এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • মেলাবেন তিনি মেলাবেন

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ১২ এপ্রিল ২০২০ | ২২২৪ বার পঠিত
  • অরুনাংশুবাবু মুখে রুমাল বেঁধে কষে নাক মুখের ফাঁকফোঁকর ঢেকেঢুকে পোস্টাফিসের ক্যাশ কাউন্টারে লাইন দিলেন এম আই এস-এর সুদ তোলার জন্য। লোকজন বিশেষ নেই। এই জনা পাঁচেক উলোঝুলো বুড়ো পাসবুক আর উইথড্রয়াল স্লিপ বাগিয়ে খাড়িয়ে আছে।লক ডাউন এবং সামাজিক দূরত্বের নির্ঘন্ট চালু আছে। কে বলে লোকে নিয়ম মানছে না ! প্রায় এক একটা ঠেলাগাড়ির সমান দূরত্বে এক একজন দাঁড়িয়ে। পাওয়া গেল ষোলশ টাকা। পরের মাস থেকে এরও কম পাওনা হবে। কি করে সংসার খরচ চলবে অরুনাংশুবাবু এখন ভাবতে চান না। শুধু ওষুধের খরচই মাসে সাত আটশো টাকা। সরকার নাকি কোভিড-১৯ এর মোকাবিলার জন্য খরচ কমাচ্ছে। বাজেট ঘাটতি টেনে নামাতে হবে।পেনশনারদের ঘরে বসিয়ে তোফা আরামে খাওয়ানোর তবিল কোত্থেকে ম্যানেজ হচ্ছে কে জানে।মাথার ভেতর সব হিসেব তালগোল পাকিয়ে যায়। ওই রাস্তার মোড়ে একগাল খোঁচা খোঁচা দাড়ি নিয়ে রঙবেরঙের করোনা রোধক মাস্ক রাস্তায় সাজিয়ে নিয়ে বসেছে একটা লোক । ‘ ..... পঞ্চাশের মাল পঁচিশে..... পঞ্চাশের মাল পঁচিশে ..... নিয়ে যান .... অল্প কটা আছে.... অল্প কটা আছে.... ‘ । চৈত্র মাস শেষ হতে চলল। বোশেখ পড়তে চলল। এবারের পয়লা বৈশাখটা মাঠে মারা যাবে মনে হচ্ছে। চৈত্র সেলের বেচাকেনা তো গেলই।পকেটে রেস্ত না থাকলেও রাস্তাঘাটে ঘুরতে ঘুরতে প্রাণবন্ত দোকানপাট, পাটভাঙা কোরা কাপড়ের মতো সন্ধেবেলা, ফুরফুরে বেলফুল সুগন্ধি ঢালা প্রসন্নমুখ লোকজন বড় ভাল লাগে। এবারে আর তা হবে বলে মনে হয় না। অরুনাংশুবাবুর মাথায় নানা চিন্তা পাক খেতে থাকে। তিনি পোস্টাফিসের দোতলা থেকে নীচে নেমে গেটের পাশে একটা দোকানের সিঁড়িতে একটু বসেন। দোকানটা বেশিরভাগ সময়ে বন্ধই থাকে। সামনে দিয়ে সাইকেল চালিয়ে দেবব্রত মিত্তির যাচ্ছে । দু হ্যান্ডেলে থলে ভর্তি দোকান বাজার। একটা ছোট ব্যাগ থেকে উপচে পড়তে চাইছে রক্তমাখা কাটাপোনার টুকরো। বাড়িতে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া হবে। ভারি মজার সবেতন ছুটির মেজাজ। একে বলে বসে খাওয়া। শক্তিনাথবাবু অর্থনীতির ব্যাপারটা ভাল বোঝেন।কাল বিকেলে দুর্গামন্দিরের চাতালে বসে বলছিলেন, যে যাই বলুক ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ইউরোপ আমেরিকার মতোই মাইনাসে গিয়ে ঠেকবে। তা করোনা থাকলেও, গেলেও। এখান থেকে দেখা যাচ্ছে সামনের সেলুনে টি ভি চলছে। সেলুন অবশ্য লকডাউনের নিয়ম মেনে খরিদ্দারহীন। একদল পুলিশের লোক ‘উই শ্যাল ওভারকাম ‘ গানটা গাইছে তালি বাজিয়ে । বোধহয় জনগণকে চাগিয়ে এবং জাগিয়ে রাখার জন্য। মূখ্যমন্ত্রীকে দেখা গেল দলবল নিয়ে কোথাকার রাস্তায় যেন চকের গোল গোল গন্ডী কাটছেন। এর একটু পরে দেখানো শুরু হল তারকারা কে কিভাবে বন্দীদশা কাটাচ্ছেন সেইসব ব্যাপার। এগুলো অরুনাংশুবাবু বেশ উপভোগ করেন। কেমন মজার সব জীবন। কোন চিন্তা নেই ভাবনা নেই, রূপকথার তুলিতে আঁকা জীবন সব। দেখতে দেখতে মেজাজ দিব্যি ফুরফুরে হয়ে যায়।

    খালপারে সারি সারি ঝুপড়ি।এক এক ঘরে কমসে কম সাতজন থাকে। অাটদশজনওয়ালা ঘরও আছে। সঙ্গে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো। জলের ধারে চট দিয়ে ঘেরা শৌচালয়। কোনটারই ছাদ নেই। বর্ষায় কোন ঠেকনা নেই। ভিজে চুপ্পুস হয়েই কাজ সারতে হয়। কাঁচা ডাঁসা কিছু কম নেই এই খালপারে। প্রাকৃতিক কাজকর্ম যা করবার দিনের আলো থাকতে থাকতে । রাত বাড়লে কেউ বাঁশের সাঁকোয় পা বাড়াতে সাহস করে না। মেয়েছেলের মাংস খেকো চিতা হায়েনার অভাব নেই তল্লাটে। এদিক ওদিক নিয়ে অন্তত এক কিলোমিটার রাস্তা নি:ঝুম, ভূতুড়ে। কারা যেন নিশুত রাতে টর্চের আলো মেরে ঝোপড়ার অাশেপাশে ইতিউতি মেয়ে খোঁজে। এ দুনিয়ায় এক একজন এক একরকম খাদ্য খোঁজে। খালপারের ঝুপড়িগুলোয় জোয়ান মরদ কিছু কম নেই। শালারা সিঁটিয়ে থাকে বছরভর। মুখে তড়পানির শেষ নেই— হ্যান করেঙ্গে ক্যান করেঙ্গে.... । মুরোদ সব জানা হয়ে গেছে। কাজেই, যে যার মাগ ছাওয়াল আগলে রাখে যতটা পারা যায়।
    বিপিএল কার্ড নেই কারো। না ঘরকা, না ঘাটকা। সরকার নাকি খাওয়াবে গরীব গুর্বোদের। কিন্তু এদের খাওয়াবে কে। টুকটাক কাজকম্ম যা করত এরা কেউ কেউ সব বন্ধ.... টোট্যাল লকডাউন..... তার ওপর সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং.....।সাবান দিয়ে বারবার হাত ধুতে হবে। দুটো সরকারি লোক এসে পইপই করে বুঝিয়ে গেল। এরকম গায়ে গায়ে নাকি থাকা যাবে না। কি জ্বালা ! ছেলেগুলো শোবে কোথায়.... মেয়েগুলোকে আগলাবে কে ? শৌচ করে হাত ‘পোস্কার’ করার কিছু জোটে না বলে। আর ওই স্যানিটাইজার না কি যেন একটা বলে গেল ওই দিদিমনি....ওই যে টি ভি-তে বলে ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন। কি জ্বালা ! ঘরে থাকলে খাবে কি ! করোনা না মারলেও পেটের জ্বালা তো মারবে। বাঁচলে তবে তো করোনা টরোনা। হ্যাঁ: ...কি যে বলে সব।
    পিন্টু ঘোরাঘুরি করে কারখানা মোড়ের ওদিকটায়। মোহন প্লাস্টিকস-এ ঠিকে কাজ করত পিন্টু । নো ওয়ার্ক নো পে। এখন করোনা হিড়িকে শাটার নামানো। জড়িবুটি মাদুলির মতো তলায় লুটোচ্ছে আঁটো সাঁটো তালার গোছা। তবে মোহন আগরওয়াল লোক ভাল। বিবেক বিবেচনা আছে। পিন্টুর মতো ক্যাজুয়াল লেবারারদেরও এই বারো দিন ধরে টাকা দিয়ে যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে কাল থেকে নাকি দুবেলা খাওয়াবে কারখানার প্রায় দেড়শো কর্মচারিকে।পেল্লাই সব কড়াই হান্ডা নামছে কারখানার পেছনের মাঠে।কিন্তু শেষমেষ কতদিন টানতে পারবে এইভাবে !
    একটা বিড়ি খেতে ইচ্ছে করছে খুব । কিন্তু বিড়ি সিগারেট এখন করোনার প্রেসারে বহুৎ মাঙ্গা। কাজেই ইচ্ছেটা খুশির মতো গিলে ফেলল পিন্টু।
    প্রিয়াংকার বয়েস বোধহয় উনিশ কুড়ি হবে। হেভি বুদ্ধি ওর। ছুটকো চালাকির কাজে ওর জুড়ি নেই। বেঁচে থাকতে গেলে ওটাই তো চাই। পিন্টুর মনে হয় তাকে বেশ স্নেহের চোখে দেখে প্রিয়াঙ্কা।
    সেদিন কেমন মিউনিসিপ্যালিটির দিদিমনির সঙ্গে ঠোঁটটা ব্যাঁকা মতো করে হেসে ফিচলেমি করল — ‘ বড় বাইরে করে হাত সাফা করার সাবান নেই .... বারবার হাত ধোওয়ার সাবানজল কি ম্যাজিকে পয়দা করব ম্যাডাম ? খাবার জলই জোটে না বলে.... ওই ছোঁচাবার জলই আমাদের খাবার জল। বোতলের ফুরফুরে জল তো আর আমাদের জন্য নয়। ওসব দেবতাদের খাদ্য।’
    ম্যাডামের চাকরির দায়।উনিই বা কি করবেন । এসব উত্তেজনায় নিজেকে জড়াতে চাইলেন না।সরে গেলেন ওখান থেকে।
    রাস্তাঘাট শুনশান। বেলা প্রায় একটা বাজে।অনেক দিন পর দেখল পিন্টু, আকাশে অনেক পাখি উড়ছে। আকাশ বেশ নীল বরন । বাতাসে কারখানার ধোঁয়া নেই।চোত মাসের সেলের বাজারটা এবার মাঠে মারা গেল।
    প্রিয়াংকার খুব সাহস। থানা থেকে তাদের মহল্লায় বোঝাতে আসা পুলিশ অফিসারকে জিজ্ঞেস করল— ‘ তা স্যার এই করোনায় এ পয়অন্ত মল্ল ক’জন এখানে ?’ অল্পবয়সী অফিসার একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলে— ‘ তা.... ধর , তা ধর .... সত্তর পঁচাত্তর জন তো হবেই।’
    প্রিয়াংকা অফিসারের কথা দমকা কথায় উড়িয়ে দিয়ে বলে, ‘ ও: ...... মোট্টে ! ও তো আমাদের এখানে পতি মাসেই মরে .... আসলে মায়ের দয়ায় এ উটকো আপদ বড়লোকদেরও ঘাড়ে গিয়ে পড়েছে বলে খবর হয়েছে। নইলে.... ফু..ৎ !’ প্রিয়াঙ্কা বিশ্রীভাবে মুখটা বেঁকায়। পুলিশ অফিসারের বোধহয় খানিক প্রশ্রয় আছে প্রিয়াংকার কথায়। তিনি ওর কথাবার্তা শুনে মৃদু মৃদু হাসতে থাকেন কোন কথা না বলে।
    প্রিয়াংকাকে একবার মাঝরাতে কারা যেন তুলে নিয়ে যেতে চেষ্টা করেছিল। পুলিশের একটা টহলদারি ভ্যান ভাগ্যক্রমে সেখানে এসে পড়ে। প্রিয়াংকা বেঁচে যায়।প্রিয়াংকা অবশ্য একেবারেই ঘাবড়ানেওয়ালা নয়। তারপর থেকে চাকু সঙ্গে রাখে রাত্তিরবেলা। ......... এই পুলিশ অফিসার সেই টহলধারি ভ্যানে ছিলেন। তখন থেকেই তিনি প্রিয়াংকাকে চেনেন।
