এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • নরেন্দ্র ও তাঁর গুরু ; এক ম্যাজিক বাস্তব চরাচরে

    শিবাংশু
    অন্যান্য | ২১ আগস্ট ২০১২ | ৬৩৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শিবাংশু | 127.197.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১২ ০১:২২569261
  • নরেন্দ্র ও তাঁর গুরু
    এক ম্যাজিক বাস্তব চরাচরে....

    ভারতবর্ষে বিংশশতকে মধ্যবিত্ত বাঙালির মননে 'র' আদ্য অক্ষরটি এক অলৌকিক মাত্রার সমাপতন নিয়ে এসেছিলো। তিন বাঙালি,যাঁদের নামের আদ্য অক্ষর 'র', রবীন্দ্র, রামকৃষ্ণ ও রজনী পাম দত্ত,আজও তাঁদের বিভিন্ন স্তরের প্রভাবী অস্তিত্বে বাঙালির ভাবনার জগৎকে সমাচ্ছন্ন করে রেখেছেন। নেহাত সমাপতন মাত্র, কিন্তু বিস্ময়কর তার অভিঘাত।

    এই তিনজন 'র'য়ের মধ্যে একজন,রামকৃষ্ণদেবকে যিনি বৃহত্তর মানবসমাজের কাছে পূর্ণ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করে গেছেন,সেই মানুষটির সার্ধশতবর্ষের জন্মদিন পালনের উদ্যোগ শুরু হয়ে গেছে। সিমলেপাড়ার বিলে, প্রেসিডেন্সির নরেন্দ্র আর আসমুদ্র হিমাচল ভারতবর্ষের বিবেকানন্দ আমাদের চিত্তজগতে এক অতি বাস্তব অস্তিত্ব হয়ে এতোদিন ধরে রাজত্ব করে আসছেন। তিনি আমাদের কাছে ঠিক কোনও একজন 'ইতিহাসপুরুষ' মাত্র হয়ে আসেন না, তিনি এক জীবন্ত ভারত আত্মা হয়ে আমাদের ঘিরে থাকেন। রবীন্দ্রনাথ ভারতবর্ষের সংজ্ঞা জানতে আগ্রহী রোম্যাঁ রোল্যাঁকে বলেছিলেন, "If you want to know India, study Vivekananda. In him everything is positive and nothing negative."

    তাঁকে নিয়ে ঈশ্বরকোটী থেকে ইতরকোটীর অগণিত মানুষ এতো চর্চা করেছেন যে এই মূর্খের অনধিকার অক্ষরমালা কোনও তাৎপর্যই বহন করেনা। তবু মূর্খের একটা সুবিধে,কোনও ধীমান ব্যক্তি তাকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও প্রয়োজনও বোধ করেন না। সেই সাহসে তাঁর সম্বন্ধে কিছু শব্দের ভার একটি লেখায় ধরে রাখছি, বুদ্ধিমান বন্ধুরা যথাসম্ভব উপেক্ষা করে যাবেন সেই আশাতেই এই পল্লবগ্রাহিতা।

    ২.
    'তুমি কখন কী রঙ্গে থাকো মা
    শ্যামাসুধাতরঙ্গিনী,
    এই রঙ্গভঙ্গে, অনঙ্গ অপাঙ্গে
    ভঙ্গ দাও মা জননী....'

    শ্যামা এক অমৃতের নদী, তিনি কখন কী রঙ্গে থাকবেন তা কি কেউ বলতে পারে। তাঁর এই রঙ্গিলা মেজাজ, লোভন ভঙ্গি, কামদেবের প্রতি অপাঙ্গ আহ্বান, সাধক তাতে কি অস্বস্তিবোধ করছেন? তাই তার পরেই সাধক বলছেন,

    ' লম্ফেঝম্পে কাঁপে ধরা
    অসিধরা কপালিনী
    তুমি ত্রিগুণত্রিপুরা, তারা ভয়ঙ্করা
    কখনও কালকামিনী,

    তুমি কমলের কমলে থাকো মা,
    পূর্ণব্রহ্মসনাতনী।"

    সাধক এবার দেখছেন মা অসিধারিণী হয়ে লম্ফঝম্প করছেন, কপালশিকারে প্রমত্তা। কারণ তিনি শুধুই ত্রিগুণের অধিষ্ঠাত্রী দেবী নন, তিনি ত্রিপুরের সংহারকর্ত্রীও বটে। তাই তিনি ভয়ঙ্করী তারা এবং মহাকালের প্রেয়সী। এবার আসছে কমলপ্রসঙ্গ। এই 'কমলের কমলে' থাকাটা তন্ত্রশাস্ত্রের সন্দর্ভ নিয়ে আসছে। কিন্তু সব মিলিয়ে তো তিনি 'পূর্ণব্রহ্মসনাতনী', যে বিশেষণের বাইরে সার্বভৌম বিশ্বে আর কিছু থাকেনা।

    এই রচনাটি রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের অতি প্রিয় সঙ্গীত ছিলো। তিনি নরেন্দ্রকে বারম্বার গানটি গাইতে আদেশ বা অনুরোধ করতেন। শুনতে শুনতে কখনও তাঁর ঘোর আসতো, কখনও নিজেই সঙ্গে গাইতে থাকতেন, কখনও নৃত্যপর হয়ে পড়তেন।

    কথামৃতে পাচ্ছি, তাঁর তিরোধানের পূর্বে শেষ রথযাত্রার দিন যখন নরেন্দ্র গানটি গাইছিলেন তখন তিনি নিজেও ' কমলের কমলে থাকো মা, পূর্ণব্রহ্মসনাতনী' গাইতে গাইতে নৃত্য শুরু করলেন, তার পর তাঁর ঘোর লাগলো। নরেন্দ্র কিন্তু গানের প্রতিই বিশ্বস্ত, নিশ্চল মনোসংযোগে মজ্জিত।

    ২.
    ম্যাজিক বাস্তবতার পরিভাষা সাহেবরা যেভাবে দেন তার একটু, 'Magic realism could be explained when a character in a story continues to be alive beyond the normal length of life and this is subtly depicted by the character being present throughout many generations. On the surface the story has no clear magical attributes and everything is conveyed in a real setting, but such a character breaks the rules of our real world. '

    ভারতবর্ষের আবহমান বহুমাত্রিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ব্যাখ্যা করতে গেলে সাহেবদের এই দর্শন বা শৈলীটি বেশ কার্যকরী ভাবে ব্যবহার করা যায়। আমাদের মনন, চেতনে-অবচেতনে এই ধারাটির সঙ্গে স্বতই ওতোপ্রোত। রামকৃষ্ণদেব যখন ঐ গানটি শুনতে শুনতে ভৌতিক বিশ্ব, মহাজাগতিক বিপুলতা ও সার্বভৌম সময়কালের অসংখ্য স্তরকে অতিক্রম করে জাদুবিশ্বে গহন অন্তরাত্মার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাচ্ছেন, অর্থাৎ লিভিং বিয়ন্ড নর্ম্যাল লাইফ, বেদান্তবাদী নরেন্দ্র অবিচল, স্থির ,লিভিং ইন রিয়্যাল সেটিংস, বাট ব্রেকিং দ্য রুলস অফ রিয়্যাল ওয়র্ল্ড। তাঁর শাস্ত্রবোধ তাঁকে বাহিরের টানে বিচলিত হতে দেয়না। তাঁর শাশ্বতের সংজ্ঞা, চিরন্তনতার পরিভাষা হয়তো গুরুর থেকে ভিন্ন। তবু তিনি ও তাঁর গুরু পৃথিবীর ঘনিষ্টতম মানুষ। এই ম্যাজিক বাস্তব চরাচরে দুই নিঃসঙ্গ মানুষ পরস্পরের হাত ধরে যাত্রাপথে এগিয়ে যান। সমান্তরাল । ছেদবিন্দু যদি কোথাও থেকে থাকে তা সহজে চোখে পড়েনা। তাই রোগশয্যায় গুরু ঘোর থেকে জেগে শিষ্যকে বলেন, ' তোর এখনও ধন্দ গেলোনা। ত্রেতাতে যে রাম, দ্বাপরে যে কৃষ্ণ, কলিতে সেই রামকৃষ্ণ, তবে তোর ঐ বেদান্তের দিক দিয়ে নয়।'

    শিষ্যের ধন্দ কি কোনোদিন সম্পূর্ণ গিয়েছিলো?

    জানা যায়না।

    ৩ .

    'ধর্ম' বা 'অধ্যাত্ম' প্রসঙ্গে শ্রী রামকৃষ্ণের ( যা আমরা কথামৃত বা লীলামৃত জাতীয় গ্রন্থ থেকে জানতে পারি) মতামতের সঙ্গে আমার মূর্খতার বেশ ভালো-ই গরমিল থাকে। ঐশী অনিশ্চিত অনর্থের প্রতি ঐ জাতীয় সংশয়হীন আত্মসমর্পণের মধ্যে যদি কিছু বস্তুগত সত্য থাকতো তবে মানবসভ্যতার এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস ভিন্নভাবে লেখা হতো। যদি আমরা অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে, অর্থাৎ সমাজতত্ত্ব বা সামাজিক নৃতত্ত্বের পথে বিচার করি তবে হয়তো তাঁর ভূমিকা অধিক স্বীকার্য মনে হতে পারে। তিনি তাঁর সময়ের ফসল। সেই সময়ে তাঁর চিন্তাচেতনার মূল্য অবশ্যই ছিলো। অন্তত বিবেকানন্দের মতো একজন অনুগামীকে বশ করতে পারা কম কথা নয়। তিনি বিদ্যাসাগরকে প্রভাবিত করতে পারেননি, কিন্তু নরেন্দ্রনাথ দত্তকে পেরেছিলেন। নরেন্দ্রের মতো একটি উল্কাপিন্ডকে কক্ষপথ খুঁজে দেওয়া যারতার কাজ নয়। দেবেন্দ্রনাথ, কেশব সেন প্রমুখ সেকালের সব অধ্যাত্মজগতের মুখ্য ব্যক্তিরা নরেন্দ্রের নাগাল পাননি।

    রামকৃষ্ণ পরমহংস আমাদের মতো ইতর, অধ্যাত্মবোধহীন মানুষের কাছে প্রতিম হন কথামৃতের মাধ্যমে। 'কথামৃত' আমি কাব্য হিসেবে পড়ি। যেমন পড়ি 'গীতা'। অনেক তত্ত্বকথা, বহু প্রসঙ্গ, অসংখ্য নিরুপম উপমা ও বাঙালির মাতৃভাষার অনুপম সাব অল্টার্ন বাগভঙ্গি আমাকে টানে। সাধারণ মানুষ যাঁদের ঈশ্বরকোটির স্তরে স্থান দেন, তাঁদের সব কিছুর মধ্যেই তাঁরা নানা ধরনের নাটকীয় সর্বশ্রেষ্ঠত্বের নির্যাস আবিষ্কার করেন। শ্রীরামকৃষ্ণ তার ব্যত্যয় নন। ব্যক্তি আমি এই সমর্পণকে হয়তো অন্ধত্ব বলে মনে করি, কিন্তু এই সমর্পকদের অশ্রদ্ধা করার ধৃষ্টতা করতে পারিনা। বড়োজোর বলতে পারি, অন্ধজনে দেহো আলো।

    একটি সাধারন ধারণা, এই শতাব্দীতে ব্যক্তির বা সমষ্টির জীবনে 'ধর্ম' বা 'ঈশ্বর'এর ভূমিকা বিশেষ হ্রাস পেয়েছে। হয়তো এটা সততগ্রাহ্য মত নয়। ধর্মভাবনা, ঐশীচেতনা, লোকাচারবশ্যতা, কুসংস্কারমন্যতা সব কিছুই সমাজজীবনে ভিন্ন ভিন্ন কক্ষপথে পরিক্রমা করে। কখনও কখনও সেগুলি পরস্পরকে স্পর্শ করলেও তুলির এক ঝাপটে সবকিছুকে একমাত্রায় নিয়ে আসা আমার কাছে স্বীকার্য নয়। জলপড়া খেয়ে মন্দিরে মানত করার যে 'ধর্ম', তা কোনদিনই আমাদের দেশে বৌদ্ধিক স্বীকৃতি পায়নি, এখনও পায়না। ঈশ্বরকণিকা মানুষের নাগালে আসুক বা না আসুক, রক্তমাংসের কায়াকল্পধারী কৌম মানুষের অন্তর্লীন নিরাপত্তাবোধের অভাবকে 'আশ্রয়' দিতে 'ধর্মগুরু'দের চাহিদায় কখনো ভাঁটা পড়েনা। এটা সিম্পল চাহিদা ও জোগানের তত্ত্ব। কিন্তু নরেন্দ্রও তাঁর গুরু সে অর্থে কখনও 'ধর্মগুরু' ছিলেন না।

    ৪.
    শ্রীরামকৃষ্ণের যে 'সময়',তা শুধু 'ধর্মে'র নামে উৎসর্গিত ছিলো না। শংকরাচার্যের প্রায় এক হাজার বছর পরে সনাতনধর্মীয় মানবসমাজের আত্মজিজ্ঞাসার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রমশ বিকশিত জায়মান এক আলোড়ন। এই এক হাজার ধরে ভারতীয় সমাজে যে বিবিধমুখী ওলটপালট ঘটেছিলো সেখানে সনাতনধর্মীয়রা ছিলো আক্রান্তের ভূমিকায়। ইসলাম শাসন অবসানের পর য়ুরোপীয় ধ্যানধারণার সংস্পর্শে এসে সনাতনধর্মীয়রা দেখলো তারা নিজেদের যতোটা অকর্মণ্য ও শক্তিহীন ভাবতো, আসলে অবস্থা ততোটা খারাপ নয়। কারণ তৎকালীন রাজশক্তির বহু পুরোধা ও প্রতীক, প্রাচ্যের এই মিস্টিক ধর্মদর্শনটিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে চর্চা করতে শুরু করেছিলেন। এর ফলে যা ঘটলো, ধীমান, চিন্তাশীল সনাতনধর্মীয়রা কারণ খুঁজতে লাগলেন এককালের বিশ্বখ্যাত একটি অধ্যাত্মদর্শন কেন এভাবে নির্জীব, গতিহীন বদ্ধ জলায় পর্যবসিত হয়েছে। এই চর্চার সূত্রে তাঁরা দেখলেন যখন থেকে একটি সজীব ধর্মদর্শন অধ্যাত্মমূল থেকে ছিন্ন হয়ে লোকাচারকেই 'ধর্ম' বলে আঁকড়ে ধরে, তখনই পাপের বীজ ব্যপ্ত হয় এবং 'ধর্ম'টির মৃত্যু ঘটে।

    এই নির্ণয় তাঁদের বিভিন্ন নেতিবাচক ও প্রতিক্রিয়াশীল লোকাচারের প্রতিবিধানকল্পে উপযুক্ত প্রতিষেধকের সন্ধানে নিযুক্ত করলো। রামমোহন একভাবে খুঁজলেন তাকে, ইয়ং বেঙ্গল আরেকভাবে, বঙ্কিম এবং বিদ্যাসাগরও নিজের মতো করে এই খেলায় তাঁদের ক্রান্তিকারী ছাপ রাখলেন। এই সমস্ত অগ্রগণ্য খেলোয়াড়দের প্রত্যেকেরই নিজস্ব অনুগামীর দল ছিলো। শ্রীরামকৃষ্ণ এই রকম একটি দলেরই অধিনায়ক ও মুখ্য গুরু। যদিও তাঁর জীবৎকালে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা বেশ সীমায়িত ছিলো। তাঁর যে 'দল' তা তৈরি করেছিলেন নরেন্দ্র। সেই সময় এক ধরনের যে 'আলোড়ন' চোখে পড়তো , তা হলো একটি গ্রুপ ডাইনামিক্স, কোনও এককের কীর্তি নয়। 'ধর্ম' হিসেবে 'হিন্দু' অর্থাৎ সনাতনধর্মীয় এবং 'ব্রাহ্ম'রা একই দর্শন, শাস্ত্র ও ঐতিহ্যের অনুসরণ করতেন। ভিন্নতা ছিলো শুধু লোকাচারের অনুপালনে। নিঃসন্দেহে এ ছিলো এক গৃহমুখী আলোড়ন। বহির্পৃথিবীতে সনাতনধর্মীরা ঠিক কোন পরিচয়ে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেবেন, তা নিয়ে ছিলো এক ব্যাপক গোষ্ঠীগত বিতর্কের ঘনঘটা। পরাধীন, ঔপনিবেশিক অভিশাপমগ্ন একটি জাতি তখনও আত্ম আবিষ্কারের জন্য 'ধর্ম' ব্যতীত অন্য কোনও আশ্রয় খুঁজে পায়নি। তাঁদের জন্য 'ধর্ম' কোনও 'চালিকাশক্তি' ছিলোনা, ছিলো অশক্ত এক যষ্টির আশ্রয়। মেধাবী মানুষেরা শুদ্ধ 'ধর্ম'চর্চার ঊর্ধে আরও বহু ধরনের সকর্মক ভূমিকা নিতেন। ধর্মচর্চা অবশ্যই সমাজ জীবনের 'মূল ক্রিয়াকর্ম' ছিলোনা। হয়তো যেসব কর্মকান্ডকে 'ধর্মচর্চা' বলে মনে হচ্ছে, তা ছিলো আদতে নিহিত স্বার্থগোষ্ঠী প্রণোদিত অন্ধ লোকাচারের পুনরাবৃত্তি। সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক ও গ্রামীণ মূলস্রোতের খেটে খাওয়া মানুষেরা অর্থোপার্জন ও পরিবার প্রতিপালনের প্রতিই বিশ্বস্ত থাকতেন। সেটাই ছিলো তাঁদের 'ধর্ম'এবং সে ট্র্যাডিশন এখনও চলেছে। নরেন্দ্র এদেশে এই ঐতিহ্যটিকেই 'ধর্মে'র মূলস্রোত হিসেবে গ্রহণ করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।

    ৫.
    পাশ্চাত্যে বিবেকানন্দের 'প্রভাব' এখনও একটি তর্কসাপেক্ষ বিষয়। মুখ্যত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ও য়ুরোপের কিছু দেশে নাগরিক, শিক্ষিত, উচ্চবিত্ত, শাদা ত্বকের কিছু মানুষ ব্যক্তি বিবেকানন্দ ও তাঁর অসম্ভব আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের গুণমুগ্ধ ছিলেন। তিনি যতোদিন ছিলেন, সেই মুগ্ধতা বজায় ছিলো। উত্তর মীমাংসা বা বেদান্তের মতো একটি জটিল প্রাচ্য দর্শনের প্রতি আপামর পশ্চিমী মানুষ কেন আগ্রহী হবেন? পশ্চিমী উদ্বায়ু মানসিকতায় সাময়িকভাবে 'ঘাঁটি' গাড়ার উপযুক্ত সদাগর হলেন মহেশ যোগী বা রজনীশ। আশা করি বিবেকানন্দ তাঁর চূড়ান্ত 'মূঢ়' অবতারেও ( যদি সেরকম কিছু থাকে)এইসব 'ধর্মগুরু'দের সঙ্গে এ ব্যাপারে পাল্লা দিতে পারবেন না। ঠিক যেভাবে আমরা রবিবাবুকে নিজেদের ইচ্ছেতে 'বিশ্বকবি' বানাবো আর জগত শুদ্ধু বিদেশীকে হ্যাটা দেবো, কেন তারা আজ তাঁর সৃষ্টির প্রতি উদাসিন। সেভাবেই নরেন্দ্রের প্রতি পশ্চিমী মুগ্ধতা কেন কমে গেলো, তা নিয়ে আমরা আজও প্রশ্নশীল, যদিও তাতে পশ্চিমী মানুষ বা নরেন্দ্রের কোনও ভূমিকা নেই। একজন 'প্রচারক' হিন্দু সন্ন্যাসীর ইচ্ছেমতো মার্কিন বণিক সংস্কৃতি যে এরকম একটি সার্বিক বিনিময়প্রথায় রাজি হয়ে যাবে, এর কোনও বাস্তবসম্মত কারণ দেখা যায়না। বিবেকানন্দের ব্যক্তিত্বের প্রতি মার্কিন মানুষজনের যে ছোটো গোষ্ঠীটি আকৃষ্ট হয়েছিলেন, তার বাইরে বাকিদের প্রতিক্রিয়া ছিলো মূলত কৌতূহলভিত্তিক। কৌতূহল নিবৃত্ত হতে তারা সরে পড়ে। কারণ এই হিন্দু সন্ন্যাসীটি প্রবাদিত প্রাচ্য ভেল্কি ভোজবাজির ওস্তাদ ছিলেন না। বাকিরাও বেদান্ত নয়, বিবেকানন্দের টানে এসেছিলেন। অতি স্বল্প কয়েকজন পশ্চিমী ব্যতিরেকে বিবেকানন্দের চেতনায় ভারতবর্ষ নামক যে চিন্ময় সত্তার সিংহাসন ছিলো, তার নাগাল পাননি বা পেতে চাননি। বিবেকানন্দ তা বুঝেছিলেন। একদল অবুঝ জনতার কাছে ক্রমাগত ভিক্ষের ঝুলি হাতে তাঁর বিশ্বাসের বাণী প্রচার করে যাওয়ার কষ্ট ও ক্লান্তি তাঁকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিলো। এই ক্লান্ত নায়কটি যখন তাঁর নিজের ঘরে ফিরতে চাইলেন ও নিজেকে সমর্পিত 'প্রচারকে'র অকিঞ্চিতকর ভূমিকা থেকে উত্তীর্ণ করে সত্যিকারের দিশারি হবার প্রস্তুতি নিতে চাইলেন, তখন তাঁর প্রিয়তম দেশবাসী, বিশেষত সঙ্ঘারামের গুরুভাইরা, একযোগে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করলেন। কারণ বিবেকানন্দ তখন তাঁদের কাছে দুগ্ধবতী গাভীমাত্র। তাঁর আদর্শের থেকে ইঁটকাঠের প্রতিষ্ঠানই তাঁর একান্ত সহচরদের কাছে বেশি কাম্য বোধ হলো। নিবেদিতাকে জড়িয়ে যেসব কুৎসা রটনা হয়েছিলো, অনেক 'ঘরের' লোকও তার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অনেক দুঃখে মানুষটি বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, আরেকটি বিবেকানন্দ থাকলে বুঝতে পারতো এই বিবেকানন্দ কী করে গেলো।

    ৬.
    বিবেকানন্দের মধ্যে এই মূর্খ চিরকাল নানা স্ববিরোধ খুঁজে পেয়েছে। কারণ তিনি ছিলেন এক অসম্ভব রকমের জ্যান্ত মানুষ। স্ববিরোধিতা জীবন্ত মানুষের প্রধান লক্ষণ। নিত্যদিনের জীবনের সঙ্গে শাশ্বতকালের চিন্তাভাবনাকে, অগণিত বিরোধাভাসের বিরুদ্ধতা নিয়ে, বিশ্বাসযোগ্যভাবে যুক্ত রাখা নরেন্দ্রের মাপের মানুষের পক্ষেই সম্ভব। রামকৃষ্ণদর্শনের প্রবক্তা ও প্রচারক হিসেবে তাঁর বক্তব্য বা ব্যাখ্যাকে, তাঁর এই অন্তঃস্থ বিরোধাভাসের কারণেই আমার কোনো কোনো সময় আড়ষ্ট মনে হয়েছে। একটু বয়স হতে যখন তিনি নিজের পথ খুঁজে পেতে শুরু করলেন তখনই তাঁর প্রবল যোগঋদ্ধ স্বাস্থ্য ও প্রিয় গুরুভাইয়েরা তাঁকে ত্যাগ করলেন। 'প্রচারক' হিসেবে তিনি নানা বাধ্যতামূলক বক্তব্য মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেন, কারণ সেটাই ছিলো তাঁর কাজ। ঔপনিবেশিক শক্তির প্রতীক খ্রিস্টিয় যাজকদের একতরফা নিজস্ব ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করার বন্যাস্রোতকে প্রতিরোধ করার জন্য তিনিও 'হিন্দু'ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে উচ্চকিত হতেন। কিন্তু তাঁর মাপের ভূয়োদর্শী একজন চিন্তানায়ক, যাঁর ঐশীচেতনার মূলতত্ত্ব ছিলো 'যতোমত ততো পথ', তিনি কীভাবে প্রকৃতপ্রস্তাবে সামান্য যাজকদের মতো ধর্মবাণিজ্যে এভাবে নিলাম ডাকবেন। হয়তো বিবেকের বিরুদ্ধে ক্রমাগত যাত্রা করতে করতেই তিনি অতো কম বয়েসে হতোদ্যম ও ভগ্নস্বাস্থ্য হয়ে পড়েছিলেন। গ্রিক ট্র্যাজেডির নায়কের মতো মৃত্যু ছাড়া তাঁকে শূশ্রূষা দেবার মতো আর কেউ ছিলোনা। ঐ মাপের তেজতপ্ত একজন মানুষকে সহ্য বা গ্রহণ করার মতো ক্ষমতা সেই সময় কেন, এখনও আমরা অর্জন করে উঠতে পারিনি। বিদ্যাসাগরও নিরাশ হয়েছিলেন, কিন্তু প্রবীণ বয়েসে। মন্দিরে শ্বেতপাথরের পিঞ্জরে নির্বাসনের অধিক আমরা তাঁদের কিছু দিতে পারিনা।

    ৭.
    বাংলা রেনেশাঁসের একটা লক্ষণ ছিলো পূর্ব প্রজন্ম থেকে গড়িয়ে আসা মূল্যবোধের ধারার প্রতি বিভিন্ন মাত্রায় প্রশ্নশীল অবস্থান গ্রহণ করা। যদি আমরা প্রথ্ম বাঙালি 'ইন্টেলেক্চুয়াল' বঙ্কিমচন্দ্রকে দিয়ে শুরু করি বা সম্পূর্ণ ভিন্নমেরুর চিন্তানায়ক ঈশ্বরচন্দ্র,আমরা দেখবো তাঁদের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর সমন্বয়ের প্রতিই অধিক বিশ্বস্ত। এটা চিরন্তন 'ভারতীয়' লক্ষণ। সেই যে শাক্যমুনি মধ্যপন্থার প্রতি আনুগত্য জানিয়ে গেছেন, ভারতীয় মেধা ও মননে দীর্ঘ আড়াই হাজার বছর তার কোনও বিশেষ ব্যত্যয় ঘটেনি। কিন্তু নরেন্দ্র প্রথম থেকেই এই মধ্যপন্থার প্রতি বিশেষ আস্থা জ্ঞাপন করেননি।

    ইতিহাস থেকে দেখি নরেন্দ্র নিজের পথ খুঁজতে বেশ কিছু কাল আপ্রাণ প্রয়াস করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রামকৃষ্ণদেবের ভানহীন মৌলিক সারল্য তাঁর অন্তরাত্মাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিলো। দেবেন্দ্রনাথ থেকে কেশব সেন, এরকম বহুজনকে তিনি সরাসরি প্রশ্ন করতেন, 'আপনি ভগবানকে দেখেছেন?' তাঁরা ছিলেন পন্ডিত, জ্ঞানী বিদগ্ধ মানুষ। নরেন্দ্রের এই প্রশ্নের জবাব তাঁদের কাছে ছিলোনা। কিন্তু এই প্রশ্নটা যখন সেই প্রায় নিরক্ষর পূজারী ব্রাহ্মণকে করা হলো, তিনি বললেন, ' নিশ্চয় দেখেছি, তোকেও দেখাতে পারি'। এই পর্যায়ের আত্মবিশ্বাসের সামনে নতজানু হওয়া ছাড়া নরেন্দ্রের আর কোনও বিকল্প ছিলোনা। আসলে নরেন্দ্রর প্রকৃত অর্থে 'গুরু' হওয়ার সামর্থ্য সেই সময় বোধ হয় পৃথিবীতে কারুর ছিলোনা। আমি তাই গ্রিক ট্র্যাজেডির প্রসঙ্গ এনেছি । ভবিতব্যের সামনে ঈশ্বরপ্রতিম নায়ককেও নত হতে হয়।

    ৮.
    নিজস্ব বিশ্লেষণ থেকে যেটা বুঝি, নরেন্দ্র পূর্ববর্তী দিকপাল মানুষদের সততার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। যোগাযোগ হলেই তাঁদের আত্মবিশ্বাসের পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। তাঁদের মেধার প্রতি প্রশ্নশীল অবস্থান নিচ্ছিলেন। 'ভগবান' নামক কোনও দৈবিক, ভৌতিক বা কাল্পনিক অস্তিত্বকে প্রত্যক্ষ করার কোনও ব্যক্তিগত অভীপ্সা তিনি লালন করছিলেন না। কারণ বেদান্তদর্শনের রীতিগত চর্চা করার আগে থেকেই তিনি স্বভাববৈদান্তিক। তাঁর সমন্বয়বোধের কাছে 'ব্রহ্ম'ভক্তি ও সারমেয়প্রীতি এক হয়ে থাকতো। যেহেতু সেই সময়ের মুখ্য চালকেরা তাঁদের ব্যক্তিগত ধ্যানধারণা 'ভগবানে'র নামেই প্রচার ও ব্যাখ্যা করতেন,তাই নরেন্দ্র এই 'ভগবান' নামক ধারণাটিকে কষ্টিপাথর হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। তা কিন্তু পাথরই ছিলো, নরেন্দ্র তার মধ্যে কোনও 'শিবত্ব' আরোপ করতে চাননি। সেই সময় পর্যন্ত ভবতারিণীর বিগ্রহ তাঁর মধ্যে কোনও ঐশী চেতনারও সঞ্চার করেনি। আসলে পূর্ববর্তী মনস্বীদের কাছে নরেন্দ্রের প্রত্যাশা ছিলো একজন পথপ্রদর্শকের, যাঁর প্রতি নিঃসংশয় বিশ্বাস স্থাপন করা যায়। সেই অস্থির অনিকেত মূহুর্তের নরেন্দ্রকে কোন শূশ্রূষা শান্তি এনে দিতে পারে রামকৃষ্ণদেব তা অনুভব করতে পেরেছিলেন। এইভাবেই স্থির হয়ে যায় আমাদের ইতিহাসবৃত্তে এক মুখ্য চালকের যাত্রাপথ।

    কিন্তু উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে নরেন্দ্রের যাত্রাপথ কী হবে তা স্থির করতেন তিনি নিজে। বলরাম বসুর বাড়ি বা বরানগরের ভগ্ন ভদ্রাসনে হোমজপ করে দিনযাপন করার জন্য তিনি জন্ম নেননি। তাঁর অপর গুরুভাইরা এই ব্যবস্থায় তৃপ্তিলাভ করলেও তিনি নিজে বেছে নেন পরিব্রাজকের জীবন। প্রব্রজ্যার এই পাঁচ বছর নরেন্দ্রকে বিবেকানন্দ করে তুলেছিলো। তিনি আজীবন নিজস্ব কক্ষপথে স্বাধীনভাবে সত্যপ্রদক্ষিণ করে গেছেন। তাঁর এই ব্যপ্তির স্বাধীন বিস্তার তাঁর গুরুভাইদের জন্য চিরকাল সংশয়ের হেতু হয়ে থেকে গিয়েছিলো। রামকৃষ্ণ বলয়ের বাইরেও যে নরেন্দ্রর নিজস্ব বৃত্তীয় কক্ষপথ থাকতে পারে সেটা স্বীকার করার মতো মেধা বা সত্যদৃষ্টি তাঁদের ছিলোনা। ভক্তরা রামকৃষ্ণদেবকে 'ভগবান' আখ্যা দিয়েছিলো, কিন্তু নরেন্দ্রকে দেয়নি। কারণ নরেন্দ্রের ভুবন মেধাহীন মেঠো ভক্তদের নাগালের অনেক উপরে থেকে গেছে চিরকাল।

    নরেন্দ্রনাথের কাছে বিকল্প ছিলো খুব কম। যদি শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে না যেতেন তবে ভাই ভূপেন্দ্রনাথের মতো হয়তো বোমাপিস্তল হাতে দেশকে বিদেশীদের থেকে মুক্ত করতে অগ্রণী হতেন। তবে নিশ্চিতভাবে সে ভূমিকাতেও তিনি সনিষ্ঠ থাকতেন। অরবিন্দ ঘোষের মতো মধ্যপথে অনুগামীদের বিশ্বাস ভঙ্গ করে অধ্যাত্মিকতার আত্মকেন্দ্রিক নিরাপদ আশ্রয়ের শরণ নিতেন না।

    ৯.
    বিজ্ঞান ও কৃৎকৌশল এই মূহুর্তে যে গতিতে মানুষের বিস্ময়বোধকে শেষ করে দিচ্ছে, তাতে মনে হয় না বৃহত্তর মানবসমাজের মনোজগতে বিবেকানন্দের মাপে কোনও নবতর অধ্যাত্মিক স্পেস আর তৈরি হতে পারবে। গুরু শ্রী রামকৃষ্ণ এবং তাঁর 'গৌরব' নরেন্দ্র, চিরন্তন ভারতীয় মননবিশ্বের অধ্যাত্ম দ্বন্দ্ব, যা ভক্তিমার্গ ও জ্ঞানমার্গের মধ্যে চার-পাঁচ হাজার বছর ধরে চলে আসছে, তাকে মূর্ত করেছিলেন ঊনবিংশ শতকের বাংলাদেশের ম্যাজিক বাস্তব চরাচরে। পরা যুক্তি, অপরা যুক্তি, স্বাদেশিকতা, নবোন্মেষ পশ্চিমি বিজ্ঞান ও কারিগরি সাফল্যের উৎকর্ষ ও অনন্য মানবিক করুণার সম্বল, সব নিয়ে নরেন্দ্র সামন্ততান্ত্রিক ও ঔপনিবেশিক বদ্ধ জলা থেকে ক্রমপচনশীল তাঁর প্রিয়তম স্বদেশ ও দেশবাসীদের মুক্ত করতে চেয়েছিলেন।

    যেকোনও জাতির ইতিহাসেই বিবেকানন্দ নামক ব্যক্তি ও ধারণাটি মহার্ঘ সম্পদ। কোনো ঐশী অধ্যাত্মবোধকে আমল না দিয়েও তাঁর মূল্যায়ণ করা যায় এবং আমার বিশ্বাস যে কোনো কষ্টিপাথরেই তাঁর সোনায় কোনো খাদ পাওয়া যাবেনা।
  • :-) | 127.194.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১২ ০১:২৭569269
  • শিবাংশুদা কি অভিজিৎ বাবুর লেখা পড়েছেন মুক্তমনায়, বা বিপ্লব পালের। দুটো লেখাই এখানেও ছিল তো।

    শেষ লাইনটা পড়ে মনে হল ঃ-)
  • একক | 24.99.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১২ ০১:৩১569270
  • বড্ড আবেগ আর কিচু জায়গা কাঁচা লাগলো । বিদেশে নরেন দত্তর প্রভাব না থাকার পার্ট টা যেমন । ব্যাপার টা অত সোজা নয় । যারা স্ট্রিপ টিস দেখে সেই জাত ই আবার সফোক্লেস ঘাঁটে , কিয়ের্কেগার্দ নিয়ে তর্ক করে , এখনো লাঁকা পড়তে গিয়ে মাথার চুল টাক করে ফেললো কত ইউরোপ আমেরিকার প্রফেসর । বিবেকানন্দের মধ্যে আদৌ কোনো দার্শনিক বিভা থাকলে তিনিও থাকতেন। সেটা ছিলনা ।
  • শিবাংশু | 127.197.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১২ ১১:১৪569271
  • ঃ-),

    নাহ, আমি দুটো লেখাই পড়িনি। ঃ-)
    কোনও পুনরাবৃত্তি ঘটে গেছে কি?

    একক,

    ঠিক বলেছেন। 'আবেগ' রয়েছে বেশ ভালো-ই। কারণ এই লেখাটি ঠিক নরেন্দ্রের 'ক্রিটিক্যাল অ্যাপ্রেসিয়েশন' করার জন্য লেখা নয়। তর্পণ বলা যেতে পারে। এক্ষেত্রে 'আবেগ' হয়তো ক্ষমার্হ।

    নরেন্দ্র পশ্চিমে জীবৎকালে 'প্রচারকে'র ভূমিকাতেই থেকে গেছেন। নিজস্ব 'দার্শনিক বিভা' কিছু জায়মান ছিলো কি না, তার প্রমাণ ঊনচল্লিশ বছরে পাওয়া যায়নি। আমার লেখা সেই নিয়েই। আমাদের ধরনধারণ নিয়ে সাহেবরা চিরকালই সন্দিহান। প্রাচ্যের মহোত্তম মানুষদের বিশ্বদৃষ্টির 'কাঁচাত্ব' নিয়ে সেদেশে অনেক মধ্যরাতের তেল জ্বলেছে। আমি কীটাণুকীট , আর কিছু না পাই, 'কাঁচাত্ব'টুকু বেশ পেয়েছি। ঃ-)
  • কল্লোল | 230.226.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১২ ১২:৪০569273
  • লাগবে না বোধ হয়। শিবাংশুর মাথার ভেতরে একটা বরফের আস্তর আছে। একমাত্র ও নিজে মুখে বলেছে হায়দ্রাবাদে গাড়ি চালাতে ওর মাথা "গরম" হতো। তাকে ঠান্ডা রাখতো গাড়ির মিউজিক সিস্টেমে কৃষ্ণচন্দ্র দে'র কীর্তন চালিয়ে।
  • শিবাংশু | 127.197.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১২ ১৬:৫০569274
  • Link,

    অনেক ধন্যবাদ। মুক্তমনার লিং গুলো আগে দেখলে আমার অনেক উপকার হতো। আমি খুব সংক্ষেপে বিবেকানন্দের স্ববিরোধের যে ইঙ্গিত করেছি, সেই বিষয়টিতে আরও স্পষ্ট থাকতে পারতুম। অবশ্য এ বিষয়ে আরো যে সব বইপত্রের উল্লেখ এই লেখায় রয়েছে তার কিছু পড়ার সুযোগ আমার হয়েছিলো। আমার লেখা অবশ্যই 'ভক্তে'র লেখা নয়। আর রামকৃষ্ণদেবের স্ববিরোধ নিয়েও বহু কথার উল্লেখ রয়েছে এখানে। সে ব্যাপারে আমার বিশেষ মতদ্বৈধ নেই।

    বিবেকানন্দ বিষয়ে আমার যে ধারণার কথা আমি এই লেখায় দিয়েছি, অর্থাৎ 'প্রচারকে'র বন্ধনের মধ্যে তাঁর যে অবস্থান সেটা তাঁকে শেষ পর্যন্ত শান্তি দেয়নি। যখন থেকে তিনি নিজের এই ভূমিকার প্রতি সংশয় বোধ করতে শুরু করেছিলেন, তাঁর একাকিত্বের দিন এসে যায়। নতুন করে আরম্ভ করার সময় আর পাননি।

    আসলে কি জানেন, গৌতম বুদ্ধ থেকে শুরু করে বাংলা রেনেশাঁসের সব প্রধান পুরুষদের স্ববিরোধ আর 'মাটির পা' নিয়ে এতো তথ্য আছে যে কখনও মনে হতে পারে এই সব মানুষ প্রকৃতপক্ষে নেহাৎই ভন্ড ও পাষন্ড। বাল্যকালে মনে পড়ছে রাজা রামমোহনের জন্মদ্বিশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। খুবই তথ্যবহুল ও গবেষণা ঋদ্ধ। সেখানে 'ব্রহ্মবাদী' রামমোহনের জীবনের নানা 'অব্রাহ্মিক' দিক নিয়ে বিশদ আলোচনা ছিলো। ভক্ত টাইপ কিছু মানুষ বিশেষ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। বুদ্ধিমান মানুষেরা কিন্তু তথ্যগুলিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কারণ এর দ্বারা প্রমাণিত হয়েছিলো রামমোহন জন্মের সময় একজন রক্তমাংসের মানুষমাত্র ছিলেন, কিন্তু মৃত্যু পর্যন্ত আর পাঁচটা মানুষের থেকে অনেক উঁচু অবস্থানে পৌঁছে গিয়েছিলেন। ইতিহাস যেহেতু মানুষের হাতেই বিবর্তিত হয়, তাই এই জাতীয় সব মানুষ শত 'সীমাবদ্ধতা' থাকা সত্ত্বেও ইতিহাসে তাঁদের ছাপ রেখে যান। বড়ো মাপের মানুষদের 'মানুষী' দুর্বলতার কথা শুনলে যাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন, তাঁরা অসম্পূর্ণ, অন্ধ, দুর্বল মানুষ। কিন্তু তাঁদেরও তো সমাজে নিজস্ব স্থান রয়েছে। নরেন্দ্র আমার কাছে বৈকুণ্ঠবাসী দেবতা নন। তবে এটা জানি তাঁর মাপের 'মানুষ' নিত্য জন্মায় না। তাঁর পানভোজনের ব্যক্তিগত রুচি নিয়েও দেখি প্রতিবেদক নানা তথ্য লিখেছেন। জানিনা এর প্রয়োজন ছিলো কি না। তবে শেষে প্রতিবেদক নরেন্দ্রের ইতিবাচক কর্মকান্ড সম্বন্ধে যে মন্তব্য করেছেন তার সঙ্গে আমি পূর্ণত একমত।

    এই লিং গুলো নরেন্দ্র সম্বন্ধে আমার ধারণাকে সশক্ত করেছে, তাই আপনার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।

    আর রইলো বাকি 'আইসব্যাগ', ঃ-)

    যাঁরা শখে বা জীবিকাসূত্রে ইতিহাসচর্চা করেন, তাঁদের যাবতীয় বিশ্লেষণ 'ইগলু'তে বসে করতে হয়। নয়তো সংগৃহীত তথ্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হয় তাঁরা হয়ে যাবেন সঙ্ঘপরিবার নয়তো ক্যাথেরিন মেয়ো। মজার ব্যাপার হলো সবাই কিন্তু মোটামুটি একই তথ্য ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু 'ব্যাখ্যায় করিতে পারি ওলট-পালট' গোছের ব্যাপার। আমাদের পদ্ধতিতে কর্মধারয় মধ্যপদলোপী হলেই বিড়ম্বনা। ঃ-)
  • dukhe | 127.194.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১২ ২৩:০৬569275
  • দ্যাহেন, বিবুদার দার্শনিক বিভা থাকলে আম্রিগা ওনাকে মাথায় করে রাখত, রবিদাদুর সাহিত্যিক বিভা থাকলে নরওয়েতে তেত্রিশ শতাংশ শিশুর নাম আরেন্টি হত, আইনস্টাইনের বৈজ্ঞানিক বিভা থাকলে ছত্তিশগড়ে ওনার জন্মদিনে মহোৎসব হত - এসব জল্পনার শেষ পাওয়া মুশকিল । আপাততঃ স্বামী নিরাময়ানন্দের স্মৃতি থেকে বিবুদার স্ববিরোধের গল্প শুনুন -

    একদিন শুনলাম - কলকাতায় অদ্বৈত আশ্রমে আছেন স্বামী শুদ্ধানন্দ, তিনিও স্বামীজীর শিষ্য, জিগ্যেস করলে স্বামীজীর কথা বলেন। একদিন গিয়ে প্রণাম করে একটু-আধটু কথার পর মনের দুঃখে জানালাম, "মহারাজ, আমাদের ভাগ্যে আর স্বামীজীকে দেখা হলো না, কয়েক বছর আগে জন্মালে বেশ দেখা যেত ।" তিনি বললেন, "না দেখেছ, ভালই হয়েছে!"
    "কেন মহারাজ?"
    "আমার কী হয়েছিল শুনবে? -
    তখন মঠে স্বামীজীর সেবা করি, দিনরাতই কাছে কাছে থাকতে হয় । একদিন সকালে এক ছোকরা এসে বললে, 'স্বামীজী, আপনি তো দেশে-বিদেশে নতুন এক ধর্ম প্রচার করে এলেন ?' স্বামীজী বললেন, 'নতুন ধর্ম বলতে তুমি কী বোঝ?' সে বললে, 'আপনি তো - গঙ্গাস্নানে মুক্তি হয় - এসব মানেন না?' স্বামীজী বললেন - ' সে কী! আমি রোজ গঙ্গাস্নান করি, তা সম্ভব না হলে একটু গঙ্গাজল মাথায় দিই, মুখে দিই।' সে তো সব বুঝে চলে গেল । একটু পরে এক প্রৌঢ় ব্রাহ্মণ এসে বলছেন, 'স্বামীজী, আপনি তো আমাদের সনাতন হিন্দুধর্মই সারা পৃথিবীতে প্রচার করে এলেন? ধন্য আপনি!' স্বামীজী বললেন, 'সনাতন হিন্দুধর্ম বলতে আপনি কী বোঝেন?' 'এই কাশীতে মরলে মুক্তি হয় - এটা তো আপনি মানেন?' 'না, জ্ঞান বিনা মুক্তি হয় না। জ্ঞান হলে যেখানেই মরুক মুক্তি হবে। জ্ঞানের চর্চা করুন, আমি সর্বদা জ্ঞানের চর্চা করি!' আমি তো দুজনের সঙ্গে দুরকম কথা শুনে অবাক। নতজানু হয়ে বললুম, 'স্বামীজী, ওরা তো যে যার চলে গেল, আমি যে পড়লাম মহা ফাঁপরে ?' স্বামীজী বললেন, 'তুই জিগ্যেস কর, তোকে তোর মতো উত্তর দেব।' আমি বললুম, 'বলুন তাহলে কিসে মুক্তি?' স্বামীজী গম্ভীরভাবে আমার দিকে চেয়ে বললেন - 'গুরুসেবায়।'
  • dukhe | 127.194.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১২ ২৩:১৬569276
  • ইয়ে - গুরুভাইদের স্বামীজীকে ত্যাগ করার ব্যাপারটা কি শিবাজি এট্টু খোলসা করবেন?
  • b | 220.212.***.*** | ২২ আগস্ট ২০১২ ০৯:০৭569262
  • দুখে, এটা রসবোধের পরিচয় হলেও হতে পারে। আপনার ১১ঃ০৬ এর পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে বললাম।
    প্রেমানন্দ রীতিমত জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন, নরেন তো ঠাকুরের মুখে মুখে তর্ক করতো,ও তো মানতেই চাইতো না ঠাকুরকে, এটসেট্রা। এর ডকুমেন্টারী এভিডেন্স আছে,যদিও এখন হাতের কাছে নেই। রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠার সময়েও অনেক গুরুভাইয়ের কাছ থেকে বাধা এসেছিলো।
  • dukhe | 127.194.***.*** | ২২ আগস্ট ২০১২ ১২:৩৬569263
  • b, অবশ্যই রসবোধ। তাছাড়া অনেক সময়ই নরেন্দ্র একপক্ষের হয়ে তর্ক করে অন্যপক্ষকে ধরাশায়ী করে আবার অন্যপক্ষের হয়ে তর্কটা ঘুরিয়ে দিতেন। সম্ভবতঃ বিভিন্ন বিরুদ্ধ যুক্তিপরম্পরা প্রেজেন্ট করে শ্রোতাদের চিন্তার সীমানাটা বাড়িয়ে দিতে ভালোবাসতেন। সব প্রশ্নের হ্যাঁ বা না-তে উত্তর হয় না বলেই ভাবতেন বোধহয়।
    মিশন তৈরি নিয়ে গুরুভাইদের সঙ্গে সংঘাতের ব্যাপারটা জানি। সেটা মুলতঃ ছিল - সন্ন্যাসীরা এসব মানবসেবার কাজে জড়াবেন কিনা, তাঁদের গুরু কি সত্যিই এসব চেয়েছিলেন - এই ডিবেট। কিন্তু শিবাজি অন্য কিছু বলছেন বোধহয়। কিন্তু আমি যদ্দূর জানি ব্রহ্মানন্দজি যখন মঠের প্রেসিডেন্ট, তখন একদিন তিনি বিবুদার গা টিপে দিচ্ছেন দেখে একজন প্রশ্ন করায় তিনি উত্তর দিয়েছিলেন - 'নরেন যে সাক্ষাৎ শিব রে ।'
  • dukhe | 212.54.***.*** | ২৩ আগস্ট ২০১২ ১৮:২৪569264
  • আর মুক্তমনার কথা যখন উঠলই, সত্যের খাতিরে জানাতে হয় ওগুলোতে ঢপ কম নেই। এটা অবশ্য ওখানেই জানাতে গেসলাম কিন্তু মডারেটেড সাইট তো - ব্যাটারা চেপে দিল।
  • ...... | 69.16.***.*** | ২৩ আগস্ট ২০১২ ১৮:৪৭569265
  • ওখানে আপনি দুখে বলে না লিখে নিন্দুক বলে লিখতে গেলেনই বা কেন?
  • dukhe | 127.194.***.*** | ২৩ আগস্ট ২০১২ ২১:১৯569266
  • সে তো ফেসবুকেও আমি দুখে নামে নেই। অথচ দিব্বি পোস্ট করতে পারি ।
  • শঙ্খ | 169.53.***.*** | ২৩ আগস্ট ২০১২ ২৩:২৮569267
  • মুক্তমনাতে দুখে নামে লিখলে চাপত না? ছাপত?

    দেখি 'দুখে' নাম নিয়ে মুক্তমনাতে দু চারটে 'নির্মোহ ব' কমেন্ট করে আসি, চাপে না ছাপে?
  • একক | 24.99.***.*** | ২৩ আগস্ট ২০১২ ২৩:৩৫569268
  • মুক্তমনার লিঙ্ক টা দেখি তো ।
    ভ্যাদ্ভেদে ভক্তি আর একবগ্গা বিরোধিতা দুটোই দেখলে লেবু দিতে ইচ্ছে করে ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন