স্বেচ্ছাবন্দীর টোটকা ২ - দোজখনামা
আড়মোড়া ভাঙা
বইটি গত কয়েকবছর ধরে গড়াগড়ি খাচ্ছে—বইয়ের তাক থেকে কফি টেবিল,সেখানে থেকে বালিশের পাশে, আবার ফেরৎ বইয়ের তাকে । পড়া আর হচ্ছে না । লেখক রবিশংকর বল আমার চেয়ে অনেক ছোট, কিন্তু চলে গেছেন অকালে।
ওর গল্প শুনতাম তিনদশক আগে থেকেই , অনুজপ্রতিম কবিবন্ধু বিকাশ গণচৌধুরির মুখে, ছত্তিসগড়ের একটি শহরের রেলকোয়ার্টারের খুপরিতে বসে। বিকাশ ছিল রবির যাকে --হিন্দিতে বলে-- ‘লংগোটিয়া ইয়ার’।
রবি তখন নানা কাজে হাত পাকাচ্ছেন, কখনও এলাহাবাদের মিত্র প্রকাশনের প্রতিনিধি হয়ে শম্ভু মিত্রের ইন্টারভিউ নেবার জন্যে পার্কাসার্কাসের সেই ফ্ল্যাটে গিয়ে কড়া নেড়েছেন, পেছনে ছায়ার মত বিকাশ। আদুড় গায়ে লুঙ্গি পরা শম্ভু মিত্র গলায় খরজপঞ্চমের পর্দা লাগিয়ে বললেন – আমার তো নতুন করে বলার কিছু নেই।
বয়সের চপলতায় রবি বললেন—আমরা মনে করি বাংলা থিয়েটারকে আপনার এখনও অনেক কিছু দেবার আছে ।
--সেটা বিতর্কের বিষয়। এই বলে শম্ভু পেছন ফিরলেন।
এবার রবি, নতুন কাজে সাফল্য দেখাতে মরিয়া রবি, একটা ভুল করে বসলেন।
--মিত্র প্রকাশন এই ইন্টারভিউয়ের সম্মানমূল্য হিসেবে তিনহাজার অব্দি দিতে রাজি!
শম্ভু মিত্র ওদের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলেন।
রবি তখনও থাকেন টালিগঞ্জের টিনের চালের বাড়িতে, লেখেন হ্যারিকেনের আলোয়। কিন্তু তাঁকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটি নাতিক্ষুদ্র লেখক গোষ্ঠী, যারা পড়ে দেশ-বিদেশের সাহিত্য ও কবিতা , মেতে ওঠে তর্কে, বের করে ফেলে লিটল ম্যাগ, এক বা একাধিক; একের পর এক। এদের মধ্যে কেউ কেউ শিখে ফেলেছে স্প্যানিশ ও ফরাসী, মেতে উঠেছে অনুবাদে। আমার হাতে এল একটি লাতিন আমেরিকান ছোট গল্পের অনুবাদ—‘নদির তৃতীয় পাড়’।
রবি এখন আনন্দবাজারের রবিবারের পাতায় হাত লাগাচ্ছেন। ওই পাতার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অমুকের তখন দেশ এবং আনন্দবাজারে লেখালেখির জোরে অগণিত ভক্তকুল। কানে এল রবি বন্ধুদের আড্ডায় বলেছেন—আমি এখন অমুকের বাঁধা রাঁঢ়।
আমি চায়ে চুমুক দিতে গিয়ে বিষম খেলাম। তারপর স্বগতোক্তি করলাম—এই ছেলেটা বাঁচলে পরে তবে --!
পাঁয়তারা
আমার অধিকাংশ ভাল কথাই ফলে না; কিন্তু খারাপগুলো লেগে যায় । একটি বাচ্চা মেয়েকে বলেছিলাম তুই উচ্চ মাধ্যমিকে ফেল করবি; সেটা এমন ফলে গেল যে চেনাপরিচিতদের মধ্যে রটে গেল আমার নাকি ‘কালী জবান’ বা অশুভ জিভ।
কিন্তু রবি ক্রমশঃ বাংলার সারস্বত চর্চায় নিজের জায়গা করে নিলেন। আমার একটা ভাল কথা ফলে গেল। আর্থিক সংকট অনেকদিন আগেই ঘুচেছে। সংসার পেতেছেন, ছেলেমেয়েরা ওঁর বুক ভরিয়েছে। ‘দোজখনামা’র ইংরেজি এবং হিন্দি অনুবাদ হয়েছে। পেয়েছেন বঙ্কিম পুরস্কার।
কিন্তু একটা তৃষ্ণা , একটা অন্বেষণ কীভাবে যেন তাঁকে তাড়া করে বেড়ায় । এটা কি আরব্যরজনীর কোন জিন বা বেতালপঞ্চবিংশতির সেই শ্মশান থেকে উঠে আসা প্রেত? বলতে পারব না; কিন্তু রবি জানেন তাঁকে লিখতে হবে কিসসা বা আখ্যান, আসলে ‘কিসসা-গো’ বা পুরাণকথার কথকঠাকুর হওয়াই তাঁর নিয়তি।
একুশদিন লকডাউনের মাত্র চারদিন কেটেছে, আমি তুলে নিয়েছি পৌনে চারশ’ পাতার উপন্যাস ‘দোজখনামা’। কাটিয়ে উঠেছি ইংরেজি থেকে উর্দূ শব্দের উচ্চারণ কিংবা বানান বাংলায় লেখার প্রাথমিক বিড়ম্বনা।
( যেমন নোক্তা, কেহ এবং হৈ হবে ‘নুক্তা’, ‘কি’ এবং ‘হ্যায়’। নজরুলের অনুসরণে ‘রামা হৈ’ ভুলটি আর কত টানা যায় ! পশ্চিমা দারোয়ানরা বরাবরই ‘রামা হো’ বলে গাইত, আজও তাই গায়। একইভাবে ‘গাঞ্জে’ বলে কিছু হয় না , হবে ‘গঞ্জে’ মানে ‘টেকো’ এবং ‘লাথখোর’ হবে ‘লতখোর’ মানে নেশাড়ু। আবার হাসান-হোসেন নয় , হসন -হুসেন। ‘বিশাল’ না ‘বিসাল’ মানে ‘মিলন’। একইভাবে ‘আজিব’ নয় , ‘অজীব’ মানে অদ্ভুত, আশ্চর্য।)
কিন্তু এহ বাহ্য; দিল্লির উপকন্ঠে গুরগাঁওয়ে বসে এই বইপড়ার রোমাঞ্চ অন্যরকম।
আমি এখন ঘুরে বেড়াচ্ছি দিল্লির শাহজাহানাবাদের সাতটি দরওয়াজার আশে পাশে--- কাশ্মীরী গেট, দিল্লি গেট (১৬৩৮ সালে শাহজাহানের তৈরি),আজমেরি গেট(১৬৪৪ সালে), তুর্কমান গেট (১৬৫০), লাহোরী গেট, নিগমবোধ গেট,কাবুলী দরওয়াজা বা খুনি দরওয়াজা, বাহাদুর শাহ গেট (১৮৫৫)।
খুলে যাচ্ছে ইতিহাসের পাতা। আমি কতবার শরৎকাল এলেই ঘুরে বেড়িয়েছি নিজামউদ্দিনের দরগায়, পাশেই আমির খুসরো এবং গালিবের কবরের আশেপাশে, যেখানে গালিব তাঁর ভাষায় ধুলোয় জন্মে ধুলোতেই মিলিয়ে গেছেন। তাই কি ? তাহলে তাঁর গজল, তাঁর কসীদা, তাঁর রুবাই ও কতা – যা প্রায় দু’শ বছর পেরিয়ে আজও ভারত-পাক উপমহাদেশে গাওয়া হয় , বলা হয় এবং পড়া হয় – এগুলো কি গালিব নয় ? গালিব হয়তো দুষ্টু হেসে লজ্জা লজ্জা ভাব এনে বলবেনঃ
“কহতে হুয়ে সাকী সে হয়া আতী হ্যায়, বর্না
হ্যায় ইয়ুঁ কি মুঝে দুর্দে-তহে জাম বহুত হ্যায়’।
“ লজ্জা করছে, কি করে সাকীকে বলি !
পেয়ালার তলে যতটুকু বেঁচে সেই তো আমার ঢের”।
কিন্তু লাহোরের কবরখানায় উঠে বসেছেন সআদত হসন মন্টো আর স্বভাবসিদ্ধ হুজ্জত-হাঙ্গামা চেঁচামেচি করে ঘুম ভাঙিয়েছেন দিল্লির কবরখানায় মির্জা গালিবের। লাহোর ও দিল্লির দূরত্ব ? সিপাহী বিদ্রোহ এবং দেশভাগের সময়ের দূরত্ব ? পুরাণকথায় এসব কোন ব্যাপার নয় । পিতামহ ব্রহ্মার চোখের পলক পড়ার ফাঁকে মর্ত্যে কত বছরের সময় বয়ে যায় ভুলে গেছেন?
হাঁকডাকে শীতঘুম থেকে জেগে উঠেছে নানান চরিত্র এবং তারা আগুনের পাশে গোল হয়ে বসে গল্প জুড়েছে, আসলে ধরতাই দিচ্ছে আর কি ! গল্প বলছেন আসলে দু’জন—মীর্জা গালিব এবং মন্টো। অন্যেরা দেখছে যাতে খেই না হারিয়ে যায় ।
আর আছে কাল্লু। যার নেশা শরাবের নয় , কিসসা শোনার। নইলে ওর ঘুম আসে না যে! তাই খুঁজে খুঁজে মির্জা গালিবের কাছে নিয়ে আসে কিসসা-গো বা গল্প শোনানোর লোক। তারা উঠে আসে কবর থেকে। বিচিত্র সব মানুষ, বিচিত্র সব কিসসা। কিন্তু কোন কিসসাই পাল্লা দিতে পারে না মির্জা ও মন্টোর জীবনযাপনের গল্পগুলোর সঙ্গে।
দুজনেই দেখেছেন দুটো ঐতিহাসিক সময়কে—রাষ্ট্রবিপ্লব, তখত- এ-তাজ পালটে যাওয়া। মুঘল থেকে ইংরেজ, ফের ইংরেজ থেকে ভারতীয়রা। কিন্তু বাতাসের সঙ্গে আগুন আসে, মাটি ফেটে যায় , ডাইনির নখে চিরে যায় নীল আকাশ। জনপদ থেকে পাকিয়ে পাকিয়ে ওঠে কালো ধোঁয়া, ভর সন্ধ্যেয় শেয়াল কুকুর ডাকে।
কিন্তু সেই সময়ে একজন কবি একজন শায়ের কী করছিলেন?
বেশিরভাগ কবি যা করেন, কোন রকমে প্রাণ বাঁচান, তারপর নতুন রাজানুগ্রহের জন্যে হাত পাতেন। কিন্তু ভেতরটা দোজখের নীল আগুনে আত্মগ্লানিতে জ্বলে যায় ।
গালিব বলেনঃ “শাহজাহানাবাদ থেকে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া, অন্য কোন পথ তো আমাদের সামনে খোলা ছিল না । শুধু মুসলমান বলেই এত অপমান, অত্যাচার আর খুন হয়ে যাওয়া? শুধু মুসলমান বলেই আমি ---- “।
আমার গায়ে বিশহাজার ভোল্টের শক । গালিব কি দু’মাস আগেও দিল্লিতে ছিলেন?
মন্টো আর এক অজীব চিড়িয়া। বোম্বাই এবং লাহোর।
ওর কিসসা শুনতে শুনতে আমার চোখে ধরা দেয় চল্লিশের দশকের বোম্বাইয়া সিনেমার দুনিয়া। অশোককুমার , যিনি দাঙ্গার সময় নির্ভয়ে গাড়ি চালিয়ে রাত্তিরে মুসলমান পাড়ায় মন্টোকে ঘরে পৌঁছে দেন।
আর শ্যাম? সে সময়ের সবচেয়ে সুদর্শন, সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়ক অভিনেতা! মন্টোর বন্ধু; জীবনকে নির্বিচার উপভোগের স্রোতে ভেসে যেতে চান। লাহোরে অভাবগ্রস্ত মন্টোকে চুপচাপ টাকা পাঠিয়ে দেন, আবার লালবাতি এলাকায় হো-হল্লায় মেতে ওঠেন।
আমি আজও শুনি শ্যাম-সুরাইয়ার ডুয়েটঃ ম্যাঁয় তেরা চাঁদ, তু মেরী চাঁদনী—ও—ও—ও!
কিন্তু দেশভাগের সেই দাঙ্গার গল্প, বিশেষ করে হিন্দুমেয়ের নির্যাতন ও পাশবিক অত্যাচারের গল্প শুনে ক্ষণিকের জন্য বন্ধুত্ব ভুলে শুধু হিন্দু হয়ে ওঠেন।
কিন্তু মন্টো কী করে শুধু মুসলমান হবেন? উনি যে সবধর্মের সব জাতের মানুষকেই জন্তু হতে দানব হতে দেখেছেন। আর দেখেছেন তার মধ্যেও গুঙিয়ে ওঠা মানুষকে।
তাই আমরা পাই ‘ঠান্ডা গোস্ত’ , ‘খোল দো’ , যা আমাদের শীতের দিনেও কপালে ঘাম ফোটায়। পেয়েছি ইসমত চুঘতাইকে নিয়ে অনন্য স্মৃতিচারণ। আরও পেয়েছি ‘বু’ বা গন্ধ; সুলতানার গল্প, নিয়তিতাড়িত ব্রিজমোহনের গল্প –যে লোকটা কোন রোববারে পেরিন ডাকলেই ছুটে চলে যেত , জানত পেরিনের সঙ্গে দেখা হলেই চাকরিটি চলে যাবে , বাসভাড়ার জন্য হাত পাততে হবে। পেরিন তাকে ভালবাসে না , তবু ডাকে । সে নিশির ডাক শুনে ও যায় এবং প্রত্যেকবার ফটোগ্রাফারের চাকরিটি খোয়ায়, তবু যায় ।
আর নেস্তি ? যে টাঙ্গাওয়ালা স্বামীর মৃত্যু হলে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চেয়ে লাহোরের রাস্তায় টাঙ্গা চালাতে শুরু করেছিল। কিন্তু একদিন মিউনিসিপ্যালিটি বলল –মেয়েদের লাইসেন্স দেওয়া যাবে না । তাহলে খাব কি করে? উত্তর পেল—বাজারে গিয়ে দাঁড়াও।
নেস্তি তাই করল , শুধু যাওয়ার আগে স্বামীর কবরে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বলল—ওরা আমাকে বাঁচতে দিল না , মাপ করো।
গালিব ও মন্টো সংসারী নন ; (আমিও নই , হে-হে !)
দুজনেই সারা জীবন ধরে অনেক নারীর মধ্যে খুঁজে বেরিয়েছেন এক নারীকে যাকে কখনই পাওয়া যায় না ।
“য়ে ন থী হমারী কিস্মত কি বিসালে-ইয়ার হোতা
অগর অউর জীতে রহতে য়হী ইন্তিজার হোতা।।“
“আমার ভাগ্যে লেখা নেই কোন প্রিয়ামিলনের ক্ষণ,
আশায় আশায় বসে থেকে বুঝি কাটবে সারাজীবন”।
[ আহা, ইউটিউবে হবীব আলি খান বা পাকিস্তানি গায়িকা টিনার গলায় রাগ দরবারীতে বাঁধা এই দীর্ঘ গজলটি একবার শুনে দেখুন; পেয়ে যাবেন জন্নতের ঠিকানা।]
এই সত্যিটি জীবনানন্দ বুঝেছিলেন; বুঝেই বা কি হয়েছিল কচুপোড়া! ডাক্তারেরও জ্বর হয় , করোনা ভাইরাস হয় ।
আরও একজায়গায় গালিব ও মন্টো সমান হয়ে যান । মুফলিসি বা আর্থিক বিপন্নতা এবং তার জন্যে কখনও অপমানজনক সমঝোতা করা , কখনও শিরদাঁড়া সোজা করে চোখে চোখ রেখে তাকানো। ইসমতকে মন্টো বলছেন—মার খেতে খেতে একসময় শিরদাঁড়া নুয়ে যায় তো, আমরা অসহায় হয়ে পড়ি।
গালিব অপমানকে হজম করেন সূক্ষ্ম ব্যঙ্গের খোঁচায়, সেটা অনেকসময়ে অপমানকর্তার মাথার উপর দিয়ে যায়, সে তিনি সম্রাট বাহাদুর শা ‘জাফর’ হোন বা ইংরেজ রাজপুরুষ।
গালিব আবার নিউ দিল্লিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন; তাই বলেন—“ওরা আইনকে কবরে শুইয়ে দিয়ে এসেছে। ওরা বলে দেবে, কারা আইন মানে না , আপনাকে তা মেনে নিতে হবে”।
আচ্ছা, মহারাণী ভিক্টোরিয়ার সময়েও কি এন আর সি/ সি এ এ ছিল ?
ইংরেজ রাজপুরুষের দ্বারে ক্ষতিপূরণের আশায় এসেছেন হাফিজ মুহম্মদ খান, পাড়ার লোকে ডাকে ‘মাম্মু’ বলে ।
--- দুজনে যে একই লোক কী করে বুঝব?
--- হুজুর, আমি তো বলছি ।
--তাহলে আমিও বলছি , তুমি কিছুই পাবে না।
--কেন হুজুর?
-- আগে প্রমাণ কর তুমি কে !
আমি আবার পৌঁছে গেছি লাহোরি গেট বা খুনি দরওয়াজার সামনে। একটা পাঁচিলের আড়াল থেকে দেখছি ক্যাপ্টেন হডসন পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে গুলি করে মারছেন বাদশা বাহাদুর শাহের দুই শাহজাদাকে।
দৃশ্যটা ফেড আউট হতে হতে আর একটি শটঃ দিল্লির ফুটপাতে একটি নিরস্ত্র ছেলেকে গুলি করে মারছে এক পুলিস কন্সটেবল।
উপসংহার
রবিশংকর বল বোধহয় বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর নিয়তি স্লেটে নামের পাশে ঢ্যাঁড়া কেটে দিয়েছে । এই আখ্যানের ছত্রে ছত্রে রয়েছে সেই অনুভব। উনি শুরু করেছিলেন আরেক আখ্যানঃ “কিসসা কহেন শহরজাদী”, বেরোচ্ছিল ধারাবাহিকভাবে একটি সাহিত্য পত্রিকায়, কিন্তু শেষ করে যেতে পারেননি ।
তাঁর শেষের দিন – বাড়ি/হাসপাতাল/গাড়ি -- আরেক নিয়তিতাড়িত লেখক মানিক বন্দ্যোর সঙ্গে, মানে শ্রীমতী কমলা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শ্রীমতী সীমা বলের লেখায় যা দেখেছি , কী আশ্চর্য মিল!
তাহলে এই সময়ের মন্টো কে হবে? আমি জানিনা।
কিন্তু নিজেকে চিনতে পেরেছি, আমি কাল্লু। কিসসা শোনা যার নেশা, নইলে ঘুম হয় না । হয়ত দু’মাস আগে দিল্লিতে যারা চিতেয় উঠেছে বা কবরে গেছে তারা একদিন আমাকে তাদের গোপন কিসসাগুলো শোনাবে। আমি অপেক্ষায় থাকব আজকের গালিব ও মন্টোর জন্যে ।
[ গালিবের দু’ছত্রের দুটি দ্বিপদীর মূল উর্দু থেকে বাংলায় অক্ষম অনুবাদ—বর্তমান লেখকের।]