    যে কোন একটা রেশন কার্ড থাকলেই হল। সরকার ফোকটে চাল গম দেবে। এখানে এ লোকগুলো একেবারে অপগন্ড।এদের কারো কার্ড ফার্ড কিস্যু নেই। মোহনলাল আগরওয়ালার কারখানার মাঠে যে কদিন খাওয়া যায় এখন। মোহনলাল বড় ভাল লোক। কিন্তু সেই বা কদিন খাওয়াবে ? লক ডাউন উঠে গেলেই তো .....ব্যাস্ । লক ডাউন যদ্দিন থাকে তদ্দিনই ভাল। আর করোনায় মরলেই বা ক্ষতি কি ? ফুটপাথে বসে শায়ার দড়ি, সেফটিপিন বিক্রি করে ক’পয়সাই বা রোজগার হয়। তার চেয়ে এই লকডাউন আর মোহনলালের লঙ্গরখানাই ভাল।
    লোকজন, দোকানপাট সব কে যেন মুছে দিয়েছে। দুপুরের গনগনে রোদে যদ্দুর চোখ যায় ধু ধু করছে নির্জন এলাকা।পিন্টু আনমনে খালের দিকে হাঁটতে থাকে।একটা পুলিশের গাড়ি যাচ্ছে আস্তে আস্তে। মাইকের চোঙায় মুখ রেখে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আবেদন করছে একজন গাড়িতে দাঁড়িয়ে। এটা আসলে এই খালপারের লোকেদের উদ্দেশ্যেই বলা। আচ্ছা , এই করোনা পোকাগুলো হাওয়ায় ছাড়ল কারা। কেউ কি পাম্প করল এগুলো , নাকি এগুলো মানুষের নানা বদমায়েশি দুষ্কম্মের ফাঁকতালে হুড়হুড় করে পাতালের আঁধার থেকে বেরিয়ে এল। পশু পাখিদের যে যেমন পারছে ধরছে মারছে আর খাচ্ছে। ধরার,মারার, খাওয়ার কোন শেষও নেই বাছবিচারও নেই। এসব নাকি মানুষের নিষ্ঠুরতা আর পাপের ভারা পূর্ণ হওয়ার সিগন্যাল।কেউ কেউ নাকি বাদুড়ের মাংসও খায়।অ্যা: হ্যা: ... .।দূ..র এসব আবার হয় নাকি ! যত বাজে কথা। পিন্টু এত কিছু বোঝে না।শক্তিনাথবাবু বোঝেন এসব। কোয়ান্টাম ফিজিক্স বলুন, মাইক্রোবায়োলজি বলুন, এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স বলুন সব গুলে খাওয়া তার। এত কিস্যা কোত্থেকে যোগাড় করেন কে জানে।
    মীনাদের ঝোপড়ার বাইরে পাঁচজন বসে সাতসকালে ‘দেশি’ গিলছে। মানু দিন পনের ঘরে বসা। বাবুদের বাড়ি থেকে বারণ করে দিয়েছে কাজে যেতে। সুস্মিতা বৌদি, মনীষা বৌদি নাকি নিজেরাই বাসন মাজছে, ঘর মুছছে। বোঝ ঠ্যালা !
    মদ গিলতে গিলতে পাঁচজনে গোল হয়ে বসে পাত্তি খেলতে বসল। মানুর একহাতকাটা বরও আছে। পরনে ময়লা লুঙ্গি আর ছেঁড়া স্যান্ডো গেঞ্জি।প্রিয়াঙ্কা কোত্থেকে যেন উড়ে এসে দাঁড়াল ওখানে মাস্তানের মতো কোমরে হাত দিয়ে। ‘ চোখে কানে ন্যাকড়া বেঁধে বসে আছ নাকি মাকড়ারা ..... ‘ । প্রিয়াংকার মুখের ছুরি খাবার ভয়ে ওকে কেউ ঘাঁটাতে সাহস করে। কাশিনাথ তাসগুলো মুখের সামনে ধরে সাজাতে সাজাতে মুখ না ঘুরিয়েই বলল, ‘কে..ন ....কি হয়েছে ? ‘
    প্রিয়াংকা মুখ ভেংচে বলল, ‘ ....কি ... হয়ে..ছে ! ...ঢ্যামনা আর কাকে বলে...জান না কিছু ? খাওয়া জুটবে কি করে তার চিন্তা আছে কিছু .... দিনেমানে মদ না গিলে একটু গতর নাড়িয়ে এদিক ওদিক ঘুরে দেখ না.... ‘
    — ‘ অ্যা..ই তুই মেলা পাকামো করিস নাতো । দুদিনের যোগী...কি দেখব ... দেখবটা কি ?‘ মধ্যবয়স্ক ভোলা দাস নির্বিকারভাবে হার্টসের টেক্কা ফেলে বোতলে একটা চুমুক মেরে ডান হাত দিয়ে মুখ মোছে ।
    — ‘ আরে ঢ্যামনা...বোতল না চুষে বোতল সাপ্লাই দে । দুপয়সা আমদানি হবে। ‘
    — ‘ মানে ? ‘ ভোলা মুখ ঘোরায় এবার।
    — ‘ মানে আবার কি ? কিছুই খবর রাখ না ঢেঁকিরা.... দুহাজার টাকার বিলিতি বোতল ছ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাজারি পাড়ায় গিয়ে খোঁজ কর গে, এখানে বসে বসে মদ না গিলে। সাপ্লাই দিতে পারলে পকেটে চুমকি টসটস....।’ চুমকি সোনাগাছিতে ভোলার অতি পরিচিত (!) .... এখন সে রঙীন পাড়ার সঙ্গীন দশা । ধু ধু করছে অ্যাঁকাব্যাঁকা শুকনো অলিগলি। ‘ফেসবুক হোয়াটসআপ ঘেঁটে দেখ না সোনা আরও অনেক পথঘাট পাবে.... ‘ উনিশ বছরের প্রিয়াঙ্কা উনষাট বছরের মহিলার অাদতে বলে যেতে থাকে।
    — ‘ আরে দূর .... আমরা ওসব পারিনা.... ‘ গলা জড়িয়ে আসে ভোলা দাসের। বোতল থেকে আর এক ঢোক মারে। ডানদিকে কাত হয়ে যায় মাথা। চোখ বুজে আসে।টুকুস করে শরীর এলিয়ে শুয়ে পড়ে সিধু কাবাসির কোলের ওপর। সিধু ভোলার মাথাটা মাটিতে নামিয়ে দিয়ে সন্তর্পনে ডানপাশে সরে গেল। একটু সামলে নিয়ে ফট করে ফেলল ক্লাবের টেক্কা। আর এক খেলুড়ে প্রকাশ শর্মা জাতে বিহারি। তার পার্টনারের ওপর বিরক্ত হয়ে বলে ওঠে, ‘ আবে ইতনা হড়বড়াৎ কিঁউ .... ধ্যানসে খেল না বে ....’

    পিন্টু মাথা নীচু করে আগডুম বাগডুম চিন্তা করতে করতে বটতলার মোড় পেরোচ্ছিল । ওই মোড়ের একপাশে একটা টাকমাথা লোক নানা রঙের রকমারি ডিজাইনের করোনা মাস্ক নিয়ে বসেছে। ওখান দিয়ে যেতে যেতে পিন্টু দেখল, একজন পুরুষ, একজন মহিলা জামাকাপড় পছন্দের মতো মাস্ক পছন্দ করছে ।স্বামী স্ত্রী বোধহয়।
    মহিলাটি বলল, ‘ ওই আকাশি রঙেরটাই নাও। বেশ পাতলা মতো...... ফাঁদালো টাইপের.... মুখের অনেকটা কভার করবে।’
    পুরুষটি ঠিক রাজি নয়। সে বলল, ‘ ওটা তুমি নিলে নাও... আমার ওই লাল আর কালোর ডিজাইনটা বেশ অ্যাট্র্যাকটিভ লাগছে। ‘
    — ‘ অ্যা: হ্যা: .... ছ্যা: ...ওই জবড়জঙ কালারটা তোমার পছন্দ হল ! তাছাড়া অত মোটা কাপড়... গরমে হাঁসফাঁস করবে..একেই তুমি মোটা মানুষ...’
    বিক্রেতা পর্যায়ক্রমে দুরকম মাস্কের পক্ষেই সওয়াল করতে লাগল। কোথাও কিছু কেনাকাটা হতে দেখলে দুচারজন পথ চলতি লোক সেখানে দাঁড়িয়ে যায়। এখানেও তাই হল। মুখে রুমাল বাঁধা দুটো লোক ওখানে দাঁড়িয়ে গেল এবং উবু হয়ে বসে মাস্ক বাছাই করতে লাগল। এরপর দরদাম হবে।
    পিন্টু আনমনে হাঁটতে লাগল ।খালের কাছাকাছি আসতে দেখল উল্টোদিক থেকে প্রিয়াংকা আসছে। দেখে মনে হচ্ছে মেজাজ বিগড়ে আছে। তা এই করোনা কাঁটার খোঁচায় মেজাজ বিগড়ে থাকাই তো স্বাভাবিক।
    পিন্টুকে দেখে বলল, ‘ কিরে কোথায় গিয়েছিলি ? ‘
    — ‘এ..ই ওই মোড়ের দিকে। মোহন আগরওয়ালের কারখানায় খেতে যাব একটু পরে। ওখানে... দেখতে গিয়েছিলাম কি হচ্ছে... আজ নাকি সয়াবিনের ডালনা হবে ...। তোরা যাবি না ?’
    — ‘ না: ... দেখি কদ্দিন চালাতে পারি । ওসব আমার সহ্য হয় না।’
    — ‘ তা, কিভাবে চালাবি যদি লক ডাউন আরো বাড়ে ? ‘
    — ‘ সে দেখা যাবে অখন। গতরখানা তো আছে এখনও। দরকার হলে .... দিদি কিংবা ছুটকির মতো..... ‘
    পিন্টুর গলা ঠিকরে ওঠে কথার মাঝখানে , ‘ কি... কি...যা তা বলছিস .... পাগলা হয়ে গেছিস নাকি ! ‘
    — ‘ পাগলা হতে আর বাকি কি আছে ? বাবা দুদিন ধরে বিছানাতেই হাগা মোতা করছে। ও: .... কি দুর্গন্ধ । একটা হোমোপ্যাথি ডাক্তারও নেই কোথাও। আর থাকলেই বা কি ! পয়সা কোথায় ? বুড়ো এখন মরলে পোড়াবার লোক পাওয়া যাবে তো রে পিন্টু ? এখন তো আবার সামাজিক দূরত্ব না কিসের যেন হিড়িক চলছে।’
    — ‘ তুই চুপ কর ... চুপ কর বলছি এক্ষুণি । আমাকে কিছু বলিস নি কেন ? বেশি রোয়াব হয়েছে, না ?’
    প্রিয়াংকা চুপ করে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। দুবার মাথা চুলকোয়। তার কালো রঙের চিকন মুখখানা মেদুর হয়ে ওঠে, কি জানি কোন ভাবে। ঝাঁঝালো মেয়েটার এমন প্রায়ই হয় আজকাল পিন্টুর কাছাকাছি এলে।
    মাথা নীচু করেই নীচু গলায় বলে, ‘ হ্যাঁ , আমি তো খুব খারাপ.... শুধু রোয়াবই দেখাই। আর সবাই তো খুব ভাল... ‘

    কালকে অন্ধকারে দিয়া জ্বালানোর ওই ন মিনিটের মধ্যে প্রিয়াংকার বাবা মারা গেল । বিনা ভূমিকাতেই প্রস্থান করল এ দুনিয়া থেকে আচমকা হার্টফেল করে। নাড়াচাড়া করে যখন সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না তখন পাড়ায় পাড়ায় উৎসবের মেজাজে রাশি রাশি বাজি পুড়ছে।
    শ্মশানে ছ জনের বেশি যাওয়া যাবে না । ছ জনের মধ্যে দুজন পিন্টু আর প্রিয়াংকা। সেদিন রাত্রে অবশ্য কিছু করা গেল না।বডি নিয়ে ওরা শ্মশানের দিকে রওয়ানা দিল পরদিন সকাল নটা নাগাদ।
    বডি চুল্লীতে ঢোকার পর শ্মশানযাত্রীরা একটু এদিক ওদিক ছড়িয়ে পড়ে। কেউ যায় চা খেতে, কেউ যায় জলবিয়োগ করতে।প্রিয়াঙ্কাকে আগলে রাখছিল পিন্টু। প্রিয়াঙ্কা অবশ্য হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েনি কারন, প্রিয়জনবিয়োগে চুরমার হওয়া তাদের জীবনে শৌখিনতা। দুজনে শ্মশান থেকে বেরিয়ে ডানপাশে গঙ্গার ধার ধরে একটু হেঁটে একটা পরিত্যক্ত বহু পুরনো দেউলটির কাছে পৌঁছল ।অন্য সময়ে সমাজবিরোধিদের ঠেক। করোনার বাতাস এলোমেলো করে দিয়েছে সব। একদম ফাঁকা শুনশান এখন। ভেতরে এবং বাইরে উটকো আগাছার জঙ্গল।একটা মারকুটে অশ্বত্থ গাছ একদিকের দেয়াল পাকড়ে ধরে মোচড় দিয়ে ওপরে উঠে গেছে ।
    ভেতরে ঢুকে গেল দুজন অলস পায়ে।ওদিকে দুটো বড় বড় গবাক্ষ গঙ্গার ধার ঘেঁসে। ওখানে গিয়ে গবাক্ষ দিয়ে গঙ্গা দেখতে লাগল চুপচাপ। সকাল দশটার খোলামেলা রোদ্দুর পড়ছে গবাক্ষ ফুঁড়ে, জবরদখলকারি আগাছার অগোছালো সংসারে ।
    জলের দিকে আনমনে তাকিয়ে থাকতে থাকতে প্রিয়াঙ্কা ধীর স্বরে বলে, ‘ ওরা হার মেনে নিয়েছে... আমি এখনও মানিনি।’
    — ‘ কারা ? ‘ , পিন্টু মুখ ঘোরায় প্রিয়াংকার দিকে।
    গঙ্গার অবারিত স্রোতধারার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকতে থাকতে একইরকম স্বভাববিরুদ্ধ মৃদুস্বরে বলল, ‘ মিতা আর ছুটকি ‘।
    — ‘ ও: ‘ , বলে চুপ করে রইল পিন্টু। তারপর আবার বলল, ‘ সব ঠিক হয়ে যাবে দেখিস....সব ঠিক হয়ে যাবে । আমাদের আবার নতুন করে চেষ্টা করতে হবে ‘।
    চুল্লীতে প্রিয়াংকার বাবার শরীর পুড়ছে । আধ ঘন্টা হতে চলল।কিসে মরল কে জানে।
    প্রিয়াংকা সজল চোখে পিন্টুর দিকে তাকিয়ে রইল। পিন্টু চমকে ওঠে । এ কোন প্রিয়াংকা !
    পিন্টু গভীর আবেশে ভিজে যায় সহসা। সে প্রিয়াংকার একটা হাত তুলে নিল নিজের হাতে, যা আগে কখনও ঘটেনি। হাত সরিয়ে নেওয়ার কোন উদ্যোগ দেখা গেল না বিপরীত দিক থেকে।
    কিন্তু ভীষণ ছ্যাঁকা লাগল পিন্টুর হাতের তেলোয়।
    — ‘ একি রে ! তোর গা তো ভীষণ গরম। কিছু বলিসনি তো .... কি মেয়ে রে তুই ! জানিস না কি সব হচ্ছে চারদিকে ?’ পিন্টু প্রায় আর্তনাদ করে ওঠে।
    — ‘ আমার যা হয় হোক.... তুই সাবধানে থাক.... ছেড়ে দে আমাকে। ‘ ক্লান্ত, ধ্বস্ত প্রিয়াংকার ম্লান কন্ঠ শোনা গেল।
    — ‘ চুপ কর তুই .... চুপ কর বলছি.... চুপ কর ।’ এক মহা বিস্ফোরণে ফেটে পড়ে পিন্টু।
    লকডাউন আবৃত জল স্থল কেঁপে উঠে ফালাফালা হয় যেন। রোগ সন্তপ্ত ভাঙাচোরা প্রিয়াঙ্কার অথির দেহ এলিয়ে যায় পিন্টুর বুকের ওপর, সম্ভবত: এক নিবিড় আশ্রয়ের খোঁজে।
    শ্মশান থেকে একটু দূরে পোড়ো দেউলটির আড়ালে দুজনের ঠোঁট মিলিত হয় চোখে জলে মিশে । প্রিয়াংকার গায়ে তখন প্রবল জ্বরের তাপ। পিন্টু বলে ‘ তোর সব কষ্ট আমি নেব আমার শরীরে.... কোন শালা আটকাতে পারবে না। তোর সব কিছু আমার .... সুখটাও আমার... দু:খটাও আমার।’

    অরুনাংশুবাবু রেশান দোকানের সামনে মারামারি দেখছিলেন মুখে রুমাল বেঁধে।দেখতে দেখতে তার মুখের হাঁ বেড়ে যাচ্ছিল।নাকটা চুলকোচ্ছিলেন বারবার রুমালের তলায় হাত ঢুকিয়ে।শেষ পর্যন্ত রুমালটা পট করে খুলে গেল। দূরে সরে এসে সকলকে ঢিল ছুঁড়তে দেখে তিনিও বাঁই করে একটা ঢ্যালা ছুঁড়লেন— জীবনে এই প্রথম।
    বটতলার মোড়ের কাছ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে লুব্ধ চোখে দেখলেন গরীব গুর্বোরা পরম তৃপ্তিতে গরম খিচুড়ি খাচ্ছে। তিনি বার তিনেক আগু পিছু করে শেষ পর্যন্ত বসে গেলেন খেতে। বাড়ি ফিরে দেখলেন স্ত্রী সুজাতা মুসুর ডাল আর ঢ্যাঁড়স চচ্চড়ি রান্না করেছে।হাতে আর চারশো একুশ টাকা আছে । ব্যাঙ্কের ইন্টারেস্ট তোলার দিন এখনও এগারো দিন দূরে।

    নিউটাউনের আটতলার ফ্ল্যাটে পঁচিশ হাজার টাকা দিয়ে কেনা চারটে বোতল কিনে চারবন্ধু গেলাসে তরল হীরের মতো হুইস্কি সাজিয়ে বসে হা হুতাশ করছিল।’ইশশ্ ...এবার শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসবটার বারোটা বাজল। প্যাকড্ প্রোগ্রাম ছিল ফুল মস্তির.... পুরোটায় জল ঢেলে দিল শালা.....হারামি....’
    কে হারামি কে জানে। করোনা, না আর কেউ ?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 14.***.*** | ১৮ এপ্রিল ২০২০ ১৮:০৮92471
  • করোনা র দিনগুলিতে রোমান্স 

    ভালই হোচ্ছে 

    সন্দীপন ইস্টাইল 

    লিখে যান 

  • | ১৮ এপ্রিল ২০২০ ১৮:২০92472
  • উপরের মন্তব্য আমার নয়। আমি এই স্ক্রিনশট নিয়ে জমা করছি পুলিশ কমপ্লেনের সুবিধার্থে।

  • | 162.158.***.*** | ১৮ এপ্রিল ২০২০ ২২:৫২92487
  • সাইবার ক্রাইম রিপর্ট একসেপ্ট করেছে 
    ইন্টারন্যাশনাল নিয়ম অনুযায়ী দুইজন লোক এক ই নাম নিয়ে ব্লগ পোস্ট করতে পারেন না 
     

    'দ ' বাবু  সাবধান  হয়ে যান 
    এক সপ্তাহে র মধ্যে সাইবার চার্জেস পৌঁছে যাবে আপনার ইন্টারনেট প্রোভাইডার এর কাছে 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন