এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • যাত্রা - যেভাবে শুরু করতে হয় (বিগিনার্স গাইড)

    সুকি
    অন্যান্য | ২৩ ডিসেম্বর ২০১২ | ৬৩৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুকি | 212.16.***.*** | ২৩ ডিসেম্বর ২০১২ ২০:১৮579592
  • যাত্রা

    প্রথম দৃশ্য

    [ঘরে সোফায় শুয়ে শুয়ে পান্না একটা বই পড়ছে উল্টে পাল্টে, তারপর হঠাৎ করে দরদ দিয়ে যাত্রার ঢঙে পড়তে শুরু করল]

    পান্না – “উত্থান ও পতন জাগতিক নিয়ম। যার উত্থান আছে, পতন একদিন তার হবেই। তাই স্পর্ধিত মোঘল সাম্রাজ্য যা একদিন সর্বগ্রাসী ক্ষুধা লয়ে ভারতবর্ষের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছিল, কালের নিয়মেই তার একদিন পতন ঘটল। কিন্তু।।।”

    চুনী – হ্যাঁরে, এই বুড়ো বয়সে ইতিহাস পড়তে শুরু করলি নাকি? তাও আবার মনে হচ্ছে মোঘল সাম্রাজ্যের পতনের কারণ! কোন ক্লাশের বই ওটা? টিউশনি শুরু করার প্ল্যান করছিন নাকি?

    পান্না – এ্যতো প্রশ্ন একসাথে করলে তো আর উত্তর দেওয়া যাবে না। তুই তো দেখছি তোড়ে প্রশ্ন করা শুরু করলি। আমি একে একে বলছি। এটা ইতিহাসের কোন বই নয়, তবে ইতিহাসের মত।

    চুনী – ইতিহাসের মত? ঐতিহাসিক উপন্যাস নাকি?

    পান্না – কাছাকাছি গিয়েছিলি। এটা একটা যাত্রার বই, নাম ‘বাদশা আলমগীর’।

    চুনী – তা সব ছেড়ে আবার যাত্রার বই নিয়ে পড়লি কেন বলত?

    পান্না – তার কারণ আছে গুরু। শোন, আমরা তো চিরকাল কোন কাজকর্ম না করে, প্রায় দালালি করেই কাটালাম নাকি?

    চুনী – দালালি করে কিনা জানিনা, তবে বেশীর ভাগ সময়টাই আমরা বাওয়ালি করেই কাটিয়েছি।

    পান্না – ওই হল আরকি। মোটকথা হল, আমরা কাজের কিছুই করিনি, বাবার ভাতেই চিরকাল বেগুন পুড়িয়ে গেলাম।

    চুনী – ভাবিস না - তোর বাবাও তোর দাদুর ভাতে এককালে বেগুন পুড়িয়েছিল। এটা আমাদের একপ্রকার ফ্যামিলি ট্রাডিশন বলতে পারিস। তাছাড়া আমরা তো আর বাঙাল নই – যে কষ্ট করে এপাড়ে এসে সবকিছু গড়তে হবে নতুন করে। আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি আছে, আমরা সেটা উড়াবো – এটাই আমাদের ভবিতব্য, এতেই আমাদের মোক্ষ। এতে লজ্জা পাবার কিছু নেই।

    পান্না – বাজে বকিস না তো – এই করেই তো আমরা ঘটিরা গেলাম। আমাদের একটা লজ্জা থাকা উচিত। তাই ভাবছি রোজগারে নামলে কেমন হয়?

    চুনী – ভালোই তো, কিন্তু তার সাথে যাত্রার বইয়ের সম্পর্কটা কি?

    পান্না – যাত্রাই তো রোজগার আজকালকার যুগে রে। মেগাসিরিয়াল আর গুচ্ছের কেবল্‌ চ্যানেল আসার আগে তো পড়তি, অকালে ঝড়ে যাওয়া সিনেমা আর্টিষ্টদের শেষ আশ্রয় ছিল এই যাত্রা!

    চুনী – তার মানে?

    পান্না – মানে সিম্পল, যাত্রায় নামব এই মরশুমে ভাবছি।

    চুনী – কে তোকে যাত্রায় নেবে রে? তুই কি যাত্রা পারিস? কোনদিন করেছিস? নিদেন পক্ষে তোর ফ্যামিলি ট্রাডিশন বজায় রেখে বাইজি নাচও তো কোনদিন দেখতে গেলি না।

    পান্না – আরে সেই জন্যই তো পড়াশুনা শুরু করেছি -

    চুনী – মানে বাইজী নিয়ে পড়াশুনা বলতে চাইছিস?

    পান্না – চুনী, তোর মনটা সেই মেয়ে ওরিয়েণ্টেডই রয়ে গেল। তাও যদি কিছু করতে পারতিস সেই লাইনে! না, আমি পড়াশুনা শুরু করেছি যাত্রা নিয়ে। যাত্রার উপর একটু ফাণ্ডা করে নিই আগে – তারপর দেখছি!

