এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পর্বে পর্বে কবিতা - তৃতীয় পর্ব

    pi
    অন্যান্য | ১৭ ডিসেম্বর ২০১১ | ৭৫০৪৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৭ (৩ জন)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ফরিদা | ২১ মার্চ ২০২৫ ১৮:১১744600
  •  
    বিশ্ব কবিতা দিবস

    আজ ভরা মিটিঙে আমার ঘাবড়ে যাওয়া তোতলামো নিয়ে
    ম্যানেজার একবারও ভ্যাঙায় নি।
    ডে কেয়ারে আমায় একা একা ছোট ঘরে 
    নিয়ে যায় নি নিখিলকাকু।
    ভিড় ট্রেনে অস্থানে খোঁচা মারে নি কেউ।
    গাজায় ঘিঞ্জি মহল্লায় আমাদের বাড়িটা 
    আজও আস্ত আছে।

    তাছাড়াও, দেখতে হবে
    মন্ত্রীর গাড়ি চাপা পড়েও বেঁচে গেছি সেদিন।
    অথবা খামোখা মরে গিয়েও টুঁ শব্দটা আসতে দিইনি বাইরে — 

    কাজেই কবিতা লিখতেই পারি বিশ্ব কবিতা দিবসে
    তাইরে নাইরে নাইরে
    তাইরে নাইরে নাইরে…

     
  • ফরিদা | ২২ মার্চ ২০২৫ ০৮:৩৮744609
  •  
    কবিতা লিখতে বসে কল্পনায় কারও শুধু
    শিতলপাটি ও হাতপাখাটির কথাই মনে আসে।
    একপেট খিদে নিয়ে শুলে স্বপ্নেই ন্যূনতম সংস্থান।
    কারও ইচ্ছে গাড়ি বাড়ি আরও বড়সড় হোক
    ঘনঘন বিদেশসফর ঘোরাঘুরি ছবিছাবা সভাসমিতিতে।
    ক্লাসে নোট লিখে পরীক্ষা সমুদ্র পেরোয় শিশুরা
    ঠুলি বেঁধে হাত আড়াল করে লেখে পরিত্রাণ।

    প্রেমপত্র লেখা হয় বন্ধুত্বের উষ্ণতা বাড়লে,
    সে ভালোবাসা গেঁজে গেলে বেনামী চিঠিও
    লেখে লোকে, ঘরদোর পোড়ে। 

    ঠাট্টা তামাশা লেখা দেখলেই রুগ্ন ভাবাবেগের
    ভুরু কুঁচকে উঠে  পেটে মোচড় দেয়।
    সে কাঁদোকাঁদো হ'লে ফতোয়া ছড়ায় বেগে।
    ভুয়ো ইস্তাহারে আগুন লাগে পাড়ায়, মহল্লায়।
    নোনাজল ক্ষেতে ঢুকে ভিটেমাটি চাঁটি।
    খবরের কাগজে চিঠি লিখে এ সবের সুরাহা চেয়ে কেউ
    শ্লাঘা নিয়ে ঘুমিয়েছে অবশেষে।

    দিনপঞ্জিকা লেখা হয় এখনও মাঝে মাঝে
    যা পুরনো হ'লে লোকে ইতিহাস বলে।
    কেউ ছলে কৌশলে তাকে বদলিয়ে 
    নতুন বোতলে ভরে বেচে বাজার সামলে। 

    অভিযোগের পাহাড় লেখার পর অবশিষ্ট অধ্যায়ে
    গঞ্জনার নর্দমা নদী লেখা হ'ত কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
    তাতে হাত টাত কেটে দেওয়া হচ্ছিল বলে 
    আজকাল শুধু ঢালাও বন্দনা চলে।
    সস্তা নেশায় বুঁদ আট থেকে আশি 
    রাষ্ট্রই সর্বশক্তিমান, দেশপ্রেমী সুপারহিরো।

    নিরুদ্দিষ্টের প্রতি পত্র লিখে যাই আমি —
    একবারটি দেখতে বড় ইচ্ছা হয়, 
    আমি অন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে ফিরো।

  • ফরিদা | ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৪৬744638
  • কুলাঙ্গার
     
     
    আমার বংশের কোনও প্রামাণ্য ইতিহাস নেই
    তবু অনুমান করতে পারি —
    আমার উর্ধ্বতন নারী-পুরুষেরা কোনওমতে 
    টিকে গিয়েছিলেন মহামারী, দুর্ভিক্ষ যুদ্ধ তথা
    যাবতীয় অন্যায় অবিচার সহ্য করে নিয়ে।

    অনুমান করতে পারি, তারা কখনও —
    বিপ্লবে আগুনের মতো ফেটে পড়েন নি
    উদ্যত খ্যাপা ষাঁড়ের দিকে লাল কাপড় দোলাননি
    যাবজ্জীবন বা ফাঁসি হয়নি কারও 
    রাজদ্রোহের দায়ে।

    এই মুহূর্তে আমার মতো অসংখ্য 
    বংশানুক্রমে আপোষকামী 
    মশা মাছি সাপ ব্যাঙ পোকা-মাকড়েরা 
    একে অপরের দিকে তাকিয়ে ভাবছি 
    একদিন সব অন্যায় শেষ হয়ে যাবে 
    পৃথিবী দূষণমুক্ত হবে, একদিন, ধীরে ধীরে —

    কেউ একজন কুলাঙ্গার বেড়ালের গলায় 
    ঘন্টা বাঁধতে ছুটে যাবে প্রাণের পরোয়া না করে।
     
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:২৬744639
  • ফরিদা হে, এইটা জব্বর হয়েছে। (আর, আমি যে মোট্টেও সে অঙ্গার নই, এইটা জনান্তিকে বলে রাখি)। smiley
  • ফরিদা | ২১ জুন ২০২৫ ০৮:৫৫745138
  • তোমার বাড়ি পৌঁছনর সব ঘোঁতঘাঁত জানা থাকলেও
    সবচেয়ে বড় রাস্তাটাই বেছে নেব আমি।

    খরুচে লোকের মতো দু-হাত খুলে
    একের পর এক ডানদিকের রাস্তা ছেড়ে 
    সোজা যাব অনেকক্ষণ — 
    মনে হবে অন্য কোথাও যাচ্ছি যেন।

    বাচ্চা বাচ্চা রাস্তাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলব পথে,
    ওরা কয়েকবার আমায় হারালে 
    আমিও হারাব ওদের বেশ কয়েকবার।

    প্রতিটি মিনিট ঘন্টা দিন সপ্তাহ মাস বছর ধরে
    প্রতিটি জোয়ার-ভাটা বৃষ্টিফোঁটা থেকে শুরু করে
    জলবায়ু পরিবর্তনের সাক্ষী হব অবলীলায়।

    কিছুতেই সংক্ষেপে নয়, যতক্ষণ চলাচল সম্ভব, 
    নক্ষত্রের মতো সারাক্ষণ অনন্তকাল জুড়ে তোমার কাছে
    আমি পৌঁছতেই থাকব।

     
  • ফরিদা | ২১ জুন ২০২৫ ০৯:৫৫745139
  • রাতে যাঁরা বারান্দার আলো নেভাতে ভুলে যান
    তাঁদের অনেকেই একটা সময়ে বাতিঘর ছিলেন
    দিনমানে এঁদের খবর কেউ বড় একটা রাখত না
    কখনও হয়ত জাহাজের চিঠি পেতেন মাঝরাতে।

    সংক্ষিপ্ত তড়িঘড়ি লেখা বাঁকাচোরা অক্ষরে — 
    “ভালোবাসা নিও। আর কক্ষণও দেখা হবে না। 
    কাছাকাছি এলে আমরা কেউই বেঁচে থাকব না।
     
  • ফরিদা | ২১ জুন ২০২৫ ১১:১৪745140
  • সিলেবাস

    রাস্তায় একটা জটলা দেখে সেদিন একটু এগিয়ে গেলাম —
    দেখি, ইস্কুল পালানো ক্লাস এইটের একটা 
    হাফপ্যান্ট পরা অঙ্ক রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না।
    ভয় পেয়ে ঘাবড়ে টাবড়ে গিয়ে —
    তার নাম ঠিকানা কিছুই বলতে পারছে না, 
    কেঁদেকেটে অস্থির।

    একজন বয়স্ক ইতিহাসের মুঘল আমল তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।
    উঠতি যুবক ফিজিক্সের আলো আড়চোখে
    ছিপছিপে ইন অর্গানিক কেমিস্ট্রির পিরিওডিক 
    টেবিলকে ইম্প্রেস করতে নিজের মোবাইল বাড়াল।
    সে আবার ইশারাটি বুঝেও মাতৃসমা
    অর্গানিক কেমিস্ট্রির দিদিমণি দেখে প্রতিক্রিয়া দিল না।
    জীবনবিজ্ঞানের সালোকসংশ্লেষ তাকে একটা
    সবুজ টফি খেতে দিল। 

    অঙ্কটি ধাতস্ত তখন,  কাছাকাছি পিটি ক্লাসের
    বাস যাচ্ছে দেখে এক দৌড়ে উঠে ধাঁ….

    আমার ঘুম ভেঙে গেল।
  • ফরিদা | ২২ জুন ২০২৫ ০৮:১২745144
  • বর্ণ মেলায় এসে পৌঁছেছি যখন 
    আমার কবিতাগুলো তো আমাকেই 
    লিখে ফেলতে হবে — যতই সমস্যা থাক
    ধারকর্জ করে হয়ত বা ভিটেমাটি বন্ধক দিয়ে।

    সহজে ছাড়বে না কি তারা —
    কুঁচোকাঁচা না লেখা কবিতারা 
    হাত ধরে টেনে নিয়ে যাবে 
    এ দোকান থেকে সে দোকানে, 
    নয়ত প্রচণ্ড চেঁচাবে, রাস্তায় গড়াগড়ি খাবে। 

    লোকে দেখে ভাববে —
    কোথাকার পাষণ্ড এ — রেস্ত ছাড়া 
    একপাল এণ্ডিগেন্ডি নিয়ে মেলায় এসেছে! 
     
    যে করেই হোক, আমাকে লিখে ফেলতেই হবে।
  • ফরিদা | ০৫ জুলাই ২০২৫ ০৭:২৪745223
  • একটা ফালতু ইলেকট্রিক মিস্তিরির মতো
    সারাদিন খেটেখুটে কিছু একটা খাড়া করে
    সন্ধ্যের দিকে স্যুইচ দিয়ে দেখি— 
    যা চেয়েছিলাম তা তো হয়ই নি, বরং
    সারা বাড়ি অন্ধকার, সার্কিটের গন্ডগোলে। 

    ও-দিকে কবিকে দেখ— 
    এমন লিখেছে বইতে, একটা পাতা খুললেই 
    কী চমৎকার আলো জ্বলে!
  • ফরিদা | ০৫ জুলাই ২০২৫ ০৭:৪০745224
  • অনেকদিন দেখা হয় নি আমাদের,
    আজও মেঘ করেছিল দেখে 
    ইচ্ছে করেই ছাতা ছাড়া বেড়িয়েছিলাম।

    আজকাল গাছের পাতা নড়তে দেখলেই
    দরজা খুলে দিই,
    আধ কাপ অতিরিক্ত চাল ভিজিয়ে রাখি
    মাঝেসাঝে, অকারণেই। 
    তাই গঞ্জনা খাই, দরজা খোলা পেয়ে 
    নেড়ি কুকুরগুলো ঢুকে উঠোন নোংরা করে, 
    আর প্রতিটি মেঘমুক্ত সকালে 
    বস্তা বস্তা বর্জ্যের পাহাড় খবরের কাগজের ছদ্মবেশে— 
    আমার কাছে পৌঁছয়, তোমার বদলে। 
  • ফরিদা | ০৫ জুলাই ২০২৫ ০৯:৩০745225
  • প্রথমবার ভোরবেলা উঠে মনে হয়েছিল— 
    এখন তো সকাল হওয়ার কথা—
    সন্ধে হয়ে এল কেন?

    প্রথমবার গাড়ি চেপে মনে হয়েছিল
    কী চমৎকার ব্যাপার— 
    এখানে দরজাতেই জানলা বসান।

    প্রথমবার তোমাকে দেখেই মনে হয়েছিল
    এই তো সেই মানুষটা—
    এর সঙ্গেই বুড়ো হই যেন।

     
  • ফরিদা | ০৬ জুলাই ২০২৫ ১৪:১৫745242
  • পঞ্চাশ বছর পরে

    গাড়িতে হাইওয়ে ধরলে পাঁচিলের বাইরে 
    শুধু বহুতলের মাথাগুলো চোখে পড়ে।
    নিচের আম সড়কটি শহরতলীর 
    যানজটে ভরভরন্ত তথা হতাশায় কোলাহলমুখর
    সে সব পেরিয়ে কোনওমতে খানিকটা এগোলে
    ক্রমে সব ফাঁকা হয়ে আসে।

    কিছু দূরে, কালভার্টের পর একটা বাউন্ডুলে 
    হাড় জিরজিরে খোয়া বের করা রাস্তা 
    বাঁ দিকে বেঁকেছে মহাপ্রস্থানের পথে।
    তার শুরুতেই একটা ফাঁকা সাইকেল সারানর দোকান
    পুরনো সাইকেল ফ্রেম ও টায়ারের কঙ্কালে সাজানো
    অস্পষ্ট সাইনবোর্ডে কোনওমতে পড়া যায়—
    “এখানে সুলভে প্রেমের কবিতা লেখা হয়”। 
  • ফরিদা | ০৭ জুলাই ২০২৫ ১৮:৫৭745252
  • অমিতাভ দা, থ্যাঙ্ক্যু। গুগুল করে দেখলাম Before Sunrise  একটা সিনেমা। আগে নেটফ্লিক্সে ছিল, এখন দেখার উপায় নাই..  
     
    উইশলিস্টে থাকল। 
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ০৭ জুলাই ২০২৫ ২০:১২745253
  • ঠিক। Before ট্রিলজির প্রথমটা। অতি ছোট এক পার্শ্ব চরিত্রে খালপারে সেতুর ধারে বসে থাকা এক কবি কটা পয়সা পেলে দাতার পছন্দের বিষয়ে হাতেগরম পদ্য লিখে দেয় - মানসম্মত। 
  • ফরিদা | ২০ জুলাই ২০২৫ ১৩:২৮745349
  •  
    হাঁটার আগেও নাচতে শিখে গিয়েছিলাম আমি
    ফলতঃ হেসেছে লোকে, এ হেন মূর্খামি দেখে, বলেছে— 
    “এ কোনও কাজের কথা নয়, হাঁটা শেখ, দৌড়ও,
    নয়ত পৌঁছবে কীভাবে তুমি বাকিদের থেকে দ্রুত?”
    এ সবই বহুশ্রুত, আমি পরে অনেক জায়গা ঘুরে ঘুরে
    দেখেছি, কেউ কখনও তিষ্ঠোতে পারে নি হেঁটে বা দৌড়েও—
    লোকে তবু আমায় ঘিরে বারংবার আঙুল তুলে শাসিয়েছে
    “এ লোকটা কোনও কম্মের নয়, শুধু নাচতে শিখেছে।”

    জানি এ পৃথিবী ছন্দোবদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন থেকে
    প্রজাপতিদের  ফুলে ফুলে ওড়া ইস্তক গতির ফারাকে
    নিখুঁত বৃত্তাকার না হ'লেও যারা হেঁটেছে বা দৌড়েছে 
    কক্ষচ্যুত হয় নি সাধারণতঃ, শেষমেষ পৌঁছেছে শুরুতে।
    দম ফেলার সময় পায় নি কখনও। তাই হতাশায় তারা
    গালাগাল দিয়েছে,  যখনই কেউ না হেঁটে শুধুই নেচেছে। 
  • ফরিদা | ২০ জুলাই ২০২৫ ২০:৫১745359
  • জলে সবকিছু পরিষ্কার হ'লেও
    জলের মতো নোংরা হ'তে কাউকে দেখি নি। 
    আমি বড় বাড়ির দিকে তাকিয়েই থাকি
    ভাবি, ওদের মতো কথা বলব, 
    পরিশীলিত শব্দোচ্চারণ, মৃদুস্বরে 
    সহবত মিছরি মিশিয়ে, তবু—
    ফুটপাতের জল ঘোলা হয়ে যায় বারবার।

    জমা জল থেকে বুকচাপা দুর্গন্ধ ওঠে
    অজস্র পোকামাকড়ের লার্ভা বুড়বুড়ি কাটে।
    একটু জোরে ঝাঁঝিয়ে লাথি মারলে বা 
    গাড়ি চালাতে গেলে— সে গালাগালে ভূত ভাগায়।

    ছোটবেলা থেকে বড় বাড়িতে থাকা জল
    টলটলে, তাদের কথায় জ্যোৎস্না ঝরে— 
    হাতের লেখা দেখলে তাক লেগে যায়।
  • ফরিদা | ২২ জুলাই ২০২৫ ১০:৫৬745388
  • তার জামার নাম লাল। কপালের নাম চিরুনি। তার ঘোড়া বাসে চেপে আসে রোজ পাঁচটায় কাজটাজ সেরে। ওই বাসস্টপে নেমে, ছোলাভাজা কিনতে কিনতে আমায় খোঁজে। কখনও বাস থেকে নেমেই আমাকে দেখতে পায়। সেদিন একসঙ্গে ছোলা কিনি আমরা।

    আমি মাঝে মাঝে পৌঁছতে পারি না। মাঝে মাঝে সেও আসে না। ছোলাভাজাওয়ালাও অনুপস্থিত থাকে।

    তার জামার নাম লাল। তার সঙ্গে আমার খুব কম দেখা হয় আজকাল। 

     
  • Ranjan Roy | ২২ জুলাই ২০২৫ ১৩:২৭745393
  • ফরিদা
    জুলাই মাসের সবগুলো কবিতা ফাটাফাটি।
     হ্যাঁ, সবগুলোই।
     
    কেমন যেন মনে হচ্ছে যে এ মাসে আপনা নবজন্ম হল। 
     
  • ফরিদা | ২৩ জুলাই ২০২৫ ০৮:৩৬745402
  • রঞ্জন দা, থ্যাঙ্ক্যু।... 
    তোমায় রিটার্ন গিফট দিতে চাইছিলাম.... 
     
    কোথাও পৌঁছতে হবে বলে তো বেরোইনি আমি। থেমে গেছি ইচ্ছেমতো, ধরা যাক সেটাই মাঝপথ।

    মাটির তাল, কাঠকুটো বা পাথর দেখে মূর্তির অবয়ব কখনও বুঝতে পারি নি, চেয়ে থেকেছি বেশ কিছুক্ষণ এক একটা শব্দের দিকে একটা আস্ত দিন ধরে। বাজার করেছি, রান্না হয়েছে তরিবত করে।  তারপর একে অপরকে খেয়ে দেয়ে নিঃশষ হয়েছি একসঙ্গে।

    কী আর বানাব আমি, কোথায় পৌঁছব? অসীম শব্দশস্য চাটাইয়ের এক কোণে আজীবন ঘুমিয়ে থাকব।
     
  • Ranjan Roy | ২৩ জুলাই ২০২৫ ১৫:৩৯745407
  • যাত্রা শুভ হোক l
  • ফরিদা | ২৫ জুলাই ২০২৫ ১৩:৫১745414
  • অক্ষরের সঙ্গে পরিচিত হ'তে হ'তে
    কিষাণগঞ্জ ছাড়িয়ে গেল ট্রেন।
    নিউ জলপাইগুড়িতে আমাকে নামিয়ে—
    বাংলাভাষা কোচবিহার ছাড়িয়ে পৌঁছবে অসমে।

    তাহলে, কবে আর লিখতে শিখব আমি? 
  • আমাকে দেখুন  | 151.197.***.*** | ২৫ জুলাই ২০২৫ ১৯:৪১745417
  • সুলভ কবিতা র মুভি 

     
  • আমাকে দেখুন  | 151.197.***.*** | ২৫ জুলাই ২০২৫ ১৯:৪৩745418
  • নাহঃ, ভুল দিলাম 
  • ফরিদা | ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৭:৫৭745427
  • @আমাকে দেখুন, 
    ধন্যবাদ নেবেন। ওখানে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত দুইই পেলাম। 
    একটা ঘোর লাগা অভিজ্ঞতা। অমিতাভ দা কেও ধন্যবাদ। হয়ত জানাই হ'ত না এইদু'টো সিনেমার কথা কোনওদিন।
     
    যাই হোক, দু'লাইন থাক, রিটার্ন গিফট... 
     
    এ সব তো মিটে গেলে পারে— 
    রাস্তার ধারে, পাবে সন্ধেবেলা 
    গুছিয়ে বসব একা অনন্ত রাতে

    চোখের সামনে একটা একটা করে
    নক্ষত্রের আয়ু ক্ষয়ে যাবে 
    ওই মুহূর্তটুকুর সাম্রাজ্য বদলাতে।  

  • আমাকে দেখুন | 151.197.***.*** | ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৮:৫৭745428
  • ফরিদা, 
    আরে বাহঃ! দুটৈ পেয়েছেন শুনে খুশি হয়ে গেলাম! 
    রিটার্ণ গিফ্টে ​​​​​​​আরৈ smiley​​​​​​​
     
  • ফরিদা | ২৯ জুলাই ২০২৫ ০৭:৩৯745474
  • হ্যাংওভার 
     
    গল্পটার কোনও শুরু বা শেষ নেই
    শুধু অনেক রাস্তা আছে, 
    যে কোনও একটা ধরে এগোলেই
    তার বিশদটি আস্তে আস্তে প্রকাশিত হয়।

    শহরের মতোই কিছুটা যেন—
    স্টেশন ছেড়ে এগোতেই বাজার, জেলা আদালত
    কিছুটা এগিয়ে সরকারি ইস্কুলবাড়ি পেরোতেই
    মেলার মাঠ ছাড়িয়ে মানুষের ভিটে বাড়ি শুরু।

    একদিকে নদী আছে, 
    অন্য প্রান্তে সামান্য উঁচু এক টিলায়
    অনেক বড় বড় টিয়াপাখি গাছ, নিচে বেঞ্চি পাতা
    প্রতি সন্ধ্যার পর গল্পের মানচিত্র ফোটে আলোকসজ্জায়।

    এ শহর অথবা গল্পের মতো আমাদের ভিতরেও
    অজস্র পথ এঁকেবেঁকে গেছে চতুর্দিকে।
    গমগমে জনবসতি। সাধারণত সাদামাটা জীবন।
    উৎসবে এরা মাইকও বাজায়। 
     
  • ফরিদা | ২৯ জুলাই ২০২৫ ০৮:৪৩745476
  • বইটাকে হাতে নিয়ে মাঝখানের পাতা খুলতেই
    প্রতিবারই বারান্দার অধ্যায়ে পৌঁছতাম—
    ভিতরে পট্ট পড়াশোনা করছে, 
    কাল ফের পরীক্ষা ওর।
    বাবা দুপুরের খাবার খেয়েই বেরোলো আড্ডায়
    একটুও না ঘুমিয়ে।
    সাপ্তাহিক বর্তমানের রেসিপি ঘাঁটছে মা
    ঘরে যা আছে তাতেই ওই রেসিপির মিশেলে
    আজ ফের কপালে সুখাদ্য নাচছে।

    এখন, নিচের পার্কিং লটের গাছগুলোর
    স্কুলে যাওয়ার বয়স হয়েছে।
    দূরে বেড়ে ওঠা বাড়িগুলোর 
    লম্বা লম্বা ছানাপোনাও দেখা গেল।

    তবু শ্রাবণ আকাশের মেঘ পর্যন্ত অবিকল একই, 
    ঘরের দরজা পেরোতেই—
    প্রিয় বারান্দাটি এক লপ্তে আমাদের সাত বচ্ছর
    পিছনে নিয়ে গেল।
  • Ranjan Roy | ২৯ জুলাই ২০২৫ ১৩:১৯745481
  • দীপাবলীর পরের সকাল
    ===============
    এখনও বাতাসে বারুদের গন্ধ।
     
    বাড়ির উঠানে রাস্তার ফুটপাথে
    পড়ে আছে পোড়া কাগজের টুকরো, পোড়া দড়ি।
    ঝলসে যাওয়া কালচে পোড়া দাগ
    ইতস্ততঃ আধজ্বলা ধানি পটকা, পোড়া ফুলঝুরি, রংমশাল।
     
    বালতি আর ঝাঁটা নিয়ে যত্ন করে সাফ করি
    তুলে ফেলতে চাই কালো দাগ,
    ভুলতে চাই বারুদের গন্ধ।
     
    আজ থেকে ফের শুরু কালচক্র আবর্তন।
    বুকের মধ্যে থাকে 
    কবে আবার 
    বারুদ গন্ধে মাতাল হবে বাতাস
    এক বছর পরে।
     
     
    এভাবেই মুছতে থাকি রক্তের দাগ
    ঘরের ভেতরে , বারান্দায়
    বাড়ির উঠোনে।
    ভুলতে চাই তাদের নাম 
    কাল যাদের এইখানে পিটিয়ে মেরেছি। 
     
     আজকে অফিস যেতে হবে।
     
     এভাবেই ওঁত পেতে থাকি
    ফের কবে শুরু হবে শিকার শিকার খেলা।
     
     
    ওঁত পেতে আছি।।
     
     
    এক বছর? ছয় মাস? এক মাস?
    অথবা আগামীকাল ।। 
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক প্রতিক্রিয়া দিন