(১)
তোমার সহিত আমার কোনোদিন বিবাহের কথা হয় নাই। প্রণয়ের সুযোগও বালক-বালিকা বেলায় ঘটে নাই। কোনও সন্তানসূত্রেও তোমার সহিত আমার কোনো গ্রন্থি রচনা হয় নাই। তারপরও তুমি আমার এবং আমি তোমার নিয়তিতে জুড়িয়া যাই। ঘটমান বর্তমানকে অস্বীকার করিয়া নিজেদের দেহ মনকে সাজাইয়া, গুছাইয়া অতীতে হাঁটিতে চেষ্টা করি। শুনিয়াছি এবং পুস্তকে পড়িয়াছি বিপরীতধর্মী মনুষ্যের এটমিক আকর্ষণ বেশি হইয়া থাকে। হয়তো সত্য ইহা। আমি বেশ আকর্ষণ বোধ করিতাম তোমাতে। মনে হয় তুমিও করিতে। যাহা মৃত অতীত তাহাকে মনের মতো করিয়া সাজাইয়া লইতে দোষ কি। তাই তুমিও করিতে। অতিমারী দিনগুলিতে মানুষ যখন দিশাহারা আমরা তখন নিজ নিজ মানস সরোবরে ভাসিতেছি। এই মুঠোফোন তার স্বাক্ষী। সম্পর্ক চুকিয়া বুকিয়া গেলেও যাহা ঘটিয়া থাকে তাহা মিথ্যা হয় না। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কোনও এক কোটরে জমা হইয়া থাকিয়া যায় বলিয়া আমার বিশ্বাস। ধরো আমাদের চুম্বনের কথা। বা আমাকে তোমার চকোবার খাওয়ানোর বিষয়। একবারই ঘটিয়াছিল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস তাহার স্বাদ আমার মতো তুমিও ভোলো নাই। ভোলো নাই এই কারণেই আমরা আর কেহ কারোর নই। এই বর্ষায় কেন জানি শুধু বিদ্যাপতি বলিতে ইচ্ছা করিতেছে … এ ভরা বাদর / মাহ ভাদর / শূন্য মন্দির মোর। এখন আমরা কেহ কাহাকেও ফোন করিনা। করিলেও ধরিনা। আমদের সকল কথারা কি ফুরাইয়া গিয়াছে! সত্য নগ্ন হইলে তাহার অধিক কুৎসিত আর কিছু নাই। আমাদের ভিতরকার সকল সত্য নগ্ন হইয়া গিয়াছে। নদীতীরে পলি জমিবার মতোই কষ্ট থিতাইয়া যায়। অভ্যাস বড়ো কঠিন সত্য। আমি জানিতাম না আমার ভিতরে পরমকরুণাময় এত শক্তি দিয়াছেন। সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াইয়া যতি চিহ্ন দিতে পারিলাম। ইহার পরেও অদৃশ্যের কারণে আমরা অদ্ভুতভাবে জুড়িয়া আছি একে অপরের সহিত। ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন। অন্তরে শান্তি বিরাজ করুক। আর কি লিখিব। আমার হলুদ জবা গাছটিতে ফুল ধরিতেছে। একোরিয়ামে পাঁচটি মাছ বাঁচিয়া আছে। উহাদের ভিতর বেশ ভাব ভালোবাসা হইয়া গিয়াছে। ইহাকেই হয়তো কহে সহ অবস্থান জনিত মায়া। যাহা পোকা খাওয়া দাম্পত্য টিকিয়া রাখিতে সাহায্য করে। আমি ভালো আছি। চেষ্টা করিতেছি অনন্ত অসীম কর্মযজ্ঞে মিশিয়া যাইতে। প্রভু যেন আমার ক্লান্তি ক্ষমা না করেন। তুমি তো জানো অনেকটা পথ আমাকে যাইতে হইবে। সে যত বন্ধুরই হোক।
ইতি