এলেবেলের এই ২৩ঃ২৪ এর মন্তব্যে আদ্যন্ত সমর্থন রইল।
বড়েস, আমিও যে সাহিত্য খুব একটা পড়েছি তা নয় কিন্তু বাংলা সাহিত্য যে অতি মাত্রায় ইংরেজি সাহিত্য (পাশ্চাত্য সাহিত্য আরেকটু বড় ব্যাপার) প্রভাবিত সে কথা বর্ণে বর্ণে সত্যি। এবং এটাও হচ্ছে আমাদের ঔপনিবেশিক মানসিকতার ফসল। এই যে অর্জুন লিখেছে ইংরেজরা অত্যন্ত শিক্ষিত, সংস্কৃতিসম্পন্ন জাতি সেখানেও ওই উপনিবেশবাদ ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে কোথাও।
আগেকার দিনে মধুসূদনকে বাংলার মিলটন, বঙ্কিমকে বাংলার স্কট, রবীন্দ্রনাথকে বাংলার শেলি ইত্যাদি প্রভৃতি অভিধায় ভূষিত না করতে পারলে বাঙালির ভাতঘুম সম্পূর্ণ হত না। এখন ওসব বলা ঘুচেছে ঠিকই কিন্তু ধারাটা রয়েই গেছে। প্লাস তিরিশের পঞ্চপাণ্ডব মানে অমিয়-বুদ্ধদেব-সুধীন-বিষ্ণু-জীবনানন্দ বা অমিয়কে বাদ দিলে সমর সেন - এঁরা প্রত্যেকে ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র বা অধ্যাপক। ফলে সেই ধারাটি এখনও বহমান। আমাদের সাহিত্যের যে জঁর সেটাও ইংরেজি সাহিত্য প্রভাবিত। অথচ দেখুন কৃত্তিবাসী রামায়ণ, একাধিক মঙ্গলকাব্য, চৈতন্যজীবনী সাহিত্য, রামপ্রসাদ এমনকি হুতোমের সাহিত্যকে কেমন আমরা 'মধ্যযুগীয়' বলি অবলীলায়!
একই মানসিকতা থেকেই ইতালির রেনেসাঁসকে টুকতে গিয়ে বাংলাতেও একটি রেনেসাঁসের আমদানি করতে হয় যা কাকজ্যোৎস্না বই অন্য কিচ্ছু নয়। অথচ আমাদের মাথায় গজালের মতো গেঁথে যায় ইংরেজ আসিবার পূর্বে আমরা মধ্যযুগের অন্ধকারে ছিলাম, বাবুরা আসিলেন বলিয়াই আলোকপ্রাপ্ত হইলাম!
হ্যা হ্যা হ্যা হ্যা.. মিষ্টি ছাগলগুলি :)))
অনেক দিন আগেই পড়েছি। তাপস দাশ লিঙ্ক দিয়েছিলেন।
আরেকটু বেশি বিখ্যাত/কুখ্যাত হলেন তো বটেই এই কাণ্ডের পরে।
"কিন্তু এই ছেলে-মেয়েগুলো কি সেই প্রাতিষ্ঠানিকতাকে ভাঙার জন্য এই কান্ড ঘটালো? নাকি সেরেফ ছাগলামি করে বিনা পয়সায় অন্ধকার রায়কে বিখ্যাত করে দিল?
আর অন্ধকার রায় নিজেই একটা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়নি তো?"
দেখুন প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা যথেষ্ট শ্রমসাধ্য বিষয়। তার জন্য সবার আগে প্রতিষ্ঠান নামক বিষয়টিকে আদ্যোপান্ত বুঝতে হয়, তার পরে তাকে ভেঙেচুরে দুমড়িয়ে-মুচড়িয়ে প্রতিস্পর্ধী বিষয়টাকে প্রতিষ্ঠা করতে হয়। এখন যাদের প্রতিষ্ঠানবিরোধী হওয়ার শখ ১৬ আনার ওপর ১৮ আনা অথচ শ্রমবিমুখ, তাদের শর্টকাট রাস্তা বেছে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। এবং ছেলেমেয়েগুলো ঠিক সে রাস্তাটাই বেছে নিয়েছে। কিন্তু তাই বলে মেয়েগুলোকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার যে চেষ্টা উপাচার্য করেছিলেন, তাকে কোনও অবস্থাতেই সমর্থন করি না।
রোদ্দুর রায় এই কাণ্ডে বিখ্যাত হলেন কিন্তু পরোক্ষে। তিনি কাউকে গানটি গাওয়ার জন্য প্ররোচিতও করেননি, পিঠে লেখানোর জন্যও। সর্বোপরি তার ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়ানোর জন্যও। আর স্রেফ গিমিকবাজি করে অন্ধকার রায় যে বেশিদিন 'বিখ্যাত' থাকতে পারবেন না, সে কথা আগেই বলেছি।
হ্যাঁ, অন্ধকার রায় নিজেই প্রতিষ্ঠানে পরিণত। প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতাও যে ক্রমে প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় সে কথা আগেই বলেছেন শঙ্খ ঘোষ (নাকি অরুণেশ ঘোষ?)।
@Ramit Chatterjee , আমার লেখাটা ওই দিন জেলার পাতায় প্রকাশিত হয়েছে তাই হয়তো দেখতে পাননি।