এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • ভাটিয়ালি

  • এ হল কথা চালাচালির পাতা। খোলামেলা আড্ডা দিন। ঝপাঝপ লিখুন। অন্যের পোস্টের টপাটপ উত্তর দিন। এই পাতার কোনো বিষয়বস্তু নেই। যে যা খুশি লেখেন, লিখেই চলেন। ইয়ার্কি মারেন, গম্ভীর কথা বলেন, তর্ক করেন, ফাটিয়ে হাসেন, কেঁদে ভাসান, এমনকি রেগে পাতা ছেড়ে চলেও যান।
    যা খুশি লিখবেন। লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়। এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই। সাজানো বাগান নয়, ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি। এই হল আমাদের অনলাইন কমিউনিটি ঠেক। আপনিও জমে যান। বাংলা লেখা দেখবেন জলের মতো সোজা। আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি।
  • আর জি কর গুরুভার আমার গুরু গুরুতে নতুন? বন্ধুদের জানান
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সত্যেন্দু সান্যাল | 2401:4900:889a:395f:fd73:624b:4f0f:***:*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৩৭537654
  • প্রবীরজিত বাবু 
    মহম্মদ রফি-র কাশ্মীর সংক্রান্ত গানটি ব্যানড নয় পরিবর্ত্তিত হয়েছিলো।
    এমনটি তথ্য পেলাম
     
     
  • Bratin Das | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:২৮537653
  • আরে অরিন দা যে,বহুকাল।পরে,কেমন আছো গো? 
  • অরিন | 119.224.***.*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৫৮537652
  • @যদুবাবু,  নানান কাজের তাড়ায়  আপনার  পোস্টের উত্তর দিতে দেরি হলো । কারেন উইলকক্স ডিজিটাল টুইন নিয়ে কি বললেন? আপনি সে লেকচার শুনলেন?
  • PRABIRJIT SARKAR | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৫৮537651
  • এমন কি ভারত UN সিকিউরিটি কাউন্সিলের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে পর্তুগালের কলোনি গোয়া দমন দিউ ভারতের অন্তর্ভুক্ত করেছিল। সেও এই নেহেরুর আমলে।
  • PRABIRJIT SARKAR | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১০:২২537650
  • ভারত কাশ্মীর ছাড়া সব ক্ষেত্রে এগ্রেসিভ নীতি নিয়েছিল। হায়দরাবাদ জুনা গর এইরকম অনেক করদ রাজ্য স্বাধীন থাকতে চেয়েছিল। হিন্দু মুসলিম মেজরিটি  নির্বিশেষে ভারতে ঢুকিয়েছিল। নেহেরু কাশ্মীরের ক্ষেত্রে একই নীতি নিতেই পারত। পাকিস্তান হানাদার পাঠিয়ে কাশ্মীর জোর করে নিতে চাইল তখন কাশ্মীরের রাজা ভারতের সাহায্য পেতে ভারতে অন্তর্ভুক্ত হল। তাও পুরোটা দখলমুক্ত না করে নেহরু ইউ এন এ তে নিয়ে গেল। শুনেছি এডুইনার পরামর্শে। সেই থেকে চলছে এই ঝামেলা।
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৪৯537649
  • কী অবস্থা!!!!
  • হে হে | 2a12:a800:2:1:185:241:208:***:*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৪৩537648
  • সব খুজে পায় সুদু জায়নবাদের টইয়ের লিং খুজে পায় না ছাগুটা। বারবার পেত্যেকবার। বলিচি না মিথ্যেকতায় ২০০য় ৪০০
  • r2h | 165.***.*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৪২537647
    • MP | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৩৯
    • ...টই নিয়ে লিংকটা আরেকবার পাঠানতো l ...
     
    খুঁটে খান।
  • :-) | 2a12:a800:2:1:185:241:208:***:*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৩৯537646
  • সুদু  যে ভাটের সেন্টারস্টেজে লাচবে তাই নয় আবার চারমুখে মিথ্যেকতাও কইবে। এ ছাগু আর ওই সাইকোক্ষেপি দুইই মিথ্যেকতায়  ২০০তে ৪০০।
  • MP | 2401:4900:3148:fa86:ae1b:98fe:a8b9:***:*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৩৯537645
  • @ র২হ , ভালো কথা জায়নবাদের উপরের টই নিয়ে লিংকটা আরেকবার পাঠানতো l সত্যই অনেকদিন আগাছা জমছে ওটাতে l 
  • r2h | 165.***.*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:২৯537644
  • সেকি, না না, আমি আপনাকে বিনীত বা দুর্বিনীত কোন অনুরোধই করিনি। অনেকদিন আগে বোধয় করেছি দুয়েকবার, তাতে কাজ হয়নি, সে তামাদি হয়ে গেছে। 
    আমার দিক থেকে অনুরোধের কোন ব্যাপার নেই, পরিষ্কারভাবেই বলে দিলাম, আশা করি এতে কোন দ্ব্যর্থের অবকাশ নেই।
    আর বাকি অন্যদের কী অনুরোধ করবো বা করবো না, সে নিতান্ত আমার ব্যাপার:)

    ভাটের মঞ্চের কেন্দ্র আপনার আকর্ষনের জায়গা, জায়নবাদ টাদ সেকেন্ডারি ব্যাপার আপনার কাছে, এই আমার অবজার্ভেশন। এতে কোন অনুরোধ টোধের ব্যাপার নেই।

    দু'দু'খানি টইয়ে আগাছা জন্মাচ্ছে, প্যালেস্টাইনের কড়চা আর জায়নবাদ বিষয়ক - তা দেখতে পাচ্ছি!

     
  • MP | 2401:4900:3148:fa86:ae1b:98fe:a8b9:***:*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:০৫537643
  • @ র২হ , আমি নিজে থেকেই আপনারই বিনীত অনুরোধে চুপ করে গেছি l জায়নবাদ নিয়ে অনেক কিছুই বলবার আছে l কিন্তু আপনার অনুরোধেই আমি চুপ করেছি l তা আপনার ক্ষমতা থাকলে এই ভাট টাতে এতোদিন যারা বিদ্ধেষ ছড়াচ্ছে তাদের সেই একই বিনীত অনুরোধ করুননা যেটা আমাকে করেছিলেন ! তাদের একটা সনাতনী টই খুলে সেখানে চলে যেতে বলবার মত সাহস আছে কি আপনার ! 
  • r2h | 165.***.*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:৩৭537642
  • তা এমপিবাবু সেন্টারস্টেজ চলে যাওয়াতেই আপনার জায়নবাদজনিত রোলারুলি ফুরিয়ে গেল? এতদিন যে শুনতাম বাংলাদেশ টাংলাদেশ নিয়ে আপনি বিশেষ কিছু জানেন না, জায়নবাদই দুনিয়ার সব থেকে বড় সমস্যা, বাকি সবই তার কোল্যাটারাল, আজ এক জায়নবাদ টইয়ে শিফট করাতেই সে আউট অফ ভাট আউট অফ মাইন্ড হয়ে গেল, আর পরমাণু যুদ্ধের ভেতরের খবর দুই দেশের সেনাপতিরা আপনার বাড়ি এসে দিয়ে যাচ্ছে?

    তা ভালো, সেনাপতিদের বুঝিয়ে শুনিয়ে শান্ত রাখবেন, আপনিই ভরসা।
  • MP | 2401:4900:3148:fa86:ae1b:98fe:a8b9:***:*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:৩০537641
  • @ প্রবীরজিৎ , এখানে মূল ব্যাপার হচ্ছে সক্ষমতা l সত্যই কি ভারতীয় সেনার সেই ১৯৭১ সালের সক্ষমতা আছে ? সেটাও বড় প্রশ্ন l কার্গিল বালাকোট ডোকলাম পর্যন্ত কিন্তু সেই পরিচয় পাওয়া যায়নি l দেখুন কনভেনশনাল যুদ্ধে এখনো পর্যন্ত মিলিটারী বিশেষজ্ঞরা দুদেশের মধ্যেই মোটামুটি একটা সমতা দেখতে পাচ্ছেন এবং কনভেনশনালী দুইদেশের পক্ষে একে অপরকে সরাসরি যুদ্ধে হারানো খুবই কঠিন l যদি সরাসরি যুদ্ধ অমীমাংসিত থাকে তাহলে অন্ততঃ পাকিস্তানের পক্ষে নিউক্লিয়ার বোমা ফেলবার সম্ভাবনাটুকু অনেকটাই কমে যায় l অবশ্য ময়ূখ রঞ্জন বিপ্লব পাল সুষুপ্ত পাঠক টাইপ অশিক্ষিত সেকথা বলবেনা l 
  • PRABIRJIT SARKAR | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:২১537640
  • @এমপি বিপ্লব পাল যুদ্ধ হলে কি হবে তাই নিয়ে গল্প লিখেছেন। তবে ভারত বেশি কর্নার করে দিলে পাক মিলিটারি মরার আগে মরণ কামড় দিতে পারে।
  • :|: | 2607:fb91:8810:c662:6d3f:15ff:8d3:***:*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:৩০537639
  • এই মুভিটা দেখতে পারেন -- একসময় যাঁরা মুনমুন সেনের ফ্যান ছিলেন তাঁদের জন্য বিশেষ করে 
  • MP | 2401:4900:3148:fa86:ea3e:b5f:f57a:***:*** | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:১৫537637
  • @ প্রবীরজিৎ , আমি যা খবর পাচ্ছি দুদেশের মধ্যে একটা সীমিত মিসাইল যুদ্ধ হতে পারে তবে পরমাণু বোমা এখনো পর্যন্ত ব্যবহার হবার খবর নেই l তবে বিপ্লব পাল যেরকম বলেছেন সেরকম কোল্ড স্টার্ট জাতীয় কিছু হবেনা বলেই মনে হয় যেহেতু স্থলসেনা দিয়ে এবারে হামলা হবার ক্যাপাবিলিটি ভারতের কম l দুদেশের তরফ থেকেই মিসাইল ছোড়া হবে l তবে পুরোটাই নির্ভর করছে মোদীর উপরে l মোদী কিধরনের মিসাইল ছাড়বে, পাকিস্তানের কোথায় ছাড়বে এবং কিরকম ক্ষয়ক্ষতি পাকিস্তানে হবে তার উপরে নির্ভর করছে সব কিছু l 
  • PRABIRJIT SARKAR | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৫৯537636
  • মোদি পাকিস্তান কে ঠিক মত ডিল না করতে পারলে পরমাণু যুদ্ধ হতেই পারে।
  • | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৫৫537634
  • এখানে ইন্ডিয়ান মানে গুজরাটিরা মূলত। কিন্তু গুজরাটে সেই শতাব্দীর শুরু থেকেই অমৃতকাল চলছে, খাঁটি হিন্দু রাজ্য,  তাও তাদের এমন মরীয়া অবস্থা কেন? 
     
  • PRABIRJIT SARKAR | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৫৫537633
  • মহম্মদ রফি সাহেবের গাওয়া এই গানটায় পাকিস্তানের অস্বস্তির কারন হয়েছিল।
    পাকিস্তান সরকার তৎকালীন ভারত সরকারকে এই গানটা ব্যান করে দেবার জন্য চাপ দিয়েছিল।
    আশ্চর্যের বিষয় এই যে তৎকালীন জওহরলাল নেহেরু সরকার এই গানটাকে ব্যান করে দেয়!!!
    এই গানটা হয়তো অনেকেই শোনেননি।
    এই দুর্লভ গানটা মন দিয়ে শোনার অনুরোধ রইল!
  • :|: | 2607:fb91:8810:c662:3d0a:6e07:24d8:***:*** | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৫৩537632
  • সবকিছুই সইত্য। গল্প হলেও সত্যি।
  • b | 42.105.***.*** | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৩১537631
  • অদম্য সেনের গল্পটা কি সইত্য? 
  • পাপাঙ্গুল | 103.24.***.*** | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১১537630
  • রমিত ঠিকই বলেছিলে, যাত্রী সাথীতে ওটিপি বদলায় না :D
  • &/ | 107.77.***.*** | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৪০537629
  • পারলে পিঠে বেঁধে ঘোরে সেই অদম্যের মত 
  • b | 2402:3a80:1c51:4d4d:378:5634:1232:***:*** | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:২০537628
  • মাইরি লোকের কি রেটে পরমাণু  ফেটিশ !
  • PRABIRJIT SARKAR | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০৮537627
  • ভারত পাক পরমাণু যুদ্ধ হলে কী হবে?

    পারমাণবিক উপসংহার

     ( -ভারত পাকিস্তানের মধ্যে নিউক্লিয়ার যুদ্ধ এখন কোন কল্পনা না। একটা ছোট্ট মিসটেক, That's all this will take.  আমি ভাবলাম বহুদিন প্রবন্ধ লিখছি। পাকিস্তান ভারত নিউক্লিয়ার যুদ্ধ কেমন হবে, ভাবলাম সেটা নিয়ে একটা গল্প লিখি । নিউক্লিয়ার যুদ্ধ হলে এমন কিছুই হবে।  বিপ্লব পাল 28 শে এপ্রিল ।)

    (১)
    দিল্লির রাতের আকাশে তখনও মৃদু মেঘের পরত। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের নিচতলার ছোট্ট ডাইনিং হলে ঝিমিয়ে পড়া আলোয় পাঁচটি মানুষ বসে ছিলেন। প্রশস্ত টেবিল। নীরবতার ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝে ভেসে আসছিল থালার পাশে কাঁটাচামচের নরম শব্দ।

    নরেন্দ্র মোদী মাথা নিচু করে চা তুলছিলেন ঠোঁটে, মুখের রেখা শক্ত। তাঁর ডানদিকে বসা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।  একবার তাকালেন তাঁর দিকে, কিছু বললেন না। শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস যেন অদৃশ্যভাবে টেবিলের ওপর ছড়িয়ে গেল।

    NSA প্রধান অজিত ডোভাল, পকেট থেকে একটা ছোট্ট ফোল্ডার বের করে রাখলেন সামনে। কাগজের প্রতিটি পাতায় একেকটা লাল চিহ্ন — স্যাটেলাইট রিপোর্ট। করাচির কাছে নাসর লঞ্চার মোতায়েন হয়েছে। পাক সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কমান্ড সিস্টেমে স্পাইক ধরা পড়েছে। তাপমাত্রা সিগনেচার — ৬টি পয়েন্টে নিশ্চিত পারমাণবিক ওয়ারহেড প্রস্তুতির লক্ষণ।

    মোদি দৃষ্টি সরালেন জানালার কাঁচের দিকে। বাইরের অন্ধকারের ভেতর কি এখনই সরে যাচ্ছে ইতিহাসের পথ? মৃদু গলায় বললেন, "তোমরা নিশ্চিত, অ্যাক্টিভেশন কোড গেছে?"

    ডোভাল কাঁপা গলায় মাথা নাড়লেন। “স্যার, GHQ রাওয়ালপিন্ডি থেকে Strategic Forces Command-এর মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। পাকিস্তানের ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটি তাদের নিউক্লিয়ার স্ট্যাটাস লেভেল দুইয়ে তুলে নিয়েছে।”

    রাজনাথ সিংহ টেবিলের ওপর আঙুল ঘুরাতে ঘুরাতে বললেন, যেন নিজেকেই প্রশ্ন করছিলেন, “আমরা কি আজ রাতেই সেই সূচনা দেখবো? যেটা আমাদের পূর্বপুরুষেরা যুদ্ধের পর যুগে যুগে ভয় পেয়েছিলো?”

    মোদি চুপ করে রইলেন কিছুক্ষণ। তারপর কাঁচের গ্লাসে আঙুল ঘুরিয়ে ঠান্ডা গলায় বললেন, “আমরা চাইনি। আমরা প্রথম আঘাত করবো না। কিন্তু যদি তারা আঘাত করে—"

    তিনি থামলেন। সবার মনে অসমাপ্ত কথার শীতল ধাক্কা। যদি তারা আঘাত করে... তবে, প্রতিশোধ হবে ইতিহাসের মতো নয় — ইতিহাসকে মুছে দেবার মতো।

    মিনিট পাঁচেক পরে পা টিপে টিপে ঘরে ঢুকলো এক সেনা অফিসার, কাঁধের ইন্সিগনিয়া দেখে বোঝা যায় স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ডের প্রতিনিধি। কাগজ এগিয়ে দিলেন। মোদী নিজের হাতে সই করলেন: “Launch Authorization – Deferred Condition Red.” এবার সেই পেপার দ্রুত যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে।

    রাষ্ট্রপতি মুর্মু নীরবে কলম হাতে নিলেন। তিনি জানেন, তাঁর সই এখন কেবল একটিমাত্র কাজ করবে — মৃত্যুর সিলমোহর হয়ে দুনিয়ার বুকের ওপর ছাপ ফেলবে। সই করে ফেরত দিলেন কাগজটি। তাঁর মুখে কোনো আবেগ ছিল না। কিন্তু যদি কেউ গভীরভাবে তাকিয়ে দেখতো, দেখতে পেত, ভেতরে বয়ে যাচ্ছে এক সমুদ্র চাপা কান্না।

    ডোভাল কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠে দাঁড়ালেন। “স্যার, আমরা এখন দুই ঘন্টার মধ্যে Operational Readiness Complete করবো। INS Arihant উত্তর আরব সাগরের নির্দিষ্ট অবস্থানে পৌঁছেছে। INS Chakra দক্ষিণ সীমানায় Standby। সাবমেরিন থেকে K-4 SLBM Ready Status, Surface to Surface."

    মোদি এবার পুরোপুরি সোজা হয়ে বসলেন। অদ্ভুতভাবে শান্ত। যেন সমস্ত মানবিক আবেগ একটা পাতলা পর্দার আড়ালে জমাট বেঁধে গেছে।

    “পাকিস্তান বুঝবে না," তিনি ধীরে ধীরে বললেন, "তাদের এই ছোট Tactical Nukes যদি ভারতের এক ইঞ্চি মাটিতে আঘাত করে... তারা আর থাকবে না। তাদের নাম থাকবে ইতিহাসের বইয়ে—শুধু ‘নষ্ট রাষ্ট্র’ হিসেবে।”

    একটা নীরব বিস্ফোরণ হলো ঘরের ভেতর — কোনো শব্দ নেই, কেবল সিদ্ধান্তের চাপা বিস্ফোরণ।

    ঠিক সেই মুহূর্তে ওয়ার রুমের পাশের কন্ট্রোল সেন্টারে বিপদের ঘণ্টা বেজে ওঠে।
    NASCOM সিস্টেমের ভেতর এলার্ম:
    "Multiple Nasr Launch Detected."
    "Confirmed Trajectory: Indian Armored Divisions."

    ডোভাল ছুটে এলেন ঘরে। “স্যার— ওরা করেছে। তারা করেছে।”

    কিছু বলতে হলো না। প্রধানমন্ত্রীর মুখের রেখা আরও শক্ত হলো। তিনি উঠলেন। ভাজ করে রাখা একটি পুরনো সাদা রুমাল পকেট থেকে বের করলেন, কপাল মুছলেন। তারপর শুধু বললেন: “Begin Shakti-Strike.”

    সমস্ত ব্রিফিং, সমস্ত সভা, সমস্ত আলোচনা— মুহূর্তে শেষ।
    এখন ইতিহাস লেখার সময়।

    গোটা টিম দ্রুত নিউক্লিয়ার শেল্টারের গোপন আস্তানায় দ্রুত রওনা দিল।

    (২)

    ভোর চারটা। দিল্লির আকাশে তখনও নীলচে অন্ধকার। ৭ লোককল্যাণ মার্গের নিচের গোপন কন্ট্রোল রুমে বাতাস থমকে আছে। লাল আলোয় আলোকিত মনিটর স্ক্রিনে ভেসে উঠছে পাকিস্তান থেকে উৎক্ষেপিত তিনটি Nasr ক্ষেপণাস্ত্রের তাপচিত্র।

    স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ডের চিফ জেনারেল চক্রবর্তী এগিয়ে এসে বললেন, "স্যার, তিনটি Tac-Nuke ছোড়া হয়েছে। রেঞ্জ প্রায় ৬০-৮০ কিমি। টার্গেট রাজস্থানের সীমান্তবর্তী মেকানাইজড ইউনিট।"

    মোদি মাথা নিচু করে শুনলেন। তাঁর চোখে তখন কোনও বিচলন নেই। যেন বহু আগেই মনের ভেতর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলেন। ঠান্ডা গলায় বললেন, "BMD cover?"

    ডোভাল সামনে এগিয়ে এসে ইমেজে দেখালেন।
    “স্যার, Ballistic Missile Defence Phase-I operational: দিল্লি, মুম্বই এবং প্রধান সামরিক কমান্ড সেন্টারগুলিতে।”
    তিনি সামান্য থেমে বললেন,
    “কিন্তু Tactical Nasr missile গুলো অত্যন্ত নিম্নপথে (low trajectory) ও দ্রুতগতিতে আসে। প্রচলিত PAD (Prithvi Air Defence) interceptor এগুলোর বিরুদ্ধে সীমিত কার্যকর। Rajputana Sector এর ফ্রন্টলাইন ইউনিটদের উপর কোনও কার্যকর ঢাল নেই।”

    মোদি মাথা ঝাঁকিয়ে জানিয়ে দিলেন — তিনি বোঝেন। সীমান্তের সেনারা প্রায় অরক্ষিত। তাঁদের ভাগ্য নির্ভর করছে আজ সময়ের ইচ্ছার উপর।

    পাকিস্তানের এই Nasr missile — ছোট, স্বল্প পাল্লার, মাত্র ৫–১২ কিলোটন yield। এসেছিল শত্রু সাঁজোয়া বাহিনীকে থামানোর জন্য, নয়ত ভারতের কোল্ড স্টার্ট কৌশল বানচাল করার জন্য। কিন্তু তা-ও অল্প পরিসরের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে। ভারতের বিশাল ভূখণ্ডে তা কেবল সীমান্তের সামরিক ক্ষতিসাধন — কোনো বড় শহর বা command center আঘাত হানার ক্ষমতা ছিল না।

    তবুও, প্রতিশোধ অনিবার্য ছিল। প্রতিশোধ হবে এমন যাতে শত্রু আর কখনো দাঁড়াতে না পারে।

    "Launch Authorisation, confirm," মোদি বললেন, গলায় মরুভূমির রুক্ষতা।

    পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ঘুমন্ত মানুষরা তখনও স্বপ্নের দেশে। আর দিল্লির স্কাই কম্যান্ডে Countdown শুরু হলো।

    উড়িষ্যার কালাম আইল্যান্ড থেকে প্রথম উৎক্ষেপণ-Agni-V, ৫৫০০ কিমি পাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল। একটি Multi-Targeted Re-entry Vehicle (MIRV) ওয়ারহেড ধারণ করে — যার প্রতিটি অংশ আলাদা আলাদা শহরে পড়তে পারে।

    তারপর ছুটে গেল আরো ছয়টি Agni-III মিসাইল, ৩৫০০ কিমি পাল্লার, ২০০–৩০০ কিলোটন yield। টার্গেট: ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি, করাচি, পেশোয়ার, গুজরানওয়ালা।

    একই সাথে পশ্চিম ভারত থেকে একাধিক Prithvi-II ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হলো — ছোটখাটো সামরিক ঘাঁটিগুলোর বিরুদ্ধে। তাদের লক্ষ্য ছিল নিখুঁত: পাকিস্তান বিমানঘাঁটি, রাডার সাইট, আর সেনাবাহিনীর প্রধান গুদামঘর।

    আর জলের নিচে, চুপচাপ শিকারীর মতো, INS Arihant আরব সাগরের গভীরে দাঁড়িয়ে ছিল। সাবমেরিনের ভেতরে টুকটাক যন্ত্রপাতির শব্দ ছাড়া নিস্তব্ধতা।

    কমান্ডার বিক্রম শর্মা কন্ট্রোল প্যানেলের দিকে তাকিয়ে শেষ কোড এনকোড করলেন।

    কিছুক্ষণ পর, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঠে এল K-4 SLBM।
    পাকিস্তানের করাচি বন্দর লক্ষ্য করে ছুটে চললো বিশাল ধূম্রলেখা ছেড়ে। ৩৫০০ কিমি পাল্লা, ২৮০ কিলোটন yield। একবার পড়লে করাচির নৌবন্দর আর জাহাজভরা শিপইয়ার্ড ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।

    পাকিস্তানও চেষ্টার কসুর করেনি। GHQ রাওয়ালপিন্ডি থেকে হুলস্থুলের মধ্যে ছোঁড়া হয়েছিল দুটি Shaheen-II মিসাইল — ১৫০০ কিমি পাল্লার। লক্ষ্য: দিল্লি ও মুম্বই।

    কিন্তু ভারতের DRDO পরিচালিত BMD Phase-I system এই প্রথম তার আসল পরীক্ষায় নামে।

    দিল্লির বাইরে মোতায়েন ছিল AAD (Advanced Air Defence) Interceptors।
    দুটি Shaheen-II মিসাইলকে শনাক্ত করে PAD interceptor (exo-atmospheric kill vehicle) ধেয়ে গেল মহাকাশের কিনারায়।

    রাতের আকাশে হঠাৎ এক ঝলক আলোকচ্ছটা। দূর থেকে যারা দেখছিল, তারা ভাবলো যেন কোন নক্ষত্র বিস্ফোরিত হলো।

    প্রথম Shaheen-II সফলভাবে আকাশেই ধ্বংস । দ্বিতীয়টি trajectory slightly drifted — কনক্লুসিভ kill হয়নি, তবে সেটি দিল্লির বাইরে বিস্ফোরিত হয়। বড় ক্ষতি এড়ানো গেল।

    মুম্বইমুখী একটা Babur cruise missileও ছোঁড়া হয়েছিল করাচি উপকূল থেকে। কিন্তু ভারতের Phalcon AWACS ও গুজরাট BMD radar এটাকে মাঝপথেই ট্র্যাক করে ইন্টারসেপ্ট করে ফেলে।

    ভারতের সমন্বিত প্রতিরক্ষা ভেঙে পড়েনি। সীমান্তের সৈনিকরা রক্ষা পায়নি, কিন্তু ভারতের শহরগুলি টিকে যায়। মুম্বাই ও দিল্লির শহরতলীর কিছুটা ধ্বংস।  এখনো আগুন নেভে নি। নিউক্লিয়ার মেঘ এবং ঝড় আস্তে আস্তে শহরে ঢুকছে। অধিকাংশ শহরবাসী শহর ছেড়ে আগেই পালিয়েছে। তাই ক্ষয়ক্ষতি কম। কিন্ত নিউক্লিয়ার ঝড়ের দাপটে দুর্বল বিল্ডিংগুলো একের পর এক তাসের দেশের মতন ভেঙে পড়ছে। কেউ জানে না কত প্রাণ ওই বিল্ডিং গুলোর মধ্যে নিথর, নিশ্চুপ।

    রাত বাড়ে। ইসলামাবাদের আকাশে প্রথম আঘাত।

    Agni-III ঢুকে পড়ে শহরের ওপরে। রাওয়ালপিন্ডির GHQ মাথার উপর বিকট বিস্ফোরণ হয়, বিস্ফারিত হয় তাপের সমুদ্র। সেনাবাহিনী আর কমান্ড গঠনের কোনও কিছুরই আর অস্তিত্ব থাকে না। যদিও মূল কমান্ড Banker এর  নীচে।

    করাচির বন্দরে যখন K-4 এর ওয়ারহেড পড়ে, পুরো উপকূলীয় শহর একটা আগ্নেয় ছাইয়ের চাদরে ঢেকে যায়।

    পাকিস্তান রাষ্ট্র বলে আর কিছু থাকলো না। শুধু মানুষের কষ্ট বেঁচে।
    পাকিস্তানের মাটিতে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি ছিন্নভিন্ন জীবন।
    আর ভারতের মাটিতে Fallout-ভরা আকাশে কিছু মানুষের পিছুটান-ভরা বেঁচে থাকার সংগ্রাম।

    রুবিনা বশির তার ছোট ভাইকে ধরে বসে থাকে, মাটির নিচের বাঙ্কারে, ছাই পড়া আকাশের ভেতর। তার জানা নেই রাষ্ট্রপতির নাম, জানে না মিসাইলের নাম। সে শুধু জানে আজ রাতে তার চোখের জলে তেজস্ক্রিয় ধুলো জমেছে।

    (৩)
    আকাশ আর মাটি মিলেমিশে গেছে।
    পাকিস্তানের ওপরে একটা ধূসর, ভারী ছায়া ঝুলে আছে — তেজস্ক্রিয় Fallout-এর চাদর।
    ইসলামাবাদের ধ্বংসাবশেষের ওপর, কোথাও কোনো প্রাণ নেই। কংক্রিটের ভাঙা ছাদ, পোড়া গাড়ির ধোঁয়া, ছিন্নভিন্ন পোশাক... আর চারপাশে ছড়ানো মৃতদেহ।

    পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাজনৈতিক শীর্ষে আর কোনো সরকার অবশিষ্ট নেই। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ মারা গিয়েছেন প্রথম বিস্ফোরণের সময়, যখন GHQ রাওয়ালপিন্ডিতে সিডিএন কমান্ড চত্বরে একটি Agni-III ওয়ারহেড আঘাত করেছিল। জেনারেল আসিম মুনির এবং তার স্টাফরা চেষ্টা করেছিলেন GHQ-এর গভীর বাংকারে আশ্রয় নিতে — কিন্তু SLBM K-4-র দ্বিতীয় স্ট্রাইক সেই বাংকারকেই নিশানা করেছিল। কেউ বাঁচেনি।

    পাকিস্তানের যোগাযোগ ব্যবস্থা — রেডিও, টেলিকম নেটওয়ার্ক, সামরিক ফাইবার অপটিক রুট — সব নিশ্চিহ্ন। যা অবশিষ্ট আছে তা হল ভেঙে পড়া ভবন, পোড়া হাসপাতাল, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা আহত মানুষের করুণ আর্তনাদ।

    এক বৃদ্ধ, শ্বেতশুভ্র দাঁড়ি, রাস্তায় পড়ে থাকা একটা ভাঙা পতাকাকে তুলে নিচ্ছেন। সেই পতাকায় এখন আর কোনও দেশ নেই।
    তিনি ফিসফিস করে বলেন, " ইয়া আল্লাহ্,  ,ইয়ে জাহান্নাম হ্যায় ত আপ মুঝে ওর কোনসা দোযখ দিখায়েঙ্গে ?

    দিল্লিতে তখন অন্য দৃশ্য।
    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাদা কাগজের ফাইল হাতে জাতির উদ্দেশ্যে বিবৃতি প্রস্তুত করছেন।
    চোখের কোণায় গভীর ক্লান্তি। যেন ইতিহাসের সব গ্লানি তাঁর কাঁধে এসে জমা হয়েছে।

    NSA অজিত ডোভাল এসে চুপচাপ দাঁড়ালেন। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, “স্যার... Fallout impact report এসেছে।”
    মোদি মাথা তুললেন। চোখের নিচে কালো রেখা।

    “গুজরাট, রাজস্থান, পাঞ্জাবের কিছু অংশ — মাইনর Fallout deposit হয়েছে। মুম্বইতে কালো বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তাপমাত্রা পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ছয় মাসে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমবে। খাদ্যশস্য উৎপাদন কমতে শুরু করবে। ভারতীয় রিজার্ভ ফোর্স ও খাদ্য মজুদ এখনই রিভিউ করা দরকার।”

    রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, সামান্য নীরবতা ভেঙে বললেন, “মানুষ জানে তো, এই যুদ্ধ কেবল আত্মরক্ষার ছিল?”

    মোদি মুখের রেখা কঠিন করে বললেন, “মানুষ শুধু জ্বলন্ত শহর দেখে। তারা সিদ্ধান্তের ওজন বোঝে না।”

    আরব সাগরের ওপারে, ধ্বংস হওয়া করাচির উপকূলে, ছোট মেয়ে সালমার ছাই মাখা শরীর পড়ে আছে। তার ভাইয়ের হাত শক্ত করে ধরা, এমনকি মৃত্যুর পরও। Fallout ধুলো তাদের ঢেকে ফেলেছে।

    কিছু দূরে, পাকিস্তানি সেনার পোড়া ইউনিফর্ম পরে এক সৈনিক হাঁটছে — হাতে কিছু নেই, কোমরে বেল্ট নেই, মুখে কোনো ভবিষ্যতের ছায়া নেই। তিনি কোথায় যাবেন জানেন না। দেশে কোনো সরকার নেই, সেনাপ্রধান নেই, যুদ্ধজয় নেই।

    আন্তর্জাতিক মহলে তখন তুলকালাম। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি অধিবেশন ডাকে।
    আমেরিকা, রাশিয়া, চীন — সবাই তড়িঘড়ি করে মধ্যস্থতার চেষ্টা করে। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে অস্ফুট কণ্ঠে বলেন,
    "Today, we have witnessed the end of reason."

    বিশ্ববাজার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ২০% ভেঙে পড়ে।
    খাদ্যশস্য, জ্বালানি, ঔষধের দাম চারগুণ বাড়ে।
    বিশেষজ্ঞরা ঘোষণা করেন:দক্ষিণ এশিয়ার এই Fallout-Driven Weather Change পুরো পৃথিবীতে আবহাওয়া বদলে দেবে। পারমাণবিক শীত' (Nuclear Winter) এর মতো ক্ষীণ অথচ আশঙ্কাজনক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

    দিল্লিতে, একটি ছোট ঘরে, আকাশ মণ্ডলের বাবা একা বসে আছেন। ছেলের পোড়া পদক হাতে।
    একবার সেগুলো বুকে চেপে ধরে, তারপর তাকান খালি জানালার দিকে। ওপরে এখন কোনো নীল আকাশ নেই — শুধু ধূসর ছায়া।

    তিনি মনে মনে বলেন,
    "তুমি বেঁচেছিলে, যুদ্ধের জন্য। আমরা মরেছি, শান্তির জন্য।"

    মানুষ বাঁচবে। হয়তো বহু ক্ষয়ক্ষতির পর।কিন্তু সেই ছাইমাখা আকাশ, সেই নিঃশব্দ কান্না — রয়ে যাবে ইতিহাসের পাতায়, মানুষের চেতনায়।

    ছোট্ট রুবিনা বশির হয়তো কোনোদিন বড় হবে, হয়তো না।
    কিন্তু যারা ইতিহাস লিখবে, তারা ভুলবে না সেই দিনগুলো —
    যখন মানুষ নিজেদের হাতে নিজেদের পৃথিবী ছাই করে দিয়েছিল।

    পৃথিবীর বুকের ওপর ছাপ পড়ে থাকবে:একটা ম্লান, স্থায়ী, কালো ছায়া।পরমাণু ছায়া।

    (4)
    দশ বছর কেটে গেছে।
    তবুও, দক্ষিণ এশিয়ার আকাশের কোনো অংশে সেই চিরচেনা নীল রঙ ফিরে আসেনি।
    শহরগুলো rebuilt হয়েছে — নতুন রাস্তা, নতুন গাড়ি, নতুন ভবন —
    কিন্তু বাতাসে কোথাও একটি চাপা ধুলোর গন্ধ রয়ে গেছে,
    একটা অদৃশ্য ছায়া যেন ঝুলে থাকে প্রতিটি জানালার বাইরে।

    নয়া দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের পাদদেশে আজ এক ছোট্ট মূক স্মরণসভা।
    গভীর পাণ্ডুর আলোয় কয়েকজন প্রবীণ বেঁচে যাওয়া সৈনিক নীরবে ফুল অর্পণ করছেন।
    তাঁদের কারো ইউনিফর্মের বুকে নতুন প্যাটচ — Fallout Survivor Medal।চোখে লুকানো স্মৃতির সাগর।

    ভারতের সংসদ ভবনে আজকের প্রধানমন্ত্রী — নতুন প্রজন্মের এক নেতা — ভাষণ দিচ্ছেন:
    "শান্তি কেবল চুক্তিতে আসে না। শান্তি আসে স্মৃতির ভার থেকে। ইতিহাসের ছাই থেকে। আমরা আজ এক নতুন ভারত গড়ছি — কিন্তু কখনও ভুলবো না কিভাবে ছায়া পৃথিবীকে ঢেকে ফেলেছিল।"

    রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এখন অবসর জীবন কাটান, ঝাড়খণ্ডের গ্রামে।
    তাঁর হাতে মাঝেমধ্যে কেঁপে ওঠে পুরনো রেডিও, যখন খবর আসে খাদ্য উৎপাদন ফিরে এসেছে, কৃষি ফিরে এসেছে।তবু, তিনি জানেন, হারিয়ে যাওয়া সেই দিনগুলো আর ফিরবে না। তিনি সন্ধ্যায় গাছের ছায়ায় বসে বলেন, “আমরা টিকে আছি। এটাই বড় কথা।”

    পাকিস্তানের ভূখণ্ডে এখন একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা অঞ্চল।
    জাতিসংঘ শাসিত এলাকা, ধীরে ধীরে শরণার্থী শিবির থেকে গড়ে উঠছে ছোট ছোট নগরী।
    কিন্তু রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান আর ফিরেনি।

    নতুন প্রজন্মের শিশুরা তখন জানতে পারে — এক সময় এখানে একটি রাষ্ট্র ছিল, যাদের স্বপ্নের সাথে ধ্বংসের গল্পও জড়িয়ে আছে।

    আর রুবিনা বশির?
    সে বেঁচে গিয়েছিল।
    কাশ্মীরের কোনো গ্রামে এখন সে একজন স্কুলশিক্ষিকা —
    শিক্ষাচ্ছে নতুন ছেলেমেয়েদের কীভাবে চুপ করে নয়, শব্দ করে, সাহস করে ইতিহাসকে প্রশ্ন করতে হয়।

    তার চোখে একটা নিঃশব্দ আকাশের স্মৃতি রয়ে গেছে,
    কিন্তু কণ্ঠে আছে নতুন ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি।

    পৃথিবী এগিয়ে গেছে।
    বড় শক্তিধর দেশগুলো নিজেদের পারমাণবিক ভাণ্ডার কমাতে শুরু করেছে — অন্তত কাগজে।
    কিন্তু ভেতরে ভেতরে, সবাই জানে, পারমাণবিক অস্ত্রের ছায়া কখনও পুরোপুরি মুছে যায় না।
    একটু বৃষ্টি, একটু ঝড়, কিংবা ভুলবশত একটিমাত্র ভুল বোতাম —
    পুরো ইতিহাস ফের ছাই হয়ে যেতে পারে।

    তবুও, মানুষ বাঁচে।
    বসন্ত আসে।
    বাচ্চারা খেলে।
    আকাশে আবার পাখি ওড়ে।

    কিন্তু সন্ধ্যায়, যখন সূর্য নেমে আসে পাহাড়ের পেছনে,
    তখন মাটির কাছাকাছি কোথাও একটা, দেখা যায় অদৃশ্য ছায়া —
    একবার ছোঁয়া দিলেই বুঝতে পারবেন, সেটা ছাই নয়, সেটা স্মৃতি।

    - Biplab Pal
  • কৌতূহলী | 115.187.***.*** | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৫৪537626
  • অনেক ধন্যবাদ @গুরুচন্ডালি 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত