সবচেয়ে জরুরি বিষয়গুলোয় সর্বাধিক নীরবতা দেখা যায় আমাদের দেশে। এই বিলে ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক (ধরে নেয়া যায় আধার) বাধ্যতামূলক করার কথা এসেছে। কিছুদিন আগেই ভারতের বসবাস সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে আধার বাতিলের কথা শুনেছি। এবারে এই সম্প্রচার আইনের খসড়া বিল হলে কোনো ব্যক্তির বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করতে একই ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। আমাদের আর শুধু একটা একটা বিল নিয়ে আপত্তি করলে হবে না, গোটা ব্যবস্থাটার বিরুদ্ধে বলতে হবে, বিষবৃক্ষের শিকড় নষ্ট করতে আধার বাতিল করার কথা বলতে হবে।
সংশোধন: "... ভিত্তিতে আধার নিষ্ক্রিয় করার কথা শুনেছি।" "... আধার প্রকল্পটি বাতিল করার কথা বলতে হবে।"
dc | 2401:4900:7b8b:cf29:d9b2:7284:4ec:50a1 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:১৭
আধার বাতিল করা বেশ মুশকিলের ব্যপার। সাবসিডি ইত্যাদি তো আছেই, তার থেকেও বড়ো কথা পুরো ফিনটেক ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়িয়ে আছে আধার এর উপর। আধার বাতিল হলে প্রচুর সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাবে, বা সার্ভিস ডেলিভারিতে অনেক বেশী দেরি হবে, বা পুরনো দিনের মতো সার্ভিস প্রোভাইডারের দোকানে গিয়ে লাইন দিতে হবে, সাথে কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে। সে অনেক ঝামেলা।
ডিসি, ছোট উত্তর হল – স্বাধীনতার থেকে বড় কিছু হয় না। আর বাকি সব তার পরে। তুমি স্লেভ হয়ে যাও নাহলে জীবনে প্রচুর কষ্ট পাবে এইরকম হয়ে যায় আধার-এর পক্ষের যুক্তিগুলো। প্রত্যেক বাজে কাজের পেছনে একটা করে কারণ খাড়া করা হয়। আধার-এর পেছনে প্রথমে সন্ত্রাসবাদ ও তারপর আরও মাস স্কেলে বাধ্য করার জন্যে এগুলোকে খাড়া করা হয়েছে। ওই সাবসিডি ইত্যাদি "জঘন্য "ফ্রি-বি'স"" কতদিন থাকে দেখুন। আধার হলো একটি foundation project, তা যে ব্যবস্থার ফাউন্ডেশন সেই দাস ব্যবস্থাটি চাই না।
শুধু সরকার কেন আজকাল প্রায় সব বড় দোকানে আর প্রচুর বাড়িতেও সিসিটিভি লাগানো থাকে। এমনকি আমাদের এই মফস্বলেও। কোন্নগর কানাইপুরের ৮ বছরের বাচ্চা খুনের ক্ষেত্রে দুটো দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশকে সাহায্য করেছে খিদিরপুরের মেয়েটিকে ধরতে। প্রায় প্রত্যেকের হাতে ক্যামেরা ফোন আর লোকে অকাতরে ছবি তুলে যায় অনুমতির তোয়াক্কা না করেই। এছাড়া বড় শহরগুলোতে রাস্তায় রাস্তায় সিগনালে এবং ক্রুশিয়াল পয়েন্টে সিসিটিভি লাগানো। আমার তো ধারণা আমাদের প্রায় সবারই মুখের কোটি কোটি ছবি এদিক ওদিক ছড়িয়ে রয়েছে।
বায়োমেট্রিক ডেটা সরকারের তরফে কালেক্ট করায় তত সমস্যা দেখি না যতটা আধার ইমপ্লিমেন্টেশান আর ডেটা ম্যানেজপমেন্টে দেখি। এ পুরো বাঁদরের হাতে খন্তা কেস। কোন কোন ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক ভ্যালিডেশান দরকার, ডেটা সিকিউরিটি কীভাবে রাখা হচ্ছে এইগুলো জরুরী বিষয়। আর এইখানে এথিকাল দিকটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
dc | 2401:4900:7b8b:cf29:d9b2:7284:4ec:50a1 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:০৩
আরেকটা নতুন ট্রেন্ড হলো, মুদির দোকান থেকে মাংসের দোকান, জামাকাপড়ের দোকান থেকে বেকারি, প্রায় সর্বত্র আজকাল ফোন নম্বর জানতে চায়। অনেক দোকানে ইন্সেনটিভ থাকে, এক হাজার না কতো টাকার যেন পয়েন্ট যোগাড় হলে একশো টাকা ফ্রি। আমার পুরনো একটা নম্বর আছে যেটা বহুকাল আগে পরিত্যক্ত হয়ে গেছে, সেটা আমি আর বৌ সব জায়গায় দিয়ে বেড়াই। তাতে করে সবজি আর মুদির দোকানে মাঝে মাঝে একশো টাকার ছাড় পাই। দুঃখের ব্যপার, বেশীর ভাগ লোক কোন ভাবনাচিন্তা না করে তাদের আসল ফোন নম্বর দিয়ে দেয়।
মাঝে মাঝে মজাও হয়। কিছুদিন আগে ডেকাথলনে গেছি, বিলের কাউন্টারে বলে ফোন নং আর নাম বলুন। আমি বললাম ওগুলো ছাড়াই বিল করে দিন। তখন বলছে ওগুলো মাস্ট, না হলে বিল হবে না। তো আমি বললাম আচ্ছা ফোন নং লিখুন ৯৮৭৬৫৪৩২১০। একটি মেয়ে সিরিয়াস মুখে পুরোটা এন্ট্রি করে বললো, (অমুক) নাম? বুঝলাম অন্যরাও তাহলে এই পদ্ধতি নিয়েছে! আমি ঘাড় নেড়ে দিলাম, মেয়েটিও বিল করে দিল।
ডিসি, আপনি ছোট করে যা লিখলেন তাতে পরিষ্কার যে আধার-এর আসল ব্যবহার নিয়ে আপনার তর্কের জায়গা নেই। এদিকে আমি প্রায় একযুগ (২০১২) থেকে এর বিরুদ্ধে লেগে আছি, কিন্তু আমার ধারণা হয়েছিল কেউ সমস্যাটা ঠিকঠাক বোঝেই না। প্রথমে টুকরো টুকরো লিখে লাভ না হওয়ায় অনেক দেরি করে হলেও (এর মধ্যে আমার নিজের ধারণা আরও পরিষ্কার হয়েছে আর সরকারও তার পরিকল্পনা পরিষ্কার করে ফেলেছে) গত বেশ কয়েক মাস ধরে প্রায় "অ আ ক খ" করে বোঝানোর মতন করে আমি একটি লেখা লিখে চলেছি, সেটি গুরুতে দেব বলেই এখানে আসা, কিন্তু লেখকের গুণ আমার নেই, শুধু ছোট হয় আবার বড় হয়, কাটা হয় ছাঁটা হয় আবার জোড়া হয়, কিন্তু শেষ আর হয় না। এখন দেখছি বহু লোকেই অনেকটাই বুঝচ্ছে, এমনকি ভিডিও করেটরে ফেলছে, কী মুশকিল, ক্রেডিট পাওয়া তো দূরস্থান জলেই গেলো বোধহয় পরিশ্রমটা! কোনোদিন শেষ করতে পেরে লেখাটি দিলে শুনতে হবে এতো সবাই জানে বলার কি আছে! :-)
যাই হোক, বহুদেশেই আছে এই যুক্তিগুলো কেন দেন? থাকুক না, বহুদেশেই এর বিরুদ্ধে বহুলোকেই দাঁড়িয়েছে বা আপত্তিও করছে, সেই দিকটাও তো আছে। কোনটাকে স্রোত ধরবো? যদিও আমার মনে হয় 'আধার' এই ধরণের প্রজেক্টে প্রায় পথিকৃৎ, এতো বাজে আর এতো শক্তিশালী কিছু ওই চীন বাদে আর কোথাও এর আগে হয়তো নেই। ইউকে ২০০৭এ এরকম কিছু একটা বিল এনে শুরু করে ২০০৯ (বোধহয়) বন্ধ করে দেয় (এখন হয়তো আবার চেষ্টা করছে)। আমেরিকার 'সোশ্যাল সিকিউরিটি' টিও ভালো কিছু নয়, তবে প্রকারে আধার এর মতো ঠিক নয় হয়তো। হলেও ওই প্রথম বিশ্বের মানুষের ওপর প্রভাব আর তৃতীয় বিশ্বের 'শোষণের জন্যে সমর্পিত' মানুষের ওপর প্রভাব এক নয়। 'সবাই মানুষ' ঠিকই, 'কিন্তু নয়'।
এবার আটকানোর কী ভাবে যাবে – যেমন ভাবে যেকোনো কিছু আটকানো যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে আটকানোর কোন চেষ্টাটা করেছি বলুন তো? এই ক্ষেত্রে এই আটকানোর প্রচেষ্টার শুরুটা করার দায়িত্ব তো আমাদের, অর্থাৎ প্রযুক্তির সঙ্গে জুড়ে থাকা লোকেদেরই ছিল (আপনিও তাই তো বোধহয়)। অথচ প্রথম নির্দেশেই আমরা ছুটে গিয়ে 'কমপ্লাই' করেছি, অন্যরা অনেক পরে, আমরা নেতৃত্ব দিয়েছি ব্যবস্থাটির প্রচলনা বাড়াতে, আটকানোর পরিবর্তে। অথচ আইন কিন্তু পক্ষেই ছিল বহুদিন, এমনকি আজও দু একটি ক্ষেত্র বাদে আধার কোথাও বাধ্যতামূলক নয়। হয়তো ওই গল্পটার মতো ভেবেছি, গল্পটা কিছুটা এইরকম – "দশটা লোক জঙ্গলে যাবে, কিন্তু জঙ্গলে বাঘ আছে। একজনের বাড়ির লোক বললো, যে বাঘে তাড়া করলে কি করবে? লোকটি বললো, কেন দৌড়ে পালাবো। তখন বাড়ির লোক বললো, কিন্তু বাঘ তো অনেক জোরে দৌড়োয়? লোকটি বললো, আরে আমাকে তো আর বাঘের থেকে জোরে দৌড়োতে হচ্ছে না, আমাকে শুধু সবার মধ্যে অন্তত একজনের থেকে জোরে দৌড়োতে হবে।"
আমাদের কাছে এখনও সময় আছে কথা শুরু করার, যতদিন মুক্ত স্বাধীন ভাবে বলা যায়, খুব বেশিদিনও আর সময় আছে বলে মনে হচ্ছে না। রোদ থাকতে ধান শুকিয়ে ফেলা দরকার, এরপর আর কিছু করার থাকবে না। প্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো থেকেই শুরু করতে হবে, যোগযোগ তৈরী করে প্রথমে আলোচনা করে ব্যাপারটা সহজ করে লিখে ফেলতে হবে। তারপরে আইন সংবাদ মাধ্যম ও নাগরিক সমাজের লোকেদের একসঙ্গে করতে হবে, সমস্যাটি সহজ ভাবে তুলে ধরে। তারপর নিরন্তর প্রচার প্রতিবাদ তৈরী করতে হবে, সেগুলো কিভাবে করা যায় সেটা বলার জন্য আরো উপযুক্ত লোক নিশ্চয় আছেন। তবে দক্ষ লোকেদের সাহায্য নিয়ে ভিডিও তৈরী করলে জনগণের মধ্যে চেতনা ছড়াতে সুবিধে হবে। আপনি চাইলে, এবং বা অন্য আরও কেউ চাইলে শুরু হতে পারে। কিছু না করলে কি করে কিছু হবে। আমরা অপেক্ষা কোথাও স্ফুলিঙ্গ জ্বলে ওঠার, আসলে মনে করতে হবে আমিই সেই স্ফুলিঙ্গ আমাকেই শুরু করতে হবে। এইভাবে ভাবলে তবেই হবে, নাহলে "আর কেউ তো কিছু করছে না" এর যুক্তির চক্রে সব বাধা পড়ে যায়।
আমার আর ডিসির মধ্যের এই কথোপকথন, অর্থাৎ আধার ও তথ্য জুড়ে দিয়ে রাষ্ট্রের-কর্পোরেটের নলেজ মাইনিং এনালাইসিস প্যাটার্ন তৈরী এইগুলো ঠিক না বোঝা গেলে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন, যদিও খারাপ-ভালো ভারসাম্য রেখে তৈরী, চীনের উদাহরণে – ডয়েচে ভ্যালের তথ্যচিত্র "চায়না'স ব্রেন"।
এসবির মূল লেখার নির্দিষ্ট বিষয় থেকে থেকে সরে যাচ্ছি, দুঃখিত।
দ, সিসিটিভি'র আমি খুব বিরোধী, যদিও বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ছাড়া যেমন মিউজিয়ামে। ডিসি, ফোন নাম্বার নেওয়া অনেক পুরোনো জিনিস, এখন ঐসব বস্তাপচা হয়ে গেছে, ছোটোখাটো স্ক্যাম বা মার্কেটিংয়ে কাজে লাগে তার বেশি নয়। হ্যাঁ আমিও ফোন নাম্বার দিই না, বলে স্যার তাহলে ফেরত দিতে হলে অসুবিধে হবে, আমি বলি নিজেরটা দিয়ে দাও, তুমি তো থাকবে আর আমার কাছে থাকবে বিল। হেসে রাজি হয়ে যায়, ফোন ছাড়াই করে দেয় বেশির ভাগ জায়গায়। যেখানে তাও করে না, আমি বেরিয়ে আসি সাধারণত।
dc | 2401:4900:7b85:8e08:d9b2:7284:4ec:***:*** | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৫৩742341
অরিত্র এখানে লিখতে থাকুন। লেখার গুণ নিয়ে ভাববেন না, আমি যদি এতো বছর ধরে এখানে পোস্ট করতে পারি তো যে কেউ পারবে। আর অন্য এনেকে লিখেছেন কিনা সে নিয়েও চিন্তা নেই, এসব নিয়ে যতো লেখা হয় ততোই ভালো।
এখন আবার অনেক জায়গায় মুশকিল, ফোন নম্বরেই বিল যায়, ফিজিক্যাল বিলও দেয় না। এবার অনেক জিনিস কিনলে বিল না দিলে অসুবিধা হয়। তখন বাধ্য হয়ে ফোন নম্বর দিতেই হয় অনিচ্ছা সত্ত্বেও। কিছু কিছু জায়গায় কাটিয়ে দেওয়া যায়।
dc | 2401:4900:7b85:8e08:d109:ef78:9a48:***:*** | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:২৫742343
হ্যাঁ, এটা আরেকটা চালাকি। কদিন আগেই আমি আর বৌ হেল্থ অ্যান্ড গ্লো তে গেছিলাম, সেখানে বললো ফোন নম্বরে বিল যাবে। আমরা ওই ৯৮৭ ফোন নং দিয়ে বল্লাম কম্পুতে এন্ট্রি করে দিন, বিল চাইনা। এরপর হয়তো বলবে ওটিপি দিতে হবে।
তবে কিনা এসবই একেবারে ছোট লেভেলের বেচারা চুনোপুঁটি ব্যবসায়ীদের সম্বল। আমরা যখন গুগল পে বা ফোনপে ইত্যাদি ব্যবহার করি তখন কিন্তু তিমি মাছেরা ঠিকই টের পেয়ে যায় কে কি কিনছে। গুগল, অ্যামাজন ইত্যাদিদের হাত থেকে বাঁচার উপায় নেই। আর যদি কার্ড ব্যবহার করেন তো ভিসা আর মাস্টারকার্ড সব জানে।
ভালোই হলো। আমি এখানেই অল্প অল্প করে দিয়ে দিই। তাতে একটা peer review হয়ে যাবে শেষ করার আগেই আর আলোচনায় যা উঠে আসবে সেগুলোও আমি কিছু কিছু যোগ করে দিতে পারবো (আগেই বলে দিলাম)।
তা আমি লিখতে শুরু করে বুঝেছিলাম আধার (ও ডিজিটাল ব্যবস্থা) আক্ষরিক অর্থেই গণতান্ত্রিক ভারতের একটি ফ্যাসিস্ট প্রকল্প। ফ্যাসিস্ট শব্দ সমেত এই লাইনটাই টাইটেলে রাখছিলাম, আর কিছু না হোক লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে, যাই হোক এখানেও লিখে দিলাম। বস্তুত এখন যে NPR বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নিয়ে আমরা উদ্বিঘ্ন, অনেকেই জানেন, তার একটা "সুন্দর" উদাহরণ আছে নাৎজি জার্মানিতে। এক প্রখ্যাত মার্কিন সংস্থার পাঞ্চ কার্ড প্রযুক্তির সহায়তায় নাৎসি জার্মানিতে জাতি ধর্ম, লিঙ্গ, জীবিকা প্রভৃতি তথ্য সংগ্রহ করে যে নাগরিক পঞ্জী/তালিকা (citizens’ register/tabulation) নির্মাণ করা হয়েছিল, বলা হয়, তার প্রয়োগে জার্মানির নাৎসি সরকারের কুখ্যাত ইহুদি গণহত্যা সংগঠিত করার কাজ অনেক দক্ষতার সাথে করা গিয়েছিল, অনেক বেশি ফলপ্রসূ হয়েছিল। আমি মনে করি সেই একই ধরণের, কিন্তু আরো অনেক ব্যাপক, একটি ব্যবস্থা আজকের ভারতে গড়ে উঠছে, যার বুনিয়াদি (foundational) প্রকল্পটি হল আধার (Aadhaar)।
এবি যে ভিডিওটি দিয়েছেন সেটাও থাক। আধার আলোচনা করতে গেলে 'পরিচয়' সম্পর্কে ধারণা কিভাবে গড়ে উঠেছে এবং ব্যবহৃত হয়েছে সেটা খেয়াল করা দরকার। আমার আলোচনাতেও এসেছে, তবে ভারতের সাপেক্ষে, এখানে গ্লোবাল প্রেক্ষিতে ডিজিটাল পরিচয় ও পরিচিতি (বাংলায় দুটো শব্দ আছে, ইংরেজিতে indentity শব্দে দুটোই বোঝানো হয়) এসেছে এবং বক্তার প্রেজেন্টেশন বেশ ভালো।
dc ও অরিত্র'র কথোপকথন পড়ে বহু, বহুদিন আগে sxip tech এর ceo Dick Hardt এর OSCON এ দেওয়া আইডেনটিটি নিয়ে একটা প্রেজেনটেশনের কথা মনে পড়ে গেল (প্রেজেনটেশনটি লরেনস লেসিগ যেমন ভাবে প্রেজেন্ট করেন, তাঁর স্টাইলে দেওয়া, দেখবার মতন), এখানে বক্তৃতাটিতে ভদ্রলোক ডিজিটাল আইডেনটিটি ও তার transaction নিয়ে ২০০৫ সালে যা বলেছিলেন, তার অনেকাংশে আজকালকার দিনে সামান্যই পরিবর্তন হয়েছে। বরং ব্যাপারগুলো আরো জটিল এবং গুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
dc | 171.79.***.*** | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৩৯742346
এই আলোচনায় শোসানা জুবফকে বাদ রাখা উচিত না :-) আজ রাতে সময় পেলে একটু লিখবো বা দুয়েকটা ভিডিও দেবো।
এখনো পর্যন্ত আধার প্রকল্প নিয়ে যত ওজর আপত্তি হয়েছে, তার বেশিরভাগই পরিচয় চুরি (identity theft, impersonation), তথ্য চুরি (data theft), আর্থিক চুরি জালিয়াতি (financial fraud) ইত্যাদি আর্থিক ও তথ্যগত সুরক্ষা সম্পর্কিত আশংকা নিয়ে – যেগুলো রূপায়ণঘটিত খামতি, প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও ব্যক্তিগত (of an individual) ক্ষয়ক্ষতির বিষয়। সামাজিক বহিষ্করণ (social exclusion) এর মতন নৈতিক বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে নাগরিক সমাজ থেকে (জঁ দ্রেজ প্রমুখ উল্লেখ্য)। কিন্তু আধার প্রকল্পটির-পূর্ণ-বাস্তবায়ন পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র নাগরিক ক্ষমতার ভারসাম্যের পরিবর্তন এবং নাগরিক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মতো সমষ্টিগত (of the mass) বিষয়ের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে নীতিগত উদ্বেগ বা আপত্তিগুলো সংগঠিতভাবে জনসাধারণের সামনে আসেনি। রূপায়ণঘটিত ত্রুটির থেকে নীতিগত আপত্তির এবং ব্যক্তির থেকে সমষ্টির বিষয়গুলো প্রশ্নাতীতভাবে “গুরু” তথা প্রধান।
তাই আমার বক্তব্যে আমি এইদিকগুলোতেই সীমাবদ্ধ থাকবো।
শুরু করার আগে এটাও বলে রাখা ভালো, এখানে আধার প্রকল্পের সম্ভাব্য অপপ্রয়োগের প্রভাব নিয়ে আমি বলতে চাই। ব্যবস্থাকে, তার পরিচালক ক্ষমতাকে কর্পোরেটকে বা রাষ্ট্রকে, আবশ্যিকভাবে মঙ্গলকামী (neccessarily benevolent) ধরে নিলে আমার বক্তব্য অর্থহীন মনে হতে পারে।
আধার নিয়ে বা তার সপক্ষে উঠে আসা যে চলতি প্রশ্ন বা যুক্তিগুলোকে address করার চেষ্টা করবো, সেগুলো নিম্নরূপ: ১) আধার তো একটি পরিচয়পত্র, তেমন আরও পরিচয়পত্র ছিল আছে থাকবে, তাহলে আলাদা কী? ২) আমাদের তথ্য সমস্ত জায়গায় সংগৃহিত হচ্ছে, আধার নিয়ে আপত্তি করে কি লাভ? ৩) আচ্ছা যদি তথ্য নিয়েই থাকে, তাহলেই বা অসুবিধে কী?
আধার নিয়ে এগোনোর আগে পরিচয় ও পরিচিতি নিয়ে কিছু জিনিস ঝালিয়ে নেওয়া ভালো, এবির শেয়ার করা ভিডিও Identity 2.0 ওপরেই রয়েছে। আমি ভারতের প্রেক্ষাপট থেকে দুএকটা পর্যবেক্ষণ নিচে দিলাম।
# পরিচয়পত্র #
পরিচয় কী? না কোনো ব্যক্তির প্রাথমিক পরিচয়গত তথ্য, যেন নাম, বয়স, ছবি এবং হয়তো ঠিকানা, অর্থাৎ সেই তথ্য যা তাকে চিনতে অন্যদের সাহায্য করে।
পরিচয়পত্র অবশ্য বেশ সাম্প্রতিক ব্যাপার। সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠান-এর সদস্য বা গ্রাহক হওয়ার জন্যে নিজের পরিচয় দিতে হয়। যেকোনো প্রামাণ্য বৈধ নথির একটা দিলেই হত। এগুলো ঠিক পরিচয়পত্র নয়, এদের পরিচয়গত তথ্যের শংসাপত্র (cetificate) ছিল। এই পরিচয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হত।
কিছু ক্ষেত্রে যেমন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা বা ইমেইল অ্যাকাউন্টে লগ ইন করার সময় ব্যক্তিকে নিজের প্রামাণীকরণের (authentication) মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, অর্থাৎ তিনি প্রকৃতই সেই ব্যক্তিই কিনা তা নিশ্চিত করা। গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের সাথে তার সই মিলিয়ে বা পাসওয়ার্ড, পিন-এর মাধ্যমে। এখানে তিনি সেই একই ব্যক্তি কিনা শুধু সেটা নিশ্চিত করাই উদ্দেশ্য, সেই ব্যক্তির পরিচয় নির্ণয় করা সবক্ষেত্রে ‘আবশ্যিক নয়’। আর এই প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির একান্ত ‘স্বসূচিত, সক্রিয় ভূমিকা’ থাকে।
শনাক্তকরণের জন্য পরবর্তীকালে ফটোগ্রাফ নেওয়ার সূত্রপাত হয়। এর ফলে সামনাসামনি কোনো গ্রাহককে তার জমা করে রাখা ফটোগ্রাফের সঙ্গে মিলিয়ে চেনা সম্ভব। তবে এখানে কর্মরত ব্যক্তির দক্ষতার ওপর নির্ভরশীল হতে হয় এবং তা নির্ভুল হয় না। ফলে ফটোগ্রাফের অন্তর্ভুক্তি সই বা পাসওয়ার্ডের মতন ব্যক্তি প্রামাণীকরণ ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপিত করেনি। তাছাড়াও এই শনাক্তকরণ পদ্ধতিতেও গ্রাহক আইডি বা অ্যাকাউন্ট নাম্বারের জন্য গ্রাহকের ‘সক্রিয় অংশগ্রহণ’ একান্ত প্রয়োজনীয় (ডিজিট্যাল ফেস রেকগনিশন প্রযুক্তির কথা এই মুহূর্তে বাদ রাখছি)।
এইসমস্ত চেনা জানা ব্যাপার গুলো বলার কারণ কয়েকটি জিনিস লক্ষ্য করানো। সেগুলি হল – এক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শংসাপত্র প্রয়োজন হত পরিচয়গত ‘তথ্যের প্রামাণ্যতার’ জন্য। দুই, কোনো ব্যক্তি এই প্রামাণ্যতা একাধিক উপায়ে দিতে পারতেন, যেকোনো বৈধ শংসাপত্রই গ্রহণযোগ্য ছিল। তিন, প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংগৃহিত পরিচয়গত তথ্যের ব্যবহার প্রতিষ্ঠানের ‘অভ্যন্তরীণ গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ’ থাকতো। চার, কোনো ব্যক্তি কোনো প্রতিষ্ঠানে পরিচয় দাখিল করতেন তার নিজের ‘ইচ্ছে, স্বার্থে ও প্রয়োজনে’। কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না।
দশক দুই আগে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য (প্রথমে করদাতার জন্য) যে প্যান (PAN) তৈরী হল, সেটা উপরের বিষয়গুলোর অনেকগুলোই লঙ্ঘন করলো। প্রথমত এই প্যান করদাতাদের প্রয়োজন বা স্বার্থে নয় বরং ‘আয়কর দপ্তরের প্রয়োজনে’, তাদের নিজস্ব হিসেবরক্ষার স্বার্থে তৈরী হল এবং বাধ্যতামূলক ভাবে হল। দ্বিতীয়ত এটি প্রকৃতিতে কোনো শংসাপত্র নয় (যদিও সেই হিসেবে এর ব্যবহার আছে) এটি একটি আর্থিক ক্ষেত্রের জন্য পরিচয় গঠন করার জন্য নির্মিত ‘পরিচয়পত্র’। আর তৃতীয়ত, যদিও আয়কর দপ্তরের নিজস্ব পরিচয়পত্র, এর ব্যবহার একটি প্রতিষ্ঠানের গণ্ডি পেরিয়ে একটি সম্পূর্ণ ‘ক্ষেত্রের’, সমগ্র আর্থিক ক্ষেত্রের জন্য প্রযোজ্য হলো। এছাড়া সম্ভবত পাসপোর্ট, যার সীমিত নির্দিষ্ট ব্যবহার ছিল, বাদ দিলে এটাই প্রথম একটি সাধারণ উদ্দেশ্যে নির্মিত (general purpose) ফটোগ্রাফ-যুক্ত পরিচয়পত্র, অর্থাৎ ফটো আইডি এবং যার সঙ্গে একটি সার্বিক ব্যবহারের জন্য অনন্য নাম্বার, অর্থাৎ প্যান নাম্বার, জুড়লো।
এরপর আমরা পাচ্ছি (২০০৩ সালের পরিকল্পনা) একটি সার্বজনীন পরিচয়পত্র অর্থাৎ Universal ID যার প্রথম নামও ছিল UID এবং পরে সেটাই নামকরণ করা হয় ‘আধার’ – বা আধার কার্ড হিসেবে। এই আধার পরিচয়পত্রটি প্যান কার্ডের সমস্ত ধর্মই ধরে রাখলো এবং তার ওপরে এটি বিশেষ জোর দিলো শনাক্তকরণে এবং এর ব্যবহারিক ব্যাপ্তিতে। আধার শুধু আর্থিক ক্ষেত্র নয়, সমস্ত ক্ষেত্রের জন্য প্রযোজ্য একটি সার্বিক রাষ্ট্রব্যাপী পরিচয়পত্র হিসেবে উঠে এলো এবং কার্যত প্রায় বাধ্যতামূলক পরিচয় হিসেবে। একটি জন-পরিচয় ও পরিচিতি নির্মাণ প্রকল্প।
কিন্তু পরিচিতি কী? পরিচিতি বলতে সাধারণভাবে যেমন কোনো মানুষ কিসের জন্যে পরিচিত বা খ্যাত (বা কুখ্যাত) বোঝায়, অর্থাৎ তার কর্ম সম্বন্ধীয়, ঠিক এখানেও তেমনি পরিচিতি মানে কোনো মানুষের নানান কার্যকলাপ (activities) বিশেষত যার digital footprint থাকে সেইসব ক্রিয়াগত তথ্য সমবেতভাবে তার ‘পরিচিতি’ নির্মাণ করে।
dc | 72.52.***.*** | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:১৬742349
"এছাড়া সম্ভবত পাসপোর্ট, যার সীমিত নির্দিষ্ট ব্যবহার ছিল, বাদ দিলে এটাই প্রথম একটি সাধারণ উদ্দেশ্যে নির্মিত (general purpose) ফটোগ্রাফ-যুক্ত পরিচয়পত্র, অর্থাৎ ফটো আইডি এবং যার সঙ্গে একটি সার্বিক ব্যবহারের জন্য অনন্য নাম্বার, অর্থাৎ প্যান নাম্বার, জুড়লো।"
এখানটা পরিষ্কার হলো না। প্রথমত, পাসপোর্টও সচিত্র পরিচয়পত্র বা ফটো আইডি প্রুফ, আর পাসপোর্টেও অনন্য নম্বর থাকে। দ্বিতীয়, পাসপোর্ট কিন্তু সিটিজেনশিপ প্রুফ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। অনেক লোক আছেন যাঁরা কখনো বিদেশে যান নি কিন্তু সিটিজেনশিপ প্রুফ বা ফটো আইডি প্রুফ হিসেবে পাসপোর্ট বানিয়ে নিয়েছেন। অর্থাত পাসপোর্টের সীমিত নির্দিষ্ট ব্যবহার ছিল বলা যায় না। প্রাইমারি ফাংশান ছাড়া প্যান কার্ড শুধুমাত্র ফটো আইডি প্রুফ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে, অন্যদিকে পাসপোর্ট সিটিজেনশিপ প্রুফ, অ্যাড্রেস প্রুফ, আর ফটো আইডি প্রুফ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাহলে আপনি প্যান যে ক্রাইটেরিয়াগুলো লঙ্ঘন করলো বলেছেন, পাসপোর্ট তার অনেক আগেই সেই ক্রাইটেরিয়াগুলো লঙ্ঘন করেছে।
"প্রথমত এই প্যান করদাতাদের প্রয়োজন বা স্বার্থে নয় বরং ‘আয়কর দপ্তরের প্রয়োজনে’, তাদের নিজস্ব হিসেবরক্ষার স্বার্থে তৈরী হল এবং বাধ্যতামূলক ভাবে হল। "
এভাবে দেখলে তো পাসপোর্টও ট্র্যাভেলারদের প্রয়োজন বা স্বার্থে নয় বরং ইমিগ্রেশান ডিপার্টমেন্টের নিজস্ব হিসেবরক্ষার স্বার্থে তৈরী হয়েছে এবং বাধ্যতামূলক ভাবে হয়েছে।
driving licecnce, voter card,এ সব তো আধারের আগেই চালু ছিলো। আধারের পরে bank passbook এও ফোটো বাধ্যতামুলক হয়েছে। কাদের কাদের স্বার্থ যে এইসব হয়েছে কে জানে।
বোধ হয় ল্যাম্বো সাহেবের কান্ড।
dc | 2401:4900:7b87:5677:a42a:64d1:f5d2:***:*** | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৫742351
পাসপোর্ট আর ভোটার আইডি, এই দুটোই বোধায় আসল দুলালের তালমিছরি বা প্রুফ অফ সিটিজেনশিপ (ছবি ও সই সহ)।
তবে এটা একটু আন্দাজে বললাম, কারন ইদানিং এতো সব নিয়মকানুন এসেছে যে সব ঘেঁটে গেছে।
আর ড্রাইভিং লাইসেন্স হলো ফটো আইডি আর অ্যাড্রেস প্রুফ। তবে কিনা ড্রাইভিং লাইসেন্সও ড্রাইভারের প্রয়োজনে না, পুলিশের স্বার্থে তৈরি ও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে :-)
পাসপোর্ট এখন আর অ্যাড্রেস প্রুফ হিসেবে ব্যবহার করা যায় না ডিসি। কিছুদিন আগে সার্কুলার বেরিয়েছহিল। বিরং ইউটিলিটি বিল ইলেকট্রন ট্রিসিটি বা গ্যাসের অ্যাড্রেস প্রুফ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
dc | 2401:4900:7b87:5677:a54e:8f22:bb2:***:*** | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪৪742353
অধিকাংশ দেশের পাসপোর্টেই আজকাল ঠিকানা লেখা থাকে না। পাসপোর্ট তাই ঠিকানার প্রমাণ রূপে অনেক জায়গাতেই অচল। বরং ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট বা ইলেকট্রিকের বিল দেয়া যায়।
আমি যখন পরিচয়পত্রের ধারণাটি নিয়ে চিন্তা করেছি, মনে হল মানুষের ব্যক্তিগত পরিচয় থেকে আস্তে আস্তে যেন রাষ্ট্রের প্রয়োজনে একটা সার্বিক পরিচয় সৃষ্টি হচ্ছে। প্রথমে আধার-কেই এই কাজে প্রথম পদক্ষেপ মনে হলেও, পরে ভাবতে গিয়ে যেন অনুভব করলাম, এই প্রচেষ্টা তার কিছুটা আগেই শুরু হয়েছে, সম্পূর্ণতা পায় নি। সেইদিক থেকে প্যান-কে এর মনে হলো। কিন্তু সেটা একটা অনুভূতি, তার পেছনে গঠনগত বা প্রয়োগগত ভিত্তি গুলো ধরার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে দাঁড়ায় নি, দেখা যাক ব্যাখ্যা করা যায় কিনা, নাহলে মূল লেখা থেকে বাদ দিতে হবে।
আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি দাঁড়ান।
একটা জিনিস, কি করে জানি, বাদ পড়েছে – সই, পাসওয়ার্ড/পিন এই ধরণের অথেনটিকেশন বা আইডেন্টিফিকেশনে শনাক্তকরণ উপরকরণটি ব্যক্তির স্মৃতির মধ্যে থাকে, এগুলোকে knowledge-based systems বলা হয়। এই টার্ম টা বলার ছিল।
"কিন্তু আধার প্রকল্পটির-পূর্ণ-বাস্তবায়ন পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র নাগরিক ক্ষমতার ভারসাম্যের পরিবর্তন এবং নাগরিক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মতো সমষ্টিগত (of the mass) বিষয়ের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে নীতিগত উদ্বেগ বা আপত্তিগুলো সংগঠিতভাবে জনসাধারণের সামনে আসেনি। রূপায়ণঘটিত ত্রুটির থেকে নীতিগত আপত্তির এবং ব্যক্তির থেকে সমষ্টির বিষয়গুলো প্রশ্নাতীতভাবে “গুরু” তথা প্রধান।"
এই জায়গাটায় আপনি কি লেখেন আগে পড়ি। এই বিষয়টা একটা সাংঘাতিক গুরুত্বপূর্ণ দিক, বিশেষ করে রাষ্ট্র এবং নাগরিকের পারস্পরিক সম্পর্কের ব্যাপারটা এখানে আসবে। আদৌ আধার "কার্ডের" কোন প্রয়োজন একটি গণতান্ত্রিক বিশেষ করে ফেডারেটেড সিসটেমে প্রয়োজন আছে কি না, সেটা আলোচনার বিষয় হতে পারে।
একজন নাগরিক হিসেবে আমার কতটা ব্যক্তিগত বিষয় আমি সরকারকে জানাব, কতটা সরকারের এক্তিয়ার, এবং একজন সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সরকারী পরিসেবা, সে যদি আমার civil right হয়, তাকে কেন conditional করা হবে, আর সেই conditionality নাগরিক হিসেবে আমি কেন মেনে নেব, এই প্রশ্নগুলো উঠতে বাধ্য।
আআডেনটিটির প্যারাডক্স হচ্ছে আপনি কে আপনি নিজে বললে কেউ মেনে নেবে না, অথচ এমন একজন মানুষ, যে আপনার আর রাষ্ট্রের মধ্যে অবস্থান করে, যাকে আপনি চেনেন না, যে আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনে না, সে আপনাকে রাষ্ট্রের কাছে চিহ্নিত করছে। মানে, আপনি instrumental, আসল কদর এক টুকরো চিরকুটের।
ডিসি, "পাসপোর্টের সীমিত ব্যবহার" – পাসপোর্ট ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক থেকে বলেছি আর নির্দিষ্ট বলেছি কারণ ঐতিহাসিকভাবেই পাসপোর্ট দপ্তর তৈরির উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট ছিল, সেটা "সার্বিক দেশ ব্যাপী পরিচয়" হিসেবে ব্যবহারের জন্য তৈরী হয় নি, করা যেত কিনা সেটা আলাদা প্রশ্ন, গঠনগতভাবে প্যানের থেকে আলাদা কিছু নয়, বরং অনেক ভালো ভেরিফিকেশনের মধ্যে দিয়ে যায়।
হ্যাঁ, ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে না গ্রহণ করাটা অদ্ভুত এই দিক থেকে যে এই পাসপোর্টেই ঠিকানার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা হয়। তবে মনে হয় ঠিকানা জিনিসটা আধার-এর মতো নাগরিক (বসবাসকারী) পরিচয়পত্রের মধ্যে ফেলে, যেটা নিরন্তর আপ-টু -ডেট রাখার বাধ্যতা থাকবে, সেটার সঙ্গে পাসপোর্ট সংযুক্ত হবে/হচ্ছে। কিন্তু আমি মনে করি, এবং আশা করি পরে আলোচনয় আসবে, ভৌগোলিক ঠিকানা আর সার্বিক ডিজিটাল ব্যবস্থায় / প্রশাসনে ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। ঠিকানার বোধহয় দুটো ব্যবহার ছিল, এক ভৌগোলিক ভাবে কাউকে খুঁজে বের করা আর দুই (একই নামের ক্ষেত্রে) অনন্যতা নির্মাণে। দ্বিতীয়টির প্রয়োজন ফুরিয়েছে, আর হয়তো অনেকক্ষেত্রেই প্রথমটিরও।
প্রশ্নের উত্তর খুঁজে গিয়ে মনে হচ্ছে এখানে আমাদের 'স্বার্থ'কে অনুসরণ করতে হবে। দুটো সত্তা রয়েছে, ব্যক্তি ও রাষ্ট্র, কোনটা কোন সত্তার স্বার্থে হচ্ছে সেটাই হয়তো ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করবে। আর "পরিচয়গত শংসাপত্র" ও "পরিচয়পত্রের" মধ্যে পার্থক্য করতে হবে, দুটোর স্বার্থ আলাদা।
প্রথাগতভাবে বহু সরকারি বা স্বীকৃত অসরকারী প্রতিষ্ঠান আমাদের পরিচয়গত তথ্য, দক্ষতা, যোগ্যতা ইত্যাদির শংসাপত্র দিয়ে থাকে। এই পরিচয়গত তথ্য, দক্ষতা, যোগ্যতা ইত্যাদির "শংসাপত্র" ব্যক্তিরই একটা সামাজিক বা ব্যবস্থাগত প্রয়োজনীয়তা। সমাজে বা ব্যবস্থায় কাজেকর্ম চালাতে পরিচয়, দক্ষতা, যোগ্যতার প্রমাণ দরকার যেটা বিশ্বাস আস্থার পরিকাঠামো তৈরীর করে। প্রতিষ্ঠানগুলো এইসব শংসাপত্র দিয়ে সাহায্যই করে, এখানে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থ খুব একটা থাকে না, তারা একটা সামাজিক দায়িত্ব পালন করে।
এই শংসাপত্রগুলো কোনো ব্যক্তি সমাজে কাজেকর্মে নিজের প্রয়োজন হলে এবং "যখন হয়" তখন নেন self initiatedly (স্ব-সূচিত বাংলা করে বলেছি), অর্থাৎ ব্যক্তি নিজের স্বার্থে নেন। "আবশ্যিক" নয়, প্রয়োজন হলে তবেই।। যেমন, বিদেশ যাওয়াটা ব্যক্তির প্রয়োজনীয়তা, সেখানে পাসপোর্ট দপ্তর নাগরিকত্ব ও অন্যান্য পরিচয়গত তথ্যের শংসাপত্র দিয়ে সাহায্য করে। পাসপোর্ট দপ্তরের স্বার্থ কিছু নেই, লাভও কিছু হয় না। একই ভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স গাড়ি চালানোর নূন্যতম দক্ষতার শংসাপত্র। সামাজিক দরকারে ব্যক্তি স্বার্থ (পুলিশের, RTO বা পরিবহন দপ্তরের স্বার্থ কেন হতে যাবে :-) )। তেমনি মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র, কেউ না নিতে চাইলে বোর্ড দেবে না, ওদের কী। ভোটার আইডি কার্ড এমনিতে নেওয়ার প্রয়োজন পরে না, ভোট দিতেও না – ওই পরিচয়ের শংসাপত্র বা "আমি তো এমনি এমনি খাই" ভাবেই করায় লোকজন।
প্যান ও পরিচয় শংসাপত্র হিসেবে কেউ বানাতেই পারে, কারণ এটি কম ঝক্কির ব্যাপার। কিন্তু ধরা যাক পরিচয় প্রমাণের জন্য কোনো ডকুমেন্ট আছে এমন ব্যক্তি প্যান কি জন্য করাবে, কোন প্রয়োজনীয়তা? আয়কর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা? "আপনার আয়কর আপনার অধিকার"? খুব বড় "দেশপ্রেমিক উনিভক্ত" হতে হবে এইভাবে ভাবতে গেলে। কর "দেওয়া" ব্যক্তির প্রয়োজনীয়তা নয়, "নেওয়া"টা ওদের, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা। (**) ... আরও খেয়াল করতে হবে প্যান তৈরী করা ব্যক্তির ইচ্ছের ওপর কোনোদিনই ছাড়া ছিল না, প্রথমে ছিল কর যোগ্য আয় থাকলে বা ব্যাংকিং ও আর্থিক ব্যবস্থায় থাকলে "আবশ্যিক"। তারপর হলো যেকোনো আয় থাকলেই প্যান তৈরী করতে হবে, আর এখন তো আয় না থাকলেও আইনগত ভাবে আবশ্যিক। প্যান ব্যবহারের দিক থেকেও শুধু আয়কর বিভাগ নয়, আর্থিক ক্ষেত্রে সর্বত্র আবশ্যিক। রাষ্ট্র তার আয়ের (আয়কর) স্বার্থেই পুরো আর্থিক ক্ষেত্রটাকেই মনিটর/নজরদারির আওতায় এনেছে। এবং আয়কর দপ্তর থেকে ব্যক্তির একমাত্র আইটি রিটার্ন সার্টিফিকেট আর অতিরিক্ত দেওয়া কর ফেরত ছাড়া আর কোনো প্রাপ্তি হয় না।
তাই আমি বলেছি প্যান ব্যক্তি স্বার্থে নয় রাষ্ট্রীয় স্বার্থে তৈরী।
ব্যক্তির দরকারে তাকে ঐচ্ছিকভাবে তথ্য, যোগ্যতা, দক্ষতার প্রামাণ্যতা হিসেবে দেওয়া "শংসাপত্র" ব্যক্তি স্বার্থ থেকে চালিত। আর ব্যক্তির (প্রত্যেক বা একটি নির্দিষ্ট অংশের) ব্যক্তিগত প্রয়োজন ছাড়াই তার জন্য আবশ্যিক 'পরিচয়' নির্মাণ করা ও "পরিচয়পত্র" দেওয়া কোনো না কোনো রাষ্ট্রীয় স্বার্থ থেকে চালিত হয়। দুটো আলাদা।
আরেকটা জিনিস: বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরিচয়গত তথ্যের সঙ্গে এখন অতিরিক্ত KYC নেওয়া হয় (আরও অনেকবেশি পরিচয়গত তথ্য)। এমনিতে অনেক প্রতিষ্ঠানেরই এই KYC তথ্যের নিজের কোনো ব্যবহার থাকে না, এগুলো রাষ্ট্রীয় / পুলিশ-প্রশাসনিক প্রয়োজনে নেওয়ার নিয়ম রাখা হয়েছে যা তারা মানতে বাধ্য হয়। এই KYC ও কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বার্থ।
এছাড়া: ছবি, অনন্যতা এইগুলো কিছু প্রয়োজনীয় গঠনগত বৈশিষ্ট প্যান ছাড়াও অন্যান্য শংসাপত্রে ছিল। এইগুলো প্রথম কোনটিতে ব্যবহার হয়েছে তা হয়তো এই আলোচনায়, যা দেখতে পাচ্ছি, খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। মোটামুটি যেটা বলতে চাইছিলাম সেটা হলো প্যান হয়তো "প্রথম" বা ব্যবহারের সংখ্যাগত ব্যাপ্তির দিক থেকে অন্যতম রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে তৈরী "পরিচয়পত্র"। আমার মনে হয়েছে এটি আধার এর পূর্বসূরী (কিন্তু কম ক্ষমতা ও প্রয়োগগত ব্যাপ্তি সম্পন্ন)।
আমি হয়তো এখনও ভাবনাটাকে গোছাতে বা পরিষ্কার করতে পারছিনা। চেষ্টা করছি, নিশ্চিত আমি কিছু একটা পার্থক্য অনুভব করছি, একটা প্রবণতা এখানে আছে। আপাতত এই বক্তব্যগুলোকে ভাঙার চেষ্টা করুন। দেখা যাক কতদূর ডিফেন্ড করতে পারি আর তার থেকে কিছু বেরিয়ে আসে কিনা।
(**) এখানে কেউ বলতে পারেন, রাষ্ট্র যেহেতু মানুষের জন্য তাই রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা মানুষেরই প্রয়োজনীয়তা। হ্যাঁ, কিন্তু তাহলেও 'মানুষ' ও 'ব্যক্তি বা নাগরিক' আলাদা জিনিস। রাষ্ট্রের মধ্যেই, 'ব্যক্তি বা নাগরিক' ও 'রাষ্ট্র' বলে দুটি সত্তা আছে এবং তাদের মধ্যে দায়িত্ব ও অধিকারের যেমন ভাগাভাগি আছে পৃথক স্বার্থও আছে এবং তাদের স্বার্থের সংঘাতও আছে। কাজেই রাষ্ট্রের "প্রয়োজনীয়তা" যদি বুঝতে পারি, তাহলে গরজ ও স্বার্থ সেই রাষ্ট্রসত্তার, তাকে "ব্যক্তি বা নাগরিক" সত্তার স্বার্থ বা মঙ্গলের জন্য প্রমাণ করা যাবে না। মানুষের জন্য হতে পারে।
(***) এটা off topic বলে আলাদা লিখছি। আসলেই আয়কর বিভাগের বা রাষ্ট্রের সমস্ত আর্থিক ক্ষেত্রকে মনিটর করার প্রচেষ্টা একটা সীমা লঙ্ঘন। কিন্তু "যার যতটা আয় তার ততটা কর" এই নীতির (সেটা ভালো) জন্যে তারা এই সীমা লঙ্ঘনের একটা অধিকার পায়। অন্য ভাবে, যেমন শুধু কেনাকাটার ওপর কর আদায় করলে (এটা আমি পদ্ধতি হিসেবে সমর্থন করি না) তাদের ওই অধিকারটা আর থাকে না।
এবি, হ্যাঁ আমি তো লিখছি রাষ্ট্র নাগরিক ক্ষমতার ভারসাম্যের জায়গা থেকে, যেটা আধার নাড়িয়েছে বলে মনে করি, সেখানেই স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের কথা আসছে। কাজেই আমার লেখার প্রত্যেক অংশেই আমি বলার চেষ্টা করবো কিভাবে ওই ভারসাম্যে রাষ্ট্র নিজের ক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে (সেই দিক থেকেই মনে হয়েছে প্যান এইরকমই একটা প্রাথমিক ধাপ, দেখা যাক যুক্তিগ্রাহ্য হচ্ছে কিনা)। আশা করি শেষে এই প্রকল্পটিকে "ফ্যাসিস্ট" বলার ভিত্তিটি তৈরি করতে পারবো। দেখা যাক।
আরেকটা কথা, লিখতে ভুলে গেছি – "পরিচয় চুরি (identity theft, impersonation), তথ্য চুরি (data theft), আর্থিক চুরি জালিয়াতি (financial fraud)" ইত্যাদি আর্থিক ও তথ্যগত সুরক্ষা সম্পর্কিত আশংকা নিয়ে আমি চিন্তিত নই ওই একই কারণে, কারণ রাষ্ট্র চাইবে না ব্যবস্থাতে এইরকম "আস্থাগত" সমস্যা হোক, তাহলে চলবে কি করে! এগুলো মূলত রূপায়ণঘটিত খামতি বা প্রযুক্তিগত ত্রুটি, যা রাষ্ট্র বা UIDAI নিজেই ঠিক করে নিতে চাইবে। এখানে রাষ্ট্রের সঙ্গে সমস্যা নেই, বড়োজোর কিছু অসৎ ফ্রড লোকজনের থেকে জনগণের সমস্যা। এগুলোর বিরোধিতা মানে আধার প্রকল্পটিকে আসলে আরও পোক্ত করতে চাওয়া, সেটার প্রতি নীতিগত আপত্তি নয়, ব্যাবহারিক নির্ভরতাগত অসন্তোষ। আমি প্রকল্পটারই নীতিগতভাবে বিরোধী।
"সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সরকারী পরিসেবা, সে যদি আমার civil right হয়, তাকে কেন conditional করা হবে, আর সেই conditionality নাগরিক হিসেবে আমি কেন মেনে নেব, এই প্রশ্নগুলো উঠতে বাধ্য।" – এটা খুব ইম্পর্টান্ট পয়েন্ট। তবে এই অংশগুলো আমার আলোচনার শেষের দিকে আসবে মনে হয়।
dc | 2401:4900:7b7f:ffe4:34b2:204d:3644:***:*** | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:০১742362
আধার এর বিরুদ্ধে নীতিগত আর ব্যাবহারিক, দুটো পার্স্পেকটিভ থেকেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট আছে। সেগুলো নিয়ে লিখবো। তবে আধার এর সাথে পাসপোর্ট, প্যান, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদির সম্পর্ক নেই মনে হয়, বা অরিত্র এখনও অবধি যা লিখেছেন তাতে সেই সম্পর্ক এস্টাব্লিশ হয়নি। লিখতে থাকুন।
আধার-এর সাথে পাসপোর্ট প্যান ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদির সম্পর্ক আমি যেটা বলতে চেয়েছি তা মোটামুটি এই রকম:
রেশন কার্ড, মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স – এই গুলো প্রকারে শংসাপত্র যা কোনো ব্যক্তি নেহাত, একটি বা একাধিক, পরিচয়গত তথ্যের প্রামাণ্য নথি হিসেবে বা অন্য কোনো যোগ্যতা বা দক্ষতার শংসাপত্র হিসেবে ব্যক্তি স্বার্থে, নিজেদের জীবনযাত্রার প্রয়োজনে, "নিয়ে থাকে"। তাই এইগুলো প্রকৃতিতে সবকটিই ঐচ্ছিক। এইগুলোকে "শংসাপত্র" গোত্রে ফেলছি। এইগুলোর আরেকটি বৈশিষ্ট হলো যে এইগুলোতে কোনো সর্বজনীনভাবে অনন্য পরিচয় নম্বর থাকা আবশ্যিক নয়, কারণ এগুলো সর্বজনীনভাবে অনন্য পরিচয় তৈরী করার উদ্দেশ্যে গঠিত নয়, শুধু পরিচয়গত তথ্যের শংসা প্রদানের নিমিত্তে তৈরী (বা দপ্তরের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনে)। কোনো অন্য প্রতিষ্ঠান (যেমন লাইব্রেরি) এই ধরণের শংসাপত্রের পরিচয়গত তথ্য ব্যবহার করে তাদের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনে পরিচয় গঠন করলে সেই পরিচয়ের অভ্যন্তরীণ অনন্যতা নির্মাণের দায়িত্ব তাদের নিজেদের।
এরপরে একধরণের পরিচয়গত নথি আমরা দেখতে পাচ্ছি যেখানে পরিচয়গত তথ্যের শংসা প্রদানের পাশাপাশি কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বা সার্বিকভাবে ব্যক্তির 'পরিচয়' তৈরির কোনো একটি বা একাধিক রাষ্ট্রীয় স্বার্থ নিয়ে "দেওয়া হচ্ছে"। এগুলো সার্বিকভাবে বা ক্ষেত্রবিশেষে আবশ্যিক। এইগুলোকে "পরিচয়পত্র" গোত্রে ফেলছি। এইগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো, যেহেতু সর্বজনীন পরিচয়গত অনন্যতা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে আবশ্যিক, তাই সাধারণত সর্বজনীনভাবে অনন্য পরিচয় নম্বর জোড়া থাকবে (কোনো অন্য প্রতিষ্ঠান এই ধরণের শংসাপত্রের পরিচয়গত সর্বজনীন অনন্যতার ব্যবহার অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনেও করতে পারে)।
প্যান ও আধার হলো এই দ্বিতীয় ধরণের নথি। যদিও আধার-এর আরও কিছু উল্লেখযোগ্য বিশেষত্ব রয়েছে, সেটা এরপরেই আলোচনা করবো। তবে আধার-এর ক্ষেত্রেও এই বৈশিষ্টগুলো, বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় স্বার্থের ও অবশ্যিকতার ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ। এই বৈশিষ্টগত দিক থেকেই প্যানকে আধার-এর দুর্বল পূর্বসুরী বলেছি।
এই। আর কিছু মনে হয় নেই।
hu | 129.***.*** | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:১৩742364
পাসপোর্ট অনেকদিন ধরেই এ্যাড্রেস প্রুফ নয়। সাধারণত দশ বছরের মেয়াদে পাসপোর্ট দেওয়া হয়ে থাকে। দশ বছর বিশাল সময়। এর মধ্যে মানুষ অনেকগুলো ঠিকানায় থাকতে পারে। প্রতিবার ঠিকানা বদলের সাথে পাসপোর্ট আপডেট করা বিশাল হাঙ্গাম। পাসপোর্টের উদ্দেশ্যও সেটা নয়। পাসপোর্ট নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র। বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকের পাসপোর্টে বিদেশী ঠিকানা থাকতেই পারে। বস্তুত প্রথমবার পাসপোর্ট বানানোর সময় পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়। তারপর থেকে দশ বছর পর পর যে আপডেটগুলো হতে থাকে সেগুলোতে পুলিশ ভেরিফিকেশন হতে দেখিনি (অন্তত বিদেশে থাকলে)। ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে কোনো ঠিকানায় বাস করতে গেলে যেগুলো অবশ্যই প্রয়োজন অর্থাৎ ইলেক্ট্রিকের বিল, জলের বিল, ইন্টার্নেটের বিল, গ্যাসের বিল এগুলো বেশি উপযুক্ত। অনেক জায়গায় ড্রাইভার্স লাইসেন্স ব্যবহার হয়। কিন্তু একই রাজ্যের মধ্যে ঠিকানা বদলালে ড্রাইভার্স লাইসেন্স বদলানো আবশ্যিক নয়। কাজেই সেটাও এ্যাড্রেস প্রুফ হতে পারেনা।
hu | 129.***.*** | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:১৬742365
র্যাশন কার্ড নিয়েও লিখুন। এটাই মনে হয় আগে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হত।
Address Proof ও Identifty Proof এক নয় তো | পাসপোর্ট আপনার নাগরিকত্বের প্রমাণ বহন করে, আপনি যেখানে খুশী থাকতে পারেন। "আপনি যে আপনি", আজ অবধি কোন নিশ্চিত কোন ডকুমেন্ট দেখিয়ে তার প্রমাণ হয় (এটা দর্শণের দিক থেকে ভাবলে) | ব্লকচেন টেকনোলজির সহায়তায় ইমমিউটেবল হ্যাশ দিয়ে আপনার একটা আনুসঙ্গিক transactional "পরিচয়" হয়ত করা সম্ভব, তবে সরকারী তরফে কোথাও এর প্রয়োগ দেখেছি বলে মনে পড়ে না।
হ্যাঁ আরেকটা ব্যাপার, প্রথমদিকের শংসাপত্রের যেমন রেশন কার্ড (হু বললেন) শনাক্তকরণের কোনো ব্যবস্থা থাকতো না। হ্যাঁ নাম বয়স ঠিকানা ব্যাবোহার করে কোনো ব্যক্তিকে ভৌগোলিক পরিসরে নির্দিষ্ট করা যেত।
পরের ফটো আইডি কার্ড, যেমন ভোটার আইডি, পাসপোর্ট (ফটোযুক্ত) এবং প্যান কার্ডে ব্যক্তির "ফটো" শনাক্তকরণের একটা প্রাথমিক (ডিজিটাল ফেস রেকগনিশন প্রযুক্তির কথা এই মুহূর্তে বাদ রাখছি), উপায় যুক্ত হলো।
আধার আমরা জানি এই শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া উন্নত করতে অনেক জোর দিয়েছে। লেখার পরের অংশে এইগুলো চলে আসছে।
dc | 2401:4900:7b71:3d04:bca2:29ec:b881:***:*** | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪০742369
আমার মনে হয় আধার এর ডিবেটকে একটা থিওরেটিকাল গ্রাউন্ডিং দিতে হলে সার্ভেল্যান্স ক্যাপিটালিজম সম্বন্ধে জানা দরকার, মানে তাতে আরেকটু ব্রডলি রাষ্ট্রের রোল, সিসিটিভি বা অন্যানরকম অথেনটিকেশান টুল, ইচ্চেমতো সিটিজেনদের ইনক্লুশান আর এক্সক্লুশান ইত্যাদি ব্যাপারগুলোর মধ্যের সম্পর্কগুলো বুঝতে সুবিধা হতে পারে।
সার্ভেল্যান্স ক্যাপিটালিজম কথাটা কয়েন করেছিলেন প্রফ শোসানা জুবফ। এ নিয়ে ওনার একটা বই আছে, The Age of Surveillance Capitalism: The Fight for a Human Future at the New Frontier of Power (বইটা পড়ে দেখতে পারেন, আর কিছু না হলেও ওনার অসাধারন গদ্যের জন্য)। কথাটা উনি ব্যবহার করেছিলেন কিভাবে কর্পোরেটরা আমাদের নিজেদের ডেটা, বিহেভিয়ার, চিন্তাভাবনা কে কমোডিফাই করে আর সেটা কেনাবেচা করে বোঝানোর জন্য। এই থিওরির একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, কর্পোরেটরা ডেটা কালেক্ট করতো শুধুমাত্র ট্রেন্ড বোঝার জন্য না, বরং মানুষের বিহেভিয়র আর থট প্রসেস প্রেডিক্ট করার জন্য।
মজার কথা হলো, এই গ্লোবাল সার্ভেল্যান্স নেটওয়ার্ক প্রথমে কর্পোরেটরা (মূলত গুগল, ফেবু, আপেল, আর অ্যামাজন) শুরু করলেও, নানান দেশের সরকার এর পোটেনশিয়াল বুঝতে পারে আর কম বা বেশী মাত্রায় নিজেদের এই প্রোজেক্টে জুড়ে নেয়। যার ফল হলো সিসিটিভি উইথ মোশান ক্যাপচার আর ফেস রিকগনিশান, নানারকম অথেনটিকেশান, গেটকিপিং এজেন্ট ইত্যাদি। চীন, আমেরিকা, ইউকে, ইত্যাদি নানান দেশে নানারকম ভাবে সরকার আর কোম্পানিরা মিলে সার্ভেল্যান্স টুল ব্যবহার করছে, যার ফলে প্রাইভেসি আর কনফিডেনশিয়ালিটির কনসেপ্টগুলো একেবারে উবে গেছে। আজকাল মাঝে মাঝেই যে খবরে দেখায় অমুক জায়গায় গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে বা ডাকাতি হয়েছে আর অমুক মোড়ে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ তদন্ত করছে, এই খবরগুলো তারই ফসল।
এবার ইন্ডিয়াতে আধার প্রকল্প শুরু হয়েছিল কং আমলে, দেশের সবাইকে একটা সিংগল ন্যাশনাল আইডেন্টিটি দেওয়ার জন্য, যাতে করে বিভিন্ন সরকারি সুবিধা, সাবসিডি ইত্যাদি আরও এফিসিয়েন্টলি ডেলিভার করা যায় আর লিকেজ কমে। আধারের শুরুর দিকের চিন্তাভাবনা নিয়ে আলাদা করে লেখার আছে, সময় পেলে লিখব।
তারপর আমাদের পরমপ্রিয় প্রধানসেবক যখন ক্ষমতায় এলেন, তখন উনি আর ওনার পরামর্শদাতারা দেখলেন যে সিটিজেনদের সার্ভেল করার জন্য এটা একটা রেডিমেড টুল। কিন্তু উনি প্রধানসেবক বলে কথা, আগামী দশ বছর উনি দেখতে পান, তাই উনি (বা ওনার পরামর্শদাতারা) দ্রুত বুঝতে পারলেন যে এটা একটা প্রেডিক্টিভ টুলও হতে পারে, আধার ডেটা অ্যানালাইজ করে সিটিজেনরা কি ভাবছে, কি করছে সমস্ত বুঝতে পারা যেতে পারে, আর সেইমতো পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে যদি আধারকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে জুড়ে দেওয়া যায়, এর সাথে যদি সিএএ, ইউনিফর্ম সিভিল কোডের মতো আইন পাশ করিয়ে নেওয়া যায়। এই প্রকল্পে বিভিন্ন কোম্পানিও উত্সাহের সাথে যোগ দিয়েছে, ফিনটেক, হেল্থটেক, এডুটেক ইত্যাদি নানারকম আর্কিটেকচার বানিয়েছে বা বানাচ্ছে। এখন একটি ছোট মেয়ে স্কুলে ভর্তি হতে গেলেও আধার চায়, মাধ্যমিকের মার্কশিট দেওয়ার সময়েও আধার চায়, জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা নিট এ অ্যাপ্লাই করতে গেলেও আধার চায়। জীবনের নানান ওঠাপড়া যাতে সহজে গায়ে না লাগে, তার জন্য এখন আছে আধার।
এই হলো আমার মতে আধার ডিবেট এর ইন্ট্রো। এরপর আরও নানা কথা বলার আছে। তবে আধার কি প্রেক্ষাপটে শুরু হয়েছিল আর সেটা কিভাবে আস্তে আস্তে এক্সপ্যান্ড করেছে, সেটা জানা জরুরি।
আর জুবফ এর সার্ভেল্যান্স ক্যাপিটালিজম সম্বন্ধে আরেকটা ইন্টারেস্টিং পারস্পেকটিভ পেতে চাইলে ব্রুস স্টর্লিং এর এই আলোচনাটা শুনতে পারেন, যদিও এক ঘন্টারও বেশীঃ
dc | 2401:4900:7b71:3d04:bca2:29ec:b881:***:*** | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪২742370
পাসপোর্ট কেন অ্যাড্রেস প্রুফ হওয়া উচিত না, সে নিয়ে হু এর পোস্ট সঠিক মনে হলো। অরিন্দমবাবু আর দ দিও সে নিয়ে লিখেছেন।
dc | 2401:4900:7b85:510c:bca2:29ec:b881:***:*** | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:০৬742371
বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে,
মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা,
কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
আমাদের কথা
আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের
কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি
জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
বুলবুলভাজা
এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ।
দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও
লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
হরিদাস পালেরা
এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে
পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান
নিজের চোখে...... আরও ...
টইপত্তর
নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান।
এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর।
... আরও ...
ভাটিয়া৯
যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই,
সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক
আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
টইপত্তর, ভাটিয়া৯, হরিদাস পাল(ব্লগ) এবং খেরোর খাতার লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব, গুরুচণ্ডা৯র কোন দায়িত্ব নেই। | ♦ :
পঠিত সংখ্যাটি ১৩ই জানুয়ারি ২০২০ থেকে, লেখাটি যদি তার আগে লেখা হয়ে থাকে তাহলে এই সংখ্যাটি সঠিক পরিমাপ নয়। এই বিভ্রান্তির জন্য আমরা দুঃখিত।
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক।
অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি।
যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।
মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি
বার পঠিত
সকলকে জানান
উপরে যে কোনো বোতাম টিপে পরিচিতদের সঙ্গে ভাগ করে নিন
গুরুচন্ডা৯ বার্তা
গুরুতে নতুন?
এত নামধাম দেখে গুলিয়ে যাচ্ছে? আসলে আপনি এতদিন ইংরিজিতে সামাজিক মাধ্যম দেখে এসেছেন। এবার টুক করে বাংলায়ও সড়গড় হয়ে নিন। কটা তো মাত্র নাম।
গুরুর বিভাগ সমূহ, যা মাথার উপরে অথবা বাঁদিকের ভোজনতালিকায় পাবেনঃ
হরিদাসের বুলবুলভাজা : গুরুর সম্পাদিত বিভাগ। টাটকা তাজা হাতেগরম প্রবন্ধ, লেখালিখি, সম্ভব ও অসম্ভব সকল বিষয় এবং বস্তু নিয়ে। এর ভিতরে আছে অনেক কিছু। তার মধ্যে কয়েকটি বিভাগ নিচে।
শনিবারের বারবেলা : চিত্ররূপ ও অক্ষরে বাঙ্ময় কিছু ধারাবাহিক, যাদের টানে আপনাকে চলে আসতে হবে গুরুর পাতায়, ঠিক শনিবারের বারবেলায়।
রবিবারের পড়াবই : পড়া বই নিয়ে কাটাছেঁড়া সমালোচনা, পাঠপ্রতিক্রিয়া, খবরাখবর, বই নিয়ে হইচই,বই আমরা পড়াবই।
বুধবারের সিরিয়াস৯ : নির্দিষ্ট বিষয় ধরে সাপ্তাহিক বিভাগ। ততটা সিরিয়াসও নয় বলে শেষে রয়ে গেছে ৯।
কূটকচা৯ : গুরু কিন্তু গম্ভীর নয়, তাই গুরুগম্ভীর বিষয়াশয় নিয়ে ইয়ার্কি ফুক্কুড়ি ভরা লেখাপত্তর নিয়েই যতরাজ্যের কূটকচা৯। কবে কখন বেরোয় তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই।
হরিদাস পাল : চলতি কথায় যাদের বলে ব্লগার, আমরা বলি হরিদাস পাল। অসম্পাদিত ব্লগের লেখালিখি।
খেরোর খাতা : গুরুর সমস্ত ব্যবহারকারী, হরিদাস পাল দের নিজের দেয়াল। আঁকিবুঁকি, লেখালিখির জায়গা।
টইপত্তর : বিষয়ভিত্তিক আলোচনা। বাংলায় যাকে বলে মেসেজবোর্ড।
ভাটিয়া৯ : নিখাদ ভাট। নিষ্পাপ ও নিখাদ গলা ছাড়ার জায়গা। কথার পিঠে কথা চালাচালির জায়গা। সুতো খুঁজে পাওয়ার দায়িত্ব, যিনি যাচ্ছেন তাঁর। কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।
লগিন করে থাকলে ডানদিকের ভোজনতালিকায় যা পাবেনঃ
আমার গুরুঃ আপনার নিজস্ব গুরুর পাতা। কোথায় কী ঘটছে, কে কী লিখছে, তার মোটামুটি বিবরণ পেয়ে যাবেন এখানেই।
খাতা বা খেরোর খাতাঃ আপনার নিজস্ব খেরোর খাতা। আঁকিবুকি ও লেখালিখির জায়গা।
এটা-সেটাঃ এদিক সেদিক যা মন্তব্য করেছেন, সেসব গুরুতে হারিয়ে যায়না। সব পাবেন এই পাতায়।
গ্রাহকরাঃ আপনার গ্রাহক তালিকা। আপনি লিখলেই সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকরা পাবেন নোটিফিকেশন।
নোটিঃ আপনার নোটিফিকেশন পাবার জায়গা। আপনাকে কেউ উল্লেখ করুক, আপনি যাদের গ্রাহক, তাঁরা কিছু লিখুন, বা উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটুক, জলদি পেয়ে যাবেন নোটিফিকেশন।
বুকমার্কঃ আপনার জমিয়ে রাখা লেখা। যা আপনি ফিরে এসে বারবার পড়বেন।
প্রিয় লেখকঃ আপনি যাদের গ্রাহক হয়েছেন, তাদের তালিকা।