"কিছু বিষয়ে নীরব থাকতে"
আমি এইরকমই কথা ভাটিয়ালিতে বলেছি বটে, ঠিক কী এবং কেন বলেছি ব্যাখ্যা করছি। অন্য কেউ বলে থাকলে একই কারণে বলছেন কি না বলতে পারবো না অবশ্য।
পাঁচটি বিষয় উদাহরণ হিসেবে নিলাম। ১) হিন্দু মুসলমান (হিমু), ২) পশ্চিমবঙ্গের পিছিয়ে পড়া (পপি), ৩) সিএএ (কা), ৪) নির্বাচনী বন্ড (নিব) ও ৫) চাকরি-বেকারত্ব (চাবে)।
এবারে যারা বিজেপিকে সমর্থন করছে বা করে ফেলতে পারে তারা যে সবাই পাঁচটি বিষয়েই বিজেপিকে ঠিক মনে করছে তা নয়। তারা হিমু ও পপি বিষয়ে হয়তো (ধরে নিন এটাই ঠিক) বিজেপিকে ঠিক মনে করছে, কিন্তু অন্য তিনটি নিয়ে তারা খুশি নয়।
এবারে সারা বছর আমরা প্রত্যেক নীতিগত জায়গায় বিজেপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হবো, ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই নেই, কারণ হিমু বা পপি বিষয়ে তাদের তৈরি ন্যারেটিভটা ঠিক নয়, ক্ষতিকর। আর সেটাই আমরা করেছি, আবার করবো। কিন্তু তাহলেও অনেকে বোঝেননি, বা আদৌ মানেন না, তারা সব বুঝেই বিজেপিকে সমর্থন করেন।
এবারে ভোটের মুখে এসে আমরা কি সেটা খুব একটা পাল্টাতে পারবো? আমার মনে হয় পারবো না। এখন তারা নতুন করে যুক্তি শুনে মত পাল্টাবেন তার সম্ভাবনা খুবই কম, বিশেষ করে হিমু বা পপি বিষয় গুলো এবং সেই সংক্রান্ত আলোচনা ও যুক্তি প্রতিযুক্তি গুলো এতই পুরোনো যে এই ব্যাপারে বহু মানুষের স্থির বদ্ধ ধারণা আছে যা খুব বড় কোনো ঘটনা ছাড়া সাধারণ আলোচনায় পাল্টাবে না।
তাহলে এখন ভোটের মুখে আমরা কী চাইবো? আমরা চাইবো যে মানুষ এই কয়েকটা দিন সেই বিষয়গুলো মাথায় রাখুক যেগুলোতে তারা বুঝেছে বিজেপির রূপ এবং সেই ক্ষেত্রে বিজেপিকে পছন্দ করছে না। যেমন কা, নিব ও চাবে। চাইবো যে যেদিন ভোটের বুথের দিকে যাবে রাস্তায় যেন এই তিনটি বিষয় তাদের মাথায় ঘোরে। তাহলেই এই মুহূর্তে সবচেয়ে লাভ। তাহলে হতেও পারে তারা বিজেপির বোতামে চাপ দিলেন না নিজের ছেলে মেয়ের ভবিষ্যত ভেবে। চাইবো না যে তাদের মাথায় হিমু বা পপি ঢুকুক আর তাদের ভুল ধারণা ভুল দৃষ্টিভঙ্গি গুলো তাদের বিজেপির দিকে ঠেলে দিক।
ঠিক যেমন স্কুলে সারা বছর আমরা কোনো বিষয়ের প্রত্যেকটা চ্যাপ্টার পড়তাম, চেষ্টা করতাম, কারণ সবটাই ভালো করে জানা শেখা উচিত। কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন আর নতুন বা যেগুলো অত ভালো বুঝিনি সেই চ্যাপ্টার গুলো বেশি পড়তাম না, বরং যেগুলো পড়েছি বুঝেছি সেগুলো যেন ভুল না করে আসি তার দিকে মন দিতাম। সেই রকম।
ভোটের আগে স্ট্রাটেজি, সাধারণ নীতি নয়।