বিহার নির্বাচনের একদম শেষ পর্বে এসে লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, বস্তুত তৃণমূলের সঙ্গে বাম জোটের খোলাখুলি প্রস্তাব দিয়ে ফেললেন।
বামরা বিহারে অসাধারণ ফলাফল করে ফেলেছে এমন নয়, তবে নিঃসন্দেহে কংগ্রেসের চেয়ে ভালো। সবচেয়ে এগিয়ে আছে সিপিআইএমএল লিবারেশন। এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের সাইটের খবর অনুযায়ী তারা ৯ টি আসনে জিতেছে এবং আরও ৩ টিতে এগিয়ে আছে। এই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে দীপঙ্কর স্পষ্ট করেই বলে দিলেন, যে, সর্বভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষিতে এবার পশ্চিমবঙ্গের বামদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাদের অগ্রাধিকার কী? তৃণমূলের বিপক্ষে গিয়ে বিজেপির সুবিধে করা? নাকি বিজেপির বিরুদ্ধে গিয়ে তৃণমূলের হাত ধরা? শত্রুর বিচারে কংগ্রেস এবং তৃণমূল, দীপঙ্করের বিচারে বিজেপির কাছাকাছিও আসেনা, এই হল দীপঙ্করের মোদ্দা বক্তব্য। এবং সে কারণেই এদের সঙ্গে বামদের জোট করা উচিত।
পশ্চিমবঙ্গে বিগত লোকসভা নির্বাচনে বামদের বিপর্যয় হয়েছে। বাম ঘরানার ভোটের একটি বৃহদংশ বিজেপিতে চলে গেছে, ভোটের হিসেবে। সে নিয়ে প্রচুর সমালোচনাও হয়েছে। কিন্তু বাম নেতৃত্ব এবং কর্মীবৃন্দ সজোরে এর জবাবে বলে এসেছেন, যে, ওভাবে বাম-ভোট বলে কিছু হয়না। ভোট কারো সম্পত্তি নয়। উল্টোদিকে, যাঁরা সমালোচনা করেছেন, তাঁদের বক্তব্য হল, ভোটের রাজনীতিতে "বিশ্বস্ত ভোট" বা "ভোট ব্যাঙ্ক" বলে একটি বস্তু অবশ্যই হয়। বামদের সেই বিশ্বস্ত ভোটই গেছে বিজেপির দিকে। তার কারণ, বাম পার্টির নেতারা প্রচারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যতটা সরব, তার সামান্য ভগ্নাংশও বিজেপির বিরুদ্ধে নন। তাঁদের মূল আক্রমণ সর্বদা তৃণমূলের বিরুদ্ধেই। এই লাইন মূলত আত্মঘাতী। এই লাইন কর্মী এবং সমর্থকদের "শত্রুর শত্রু আমার মিত্র" লাইনে ভাবতে উৎসাহ জুগিয়েছে। একদা সমর্থকরা বিজেপিকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অধিক কার্যকর ভেবে ভোট দিয়েছেন। এবং তার ফলেই এই বিপর্যয়।
এর জবাবে সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা, অন্তত আধা প্রকাশ্যে যেটা বলছেন, সেটাও এখানে প্রণিধানযোগ্য। পশ্চিমবঙ্গের ভোটের হিসেব বেশ জটিল। সিপিআইএম এর যে সাধারণ ভিত্তি, তার মূল সুরই হল তৃণমূল বিরোধিতা। তৃণমূলের প্রতি নরম এরকম কোনো সিপিআইএম সমর্থক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ঠিক এই পরিস্থিতিতে যদি সমর্থকদের চিন্তার উল্টোদিকে গিয়ে পার্টির নেতৃত্ব তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলান, তাহলে গণভিত্তি যেটুকু আছে, সেটুকুও পার্টিকে ছেড়ে চলে যাবে। গণভিত্তি খুঁজে নেবে তৃণমূলের বিরোধী শক্তিকে, ভোট দেবে তাকেই। অর্থাৎ শক্তিশালী হবে বিজেপিই। বিজেপির পাল থেকে হাওয়া কাড়তেই তাই বামদের তৃণমূল বিরোধিতা চালিয়ে যেতে হবে।
সমস্যা হল, এতদিন এই যুক্তিতে চলেও কিন্তু সিপিআইএম তার গণভিত্তি অটুট তো রাখতে পারেইনি। বরং তাতে বিপুল ধ্বস নেমেছে। তবুও এই লাইনটিই অনুসরণ করে যাওয়া হচ্ছে, এবং এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে তার খুব বেশি বিরোধিতা আসেনি। সিপিআইম এর যেটুকু গণভিত্তি এখনও আছে, তারা বিজেপির সর্বাত্মক বিরোধিতা করলে বাম ছেড়ে ডান দিকে চলে যাঅবে, এ আশঙ্কার আদৌ কি কোনো ভিত্তি আছে? নাকি আশু বিপদকে মাথায় রেখে সর্বাত্মক বিজেপি বিরোধিতা করলেই বামদের যেটুকু ভিত্তি আছে তা আরও শক্তপোক্ত হবে? এ নিয়ে অবশ্যই বিতর্ক হওয়া দরকার। বিহার নির্বাচনের পর বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আনলেন দীপঙ্কর। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই জানা যাবে বিহারের অন্তিম ফলাফল। তারপর সমস্ত তাসই এসে যাবে টেবিলে। সেসব টেবিলের নিচে লুকিয়ে না ফেলে সমস্ত সম্ভাবনা, সমস্ত বিচার এবং সামগ্রিক বিতর্ক অবশ্যই প্রয়োজন।
সুদীপ রতন সুরজিত এরা সব পুরনো কং। কং ডুবুডুবু হওয়ার পর অল্প ক'দিন এরা তৃণমূলে যান, কিন্তু মমতা নাকি তাদের যথোচিত পাত্তা দেননি, দেখা টেখা করেননি। তাই এরা রাগ করে হেথা নয় হেথা নয় অল্প কিছুদিন এরকম উদভ্রান্ত অবস্থার পর বিজেপি হয়ে যান। জমি তৈরীই ছিল, ঐ যা বললাম, সংঘ গত কয়েক দশক ধরে খুবই অ্যাক্টিভ।
তো এতে ঠিক তৃণমূলের কারনে বিজেপির উত্থান কী করে হলো সেটা বোঝা দুষ্কর। অবশ্য ত্রিপুরা নিয়ে কেই বা খোঁজখবর রাখে, যাহোক একটা কিছু বলে দিলেই বা কী।
তবে ত্রিপুরায় লড়াইটা সিপিএম বনাম বিজেপি, তৃতীয় পক্ষ তেমন কিছু নেই, তাই ভরসা আছে।
ত্রিপুরার খবর যারা রাখার তারা রাখে। অন্ততঃ মাণিকবাবু রাখেন বলেই মনে হয়। তাঁর লেখাটাই নাহয় খুঁজে পড়ে নেবেন।
কং ভোট তো গেছেই। সুদীপ সুরজিত এদের নিজেদের বড় সমর্থক বেস আছে, যে দলে যাবেন সেই দলে ভোট দেবেন। সুদীপ এত বেগড়বাঁই করার পরেও হজম করতে হচ্ছে যে কারনে। মন্ত্রীত্ব গেছে যদিও। হতেই পারে আবার কং বা তৃণমূলে ফিরে গেল। ওদিকে বড়সড় বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী বিপ্লবকে দুবেলা জ্বালাতন করছে। সেসব তো ঠিকই আছে।
কিন্তু এতসবের পরেও এতে তৃণমূলের ভূমিকা আমার কাছে স্পষ্ট হচ্ছে না আরকি। বিজেপির রমরমা না বাড়লে এরা আগের কোন দলেই থেকে যেত, বা ঐসব দলের নবজাগরন হলে আবার ফিরবে। তাতে করে কলেজ টিলার মাঠে আরেসেসের প্রভাতী লাঠিখেলা কাঠিনাচ ওগুলো উবে যায় না।
যদিও এটা জটিল ব্যাপার, ওসব কর্মশালা স্কুল শিবির তো বেআইঅনি কিছু না, সরকারী ভাবে আটকানোর উপায় ছিল না।
ত্রিপুরায় আরেকটা ব্যাপার হয়, বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে আসেন, তাঁরা ঐ দেশে সংখ্যালঘু হয়ে থেকে এই দেশে টেবিলের উল্টোদিকে বসতে চান, এবং তাতে করে চাড্ডিপনার প্রবল স্রোত। আগে সাম্য ভ্রাতৃত্ব ঐসব ফ্যাশনেবল ছিল, এখন উল্টোটা হয়েছে।
তবে ত্রিপুরার খবর টবর পড়ে মনে হয় না বিজেপি খুব নিশ্চিন্ত সুখে আছে।
২০২১ সালে কখন পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হবে? মে-জুন মাস নাগাদ?
হ্যাঁ, যা বলছিলাম। সিপিএমকে নিয়ে কেন লিখছি। দেড় দশকের মধ্যে একটা দলের ভোট শতাংশ ৫০% থেকে কমে ৭% হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে। ভোট ব্যাংকটা প্রায় পুরোটাই বিজেপিতে গেছে। আসামে কার্যত সাইনবোর্ড। ত্রিপুরায় খুবই খারাপ অবস্থা। এ জিনিস পাহাড়প্রতিম অপদার্থতা ছাড়া সম্ভব না।
ওদিকে তৃণমূল। প্রচুর দুর্নীতি স্বৈরাচার সত্ত্বেও ভোট ব্যাংকটা মোটামুটি ধরে রেখেছে। ত্রিপুরায় অবশ্য কিছুই পারেনি। কংগ্রেস থেকে তৃণমূল পুরো ভোট ব্যাংকটাই বিজেপি খেয়ে নিয়েছে। মোটের উপর এখনও পর্যন্ত ৫০% নম্বর।
কংগ্রেস চিরকালই ফেলু ছাত্র। কিন্তু তারা আপাতত দেড়খানা জেলায় কিছু ভোটব্যাংক সংহত করতে সক্ষম হয়েছে। তার জোরেই সিপিএমের উপরে ডান্ডাবাজি করছে। দেড় দশকের পারফরম্যান্স দেখলে অবশ্য এখনও ফেল, কিন্তু ইদানিং অবস্থার কিছু উন্নতি দেখা যাচ্ছে।
বিজেপি। উন্নতিই উন্নতি। পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে অর্ধেকের কাছাকাছি লোকসভা আসন। পরের নির্বাচনে অন্তত প্রধান বিরোধী দল হিসেবে ভাবা হচ্ছে। ত্রিপুরা দখলে। আসাম দখলে। পশ্চিমবঙ্গ দখলে নয়, কিন্তু কাছাকাছি। ১০০ য় অন্তত ৯০।
এগুলো পূর্বাঞ্চলের সম্পূর্ণ বা আংশিক বঙ্গভাষী এলাকার ফল। বিজেপি ফার্সট বয়। তৃণমূল টেনেটুনে পাশ। সিপিএম প্রায় গোল্লা পেয়ে ফেল। এটা হল কংক্রিট ব্যাপার। সমর্থন-বিরোধিতার ব্যাপার নয়। সেই জন্যই ফেল করা ছাত্রকে নিয়ে বেশি লেখা হচ্ছে আপাতত। কোনো কর্পোরেট কোম্পানি হলে এই নেতৃত্বকে একদম ছাঁটাই করে ফেলত। সংগঠিত কোনো দল হলেও তাই। এর চেয়ে অনেক কম খারাপ আউটপুট দেওয়াতে বিজেপি নির্মমভাবে আদবানিকে ছেঁটে মোদিকে নিয়ে এসেছিল। আরজেডি, তেমন সংগঠিত দল নয়, কিন্তু তাতেও তেজস্বীকে মুখ করেছে, লাইনও বদলেছে। কংগ্রেস মুখ বদলায়নি, কিন্তু লাইন বদলেছে। কেবল সিপিএমের দেখি কোনো হেলদোল নেই। প্রশ্ন করলে অদ্ভুত সব রিঅ্যাকশান দেখি। এখানে যেমন দেখলাম। সিপিএম সিপিএমএর ভোট পায়না কেন জিগালে যদি শুনতে হয়, "ভোট চাইতে এসেছেন, আগে আমাদের ভালো বলুন" সে কথাটার কোনো মানে হয়? সিপিএমের হয়ে ভোট সিপিএম চাইবে, খামোখা আমি চাইতে যাব কেন?
আরেকটা কথাও শুনি। সিপিএম ভোট পাক কেন চাইছি, না, যাতে ভোট ভাগ হয়ে তৃণমূল জেতে। কী আশ্চর্য। তাহলে কি ভোট চাইছেন না? জিততে বা অন্তত প্রধান বিরোধীদল হতেও চাইছেননা? যাতে তৃণমূল হারে শুধু সেইটাই চাইছেন? চাইলে ঠিক আছে। পরিষ্কার বলে দিন। আমি বিরোধিতা করব, কিন্তু কীসের বিরোধিতা করছি, সেটা অন্তত পরিষ্কার থাকবে।
ঈশানদা, আপনারা বলছেন যে বামেদের ভোট বিজেপিতে গেছে কারণ বামেরা সেটা চেয়েছে। সেটা একদম ভুল বক্তব্য। কারণ একসময় মাইনরিটি ভোটও বামেদেরই ছিল, সেটা এখন তিনোদের দখলে। কই সেই নিয়ে তো লেখেন না যে মাইনরিটিদেরও বামেরা বলে দিয়েছে তিনোদের ভোট দিতে। কারণ আপনারা জানেন যে সেটা সম্ভব না। বিজেপির ক্ষেত্রেও সেইটাই হয়েছে।
আপনার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে আপনি চাইছেন বামেদের ভোট বারুক, কিন্তু তিনোরা তার সুফল ভোগ করুক। আপনি যদি সত্যিই তিনোদের ক্ষমতায় বসানোর বদলে রাজ্যে ধর্ম নিরপেক্ষতা চাইতেন, তাহলে বলতেন তিনোদের ভোট কেটেও যেন বামেরা যেতে। তাহলে এই প্রস্তাব দিতেন না যে বামেদের উচিত তিনোদের জেতাতে সমর্থন করা। উল্টে বলতেন যে তিনোদের উচিত বামেদের জেতার রাস্তা সুগম করা।
উত্তর দেবেন।
এই ঝগড়াটা না 'আম্রিগায় রেসালু লোকেদের জন্যে য়্যাতো ঝামেলা' বলে তক্কো করার মত। তো আম্রিগায় কি করা উচিত? মহম্মদের হিসেবমতো সব রেসবাজ লোকের মুন্ডু কেটে হাতে ধরিয়ে দেওয়া? সব সমস্যার সমাধান!?
বিজনেস করতে গেলে পরিবেশ খান লিরারেল হোন সব ঠিক আছে - ক্যাশ ফ্লো মাইনাস দেড়্শ হলে কি করবেন ? মনে রাখবেন, কমরেড স্ট্যালিন বলেছিলেন - খালি পেটে ধম্মো হয় না!
২০১৬-র পশ্চিমবঙ্গ অ্যাসেম্বলি ইলেকশনে - তৃণমূল ৪৫% এর মতন ভোট পায়, বাকী ৫৫% (এর মধ্যে ২৬% বামফ্রন্ট, ১২% কংগ্রেস, ১০% বিজেপি)। এবারে দেখা যাক কি হয়।
উল্টে বলতেন | 165.225.8.113 | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০০:৫১
সমস্যার সমাধান সত্যিই জানতে চাইছো নাকি শুধু টীজ করার জন্যই লিখেছো? আমি উত্তর দিয়ে দেবো।
টিজের আর কি আছে! আমার ধারণা আপনার সমাধান প্রকৃত সমাধান নয়। হতেই পারে আমার আহাম্মুকি, না শুনেই বাতেলা - তবু এতদিন ধরে আপনার বক্তব্য শুনে এই মত।
অবশ্যই শুনতে চাই , ডিটেলে। টই হাইজ্যাক হচ্ছে মনে হলে অন্য কোথাও। চোখ রাখব।
আমার সমাধানটা কি?
আহা, উত্তর দিয়ে দেবেন বল্লেন যে! তাই বলছি, সত্যি জানতে চাইছি। আম্রিগা ও পচ্চিমবঙ্গ - দুক্ষেত্রেই।
"ঈশানদা, আপনারা বলছেন যে বামেদের ভোট বিজেপিতে গেছে কারণ বামেরা সেটা চেয়েছে।" -- এরকম বলিনি। বলেছি বামরা অপদার্থ।
"আপনার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে আপনি চাইছেন বামেদের ভোট বারুক, কিন্তু তিনোরা তার সুফল ভোগ করুক।" -- এরকম কিছুও বলিনি। বামরা জিতলে জিতুক না। শুধু তৃণমূল বিরোধিতার ফসল যেন বিজেপি না পায়, এইটা হলে, আমার মতে ভাল হয়। এইটুকুই বক্তব্য।
আরে সেটাই তো বলা হচ্ছে। বামেরা অপদার্থ। ১০০-% এগ্রিড। তো তাদের পেছনে এতো আলোচনায় সময় নষ্ট করার দরকারটা কি ?
ব্যক্তিগত ইচ্ছা।
ওকে . তাহলে তো কোনো সমস্যাই নেই। যে যে যার ব্যক্তিগত ইচ্ছা মতো যাকে ইচ্ছে তাকে ভোট দিক। কারোর কিছু বলার নেই।
এমনিতেও এই বামের ভোট , ডানের ভোট কনসেপ্ট টাই বুঝিনা। কালকে যে বামকে ভোট দিয়েছে , আজকে তার যদি বিজেপি কে বা মিমকে বেশি ভালো লাগে, সে তাকে ভোট দিতেই পারে. আফটার অল ডেমোক্রেসি তো চলছে কাগজে কলমে।
"বামরা অপদার্থ।"
এই নিয়ে আর তক্ক করে লাভ কি? সারা দুনিয়াতেই তো তাই দেখছি।
বলার থাকবেনা কেন? আমার ইচ্ছে হলেই বলব। আবারও ব্যক্তিগত ইচ্ছা। :-)
এছাড়াও আপনি না বুঝলেও গণভিত্তি বলে একটা ব্যাপার থাকে ভোটের রাজনীতিতে। এছাড়াও থাকে ভাসমান ভোটার। ভোটের অঙ্ক যে রাজনৈতিক দল করে, তারা চেষ্টা করে নিজের ভিত্তি অটুট রেখে ভাসমান এবং অন্য পক্ষের কিছু ভোটারদের নিজের দিকে টেনে আনতে। এই জন্যই এত প্রচার সংগঠন এইসব, এই আর কি। এটাই ভোটের রাজনীতির ব্যাকরণ। না বুঝলে কোনো ক্ষতি নাই অবশ্য।
মাইনরিটি ভোটের একাংশ ২০১৬ অবধিও কঙ্গ আর বামেরা পেয়েছে। এখন সেটা তিনোতে কনসেন্ট্রেটেড হয়েছে। কারণ বিজেপি (তাছাড়া কঙ্গের প্রায় সবাই এখন তিনোতে)। ফলে বামেরা আগে যে ভোট পেত, সেটা এখন ভেঙে তিনো আর বিজেপিতে চলে গেছে। তিনো থেকেও অনেক ভোট বিজেপিতে গেছে। একটা কারণ নেতাদের রংবদল। নতুনরা সবাই বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিচ্ছে। এরা কোনওকালেই বামেদের ভোটার ছিলনা। অতেব শুধু বামেদের ভোট বিজেপিতে গেছে বললে সেটা সরলীকরণ হয়ে যাচ্ছে। একটু খোঁজ নিয়ে দেখবেন যে ২০১১তে যারা তিনোদের ভোট দিয়েছিল, তাদেরই অনেকে এখন বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে।
তথাকথিত ভাসমান ভোটার দের টানতে তো দু হাজার এগারোতে অতিবাম, ডান, অতি ডান , ভাম সবাই মিলে রামধনু জোট বানানো হয়েছিল। তখন স্ট্যান্ডার্ড স্লোগান ছিল "যে আসে আসুক বামেরা যাক" । তাহলে এখন যদি "যে আসে আসুক তিনোরা যাক স্ট্যান্ড" নেয়া হয় - তাতে এগারোর সাথে তফাৎ ঠিক কোথায় ?
যে আসে আসুক কিন্তু বামেরা যাক = তিনোদের ক্ষমতায় বসানো। তাই এখন যে আসে আসুক তিনোরা যাক ফর্মুলা পছন্দ হচ্ছে না।
আচ্ছা, এই যে নতুনরা মনে ইয়ং জেনেরেশান সিপিএমকে ভোট দিচ্ছে না, তা তাদের ভোট দেবার ইন্সেন্টিভ দেওয়া হচ্ছে কি? রাস্তায় দাঁড়িয়ে চোঙা ফোঁকার কথা ধরছি না কারণ ইয়ং জেনেরেশান সবসময় কানে হেডফোন গুঁজে ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। তাদের ভোট পেতে গেলে অ্যাট লিস্ট তাদের ভাষায় কথা বলতে হবে। ফেসবুক, টুইটার, নিত্যনতুন অ্যাপ, ভিডিও গেমস, ভ্লগ, টুইচ (এটা যে কি জিনিস একমাস আগেও জানতাম না) এইসব নিয়ে সিপিয়েমের কি প্ল্যান? বিজেপি অন্তত এটা বুঝেছে আর সেইমত প্ল্যান করে চলেছে। সেটা কাউন্টার করার জন্যে সিপিয়েমের প্ল্যান কি? এমনকি টিভি নিউজ আর নিউজপেপার বুমার অর কিছু জেন এক্সার ছাড়া আর কেউ খবর রাখে না। আমার মনে হচ্ছে যেখানে ড্রোণ দিয়ে যুদ্ধ হচ্ছে সেখানে সিপিয়েম ঢাল তরোয়াল নিয়ে লড়াই করছে। এর পর ইয়ং জেনেরেশান কেন ভোট দিচ্ছে না বলে অভিযোগের কোনো মানে নেই।
সে নেটযুদ্ধে বিজেপির একশ মাইলের মধ্যেও তো আর কোনো দলকে দূরবীন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যায়না পুরো ইন্ডিয়ায়। সিপিএম কে আলাদা করে ধরে কি হবে ?
তাহলে আর অত আলাপ আলোচোনার কি দরকার? আমার অপোনেন্ট একশ মাইল এগিয়ে গেছে, আর কি করা যাবে বলে দোকান বন্ধ করে দিলেই হয়।
এটা ওই ঈশানদাকে বলুন। চোনা উনিই চাইছিলেন কিনা!
যাগগে, তক্কোর মান তো হীরাভ হয়েছে, এ নিয়ে আর হেজিয়ে কী হবে! গতকাল যাঁরা শিপিয়েমের নেতাদের স্ট্রং মেসেজ আশা কচ্চিলেন যে কে বড়ো শত্রু তাঁদের জন্য ইয়েচুরি বাবুর গতকালের বাণী আছে।
না না। আমরা যারা নতুন, তারা এই হীরাভ ২ থেকে প্রভূত খোরাক পাচ্ছি। সেটাকে নষ্ট হতে দেবেন না। বিনি মাগনায় এমন খোরাক দেখার সুযোগ জীবনে খুব বেশি আসে না।
এই যে গুরু ও চন্ডালেরা ডিমনিটাইসেশন, করোনার ভয়াবহতা, অতিথি শ্রমিকদের অসহায়তা ইত্যাদি প্রভৃতি বিষয় নিয়ে বিস্তর বাইট খরচা করল, বিহারের ভোটে অথবা মধ্যপ্রদেশের বাই-ইলেকশনে তার প্রভাব সব চাইতে বেশী পরার কথা ছিল। কিন্তু বিপুল সংখ্যক গরীব মানুষ তো মনে হচ্ছে না সেসব নিয়ে বিশেষ বিচলিত হয়েছেন। উল্টে বিজেপি আরো শক্তিশালী হয়েছে। তাঁরা তো আর নেট ঘাঁটেন না যে নেটযুদ্ধ তাদেরকে প্রভাবিত করবে সেই ভাবে। এমনকি বিজেপির তথাকথিত সাম্প্রদায়িকতাও বোধহয় মুসলমান সম্প্রদায় ছাড়া কাউকে বিশেষ স্পর্শ করছে না।
তাহলে এই সব মানুষেরা কি চাইছেন? কেউ কি জানে?
দীপংকর জানেন? শুধু বিজেপিকে আটকাও বললে তো আর আটকানো যাচ্ছে না। বিহারেও তাঁরা পারেননি। অন্ততঃ বিহার একটা শিক্ষা দিয়েছে। নীতিশের মত পেন্ডুলামকে না আটকালে বিজেপিকে থামানো যাবেনা। সম্ভব্তঃ সেই শিক্ষা পব-র ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কেননা পব অতীতে পেন্ডুলামের রাজনীতির দেখেছে।
দ্যাকেন এখানে আলোচনা মানে তো পাতি ভাট বা পাঁচিলে বসে বাদামভাজা খাওয়া, এর বেশি কিচ্ছু না। এখানে ঝড় উঠলেও গ্রাউন্ড লেভেলে আদতে একটা পাতাও টসকায় না, এখানে র ভাটপাতায় আলুচোনা শুনে কে কার দোকান খুলবে না বন্ধ করবে এ শুনলে ঘোড়াও হাসবে মাইরি । গুরুগম্ভীর রাজনৈতিক পোবোন্ধো ই বলেন বা তার সাবসিকোয়েন্ট আলু বা চোনা, কোনোটার রিয়েল ভ্যালুই আদতে টিস্যু পেপার এর চাইতে বেশি নয়।
অমিত কীইইই যে বলেন! জানেন আবাপ গুরু ফলো করে :))
আবাপ টিস্যুপেপার নয়।