    চুনী – তা না হয় হল, কিন্তু যাত্রায় কত পয়সা বলতে চাইছিস?

    পান্না – বললাম না, যাত্রাতেই পয়সা – কত সেটা নিয়ে বেশী ফ্যাচাস না, অনেক মানে অনেক। দেখছিস না সব নায়ক, নায়িকেরা সিনেমা, সিরিয়াল থেকে কেমন যাত্রাতে সিফট করে যায় সিজিন শুরু হলেই! রোজ যাত্রা – আজ এখানে, কাল ওখানে, অনেক ইনকাম।

    চুনী – কত করে পায় রে? মাস মাইনে নাকি যাত্রা পিছু রোজকার?

    পান্না – বেশী হ্যাজাতে বারণ করলাম না। প্রচুর ইনকাম বললাম তো।

    চুনী – তা বেশ ভালো তো। কিন্তু কি ভাবে নামতে হয় ভেবেছিস? এতো আর আমার বাবার দল নয় যে গেলাম আর নায়ক হয়ে গেলাম!

    পান্না- না, না। - তা কেন? আমি তো আগে যাত্রা করতাম। আমাদের পাড়াতে, সব বড় বড় পূজার শেষেই যাত্রার আসর জমত।

    চুনী – তুই কি নায়ক হতিস নাকি?

    পান্না – চান্সই পেতাম না। ওখানে নিয়ম ছিল যে বেশী চাঁদা দেবে সেই নায়ক। শেষে ঘোষেদের তোতলা বাপী বলল যে, আমি সব থেকে বেশী চাঁদা দেব, নায়কের রোল আমার চাই।

    চুনী – তোতলা নায়ক! স্পেশান যাত্রা নাকি?

    পান্না – আর বলিস না, সে কি কেলো। এক একটা ডায়লগ বলতে এক মিনিট করে সময় নেয়। শেষ পর্যন্ত যাত্রাই ভণ্ডুল হয়ে গেল।

    চুনী – তা এখন যাত্রায় তুই কি রোল করবি?

    পান্না – নায়ক, আবার কি? আগে কত মৃত সৈনিকের রোল করেছি জানিস? তারপর আবার যাত্রার বই পড়ে ফাণ্ডা বাড়াচ্ছি। নায়ক হব না মানে?

    চুনী – তা তুই না হয় নায়ক হলি, তা আমি কি হব?

    পান্না – তুইও কি যাত্রায় নামবি নাকি?

    চুনী – বাঃ, তুমি যাত্রার নায়িকাদের হাত ধরে ফূর্তি করবে, আর আমি শুধু আমড়া আঁটি চুষব! ইল্লি আর কি!

    পান্না – তা তোর যা চেহারা, কমেডিয়ান ছাড়া তোকে অন্য রোলে ভাবাই যায় না।

    চুনী – পান্না, চেহারা নিয়ে ইয়ার্কি মারবি না বলে দিলুম। কমেডিয়ান ছাড়া অন্য রোল পাব না?

    পান্না – পেতে পারিস, যাত্রায় যাকে বিবেক বলে। এক সিন, দু সিন থাকবি, স্টেজের চারধারে গান গেয়ে চলে আসবি।

    চুনী – কিন্তু আমি তো গান গাইতে পারি না!

    পান্না – পারতে হবে না। গান ব্যাকগ্রাউণ্ডে রেকর্ডে চলবে, তুই শুধু মুখ নাড়বি।

    চুনী – সেই ভালো। ব্যাপারটা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে – যাত্রা – লোকের মুখে মুখে আমাদের নাম ঘুরবে!

    পান্না – শোন চুনী, অতো সোজা নয় ব্যাপারটা – অনেক পরিশ্রম করে দাঁড়াতে হয় –

    চুনী – পরিশ্রম করেছি তো। ছোটবেলায় কত পরিশ্রম করে দাঁড়াতে শিখেছিলাম বল তো –

    পান্না – এটা আচ্ছা গাধা তো! এটা সে দাঁড়ানো নয় – এর মানে হচ্ছে নিজে উপার্জন করা। বাবার পয়সায় বসে বসে না খেয়ে, এবার নিজেরা উপায় করে খাব।

    চুনী – এতো প্রচণ্ড ভালো কথা। তা হলে এবার একটা পরিকল্পনা ছকে ফেলা যাক। কি ভাবে শুরু করতে হবে, কাকে ধরতে হবে, কোন দলে ভালো মেয়ে আছে, কারাই বা নেবে আমাদের – এই সব আর কি।

    পান্না – শোন, এর জন্য আমাদের যেতে হবে চিৎপুরে। সেখানেই তো সব দলের অফিস ঘর। ওখানে গিয়ে বলে দেখতে হবে। দরকার হলে ওদের সামনে অভিনয় করে দেখাতে হবে। মোটকথা হল, কাউকে ধরে ঝুলে পড়তে হবে।

    চুনী – তাহলে কালকেই চল, শুভস্য শীঘ্রম্‌।

    দ্বিতীয় দৃশ্য
    ---------------------
    [চুনী ও পান্না চিৎপুরের রাস্তা দিয়ে হাঁটছে। এদিক সেদিক খুঁজছে। কোথায় যাত্রা দলের অফিসঘর, আর কোথা থেকেই বা শুরু করা যায়। এই সময় একটা লোকের সাথে দেখা হয়ে যায়]

    চুনী – এই যে দাদা শুনছেন –

    [লোকটি ঘুরে দাঁড়ায়]

    লোক – বলুন, কিছু জানতে চান?

    পান্না – মানে, আমরা যাত্রা দলের অফিস খুঁজছি। কোথায় পাব বলতে পারেন?

    লোক – কোন দল? লোকমঞ্জরী, ভৈরব, নট্ট, আনন্দময়ী, জয়যাত্রা – কোনটা?

    চুনী – যে কোন একটা থেকে শুরু করলেই হবে।

    লোক – তা আপনারা আসছেন কোথা থেকে? যাত্রার বায়না করতে এসেছেন বুঝি?

    পান্না – না, না। আসলে আমরা যাত্রায় অভিনয় করার সুযোগ খুঁজছি। আমরা জাত অভিনেতা কিনা!

    লোক – বলেন কি? আপনারা অভিনেতা? তায় আবার জাত অভিনেতা! তাহলে তো আপনাদের সাথে জমবে ভালো। আমিও তো একজন অভিনেতা কিনা!

    চুনী – তাই নাকি? তা আপনার নামটা জানতে পারি কি?

    লোক – আসল নাকি নকল? কোন নামটা জানতে চান?

    পান্না – নকল নাম মানে?

    লোক – ওই ছদ্মনাম আর কি!

    চুনী – বাব্বা! আপনার দেখছি পাড়ার মস্তানদের মত দুটো, তিনটে করে নাম!
    লোক – কেন? পাড়ার মস্তান ছাড়া কারও দুটো নাম থাকতে নেই বুঝি?

    চুনী – তা পারে বৈকী। আসলে কি জানেন, আমাদের পাড়ার গাঙ্গুলি বাবু শখ করে ছেলের নাম রেখেছিলেন কৌস্তভ। তো সেই ছেলে এখন পেটোদা নামে পাড়ার কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাই বলছিলাম আর কি!

    লোক – শুনুন – ওই সব কথা বলবেন না – আমি অভিনেতা।

    পান্না – আরে রাগছেন কেন? তা নামটা বলুন আপনার প্লীজ।

    লোক – ছদ্মনাম হল প্রদীপকুমার। আর আসল নাম হারাধন পাকড়ে।

    চুনী – কি পাকড়ে? মানে কাকে পাকড়েছেন?

    লোক – আরে ওই নাম নিয়ে কাউকে পাকড়াতে না পেরেই তো নাম চেঞ্জ করে নিয়েছি। এখন শুধুই প্রদীপকুমার।

    পান্না – তা দাদা আপনি কি নায়ক, ভিলেন, নাকি বিবেক, নাকি এক্সর্টা?

    প্রদীপ – এই কি বলছেন! আমি মনসা অপেরার নায়ক।

    [চুনী সঙ্গে সঙ্গে পায়ের ধূলা নিতে যায়]

    চুনী – নায়ক, বলেন কি? একটু পায়ের ধূলা দিন দাদা। পান্না আমাদের বরাতটা একবার দেখ। এখানে আসতে না আসতেই দাদার মত একটা লোক পেয়ে গেলাম।

    প্রদীপ – আরে থাক, থাক। [চুনী – পান্নার হেঁট মাথায় আশীর্বাদের ভঙ্গীতে হাত দেয়]। তা তোমাদের কিন্তু তুমি করেই বলছি।

    পান্না – সে তো বলবেনই – তুমি কেন, তুই করেও বলতে পারেন। আমরা কত ক্ষুদ্র!

    প্রদীপ – ক্ষুদ্র কেন? বেশ তো ভালই চেহারা দেখছি!

    চুনী – মানে সেই ক্ষুদ্র নয় – আপনি কত বড় যাত্রে জগতে – সেই তুলনায় তো আমরা ক্ষুদ্রই, কি বলুন !

    প্রদীপ – তা অবশ্য বটে। গ্রাম গঞ্জের সব লোক – বর্ধমান থেকে বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ থেকে মেদনীপুর সব লোকেরাই আমায় একডাকে চেনে। তা যা জিজ্ঞাসা করছিলাম, তোমরা কার কাছে যাচ্ছ?

    পান্না – কাউকেই তো চিনি না। তবে দাদা একবার যখন আপনাকে পেয়েছি আর ছাড়ছি না।

    চুনী – হ্যাঁ দাদা, আমাদের একটু উদ্ধার করে দিন – একটা গতি করে দিন

    প্রদীপ – ঠিক আছে, ঠিক আছে – তোমাদের আমার ভালো লেগে গেছে – আচ্ছা চলো – ওই সামনের দোকানে এককাপ চা খেয়ে তোমাদের যুক্তিবাবুর কাছে নিয়ে যাব।

    [চায়ের দোকানের দিকে এগুতে এগুতে]

    পান্না – তা দাদা, এই যুক্তিবাবুটা কে?

    প্রদীপ – যুক্তিবাবু হচ্ছেন মনসা অপেরার মালিক।

    চুনী – তা ওঁর নাম কি যুক্তি? এমন নাম তো কখনো শুনি নি!

    প্রদীপ – ওঁর আসল নাম কেউ জানে না। এমনকি আমার মনে হয় উনি নিজেও ভুলে গেছেন। উনি সব সময় যুক্তি দেখিয়ে চলেন, আর কথায় কথায় ‘তা যুক্তিটা হচ্ছে’ বলেন। সেই থেকেই ওঁর নাম হয়ে গেছে যুক্তি বাবু।

    পান্না – তা ভালো, বেশ ভালো।

    [তিনজনে একটা চায়ের দোকানের সামনে বেঞ্চে গিয়ে বসে পড়ে। চুনী হাঁক দিয়ে চা চায়]

    চুনী – এই ভাই, তিনটে কড়া করে কম চিনি, বেশী দুধের চা দাও তো। হ্যাঁ দাদা, তা আপনি কতদিন ধরে যাত্রা লাইনে আছেন?

    প্রদীপ – সেই চোদ্দ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলাম। আর এখন চল্লিশ। প্রথম প্রথম যাত্রা দলে রান্না করতাম। তার পর দেখে দেখে ক্রমশঃ অভিনয় শিখি। এখন নায়ক হয়েছি।

    পান্না – যদি কিছু মনে না করেন – পড়াশুনা কখন করতেন? যাত্রাদলে তো শুনেছি শুধু ঘুরতে হয়।

    প্রদীপ – তোমাদের আর মিথ্যে বলে কি হবে? ইস্কুল – পাঠশালের দিকেও পা মাড়াই নি কোনদিন। নাম সইটা করতে পারি কোনক্রমে। ছোটবেলাটা তো বাবার চায়ের দোকানেই কেটেছে।

    চুনী – দেখেছিস পান্না, আমার বাবাকে আমি কতবার করে বলতাম যে পড়াশুনা না করেও বড় হওয়া যায়, আর বাবা সেটা মানতই না! এই দাদার সাথে একদিন বাবার আলাপ করিয়ে দেব।

    পান্না – তা আপনার এবার কি যাত্রা করছেন? [চা এসে গেল এই ফাঁকে]

    প্রদীপ – [চায়ে চুমুক দিয়ে] এবারে যাত্রাপালা এখনও ফাইন্যালাইজ হয় নি। আর গতবারে আমরা করেছিলাম একটা সুপারহিট রোমান্সে ভরা যাত্রাপালা ‘প্রেম কাঁদছে কচুবনে’।

    চুনী – এ্যাঁ, কচু বনে? এত বন থাকতে কচুবনে? এটা কি রকম হল? ওটা ঝাউবন হলে কি ক্ষতি হত?

    প্রদীপ – আরে তোমরা এই লাইনে নতুন তো, তাই পাবলিকদের মনস্তত্ত্ব কিছুই বোঝ না। নাম এমন হতে হবে যেন বুকে ধাক্কা লাগে। তবে তো লোকে মনে রাখবে! আর তা ছাড়া এ তো আর সিনেমা নয় যে সুইজারল্যাণ্ডে ঝাউবনের ধারে প্রেম হবে! গ্রাম গঞ্জে কচুবন একটা বিশাল ব্যাপার। প্রেম, বিরহ, মিলন সব ওইখানেই হয় –

    পান্না – কিসের মিলন? মনের?

    চুনী – দেহের হলেই বা দেখেছে কে? ওই জন্যই তো মশাই শহরে আজকাল তেমন প্রেমের তেমন রমরমা নেই – ঝোপঝাড় ছাড়া প্রেম হয়?

    পান্না – তবে দাদা, যাত্রার নাম আমার মরার আগে অবধি মনে থাকবে। ধন্যি নাম। এখন অবশ্য এইরকমই হয়েছে। আগে ছিল ঐতিহাসিক পালা। চন্দ্রগুপ্ত, বাদশা আলমগীর, শাহাজান। কি চেহারা, দর্শক চোখের পাতা ফেলতে ভুলে যেত।

    প্রদীপ – ভাই, এখন আর ও সব চলে না। পাবলিক নিচ্ছে না।

    চুনী – নিচ্ছে না কেন?

    প্রদীপ – কেন আবার! – এই টিনের তলোয়ার নিয়ে লাফালাফি – ঢ্যাঁ ঢ্যাঁ করে স্টেজের উপর – তার পর ওই জবরজঙ পোষাক, মুখে পাওডারের জ্যাবরা – লোকে হাসছে।

    পান্না – তা আপ্নারা এখন তাহলে কেমন যাত্রা করছেন?

    প্রদীপ – এই সব ঘটনা জীবন থেকে তুলে আনছি। বেশীর ভাগই সাংসারিক, খাণ্ডারিনি শাশুড়ি, ভিলেন ভাসুর, ন্যালাখাপা স্বামী। তার মধ্যে থেকে মেয়ের জীবন সংগ্রাম শুরু। গ্রামের বড়লোক ছেলের লোভনীয় প্রস্তাব বানচান করে সতীত্ব বাঁচিয়ে রাখা। একটু ক্রাইম, একটু সাসপেন্স – ব্যস পালা হিট্‌।

    চুনী – তা সবই তো বুঝলাম। কিন্তু আপনারা সংসার করেন কি করে?

    প্রদীপ – আর ভাই সংসার! সংসার করার সময়টাই পেলাম না!

    পান্না – তা আপনি যাত্রা করতে যান কি ভাবে?

    প্রদীপ – কেন! আমার আর নায়িকা কাজলকুমারীর জন্য একটা গাড়ী বরাদ্দ আছে। আমরা ওতে করেই যাই। মাঝে মাঝে রাস্তায় কোন হোটেলে থাকি।

    চুনী – এতো খুব ভালো ব্যবস্থা। এক ঘরে থাকেন নাকি?

    প্রদীপ – থাকলেই ক্ষতি কি?

    চুনী – এই চুনীটা হচ্ছেটা কি? দাদারা হচ্ছেন মহাপুরুষ টাইপের লোক। একটু আধটু নারী সঙ্গ না করলে প্রতিভা খুলবে কেন?

    প্রদীপ – বাঃ, তুমি তো দেখছি বেশ গুছিয়ে কথা বলতে পার! তোমার মনে হচ্ছে একটা হিল্লে হয়ে যাবে। চলো দেখি যুক্তিবাবু আছেন কিনা।

    চুনী – চলুন, চলুন। একটা এসপার, ওস্পার হয়ে যাক। [চায়ের দাম মিটিয়ে সকলে উঠে পড়ে]
    --------------------

    তৃতীয় দৃশ্য

    [যুক্তিবাবুর অফিস। চারিদিকে পোষ্টার লাগানো আছে। যুক্তিবাবু একমনে খাতায় কি সব লিখছেন]

    প্রদীপ – এই যে স্যার – একটু দরকার ছিল আপনার সাথে।

    যুক্তি – আরে প্রদীপকুমার যে – তা বস, বস। কিন্তু এনাদের তো ঠিক চিনতে পারলাম না।

    প্রদীপ – আজ্ঞে, এরা যাত্রায় নামতে চায়, এই একটা ব্রেক খুঁজছে।

    যুক্তি – তা ভালো – কিন্তু যুক্তিটা তো ঠিক বুঝলাম না।

    পান্না – আমি বুঝিয়ে বলছি। আমি হলাম পান্না, আর এ হল চুনী। আমাদের একটু ভালো করে দেখুন। আহা, তাকান না এইদিকে

    যুক্তি - কিন্তু যুক্তিটা কি।।।

    পান্না – আমাকে একটু ভালো করে দেখলেই বুঝতে পারবেন, আমার চেহেরাটা ঠিক নায়কের মত। পাড়ার যত মেয়ে ঝেঁটিয়ে আমাকে প্রেমপত্র লেখে। কত বউদির সাথে দাদাদের মনোমালিন্য হয় আমাকে নিয়ে। আর এই যে চুনী, একে পাক্কা কমেডিয়ানদের মত দেখতে। শুধু দেখতে নয় ও একটা কমেডিয়ান।

    চুনী – পান্না, এইভাবে হাটে হাঁড়ি ভাঙা ঠিক হচ্ছে কি?

    পান্না – তুই চুপ কর। নিজের প্রতিভাটাকে কাজে লাগা।

    যুক্তি - কিন্তু যুক্তিটা হচ্ছে – আমাদের পালার নায়ক তো রয়েছে এই প্রদীপ।

    পান্না – নায়কের ভাই হলেও চলবে। এই লাইনে একটু পাকি –

    যুক্তি – কমেডি আমাদের পালায় এইবারে নেই। যুক্তিটা হচ্ছে এবার আমাদেরটা সিরিয়াস যাত্রা।

    চুনী – আপনাদের যাত্রায় বিবেক নেই? মানে ওই যে একটা লোক বিভিন্ন দৃশ্যে গান গেয়ে বেড়ায় আর কি!

    প্রদীপ – না, না। ওসব দিকে ফালতু লোক পোষা। এখন আমরাই গায়ক – নায়ক। দরকার হলে নায়িকার হাত ধরে আমরাই দুচারটে গান করে দিই।

    যুক্তি – তো তোমরা যে যাত্রে করবে বলে লাফাচ্ছ, তোমাদের কোন আইডিয়া আছে কেমন ভাবে যাত্রা করতে হয়? মানে যুক্তিটা হল, অভিজ্ঞতা থাকলে ভালো হয় আর কি!

    পান্না – এ আপনি কি বলছেন! আমাদের বাড়িতে তো সবসময়েই যাত্রা হচ্ছে। এই চুনী – বল না!

    চুনী – হ্যাঁ, মানে আমাদের দুজনের বাবাই তো প্রায় – না, না প্রায় কেন, পুরোপুরি ভিলেন। সকাল থেকেই বাড়িতে চিৎকার, চেঁচামিচি, ডায়লগ শুরু হয়ে যায়।

    প্রদীপ – কিন্তু নায়িকা তোমরা পেলে কোথায়/

    পান্না – আরে ধ্যুৎ - বাড়ির সামনে নায়িকাদের লাইন লেগে আছে। এপাড়ার সুমনা, ও পাড়ার সমু, অরু, চিরু - কত নেবেন!

    যুক্তি – যুক্তিটা ভালোই। তা ডায়লগ কিভাবে বলতে হয় জানা আছে?

    পান্না – এতে আবার জানার কি আছে! গলা কাঁপিয়ে, ভ্রু নাচিয়ে, শরীর কাঁপিয়ে বলে দিলেই হল। কিচ্ছু বাহুল্য নেই!

    প্রদীপ – ঠিক আছে। তোমাদের একটা ছোটখাট টেষ্ট হয়ে যাক।

    চুনী – সে আমরা দিতে রাজী আছি। কিন্তু তার আগে যদি বলেন আপনাদের এই বারের পালা সম্পর্কে একটু, তা কি নাম পালার?

    যুক্তি – ওহে প্রদীপ – বলে দাও হে আমাদের এবারের সম্ভাব্য পালার নাম –

    প্রদীপ – [যাত্রার ঢঙে] আদালতে বৌমা হাজির, পড়ল জোঁকের মুখে নুন
    স্বামী গেল জেল খাটতে, দেখুন ‘শ্বশুরের মুখ চুন’।।

    পান্না – যাতার নাম ‘শ্বশুরের মুখ চুন’? বলেন কি! বেশ জমকালো নাম তো!

    চুনী – তা দাদা, এই যাত্রাটা কে লিখেছেন?

    যুক্তি – বিশেষ কেউ নয়। আমরা সবাই মিলে লিখেছি আর কি!

    পান্না – সেকি, সবাই মিলে যাত্রা লিখেছেন?

    যুক্তি – কি করব বলো ভাই – সেই ভৈরববাবুর পর তো আর কেউ যাত্রা লেখাটাই শিখল না! তাই সবাই মিলে একটা চেষ্টা দিচ্ছি।

    চুনী – তা এতে কোন রোল ফাঁকা আছে আমাদের দেবার মত?

    প্রদীপ – জায়গা কি আর ফাঁকা থাকে? ওই করে নিতে হয়। তাছাড়া যাত্রা লেখাই তো এখনও শেষ হয় নি।

    পান্না – তাহলে একটু দেখুন না স্যার!

    যুক্তি – তাহলে একটা ডায়লগ শুরু কর।

    চুনী – ডায়লগ তো আমরা ভালোই জানি স্যার, মানে ওরিজিন্যাল ঘটি কিনা

    পান্না – ওতেই আমাদের ভবিতব্য, ওতেই আমাদের –

    চুনী – মোক্ষ। তবু যদি প্রদীপদা একটু দেখিয়ে দেন!

    যুক্তি – ঠিক আছে, প্রদীপ তুমি তা হলে তোমার সেই বিখ্যাত ডায়লগটা দিয়ে দাও –

    প্রদীপ – কোনটা দাদা?

    যুক্তি – আরে যেটা দিলে ক্ল্যাপ থামত না যাত্রাতলায়।

    প্রদীপ – বলছি [উঠে দাঁড়িয়ে ঠিক মত পোজ নিয়ে] এটা আমাদের আগের পালায় খুব ইমপরটেন্ট একটা সিন ছিল। নায়ক নায়িকাকে বোঝাচ্ছে। নায়িকা বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করতে রাজি নয়, আর নায়কের আরো কিছুদিন সময় দরকার।

    “কঙ্কা, তুমি শঙ্কা করো না। বিয়ে আমাদের হবেই। তোমার – আমার বন্ধন কত জন্মের। আমি রোমিও, তুমি জুলিয়েট, আমি মজনু – তুমি লায়লা, তুমি গ্যাস – আমি কয়লা। তুমি ছাড়া আমি নেই – আমি ছাড়া তুমি। আমি ছোবড়া – তুমি নারকেন, তুমি যদি হও ইঁট, আমি পাটকেল। আমি চাবি – তুমি তালা, এই বাঁধন যাবে নাকো খোলা। আগত পৃথিবীকে বুঝিয়ে দেব তোমার আমার প্রেমের জোর। তোমার ব্যারিকেড বাবা, ভিলেন ভাই, জাঁদেরল মাকে আমি ভালোবেসে জয় করব। পাড়ার মস্তান সেজে নয়, আমি তোমায় বিয়ে করতে আসব টোপর মাথায় পড়েই। তোমার ওই নাবি আলু জমিতে জল আমি পাওয়াবই। এবার একটু হাস – তোমার ওই কাজল চোখে মুছে ফেল মুক্তবিন্দু। আমার এই খাদিমের জুতো পায়ে আমি শপথ করছি, তোমার মুখে হাসি ফোটাতে আমি প্রাণও দিয়ে দেব।

    চুনী – দাদাগো, একি শোনালেন – লা জবাব – একটু পায়ের ধূলো দিন দাদা –

    প্রদীপ – সবই সাধনার ফল বুঝলে। তাও তো ঠিক ফিলিংস্টা আনতে পারলাম না – স্টেজ না হলে, আর পেটে না কিছু পড়লে ঠিক জমে না বুঝলে!

    পান্না – তবে দাদা, একটাই খটকা – খাদিমের জুতোর সাথে শপথের কি সম্পর্ক সেটাই ঠিক বুঝতে পারলাম না।

    প্রদীপ – তোমরা দেখছি বেশ ব্যাকডেটেড। এখনকার হিন্দি সিনেমা দেখনি – নায়ক নায়িকারা কেমন কোক , পেপসি নিয়ে ঘুরছে । ওদের যেমন কোকা কোলা ,আমাদের তেমনি খাদিম – অফিসিয়াল স্পন্সর । প্রতি পালায় অন্তত দশবার করে খাদিম হাওয়াই এর নাম করার জন্যে মোটা টাকার চুক্তি হয়েছে ।

    যুক্তি – তা তোমরা এবার কিছু শোনাও ।

    পান্না – কি শোনাব বলুন স্যার ? প্রেমের ডায়ালগ দেব ?

    যুক্তি – না না । ওতো এই মাত্র হল । তুমি অন্য কিছু শোনাও ।

    পান্না – যা শুনতে চাইবেন স্যার । আমাদের পাড়াটাই নাটকের পাড়া ।আমাদের পাশের বাড়ির হি সি বাবুর

    প্রদীপ – কি বাবুর ?

    চুনী – হিসি বাবু –

    পান্না – ওঁর আসল নাম হিমাংশু নারায়ন চ্যাটার্জ্জী ।এপাশের বাড়ির বাসিন্দা পাঁচু গোপাল ভট্যাচার্য । তাঁর বউ তাকে আদর করে পি জি পি জি বলে ডাকে । ছাত্ররা ডাকে ঠিক আছে তা বলে বউ !এটা না হয় হল । সেই দেখে হিমাংশু বাবুর স্ত্রী হি সি বলে ডাকা শুরু করেছেন । হিসি, হিসি – ছ্যাঃ ছ্যাঃ ।

    প্রদীপ - বল কি হে !

    চুনী - তাহলে আর শুনছেন কি? পাঁচু বাবু নিজের নাম নিয়ে আবার ফাষ্ট্রেশনে ভোগেন ।সেই নামের খেদ মেটাতে ছেলের নাম দিয়েছেন ভাইকিং আর মেয়ের নাম এন্ডারাডো ।

    যুক্তি – ঠিক আছে তাহলে তুমি শুরু কর –

    পান্না – শোনাচ্ছি-

    এ তুমি কি বলছ শচীন দা , আমার ছেলে পাড়ার মেয়েদের পেছনে লাগছে? তাতে ক্ষতি কি হল , ও যদি ফাঁকা মাঠে গোল দেয় তাতে তমার আপত্তিটা কোথায় ? ও , তোমার মেয়েও আছে এর মধ্যে ? থাকলে থাকবে – আমার ষাঁড় মাঠে খোলা ঘুরবে – তোমার গরু তুমি সামলাও । কটা মেয়ে তোমার ? একি আঙুল গুনছো কি ? নিজের কটা মেয়ে তাই তোমার খেয়াল নেই? – এসেছ আমার ছেলের নামে নালিশ করতে –

    যুক্তি - এটা কি হচ্ছে ? মানে এটা যাত্রা নাকি পাড়ার কোন্দল ?

    পান্না – যাঃ বাবা । আপনিই তো বললেন যে সব ঘটনা জীবন থেকে তুলে আনতে হবে-

    প্রদীপ – ঠিক আছে ,ঠিক আছে । যুক্তি বাবু এতেই হবে । প্রথমেই ত আর নায়ক হচ্ছে না। ওসব আস্তে আস্তে শিখে যাবে-

    যুক্তি – আচ্ছা ।এবার একটা প্রশ্ন করি । যাত্রা জগতে তোমার আদর্শ কে?

    পান্না – গঙ্গা পাঁজা ।

    যুক্তি – সে আবার কে? কোন অপেরার?

    চুণী – আরে এ হচ্ছে আমাদের দেশের বাড়ির গঙ্গা পাঁজা । যা যাত্রা করে না ! লোকে পেচ্ছাপ বসতে যেতে ভুলে যায় । গ্রামের ব্যাপার বুঝতেই পারছেন সারারাত যাত্রা চলল । তো সেই সারারাত লোককে পেচ্ছাপ ভুলিয়ে বসিয়ে রাখা চাড্ডিখানি কথা নয় –

    প্রদীপ – তিনি কি দারুণ অভিনেতা?

    পান্না – সে আর বলতে! কি দাপট। সকালে দেখবেন মাঠে খালি গায়ে গরু চরাচ্ছে, রাতে ডায়াসে উঠলেই অন্য লোক। একবার এক ঐতিহাসিক পালায় যুদ্ধের সিনে খোলা তলোয়ার হাতে ছুটে প্রবেশ ছিল গঙ্গাদার। তা ছুটে ঢোকবার সময় গরু বাঁধার গোঁজটাতে হোঁচট খেয়ে স্টেজে হুমড়ি খেয়ে পড়ল। অন্য কেউ হলে সিন মাটি। কিন্তু গঙ্গাদা ২৫ বছর যাতার করছে। গা ঝেড়ে উঠে গমগমে গলায় বলে উঠল, “কেবা হেথা গাড়িয়াছ গোঁজ, তারে আমি দিব শাস্তি সমুচিত”। লোকে কিছুই বুঝতে পারল না!

    যুক্তি – বাঃ। তিনি তা হলে জব্বর লোক। যাক্‌, আজ আমার একটু কাজ আছে। তোমাদের আমার ভালো লেগেছে। দিন পনের পর রথের দিনে আমাদের মহড়া শুরু। এসো তখন, দেখব কি করা যায়। [প্রস্থান]

    প্রদীপ – আমাকেও যেতে হবে ভাই। তোমরা তা হলে ১৫ দিন পর এসো, তখন আবার দেখা হবে। [প্রস্থান]

    পান্না – কি রে চুনী, বলেছিলাম না, একটা হিল্লে হয়ে যাবে, দেখলি তো –

    চুনী – আমাদের লাকটাও ভালো বলতে হবে। চল এবার বাড়ি ফেরা যাক। আবার আসার আগে পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে আসতে হবে।

    পান্না – তা তো বটেই। চল তাহলে এবার বাড়ি ফেরার বাস ধরি।

    [দুজনার প্রস্থান]
  • sandipan | 60.129.***.*** | ২৩ ডিসেম্বর ২০১২ ২২:১৭579593
  • যাত্রা দেখেছেন কখনো?
  • সুকি | 168.16.***.*** | ২৪ ডিসেম্বর ২০১২ ০৬:০৭579594
  • সন্দীপনবাবু,
    কিছু ভুলচুক হয়ে গেছে কি? ঠিক ঠাক গাইড করতে পারি নি বলছেন?
  • সিকি | 132.177.***.*** | ২৪ ডিসেম্বর ২০১২ ০৯:৩৯579595
  • সুকি,

    মন্দ লাগছে না, তবে পাঁচুবাবুকে একেবারে ভাইকিং এল ডোরাডো সমেত তুলে এনেছেন এখানে? তাঁদের চোখে পড়লে কোনও বিরূপ পোতিক্কিয়া হবে না তো?
  • সুকি | 168.16.***.*** | ২৪ ডিসেম্বর ২০১২ ১০:২৬579596
  • সিকি,
    কথাটা মিথ্যা বলেন নি। এখানে তো আবার এডিট করার উপায় নেই - তা হলে না হয় ওই অংশটা মুছে দিতাম। তবে চোখে পড়লেও আশা করি স্পিরিটটা ভুল বুঝবে না কেউ - কাউকে অপমান করার আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই। একটু রগড় করার চেষ্টায় চিলাম মাত্র - ক্ষেত্র বিশেষে যাকে গুণীজনেরা ভাঁড়ামোও বলতে পারেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন