এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হিন্দু প্রেমী ক্লাইভ ও মীরজাফর বনাম হিন্দু বিরোধী সিরাজউদ্দৌলা 

    Eman Bhasha লেখকের গ্রাহক হোন
    ৩০ মার্চ ২০২৪ | ১৫০৮ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • ক্লাইভ তথা ইংরেজরা এত হিন্দুপ্রেমী যে বাংলায় আগে দুর্ভিক্ষ ছিল না, দুর্ভিক্ষ নিয়ে এল।
    সিরাজউদ্দৌলাকে প্রতারণা করে হারিয়ে খুন করার ১৩ বছরের মধ্যে দুর্ভিক্ষ হল।
    এবং তিন কোটির মধ্যে এক কোটি লোক না খেয়ে মারা গেলেন।

    সিরাজউদ্দৌলা হিন্দু বিরোধী তাই তাঁর প্রধানমন্ত্রী করেন হিন্দু মোহনলালকে। অর্থের দায়িত্ব দেন জগৎশেঠ ও তাঁর ভাই স্বরূপচাদঁকে। আর দাদুর শ্রাদ্ধে সংস্কৃত মন্ত্র পড়ান। হুগলির ফৌজদার হিন্দু নন্দকুমার, ঢাকায় দেওয়ান হিন্দু রাজবল্লভ, দরবারে রেখেছিলেন ঘসেটি বেগমের কাছের দেওয়ান হিন্দু রায়দুর্লভকে। রায়দুর্লভ ছিলেন জানকীনাথের পুত্র। তাঁকে বর্গিরা মহারাষ্ট্রে ধরে নিয়ে গিয়েছিল, আলিবর্দি ও সিরাজের চেষ্টায় বাঁচেন, ঘুষ দিয়ে মুক্তিলাভ।  কলকাতায় মানিকচাঁদ, দরবারে উমিচাঁদ, পাটনার দেওয়ান রাম নারায়ণ।

    হিন্দু বিরোধীই বটে!!!!

    সিরাজউদ্দৌলা এতটা হিন্দু বিরোধী যে তাঁর আদর্শে বিশ্বাসী  মোহনলালকে হয়ে উঠতে হয় সন্ন্যাসী বিদ্রোহের নায়ক, ভবানী পাঠক (এটা জনশ্রুতি)।

    সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন অবাধ বাণিজ্যের বিরোধী।
    ইংরেজরা বিনা শুল্ক বা বিনা করে দস্তকের অপব্যবহার করে বাণিজ্য করছিল, এতে আপত্তি করেন।

    আর জগৎশেঠ মিরজাফর রায়দুর্লভরা বেইমান ছিলেন, তাই তাদের অপমান করতেন, রাজ দরবারেই।

    ছেড়ে কথা বলার পাত্র ছিলেন না।

    ১৪ বছর বয়সের পর মদ্যপান করেননি একদিনও।

    খারাপ লোক তাই রাজা নবাবদের শত শত স্ত্রী থাকলেও তাঁর বউ একজনই। লুৎফা।
    এবং সিরাজ খারাপ লোক জেনেও অকাল বিধবা লুৎফা। মীরজাফর, মীরন সহ বহুজন বিয়ে করার প্রস্তাব করলেও আর বিয়ে না করে নির্জন জায়গায় কবরখানায় মেয়েকে নিয়ে পড়ে রইলেন।

    ক্লাইভের হেন দোষ ছিল না, ছিল না। 
    তিনি হলেন পরিত্রাতা।

    কৃষ্ণচন্দ্র প্রতারণা করেন রাজবল্লভকে। বিধবা মেয়ের বিয়ে দিতে দেন নি। বৈষ্ণবদের উচ্ছেদ করেন।
    তিনি হলেন ভালো।

    ষাট টাকা মাইনের নবকৃষ্ণ দেব দশ লাখ টাকা পান লুঠের ভাগ হিসেবে।
    লুঠ খুব ভালো!!!

    আর ইংরেজরা ভিক্টোরিয়ান শুচিবাদে এতই আসক্ত‌ যে, ভারতীয় নারীদের অবৈধভাবে ব্যবহার করে অ্যাংলো নামে একটা সম্প্রদায়ের জন্য দিয়ে ফেলল।

    ছি!
    ব্রিটিশ দালালরা।
     
    পুনশ্চ: সিরাজউদ্দৌলার সময়ে আরও কয়েকজন হিন্দু রাজপুরুষ ও নারী।
    মেদিনীপুরের ফৌজদার রাজারাম।
    বর্ধমানের রাজা তিলকচাঁদ।
    বীরভূমের রাজা
    কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র
    ফরাসডাঙায় জমিদার ইন্দ্রনারায়ণ
    নাটোরে রাণি ভবানী।
     
    ইংরেজ রাজত্ব কায়েম হওয়ার পর এদের দশা কী হয়েছিল, আশা করি জানেন।
    লাখ লাখ টাকার মালিকদের বংশধররা কয়েকহাজার টাকার জন্য ইংরেজদের গোলামি করেছে। আগে ছিল স্বাধীন।
     
    সিরাজ হিন্দু বিরোধী হলে বর্ধমান ও বীরভূমের রাজারা ১৭৫৭ তেই ইংরেজ সৈন্যদের বিরুদ্ধে লড়াই করতেন না।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • দীপ | 2402:3a80:a09:fd62:0:57:9d3d:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৪:৩২529976
  • ব্রিটিশ দালালদের যেমন চিনি, শূকরশাবকদের তেমনি চিনি! 
    দুই দিকে দুই উল্লুক!
  • Eman Bhasha | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৬:১৭529977
  • আহা দাদা আমার।
    ভালো থাকবেন।
    এইভাবেই লেগে থাকুন 
  • দীপ | 2402:3a80:a01:eac3:0:50:7dbe:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৬:৩১529978
  • কৃষ্ণচন্দ্র বৈষ্ণবদের উপর অত্যাচার করত, এই তথ্যের উৎস কোথায়?
  • দীপ | 2402:3a80:a01:eac3:0:50:7dbe:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৬:৩৮529979
  • আর বাংলাদেশে তো সংখ্যালঘুদের সিংহাসনে বসিয়ে আদর করা হয়!
    অবশ্য গায়ে মানুষের চামড়া থাকলে তো প্রোপাগান্ডা লেখা যায়না! 
  • দীপ | 2402:3a80:a01:eac3:0:50:7dbe:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৬:৪৮529980
  • যতোবার গপ্পিবাজি লেখা হবে, ততোবার মুখোশ খোলা হবে!
  • হ্যা হ্যা হ্যা | 93.99.***.*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৬:৫৯529981
  • এসে গেছে চাড্ডির পো পোঁদ লাচাতে।  একটা কথা গুছিয়ে লিখতে পারে না পোঁদভত্তি হিংসে নিয়ে হাগতেবসে যায়।
  • কামাল পাশা | 65.49.***.*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৭:০১529982
  • আর যতোবার তুই চাড্ডিগিরি করে আড়াই টাকা পাবি ততোবার তোকে গদাম দেওয়া হবে  
  • Eman Bhasha | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫৭529983
  • সিরাজউদৌল্লার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র রচিত হয়, তার অন্যতম দুই কলাকুশলী ছিলেন ঢাকার রাজা রাজবল্লভ ও কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। পলাশি পর্ব সাঙ্গ হওয়ার পরে রাজা (আসলে জমিদার) কৃষ্ণচন্দ্র অন্য 'হিন্দু' রাজা রাজবল্লভের পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার জন্য কী অবিশ্বাস্য চতুর ছলনার আশ্রয় নিয়েছিলেন, তার বিশ্বস্ত বিবরণ হাজির করেছেন কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির দেওয়ান কার্ত্তিকেয়চন্দ্র রায়। 

    এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন— রাজা কৃষ্ণচন্দ্র, যত দূর বুদ্ধিমান্‌, বিচক্ষণ ও সাহসী হউন, স্বদেশের কোন কলুষিত ব্যবহার পরিশুদ্ধ করণে কখন হস্তক্ষেপ করেন নাই। তাঁহার সময়ে এ প্রদেশে যেরূপ সর্বশাস্ত্রবিশারদ পণ্ডিতগণ আবির্ভূত হইয়াছিলেন, এবং তিনি যেমন শাস্ত্রজ্ঞ ও সুবিজ্ঞ বলিরা বিখ্যাত ছিলেন, আর তৎকালীন হিন্দুসমাজের উপর তাঁহার যে প্রকার প্রভুত্ব ছিল, তাহাতে বোধ হয়, তিনি যত্নশীল হইলে, শাস্ত্রবিরুদ্ধ ব্যবহারমূলক অনেক বিগর্হিত রীতি নিরসন, ও হিতজনক রীতি সংস্থাপনে কৃতকার্য্য হইতে পারিতেন। তিনি তাহা না করিয়া বরং যাহাতে ঐ পূর্ব্ব কুরীতি বলবতী থাকে, তৎ প্রতিই সর্ব্বদা যত্ন করিয়াছেন, এবং অন্য কোন ক্ষমতাশালী ব্যক্তি স্বদেশের কোন দূষিত ও অহিত ব্যবহার নিরাকরণে যত্নবান্‌ হইলে, তাঁহার চেষ্টা বিফল করিয়া দিয়াছেন। একাদশী তিথিতে দুঃখিনী বিধবাদিগের পক্ষে উপবাসের অনুকল্প বিধান, তাহাদের অশেষ ক্লেশকর বৈধব্যযন্ত্রণা বিমোচন, অথবা সহমরণ এবং বহুবিবাহ ও বাল্যপরিণয় প্রথা অপনয়ন প্রভৃতি অত্যাবশ্যক বিষয়ে প্রবৃত্ত না হইয়া, কেবল এই তিথিতে, এই মাসে, এই বারে, এই এই দ্রব্য ভক্ষণে নিষেধ ইত্যাদি যৎসামান্য বিষয়েই ব্যাপৃত থাকিতেন।

    বিক্রমপুর ও নবদ্বীপ প্রদেশের ভদ্র সমাজে অদ্যাপি এই প্রবাদ চলিয়া আসিতেছে যে, বিক্রমপুরবাসী প্রসিদ্ধ রাজা রাজবল্লভ, স্বীয় তরুণবয়স্কা তনয়ার বৈধব্য যন্ত্রণা দর্শনে, যৎপরোনাস্তি ব্যথিত হৃদয় হইয়া, বিধবাবিবাহ প্রচলিত করিবার বিশেষ প্রয়াস পাইয়াছিলেন। বিধবাবিবাহ শাস্ত্র বিরুদ্ধ নহে, ইহার ব্যবস্থা পূর্ব্ব পশ্চিম প্রভৃতি নানা অঞ্চলের পণ্ডিতগণের নিকট সংগ্রহ করিয়া, নবদ্বীপস্থ পণ্ডিত দিগের ব্যবস্থার জন্য, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সন্নিধানে কতিপয় পণ্ডিত প্রেরণ করেন। রাজবল্লভ, তৎকালে, ঢাকার নবাব ও প্রভূত-ক্ষমতাশালী রাজপুরুষ ছিলেন। সুতরাং তিনি মনে করিয়াছিলেন “যখন অন্য অন্য অঞ্চলের পণ্ডিতদিগের নিকট অনুকূল ব্যবস্থা পাইয়াছি, তখন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে অনুরোধ করিলে, অনায়াসেই নবদ্বীপস্থ পণ্ডিতগণেরও নিকট ঐ রূপ ব্যবস্থা পাইব।” তাঁহার প্রেরিত পণ্ডিতেরা রাজবাটীতে উপনীত হইলে, কৃষ্ণচন্দ্র অতীব আদরের সহিত তাঁহাদের অভ্যর্থনা করিলেন, এবং তাঁহাদের প্রভুর অভীষ্ট সাধনে যথাসাধ্য যত্ন করিতে অঙ্গীকৃত হইলেন। তদনন্তর সভাস্থ ও নবদ্বীপস্থ প্রধান প্রধান পণ্ডিতগণকে গোপনে রাজবল্লভের প্রেরিত ব্যবস্থা দেখাইলেন। তাঁহারা, ইহা পাঠ করণানন্তর, “এ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ শাস্ত্রসম্মত” কহিলেন। ইহা শ্রবণ মাত্র কৃষ্ণচন্দ্র নিরতিশয় ঈর্ষাদগ্ধচিত্ত হইয়া বলিলেন “এ ব্যবস্থা শাস্ত্র বিরুদ্ধ না হইলেও ব্যবহার বিরুদ্ধ বলিয়া, রাজবল্লভকে নিরাশ করিতে হইবেক। এক জন বৈদ্য জাতীয় যে এই চির অপ্রচলিত ব্যবহার প্রচলিত করিয়া যাইবেন, ইছা কোন মতেই সহনীয় নহে। কিন্তু, এক্ষণে রাজবল্লভের যেরূপ প্রভাব, তাহাতে আমি তাঁহাকে, কোন মতেই, বিরক্ত করিতে পারি না। অতএব তাঁহার সন্তোষার্থ আমি আপনাদিগকে এই ব্যবস্থায় স্বাক্ষর করিবার নিমিত্ত, যৎপরোনাস্তি অনুরোধ করিব, এবং আপনারা অসম্মত হইলে, আপনাদিগের প্রতি তাড়নাও করিব। আপনারা এই কহিবেন যে, মহারাজা বা কাহারও অনুরোধে আমরা, এরূপ ব্যবস্থা দিয়া, পাপগ্রস্ত হইতে পারিব না।”

    অনন্তর, পর দিবস রাজবল্লভের পণ্ডিতেরা রাজার সভাস্থ হইলে, রাজা নবদ্বীপস্থ পণ্ডিতদিগকে কহিলেন, “রাজা রাজবল্লভ যে ব্যবস্থা প্রেরণ করিয়াছেন, তাহা অবশ্যই শাস্ত্রসম্মত হইবেক। যদি শাস্ত্রসম্মত নাও হয়, তথাপি, যখন তিনি আমাকে ইহার জন্য অনুরোধ করিয়াছেন, তখন আপনাদিগকে এ ব্যবস্থায় স্বাক্ষর করিতেই হইবেক।” পণ্ডিতেরা, রাজার পূর্ব্ব নির্দ্দেশানুসারে, নানা প্রকার আপত্তি উত্থাপন করিয়া, উক্ত ব্যবস্থাতে স্বাক্ষর করিতে অসম্মত হইলেন। রাজবল্লভের প্রেরিত পণ্ডিতগণ, নিরাশ হইয়া, স্বদেশে প্রতিগমন করিলেন। রাজবল্লভ কৃষ্ণচন্দ্রের চাতুরী বুঝিতে না পারিয়া, এই মহৎ অনুষ্ঠান সাধনে ক্ষান্ত হইলেন।

    — কার্ত্তিকেয়চন্দ্র রায়, ক্ষিতীশ-বংশাবলি-চরিত, কলিকাতা, সংবৎ ১৯৩২, পৃ. ১৫৩-৫৬
     
    লেখা ও উদ্ধৃতি : দেবোত্তম চক্রবর্তী 
  • Eman Bhasha | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫৯529984
  • পলাশীর পরে নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের অবস্থা

    নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ইংরেজদের হয়ে সিরাজের বিরুদ্ধে নল চালিয়ে তাঁর পতন ডেকে এনেছিলেন। চক্রান্তে জিতে পাশ্চাত্য সভ্যতার অভ্যেসে ইংরেজরা ষড়যন্ত্রী কৃষ্ণচন্দ্রের সহযোগিতা ভুললেন। ইংরেজদের তিন কোটি টাকার খাঁই মেটানোর ঘা পড়ল কৃষ্ণচন্দ্রের ঘাড়ে। 

    নতুন নবাব লিখেদিলেন কৃষ্ণচন্দ্রের নদিয়ার জমিদারির খাজনার টাকা মুর্শিদাবাদে না এসে সরাসরি কলকাতা যাবে। একদা সনাতন হিন্দু সমাজের জ্যাঠামশাই, কৃষ্ণচন্দ্রকে নানান প্রকার উৎপীড়ন করল ইংরেজরা। বহু মানুষের, সমাজের জাতিনাশ করে বিখ্যাত হয়েছিলেন যিনি, তাঁরই তৈরি জাতিনাশের হুমকিকে হাতিয়ার করেই তাঁর জাতিনাশের ভয়ও দেখাল ইংরেজরা। 

    তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে পড়লেন। 
    তাঁর বংশধরেরা আর জমিদারি রক্ষা করতে পারল না। সূর্যাস্ত আইনে সব নিলাম হল।

    লিখেছেন : বাংলার কারিগর
  • Eman Bhasha | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৯:০০529985
  • পলাশি পর্ব সাঙ্গ হতেই ক্লাইভের নেতৃত্বে শুরু হল বেশুমার লুঠপাট। ১৭৭২ সালে পার্লামেন্টের কমন্স সভার কমিটি জানাল, ক্লাইভ ও কোম্পানির কলকাতার কর্মচারীরা লুঠ করেছে ৫৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এর মাত্র আট বছরের মধ্যে নবাব বদলের নজরানা বাবদ কোম্পানি আদায় করল মোট ২১ লাখ ৬৯ হাজার পাউন্ড। সঙ্গে উপরি হিসেবে ক্ষতিপূরণের নামে তারা আদায় করল আরও ৩৭ লাখ ৭০ হাজার পাউন্ড। এখানেই শেষ নয়। ১৭৫৭ থেকে ১৭৬৬ পর্যন্ত কোম্পানিরা কর্মচারীদের কেবল ঘুষ দিতে ব্যয় হল আরও ৬০ লাখ পাউন্ড। পাশাপাশি নবাব বদলের বদৌলত তারা ২৪ পরগণা, বর্ধ্মান, মেদিনীপুর ও চট্টগ্রামের জমিদারিসত্ত্ব আদায় করে নিল, যার বার্ষিক রাজস্বের পরিমাণ ৬০ লাখ টাকা। 
     
    এহেন উন্মত্ত লুঠপাটের ফলে পলাশির মাত্র ৮-৯ বছরের মধ্যেই বাংলার কোষাগার থেকে বেরিয়ে গেল প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ পাউন্ড। যে কোম্পানি এমনকি পলাশির অব্যবহিত পূর্বেও এ দেশে পণ্য কেনার জন্য বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকার সোনা-রুপো আমদানি করত, তা আনার ঝঞ্ঝাট চিরতরে চুকল। এবার তারা এই অপরিমিত লুঠ ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাওয়ার সংগঠিত নীতি— যাকে অমিয় বাগচী ‘স্ট্রাকচারাল অ্যাডজাস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’ বা স্যাপ বলে চিহ্নিত করেছেন— তৈরিতে মন দিল। 
     
    এই নীতির ফলে তারা ক্রমিক পর্যায়ে দেওয়ানি আদায়, দাস ব্যবসা, ঔপনিবেশিক হিন্দু আইন তৈরি করে মহিলাদের গৃহবন্দি করে ফেলা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, বাংলা ভাষার সংস্কৃতায়ন, দেশজ শিক্ষাব্যবস্থার অপমৃত্যু ঘটিয়ে দেশ জুড়ে ইংরেজি শিক্ষা চালু করা— ইত্যাদি নানাবিধ লুঠের হার্ডওয়্যার নির্মাণে মনোযোগী হল। আর তাদের এই লুঠের বিশ্বস্ত দোসর বা সফটওয়্যারের ভূমিকায় স্বেচ্ছায় এগিয়ে এল কোম্পানির অনুগত বেনিয়ান, মুনশি, গোমস্তা, দেওয়ানের দল। 
     
    একই সঙ্গে কোম্পানির একচেটিয়া ব্যবসার দৌলতে বাংলা জুড়ে রাতারাতি কর্মহীন হলেন প্রায় ৬ লাখ লবণ কর্মচারী, ১০ লাখ বস্ত্রশিল্পী, ২৫ লাখেরও বেশি সুতো কাটুনি এবং দেশীয় বণিকেরা। আর কৃষিজীবীরা এক দিকে জমিদার ও অন্য দিকে মহাজনদের যৌথ আক্রমণ, অবর্ণনীয় অত্যাচার ও অপরিমিত শোষণের মুখোমুখি হয়ে রেশম, আফিম ও নীলচাষ করতে বাধ্য হলেন।
     
    লিখেছেন দেবোত্তম চক্রবর্তী 
  • Eman Bhasha | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৯:০২529986
  • কৃষ্ণচন্দ্র রায় শুধু সিরাজকেই উৎখাত করতে নয়,চৈতন্য ভাবাশ্রিত বৈষ্ণব সমাজকে বিনষ্ট করতেও সচেষ্ট ছিলেন।
    বুদ্ধিজীবিদের আর্থিক পরিপোষণা দিয়ে কিনে তাদের দিয়ে নিজের ও নিজের পরিবার সম্পর্কে নানাবিধ অলীক মিথ লেখানোর কুঅভ্যাস তিনিই সংগঠিতভাবে শুরু করেন এই বাংলার রাজনীতিতে।
    দেশের স্বাধীনতাসূর্যকে অস্তমিত করার চক্রান্তে তার সামিল হবার গল্প তো সর্বজনবিদিত।
    খোদ গোপাল ভাঁড়ের গল্পেই যেভাবে তার 'দেবত্ব' খসিয়ে দেখানো আছে,তা অপূর্ব!
    আর যে ক্লাইভ 'হুজুর'এর জন্য এত কিছু করলেন তিনি,সেই হুজুরটিই নবকৃষ্ণ দেবকে সঙ্গী ক'রে কলকাতায় দুর্গোৎসব চালু ক'রে কমিয়ে দিলেন কৃষ্ণচন্দ্র ও তার প্রচলিত পুজোর বৈভব।হায় রে!ইতিহাসের 'পোয়েটিক জাস্টিস' যে বড় নির্মম। 
     
    এসব বিচার ক'রে দেখলে গত হাজার বছরের বাঙালি সমাজ-সংস্কৃতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় 'খলনায়ক' হবার দৌড়ে তিনি আছেন।
    আজকের আগ্রাসী হিন্দুত্বের পূর্বসূরী হিসেবে কৃষ্ণচন্দ্র বা রাধাকান্ত দেবদের মতো এইসব সাহেবভজা জমিদারদের অবদান প্রাতস্মরণীয়।
    যেন না ভুলি।
     
    এখন তো দেখি কোনও কোনও বাঙালি সন্তানের কাছে কৃষ্ণচন্দ্র রায় আর প্রফুল্লচন্দ্র রায় একই রকম নমস্য!
    কারণ ঐ যে...দু'জনের নামই ইতিহাসে আছে!
     
    সম্রাট মুখোপাধ্যায় লিখেছেন 
  • দীপ | 2402:3a80:a01:eac3:0:50:7dbe:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৯:০৩529987
  • এখানে কেউ কৃষ্ণচন্দ্রকে সমর্থন করছে না। সমালোচনা করছে আপনার ধান্দাবাজি কে!
     
    মহাপণ্ডিত দেবোত্তম চক্রবর্তীর লেখা এখন প্রামাণ্য গবেষণা! যার একের পর এক মিথ্যা ধরা পড়েছে গুরুচণ্ডালির পাতায়!
     
    রতনে রতন চেনে আর.....
  • Eman Bhasha | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৯:০৫529988
  • ব্রিটিশ শাসন যদি এত ভালো হবে তবে লাখ লাখ হিন্দু সন্ন্যাসী বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন কেন?? চুয়াড় বিদ্রোহ, শান্তিপুরে তাঁতি বিদ্রোহ, কৃষক বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ হয়েছিল কেন?
  • দীপ | 2402:3a80:a01:eac3:0:50:7dbe:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৯:০৬529989
  • বিশ্ব নন্দ, দেবোত্তম; সবকটার প্রোপাগান্ডা তো জানা আছে! 
    আসলে আপনি কিস্যু পড়েননি! 
    এদের লেখা থেকে টুকে মাতব্বরি ফলাতে এসেছেন! 
    এর আগেও এরকম ধান্দাবাজি করেছেন! 
     
  • দীপ | 2402:3a80:a01:eac3:0:50:7dbe:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৯:০৮529990
  • এখানে কেউ ব্রিটিশ সরকারকে সমর্থন করছে না, আপনি এতোই গাড়োল! 
    চোথা মুখস্থ করে লিখছেন, নিজে কিস্যু পড়েননি! 
  • দীপ | 2402:3a80:a01:eac3:0:50:7dbe:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৯:১০529991
  • জেহাদী গুরু ফরহাদ মজহারের মিনি ব্লগ এই সব মনোভাবের তাত্বিক পূর্ণতা দিয়েছে।দেখে আসুন। এপারের ঔপনিবেশিক শক্তি বিরোধী শুয়োরের বাচ্চা বিশ্ব চোদ নন্দ থেকে ক্ষনিকের পুত্র সিংহ কি প্রবল উৎসাহে জেহাদী গুরুর বিষ্ঠা লেহন করে চলেছে।একটি বার দেখুন। চোখ খুলে দেখুন বার বার দেখুন। নির্যাতিত, ধর্ষিত, লুন্ঠিত বাঙালি হিন্দুর নির্যাতনে 'বিজেপির হাত' দেখা বাঙালি হিন্দু পরিবারে বেড়ে ওঠা খান সেনার বীজদের স্বচক্ষে দেখে আসুন। এরপরেও প্রশ্ন করবেন বিজেপি কেন বাড়ছে?"
     
    আমিও একটা লেখার কিছু অংশ টুকে দিলাম।
    কেমন লাগছে?
  • দীপ | 2402:3a80:a01:eac3:0:50:7dbe:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৯:১৩529992
  • বাংলাদেশ ও বাঙলাভাষার মুক্তিসূর্য বখতিয়ার খিলজি!
    প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যান!
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:416a:c83c:3e76:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২০:১৯529993
  • এই রে, দেবোত্তমবাবুর নাম দেখে দীপচাড্ডির জ্বলে গেছে দেখছি laugh
  • দীপ | 42.***.*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২১:০৪529995
  • অধিকাংশ শাসক সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে; সেখানে হিন্দু-মুসলিম খুঁজতে যাওয়া মূঢ়তা! 
    আপনিই তো সবজায়গায় হিন্দু-মুসলিম নিয়ে আসেন! আবার ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি কপচান!
  • দীপ | 42.***.*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২১:১০529996
  • ১৬১০ সালে সাবর্ণ রায়চৌধুরী রা দুর্গাপূজা শুরু করেছেন। আজো তাদের পূজা হয়ে চলেছে।
    আর আপনি নবকৃষ্ণ নিয়ে গপ্পি বানাতে এসেছেন!
  • দীপ | 2402:3a80:a39:d1a:0:46:b20f:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২১:১৭529997
  • দীপ | 2402:3a80:a39:d1a:0:46:b20f:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২১:২৫529998
  • এটা কার লেখা, পণ্ডিত মহোদয়? 
    এই জ্ঞান নিয়ে ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে এসেছেন? আর বিজেপিকে আটকাতে এসেছেন? 
    ধান্দাবাজি আর শয়তানিতে আপনারা বিজেপির উল্টোপিঠ মাত্র! 
    নির্লজ্জ মিথ্যাবাদী!
     
    শুনুন, সোজা কথা বলি। কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হলে সে বিষয়ে একটু পড়াশোনা করতে হয়! আপনি কিস্যু পড়েননি! 
    এখান-ওখান থেকে টুকে বাতেলা মারতে এসেছেন!
  • এলেবেলে | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২২:৩৪530006
  • এক বন্ধুর কথা শুনে বহু দিন পরে এখানে এলাম। শুনতে পেলাম, ইমন ভাষা আমার ফেবুতে শেয়ার্ড হওয়া দুটো পোস্ট (একটি কালকেই লেখা, অন্যটি সামান্য আগের) এখানে সাঁটানোর পর থেকে ক্লোসেট চাড্ডিটি তার চিরাচরিত অসভ্যতা শুরু করেছে পুরোদমে।
     
    এখন আমার প্রোপাগান্ডাটা ঠিক কী, সেটা আমি নিজেই জানি না! আমি যা যা এই পোস্টদুটোতে লিখেছি তার একটাও আমার আপন মনের মাধুরী মিশায়ে লেখা হয়েছে, এমন অভিযোগ আমার ঘোর শত্রুও করতে পারবে বলে মনে হয় না।
     
    প্রথম পোস্টে লেখকের নাম লেখাই আছে, মানে ডি এল রায়ের বাবা কার্ত্তিকেয়চন্দ্র রায়। বইয়ের নাম, পৃষ্ঠাসংখ্যারও উল্লেখ আছে। দ্বিতীয় পোস্টের যাবতীয় তথ্যের সূত্র মূলত তিনজন ইতিহাসবিদের গ্রন্থ - সিরাজুল ইসলাম-এর বাংলার ইতিহাস : ঔপনিবেশিক শাসনকাঠামো, কালীপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়-এর বাঙ্গলার ইতিহাস অষ্টাদশ শতাব্দী এবং রমেশচন্দ্র দত্ত-এর The Economic History of India under Early British Rule। তো এগুলো যদি প্রামাণ্য গবেষণা গ্রন্থ না হয়, তাহলে সেই একমাত্র প্রামাণ্য গ্রন্থপ্রণেতার নাম কি রমেশচন্দ্র মজুমদার? মানে কাল থেকে চাড্ডিরা যাঁর বইয়ের একটি পাতার নির্দিষ্ট অংশ হাইলাইট করে লাগাতার প্রচার করে চলেছে?
     
    আগে রমেশ মজুমদারের এই বিষয়ক আলোচনার দুটো পাতার ছবি দিই বরং।
    পৃষ্ঠা ১৭৪, মানে যে পাতার ছবিটা চাড্ডিরা দিচ্ছে না
    পৃষ্ঠা ১৭৫, মানে যে পাতার অংশবিশেষ চাড্ডিরা হুলিয়ে শেয়ার করছে
     
    তা রমেশবাবুর এই বিষয়ে মোদ্দা বক্তব্য কী? আহা, বড় সরল, বড় গোলগাল! তিনি লিখেছেন--- "তবে ষড়যন্ত্রকারীদের অধিকাংশ প্রধানত ব্যক্তিগত কারণেই সিরাজকে সিংহাসনচ্যূত করিবার ষড়যন্ত্র করিয়াছিলেন।" তো ক্লাইভ আর তার চ্যালাচামুণ্ডাদের সিরাজের বিরোধিতার করার মূল কারণ কী ছিল? ব্যক্তিগত? উঁহু, হিন্দু মহাসভার সদস্য নমস্য ইতিহাসবিদ সে ব্যাপারে রা কাড়েননি। কিন্তু আমরা তো আর রমেশ মজুমদারে আটকে নেই! গবেষণা যে তার পরে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। তাই আমরা সুশীল চৌধুরী, রজতকান্ত রায়, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখদের একটু-আধটু পড়ার চেষ্টা করি।
     
    এবং ওই চেষ্টার দৌলতে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসে। সুশীল চৌধুরী অজ্ঞাতনামা ইংরেজ লেখকের পাণ্ডুলিপির ভিত্তিতে জানান, "সিরাজউদ্দৌল্লা ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর কাছে যে সমস্ত রসিদ আছে তা থেকে তিনি প্রমাণ করতে পারবেন যে, ইংরেজরা ফারুখশিয়রের ফরমান পাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এশীয় ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যকে কোম্পানির দস্তকের মাধ্যমে শুল্ক মুক্ত করে দিয়ে বাংলার নবাবকে তাঁর ন্যায্যপ্রাপ্ত দেড় কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছে।" মনে রাখবেন এই দেড় কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে কেবল এশীয় বণিকদের থেকে, ব্রিটিশ বা ইউরোপীয় বণিকদের থেকে নয়। তার মানে মুল কারণটা সিরাজের 'চরিত্র' নয়, কারণটা নিখাদ আর্থিক।
     
    আবার ধরুন এই প্রসঙ্গে সিরাজুলবাবু জানাচ্ছেন, "ইংরেজ বণিকদের এ দেশ থেকে তাড়াবার প্রথম কারণ, এরা দেশের প্রচলিত আইনকানুন অমান্য করে কলকাতায় দুর্ভেদ্য দুর্গ ও পরিখা স্থাপন করেছে। দ্বিতীয়ত, এরা বিশ্বাস ভঙ্গ করে দস্তকের অপব্যবহার করছে: বেআইনিভাবে কোম্পানির নামে প্রাইভেট ব্যক্তিদের মধ্যে দস্তক বিতরণ করে সরকারকে এর বৈধ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করছে; তৃতীয়ত, জমিদারি ইজারার নিয়ম ভঙ্গ করে ইংরেজরা এদের কলকাতা জমিদারিকে নিজেদের সার্বভৌম এলাকা হিসেবে গণ্য করছে এবং নবাবি আইন-আদালত থেকে পালিয়ে এসে অনেক অপরাধী কলকাতায় এসে আশ্রয় নিচ্ছে এবং কোম্পানি এসব অপরাধীদের স্বাগত জানাচ্ছে।" মানে এখানেও প্রধান কারণ দস্তকের অপব্যবহার অর্থাৎ যে বিষয়ে রমেশ মজুমদার হিরণ্ময় নীরবতা পালন করতে ভালোবাসেন!
     
    আর এই যে নবাবি আইন-আদালত থেকে পালিয়ে আসা অপরাধীরা কলকাতায় কোম্পানির পদতলে আশ্রয় নিচ্ছে, তাদের অন্যতম হচ্ছেন রাজা রাজবল্লভের 'সুসন্তান' কৃষ্ণদাস যিনি কি না সেই আমলে নবাবের প্রাপ্য ৫৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। মানে এ ব্যাপারে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও রাজা রাজবল্লভ গলায় গলায় বন্ধু। তারপর রাজবল্লভের বিধবা মেয়ের পুনর্বিবাহ দিতে গিয়ে কী হইল জানে শ্যামলাল!
     
    ও, আরেকটা কথা। চাড্ডিরা বিদ্যাসাগরকেও ব্যবহার করছে দেদার। তাতে বাঙ্গালার ইতিহাস গ্রন্থ না হয়ে প্রবন্ধ হলেও আপত্তি নেই! এবং 'সম্মান' বানানটা চাড্ডিদের হাতে কেমন বিকৃত হয়েছে, সেটা দেখে নেবেন। কে না জানে, চাড্ডিদের বিদ্যাসাগর প্রেমও মারাত্মক! এই রইল সেই বহুব্যবহৃত ছবিটি। এবং কী আশ্চর্য, দুনিয়ার সমস্ত চাড্ডি এই ছবিটাই চিপকে চলেছে।
     
    পরিশেষে একটা কথা। আমি এমনিতে কাউকে আগ বাড়িয়ে গালমন্দ করি না। তার মানে এই নয় যে আমি গালাগালি করতে পারি না। ধন্যবাদ  
  • গঙ্গারাম | 115.187.***.*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২২:৪২530007
  • @এলেবেলেদা 
    দুটো প্রশ্ন ছিল
    ১)ঢাকার নবাব হুসেন শাহ আর নসরত শাহ কি সাম্প্রদায়িক ছিলেন?
    ২) সিরাজের আগে মুর্শিদাবাদের যত নবাব কুর্সিতে বসেছিলেন ,তাঁরা কেউই কি সাম্প্রদায়িক ছিলেন আদৌ? অন্য প্যারামিটারে ভাল বা মন্দ বলছি না। অন্য ধর্মাবলম্বীদের কি কোনভাবে আক্রমণ বা তাঁদের সাথে বৈষম্য়মূলক আচরণ করেছিলেন এঁরা? 
  • এলেবেলে | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২২:৫৩530008
  • গঙ্গারাম, আপনি কি হোসেন শাহি রাজবংশের আলাউউদিইন হোসেন শাহ এবং তাঁর পুত্র নাসিরউদ্দিন নুসরাত শাহ-এর কথা বলছেন?
     
    আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে বলি, নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ-এর আমল থেকেই বাংলায় দিল্লির নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই কমে আসে এবং প্রশাসনিক পদে অমুসলমান সমাজের প্রতিনিধিত্ব বাড়ে। এটা যে সিরাজের আমলেও অক্ষুণ্ণ ছিল তার বহু উদাহরণ ইমন ভাষা তাঁর মূল লেখাটিতে দিয়েছেন। কাজেই মোটের ওপরে হিন্দু-মুসলমানের সম্প্রীতিই ছিল, সংঘর্ষ নয়। নতুবা দলে দলে হিন্দু এলিট পরিবারের লোকজন রাজদরবারে কাজ পাওয়ার সুবিধার্থে ফারসি ভাষা শিখত না। 
  • স্প্যামার | 2607:fb90:e3b8:471b:9566:7d17:8af4:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২৩:১২530011
  • ক্লোজেট চাড্ডি আবার কী, এ আগল খোলা মুক্তকচ্ছ চাড্ডি।
  • গঙ্গারাম | 115.187.***.*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২৩:১৮530012
  • গঙ্গারাম, আপনি কি হোসেন শাহি রাজবংশের আলাউউদিইন হোসেন শাহ এবং তাঁর পুত্র নাসিরউদ্দিন নুসরাত শাহ-এর কথা বলছেন?
    হ্যাঁ , দাদা , ঠিকই ধরেছেন,এঁদের সম্পর্কেই জানতে চাইছি। 
     
    আর দ্বিতীয় প্রসঙ্গে বলি , রাজ সরকারি কাজে হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ার ঘটনা যদি বাদও দিই , তাহলেও ,হিন্দুদের ওপর অত্যাচার ,ধর্মীয় নিপীড়ন বা গনধর্মান্তরিতকরনের ঘটনা কি মুর্শিদাবাদের নবাবদের আমলে আদৌ ঘটেছিল?
  • এলেবেলে | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২৩:৩৬530014
  • না, আলাউদ্দিন হোসেন শাহ কিংবা তাঁর পুত্র নাসিরউদ্দিন নুসরাত শাহ সাম্প্রদায়িক ছিলেন, এমনটা অন্তত আমার পড়া বা জানা নেই। প্রথমত, হুসেন শাহের রাজসভায় প্রচুর হিন্দু কর্মচারী নিযুক্ত হয়েছিলেন। মনে রাখুন তাঁর সাকর মল্লিক বা রাজস্ব সচিব ছিলেন বৃন্দাবনের ষড়গোস্বামীর অন্যতম রূপ এবং দবীর খাস বা ব্যক্তিগত কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন সনাতন গোস্বামী। দ্বিতীয়ত, ওঁর রাজত্বকালে ১৪৯৪ সালে বিজয় গুপ্ত ‘পদ্মাপুরাণ’ এবং ১৪৯৫-এ বিপ্রদাস পিপিলাই ‘মনসাবিজয়’ নামক মনসামঙ্গল কাব্য রচনা করেছিলেন। তৃতীয়ত, হোসেন শাহের সেনাপতি পরাগল খানের পৃষ্ঠপোষকতায় কবীন্দ্র পরমেশ্বর মহাভারতের আদিপর্ব থেকে স্ত্রীপর্ব বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন। পরবর্তীকালে পরাগল খানের পুত্র ছুটি খান শ্রীকর নন্দীকে দিয়ে মহাভারতের অশ্বমেধপর্বের অনুবাদ করান। তবে অনেকে মনে করেন শ্রীকর নন্দী এবং কবীন্দ্র পরমেশ্বর একই ব্যক্তি ছিলেন। যাই হোক না কেন, এখানে নবাবি পৃষ্ঠপোষকতাটা একটা বড় ব্যাপার। 
     
    হ্যাঁ, এ কথা ঠিক যে তিনি কামরূপ অভিযানের সময় হিন্দুদের ওপর নির্মম অত্যাচার করেন কিন্তু সেটাকে রাজ্যের প্রসারকল্পে অনুসৃত নীতি হিসাবে বিবেচনা করাই ভালো। বরং নবদ্বীপের দুই বিখ্যাত ব্যক্তি বাসুদেব সার্বভৌম ও চৈতন্য যে তাঁর প্রধান বিরোধী শক্তি উড়িষ্যার পরাক্রান্ত স্বাধীন রাজা প্রতাপ রুদ্রের আশ্রয়লাভ করেছিলেন, এ কথা ভুলে গেলে চলবে না। তবে সামগ্রিকভাবে সাম্প্রদায়িক রেষারেষির ব্যাপারটা ছিল না কিংবা থাকলেও প্রচ্ছন্ন আকারে ছিল। 
     
    আর মুর্শিদকুলি খাঁ পরবর্তী সময়ে ধর্মীয় নিপীড়ন বা গণধর্মান্তর ঘটেছিল, এমন ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া যায় না। অন্তত বাংলার প্রধান দুটি সাহিত্যধারা বৈষ্ণব সাহিত্য ও মঙ্গলকাব্যে এমন নিদর্শন পাওয়া যায় না।
  • গঙ্গারাম | 115.187.***.*** | ৩০ মার্চ ২০২৪ ২৩:৫৪530016
  • @এলেবেলে দা ,
    অনেক ধন্যবাদ দাদা আপনাকে। 
    শুধু একটা জিনিস ঠিক বুঝলাম না।
    এ কথা ঠিক যে তিনি কামরূপ অভিযানের সময় হিন্দুদের ওপর নির্মম অত্যাচার করেন
    এখানে তিনি বলতে কি হুসেন শাহর কথা বলছেন?
  • এলেবেলে | ৩১ মার্চ ২০২৪ ০০:০২530019
  • হ্যাঁ। এবং তার পরেই রূপ-সনাতন চৈতন্য অনুগামী হয়ে রাজকার্য ছেড়ে দেন। মানে সেই আমলে হোসেন শাহ বিরোধী দুটি চক্র যথাক্রমে নবদ্বীপ ও গৌড়ে গড়ে ওঠে। তারপর নীলাচল ও বৃন্দাবনে।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন