যুদ্ধাপরাধী, সাবধান! (পর্ব - ১) : নূপুর রায়চৌধুরী
বুলবুলভাজা | প্রবন্ধ | ১১ মার্চ ২০২৪ | ১৩৮২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
ভাবতেই আশ্চর্য্য লাগে, অসহায় মানুষদের নির্বিচারে ঠান্ডা মাথায় খুন করে যারা, তাদের বাঁচানোর জন্য কত না আইনের মারপ্যাঁচ রয়েছে, নিত্যনতুন তৈরিও হচ্ছে, অথচ ইউক্রেনে ব্রোভারি'র চার বছরের বাচ্চা মেয়েটির উপর যে রুশ সৈন্যরা যৌন নিপীড়ন করল, তার বাবার সামনে বন্দুকের মুখে তার মাকে গণধর্ষণ করল, তাদের পৈশাচিক অপরাধের দায়ভার কে নেবে? অথবা বুচার ৬৯ বছর বয়সী পেনশনার ভ্যালেন্টিনা জেন--কী দোষ ছিল তাঁর? ২৫ মার্চ, ২০২২-এ রাশিয়ার দখলদার বাহিনী ভ্যালেন্টিনাকে তাঁরই বাড়ির উঠোনে গুলি করে হত্যা করে। ভ্যালেন্টিনার মৃতদেহটি সেখানেই পড়ে ছিল যতক্ষণ না ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী রাশিয়ানদের কবল থেকে ৩১ মার্চ বুচাকে আবার মুক্ত করে– এত বড়ো অন্যায়ের কি কোনো বিচার নেই?
যুদ্ধাপরাধী, সাবধান! (পর্ব - ২) : নূপুর রায়চৌধুরী
বুলবুলভাজা | প্রবন্ধ | ১৮ মার্চ ২০২৪ | ১০২৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৫
ঘটনাক্রম জটিল থেকে জটিলতর হয়ে চলেছে, কিন্তু কথায় আছে না: "আশায় বাঁচে চাষা"। আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ব্রিকস দেশগুলির (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা) আসন্ন ১৪ তম শীর্ষ সম্মেলন। যে কোনো দেশ, যে আইসিসির প্রতিষ্ঠাতা সনদ, রোম সংবিধি অনুমোদন করেছে, সে দেশের এখতিয়ারের মধ্যে আসা একজন অভিযুক্ত যুদ্ধপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য। দক্ষিণ আফ্রিকা, এই বছরের ব্রিকস আয়োজক, সে আবার আইসিসির এক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। সুতরাং, চেপে বসুন দর্শকবৃন্দ, খেলা চালু হলো বলে! ভয় একটাই: জুমা'দের মতো বিশ্বাসঘতকেরা থাকতে আল-বশির'দের আর নাগাল পায় কে? ভাববেন না, আমি আগে থাকতেই কূ গাইছি, আসলে ঘরপোড়া গরু তো, সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ডরাই!
সারা দুনিয়া কি ভুলে গেল রোহিঙ্গাদের? : নূপুর রায়চৌধুরী
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ১৮ জুন ২০২৪ | ৯৯৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
জাতি ও ধর্মের নামে বিভেদ, অত্যাচার আর নৃশংসতা মানব সভ্যতার ইতিহাসে কোনো নতুন কথা নয়। এরই এক জ্বলজ্যান্ত নজির স্থাপন করেছে মিয়ানমার (সাবেক বার্মা)। সংখ্যাগরিষ্ঠ এই বৌদ্ধ রাষ্ট্র থেকে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ঝেঁটিয়ে খেদানোর বর্বরতাও কোনো বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। এর মূল প্রোথিত আছে রোহিঙ্গাদের প্রতি বিগত বেশ কয়েক দশকের রাষ্ট্রীয় দমন, বৈষম্য এবং সহিংসতার প্রলম্বিত ইতিবৃত্তে। সর্বহারা রোহিঙ্গাদের পরভূমে পলায়নের সুদীর্ঘ সময়চক্রের ঐতিহাসিক পযালোচনা বড়োই মর্মন্তুদ, বড়োই আতঙ্কময় এবং হতাশাব্যঞ্জক। কিন্তু রোহিঙ্গা সমস্যার বর্তমান দশা জানতে গেলে সেই ইতিহাস পর্যালোচনা না করলেই নয়।
মিয়ানমার থেকে সবচেয়ে বড় সংখ্যায় রোহিঙ্গা প্রস্থানের মর্মান্তিক ঘটনাটি ২০১৭ সালে সংঘটিত হয়েছিল যখন এক ধাক্কায় ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল, কিন্তু সেটা আরাকান রাজ্য থেকে ১৯৭৮ সালে শুরু হওয়া উদ্বাস্তু অনুপ্রবেশের ধারাবাহিকতাকেই মাত্র চিহ্নিত করে, যখন সামরিক অধিকর্তা জেনারেল নে উইনের সমাজতান্ত্রিক শাসনের সময় উত্তর আরাকানে তাতমাদো সর্ব প্রথম ‘’অপারেশন ড্রাগন কিং’’ ওরফে ''অপারেশন নাগা মিন'' শুরু করে l
পাল্টে যাচ্ছে কি আফ্রিকার গৃহযুদ্ধের চালচলন? : নূপুর রায়চৌধুরী
বুলবুলভাজা | প্রবন্ধ | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৮৩৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩০
দেখুন, যুদ্ধ-বিগ্রহের ব্যাপার আফ্রিকায় কোনো নতুন কথা নয় । ১৯৪৫ সাল থেকে শুরু হলেও মোটামুটি ১৯৬০ সালের মধ্যে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শাসকদের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসন বা সম্পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল আফ্রিকা মহাদেশ। স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই আফ্রিকার দেশগুলো যেন গৃহযুদ্ধ এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘর্ষের জন্য পাল্লা দিয়ে বাজি ধরেছিল । হাড়-হিম করা ভয়াবহ সব সংঘর্ষ: চাদ (১৯৬৫-৮৫), অ্যাঙ্গোলা (১৯৭৪ সাল থেকে), লাইবেরিয়া (১৯৮০-২০০৩), নাইজেরিয়ান সিভিল ওয়ার (১৯৬৭), উগান্ডার দা লর্ড’স রেসিসটেন্স আর্মি ইন্সার্জেন্স (এলআরএ) (১৯৮৭), লাইবেরিয়া সিভিল ওয়ার (১৯৮৯), সোমালি সিভিল ওয়ার (১৯৯১), সিয়েরা লিওন সিভিল ওয়ার (১৯৯১), রুয়ান্ডান জেনোসাইড (১৯৯৪), রিপাবলিক অফ দা কঙ্গো সিভিল ওয়ার (১৯৯৭–১৯৯৯), এরিট্রিয়ান-ইথিওপিয়ান ওয়ার (১৯৯৮), – আর কত নাম নেব?
এই সব যুদ্ধের ইতিহাস খুঁটিয়ে দেখলে একটা ব্যাপার পরিষ্কার হয়ে ওঠে যে, গত কয়েক দশকে আফ্রিকার যুদ্ধের প্রকৃতি ও পদ্ধতি উল্লেখযোগ্যভাবে পাল্টে গেছে। "পুরানো বা ঐতিহ্যগত যুদ্ধ’’ এবং "নতুন যুদ্ধ" এ দুইয়ের মধ্যে স্বতন্ত্র পার্থক্য ধরা পড়ে । তবে সব সময় এই বিভাজনের সীমারেখা টানা অত সোজা নয়, কোনো কোনো যুদ্ধে এই দুয়েরই প্রভাব দেখা যায়, সেই যুদ্ধকে তখন ‘’মিশ্র প্রকৃতির (Hybrid)’’ বলে সাব্যস্ত করা হয় । ব্যাপারটা তাহলে একটু খতিয়ে দেখা যাক ।