বইটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় | মঞ্চে সবিতা, অন্তরা, পবিত্র সরকার , সুধাংশু দে | এরপর আমাদের অবাক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় | এসব তো গতানুগতিক | বই বেরোল , ছবি উঠল ক্লিক ক্লিক , সবাই কিছু কিছু বললেন... প্রেস কভারেজ ইত্যাদি | ও সব আজকের খবরের কাগজেই পাওয়া যাবে | আমি বরং আমার রোমাঞ্চ কিছু ভাগ করে নিই আর গানের গল্প | কিছু অজানা সলিল | যা কাল টুকরো কথায় স্মৃতির আলাপচারিতায় উঠে এসেছে |

    সবিতা চৌধুরী | আমার ছোটবেলায় চিনেছি সবিতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে | সবিতা জানালেন , সলিলের ছেলেমানুষের মতো খুশিতে উচ্ছল হয়ে ওঠা | জন্মদিনে | পায়েস , মাংস , নকশা আঁকা পাঞ্জাবিতে জড়িয়ে থাকত যে খুশি | একবার নাকি জন্মদিনে কাকে ডেকে বলেছিলেন , " বাল্ব নিয়ে আয় |" " ও মা , কেন , এই তো সারা বাড়িতেই আলো আছে | বাল্ব দিয়ে কী হবে ?" সলিল বলেছিলেন , " আজ ৬০ ওয়াটের বাল্ব জ্বলবে | আজ যে আমার ৬০ বছরের জন্মদিন !"

    খুব ঝগড়া হত স্বামী স্ত্রীর মধ্যে | কে আগে যাবেন | এখন সবিতার মনে হয় , সলিল জানতেন তিনিই আগে | তাই হয়ত এই গানটি লিখেছিলেন , যার এক নতুন অর্থ আজ সবিতার কাছে ধরা পড়ে | " তুমি কি কখনো সেই গান শোন.. যে গান কানেতে শোনা যায় না কখনো , যে গানের কোনো নেই স্বরলিপি...''

    আমার চোখের সামনে মঞ্চে সলিলের যে ছবি..চোখ চলে যাচ্ছিল বারবার ওই ছবির মানুষটির দু'চোখের দিকে | কবিতা যখন সুরে কথা বলে, তখন সে গান হয়ে ওঠে | সলিল আগে কবি | পরে গান হয়ে ওঠে যা | ওই দু'টি চোখে যে প্রশান্তি, তা শুধু কথা আর সুরের মেলবন্ধনই এনে দিতে পারে |

    প্রথম নিবেদক ক্যালকাটা কয়ার | সমবেত কন্ঠ | পরিচালনায় কল্যাণ সেন বরাট | সঙ্গে সবিতা -অন্তরা | তিনটি গান | খুব চেনা | যা যেখানে যে কেউ গাইলেই আমরাও গুনগুন করে উঠি | যে গানের কথা আজও মুখে মুখে ফেরে | ও আলোর পথযাত্রী , আহ্বান শোন আহ্বান আসে মাঠ ঘাট বন পেরিয়ে এবং সেদিন আর কত দূরে | শুনতে শুনতে আমার মনে একটা কথা ঝিলিক দিয়ে উঠল , এই লোকটি , সলিল ...was born well ahead of his time !

    শুধু এই গান কেন, অন্য গান..আধুনিক গান .. যে গান এরপর আমরা সবিতার কন্ঠে শুনলাম ..যে গান শুনে আমার চোখে ছবির মতো ভেসে এল রবিবারের অনুরোধের আসর , এইচ এম ভির শারদ অর্ঘ্য..ও বউ কথা কও বলে পাখি আর ডাকিস না ! বা সবিতার কন্ঠেই পরের গানটি .. সুরের এই ঝর ঝর ঝর ঝর্ণা.....| প্রথম গানটি প্রসঙ্গে সবিতা জানালেন , দুজনে একবার আসামে গিয়েছিলেন | সেখানে জানালায় রোজ একটি অচেনা পাখি এসে শিস দিয়ে ডাক দিয়ে যেত | সেই শিস ব্যবহার করেন সলিল এই গানের শুরুতে | আর সেই শিস নির্ভর করে ওই বউ কথা কও পাখিটিকে নিয়ে লেখেন এই গান | আর পরের গানটি ? Three part harmony -র এক অনন্য ব্যবহার | একাধিক কন্ঠ এবং যন্ত্র ..কী অসাধারণ মেলবন্ধন ! অন্তরা বললেন , " মা আমাদের বলেন, তোরা গাইতেই পারিস না সেভাবে|" সবিতা বললেন , 'বলি | আমাদের যে dedication ছিল , তা আজ আর কই ?" আমি কিন্তু অবাক হয়েছি সবিতার গান শুনে | আশাতীত প্রাপ্তি আমার | এতদিন পর..ভাবিনি..এতটা পাব |

    শিবাজি চট্টোপাধ্যায় | রানার | অত দীর্ঘ একটি গান ..কাগজ না দেখে কী অবলীলায় গেয়ে গেলেন.. আমাদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছিল...সেই সুরের মায়া...রানার চলেছে তাই ঝুমঝুম ঘন্টা বাজছে রাতে , রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে...দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছোটে রানার রানার..কাজ নিয়েছে সে নতুন খবর আনার. এই গানটি যতবার শুনি, পুরনো হয় না..কী অদ্ভুতভাবে দ্রুত আর বিলম্বিতলয় দু'গুছি বিনুনির মত পাকে পাকে বাঁধা , তাই না ? তবে হেমন্তর অভাব কী আর পূরণ হয় ? হয় না ! তবু বলব, শিবাজি আমাকে অন্তত তৃপ্ত করেছেন |

    এরপর এক মিনিট নীরবতা পালন ছিল. সেই কিন্নরকণ্ঠীর জন্য | আমার বড় প্রিয় মাধুরী চট্টোপাধ্যায় | শম্পা কুণ্ডু শোনালেন " নিজেরে হারায়ে খুঁজি " | সলিল কে পেলাম, মাধুরীকে পেলাম না | আমি বড্ড biased বোধহয় ! ফিরে এসে ... আ:, আমার ইউ টিউব বেঁচে থাক !

    হাতে প্লাস্টার নিয়ে বনশ্রী | এসেই বললেন , " কেমন গাইব জানি না | বড্ড ভয় করছে | তবে ভাঙা হাত নিয়েও হারমোনিয়াম বাজাব | কারণ এই গানের সঙ্গে বাজাতে না পারলে গান সম্পূর্ণ হয় না |'' কী শক্ত compositon ! এই তো ফের এলাম, এই তো ফিরে পেলাম | আমি জানি না, এই সব গান গাইবার দম আজকের প্রজন্মের আছে কি না !

    রাঘব | ধনঞ্জয় গেয়েছিলেন ঝনন ঝনন বাজে | রেওয়াজী গলা, ক্লাসিকাল বেস ছাড়া এই গান হয় না | আমি জানতাম , রাঘব পারবে | এখনকার শিল্পীদের মধ্যে পারলে একমাত্র ওই পারবে | এবং আমার অনুমান ঠিক ছিল | রাঘব এরপর ...পথ হারাব বলেই এবার পথে নেমেছি | এসব গান তো আমাদের প্রায় সবার মুখস্ত | রাঘব কি আর একা গাইছিল নাকি? আমরাও তো নীচু গলায় ওর সঙ্গেই গুনগুন গুনগুন..

    আবার চমক | মঞ্চে বিশ্বজিত | সঙ্গে সেই পুজোর গান | যায় যায় দিন , বসে বসে দিন..জানি না এখন রাত কিবা দিন | সঙ্গে সবিতা | বিশ্বজিত বললেন , " এমন বহুমুখী প্রতিভা খুব কম দেখেছি | গান, কবিতা, সুর ? না | সেই সঙ্গে ছবি আঁকা , ছবি পরিচালনাও | পরিচালনা করেছিলেন পিঞ্জরে কী পন্ছী | সলিলদা এক আশ্চর্য পুরুষ | A miracle man !" কী অনায়াস stage presence এখনো বিশ্বজিতের | গাইলেন ধিতাং ধিতাং বলে ..গানটিও | হাততালির ঝড়ে হলে উড়ে গেল হাজার কবুতর |

    অরুন্ধতী হোম চৌধুরী গাইলেন চলে যে যায় দিন | গানটি আমি আগে শুনিনি | উপরি পাওনা আমার |

    মঞ্চে এবার গৌতম ঘোষ | চিত্র পরিচালক | তার কথাতেই বলি , " একজন মানুষ সঙ্গীতকে জীবনে ধারণ করেছিলেন | এক বিরাট প্রবাহের মতো | দেখিয়ে দিয়েছিলেন , মার্গ সঙ্গীত, লোক সঙ্গীত, এমনকি ওয়েস্টার্ন ক্লাসিকাল ... ত্রিধারা সঙ্গমের মতো | কোনটি কোনটির সঙ্গে বিরোধে নেই | একটি দল ছিল কলকাতায়..প্রতিধ্বনি | যারা শুধু সলিলের গান গাইত | আচ্ছা, আমরা সলিল সঙ্গীত বলতে পারি না ? যেমন রবীন্দ্র সঙ্গীত , নজরুলগীতি ?" সত্যিই তো ! এভাবে তো ভাবিনি কখনো !

    মানবেন্দ্র চলে গেছেন সেই কবেই | বাবার গান নিয়ে মানসী | যদি জানতে গো তুমি জানতে | এ গানটিও আমি আগে শুনিনি | ১৯৬২-র গান | মানসী ভালই গায় | সিদ্ধেশ্বর -মানবেন্দ্রর পরিবার...গান তো রক্তেই থাকে, আর কন্ঠে !

    সপ্তক এল | গলাটি দিব্যি গমগমে | প্রথমে হেমন্তর গান ..আমি ঝড়ের কাছে রেখে গেলাম, তারপর রতুর | শোনো , কোনো একদিন..আকাশ বাতাস জুড়ে রিমঝিম | এরা নতুন প্রজন্ম | আমি খোলা মন নিয়ে শুনেছি | ভালই তো ! স্বর্ণযুগ শেষ হয়ে গেলেও যদি টুকরো টাকরা রোদের কুচি আলো দিতে শেখে , স্বাগতম !

    শ্রীকান্ত আচার্য এবার সমবেতভাবে গলা মেলালেন সেই বিখ্যাত গানে | যে গানটি প্রথমে গেয়েছিলেন সুচিত্রা মিত্র আর সলিল | পরে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় মান্না দে ..' ৭১ -এ | ধন্য আমি জন্মেছি মা তোমার ধূলিতে |

    এরপর আর এক রেওয়াজী কন্ঠ | হৈমন্তী শুক্লা | বড় মিঠে | বললেন , " সলিলদা বলতেন ..তোকে গান দেব কী ! তোর তো খালি ক্লাসিকাল গান চাই |" আহা , সলিল তো পলকাটা হীরে | যেদিকে তাকাই , সেদিকেই দ্যুতি | অন্তরার সঙ্গে হৈমন্তী গাইলেন ..মনবন পাখি চন্দনা | এটি দ্বিতীয় গান | প্রথম গানটির বাণী শুনে চমকে গেলাম | সুর তো দুটি গানেরই অনবদ্য | বাণীটি লিখি..ভালোবাসি বলেই "ভালোবাসি " বলি না ! ঠিকই তো , সত্য স্বপ্রকাশ এবং নিরুচ্চারেই সুন্দর | তাই না ?

    এরপর ভূমি -র সুরজিত | ১৯৫৮-র সেই তোলপাড় করা গান ..দুরন্ত ঘূর্ণির এই লেগেছে পাক ! এই গানটি নিয়ে এক অজানা গল্প | সবিতার জবানীতে | সবিতা , আলপনা তখন টুকটাক বাইরে অনুষ্ঠানে ডাক পান | একদিন যাচ্ছেন , সলিল বললেন , "কখন ফিরবে ?" সবিতা বলেছিলেন, " ঘন্টাখানেক | ফিরে এসে যেন দেখি, একটা গান লিখে ফেলেছ " | একঘন্টায় তৈরী হয় এই গানের কথা আর সুর | এই সলিল !

    মঞ্চে এবার ডাক্তারদের গান | পাঁচজন | দলের নাম "ব্যতিক্রমী " | বিবেক দত্ত , রাজা রায় , তাপস রায়চৌধুরী , পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় আর শিবাজী বসু | সুন্দর সমবেত উপস্থাপনা | পথে এবার নাম সাথী আর শ্যামলবরণী ওগো কন্যা | দ্বিজেন অসুস্থ | ছিলেন, তবে গাইতে পারেননি | আক্ষেপ রয়ে গেল | কারণ এই শ্যামলবরণী গানটি ঠিক সমবেত উপস্থাপনা হিসেবে আমার যথাযথ মনে হয়নি | এটি একক কন্ঠেই মানায় | তাই এবারেও আমি ইউ টিউব আশ্রয় করেছিলাম |

    নিশিদিন নিশিদিন বাজে স্মরণের বীণ | ইন্দ্রাণী সেন | ভালোই | তবে লতা ..লতাই | আমি ইন্দ্রাণী শুনেছি আর লতার কথা ভেবেছি |

    আমার এ অন্ধ দু 'টি রাত | কোনো রাতে সূর্য ওঠে , কোনো রাতে চাঁদ |

    শ্রীকান্ত আচার্য | পাগল হাওয়া , আমার মতন তুমিও হারিয়ে গেলে আর আমি চলতে চলতে থেমে গেছি | জটিলেশ্বর এবং পিন্টু | প্রত্যাশা ছিল অনেক | যেকোনো কারণেই হোক , পূরণ হয়নি | সব দিন সবাই ঠিকঠাক ভাবে মনে ঝংকার তুলতে পারেন না | এক্ষেত্রে কাল সেই দিনটি আমি শ্রীকান্তকে দেব | আমার বিচারে | কাল চাঁদ ছিল না গানে, সূর্যও নয় | তারা ছিল শুধু | একটি বা দু'টি |

    তবে শ্রীকান্ত একটি কাহিনী শোনাল | জটিলেশ্বরের মুখে শোনা | পাগল হাওয়া রেকর্ডিং হবে | মহড়ার জন্য গেছেন শিল্পী | " ও সলিলদা , গানের কথাগুলো দিন | একটু ঝালিয়ে নিই |" " আরে, বোসো তো | একটু বাজনা শোনো |" জটিলেশ্বর নার্ভাস | সলিল বললেন , " ইয়ে, মানে কথাগুলো এখনো লেখা হয়নি | তবে হয়ে যাবে |" খানিক পর | পেছনে একটা নোংরা বারান্দা | জানালা খোলা | জটিলেশ্বর উঁকি মেরে দেখেন , একটা ছেঁড়া ঠোঙা কেটে হাত দিয়ে সমান করে সলিল কী যেন লিখছেন | পাগল হাওয়া | বয়ে গেল শনশন করে | ছেঁড়া কাগজের হাত ধরে | এভাবেই গান এবং এটাই সলিল |

    উষা উত্থুপ | জানেন, কী করে আসর মাতাতে হয় | ভিনি , ভিডি , ভিসি | ও মাঝি বাইও আর এই হাসি এই গান | মঞ্চে রোশনাই ছড়িয়ে চলে গেলেন |

    এরপর এক শিল্পী গাইলেন বাজে গো বীণা | আমার চেনা মুখ নয় | কী নাম ঠিক ধরতে পারলাম না | চেনা মুখের কাছে আকাশ ছোঁয়া প্রত্যাশা থাকে | এখানে ছিল না | সলিল-মান্না কম্বিনেশন | কী জানি কেমন হবে ! কিন্তু না, বেশ তো ! ইউ টিউব খুলিনি...এইটুকুই বলব |

    কার্তিককুমার-বসন্তকুমার | সেযুগের মাচা আর্টিস্ট | গানটি হল সরস্বতী নদীতীরে | গাইতেন দু'জন | কলকাতার অলিগলি কাঁপিয়ে | কাল গাইল উপল | ভালোই |

