এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • মুখোশের আড়ালে অগণিত পরিমল

    sudipto Dasgupta
    অন্যান্য | ২৪ জুলাই ২০১১ | ১৯২৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sudipto Dasguptar lekha | 72.83.***.*** | ২৫ জুলাই ২০১১ ০৩:১০483782
  • দেশের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠে সংঘটিত একটা মেয়ের উপর অকথ্য যৌন নির্যাতন কে ধামাচাপা দেয়ার জন্য চলছে রাজনীতি ও মিডিয়ার পাশা খেলা। এসব পাশ কাটিয়ে কোটি কোটি টাকার ভর্তি বাণিজ্য হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে একদলের ঘুম হারাম আরেকদল বাণিজ্য লক্ষীকে করায়ত্ত করতে মরিয়া ...। এর মধ্যেও উচচ কন্ঠে প্রতিবাদ, ক্ষোভ , বিক্ষোভের ভার্চুয়াল বিপ্লব চলছে ।অপ্রায় সবার কন্ঠে এক দাবি পরিমলের ফাঁসি চাই। লজ্জায় ম্রিয়মান শিক্ষক সমাজ । কন্ঠে দ্রোহের স্বর। তবুও সুশীল বুদ্ধিজিগোলোরা মিউ মিউ কণ্ঠে প্রতিবাদ জানান, কারণ তারা মিডিয়াদস্যুদের দাক্ষিন্যে জীবিকা নির্বাহ করেন।

    পরিমল !পরিমল! পরিমল ! পশুটাকে আঁচলের তলায় ঠাই দিতে চেয়েছিলেন হোসনে আরা বেগম। শেষ চেষ্টা করতে গিয়ে আউড়েছেন মিউচুয়াল সেক্সের খিস্তি। পারেন নি। প্রতিবাদ আর বিক্ষোভের ঠেলায় পুলিশ টেনে বের করে আনতে গিয়ে হোসনে আরার থলের বেড়ালটাও বেরিয়ে আসে । ভিকারুন নিসা যখন ক্ষোভের আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাড়খাড় হচ্ছিল তখন বামজিগোলো মেনন সাহেব বিদেশে বসে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে ভাবছিলেন ঠিক কিভাবে থলের বেড়ালটাকে আবার থলের ভেতর ঢোকানো যায়। পারেন নি । ধর্ষককে আশ্রয় দিতে গিয়ে বাম আলখাল্লার ভেতর দুই নাম্বারীর রঙ্গিন বেলুন ফটাস করে সশব্দে বিস্ফোরিত হয়।

    পরিমল! পরিমল পরিমল ! পাশবিকতার সর্বোচচ সীমা অতিক্রান্তকারী, প্রধানমন্ত্রীর জন্মস্থান পুণ্যভুমি গোপালগঞ্জের বাসিন্দা,কয়েকজন রাজনীতিবিদের পেয়ারের লোক, লম্পট শিক্ষাগুরুদের সূযোগ্য উত্তরাধিকারী , অখ্যাত থেকে কুখ্যাত বনে যাওয়া কোন ইতরপ্রজাতির প্রাণী । একজন পরিমলের সর্বোচচ শাস্তির জন্য আমরা উচচকন্ঠ। কিন্তু ঘৃণ্য পুরুষতান্ত্রিকতার ঔরসে প্রতিক্রিয়াশীল ভোগবাদী সমাজের গর্ভে যে হাজার হাজার পরিমলের জন্ম হচ্ছে সেটা ভুলে যাওয়া কতটুকু যৌক্তিক? এক পরিমল বহুরূপে হাজার পুরুষের মধ্যে বিরাজিত। কোথায় নেই পরিমল? রে্‌র্‌পারেট অফিসের চৌহদ্দির মধ্যে, শোবিজ জগতের রঙ্গিন ফানুসের ভেতর, সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারীদের জলপাই রঙের তাবুর ভেতর, প্রেমিকের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ির অন্তরালে,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মননে , মাদ্রাসার বয়োবৃদ্ধ শিক্ষকের টুপি আর দাড়ির ভেতর, বাসে ট্রেনের ভিড়ে ,পুরাণে -বাইবেলে ,দেবতা- মুনি ঋষিদের মাঝে, ধর্মগুরুদের অতিমানবীয় চরিত্রের আড়ালে, সর্বত্র সর্বত্র পরিমলরা বিরাজিত। এদের অরুণ কিরণ নির্ঝরের মত প্রবাহিত হয় সমাজের হাজারো পুরুষের মজ্জায় মজ্জায়, মস্তিষ্কের কোষে কোষে। কামের পঙ্কিলে এরা রাজীব ফোটায়। এ সব কুকুরের তৃষা তীক্‌ষ্‌ঞ লোল জিহবা চেটে নেয় অসংখ্য নারীর শরীর। আন্তর্জাল তথা ভার্চুয়াল জগতের অসংখ্য পর্নো সাইট বিশ্বের চৌদিক থেকে কামরস এনে ঢেলে দিচ্ছে এদের হা করা মুখে।

    পরিমল ! পরিমল! পরিমল! বিশ্বাসী প্রেমিক, অবিরত মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি মুখ দিয়ে খইয়ের মত ফুটতে থাকে ।অপ্রেমিকাকে অন্তহীন সুখের স্বপ্নে বিভোর করে নিয়ে যায় মেসে , হোটেলে।আত:পর ইনিয়ে বিনিয়ে প্রেমিকাকে রাজি করিয়ে অভিষ্ট লক্ষ্য সাধন। এরপরও বিকৃত মস্তিষ্ক পরিমলের কামের আগুন নিবার্পিত হয় না , পরিমল ভিডিও করে রাখে যদি ভবিষ্যতে কাজ দেয়। ঘটনাপ্রবাহে মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে হয় কিন্তু পরিমল তার নির্মম পুরুষতান্ত্রিক জিঘাংসা চরিতার্থ করার জন্য অভেদ্য তীর নিক্ষেপ করে। মেয়েটীর অসংখ্য নগ্ন ছবি সে ছেড়ে দেয় বাজারে ।অএসব ভিডিও/ছবি ফেইসবুক, ইউটিঊবের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে অসংখ্য যুবকের কম্পিঊটারে। হাজারো কামুক পুরুষের স্বপ্নদোষ আর কামাগ্নির আগুনে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয় মেয়েটির স্বপ্ন ভালোবাসা, প্রেম।অমেয়েটি লাভ করে বেশ্যা উপাধি ।অপরিমলদের সমাজ মেয়েটির জন্য চুড়ান্ত পরিণতিও ঠিক করে রেখেছিল, আত্মহত্যা ।অপরিমলের কিছু যায় আসে না, কারণ ছেলেরা তো একটু এরকমই । ভুল করেছে হয়তো । এবার সমাজ পরিমলকে প্রেমিকের পদ থেকে নিষ্কৃতি দেয়, দায়িত্ববান স্বামীর মর্যাদা দান করে। মেয়েটির কেমন আছে জানার ইচ্ছা নেই, তবে এতটুকু জানি বিয়ের তিন মাসের মাথায় তালাকপ্রাপ্ত মেয়েটি আত্মহত্যা করে নি , বাঁচার চেষ্টা করছে । কিন্তু শত অন্যায়ের মাঝে মৌনী , নিবির্কার, নপুংসক আমরা হ্যাঁ আমরাই হঠাৎ আড়মোড়া ভেঙ্গে পুরুষ হয়ে ঊঠেছি ।অফেইসবুকে , ব্লগে যেখানে পারি মেয়েটিকে বেশ্যা হিসেবে প্রমাণ করার এক মহান পুরুষতান্ত্রিক কর্মযজ্ঞে নিজেদের নিয়োজিত করেছি। কারন সে মেয়ে , সে একটা বেশ্যা , বিয়ের আগে বয়ফ্রেণ্ডকে দেহ দিয়েছে ,তার সুস্থ জীবন যাপন করার কোন অধিকার নেই। এবং আমরা হয়ে ঊঠি একেকটা পরিমল।

    পরিমল! পরিমল! পরিমল! শোবিজের স্বনামধন্য পরিচালক । কোন একদিন নবাগতা জনৈক মডেল কন্যা রূপালী জগতের বাসিন্দা হওয়ার স্বপ্ন ও মিডিয়ার পাদপ্রদীপের আলোয় আসার লোভে ধর্না দেয় পরিমলদের অফিসে। মওকা পেয়েই পরিমল স্কীন টেস্টের নামে মেয়েটাকে তার রুমে পাঠায়।অপরিমলের রুমে কপাট পরে। অনভ্যস্ত মেয়েটি হতবিহবল হয়ে কান্না জুড়ে দেয়। পরিমলরা বোঝায় এ লাইনে আসতে হলে এ সব একটু আধটূ করতে হয়।অদেহ উৎসর্গ করতে হয় পরিমলের উদ্দেশ্যে। এই ভাবে মেয়েটি অভ্যস্ত হয়ে ওঠে । আজ পরিমল তো কাল সুবিমল।অচতুর মেয়েটি বুঝে ফেলে সাফল্যের অলিম্পাস চূড়ায় তরতর করে ঊঠতে হলে জিউস আর এপোলোদের শয্যাসঙ্গিনী হওয়াই এক ও অভিন্ন পন্থা। এ সব জেনে বুঝে আমরা কিন্তু চুপ করে থাকি না । বরং মিডিয়া , ভার্চুয়াল জগতের মাধ্যমে প্রচার করি মিউচুয়াল সেক্সের রসাত্মক চটিগল্প।

    পরিমল! পরিমল! পরিমল! সেনাবাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তা। যিনি জনৈক অধস্তন ল্যাফটেনেন্ট কর্ণেলের পদোন্নতি আটকে রেখেছেন । কিন্তু অধস্তন কর্ণেল ঠিকই খুজে বের করে কোথায় লুকিয়ে আছে পদোন্নতির চাবি। ল্যাফটেনেন্ট কর্ণেল নিজের বাসায় ,বি. জেনারেল পরিমলের সম্মানে রাজভোজের আয়োজন করে, সমাপনান্তে স্যারের জন্য থাকে বিশেষ উপকৌটন। কর্ণেল সসম্মানে পরিমলকে নিজের বেডরুমে ঢুকিয়ে দিয়ে রাস্তায় নৈশভ্রমণ করতে বেরিয়ে যায়। স্বামীর পদোন্নতির জন্য স্ত্রী তার শরীর লেহন করতে দেয় বিগ্রেডিয়ার জেনারেল পরিমলকে। জলপাই রঙের তাবুর ভেতর মেয়েটির কান্না প্রতিধনিত হয়, গুমরে মরে । সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ, সংরক্ষিত ক্যাণ্টনমেণ্টের কাঁটাতারের প্রাচীর আর রাত্রির নি:স্তব্ধতা ভেদ করে ওর কান্না আমাদের কানে এসে পৌঁছায় না।

    পরিমল পরিমল !পরিমল! বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক । ক্লাসে কোন সুন্দরী ছাত্রীর প্রতি দৃষ্টি আটকে যায় পরিমলের । স্পেশাল নোটের কথা বলে রুমে যেতে বলে। সরল বিশ্বাসে মেয়েটি যায় দেবতারূপী স্যারের রুমে। পরিমল বলে দরজাটা বন্ধ করে দাও । অত:পর ? দরজা বন্ধ হয় । সে ঘরের মধ্যে একটা মেয়ে দেখে একজন শিক্ষকের বিশ্বরূপ। দেবতার লাম্পট্য থেকে কুকুরের লালসা কি নেই পরিমলের মাঝে ? লজ্জায় ঘৃণায় অপমানে ভয়ে মেয়েটি কাউকে কিছু বলে না কারণ মেয়েটি জানে পরিমলের সমাজ মেয়েটিকে নিয়ে আদিরসের মুখরোচক গল্প বানাবে কিংবা পরিমল মেয়েটিকে পরীক্ষায় ফেইল করাবে ।অমেয়েটি আজীবন বয়ে বেড়ায় দু:সহ স্মৃতি ।অএভাবে ধামাচাপা পড়ে আরো এক পরিমলের মহান কীর্তি , যে কি না সর্বোচচ বিদ্যাপীঠের জ্ঞানসাধক ,জাতির বিবেক। কেউ জানল না , জানবেও না।

    পরিমল! পরিমল!পরিমল ! একটি কোম্পানির সি ই ও । তার পার্সোনাল এসিস্টেন্ট চাই । মেয়ে এবং তা অবশ্যই সুন্দরী না হলে চলে না, প্রেস্টিজের ব্যাপার।অনানা পরিক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে কোন এক পিণোন্নত পয়োধরা, সুলোচনাকে নিয়োগ দেন। শুধু পরিমল নয় তার অন্যান্য ব্যবসায়িক পার্টনারদের চোখ আটকে যায় ঐ মেয়েটির দিকে। বাহ হেব্বি মাল তো ! মনস্তাতি্‌ব্‌বক ধর্ষণ আর অবলোকন কামের আগুনে দগ্‌ধ হতে থাকে মেয়েটির শরীর , রূপ। এরপর কোন এক দিন মেয়েটির মাংসের গন্ধে উন্মাতাল পরিমল ঝাঁপিয়ে পড়ে, খাবলে খায় শরীর ।অমেয়েটি চাকরি ছেড়ে দেয় । আমরা দেখি পত্রিকায় নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসে ” অমুক কোম্পানির সি ই ও এর জন্য সুন্দরী শিক্ষিত স্মার্ট তরুণী পি এস প্রয়োজন’

    পরিমল! পরিমল !পরিমল! ছাত্রজীবনে কোন ক্যাম্পাসের দুর্ধর্ষ ক্যাডার কিংবা কোন নেতার পোষা গুন্ডা ।অদল ক্ষমতায় যাওয়ার সাথে সাথে নেতা মিনিস্টারের অপার কৃপায় কোন এক থানার ওসি পদ অলঙ্কৃত করে।

    গভীর রাত, সুমি একা ঘর থেকে বেরিয়ে যায় ,কিন্তু যাবে কোথায় ? রাস্তার নেড়ি কুকুর গুলোর অবিরত ঘেউ ঘেউ চিতকারে ভীত সুমি নিরাপদ আশ্রয় খোজে। সুমি যায় পরিমলের থানায়। চেয়ারে সমাসীন ভূড়িওয়ালা পরিমল মনযোগ দিয়ে সুমির বিপদের কথা শোনে , সুমিকে এক রাতের জন্য থানার সেফ কাস্টডিতে থাকার অনুমতি দেয়।অসকাল হলে সুমির আর কোন ভয় নেই। কিন্তু সেই সকাল সুমির জীবনে আর আসে নি। সুমি পুলিশের পাহারায় নিরাপদে লাশ হয়ে বের হয় ।অআমরা জানতে চাই নি সুমি কেন মারা গেল, কিভাবে মারা গেল। শুধু জেনেছিলাম ওসি পরিমল চাকরি বাঁচাতে ডিজি , স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর পা চাটছে । কমিটি তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করে হৃদরোগে মারা গেছে সুমি। না না না আমরা বেশি কিছু জানতে চাই নি ।অআমরা শুধু জানতে চেয়েছিলাম ঐ রাতে সেফ কাস্টডির বিছানাটা রক্তাক্ত হল কেন?

    পরিমল !পরিমল! পরিমল! এবার একটু অন্য রূপে। ধর্মে সে মুসলমান নাম তার মাওলানা ইদ্রিস আলী । কাঁচা পাকা শ্মশ্রুমন্ডিত ষাটোর্ধ ইদ্রিস মাদ্রাসার শিক্ষক। আট বছরের আমেনা প্রত্যহ সকাল বেলা অন্য সবার সাথে মাওলানার কাছে যায় কোরান শিখতে। সেই দিনেও আমেনা মাওলানা ইদ্রিসের কাছে পড়তে যায়। মাওলানা সবাইকে ছুটি দিয়ে দেয়, কিন্তু আমেনা ???? এর পরে কি কিছু জানতে চাওয়ার থাকে?। কিছুক্ষণ পর আমেনা প্রচন্ড ব্যাথায় কাঁদতে কাঁদতে খুড়িয়ে খুড়িয়ে বাড়িতে এসে মাকে বলে “মা আমার এত রক্ত ঝরছে কেন? হুজুর এত ব্যথা দিলেন কেন”? আমি কি আয়াত মুখস্ত করতে পারি নাই ?এই প্রশ্নের উত্তর আমেনার মার কাছে জানা ছিল কিনা আমার জানা নেই।

    পরিমল পরিমল পরিমল বাইশ কিংবা তেইশ বছর বয়সী কোন যুবক , বাপের টাকায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। স্মার্ট , ডিজুস ভাষায় কথা বলে, শহরের নামকরা ডিজে , মোবাইল ভর্তি উড়াধুড়া গান, পোশাক আশাকে মনে হয় দেশে বস্ত্র সংকট সমাসন্ন ।অপিতৃপ্রদত্ত নাম পরিবর্তন করে নাম রেখেছে “প্রমো দি আল্টিমেট রকার”। বিশ্ববিদ্যলয় নামক ধানমন্ডি কিংবা মিপুরের কোন দোতলা ভবনে গিয়ে বন্ধুর সাথে খিস্তি মাস্তিতে ব্যস্ত প্রমো মনস্তত্বের ফিতা দিয়ে মাপে সুন্দরী মেয়েদের স্তন ও নিতম্ব।অলালা ঝরে পড়ে প্রমোর মুখ দিয়ে, আবার লালা চেটে খায়। রাতে ফেইসবুকে মশগুল প্রমো একের পর এক লাইক পেইজ খুলতে থাকে।“মাইয়া তোমার লাইক বাটনে টিপ দিছি অন্য কোন জায়গায়.........”“বেপর্দা মায়ালোক দেখলে খইসা পড়ে...”।অ।অইত্যাদি ইত্যাদি। শতাধিক মেয়েকে পটানোর প্রাণপন চেষ্টায় খোশগল্পে মশগুল প্রমো সারারাত পর্নো সাইট গুলোতে ঢু মারে। ভোরবেলা স্বপ্নে বিভোর প্রমো দেখে সে খাবলে খাচ্ছে সেই মোনা টিনা জিনাদের শরীর যাদের দেখলে তার মাথা নষ্ট হয়ে যায় । আমরা জানি প্রমো মানে পরিমল আমাদের কারো বন্ধু, হয়তো আমার সহোদর । তবুও আমরা নিশ্চুপ কারণ এটা বয়সের দোষ, এ বয়সে এটাই স্বাভাবিক!

    পরিমল! পরিমল ! পরিমল! ঘরে বাইরে , রাস্তা ঘাটে , বাসে ট্রেনে, মেলায় পার্বণে সর্বত্র হাত উদ্যত করে আছে, নারীর স্পর্শকাতর স্থানে কালো থাবা বসানোর জন্য। ]

    হা !হতোস্মি ।“ঠগ বাছতে গা উজোড়” কে নয় পরিমল ?হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় পরিমল কর্তব্যরত নার্সকে ধর্ষণ করে, জবাই করে, ছুরি দিয়ে যৌনাংগ ক্ষত বিক্ষত করে গলায় এসিড ঢেলে দেয়, মধ্যপ্রাচ্য ফেরত বাবা পরিমল তার মেয়েকে ধর্ষণ করে, শ্বশুর পরিমল ধর্ষণ করে পুত্রবধূকে। অফিসের পরিমল তার নারী সহকর্‌র্‌মীকে ধর্ষণ করে । ধর্ষণ ধর্ষণ ধর্ষণ !পত্রিকার পাতা প্রতিদিন ভরে ওঠে এসব খবরে । আর এক শ্রেণী পরিমল ধর্ষণের অনুপুঙ্খ বর্ণনা পড়ে বিকৃত কামসুখ লাভ করে।

    এত পরিমল এত পরিমল আমরা জন্ম দিয়েছি ? যারা আমাদের চারপাশে ফণা উচিয়ে ফোসফাস আওয়াজ তুলছে ,যাদের নি:শ্বাসের বিষে নীল হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার নারীর জীবন। আজ একজন পরিমলের টুটি চেপে ধরেই কি আমরা ক্ষান্ত হয়ে যাব? ভিকারুননিসার সমস্যার সমাধান হলেই কি আমরা আবার মৌন , মূক , বধির হওয়ার অবিরত মধ্যবিত্তীয় ভন্ডামি ও সুবিধাবাদের আলাখাল্লার তলায় লুকাবো? তাহলে এত পরিমলে রক্তবীজ ধ্বংস করবে কে? যে সমাজের ঔরসে এত পরিমলের জন্ম সে সমাজকে বীর্যহীন করবে কারা? কারা করবে পুরুষতন্ত্রের লিংগ ছেদন? কারা গভীর অন্ধকারে ক্ষণিক আলোয় বিভ্রান্ত না হয়ে, না থেমে অক্লান্তভাবে ছুটে যাবে সেই সমাজের পথে ?যেখানে পরিমলদের জন্ম হয় না । কোথায়? সে বা তারা । যাদের হাতে আমি গুজে দিতে চাই নিষিদ্ধ ইস্তেহার, উদাত্ত কন্ঠে বলতে চাই “চালাও তোমার হাতুড়ি ,জরাজীর্ণ ইমারতের আতুঁড়ঘর ধ্বসিয়ে দাও, যেখানে পরিমলের জন্ম হয় “

    (গুরু-চন্ডালীর ওপার বাংলার পাঠকের জ্ঞাতার্থে বলছি, বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশ কিছুদিন আগে পরিমল জয়ধর নামে একজন কুলাঙ্গার শিক্ষক নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীর উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং তা ভিডিও করে ।অভিডিওটি বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মেয়েটির অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে পরিমল মেয়েটিকে আরো কয়েকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর, শুরুতে বিদ্যালয়ের দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষিকা এবং গভর্ণিং বডি, মিডিয়ার সহায়তায় এটা চাপা দেওয়া এবং পরিমলকে বাঁচানোর হীন প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু ছাত্রবিক্ষোভ ও সচেতন জনগণের অব্যাহত চাপে প্রধান শিক্ষিকা পদত্যাগ করেন , এবং পরিমল গ্রেফতার হয়। পরিমলের পাশবিকতা নিয়ে বাংলাদেশে যে সচেতনতা ও গণবিক্ষোভের জোয়ার বইছে তা লক্ষ্য করে এবং সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে লুকিয়ে থাকা অসংখ্য পরিমলের মুখোশ উন্মোচনের প্রসে আমার কিছু কথা...............।)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন