এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শুন্যে খুড়োর কল ......

    Binary
    অন্যান্য | ০৭ ডিসেম্বর ২০১২ | ১০৭৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Binary | 208.169.***.*** | ০৭ ডিসেম্বর ২০১২ ২০:২২583034
  • -- বাবা
    -- উঁ ?
    -- টুয়েন্টি এইটথ, আমাদের গ্রাজুয়েশন ডে
    -- অ্যাঁ ?
    -- এলিমেন্টারি স্কুল শেষ, তাই তো
    -- সেকিরে ? এর মধ্যে-ই গ্রাজুয়েশন
    -- ধুর, তুমি না, কিচ্ছু কেয়ার কর না
    -- আরে তাইতো, কি হবে ? মানে গ্র্যাজুয়েশন -এ ?
    -- আরে আমায় গ্র্যাজুয়েশন ড্রেস কিনতে হবে না ?

    ইমন ভাবে। 'গ্র্যাজুয়েশন'। শব্দটার কত ভিন্ন মানে। যেমন এতকাল, নিজের ছোটো থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত্য। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালেয়ের গন্ডি পার করে। একরকম মানে ছিলো। অনেক কঠিন ছিলো মানেটা। পারা না পারা-র পনের-ষোলো বছর পরে বোঝা যেত সেটা। আর মেয়ের বড় হওয়ার সময় , এই ভীন দেশে, সম্পূর্ণ ভিন্ন মানে নিয়ে, সেই একই 'গ্যাজুয়েশন'। অনেক সহজে , ছোটো ছোটো সাফল্য, ছোটো ছোটো শিখতে পারাতেও 'গ্র্যাজুয়েশন' । লাইব্রেরিতে লেবেল ফাইব রিডিং কমপ্লিট করলে গ্যাজুয়েশন। যারা অঙ্কে কাঁচা, তারা স্পেশাল টিউটরিং শেষ করলে গ্র্যাজুয়েশন। পিয়ানো বাজানোয় তিন মাসের শিক্ষা শেষ করলে গ্র্যাজুয়েশন। আর, জুনের আঠাশে, আটক্লাশের পরে, এলিমেন্টারি স্কুল শেষ করে-ও সেই গ্র্যাজুয়েশন। ভাল-ই তো। ইমন ভাবে। ছোটো ছোটো সাফল্যে পুরস্কার। নিজের উপর আস্থা, স্বকীয়তা, এসব নিয়ে ভাবতে শেখায়।

    মেয়ে বোঝায়। টুয়েন্টি-এইটথ, ওদের গ্র্যাজুয়েশন নাইট। 'এ বিগ নাইট ইন আওয়ার লাইফ'। অডিটোরিয়ামে, অনুষ্ঠান হবে। বাবা-মা-ঠাকুদ্দা-ঠাকুমা-ভাই-বোন সবাই আমন্ত্রিত। গ্রুপ ফটো তোলা হবে। স্কুলের অধ্যক্ষ ভাষন দেবেন। বলবেন অ্যাম্বিশনের কথা। বলবেন 'স্কাই ইস দ্য লিমিট'। তো সেই 'এ বিগ নাইট ইন আওয়ার লাইফ', -এর জন্য প্রস্তুতি চাই। প্রস্তুতি মানে পোষাক কেনা। গ্রাজুয়েশন ড্রেস। সবচেয়ে সুন্দরটা চাই। ফর্মাল। তো, গ্র্যাজুয়েশন ড্রেস কেনার জন্য, তিনটে শনিবারে, পাঁচটা শপিংমল-এর, কুড়িটা দোকান ঘোরা হল। এক একটা দোকানে ঢুকে পাঁচটা-সাতটা জামা পছন্দ করে, পড়ে-পরখ-করে দেখার খুপরি মত ঘরে ঢুকে যায় মেয়ে। ইমন বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। এক-একটা জামা পরে, বাইরে এসে, প্রমান সাইজের আয়নার সামনে নিজেকে দ্যাখে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। ইমনের পছন্দের কথা দু-একবার পরখ করে বটে, কিন্তু সেটার যে কোনো গুরুত্ব নেই ইমন সেটা জানে। পছন্দের ডিপার্টমেন্টটা মেয়ের একান্ত নিজস্ব। বা মা'য়ের সাথে কোলাবরেশন। পঞ্চম শপিং মলের ছয় নম্বর দোকানের একটা জামা পছন্দ হলে শেষ পর্যন্ত হাঁফ ছাড়ে ইমন।

    তো, যেদিন গ্র্যাজুয়েশন নাইট, সন্ধ্যায় পাক্কা একঘন্টা পরে নিজের ঘর থেকে তৈরী হয়ে বের হয় মেয়ে। মুখে প্রসাধনি, হালকা মেকাপ, মাসকারা, আরো কি কি সব। ক্রমেই ইমনের মনে হতে থাকে, অনুষ্ঠানটা গ্র্যাজুয়েশনের নয়, ফ্যাশান শো হতে পারা বিচিত্র নয়। তার্পর মেয়ে'কে ক্যামেরার লুক থ্রুতে দেখতে দেখতে, কেমন যেন ভীষণ অবাক লাগে ইমনের। ভীষণ একটা অপরিচিত, পুর্ণবিকশিত একজন মেয়ে ক্যামেরার ফ্রেমে। কবে হল ?

    **
    স্কুলের সামনে গাড়ীর লাইন। কাছের ছোটো পার্কিং লট ইতিমধ্যে ভর্তি। যদিও এখোনো তিরিশ মিনিট বাকি অনুষ্ঠানের সুরুর। এক-একজন ছেলে/মেয়ের বাড়ীথেকে দু-তিনটে করে গাড়ী। কোনোটা বাবা-মায়ের, কোনোটা দাদু-দিদিমার। বাবা-মা সবাই ফর্মাল ড্রেসে। দাদু-দিদিমারাও। এই প্রথম ইমনের মনে হয় এদেশে কেন সবাই, জীবনের সব 'হ্যাপেনিং'কে এত গুরুত্ব দেয়। খারাপ কি ? তো, ছোটো পার্কিংলটে জায়গা না পেয়ে, খেলার মাঠ পার করে, পীচ বাঁধান বড় চত্তরে পার্ক করে ইমন, সেখানেও গাড়ীর বেশ ভীড়। তার আগে অবশ্য মেয়ে স্কুলের দরজায় নামিয়ে দিতে হয়েছে। আকাশ মেঘলা, ব্‌ষ্টি আসবে, তাই। গাড়ী থেকে বেড়িয়ে সেই ব্‌ষ্টি-র মধ্যে পড়ে ইমন। ক্যামেরা ছাতা আগলে দৌড়ে মাঠ পেরিয়ে, দুই মিনিটে স্কুলে দরজায় পৌঁছে, ভয়ঙ্কর হাঁপায় । বয়স বাড়ার ভাবনাটা মাথায় আবার পিড়িং করে।

    বড় জিমন্যাশিয়ামের স্টেজের মাথায় বড় বড় করে নীল/হলুদ রং এ, ব্লক প্রিন্টে লেখা 'উইলোগ্রুভ এলিমেন্টারি স্কুল, ক্লাশ অফ ২০১২'। স্টেজের সামানে তিন-টায়ার স্ট্যান্ডে-র নীচে লাল কার্পেট। তার-ও সামনে সারিবদ্ধ ডেকচেয়ারে দর্শকদের বসার জায়গা। প্রতিটা চেয়ারে আজকের অনুষ্ঠানসূচী, আর কার বাবা-মা-পরিবারের বসার জন্য নির্দিষ্ট, তার নাম লেখা। এসব নাকি ছেলে-মেয়েরা-ই আয়োজন করেছে। ক্লাশ অফ ২০১২। গত দুদিন ধরে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা সবাই হাস্যমুখে, ফর্মাল ড্রেসে, ক্যামেরাহাতে। খুব একটা ঝলমলে পরিবেশ। অপরিচিতরাও এসে, 'শুভসন্ধ্যা' , 'মি ক্যারেন'স মম', 'উই কাপ্রি'স প্যারেন্ট'স' ইত্যাদি বলে আলাপ করে যাচ্ছে। সবাই খুব খুশি। ছেলে/মেয়ের প্রথম পদক্ষেপ তো। আউট অফ বেবী'স রুম।

    অনুষ্ঠানের অবশ্য তেমন বৈচিত্র কিছু নেই। সেই অধ্যক্ষা-র ভাষণ। 'ক্লাশ অফ ২০১২' নিয়ে কিছু স্ম্‌তিচারণ। ছেলেমেয়েদের দুষ্টুমির কথা। ভালবাসার কথা। শীতের স্কেটিং এর কথা। গরমে ক্যাম্পিং এর কথা। দায়ীত্বশীল নাগরিক হওয়ার অনুরোধ (আদেশ নয়)। আর স্বপ্নের কথা, স্কাই ইস দ্য লিমিট। তারপর আরো দুএকজন শিক্ষিকার কিছু কথা, পরের বছরে, হাইস্কুলের চলন-বলন-ক্যারিকুলাম নিয়ে কিছু কথা হওয়ার পর এক-এক করে ছেলেমেয়ের সবার পরিচয় হয়। ছেলেমেয়েরা কিউ-এ আসে পরপর। পরের জন, আগের জনের পরিচয় দেয়। নিজেদের-ই লেখা। কে ক বছর এই স্কুলে ছিলো, মেমোরেবল ইভেন্টস কি কি, বড় হয়ে কি হতে চায় ইত্যাদি। তার্পরে পেছনে সাদা পর্দায় সবার ছবি আসে, ক্লাসে, মাঠে, উডশপে, বন্ধূদের স্‌ঙ্গে গলাগলি করে। দর্শকরা সকলে খুব উল্লাসের সাথে চীয়ার করে। সক্কলকে।

    সব শেষে, অভিভাবক অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রেসিডেন্টকে কিছু বলতে ডাকা হয়। কোনো এক মিসেস বেরিমোর। ডায়াসের উপরে উঠে আসেন এক বছর পঞ্চাশের সোনালী চুল মহিলা। খয়েরি স্কার্ট। খয়েরি স্পোর্ট কোট। সাদাব্লাউজ। মুখে প্রসাধনি। আঁকা ভুরু। নিজের কিছু পরিচয় দেওয়ার পরে সুরু করেন একটা অ্যানেকটোড দিয়ে। যার মুল চরিত্র কলিন পাওয়েল। আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট ছিলেন যিনি। ইরাক যুদ্ধের সময়। আবেগ নিয়ে সুরু করেন মিসেস বেরিমোর। বলেন, কলিন পাওয়েল খুবই সম্মানিত ব্যক্তি। নর্থ অ্যামেরিকায়। তাঁর আত্মকথন।

    -- বলেন ইরাকের 'উইপন অফ মাস ডেস্ট্রাকশন'-এর কথা। অ্যামেরিকার সরকারের স্থির বিশ্বাসের কথা। বিশ্বের কাছে সেই মত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা আর তাতে কলিন পাওয়েল-এর ভূমিকার কথা। তারপরে বলেন, পরবর্তী ইতিহাস সকলের জানা। 'উইপন অফ মাস ডেস্ট্রাকশন' একটা মিথ ছিলো সেটা প্রমানিত। বিশ্বের সামনে ভুল প্রমানিত হয়েছিলেন কলিন পাওয়েল।
    -- আরো বলেন, মিসেস বেরিমোর, পরে কোনো একান্ত সাক্ষাৎকারে কলিন পাওয়েল নাকি বলেছিলেন, হ্যাঁ, আমি ভুল করেছি। ভুলের পরে ঘুরে দাঁড়ানোটাই জীবন। আমি এখনো অশ্রদ্ধেয় নই। মানুষ আমার ভুলটা মনে রাখেনি।
    -- শেষে, একটু থমকে যাওয়া আবেগ নিয়ে শেষ করেন ,'কিড্‌স, মাই অ্যাডভাইস টু ইউ, ইন কমিং ইয়ার্স, ইফ ইউ ফল ডাউন, ইন এনি স্টেজ অফ লাইফ, দ্য অনলি থিং ইউ ক্যান ডু , ইস ......... টু গেট আপ'।

    খুব হাততালি পরে দর্শক আসনথেকে। কিন্তু, তালি দিতে হাত ওঠেনা ইমনের। অসোয়াস্তি লাগে। ইরাক যুদ্ধের পরে, 'ঘুরে দাঁড়ানোটাই জীবন', মানায় কি ? এমন একজনের মুখে, যার নাম কলিন পাওয়েল। ছেলেমেয়েরা কি শুনেতে পেল ইরাকের কথা। প্রায় ধ্বংশ হয়ে যাওয়া একটা দেশের কথা। মরে যাওয়া শত শত মানুষের কথা। পঙ্গু হয়ে যাওয়া মানুষের কথা। ছেলেমেয়েরা শুনতে পেল ঘুরে দাঁড়ানোর কথাটাই, ভুলের পরিমাপ নিয়ে তো কিছুই বলা হল না।

    **
    অনেক রাতে, বিকেলের ঐ বাষ্পিভুত ক্ষোভ জমা করে, একটা ই-মেল লিখছিলো ইমন। মেয়ের স্কুলের অধ্যক্ষার উদ্দেশ্যে। মিসেস বেরিমোর-র বক্ত্‌তার বিরোধিতা করে। না লিখে সস্তি পাচ্ছিলো না ইমন।
    মেয়ে এসে গা ঘেঁষে বসে। যেমনটা রোজ-ই করে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে। কিছু টুকটাক কথা হয় রোজ-ই। বিশ্বের খবর আলোচনা হয় ওর ভাষায়। স্কুলের কথা হয়। পড়াশুনার কথা-ও হয় একটু আধটু। আজ, মেয়ে প্রথমেই বলে
    -- হাউ ডিড ইউ লাইক দ্যা ডে
    -- ভালই তো রে, নাইস, ইন্স্‌পায়ারিং
    -- আমার ছবি দেখলে ?
    -- হ্যাঁ রে, খুব ভাল লাগল তো
    -- আর ?
    -- কিন্তু আই হ্যাভ সাম রিজার্ভেশন অন ওয়ান থিং
    -- আই নো বাবা, কোনটা আমি জানি
    -- কোনটা ?
    -- মিসেস বেরিমোর-এর স্পীচ
    -- তুই জানিস ?
    -- হ্যাঁতো, যখন বলছিলো, তখনি আমি ভাবলাম বাবা রেগে যাচ্ছে
    -- কি করে জানলি ?
    -- বাঃ জানব না ? তুমি আমার বাবা তো !
    -- .......
    -- .......
    -- জানিস, আমি না একটা মেল লিখছি, তোদের প্রিন্সিপাল কে, ঐ স্পীচের এগইনস্টে
    -- তাই ? দেখি ?

    ড্রাফ্‌ট করা মেইলটা পরে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে মেয়ে। তার্পর বলে,
    -- বাবা একটা কথা বলব, প্লিজ, এই মেলটা পাঠিও না
    -- কেন রে ?
    -- আই ডোন্ট নো, আই মে ফিল এম্ব্যারাসড। আই উইল বি আইডেন্টিফায়েড, মে বি অ্যাস আউটসাইডার। নাও হতে পারে, তাও পাঠিও না প্লিজ।

    *** মেয়ে ঘুমোতে যাওয়ার পরে, অনেক্ষণ চুপ করে বসে থেকে, শেষে, ড্রাফট করা মেইল-টা ডিলিট করে দেয় ইমন। না পাঠিয়ে-ই।

    ***
    "চেনা রাগ,চেনা ক্রোধ,
    চেনা চেনা প্রতিষোধ
    চেনা ভয়, অচেনা আপোষ"
  • bb | 24.99.***.*** | ০৭ ডিসেম্বর ২০১২ ২০:৫৭583045
  • ভাল লাগল, এই রকম আপোষ তো আমরা দিনরাতই করে চলেছি অনবরত ঃ(
  • সিকি | 24.97.***.*** | ০৭ ডিসেম্বর ২০১২ ২১:২০583051
  • আমাকে নয়, আমার আপোষ খাচ্ছো তুমি
    বলো কে জিতল তবে, জন্মভূমি, জন্মভূমি?

    আমাদের প্রত্যেকের ইনবক্সে হয় তো এই রকম ডিলিট করে দেওয়া চিঠি পড়ে রয়েছে।
  • শ্রী সদা | 127.194.***.*** | ০৭ ডিসেম্বর ২০১২ ২২:১২583052
  • বাইনারি দা র লেখা প্রতিবারের মতো এবারেও মুগ্ধ হয়ে পড়লাম।
  • sosen | 111.62.***.*** | ০৭ ডিসেম্বর ২০১২ ২৩:৫২583053
  • খুব ভালো!
  • Lama | 127.194.***.*** | ০৮ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:৪৮583054
  • এরকম কতকিছু যে ডিলিট করতে হয় রোজ রোজ
  • Binary | 80.76.***.*** | ০৮ ডিসেম্বর ২০১২ ২২:৫৯583055
  • থ্যাঙ্কু অল
  • প্পন | 126.202.***.*** | ০৮ ডিসেম্বর ২০১২ ২৩:৪৫583056
  • ....
    এই যে হঠাৎ
    সব শব্দ থেমে যায়, কর্কশ দুপুরবেলা ভরে যায় পাপে -

    টবের মাটিতে আজও দুই পা ডুবিয়ে, হাত ছড়িয়ে দাঁড়ালে
    শরীরে কি ফুল হবে?
  • sumeru | 127.194.***.*** | ০৯ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:৫৬583057
  • এত কথা?
  • a x | 118.204.***.*** | ১০ ডিসেম্বর ২০১২ ২০:৩৪583035
  • বুঝতে পারি, বহুদিন কাটিয়ে কাটিয়ে, আমাদেরও সময় আসছে। বেশিদিন আর এইভাবে কাটানো যাবেনা।

    আজই ভোর ভোর চিঠির খসড়া করতে হল। মেয়ের স্কুলে বলেছে আমরা কি ফেস্টিভাল সেলিব্রেট করি জানাতে, ওরা তাহলে ওদের হানুকা, কাওয়ান্জা, ক্রিস্টমাস ইত্যাদির মধ্যে তার গল্পও শুনিয়ে দেবে। now we have to use the A word, Atheists - the most distrusted of minorities in the USA, more than muslims or homosexuals।

    তো নরম সরম করে লিখলাম, আমরা তো কোনো রিলিজিয়াস ফেস্টিভাল পালন করিনা, আমরা খাই দাই, সিনেমা দেখি, গল্পের বই পড়ি, বন্ধুদের কাছে বেড়াতে যাই, তারা আসে, আর আমরা ক্রিস্টমাসের আলো দেখতে খুব ভালোবাসি - এইভাবেই আমরা ছুটি কাটাই। তবে আমরা চাই ওর বন্ধুরা যে যে পুজো-পার্বণ পালন করে, তার প্র্যাক্টিস, ইতিহাস এসব ও শিখুক, আমরাও ওর সাথে জানব। এই চিঠি যাওয়ার আগে ওকে মিস জিগিয়েছিল ও কি সেলিব্রেট করে। ও বন্ধুর দেখাদেখি হানুক্কা বলেছে। ওর ভাল্লাগে কিভাবে শামিশ দিয়ে মিনোরা জ্বালানো হয়। রোজ একটা করে। এখনও ছোট আছে। এখনও সেইভাবে "নিজের মতামত" হয়নি।

    ইমনের মেয়ের বাবার চিঠিতে অস্বস্তির অনেক আগেই বুঝতে পারি কনফর্ম করার এই স্বাভাবিক চেষ্টা যখন সে দোকান ঘুরে ঘুরে জামা কেনে, যখন ঘন্টা ধরে সাজ করে। না করলে তুমি আলাদা ও একা।
  • S | 147.187.***.*** | ১০ ডিসেম্বর ২০১২ ২০:৫৪583036
  • আমিও ছেলেদের স্কুলে লিখে পাঠালাম, আমরা সামাজিক ভাবে ক্রিসমাস পালন করি, লাইট দেখতে যাই, কেক বানাই। আর এবছর স্যান্টার জন্যে দুধ আর কুকি রাখতে চাই। স্যান্টা কি গিফ্ট দেবে সেই নিয়ে গেসিং গেম চলছে। আবার ফ্যামিলি ট্র্যডিশান লিখতে হবে, তাই লিখ্লাম কোনো কোনো বছর ইন্ডিয়া যাই দাদু-দিদার কাছে।
    আমার লিস্টে উইন্টার সলস্টিসও ছিল। এটা তো মনে হয় পেগান কোনো ফেস্টিভাল, এখানে কারা পালন করে জানি না।
    তবে আমেরিকায় ক্রিসমাস তো পুরোপুরি হলিডে শপিং, লাইট, স্যান্টা আর রুডলফের আওতায়। ধর্মীয় ব্যাপারটা গৌণ হয়ে গেছে।
    বাইনারি কে জানিয়ে রাখি, লেখা খুব ভাল লেগেছে।
  • lcm | 138.48.***.*** | ১০ ডিসেম্বর ২০১২ ২৩:১১583037
  • মিড্‌ল ইস্কুলের স্টুডেন্টদের জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর উদাহারণ দিতে গিয়ে কলিন পাওয়েল, ডাব্লুএমডি, ইরাক ওয়ার ... - কি বিচ্ছিরি এগজ্যাম্প্‌ল।
  • নিছক | 79.2.***.*** | ১০ ডিসেম্বর ২০১২ ২৩:৩৬583038
  • কৌতুহলঃ
    যদি ক্রিস্মাস বা হানুক্কা পালন করেন সামাজিক ভাবে এইটা না বলে যদি বলেন দসেরা কি দিওয়ালি পালন করি (এবং বাচ্চার সংগে সেই রকম পালন করেনও) আলো দিয়ে ঘর সাজাই, বাড়িতে বানানো কিছু ভাজাভুজি খাই ও খাওয়াই, পরস্পরকে কার্ড বা কিছুমিছু উপহার দিই, তবে কি সেকুলারিসমে কিছু কম পড়িবে?
  • S | 147.187.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:০৭583039
  • নিছক,
    সেকুলরিসম নিয়ে আমার খুব একটা মাথাব্যাথা নেই। ধর্মীয়, সেকুলার কোনো উৎসবেই আপত্তি নেই, ছুটি পেলেই হল।
    এইবার দশেরা আর দিওয়ালি - যদি এই ডিসেম্বর মাসে হত তাহলে হয়ত লিখ্তাম। এই সময়টা, মানে এই হলিডে সিজনে বাচ্চাদের স্কুলে বিভিন্ন ধর্মীয়/কালচারাল উৎসবের কথা বলা হয়। এই সময় ক্রিসমাস ছাড়াও জুইশদের হানুকা বা অরো অন্য কিছু কালচারাল ফেস্টিভাল পালন করা হয়। আমার কাছে একটা লিস্ট এসেছিল, তাতে ফেস্টিভালগুলোর নাম ছিল, তার মধ্যে আমাদের পরিবারে কি পালন করা হয় তাই নিয়ে লেখার কথা ছিল। সেই লিস্টের মধ্যে ক্রিসমাসটাই সামাজিকভাবে পালন করি। আনফরচুনেটলি, সেখানে দশেরা বা দিওয়ালি ছিল না। হয়ত নিজের থেকে লেখাও যেত, কিন্তু সময়ের বড় অভাব।
  • a x | 138.249.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:১৮583040
  • নিছক কারে জিগালো? আমরা তো কিছুই পালন বা প্রতিপালন করিনা। কাজেই দসেরাও যা হানুকাও তা।
  • Binary | 80.76.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০০:৫৩583041
  • এখানে ঠিক দুটো জিনিষ বলতে চেয়েছি। এক, একটা তের বছরের মেয়ের কাছে খুব পরিষ্কার, কোনটা বাবা-র ভ্যালুস, আর কোনটা তার পিয়ার ভ্যালু। ঠিক এই জায়গাতে সে সিগ্নিফিক্যান্ট-লি একা। দুই, সমস্ত পশ্চিমে, যত বশি, লিবারাল, ফ্রি থিংকিং ভাব থাকুকনা কেন, অ্যাট লিস্ট ওপরে ওপরে, দে আর হিপোক্রিট ইন্সাইড।

    বাকি, সব আপনা, আপনা।
  • Sandy | 161.14.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০১:৫৪583042
  • আমাদের পৌষপার্বণের পিঠাপুলি ও তো শীতকালের উৎসব। নবান্নও শীতকালেরই না? নতুন ধান ওঠার পরে?
  • Sandy | 161.14.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০২:০১583043
  • বাইনারি, যদি কিছু না মনে করেন, খোদ আ মরি বঙ্গভূমে পাতি বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়তে পড়তেও তেরো বছর বয়সের মেয়েদের কাছেও কোনটা তার বাবার ভ্যালু আর কোনটা পীয়ার ভ্যালু, খুব পরিষ্কার হয়ে প্রতিভাত হয়। সেখানেও দিদিমণিরা যে কতটা ক্ষমতা রাখেন, সে বলে দেবার অপেক্ষা রাখে না। চারপাশের সমাজের সঙ্গে মিশ খেতে গেলে সেখানেও সাজগোজ, নাচগান, সিনেমার গল্প একেবারে আবশ্যক হয়ে যায়। বাবা যদি একটু একরোখা অন্য টাইপের মানুষ হন, মেয়ে কায়্দা করে বাবাকে এড়িয়ে গিয়ে মাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ম্যানেজ করে। কারণ বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় মায়েরা বাবাদের চেয়ে অনেক বেশীর প্র্যাক্টিকাল ও ফ্লেক্সিবল। আর এটা তেরো কেন, আরো আগে থেকেই মেয়েরা বুঝতে শুরু করে দেয়।
  • Binary | 80.76.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০২:২৭583044
  • লেখাটা একটা গল্প হিসেবে পড়াই ভালো। ঃ)))
  • Sandy | 161.14.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০২:৩১583046
  • আরে গল্প তো ঠিক আছে, এই পোস্টটা আপনার বারোটা তিপ্পান্ন এর পোস্টের জবাবে। ঃ-)
  • Binary | 80.76.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০৪:১০583047
  • নিছক, কথাটা সেকুলরিজম নিয়ে নয়, প্রসঙ্গটা এথিসিম নিয়ে। আমার মনে হয় যেটা অক্ষ বলছে। তাই, সেখানে উৎসবটা ক্রিসমাস না হানুকা না ঈদ না দসেরা না নবান্ন সেটা প্রাসঙ্গিক নয় মনে হয়।

    স্যান্ডি, আমার বক্তব্যটাও, স্বদেশ, বিদেশ, বঙ্গদেশ, ইংরাজি মাধ্যম, বাংলা মধ্যম এসব বিবেচ্য নয় মনে হয়। যাস্ট একটা বয়ঃসন্দ্ধি-র মেয়ে, যে একটু সংবেদনশীল (এর চেয়ে অন্য কোনো শব্দ মনে এল না) সে যখন বোঝে যে তার বেড়ে ওঠা ঘেরাটোপে যে আদর্শ, আর তার বাইরের প্‌থিবীর আদর্শ ঠিক এক খাতে বইছে না, তাতে একটু একলা মনে করে। ..... কাউকে হয়তো সেখানে আপোষ করতে হয়। না করলেও ক্ষতি নেই অবশ্য।
  • Sandy | 161.14.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০৪:২৮583048
  • বাইনারি, সেই কথাটাই স্যান্ডিও বলতে চাইছে। পৃথিবীর সর্বত্র, যেখানেই মনুষ্যসমাজ আছে, সেখানেই চলছে এই মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়ার খেলা। একলা একটা মানুষ( একা কে নয়? ) তার চারপাশের সমাজে ফিট করে যেতে চেষ্টা করছে। তাতে পুব বা পশ্চিম বলেও কিছু নেই, উত্তর বা দক্ষিণ বলেও কিছু নেই। তেমন তেমন দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে দেখলে দেখা যাবে, হিপোক্রিসি সর্বত্র। আবার তারমধ্যেই হয়তো ফ্রী থিংকিং ও আছে। তাই নয় কি?
  • lcm | 202.12.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০৫:৩২583049
  • শুনেছি ভারতের মধ্যে বিহারে, আর ভারতের বাইরে ভূটানে হিপোক্রেসি কম।
  • Sandy | 161.14.***.*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১২ ০৫:৩৫583050
  • বিহারে আর ভুটানে যাবার ইচ্ছা রইলো। ভুটানই সুবিধা হবে, বিহারে তো গন্ডগোল হয় শুনলাম, ডাকাত গুন্ডা মাফিয়া এরা নাকি যত্রতত্র ঘোরে। ভুটানে সেসব ঝামেলা নেই, খালি আপেল আর আপেল, ঝর্ণা আর ঝর্ণা, পাহাড় আর পাহাড়---ভারী সুন্দর। ঃ-)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন