এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  ভ্রমণ   যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে

  • বিন্দু বিন্দু সিন্ধু 

    . লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে | ০৯ জুন ২০২৫ | ৩৯৬ বার পঠিত | রেটিং ৪ (২ জন)
  • এখানে থাকবে সাম্প্রতিক তিনটে দেশের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • . | ০৯ জুন ২০২৫ ০৬:০৩745003
  • ক্রমে পৃথিবীর মানচিত্রে যেমন নতুন নতুন করে দেশের সংখ‍্যা বেড়ে চলেছে, তেমনি কমে যাচ্ছে গন্তব্যের সংখ্যা। কোথাও যুদ্ধ চলছে তো কোথাও যেতে গেলে স‍্যাংশানের দোহাই দিয়ে টিকিট কেনার পথ বন্ধ। যদিও বা ফন্দি ফিকির করে টিকিট কাটব ঘুরপথে, তাও হোটেল বুকিং করে উঠতে পারব না, ক্রেডিট কার্ড কাজ করবে না সেসব দেশে। অথচ কত কত সাধ ছিল সেসব জায়গাগুলোতে যাবার। কিন্তু ভূরাজনীতি এমন খেলা খেলছে যে ক্রমে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক দরজা।
    কদিন আগেই এমন একটা দেশে বেড়াতে যাবার মতলব ফাঁদছিলাম যাদের সঙ্গে স‍্যাংশনের অদৃশ্য কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে আমার দেশের। ভিসা লাগে না যেতে, কিন্তু যেই তুমি ফ্লাইট বুক করতে যাবে, অমনি বুকিং সাইটগুলো তোমাকে অদ্ভুত একটা মেসেজ দেখাবে — আপনার গন্তব্যের তারিখ অথবা গন্তব্য পরিবর্তন করুন।
    তারিখ যতই বদলাও না কেন ঐ একই মেসেজ আসতে থাকবে সর্বদা। এর নাম স‍্যাংশন। অথচ অন‍্য কোনও দেশ থেকে ঐ টিকিট যে কোনো তারিখে পাওয়া যাবে। নয়ত অন‍্য পথও আছে, সীমান্তের কাছে কোনও দেশে পৌঁছে সেখান থেকে বাকিটুকু বর্ডার চেকপোস্টে গাড়িতে বা ট্রেনে করে পৌঁছে ইমিগ্রেশনের ছাপ পাসপোর্টে লাগিয়ে সেই দেশে বেড়াতে যাওয়া। তবে সবটুকুই অনেক ঝামেলার এবং অনিশ্চয়তার ব‍্যাপার। অবিশ‍্যি আমরা দুজনে যেমন গুপীবাঘার মতো নিত‍্য নতুন দেশে দেশে রোমহর্ষক সব ঘটনার সম্মুখীন হতে ভালোবাসি, আমাদের কাছে এমন করে হুটহাট স‍্যাংশন করা দেশে ঢুকে পড়া হবে এক অন‍্য অভিজ্ঞতা। পান্থশালার বুকিং থাকবে না, ঠিকানাও জানা থাকবে না, সবটাই চান্স, কতকটা ঝুঁকি, তবুও আমরা ফের বেরিয়ে পড়বো, ছুটি পেলাম কি পেলাম না সেসবের ধার না ধারি না। ভেবেছিলাম আরেক বন্ধু দম্পতিকে সঙ্গে নেব, বেশ চারজনের একটা গ্রুপ মতো হলে হৈচৈ করে অনেক মজা হবে। কিন্তু সেই বন্ধু এরকম বেআক্কেলে ভ্রমণ প্ল‍্যান শুনে আঁতকে উঠলো। খামোখা স‍্যাংশন হওয়া দেশে কেন বাপু? দুনিয়ায় আর কোনো ঠিকঠাক দেশ নেই বুঝি? যদি ওদেশে গেলে পাসপোর্টের ছাপের জন‍্য পরে কোনও সমস‍্যা হয়? 
    এতশত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বা না দেওয়ায় কোনও তফাৎ পড়বে না তাদের সিদ্ধান্তে, তারা যাবে না বোঝাই যাচ্ছে। 
    আমি মানে আমরা দুজন অবশ্যই যাবো ঐ দেশটায় শিগগিরি, তবে সবে যে দেশ তিনটেয় বেড়িয়ে এলাম সেই গল্প এখন বলতে হবে।
  • . | ০৯ জুন ২০২৫ ০৬:৩২745004
  • আমরা সমুদ্র ভালোবাসি, পাহাড় ভালোবাসি, ভালোবাসি মরুভূমি উপত‍্যকা নদী খাদ গিরিখাত জঙ্গল আকাশ এবং মানুষ।
    ফেব্রুয়ারিতেই সবে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বেড়াতে গেছলাম, তখন সমুদ্র দেখেছি, আগ্নেয়গিরি দেখেছি, পাহাড় জঙ্গল সবই ছিল। তারপরে ঘুরতে গেলাম হংকং। সেখানে তেমন জমল না ভ্রমণ। উঁচু উঁচু বাড়িগুলোর দিকে তাকালে মাথা ঘুরত। হোটেলের উঁচু তলায় থাকা যেন বন্দীর মতো, জানলা খোলা যায় না। তিরিশ কি চল্লিশ কি পঞ্চাশ তলা তা ম‍্যাটার করে না। নীচে তাকালেই মাথা ঘোরে, কেমন যেন গা গুলোয়। তড়িঘড়ি যাহোক তাহোক করে বেড়িয়ে কটা দিন পরেই ফিরে এলাম দেশে। ঐখানে দেখেছিলাম দোতলা ট্রাম। ছোট্ট ছোট্ট দোতলা ট্রাম, একেকটা একেক রঙের। সে যাই হোক। ক্রমে আরও দুটো মাস কেটে গেল, আবারও গুপীবাঘার বেড়াতে মন চাইছে, মে মাস পড়ে যাওয়া মানে ফুলটাইম বসন্ত। 
    আমরা ভেবেছিলাম দুনিয়ার সবচেয়ে বড়ো হ্রদটার কাছে যাবো। কাস্পি। যেটাকে ইংরিজিতে কাস্পিয়ান সী বলা হয়। কাস্পিকে ঘিরে আছে বেশ কটা দেশ। যেমন আজেরবাইজান, তুর্কমেনিস্তান, কিছুটা অংশে রাশিয়া, কাজাখস্তান, ইরান এইসব দেশ।
    ইরানের ভিসা পাওয়া শক্ত নয় তবে ঐ দেশে গুপীবাঘাকে হোটেলে একই ঘরে রাত্রিযাপন করতে দেবে কিনা সন্দেহ। এও এক ধরনের স‍্যাংশন। রাশিয়ায় তো স‍্যাংশন, সরাসরি যাওয়া যাবে না, তুর্কমেনিস্তান কারোকে ঢুকতে দেয় না, আজব গেশ, এ নিয়ে পরে বলব এখন। অতএব হাতে রইল আজেরবাইজান এবং কাজাখস্তান। গুপী ভাবতে বসল কেমন করে দুটো দেশেই ঘোরা যায় এবং সঙ্গে যদি কাস্পিতে একটা বজরা ভ্রমণ করা যায় তবে তো যা তা ব‍্যাপার হবে। বাঘা এসবে মাথা ঘামায় না, গুপী যেমন যেমন নিয়ে যাবে, সে ঢোল বাজাতে বাজাতে সঙ্গে সঙ্গেই যাবে।
  • . | ০৯ জুন ২০২৫ ০৭:২৪745005
  • আজেরবাইজান ভিসা না নিয়ে ঢুকতে দেয় না। ভিসা অন অ‍্যারাইভাল অপশন আমাদের পাসপোর্টের জন‍্য নেই। সরাসরি সরকারি ওয়েবসাইটে ভিসার জন‍্য দরখাস্ত করলাম, পান্থশালার বুকিং ও করতে হলো। ঠিক করলাম বাকুতে ল‍্যান্ড করে কটা দিন আশেপাশে ঘুরে টুরে কাস্পিতে একটা জাহাজে চড়ে কাজাখস্তানের আক্তাউ বন্দরে নেমে সেখান থেকে রাজধানী আস্তানার উদ্দেশ্যে রওনা দেব। নিশ্চয়ই ফ্লাইট পাওয়া যাবে। তারপরে আস্তানা থেকে আলমাতি যাবো, চারিন গিরিখাত দেখব, লেক টেক তো আছেই, তিয়ান শান পর্বতমালা দেখে টেখে ঘরে ফিরে আসবো। 
    কাজাখস্তান যাবো যখন ঠিকই করে ফেললাম, তখন মনে পড়ে গেল, আরে ঐ দেশের এক বাঙালি শিল্পপতিকে তো আমি চিনি। তাকেই নাহয় ফোন করে কথা বলে আলোচনা টালোচনা করে কী কী জায়গা ঘোরা যায় একটু জিজ্ঞাসা করে নিই না কেন। সেই শিল্পপতি যখন টিনেজার ছিল তখন সে ছিল আমার জুনিয়র, বছর দশেক আগে আমার শহরে এসেছিল বেড়াতে, তখনও জম্পেশ আড্ডা খানাপিনা হয়েছিল। আমি তাকে ফোন করে ফেললাম।
    যারা আমার পুরনো লেখা পড়েছেন যেখানে ভারতীয় দূতাবাসের সেক্সি স্টোরিজ লিপিবদ্ধ করেছিলাম, তাঁরা কমপ্ল‍্যান বয় সম্বন্ধে অল্প জানেন। আহা সেই যে সেই ছেলেটা, যে মধ‍্যগ্রীষ্মের পড়ন্ত আলোর এক সন্ধ্যায় তাশখন্দের মধ‍্যস্থলে গার্লফ্রেন্ডের বাড়ি থেকে ফেরার পথে রাস্তায় প্রচণ্ড বেগ অনুভব করেছিল। হোস্টেলের পথ সেখান থেকে বহুদূর। রবিবার। সব শুনশান। কাছেই ভারতীয় দূতাবাস। পাশেই অ‍্যাম্বাসাডারের রেসিডেন্স। দোতলার বারান্দায় অ‍্যাম্বাসাডার ড্রেসিং গাউন পরে সিগারেট ঠোঁটে মৌতাত করছেন। ছেলেটা ফুটপাথে দাঁড়িয়ে সটান দোতলায় অ‍্যাম্বাসাডারের তোখে চোখ রেখে বলেছিল — স‍্যার ক‍্যানাই ইঊজ ইয়োর টয়লেট? অ‍্যাম্বাসাডারের কূটনৈতিক চোখে ধরা পড়েছিল যে ছেলেটি সমূহ বিপদের মুখে। কালবিলম্ব না করে করে তিনি "শিয়োর" বলেই দ্রুত নীচে নেমে নিজেই দরজা খুলে তাকে টয়লেটের পথ দেখিয়ে দিয়েছিলেন। সেকালে ভারতীয় নাগরিকের বিপদে দূতাবাস নানানভাবে সাহায্য করত, এটা তারই এক সামান্য নমুনা। 
    সেই ছেলেটি পরে নিজের হোস্টেলে না গিয়ে আমার ঘটে চলে এসেছিল তার বীরত্বের এই ঘটনা জানাতে। তখনও পর্যন্ত সে দুধ বা কমপ্ল‍্যান ছাড়া আর কিছুই খেত না। চা কফি কিছুই না। সে দিন সে ভোদকা খেয়ে উদযাপন করেছিল এই ঘটনা উৎসবের মতো। অ‍্যাম্বাসাডারকে দিয়ে তার দরজা খুলিয়ে তার বাথরুমে হেগে আসার মতো ঘটনা তো কম গৌরবের নয়। 
    সেই কমপ্ল‍্যান বয় এখন বিলিওনিয়ার হার্ড কারেন্সিতে। সে বলল, আরে ধূর আক্তাউ কেন যাচ্ছো? বাকুতে রী দেখবে? ফালতু জায়গা! তুমি বরং জর্জিয়া ঘুরে নাও। সিগনাগি যাও, খাসা জায়গা।
    আমি কনফিউজড হয়ে গেলাম। 
    কত দিনের ছুটি নেব বুঝতে পারছি না। বাকু তো যাব ঠিক করে ফেলেছি, হোটেল বুকিং আছে, এদিকে কমপ্ল‍্যান বয় বলছে ওদিকে যেও না।
    তাহলে কি কাস্পিতে জাহাজ ভ্রমণ আমাদের হবেই না?
  • . | ১১ জুন ২০২৫ ১৬:৪৮745062
  • দুটো দিন কেটে গেল, ভিসা সংক্রান্ত ইমেইল আর আসেই না। ফের অ্যাপ্লাই করি, তাও সব কিছু নীরব, স্প্যাম ফোল্ডারেও নিদাগ পরিচ্ছন্নতা। কোনও দালাল সাইটে গিয়ে দরখাস্ত করব? ওদিকে টিকিটের দাম রোজই একটু একটু করে বেড়ে চলেছে। দোটানায় পড়ে গেলাম। ফাইনালি যখন টিকিট কাটতে বসলাম, বাকু আর গন্তব্যের তালিকাতেই নেই। সোজা উড়ে যাব ৎবিলিসি, পথে ঘন্টাখানেকের লেওভার থাকবে ভার্শাভাতে। ৎবিলিসি থেকে বেড়াতে যাবো সিগনাগি, আরো কাছে পিঠে যা যা দ্রষ্টব্য রয়েছে যতটুকু কভার করা যায়, এর পরে ৎবিলিসি থেকে উড়ে যাবো কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানাতে। সরাসরি যাওয়া যাবে না অবশ্য। আলমাতি হয়ে যেতে হবে। আস্তানাতে কয়েক দিন কাটিয়ে আলমাতিতে ফিরব। ওটাই পরবর্তিতে আমাদের বেস হবে। কখনো যাবো চারিন গিরিখাত, কখনো কোলসাই লেক, বা শুধু শহরের ভেতরেই যখন যেমন ইচ্ছে হয়, সব দেখব টেখব ঘুরব বিশ্রাম নেবো ঘুরব। টুক করে দুতিন দিনের জন্য টুক করে ঘুরে আসব বিশকেক থেকে, কিরঘিস্তানের রাজধানী হচ্ছে গিয়ে বিশকেক। শেষে দিন দুয়েক কি তিনেক যা হাতে থাকবে সেসবের জন্য কোনও প্ল্যান নেই, শীতকাল হলে স্কিয়িং এর জন্য দিন দুয়েক রাখতে পারতাম। সে দেখা যাবে শেষে কী করা যায়। এই হচ্ছে মোটামুটি একটা খসড়া মতো। প্রত্যেকটা দেশে গিয়ে নতুন নতুন কারেন্সীর সঙ্গে পরিচিত হতে হবে, বারে বারে হিসেব করে করে টাকা ভাঙানোর হাঙ্গাম রয়েছে। ক্রেডিট কার্ড যত কম ব্যবহার করা যায়, ততই দুশ্চিন্তা কম হয়। গেল বছরে ক্রীসমাস নিউ ইয়ারের টাইমে যা কেলেংকারি হয়েছিল ক্রেডিট কার্ড নিয়ে, সেসবের জন্য বিদেশে বিভূঁইয়ে পারতপক্ষে ইলেকট্রলিক ট্র্যানজাকশনের দিকে ঝুঁকছি না। ফেব্রুয়ারীতে বালি ভ্রমণ হোক কি হংকং এর ঝটিকা সফর, সব সময়ে ক্যাশই ছিলো সঙ্গে।
  • . | ১১ জুন ২০২৫ ১৭:১৪745063
  • যাই হোক, ঝপাঝপ টিকিট কাটা থেকে শুরু করে, যাবতীয় পান্থশালা বুক করা, সমস্তই হয়ে গেল, ভিসার চক্কর নেই এ যাত্রায়। চারিন গিরিখাতের জন্য গাইডেড টুর লাগবেই, চেনা জানা লোকে ভালো টুর অপারেটরের সন্ধান দিতে পারবে ভেবে কমপ্ল্যান বয়কে ফোন করে বললাম একটু খোঁজ নিয়ে জানাতে।
    এক ঘন্টার মধ্যে সে সমস্ত জানিয়ে মস্ত মেসেজ করল। মানে ফরোয়ার্ডেড মেসেজ, তার সেক্রেটারি টুর অপারেটরের সঙ্গে কথা বলে যা যা জেনেছে। দু দিন তিন রাতের একটা মোটামুটি এস্টিমেট আমাদের দুজনের জন্য। থাকা খাওয়া বেড়ানো ইনক্লুডেড। চারিন গিরিখাত ও সন্নিকটের একটি লেক কাইন্দি সংলগ্ন জায়গায় থাকা ঘোরা। পুরো সংখ্যাটুকু গড়ে ছশো দিয়ে ভাগ করে দেখলাম, ঐ টুরটুকুর দাম পড়ছে সাড়ে তিনহাজার ফ্রাঙ্ক। হিসেবে ভুল হলো নাতো? বাঘাকে ডেকে এনে ফের হিসেব করি গুণে গুণে প্রতিটি সংখ্যা, উঁহু হিসেব ঠিক। কোনও ফাঁক নেই। কী এমন মহার্ঘ্য জায়গা যে এত মূল্য দিতে হবে? বাঘার মাথা সম্ভবতঃ ঘুরে গেছল সংখ্যাটা দেখে। সে একটু পরেই চলতে গিয়ে ঘরের মধ্যেই হোঁচট খেয়ে পায়ের দুটো আঙুলে ভালো রকমেরই চোট পেলো। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে যেতে হলো। ঘন্টা দুয়েক হাসপাতে যাবতীয় এক্স রে, ব্যান্ডেজ, ওষুধ বিশুধ যখন যাবতীয় চিকিৎসা চলছে, আমি ক্ষণে ক্ষণেই অন্যমনস্ক হয়ে ভাবছি, চেনা জানা লোককে শুধোলে তারা অপেক্ষাকৃত সুলভে ভালো জিনিস বা সার্ভিস কি টুর অপারেটরের খোঁজ দেয়, কমপ্ল্যান বয় এত চড়া দাম হাঁকা টুর এজেন্সির খবর দিচ্ছে কেন? ও কি ভেবেছে আমার চুরির পয়সা? নাকি অফিসের পয়সায় যাচ্ছি বিজনেস ট্রিপে? এ আমাদের সৎপথের ইনকাম, কষ্টার্জিত অর্থ, খামোখা উড়িয়ে দেবার জন্য নয়, প্রত্যেকটা টাকায় ঘামের গন্ধ আছে।
    বাঘার পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা হচ্ছে, আর আমি মোবাইল ফোনে খুঁজে চলেছি টুর অপারেটরদের অফার। অ - নে - ক কম। হাইকিং টাইকিং মিলিয়েও ঢের কম। কিন্তু বাঘার এখন পায়ের যা হাল হলো, সেকি সেরে উঠতে পারবে এত কম সময়ের মধ্যে?
  • . | ১১ জুন ২০২৫ ১৮:০১745066
  • এত লম্বা সফরের জন্য একটা ঢাউশ চেক ইন ব্যাগেজ নিতেই হলো। মস্ত একটা সুটকেস, হংকং এর একটা লেডিজ মার্কেট থেকে কেনা সস্তার মাল। এর মধ্যে থাকবে আমাদের দুজনের যাবতীয় জিনিসপত্র, জামাকাপড়, চটি, সাবান শ্যাম্পু, কিছু খাবার দাবার, যেমন বিপদে পড়লে ফুটিয়ে নেবার জন্য একটু চাল ডাল, ঘি নুন চা কফি চিনি বিস্কুট, চাদর, তোয়ালে, আরও নানা হাবিজাবি চিরুনি সেফটিপিন, নানান জিনিস। এই সফরে বুঝেশুনে খরচ করতে হবে, বুঝেশুনে খাওয়া দাওয়াও করতে হবে। রোজ রোজ তিনবেলা বাইরের খাবার খেলে বিশদিন কাটার আগেই শরীর খারাপ হয়ে যাবে। দিনে একটিবার ঘরের খাবার খাওয়া দরকার। নেহাৎ উপায় না থাকলে তখন অন্য কথা।
    বাঘার পা পুরোপুরি সারলো না। তার জুতোর মধ্যে মধ্যে এক ধরণের বিশেষ সোল লাগানো হলো যাতে সে হাঁটতে গিয়ে বেশি ব্যাথা না পায়। অফিসে ছুটি নিয়ে নিয়েছি। মে মাসের ঠিক মাঝামাঝি একটা ওয়ার্কিং ডে তেই রওয়া হয়ে পড়েছি দুজনে।
    ৎবিলিসি পৌঁছতে পোঁছতে শেষ রাত সেখানে। যত পূবের দিকে যাব, ততই সময় হারাবো এতো জানা কথা।
    দিনের আলো ভালো করে ফোটার জন্য অপেক্ষা করি এয়ারপোর্টের মধ্যে। বেশ কয়েকটি হানিমুন কাপল দেখলাম টার্কিশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে করে এসেছে, ভারতীয় বাঙালী তবে হায়দারাবাদের বাসিন্দা মনে হলো। জর্জিয়া এখন হানিমুন ডেস্টিনেশন হয়ে উঠেছে ভারতীয়দের জন্য। বালি ও প্রচণ্ড হানিমুন ডেস্টিনেশন এখন ভারতীয়দের কাছে, সে জিনিস গত ফেব্রুয়ারীতেই দেখা হয়ে গেছে। আগে যেমন প্যারিস, সুইটজারল্যান্ড, রোম, এইসব দিকে নবদম্পতিদের ঝোঁক ছিলো সেটা কতকটা বদলেছে দেখতে পেলাম। কিংবা এরা হয়ত অন্য বাজেটের ক্যাটেগোরিতে পড়ে।
    নব দম্পতিরা হুশ হাশ বেরিয়ে যাচ্ছে। আমরা পাশের ডোমেস্টিক টার্মিনালে গিয়ে গুছিয়ে বসলাম। বয়েস হয়েছে, অত দৌড় ঝাঁপ পোষায় না। একটু চা কফি খেতে পারলে মন্দ হতো না। কিন্তু এখানে দেখছি অসভ্যের মতো দাম রেখেছে, কেউ কিনছে না কিছু, দোকানগুলো মাছি ত্তাড়াচ্ছে। এয়ারপোর্টের মধ্যে অসম্ভব সুন্দর সুন্দর দামে জাতের কুকুর ঘুরে বেড়াছে। তাদের কানে চীপ বসানো হলদে প্লাস্টিক লাগানো। আর রয়েছে বেশ কয়েকজন গৃহহীন নরনারী। এদের সঙ্গে নিজ নিজ লাগেজ পোঁটলা ব্যাগ কি সুটকেস থাকে। এরা কেউ কেউ অসংলগ্ন করা বলে, অদৃশ্য কারোর দিকে লক্ষ্য করে বকাঝকা গালাগালি চেঁচামেচি করে কিছুক্ষণ, টহলরত পুলিশকে দেখলে কণ্ঠস্বর একটু নীচু হয়, তবে পুলিশ কারোকেই বকে না, কি এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে যেতে বলে না। এরা এখানেই ঘোমোয়, বাথরুম টয়লেট ব্যবহার করে দিনের বেলা বের হয়ে যায় বাইরে। মানে সেরকমই দেখলাম। এমন জিনিস সমাজতন্ত্রের টাইমে দেখি নি। তবে দায়ী কে, সমাজতন্ত্রের ভাঙন না না দেশটার টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া, সেসব অনেক তর্কের ব্যাপার।
    টাকা ভাঙানো হয়েছে, ট্রান্স্পোর্টের কার্ড কেনা হয়েছে, সেই কার্ডেও টাকা ভরা হয়েছে, এখন আমরা বাসে করে যাবো গন্তব্যে। সুলভে চমৎকার আরামদায়ক বাস রয়েছে গেটের বাইরেই। জর্জিয়ান ভাষা আমি পড়তে জানি না, হরফই চিনি না, সব কিছুই জর্জিয়ানে লেখা, লাতিন অ্যালফাবেটের ব্যবহার নেই বললেই চলে। তবে সে নিয়ে বাঘা একেবারেই চিন্তিত নয়, আমার ওপরে সে সম্পূর্ণ নির্ভর করে রয়েছে, সে ছুটির আনন্দে মশগুল। সে জানে যে গুপী সব সামলে নেবে। নিশ্চিন্তে বাসে উঠল বাঘা, আমি ড্রাইভার সায়েবকে বলে দিলাম রাশিয়ানে - আমরা নতুন এসেছি, রাস্তাঘাট চিনিনা আলভারি নামক স্টপ এলে একটু চেঁচিয়ে ডেকে দেবেন, কেমন?
    ড্রাইভার মাথা ঝাঁকিয়ে হেসে বলেন, সে অনেক দূর, হ্যাঁ হ্যাঁ ডেকে দেবো, নিশ্চিন্তে বসুন ভেতরে।
  • kk | 172.56.***.*** | ১১ জুন ২০২৫ ১৯:৪১745068
  • 'টার্মিনাল' সিনেমাটার কথা মনে পড়লো।
  • | ১১ জুন ২০২৫ ২১:৫৭745071
  • শেষ হবে না নির্ঘাৎ, তবু চলুক। laugh
     
    কাজাখস্তানে আমার যাবার ইচ্ছে আছে। দেখি কবে হয়। 
  • . | ১১ জুন ২০২৫ ২৩:৩২745072
  • জুরিখ থেকে যখন বেরিয়েছিলাম তখন মোটামুটি ঠাণ্ডা ছিল। ভোরের দিকে আট দশ কি বারো ডিগ্রি মতো টেম্পারেচার। গরম জামা পরেই ঘুরছি। 
    আলভারি অবধি পৌছনোর পরে ড্রাইভার সায়েব ডাকার আগেই বাকি যাত্রীরা সব আমাদের নামতে সাহায্য করতে থাকে। তার পর ফের অন‍্য একটা বাস ধরতে হবে। ছোট বাস, সিআইএস এ এগুলোর নাম মার্শরুৎকা। মার্শরুৎকার চালক বহুৎ মুডি মানুষ। আমরা জনা পাঁচেক যাত্রী সব মিলিয়ে, বাকি সীট ফাঁকা। ২৯ নম্বর ইস্কুল আমাদের স্টপের নাম। চালক নিজের খেয়ালে মার্শরুৎকা চালান। রাশিয়ান তিনি বিলক্ষণ জানেন তবে বলতে চান না, তবে ঠিকঠাক জায়গায় নামিয়ে দেন। 
    হ‍্যাঁচোড় প‍্যাঁচেড় করে তেইশ কিলোর সুটকেস নিয়ে আমরা উপস্থিত হই পান্থশালার কাছে। এটা পাড়া পাড়া টাইপ এলাকা। চণ্ডীমণ্ডপ টাইপের একটা চালা দেওয়া জায়গায় অলিভ গাছে ভরা ছাায়া ছায়া চত্বরে মস্ত কাঠের টেবিলের দুপাশে ভারি ভারি কাঠের বেঞ্চি। পাড়ার সিনিয়র সিটিজেন পুরুষেরা সেখানে গুলতানি করছেন, আমাদেরকে দেখে জিজ্ঞাসু চোখে সকলেই থামালেন কথাবার্তা। 
    আমি জিজ্ঞাসা করি ঠিকানাটা। সবাই একযোগে তর্জনী বাড়িয়ে দেখিয়ে দেন সঠিক দরজাটা। 
    এই পাড়ায় আমরা থাকব এখন বেশ কটা দিন। 
    জিনিস পত্র রেখে আমরা বেরিয়ে পড়ি। ব্রেকফাস্ট করতে হবে। সিনিয়রদের শুধোই আশেপাশে রেস্টুরেন্ট আছে কোথায়। গড়গড়িয়ে পথনির্দেশ দিয়ে দেন ওঁদের মধ্যে মুরুব্বি যিনি। 
    রোদের তাপ বাড়ছে। পথে আসবার সময়ে মার্শরুৎকার ভেতরে থাকাকালীন এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গিয়ে এখন চিড়বিড়োনো গরম। পেটে ক্ষিদে। রাতে ঘুম হয় নি। আমরা টায়ার্ড। মিনিট পাঁচ সাত একটু ডাউনহিল মতো কয়েক বাঁক নেমেই মস্ত রাস্তা, থিয়েটার হল, পাথর বাঁধানো সে রাস্তা বিশাল চওড়া, আমরা খুঁজছি খাবার, লাইন দিয়ে রেস্টুরেন্ট রয়েছে, তবে দুপুর না হলে খুলবে না। শেষে মার্জানিশভিলি মেট্রো স্টেশনের অপোজিটে পাওয়া যায় আমাদের রক্ষাকর্তা ম‍্যাকডোনাল্ডস। অতএব ওখানেই কফি এবং সামান্য কিছু খাবার খেয়ে মেট্রো স্টেশনের সামনে আমরা ঘুরছিলাম। যে শহরে এসেছি তার সঙ্গে প্রথমে দেখে শুনে চেনা পরিচয় করে নিতে হয়। হয়ত কোনও বন্ধ দোকানের সামনের সিঁড়িতে বসে জিরিয়ে নেওয়া। সামনে ফুটপাথে স্ট্রবেরি বিক্রেতা ছোট্ট ছোট্ট স্ট্রবেরির স্তুপ নিয়ে হিমশিম। হাফ কিলো কিনে আমরা দুজনে বসে স্ট্রবেরি খেয়ে ফের ঘরে ফেরার পথ ধরলাম। এবার ঘরে গিয়ে চান টান করে টানা ঘুম দিতে হবে। বিকেলে ফের বের হবো, তখন ঠিক করব কাল পরশু তরশুর প্ল‍্যান। 
     
     
  • . | 194.56.***.*** | ১২ জুন ২০২৫ ১১:১৭745078
  • সেদিন রেস্টুরেন্ট খুঁজতে যাবার পথে বড়ো রাস্তায় পড়বার আগেই ভুল করে একটা মাংসের দোকানে ঢুকে পড়েছিলাম। দরজা দিয়ে ঢোকার পরে দোকানটা খানিক নীচে, অর্থাৎ দুই তৃতীয়াংশ আন্ডারগ্রাউন্ড বলা চলে।
    শোকেসে থরে থরে নানান রকমের মাংস এবং কিমা। দোকান মালিক লেবানিজ এবং নিজেই বিক্রেতা। রাশিয়ান বোঝেন না, ইংরিজি বোঝেন। উনিই বলে দিলেন যে বড়ো রাস্তার ওপরে পৌঁছতে পারলেই সব পাওয়া যাবে। ওঁর এই মাংসের দোকানও একসময়ে রেস্টুরেন্টই ছিলো, তবে রান্নার গন্ধের জন্য আপত্তি করেছে পাড়া প্রতিবেশী, তাই রেস্টুরেন্ট তুলে দিয়ে কাঁচা মাংসের ব্যবসা ফেঁদেছেন।
    যত পূবের দিকে যাই, কত অল্প সময়েই মানুষ নিজের কথা বলে ফেলে।
    মার্জানিশভিলি স্টেশনের পাশেই টাকা ভাঙানোর দোকান আছে। বিশাল সেই রাস্তার উল্টো ফুটে মস্ত মস্ত সব হোটেল, দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভালো রকমের তারকাখচিত। সামনেই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে অনেক ট্যাক্সি, স্থানীয় টুর অপারেটরদের প্ল্যাকার্ড হাতে কয়েকজন মানুষ ইতি উতি খদ্দের খুঁজে বেড়াচ্ছে। চেহারা দেখে বিদেশী বুঝলেই যে এগিয়ে আসবে তারা এমন কোনও মানে নেই, তারা চোখের ভাষা বা চাউনি দিয়েই বুঝে ফেলে কে টুরিস্ট আর কে নয়। নন হোয়াইট মানুষ তো বেশ চোখে পড়ছে ইতি উতি। বিশেষ করে তরুণ তরুণী। তারা হানিমুন কাপল হলে টুর অপারেটর দেখেই বুঝে নেবে। আবার তারা যদি বিদেশী ছাত্র ছাত্রী হয়, তাহলেও টের করতে পারবে। অনেক ভারতীয় ছাত্র ছাত্রী দেখতে পাচ্ছি এখানে। জানা যায় এরা সকলেই ডাক্তারি পড়তে এসেছে এই দেশে। সন্ধের দিকে, কি ছুটির দিনে দেখা যাবে তারা ঘুরতে বেরিয়েছে জোড়ায় জোড়ায় কি দল বেঁধে ৎবিলিসির রাস্তায়।
    মেডিকেল ইন্সটিটিউট অবশ্য শহরের ভেতরে নয়, এদের হোস্টেলও ইন্সটিটিউটের কাছাকাছি।
    তো এক ট্যাক্সি ড্রাইভার কাম টুর অপারেটর আমাদের চোখেও চাউনি দেখেই ভুঝে ফেলেছে যে আমরা আনাড়ি এইখানে, সে আমাদের সামনে মেলে ধরে তার প্ল্যাকার্ডখানা। তাকে অনেক জায়গার নাম। সিগনাগি নামটা আমার চেনা, দরদাম করি না আর। খরচ যা বলে, তাতে মনে মনে হিসেব করে বুঝি শখানেক মতো ইউরো হলেই দুজনকে সে ঘুরিয়ে আনবে আমাদের আলাদা করে। কাল রবিবার, ছুটির দিন। সে চাইছে কালই ভোরে সে আমাদের নিয়ে সিগনাগি যাবে।
    তাকে বললাম - একটু রসুন, আমরা আপনাকে ফোন করে সন্ধের দিকে জানাচ্ছি, তবে গেলে সোমবারে যাবো। সেই টুর অপারেটরের নাম গচা, মধ্য চল্লিশ থেকে পঞ্চাশের মধ্যে তার বয়স।
    বাঘা আমায় বলে, আবার সন্ধে অবধি ঝুলিয়ে রাখলে কেন?
    আমিও ভাবি, সত্যিই তো, কেন ডিসিশন নিতে পারলাম না তখন?
    আসলে কমপ্ল্যান বয় আমাকে বলেছিলো - সিগনাগিতে কম করে একটা রাত থেকে যতে। আমি ভাবছি সিগনাগিতে রাত্রিবাস করব, নাকি ভোরে বেরিয়ে সন্ধেয় ফিরে আসব, একটু বেশি ধকল হয়ে যাবে নাকি?
  • . | ১৯ জুন ২০২৫ ১৪:১৬745126
  • সেদিন একপ্রস্থ এদিক ওদিক ঘোরার পরে ঘরে ফিরতে বেশ দেরিই হলো। বাঘা কেবলই তাড়া দিচ্ছে সেই ট্যাক্সি কাম টুর অপারেটরকে যেন "ওকে" করে দিই। অগত্যা তাকে ফোন করতে গিয়ে দেখি, সে আমাকে এর মধ্যে তিন চারটে ভয়েস মেসেজ দিয়ে রেখেছে। জানিয়ে দিলাম, পরদিন সকাল আটটায় আসতে। সে তৎক্ষণাৎ ভয়েস মেসেজ রাখে আটটা একটু তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে, দশটা হলে কেমন হয়? দরাদরি করে ওটা কিছুতেই নটা করানো গেলো না। বুঝলাম যে এখানকার লোকেরা তাড়াহুড়ো করে না, অনেক কাজেই যথেষ্ট গা এলানো অ্যাটিটিউড।
    সিগনাগি। ড্রাইভার একজন অন্য লোক। গেওর্গি তার নাম। চমৎকার রাশিয়ান বলে, ফলে ভাষার সমস্যা হবে না। ঘন্টা দুয়েক যাবার পরে এক জায়গায় থামা হলো, সেখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওয়াইন টেস্টিং করানো হয়। বলে কী? সম্পূর্ণ বিনিপয়সায় দেদার ওয়াইন! তাও আবার ওয়াইনের জন্মভূমিতে?
    যে জায়গাটাতে ঢুকলাম, সেখানে প্রচুর টুরিস্ট, তাদের মধ্যে প্রচুর ভারতীয়। ছেলে মেয়ে বুড়ো বুড়ি যুবক যুবতী তো রয়েইছে, হানিমুন কাপলেরও ছড়াছড়ি। এখানে অবশ্য ওয়াইন তৈরি হয় না, তবে স্টোর করে রাখা হয়। ইয়াব্বড়া বড়া চার পাঁচ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং দেড় মিটার মর ব্যাসার্ধের মস্ত মস্ত লম্ববৃত্তাকার চোঙাকৃতি পাত্রের সারি সেই জায়গায় একটা মস্থলঘরের মধ্যে। সমস্তটাই নিখুঁত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। ঢোকার মুখেই একটা টেবিলের ওপরে সারি সারি পানপাত্র রাখা রয়েছে। পছন্দমত হাতে তুলে নাও। সবকটা সুরাধারের কাছে অবশ্য টুরিস্টদের নিয়ে যায় না। গোটা পাঁচ সাতের সঙ্গে পরিচয় করায়। প্রত্যেক পাত্রের নীচেই কল লাগানো আছে। কল খুলে প্রত্যেকের পছন্দ মতো সুরা ঢেলে দেন সেখানকার গাইড। গাইডকেও আলদা করে পয়সা দিতে হয় নি। প্রথমে দুপাত্র দুরকম হোয়াইট ওয়াইন খেলাম। স্বাদ চমৎকার। বাঘা পন করেছে যে সে একরকমেরই খাবে, পাঁচরকমের ওয়াইন খাবে না। খো না। কেউ মাথার দিব্যি দেয় নি তোমায়।
    এর পরে যখন রেড ওয়াইনের একটা চোঙের সামনে গিয়ে কল খুলেছে গাইড, আমি এক পাত্র খেয়ে জাস্ট ফিদা। এমন ওয়াইন আমি জম্মে আর কখনো খাইনি। তখন বাঘা বলে সেও খাবে। খেয়ে টেয়ে সেও একই কথা বলে। একী অদ্ভূত ওয়াইন রে বাবা! চিনি না মিশিয়েও মিষ্টি। এমনিতে সস্তার ওয়াইনে চিনি মিশিয়ে মিষ্টি বানানোর ব্যাপার থাকে। ওসব খেলে হেভি মাথার যন্ত্রণা হতে পারে। কিন্তু এ ওয়াইন অদ্ভূত ভালো খেতে তো!
    আমি দ্বিতীয় পাত্র তখন তারিয়ে তারিয়ে খাচ্ছি। গেওর্গি তো এক ফোঁটাও খেতে পারবে না, বেচারা জর্জিয়ার নানান জায়গার আঙুরের প্রশংসা করছে। বটেই তো। যে আঙুর থেকে এমন সুরা তৈরি হয়, সেই আঙুর না জানি কতো মিষ্টি।
  • | ১৯ জুন ২০২৫ ১৫:০৪745127
  • অরুণাচলে কিউই থেকে ওয়াইন বানায়। ওখানে প্রচুর কিউই হয় অত বাইরে পাঠিয়ে উঠতে পারে না, তাই ওয়াইনারি বসিয়েছে। এমনিতে ওয়াইন আমার ঠিক পোষায় না। খেলেই পেটের ভেতরে কেমন খামচে ধরে অস্বস্তি হয়। তবে কিউইরটা টেস্ট করার ইচ্ছে আছে। 
    হিলে ভার্সে ওখরে বা নৈনিতালের দিকে রডোডেন্ড্রন ফুলের ওয়াইন বানায়। হিলেতে খেয়েছি। 
  • একক  | 2401:4900:8828:321f:d935:670b:6d1a:***:*** | ১৯ জুন ২০২৫ ১৫:৫০745128
  • পড়ছি ! 
  • . | ২২ জুন ২০২৫ ০৪:০০745142
  • আমরা ঐ প্রকাণ্ড হলঘরের বাইরে বেরিয়ে এলাম। বাইরে চড়া রোদ, সামনে একটু ছায়ার নীচে সিমেন্টের স্ল‍্যাবে বসে বাকি ওয়াইনটুকু খেতে খেতে আমি বাঘাকে বলছি — দেখতে পাচ্ছো তো স্বচক্ষে কেমন দেশে এনে ফেলেছি তোমায়?
    বাঘার মুখে মিষ্টি হাসি। সে বলে — সত‍্যিই তাই। যারা আসে নি, তাদের বলে বোঝানো যাবে না।
    গেওর্গি আমাদের কথা বুঝতে না পারলেও এটুকু বোঝে যে আমরা তারিফ করছি তার দেশের। 
    আমি ঐখানে বসেই প্ল্যান করতে শুরু করি — বুঝলে, এর পরের ট্রিপে আমরা যাবো মলদোভা। পুরো মদের জায়গা। মলদোভার কনিয়াক যে না খেয়েছে, সে জানে না কী জিনিস সেটা। 
    — না না, কনিয়াক না, ওতে বড্ড বেশি অ‍্যালকোহল পার্সেন্টেজ। ওয়াইনই ভালো।
    — আরে দূর, মলদোভার ওয়াইনও চমৎকার। নেক্সট ট্রিপে কী করব বুঝতে পারছো? মলদোভা আর আর্মেনিয়া কভার করে তুর্কিয়েতে ঢুকে পড়ব ল‍্যান্ড বর্ডার ধরে যেদিকটায় এশিয়ান পার্ট। ওখানে চমৎকার সব পাহাড়....
    বাঘা বলল — মলদোভাতেও এরকম ওয়াইন পাওয়া যাবে?
    — আলবাৎ পাওয়া যাবে না! ওখানকার ওয়াইন আরও ভালো, ঐ তো ওকে জিজ্ঞেস করো।
    বাঘু আর কেমন করে জিজ্ঞেস করবে, আমিই হাঁকি — সের্গেই! মলদোভার ওয়াইন এই গ্রুজিয়ার থেকে অনেক ভালো না? 
    গেওর্গি এগিয়ে এসে বলে — মোটেই না, গ্রুজিয়ার ওয়াইনের ওপর আর কোনও ওয়াইন হয় না। আমি প্রমাণ দিতে পারি।
    — কীরকম?
    — দেখছেন না, কয়েক পাত্র খাবার পরেই আমি গেওর্গি থেকে কেমন করে সের্গেই হয়ে গেছি!
    এই শেষ বাক‍্যটা বাঘাকে অনুবাদ করে বুঝিয়ে দেবার দরকার পড়ল না। এক চুমুকে বাকিটুকু শেষ করে উঠে দাঁড়াতে গিয়েই বুঝতে পারলাম এই জিনিসের তেজ। তবে সাবধানে ব‍্যালেন্স রেখে হেঁটে বেরিয়ে গেছি। বেরোনোর আগেই একটা চমৎকার শোরুম রয়েছে বিবিধ ওয়াইনের। সেখানে ফোটো তোলার পরে গাড়িতে চেপে ফের যাত্রা শুরু। দূরে দেখা যাচ্ছে আজেরবাইজান। গাড়ি উঠছে পাহাড় বেয়ে। চারিদিকে নানান ফলের ক্ষেত, আঙুরই বেশি, স্ট্রবেরি, নানান রকমের রাসবেরি, পীচ, নেকটারিন, আবার কখনও একপাশে খাদ।
    আমি আল্পস পর্বতমালার দেশের মানুষ, পাহাড় আমার দৈনন্দিন জীবনে অচেনা কিছু নয়। তবে এই সৌন্দর্য অন‍্যরকমের। সম্ভবত মানুষগুলোর ব‍্যবহার এত ভালো বলেই হয়ত যা দেখি তাই ই বেশি বেশি ভালো লেগে যায়। আর তা যদি না হয়, তবে এর পেছনে রয়েছে রঙীন সুরার কারসাজি।
     
  • . | ২২ জুন ২০২৫ ০৪:৫৮745143
  • আর্মেনিয়ান কনিয়াক যে কী বস্তু তা আমি হাড়ে হাড়ে জানি। এ নিয়ে বলতে গেলে অনেক বছর আগের ফ্ল‍্যাশব‍্যাকে যেতে হয়।
    স্টুডেন্ট লাইফের কথা। গরমের ছুটিতে দেশে যাবার টিকিট কাটা হয়েছে। দলে দলে সব যাচ্ছে দেশে। কদিনের মধ্যেই হোস্টেল ফাঁকা হয়ে যাবে। আমরা এমন শ্রেণীর পাবলিক যারা ফ্লাইটে হ‍্যাংলার মতো মদ চেয়ে চেয়ে খাওয়া পছন্দ করি না, আমরা সন্ধ্যার বা  গভীর রাতের ফ্লাইট থাকলে হোস্টেল থেকেই যখন যেরকম ট্রেন্ড চলছে সেরকম পানীয় খেয়ে ফুলটু মস্তিতে ফ্লাইটে উঠে হৈ হল্লা করতে করতে দেশে যাবার পাবলিক। একবার যেমন ফ্লোর দে কান‍্যিয়া নামক নিকারাগুয়ান রাম এর ট্রেন্ড চলছিল, তখন ঐটাই সবাই খাচ্ছিলাম পরীক্ষা শেষ থেকে ফ্লাইটে চড়া পর্যন্ত।
    তো সেবার পরীক্ষা শেষের পরদিনই সম্ভবত ফ্লাইট।  পরদিন মানে গভীর রাতে এয়ারপোর্টে পৌঁছতে হবে।  ঘুমোনোর টাইম পাওয়া যাবে না। আমার ঘরে জনা পাঁচেক মিলে আড্ডা চলছে। যাবো মেট তিনজনে, বাকীরা সী অফ করবে। কোথা থেকে দুবোতল আর্মেনিয়ান কনিয়াক নিয়ে এলো কেউ। সরু সরু দুবোতল। ঢালা হচ্ছে, খাওয়া হচ্ছে। গল্প হাসি আড্ডা চলছে। ব‍্যাগ ট‍্যাগ গোছানো আছে, জামা কাপড় জুতো সব  পরে  আমরা রেডি। শুধু টাইম কিল করার জন‍্য আসর বসেছে। দুবোতল উড়ে যাবার পরে বুঝলাম জিনিসটা খুবই ভালো। বোতলের গায়ে পাঁচটা তারা আঁকা আছে। ফাইভ স্টার কনিয়াক। আরও এক বোতল আনা হলো। সেটা খাবার পরে। আমরা সকলে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না। 
    ঘুম ভেঙে দেখি সকাল আটটা। ফ্লাইট কোনকালে ছেড়ে চলে গেছে। কী হবে এখন? চাপ নিয়ে লাভ নেই। যা হবার তাতো হয়েই গেছে। তাও ট‍্যাক্সি নিয়ে তৎক্ষণাৎ এয়ারপোর্ট পৌঁছলাম সকলে। পাশেই টিকিট কাউন্টার ছিল। সবে খুলেছে কাউন্টার। একটা কাউন্টারে মধ‍্যবয়সী  ভদ্রমহিলা ওলগা। কাঁদো কাঁদো হয়ে সেখানে গিয়ে বলি — ওলিয়া সর্বনাশ করে ফেলেছি।
    — কী করেছিস?
    — ফ্লাইট মিস হয়ে গেছে!
    — বাহ বাহ। ব্রাভো। 
    ওলিয়া বাকি দুজনের দিকে তাকিয়ে আঁচ করে যে আমি একাই মিস করিনি, দলে আরও লোক আছে। গম্ভীর হয়ে বলে — ঐ ছেলে দুটোও ফ্লাইট মিস করেছে?
    — হ‍্যাঁ, মানে ...
    — কী হয়েছিল বল আমাকে।
    — মদ খেতে খেতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, সময়মত উঠতে পারি নি। এখন কী হবে? টিকিটের পুরো টাকাটাই কি গচ্চা যাবে?
    কপট গাম্ভীর্যে ওলিয়া বলল — কৈ দেখি টিকিট গুলো।
    আমরা টিকিট গুলো তাকে দিলাম। 
     — তোরা দূরে গিয়ে বোস। দেখি কী করতে পারি।
    মিনিট পাঁচেক পরে ইশারায় ডাকে।
    তিনজনেই অপরাধীর মতো যাই।
    — কাল রাতের ফ্লাইটে করে দিলাম টিকিট, আর এরকম করিস না।
    একটা পয়সাও খরচ হয় না আমাদের। 
    এর পরে যতবার আর্মেনিয়ান কনিয়াক সেবন করেছি, খেয়াল রাখতে হয়েছে পরদিন যেন ফ্লাইট ধরার ব‍্যাপার না থাকে।
  • . | ৩০ জুন ২০২৫ ০৩:৫৯745180
  • গেওর্গিকে একবার জিজ্ঞেস করলাম, ফিরতি পথে একটিবার আজারবাইজানের সীমান্তে যাওয়া যায় কি না। একটু টুকি দিয়ে দেখে নেব নাহয়। 
    গেওর্গি জানায়, যাওয়া তো যায়ই সীমান্ত অবধি, কিন্তু গুপি বাঘা তো সেথায় ঢুকতে পারবে না ভিসা না থাকায়। সীমান্তের এপার ওপারের মধ‍্যে বিস্তর দূরত্বের একটা নোম‍্যান্স ল‍্যান্ড গোছের ব‍্যাপার আছে। গিয়ে লাভ নেই।
     
    বুঝলাম। এর নামই একটা দেশের খণ্ড খণ্ড হয়ে যাবার মজা। চৌত্রিশ বছর আগে পর্যন্ত  সবটা মিলিয়ে ছিল একটি মাত্র দেশ। কোথায় যেতে বাধ্য ছিল না। এখন টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে। কোনও টুকরো ছোট, কোনও টুকরো বড়ো। টুকরো করবার সময় কেউ কিন্তু দেশের মানুষের মতামত নেয় নি। যারা ডীল করেছে তারা লাভবান হয়েছে নিশ্চয়  যারা করিয়েছে তাদেরও বিলক্ষণ লাভের উদ্দেশ্যই ছিল। মাঝখান থেকে কোনও দেশ গরীব বনে গেল, কোনও দেশের অবস্থা ভাল রইল।
    বাঘা পেছনের সীটে বসে রয়েছে। আমি তাকে বাংলায় বলছি — বুঝলে, এ হচ্ছে একান্নবর্তী পরিবারের ভেঙে যাবার পরে যে হাল হয় তেমন। কারো ঘরে দুবেলা পোলাও মাংস রাঁধা হচ্ছে, তো কারো ঘরে সাদামাটা দুপদের খাবার। কারো রোজগার বেশি, কারো কম, কারো সন্তান বেশি, কেউ হয়ত নিঃসন্তান, কিন্তু জয়েন্ট ফ‍্যামিলিতে কেউ তেমন অভাব অনুভব করে নি। দেশের ক্ষেত্রেও তাই। টুকরো হয়ে গেলে, নিজের ভাগে যেটা নেই সেটার অভাব হাড় হাড়ে টের পাওয়া যায়।  আমাদের ভারতবর্ষই দেখো। পূবে পশ্চিমে যে দুটো ভাগ টুকরো হয়ে গেছে তাদের ভুসম্পদ থেকে শুরু করে খনিজ কিংবা অন‍্য অনেক সম্পদ তো ভাগে কম পড়েছে। 
    বাঘা হুঁ বাঁ করে সায় দিয়ে যায়, আসলে তার চোখ এবং মন পড়ে রয়েছে জানলার বাইরের অপূর্ব সব দৃশ‍্যাবলীতে।
    পথ ক্রমে সরু হচ্ছে, অল্প অল্প করে লোকালয়। ক্রমে পর্বতের চুড়ায় পৌঁছে যাই আমরা। জায়গাটা টুরিস্টদের জন‍্যই বটে। সিগনাগি। স্বর্গের মতো সুন্দর একটা রেস্টুরেন্ট্র সামনে পৌঁছই আমরা। সেখানে শুধু ফুল আর ফুল। ছায়া দেওয়া খোলা রেস্টুরেন্টের একদম খাদের ধারের টেবিল দখল করে ফেলি নিমেষে। নীচে তাকালে বিস্তৃত মালভূমি ঝাপসা কোনও নদীর রেখা অল্প ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের টুকরোও নীচে। 
    গেওর্গি বলে, অক্টোবরে এলে নীচে কিছুই দেখতে পাবে না। মনে হবে সবটাই সমুদ্র, মেঘের সমুদ্র।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন