মানুষ , শুধু "মানুষ"
-- জান্নাতুল ফেরদৌস
চুলের সিঁথি ভিন্নদিকে করত বলে আমরা তাদের হত্যা করলাম।
সয়ে নেয়া যায়না এতটা অমিল।
এখন সবাই একই দিকে সিঁথি করে।
কী ভালোই লাগে দেখতে!
কিছুদিন পরে,
বুঝিনা কেউকেউ কেন এমন করে!
কে বলেছে ওদের সবুজ পাঞ্জাবি পরতে ?
সবুজ রঙ আমার দুইচোখে সহ্য হয় না।
পুড়িয়ে মারলাম সব সবুজ পাঞ্জাবি পরিহিতদের।
এখন চারদিক শান্ত।
সবাই একই রকম নীল পাঞ্জাবি'শোভিত।
আহহ কী আনন্দ!
কিন্তু আবারো এ কী?
অনেকেই লাল রুমাল রেখেছে দেখি!
অথচ বলা হয়েছিল হলুদ রুমালের জন্য!
বাধ্য হয়ে আবারো ,করার কি ছিল আর খুন ভিন্ন?
সবকিছু গোছানো আজকাল,
একই সিঁথি, নীল পাঞ্জাবি আর হলুদ রুমাল,
মনে আমার খুশির জোয়ার।
কিন্তু তবুও,
কেউ কেউ পরছে রঙ্গিন উত্তরীয়,
বলা হয়েছিল কেবল সাদা পরা যাবে!
এদের নিয়ে কেউ কখনো কিভাবে শান্তি পাবে?
বেকুবের দল সব ,পরিমিতিবোধ শূন্য।
দুইশ গজফিতে পাঠিয়েছিলাম মেপে বানানোর জন্য,
পাঞ্জাবির ঝুল!
আহহ, কী ভুল;
করেছে এরা সবাই!
কারো মগজেই এক ছটাক ঘিলু নেই।
কারো পাঞ্জাবি হাঁটু ছুঁয়েছে, কারো একটু নিচে,
কারোটা আবার চাপা পড়ছে পায়ের জুতোর পিছে !
ভীষণ রাগে একটা একটা পাঞ্জাবির মাপ নিয়ে ,
ভুলগুলোকে পাঠিয়ে দিলাম গর্দানে কোপ দিয়ে!
হতচ্ছাড়া উল্লুক সব! মানুষ তো নয়, জানোয়ার,
এদের জন্য বিগড়ে যাচ্ছে "সবাই একই" সুর আমার!
হলুদ রুমালের উপরেও নাকি কোন কোন নচ্ছার,
সুতো দিয়ে ফোঁড় তুলেছে "বন্ধ কর অত্যাচার!"
বিশ্বাসঘাতক! জালিম এরা, বিশ্বাস নেই কোন,
লোক পাঠালাম, "সেলাই পারে এমন কয়জন গোণ।"
এতকিছু জানতে নেই, বোঝেনা মূর্খগুলো,
রাতের মধ্যে ঐকয়জন বিদেহী হয়ে গেল!
এরপরে আর কোন রকম রা করে না কেউ,
"সবাই একই" সুরের সাথে নাচে পানির ঢেউ!
সেই পানিতে ছায়া দেখে অনেকে ভুল করে,
আমার তেমন খাটতে হয় না, একে অন্যকে মারে।
নির্ভুল পাঞ্জাবির ঝুল কোনটি, সেই বচসায়,
ষোলজনের লাশ পড়ল , কী নিরুপায়
আমি চুপচাপ দেখলাম, মৃদু হাসিমুখে,
তীব্র সুখে, চাঁদের আলোয় হাঁটলাম!
এই হলো সূচনা, শেষ নেই এর কোন,
এখানে "সবাই একই" হতে হতে মরতে থাকুক,
সবই আমার সুবিধার জন্য!