    তন্ময় বোস | তবলায় সিদ্ধহস্ত | গ্র্যামি পুরস্কার | আমার খুব প্রিয় | খুব দামী কথা বললেন | সলিল চৌধুরী | Mortal man , immortal melodies | সলিল চৌধুরী | A complete artist |

    এরপর শ্যামলপুত্র সৈকত | আহা ওই আঁকাবাঁকা যে পথ যায় সুদূরে | এরা সবাই ভালো | কিন্তু এদের গুণী পিতাদের ছায়া এতই দীর্ঘ , এতই আবিষ্টকারী ...যে আমরা সে ঘোর কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারি না | এদের খামতিগুলো বিবর্ধিত অবস্থায় দেখা দেয় | এরা কেউই কিন্তু খারাপ গায় না ! কিন্তু আমরা মাথা নেড়ে বলি , "আহা, বাবার মতো হল না !"

    সলিল একসময় তিতিবিরক্ত হয়ে বলেছিলেন , " গানে এখন বড় শব্দের ঝনঝন | এটা রুকতে হবে | মিউজিকে এত নয়েজ চলে না | Music is humming " | এবং সেই গান..সলিল্রের নিজের কন্ঠে...এই রোকো , পৃথিবীর গাড়িটা থামাও | গাইলেন অন্তরা আর সৈকত | কিন্তু কী আশ্চর্য , একগুচ্ছ ওই বাজনা নিয়ে | Noise ! এখন যে গানবাজনা নয় , বাজনা-গানের যুগ ...তাই জন্যই কি ?

    শেষ গানে সবাই | মঞ্চে | এবং শ্রোতারাও গলা মেলালেন | ধিতাং ধিতাং বোলে |

    সবিতা বললেন , বিদেশে অনুষ্ঠান করেছেন | বিদেশী সঙ্গীতজ্ঞ জানতে চেয়েছেন , কার composition ? ভারতীয় ? বাঙালী ? এই রকম মাদক নেশার সুর ? কী করে ?

    সলিল ভালোবাসতেন সমুদ্রের তীরে গিয়ে ঢেউয়ের শব্দ শুনতে | হাওয়ার শনশনানি | চুপচাপ | একা | তৈরী হত নতুন কথা | নতুন সুর | নতুন কবিতা | নতুন গান | সলিল বলেছিলেন , " আমি জন্মেছি সময়ের ৫০ বছর আগে | হয়ত কখনো পরে আমায় নিয়ে ভাববে লোকে | আমার লেখা নিয়ে, গান নিয়ে | "

    কী অমোঘ ভবিষ্যতবাণী | ছোটবেলায় শুনতাম.. একরকম অর্থ বহন করত | ছন্দে, সুরে | মাতাল করা দুলুনি ছড়িয়ে পড়ত শরীর মন জুড়ে | এখন শুনি | অন্য অর্থ অন্য অভিঘাতে বিবশ করে দেয় |

    এই রচনা সংগ্রহের উত্সর্গের পাতায় সবিতাকে লেখা ,
    " তোমাকে আমার ঘুম ভাঙার গান দিলাম | যদি কখনো ঘুমোই , জাগিয়ে দিও এই গান গেয়ে |'

    এই মানুষটিই লিখেছিলেন ,

    পাম্পটা থামলে বুঝলুম
    পাম্পটা চলছিল
    কথাটা থামলে বুঝলুম
    লোকটা বলছিল
    আলোটা নিভলে বুঝলুম
    আলোটা জ্বলছিল
    বরফ গললে বুঝলুম
    একদিন সেটা জল ছিল
    ভালোবেসে শেষে বুঝলুম
    কতখানি তাতে ছল ছিল
    যৌবন শেষে বুঝলুম
    কতখানি তার বল ছিল
    নেশা শেষ হলে বুঝলুম
    পা দুটো আমার টলছিল
    বক্তৃতা শেষে বুঝলুম
    কতখানি তাতে গুল ছিল
    টাক-মাথা হয়ে বুঝলুম
    একদিন তাতে চুল ছিল
    ( আর ) জীবন থামলে বুঝলুম
    জীবনটা বেশ চলছিল !
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন