JKG বলতে মনে হল, আপনার থেকে একটু সিনিয়র সুমো চাউ বলে একজন ইকোনমিক্সের ছেলে, পার্ডুতে ওনার কাছে হেল্প চাইতে গেছে, ওনার সে কি কাতর প্রার্থনা, শুভাশিস আর একটু বোসো, এইটাও একটু শুনে নাও, তোমার কাজেই লাগবে...
এই অভ্যু-দা, আমাকে আপনি বোলো না।
থ্যাঙ্ক ইউ ! আই-এস-আইয়ের গল্প তো তোমাদের কাছে শুনে শুনে (পড়ে পড়ে) লোককে বলি আবার সেগুলোই লিখি - গুরুতেই প্রাগৈতিহাসিক একটা টই ছিলো, যাতে তুমিও লিখতে, চিরন্তন-দাও লিখতো। সেটা একটা স্বর্ণখনি।
আমার দু-একটা এদিক-ওদিক লেখা আছে যাতে আই-এস-আইয়ের গল্প করেছি এটাসেটা লিখতে লিখতে। সেইগুলো পোস্টাইনি আগে, এই একটু পরেই একটা দিচ্ছি। :)
JKG-র গল্প লিখতেই হবে শিগগিরি, ভুলে যাওয়ার আগে। উনি চলে যাওয়ার পর আর-ভি-আরের একটা ছোট্ট অবিচুয়ারি পেয়েছিলাম, খুব সুন্দর লেখা। তাতে এক জায়গায় ছিলো যে জেকেজি ওঁর লিভিং রুমের একটা প্লাস্টিকের গাছে মাঝেমাঝেই জল দিতেন, প্লাস্টিক জেনেও, জাস্ট একটা চারাগাছ জল না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছে এইটা কেমন লাগতো।
আমি ওঁকে ২০০৯-১৪ দেখেছি, প্রায় রোজ-ই, কারণ স্যার রোজ মিট করতেন, এমন কি শনিবারেও। তখন মাঝে মাঝে বেজায় রাগ হতো, শনিবার সকালে কার ভাল্লাগে অফিস যেতে? তাও গিয়ে তো রিসার্চের কাজ খুব কিছু হতো না, এমনি গপ্পসপ্প হতো বিভিন্ন বিষয়ে - কোনোদিন আফ্রিকা, কোনোদিন মঙ্গলকাব্য এইসব। ২০১৩ র পর থেকে ওঁর প্রিয়তম টপিক ছিলো, কম্প্যাশন, কাইন্ডনেস -- প্রায়-ই বলতেন এইগুলো কি বোঝার দিকে আমরা একটুও এগোলাম?
এখন মাঝে মাঝেই সেইসব ভয়ানক মিস করি। অমন অহমিকাশূন্য বৈদগ্ধ্য, জ্ঞানের পরিধি আমি অন্ততঃ আর এক জন মানুষ-ও দেখিনি।
সেই তপন রায়চৌধুরীর লেখায় ছিলো, "দীপেন প্রজ্জ্বালিত দীপবৎ" - সেইরকম-ই মনে হয়। কত মানুষজনের জীবন কত উপায়ে একটু হলেও আলোকিত করে গেছেন, সেইটা দেখে শেখার মত।
এক শনিবার ওনার ঘরের বাইরে থেকে একজন শুনতে পেয়েছিল - উনি আস্তে আস্তে বলছেন "***, তুমি কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ছ"। (নামটা লেখা গেল না, বিখ্যাত প্রফেসর!)
:D :D
আমাদের ব্যাচেও হয়েছে। ননপ্যারামেট্রিক বেইয পড়ানো চলছে আর এদিকে মোহন গোপালাদেসিকান রীতিমতো নাক ডেকে ঘুম দিচ্ছে তাও সাামনের বেঞ্চে বসে। JKG পড়ানোো শেষ করে খুব মৃদু গলায় ডাকছেন, 'মোহন, মোহন, ক্লাস শেষ'।
ও তো তবু ক্লাসে। এ তো পি এইচ ডি স্টুডেন্ট, অফিসে একা।
অবশ্য আমিও ঐ কাণ্ড করেছিলাম তাপস সামন্তের ক্লাসে। উনি আমাকে আস্তে করে ডেকে বলেছিলেন, অভ্যুদয় কাল অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশুনো করেছ? কি করে আর বলি সারা রাত ভাটিয়েছি। তাও তো ভালো মৃদুলের মতো কাউকে ঘুম থেকে তুলে গান শোনাই নি যে তোমায় গান শোনাবো তাই তো আমায় জাগিয়ে রাখো।
হা হা হা হা ... এইবারে দুইয়ে দুইয়ে চার করতে পেরেছি, বিখ্যাত প্রফেসর (বি.প্র.) কে ছিলেন বুঝে গেছি :p (উনি অবশ্য দারুণ লোক। আমার খুব-ই পছন্দের।)
তাপস সামন্ত-র একবার পার্ডু এসে কয়েক মাস ছিলেন, সেই সবুজ বইটা লেখার সময়। তখন টেগোর সোসাইটির ছেলেমেয়েরা ওনাকে নাটকে একটা রোল করতে বলে, তাসা শুনেই নাকচ করে দিলেও পরে জেকেজি-র বলায় করতে রাজি হন। পরে তাসা আমাকে বলেছিলেন, "জেকেজি-র কথা ফেলতে পারিনি তাই করেই দিলাম, কিন্তু শুধু একটা পুরুষ্টু গোঁপ আছে বলেই আমাকে রাক্ষসের রোল দেওয়া হবে, এ কেমন অন্যায় আবদার?"
আগের কমেন্ট-টা মিস করে গেছি।
"A given B আর B given Aর তফাৎ করতে না পেরে" - এইটাই তো Prosecutor's fallacy, তাই না? প্রোবাবিলিটি অফ এভিডেন্স গিভেন ইনোসেন্স, আর ইনোসেন্স গিভেন এভিডেন্স গুলিয়ে ফেললেই বিপত্তি।
আমি এই বছর দুইতিন আগেই ক্লাসে বাচ্চাদের OJ Simpson trial এ এইটা কেমন ভুল হয়েছে বলছিলাম, আশ্চর্য হয়ে গেলাম দেখে যে এঁরা অনেকেই ওজে-র নাম জানে না। অবশ্য সেই বছর-ই একটা ডকু বেরোলো। তারপর দেখি সবাই জানে।
রামা-দার গল্পটা এখন লেজেন্ড-এর পর্যায়ে। ওঁর-ই এক যোগ্য জুনিয়র বছর কয়েক পরে অলোক গোস্বামী-কে প্রুফের মাঝপথে আটকে যেতে দেখে অম্লান বদনে বলেছিলো, 'ডোণ্ট টেক চাপ, টেক p = 1/2'. (টেক পি ইক্যুয়াল টু হাফ)।
আমার 'ফেভারিট' আইএসাই টিশার্ট স্লোগান ছিলো দুটোঃ ১) Why worry about lack of fit, when you can do Tailor's extension? (Taylor's লিখেছিলো কিনা মনে নেই), আর ২) ইনফিনিটি ডাজন্ট রিয়েলি এগজিস্ট, বিকজ অল বিগ থিংস কনভার্জ টু ... । 'ফেভারিট'-টা কোটের মধ্যে দিলাম কারণ এই দুটোর একটাও শ্রী-অঙ্গে চড়ানোর সুযোগ পাইনি। দাদাদের এবং মেস-পালক কালিদার গায়ে দেখেছি। আর এগুলোও টোকা কি না জানিনা।
আমাদের যেবার ভার পড়লো টিশার্টের স্লোগান লেখার, সেই গুগল করে টোকা হ'লো - 'ইন গড উই মে ট্রাস্ট ... ' সেই বিখ্যাত উক্তিটা। এই নিয়ে অল্প খেদ আছে নিজের কাছে।
বিখ্যাত উক্তিটা কী ও তৎসক্রান্ত খেদের কারণই বা কী?
“In God we Trust, all others bring data” - W. Edwards Deming, আর এটার একটা আদি আম্রিকি ভার্সন "In God we trust, all others pay cash"।
আমাদের টী-এর স্লোগান ছিলো ঐ ডেমিং-বাবুরটাই, খালি উই-এর পরে একটা অ্যারো দিয়ে "may" লেখা।
খেদের কারণ আর কিছু না, আমার স্লোগান-টা ভালো লাগেনি তেমন। একটু ভেবে অজ্জিনাল কিছু বের করলে আনন্দ পেতাম। :)
দীপাঞ্জনের জন্যেই লিখছি এখানে। আরো কেউ কেউ হয় তো জানেন না।
এই টইতে অক্ষয়ানন্দ মাইতির গল্প আছে, আমাদের থেকে দু ব্যাচের সিনিয়র। হোয়াট উই ইউসড টু সী ওয়াজ আ থ্রী ডাইমেনশেনাল প্রোজেকশন অফ মালটি ডাইমেনশেনাল গুরু। পাস্ট টেন্স কারণ অক্ষয়দা আর নেই। দিল্লিতে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল করতে করতেই সময় চলে গিয়েছিল। এক মাসের স্ট্রাগল। দিল্লিতে করোনার সেকেণ্ড ওয়েভ। মে থেকে জুন।
ভালো থেকো গুরু। খালি মনে পড়ছে আমার ঘরের প্রায় সামনেই ছিল টিটি টেবিল। অনেক রাতে গুরু খেলতে আসত। এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবে সেটা বিশ্বাস হয় না।
পুরোনো টই ফের পড়ে দেখলুম আগন্তুক নিধানকে চেনে, নিশ্চয়ই ঘোরতররূপে।
উনার সম্পর্কে প্রচুর কল্পকথা শুনে অবশেষে সাক্ষাত হল যখন বিয়ে করতে দেশে যাব - তার আগে আগেই। নিধান সারাটি রাত জাগিয়ে রেখে আমায় বোঝাল কেন আমার ফ্লাইট পাল্টে থাইল্যান্ড দিয়ে যাওয়া উচিত। খুবই বিস্তারিতভাবে সে বুঝিয়েছিল থাইল্যান্ডের বিশেষ সংস্কৃতির পরিচয় নেবার এই শেষ সুযোগ। একাডেমিক ডিসকাসানে ক্ষান্তি না দিয়ে পেন-্পেপার সহযোগে ট্রাভল প্ল্যান পর্যন্ত বানিয়ে ফেলেছিল।
কালচক্রে নিধানের খবরাখবর আর জিজ্ঞেস করা হয় না। এমনকি সে নিজে শেষ পর্যন্ত বিয়ে করে উঠতে পেরেছে কি না, তাও জানা হয় নি!