বিশ্বেন্দু নন্দ নিজের "ইনফারেন্স" হিসাবে লিখেছেন (আমিও মোটামুটি একমত) -
বৌদ্ধদের কেন কোমর ভাঙল বাংলায়
একটা লিখিত ধারনা
কৈবর্তদের ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদের পর পালেরা বৌদ্ধ কাঠমোয় রাষ্ট্র বিপুল বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয় - তার আগেও রাষ্ট্রীয় স্তরে বিনিয়োগ হত কিন্তু কৈবর্তদের সঙ্গে যুদ্ধের পরে বিনিয়োগের পরিমান বিশালভাবে বাড়তে থাকে। পরের কয়েক শতক বিশাল বৌদ্ধ সামাজিক কাঠামো গড়ে উঠতে থাকে পূর্বভারত জুড়ে। ভদ্ররা মঠে চাকরিবাকরি পায় - বিদেশে যায় শিক্ষা আর ধর্মপ্রচারে। এই কাঠামোয় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ আর খুব একটা রইল না - এমনিতেই বৌদ্ধ পন্থ পুঁজি পোষিত। রাষ্ট্র এবং শ্রেষ্ঠী ব্যয় করত। বাংলার রূপা বাগদি রাজা কিন্তু বৌদ্ধ ছিল।
এর সঙ্গে যুক্ত হল আরেকটি বিষ ফোঁড়া। বৌদ্ধ প্রবজ্যার নিয়ম ছিল বৌদ্ধ কোন শ্রেষ্ঠী প্রবজ্যা নিলে তার বিপুল বিশাল সম্পত্তি পাবে বৈদ্ধ মঠ। কিন্তু অ-বৌদ্ধদের তা ছিল না। অবৌদ্ধরা সন্ন্যাস নিলে তার উত্তরাধিকারীকে সেই সম্পদ দিয়ে যেত। ফলে গোটা বৌদ্ধ মঠ ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকে। ঐতিহাসিকভাবেই বৌদ্ধ পন্থ মোটামুটি রাজ ও শ্রেষ্ঠী পোষিত প্রথম থেকেই। যতটা বৌদ্ধদের জনগণমুখী দেখানো হয় ততটা তারা ছিল কি না আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে - নানা বৌদ্ধ সাহিত্য পড়ে এই ধারনা হয়েছে - বৌদ্ধরা জনমুখী এই ধারনাটা ঔপনিবেশিক - এবং নেহেরুর পঞ্চশীলের সময় এই ধারণা জোরদার করা হয় - গণহত্যাকারী অশোক প্রজাপালক হন ইত্যাদি। আদতে বিপুল বিনিয়োগ আসত রাজাদের আর শ্রেষ্ঠীদের থেকে। গৌতমের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা কোন কোন শ্রেষ্ঠী ছিল দেখুন - গোটা বিশ্বে বৌদ্ধপন্থ রাষ্ট্র আর শ্রেষ্ঠীদের মাধ্যমে ছড়িয়েছে, মূলত ব্যবসার দ্বারা।
তো যে সব বাঙালি শ্রেষ্ঠী বৌদ্ধ ছিল তারা মঠের এই প্রবজ্যা নীতির বিরুদ্ধাচরণ করতে লাগল। তাদের প্রবজ্যায় উত্তরাধিকারীরা কিস্যু পাবে না অথচ তাদের বিপুল বিশাল সম্পত্তি মঠ পাবে এটা তারা মেনে নিতে পারছিল না। নানান বণিক বৌদ্ধ পন্থ ছাড়তে শুরু করে। বেনের মেয়ে উপন্যাসে এই বিতর্কের কিছুটা আঁচ পাবেন।
রাষ্ট্র আর শ্রেষ্ঠী এই দুই বিপুল বিশাল সম্পত্তি পেয়ে জনগনের থেকে বিচ্ছিন্ন বৌদ্ধপন্থ আরও বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করে। তারপর বৌদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনায় মেধার মত মধ্যবিত্তিয়-আভিজাত্যময় ইত্যাদি ধারণার একটা ঝামেলা ছিল। নালন্দায় জানি মঠগুলিতে ছেঁকে নেওয়া হত ছাত্রদের - সেখানে মোটামুটি ভদ্রবিত্তদের প্রবেশাধিকার ছিল কারণ তারা সেখানে ঢোকার জন্যে বিধিবদ্ধভাবে পড়াশোনাটা করতে পারত - ঠিক আজকে নানান মিশনে যা বাংলায় ঘটছে - পরীক্ষা নিয়ে প্রবেশ ইত্যাদি। এতে সাধারণের থেকে আরও বিচ্ছিন্নতা বাড়ে বৌদ্ধদের। শ্রেষ্ঠী আর রাজারা যখন বৌদ্ধ মঠগুলির পৃষ্ঠপোষকতা থেকে সরে গেল তখন আর এই বিশাল বিশাল কাঠামোর বাঁচিয়ে রাখার বিনিয়োগ আর এল না। জনগনও সঙ্গে নেই প্রায়। আর স্থানীয় জনগণের বিনিয়োগে এই বিপুল বিশাল কাঠামো চলা মুশকিল।
ফলে যদি ধরেও নি তুর্কি আগ্রাসনে বাংলায় বিপুল বৌদ্ধ কচুকাটা হয়েছে(যা সম্পূর্ণ অনৈতিহাসিক - যতটা বলা হয় ততটা নয়, হয়ত নয়ই, হলেও অস্ত্রের নিচে কোনও ধর্ম দাবিয়ে রাখা যায় না এটা বিশ্বজুড়্বে প্রতিষ্ঠিত, শিখেরা সে যুগের শক্তশালীতম রাষ্ট্র মুঘলদের সঙ্গে অদম্য যুদ্ধ করে রাজত্ব তৈরি করেছে), কিন্তু তারপরেও তো সে ধাক্কা সামলে নিতে পারত তারা - যদি জনগণের পৃষ্ঠপোষকতা থাকত। আর জনগণের পৃষ্ঠপোষকতায় এই অগণিত বিশাল কাঠামো বাঁচানো যায় না। সেটা কিন্তু এক্কেবারেই পারল না। মনে রাখুন নতুন সময়ে কলকাতায় সিংহলিরা বৌদ্ধ সংগঠন মহাবোধি সোসাইটি তৈরি করেছে - বাঙালি বৌদ্ধদের সেই কোমরের জোরটা ছিল না।
বৌদ্ধদের আজকে বাংলার সিপিএমের মত অবস্থা হল। কিছু গেল মুসলমান সমাজে আর কিছু গেল অমুসলমান সমাজে। আর যারা পড়ে রইল তাদের আজ এই মলিন চেহারা দেখি আমরা। আজ ভারত জোড়া বৌদ্ধ মঠগুলিতে সাহায্য করছে কিন্তু কোরিয়া জাপান।
(এই ধারণাটা কিছুটা করেছি দেবীপ্রসাদ-অলকা চট্টোপাধ্যায়ের ৮৪ সিদ্ধর কাহিনী বই থেকে আর কিছুটা কারিগর হকারদের সঙ্গ করে)
বইকতকে ক। পুরো বৌদ্ধধর্মে একটাই রিলিফ সিন, সুজাতার পায়েস খাওয়ান। হিন্দু পুরাণে দেখুন, ইন্দ্রর দরবারে আইটেম নাম্বার লেগেই আছে। ঠিক আছে, পুরাণকে জাতকের সঙ্গে ক্যানসেল করে দিলাম। ইভেন যাগযজ্ঞেও সোমরস-টোমরসের ঢালাও বন্দোবস্ত। যীশুসায়েবও জল-টল ধরে মদ বানিয়ে দিত। ধর্ম হো তো আ্যয়সা।
ইসে, রামকিষ্টর বাণী কালেকশান শ্রীম'এর লেখা শ্রীশ নয়
গত ত্রৈমাসিক ইউ এস এর জিডিপি গ্রোথ কমেছে ১০শতাংশ মতো, ই ইউ র ১১ শতাংশ,ইউ কের ২০শতাংশ,জাপানের ২৭ শতাংশ আর চীনের বেড়েছে ৩ শতাংশ!
সংসারে নিজের কিছু নেই রে পাগলা।নেই বস্ত্রে এসেছিস,নেই বস্ত্রে যাবি।যতোই ট্যান্ডাই ম্যান্ডাই করিস না কেনে? যতোই স্টিভ জোবস, বেজস, যুকের বার্গ বা আম্বানি হোস বা না হোস। টাকা পয়সা ছেড়ে দে, বিট কয়েন জমা।
ট্রাম্প।
আমি চাট্টি শাঁসালো ভক্ত পেলেই বৌ স্বামী পুত্র ছেড়ে "কা তব কান্তা, কস্তে পুত্র" জপতে জপতে মোক্ষর খোঁজে বেরিয়ে পড়তে পারি। সন্ধানে ভাল ভক্ত থাকলে খপর দিবেন।
শেষ এ বইপত্র ছেড়ে চালু ওয়েব সিরিজ!! খাইসে।
হ্যাঁ, ওগুলো আলাদা করে বুদ্ধিস্ট আইডিয়া ব্র্যাকেটে আলচনা করুন কোন চাপ নেই। ধরুন হুট করে আমি যদি " রূপম শুন্যতা শুন্যতা রূপম " নিয়ে কথা শুরু করি, সে ত সাংঘাতিক তত্ব কিন্তু আদউ সারিপুত্ত কে বলা হয়েছিল নাকি, বুদ্ধিস্ট স্কুলের কোন স্কলার আরও খানিক এগিয়ে এই উপলব্ধিতে আসছেন সেসব এম্পিরিসিজম এর চাপ নেওয়া নিতান্ত সময় নষ্ট। কারন ওই তর্ক আদতে মানবসভ্যতার কনশাসনেস এর ইভলিউশনের তর্ক যেখানে মহানিরবানতন্ত্র ও আসবে। শংকর আসবেন নাগার্জুন ও আসবেন।কিন্তু সবাই স্কলার হিসেবে আসবেন প্রিচার হিসেবে নন।
আপ্নি যতবার " বুদ্ধদেব" কে টানবেন সেই তর্ক কিন্তু আবার বুদ্ধা দ্য প্রিচারের গপ্প এবং সেখানে লোকে তার কাষায় ধরে টানবে এবং রামদেব বাবা ইত্যাদি অনভিপ্রেত তুলনা ও আসবে।
দুটো জায়গা আলাদা রাখলেই চাপ নেই। আশা করি বুঝতে পারছেন কী বলতে চাইছি। ঃঃ)
গ্লোরিফাই করবেন কি না,সেটা ফলোয়ারস দের ব্যাপার।নির্ভর করে একটি দেশ বা অঞ্চলের সামাজিক কাঠামো কি রকম তার ওপর।
আমাদের হিন্দু প্রধান দেশে বিয়ে একটি কঠিন বন্ধন।অর্থাৎ বিয়ে করা মানে আজীবন বউ বাচ্চার দায়িত্বে থাকা।এ ভাবনায় কোন অন্যায় নেই।এতই সুদৃঢ় ভাবনা,যে পুরুষোত্তম রাম এর স্ত্রী কে ত্যাগ বা চৈতন্যের স্ত্রী কে ত্যাগ করা কে মানতে পারে না। অর্থাৎ এই পরিবার ত্যাগ করার বিষয় টা নিয়ে ধন্ধে থাকে।
এদিকে সন্যাস গ্রহণ কিন্তু হিন্দু ধর্মের পরিচিত কাস্টম বহু হাজার বছর ধরে। সেদিক থেকে রামকৃষ্ণ কে সমাজ কর্তব্য না পালন করার দোষে দুষ্ট করে না।বৈবাহিক সম্পর্ক পালন না করলেও,তিনি স্ত্রী বিচ্যুত হন নি।
মুসলিম বা খ্রিস্টান সমাজে বোধ হয়,স্ত্রী পুত্র ত্যাগ জিনিষ টিকে বিরাট খারাপ বলে দেখা হয় না।
বুদ্ধিজম এ গ্লোরিফাই করা হয়, কৃচ্ছসাধন এর দিকটা। স্ত্রী পুত্র ত্যাগকে এটার পার্ট হিসাবে দেখা হয়। তাই অমন টি বোধ হয়।বাস্তবিক ছবি হলো,বুদ্ধদেব সম্ভবত রিগ্রেট করেছেন,তাঁর জীবনের এই অংশটির জন্য।
এ নিয়ে পরবর্তীকালে হয়,কিছু চিত্র,শিল্প চর্চাও হয়েছে। অজন্তা তে এমন একটি ছবি নিয়ে একজন সম্প্রতি গুরুর টই তে লিখেছেন। নিশ্চয় মানুষের মনের দ্বন্দ্ব থেকেই এমন শিল্প সৃষ্টি।
"বুদ্ধিস্ট আইডিয়া অফ সেল্ফ নিয়ে কথা বল্লে"
নন-সেলফ (অনাত্ত), তার সঙ্গে অনিত্য, তার সঙ্গে দুঃখ! তিলক্ষণ!
:-)
তার নিউরোলজিকাল কোরিলেশন নিয়ে আলোচনাটা বরং একটা টইয়ের জন্য তোলা থাক।
ওগুলো বুদ্ধের নিজের কোয়েস্ট এবং বড়জোড় আর কয়েকজন হাতে গোনা ডিসাইপল এবং পরবর্তী বুদ্ধিস্ট স্কলার দের চর্চার এরিয়া। সেই সময়ে সমাজের এফ্লুএন্ট অংশ কেন আকর্ষণ বোধ করে সেই জায়গাটা বলছিলুম।
এ বাদে, বুদ্ধিস্ট আইডিয়া অফ সেল্ফ নিয়ে কথা বল্লে প্রেসেন্ট নিউরলজিস্ট দের বক্তব্য ও এসে পড়বে এবং বুদ্ধিস্ট কনশাসনেস এর ধারনা আধুনিক ধারনার সংগে এক না হলেও এলাইন্ড, কিন্তু সেগুলো কতটা বুদ্ধ নিজে আর কতটা বুদ্ধিস্ট স্কলার দের চিন্তার অবদান সে ত এই সময়ে বসে বলা সম্ভব নয়, এবং সেই আলচনার প্রেক্ষিত টা আলাদ।। এখানে বারবার, বৌদ্ধধরম প্রচারের সামাজিক - অরথনৈতিক পুরবশর্ত নিয়ে কথা উঠছিল তাই গিল্ট এন্ড লিবারাল ক্যপিটালিস্ট ইডিওলজির জায়গায় জোর দিয়ে বল্লুম। বাকী অবদান কে অস্বীকার করি এমন না।
sm একটা কেস দেখান যেখানে বৌ স্বামী পুত্র ছেড়ে তপস্যা করতে চলে গেছিল আর ভক্তরা সেটাকে গ্লোরিফাই করে। সমস্যাটা বুদ্ধর ঘর ছাড়া নিয়ে নয়, এখনও সেটাকে গ্লোরিফাই করা নিয়ে।
"বুদ্ধের কেসটা কেন আলাদা হবে ?"
বু্দ্ধদেবের হেজিওগ্রাফি , গুচ্ছের হয়েছে।
তবে সবটা নয়।
সঙ্ঘের প্রথম দিকের কাহিনি এবং স্ট্রাগল ভালো ভাবেই লেখা আছে, অতিরঞ্জিত নয়। কারণ সেগুলো যাঁরা লিপিবদ্ধ করতেন, তাঁরা ভুক্তভোগী। বুদ্ধদেবকে অন্যভাবে ভক্তির চোখে দেখানোর ট্র্যাডিশন বহু পরে এসেছে।
কেন ছাড়লেন ঠিক লিখেছেন। অর্থাৎ ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের আগে বলে চন্ডাশোক ধর্মাশোক হয়েছিল। কারণ তখন যুদ্ধ মানে শুধু লস। এখন হলে ধর্মাশোক চন্ডাশোক হত এবং যুদ্ধে গিল্ট ফ্রি হয়ে অস্ত্র বেচে টাকা কামাত। :-)
আরে এতো জটিল ভাবে ভাবেন কেন?চিন্তা করুন সহজ ভাবে।
ধরা যাক যীশু খ্রিস্ট।তাকে কি দেশের রাজা সাপোর্ট দিয়েছিল?বরঞ্চ ক্রুশ বিদ্ধ করেছে।
এবার ধরুন রামদেব।তাকে কংগ্রেস সাপোর্ট দেয়নি,বিজেপি দিয়েছে।প্রশ্ন হলো কেন?
যীশু,হজরত,বুদ্ধ সবার ফ্যান ফলোয়ার প্রচুর।দিন দিন বাড়ছে।দেশের রাজা দুটো নীতি নিতে পারে। হয় এঁদের একসেপ্ট করে সাপোর্ট করো অথবা মেরে ধরে তাড়িয়ে দাও।প্রথম টাই বিচক্ষণ শাসকের কাজ।এতে করে প্রজারা ধন্য ধন্য করবে।রাজা আমাদের দলে।কি মজা!
এবার আসি বুদ্ধের স্ত্রী পুত্র ত্যাগে।আরে মশায়,আপনি এতো বিচলিত কেন?কারণ নাস্তিক হলেও,স্ত্রী পুত্র সম্পর্ক কে আপনি পবিত্র মনে করেন।অর্থাৎ বিয়ে করলেই সব দায়িত্ব নিতে হবে।
কিন্তু আধুনিক সমাজে লিভ ইন্ রিলেশন এর ক্ষেত্রে,আপনার যুক্তিই পাল্টে যায়।অর্থাৎ এই রিলেশনে,বাধ্যবাধকতা নেই।প্রয়োজন মিটলে,যে যার পথ দেখো।তখন কোন অন্যায় খুঁজে পান না।কিন্তু বুদ্ধের বেলায়,সেটা ঘোর অনাচার।
আর একটু বিশদে দেখি।যে লোকটি বৈজ্ঞানিক সে আত্ম চিন্তায় মগ্ন।বউ,বাচ্চা তাঁর চিন্তার মধ্যেই আসে না।কারণ গবেষণা তেই তাঁর সিদ্ধি লাভ।
বুদ্ধ দেবের মতন লোকজন কে বুঝতে গেলে,নিজেকে সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।ইনি ও একজন গবেষক বা সাধক।জীবনের পরম সত্য জানার জন্য নিবেদিত প্রাণ। এঁদের চিন্তার পরিসরে ফ্যামিলি আসে না। চৈতন্য দেবের আসে নি,রামকৃষ্ণের আসে নি। এগুলো এঁদের জীবনে অবশ্যম্ভাবী ঘটনা।
"যেটা দুরলভ যে কোন সামাজিক বা চিন্তার ইতিহাসের লীগাসি সেই লোকটি কে ওরকম নৈর্বক্তিকতাবাদী অথচ কম্প্যাশনেট উপলব্ধির দিকে ঠেলে দিল?? "
সেইটা বলুন!
তবে "গিল্ট এর থিয়োরীটা" অতিসরলীকরণ হয়ে যাচ্ছে। সেটা হলে দ্বাদশ নির্দানচক্রের ব্যাখ্যার হিসেব মেলে না। শুধু সেইটা হলে অলর কলম আবার সেখানেও হল না, উদ্দক রামপুত্তের কাছে ধ্যান শেখার প্রয়োজন হয় না, অন্য নন স্পিরিচুয়াল পথ নেওয়াই সঙ্গত হত |
লরেনের কথা উঠছে তুলনায়? লরেন তো বউ বাচ্চা ফেলে রেখে জঙ্গলে ছ'বছর তপস্যা করে অস্থি চর্মসার হয়নি|
সিদ্ধার্থ গৌতমের জীবনের যে গল্পগুলো জানা আছে, একটু ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখুন | একজন মোটামুটি সমাজের নেতা শ্রেণীর যুবক (আমি রাজপুত্র ব্যাপারটা যদি নাও ধরি), সে রীতিমত সব কিছু ছেড়ে দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে, কিসের খোঁজে? এবং তার পরবর্তী ছ-টি বছর সে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, পাঁচজনের সঙ্গে মিলে মেডিটেশন করছে, একসময় তারাই তাকে ত্যাগ করছে কারণ সে যতটা কৃচ্ছসাধন করার করল না বলে, তখন সে একা। এর পর সে আবার ফিরে আসছে | প্রথমে পাঁচ জন, তার পর পাঁচ থেকে আরেকটু তার সংঘের জনসংখ্যা বাড়ছে, এর মধ্যে কোথাও কিন্তু "করপোরেট স্পনশরশিপের" গল্প নেই। সে হবে বহু বছর পরে, অনাথপিণ্ডদের ভাই যোগদান করার পরে। এর মধ্যে তাদের চলে কি করে? লোকালয়ে গিয়ে খাবার ভিক্ষা করে নিয়ে আসে, কেই বা দেবে? তখন গৃহীদের ধর্মকথা শোনানো হয়। সেখানেও লোকে যা তা অপমান করে। এবং সে এক জায়গায় থাকে না, স্বভাবতই, তাকে জঙ্গল থেকে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে হয়। কখনো লোকালয়ে, কখনো জনপদে। সারাদিনে একবেলা আহার জোটে কি জোটে না।
কেন?
এখানে কাউকে গ্লোরিফাই করা হচ্ছে না, কিন্তু আজকে পাশ্চাত্য বৌদ্ধধর্ম দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যাবার আগে, থিওরি বিস্তার করার আগে একটু পিছন ফিরে তাকানো যেতেই পারে।
মহামতি অশোক কে কে প্রভাবিত করেছিল? কলিঙ্গের রণক্ষেত্রে বাপ মা হারানো মুণ্ডিত মস্তক সংঘে আশ্রয় নেওয়া বালক যে গান গেয়ে পথ চলছিল?
সিদ্ধার্থ স্বয়ং কিসে প্রভাবিত হয়েছিলেন?