না, তা কেন হবে। ওই জন্যেই তো বললাম, উদ্বর্তন হয়ে ইত্যাদি। সময়ের সঙ্গে অভিযোজন করে টরে।
এবার, ওসব জিনিস নিজের স্রোত হারিয়েছে, তাই এগোতে পারেনি, পাল্টাতে পারেনি, আজকের দিনে অচল এবং সেসবের কোন আবেদন নেই, আগে কী সুন্দর ছাড়া।
তার বদলে ওই শহুরে সংস্কৃতি যার প্রকৃতিগত ভাবে শিকড় থাকার কথাও নয়, সেসব গজিয়েছে দেশজ উপকরণের বদলে মুষ্টিমেয় আলোকপ্রাপ্তর ডিস্ক্রিশনে।
তাই বলে আমার নগর ছেড়ে অরণ্যে যাওয়ার কোন বাসনা নেই অবশ্য।
হ্যার, কে বলে লেখা যাবে না! লোকে প্রশংসা করে য্যামন ফাটিয়ে দিচ্ছে তেমনই নিন্দে করেও গুচ্ছ লিখচে। মাঝেমধ্যেই এই কথা শুনি যে লোকে নাকি দাবী কচ্চে যে 'পেরাইজ' পেয়েছেন বলে লেখা যাবে না। এইসব দাবী কোথায় কে কচ্চে! আর করলেও সেসব পাত্তা দিচ্ছে কে! বিবিধ গালমন্দ (মুখোশ খুলে নেওয়া আর কী!) তো হামেশাই হচ্ছে, পাল্টা আবার সেসবের নিন্দে মন্দ হচ্ছে। মানে, এ আর নতুন কী! হাজারটা মিডিয়াম, লেখার অপশন প্রচুর, শোনার লোকও অনেক। নিদেন ঐ বিপের নির্মোহ ব ই তো বোধহয় প্রায় বছর দশেক হতে চলল।
বি, জানলে হতাশ না খুশি হবেন জানি না তবে অমল ঘোষের বইটা প্রতিভাস থেকে ফের প্রকাশিত হয়েছে। ওই রকমের একটি খাজাস্য খাজা বই কেন ফের প্রকাশিত হল সেটাই এক রহস্য!
যাঁরা আমাকে লেখা নিয়ে উৎসাহ দিলেন তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ তাঁদেরকেও যাঁরা উৎসাহ দিলেন না।
অরণ্য, আমার প্যাশন ব্যক্তি নিয়ে নয়। উক্ত ব্যক্তি যে সময়টায় বিচরণ করছেন বা করেছেন সেই সময়টাকে নিয়ে। ওই সময়ে সেই ব্যক্তিকে ঘিরে থাকা অসংখ্য ছোট-বড় চরিত্র এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তিটিকে সেই সময়ের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে একটা মূল্যায়ন করার অক্ষম চেষ্টা।
আমি সাহিত্যের ছাত্র। ইতিহাসের দৌড় আমার মাধ্যমিকেই শেষ। কিন্তু বর্তমান সময়ে ইতিহাসের যে অহরহ বিকৃতি ঘটে চলেছে আমাদের দেশে এবং তার সঙ্গে যেভাবে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে ব্যক্তিপুজোর ধুম; আমার অবস্থান তার বিরুদ্ধে। আমার যেমন খুবই ইচ্ছে আছে ১৯৪৬-৪৭এর টালমাটাল সময়টাকে খুব বড় ক্যানভাসে ধরার।
আর অসীম রায় এবং সমর সেন আমার প্রায় ৩৪-৩৫ বছরের দুর্বলতা। জানি না কোনও দিন তাঁদের নিয়ে কিছু লিখে উঠতে পারব কি না। তবে চেষ্টা করে দেখতে দোষ কী?
জয়তি
জয়তি মাঝে মাঝে অদম্য আকর্ষণে সরিয়ে তোমার মুখ দেখেছি ক্লিষ্ট মুখ যমের দক্ষিণ দুয়ারে নেমে তারপর অসাড় সন্দিগ্ধ মনে শুয়ে থেকে ক্ষয়ের আশঙ্কা আর দেহশক্তি অপাত্রে ঢালার অসন্তোষ নিয়ে হাওয়ায় ওড়া পর্দার ফাঁক দিয়ে দেখি পাশের দোতলা বাড়ি বিড়ালের মতো গুড়ি মেরে চলা ভাম পাঁচিলে পাঁচিলে অব্যর্থ চাঁদখেকো পাতা বিজ্ঞানের সুস্থির নিয়মে গৃহস্থের ছোট শিশু কেঁদে চলে একঘেয়ে একসুরে সাময়িক যতি সহর্ষে হরিবোল প্রেমহীন গতি।
একটু ধাতস্থ হয়ে আবার মেলেছি চোখ
এবং চেয়েছি যখন সামান্য উঁচুতে বিস্ময়ের
বাঁধ ভেঙ্গে গ্যাছে ধূলিধূসরিত পৃথিবীর সুজলা
অসফল স্নেহময় বিশুষ্ক গল্পগুলি লেগে আছে
আলগোছে আকাশের ঠোঁটে ঐ তো মিশরের স্পেনের নেপাল তিব্বত বা হালের হিরাঝিলের গুপ্ত রেখাচিত্ররা প্রকট হয়েছে আর সরল ভাষ্যে ডিকোডিং পৃষ্ঠপোষক ছাপার অক্ষর পাওয়ার জন্যে প্রণতি মিনতি।
অভিযান শেষ ক'রে শৃঙ্গ বিজয় ক'রে আবার সেই চাল ডাল থলে টুটাফুটা এ.টি.এম কার্ড পে. টি.এম ওয়ালেট রোগ নিয়ে বিব্রত কমিটি রিপোর্ট বিধ্বস্ত সভ্যতা তবুও জয়তি পুরোপুরি নিষ্কাম পথ নেই রাতে কিছু রাত ঘুরে আসে ফিরিঙ্গি সেনার বেশে এই আমি ঝ'রে পড়ে বিস্ফোরণের সাথে গুঁড়ো হয়ে আলাদা জগতে।
তুমি পারো কণা জুড়ে মানুষ বানাতে।
তুমি পারো কণা জুড়ে প্রেমিক বানাতে।
হীরক রায়চৌধুরী
বন্দনা
নেশা করে লিখছে কেউ কেউ
কোনো কোনো জগত ফসফরাসের
মতো জ্বলজ্বলে চোখ নিয়ে
গয়ালিদের অভয়দান করছে
সুতরাং পছন্দসই মাছ মাংসের
টুকরো আখরোট খেজুর ঝকমকে
ঝরনা ধোয়া কাচের আভিজাত্য যে
যেরকম চাচ্ছে সেইরকম-ই পাচ্ছে
কেউ কেউ মাথার কোশে কোশে
নেশাদ্রব্য নিয়ে কাজ করে চলেছে
সম্মাননীয়রা তাকে অকাজও বলতে পারেন
ফরমাশমতো সবাই পাচ্ছে না যে যথাযথ বন্দনা
করে চাচ্ছে সে-ই পাচ্ছে
গয়ালি-গয়ার পুরোহিত হীরক রায়চৌধুরী
সময়
তেড়েফুঁড়ে উঠে এলো বাঘ
সাধুর হাতের চেন ছিঁড়ে
ধার্মিক কমলা কাপড়ের
শান্তি রুমাল বানিয়ে
নাক মুছে ঝেড়ে মহাথেরের কোলে
ছুঁড়ে ফেলে উৎকৃষ্ট গর্জনে
পালিত কুকুর বাঘ হ'ল
অকৃপ নির্দিষ্ট সময়ে।
বিদেশের প্রতিনিধির রোমাঞ্চিত
বিক্ষিপ্ত আদরে মাধুকরী কম
নয় বরঞ্চ প্রয়োজনের চেয়েও বেশি
খাবার খুড়োর কলে বাঁধা
বাঘ হ'ল পালিত কুকুর আবার
অকৃপ নির্দিষ্ট সময়ে।
হীরক রায়চৌধুরী
পাত্তা
সিংহাসনের পাশে কেশবতী রাণী
রাজার গায়ে চামরের যে বাতাস
লাগে তাতে নারী গদ-গদ আহ্লাদে
উপপ্লবের উপচয় নেই পথে কুয়োর
ব্যাঙেদের আলোচনায় অথবা শজারুর
কাঁটায় যদিও প্রহরীদের অক্ষকূট সজাগ ছিল
বিমর্ষ ভুয়ো কবি পাওয়ার লোভে
কৃষিজীবীর গানে পরাবাস্তবতার মন্ড
পাকিয়ে পিন্ডদানের আন্তরিক ইচ্ছায়
ই-পাস পেয়ে গিয়েছিল প্রায় কিন্তু ঐ
যে অভিজ্ঞ ভয় জীব মাত্রেরই হয় রাজার
শাসনে বিলাসব্যসনে তাই পাত্তাই পেল না
অবরুদ্ধ দেমাকে অন্য পথ দেখল সে
প্রথমে শুঁড়িখানায় তারপর অজানা ফুলের
বনের অদ্ভুতুড়ে কান্ডকারখানায়
হীরক রায়চৌধুরী
**কলঙ্কিনী
দু, উরিবাবা ১৮৬০-৬১ তে চরিত্রদের যা সাজগোজ, পোশাকের বাহার-গবেষণা টিমের সবার কান মুলে দিলে ভালো হত। সংগে মাঝেমাঝেই 'কলঙ্কিণী রাধা'...আমারই কি এমন লাগলো?
বুলবুল কেমন লাগল? আমার তো মনে হল নষ্টনীড়, যোগাযোগ, ঘরেবাইরে, পেত্নী সব মিশিয়ে একটা ইসেমত..
শেষ দৃশ্যে বাড়ির উঠোনে কাশের বাহার দেখে ইচ্ছে করছিলো ইউনিকর্নে চড়ে একটা কাস্তে নিয়ে প্রাসাদের উঠোন টা নিড়িয়ে দিয়ে আসি
হুতো, প্রথম কমেন https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=13484&page=1
খুব জানি। বিপ্পালের সঙ্গে এইমাত্র পলাশি নিয়ে একচোট ঝগড়া করে এলুম!
অরণ্য, একটা কথা খুব খোলাখুলি স্বীকার করা ভালো। আমি টুকটাক লিখতাম। এখানে নানা আলোচনায় অংশ নিতাম। পাই আমাকে একপ্রকার জোর করেই ব্লগ অ্যাকসেস দেন। আমি জানি না কেন উনি এটা আমাকে দিয়েছিলেন। তখনও অবধি আমার লেখালেখির নির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনা ছিল না। পরে মনে হল, ব্লগ যখন একটা আছে সেখানে বছরে একটা লেখা মানে বড় লেখা লেখাই যায়। সেটা কেউ পড়ল কি পড়ল না; প্রশংসা করল কি উপেক্ষা তাতে আমার বয়ে যায়। কিন্তু কাজটা ডকুমেন্টেড হয়ে থাকুক। ফলত আমার এই পরিশ্রমের একমুখিনতার পেছনে সমস্ত কৃতিত্ব পাই-এর। এই পরিশ্রমের সঙ্গে আমার যশের আকাঙ্ক্ষার কোনও সম্পোক্কো নেই। যেটা আছে সেটা হচ্ছে বিষয়টার প্রতি আমার নিখাদ প্যাশন।
"ঠিক যেমন কে কী নিয়ে লিখবে, সেটা যার লেখা তার ওপর ছেড়ে দিলেই হয় না?"
এও তো আবার অতি হক কথা। কিন্তু কেউ কি তার থেকে অন্য কিছু বলেছে?
না, আমার নির্মোহ ব নামটা শুনলেই গা গুলায়। খিল্লির জন্য নির্দিষ্ট ওটা। তিনটে বিবেকানন্দ টই হয়েছিল সাকুল্যে। প্রথম দুটো পাতে দেওয়ার অযোগ্য। তৃতীয়টায় দীপ আর দুখে বেশ ভালো লড়াই করেছিলেন। এছাড়া আর কোনও লেখা আমার নজরে আসেনি।
একদম। ঠিক যেমন কে কী নিয়ে লিখবে, সেটা যার লেখা তার ওপর ছেড়ে দিলেই হয় না?