বেগম সুফিয়া কামালঃ জন্মশতবার্ষিকী : কবীর সুমন
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৯ জুন ২০১১ | ১০২৪ বার পঠিত
জীবনে অনেক সময়ই এসেছে যখন আমার স্বদেশবাসী আমার গান নিয়ে নিন্দের ঝড় তুলেছেন,তীক্ষ্ণ সমালোচনায় আমাকে ছিঁড়েখুঁড়ে দিয়েছেন,সে সময়গুলোয় নিজেই নিজেকে অভিশাপ দিয়েছি। নির্বোধ আর ছোটমনের কতজনকেই তো আমাকে নীচু করার চেষ্টায় উঠেপড়ে লাগতে দেখলাম! কিন্তু এই জীবনেই আবার এইরকমও কিছু দুর্লভ মুহূর্ত আছে যখন মনটা কৃতজ্ঞতায় ভরে ওঠে -- জীবন আমাকে এই রকম অসাধারণ কিছু ব্যক্তিত্বের কাছাকাছি আসার সুযোগ দিয়েছে বলে, আমার হাত দিয়ে ওঁদের নিয়ে এরকম গান লিখিয়ে নিয়েছে বলে।
আর নয়, কেন? : কবীর সুমন
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৯ আগস্ট ২০১১ | ১০৭২ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
আমি এমন "গায়ক'এর গানও শুনেছি যিনি আমার নিজের বানানো গানের তাল পালটে সেটিকে আত্মস্থ করে গেয়েছেন। শ্রোতারা খেয়ালও করে নি যে গানটার রিদমটাই পালটে গেছে। এইভাবেই আমার একটা ৫ মাত্রার গান নির্দ্বিধায় ৬ মাত্রা, কখনও কখনও ৮-মাত্রাও হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং একজন শ্রোতার একটা ভুরুও বাঁকে নি, বরং গানশেষে সেই গায়ক অজস্র তারিফ এবং তারিফ পেয়েছেন। এইসব বিখ্যাত আর জনপ্রিয় শিল্পীরা গানের মাত্রা বদল কেবল শস্তা জনপ্রিয়তা পাবার জন্যেই করেন নি, তাঁরা এটা করেছেন কারণ ৫-মাত্রার গান হ্যান্ড্ল করা তাঁদের কাছে কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। তাই একজন সেটাকে ৬ মাত্রায় বদলে নিলেন, আরেকজন, ৮ মাত্রায়। পরিশেষে, শ্রোতাদের তৃপ্ত মুখগুলি আর শিল্পীর খুশি-খুশি মুখ দেখে আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে ভাবলাম, একদিন আমার কিছু শুভানুধ্যায়ী আমাকে এই দেশে ফিরে এসে গানকে জীবিকা হিসেবে নেবার বিরুদ্ধে সাবধান করেছিলেন, তাঁদের কথা সেদিন শুনলে আজ আমাকে এই জিনিস দেখতে হত না। আমি কিছুই করতে পারি নি, নিজের ক্ষোভ, রাগ, হতাশা, কিছুই ব্যক্ত করতে পারি নি সেই দিন। আজ, তেষট্টি বছর বয়েসে, জীবনে অনেক কিছু দেখবার পরে, আজ হয় তো সময় হয়েছে, আমি গলা ছেড়ে বলতে পারি এই বং সোসাইটি (ঞ্ছবাঙালিঞ্জ নয়) আর এই বং জীবনযাত্রার প্রতি আমার অপছন্দ, আমার ঘেন্নার কথা। "বাংলা' বলে আর কিছু বেঁচে নেই। অনেকদিন আগে মরে গেছে। অনেকদিন আগে শোনা এক বাউল-গান মনে পড়ে যাচ্ছে - "বাউল বাউল করো তোমরা / বাউল কে আছে / বড় দু:খ পাইয়া বাংলার বাউল মইরাছে।'
একটি ভোটার কমল : কবীর সুমন
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২২ আগস্ট ২০১১ | ১০১১ বার পঠিত
কী ছিল, তুমি বললে ভোট ছিল ...
ভোট ছিল কবীর, বল ছিল না।
বোমা ছিল।
রাজু বলে একটা ছেলের দুটো চোখ উড়ে গেল,
আরেকটা ছেলে মরে গেল।
পনেরোই অগাস্টে ভোট ছিল না কবীর, বোমা ছিল।
রাস্তায় ফেলে রেখেছিল কেউ একটা।কে গো?
আমি কী করে জানবো বলো তো কবীর,
আমি কী করে জানবো?
কেউ একজন, কেউ একজন ...
নিশ্চয়ই কোনও পুরুতঠাকুর না।
বা কোনো মৌলবীসাহেব না, বা
গির্জার কোনও পাদ্রি নন, বা ধরো
আন্নাকালী মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক নন
বা ধরো, কোনো তাঁতি বা নাপিত নন
বা ধরো, এই পশুচামড়ার ব্যবসা যাঁরা করেন,
তাঁরাও নিশ্চয়ই নন।
মকবুল বললেন ।।। : কবীর সুমন
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ১০ আগস্ট ২০১১ | ৯১৪ বার পঠিত
তাহলে বোধহয় নিয়ম করে দিতে হবে ট্রাফিক লাইটের ধরো বেশ কিছুটা আগে
থেকে হর্ণ বাজবে না।অসম্ভব, হাসপাতালের সামনে হর্ন বাজানো বারণ।
বাজে না?
হুঁ, এস এস কে এম হাসপাতাল, বাঙ্গুর হাসপাতাল দেখো না, প্রতিটা হাসপাতালের সামনে যেন আরও দ্বিগুন উৎসাহে লোকে, গাড়ীর সব চালকেরা হর্ন বাজায়।
কেউ কোনো নিয়ম মানে এ দেশে?ঠিক, তাহলে ওই প্রচণ্ড আওয়াজ, হর্নের আওয়াজ মানে এক সেকেণ্ড সামনের গাড়ীটা স্টার্ট নিতে দু সেকেণ্ড দেরী করল কি পেছনের সব কটা গাড়ী এক সাথে ভ্যা ভ্যা ভ্যা ভ্যা ভো ভ্যা ভি ভ্যা আরম্ভ করে দিল
কারও ধৈর্যের বালাই নেই।
এর মধ্যে কি করে লোকে গান শুনবে!
এতো গেল একটা দিক, আর একটা দিক আমি ভাবছিলাম, কবীর
ভাবছিলাম ধরো ওরই মধ্যে কেউ একজন শুনে ফেলেছেন
এত তাড়াতাড়ি ? : কবীর সুমন
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৩ জুলাই ২০১১ | ১০১৬ বার পঠিত
রাজ্য পরিচালনার ভার যে রাজনৈতিক দলের হাতেই থাকুক না কেন, শাসকশ্রেণী অর্থাৎ পুলিশবাহিনীর সঙ্গে তাদের অশুভ আঁতাত যে কোনও সময়েই বিয়ের মত বাঁধনের চাইতেও বেশী শক্তপোক্ত হয়ে দাঁড়ায়, এমনটা যেন একটা অলিখিত নিয়ম হয়ে উঠেছে। আর ঠিক এমনটাই না হলে মনে হয় না যে ক্ষমতাসীন দলটির পক্ষে রাজ্যে শাসন করা আদৌ সম্ভব হবে । গোটা বিশ্ব জুড়ে মানুষ, রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক নেতা, সবাই শান্তির কথা বলে, সমস্যা ইত্যাদির শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বাতলায়। কিন্তু তারা এই কথা বলে হয় শাসকদল অথবা জোটের অন্তর্ভূক্ত হয়ে, নিজের হাতের মুঠোয় পুলিশি ক্ষমতা রেখে। এ এক আজব পরিস্থিতি; আমি এক রাজনৈতিক নেতা সশস্ত্র পুলিশবাহিনী এবং কম্যান্ডোদের (আমার স্ট্যাটাস যদি তাই হয়) সুরক্ষাবেষ্টনীর মধ্যে থেকে সাধারণ জনগণকে হিতোপদেশ বিতরণ করতে আসবো, তাদের সমস্যার প্রজাতান্ত্রিক সুরাহা দর্শাবো, আমার নিরাপত্তারক্ষীরা পুরো ঘটনার সময় চারদিকে নজর রাখবে, তারা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে থাকবে, সেইসব সাধারণ মানুষ যারা ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছে তাদের দিকে সন্দেহের চোখে তাকাবে, কারণ তারা দেখতে চায় কোন ভোট-নাগরিকের হাতে আমার সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা। এত এত সংখ্যক পুলিশ আর সশস্ত্র কম্যান্ডোরা, বিপুল পরিমাণ এই আগ্নেয়াস্ত্রের ভান্ডার রক্ষীদল এবং প্রজাতন্ত্রের হাতে, এসব দেখে আমার মন কু-গায়, হয়ত প্রজাতন্ত্র একটা অতিবিপজ্জনক প্রস্তাবনা - এই বুঝি খুব খারাপ কিছু ঘটে গেল। এইভাবে দেখলে মনে হয় আমাদের গণতান্ত্রিক অব্যবস্থা একটা রূদ্ধশ্বাস থ্রীলার।
মকবুল বললেন : কবীর সুমন
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ১৭ জুলাই ২০১১ | ১০১৭ বার পঠিত
এই হাজার দশেক ছেলে মেয়ে চাকরি পাবে পুলিশে মকবুল, খারাপটা কী?
-আহা হা খারাপ কেন হবে কবীর সুমন, দশ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি, সোজা কথা! চাট্টিখানি কথা!
তবে কি,আমি ভাবছিলাম চাকরি তো আরও নানান ক্ষেত্রে হতে পারতো।
এই পুলিশেই দশ হাজার চাকরি, মানে, পুলিশেই?
-তোমার কী মনে হয় কবীর ?
কাউন্টারটা দাও।
-অ্যাঁ এটা তো আমার বলার কথা,আজকে তুমি আমায় কাউন্টারটা দাও।
দেখ মকবুল, আমার মুখ দিয়ে তুমি কিছু বের করতে পারবে না।
-পারবো, পারবো ।
একদিন না একদিন ঠিক পারবো।
কাউণ্টারটা দাও।
আরে, এই সবেতো আমি নিলাম।
-তাতে কি? কাউন্টারটা দাও
শোনো কবীর সুমন, আমি ভাবছিলাম কি, কী চমৎকার একটা পলিটিকাল চাল চাললেন দেখো এই রাজনীতিক। অসামান্য এঁর মেধা, কী তীক্ষ্ণধী ।