এক ট্রাঙ্ক গপ্পো : অভিজিৎ মজুমদার
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১০ এপ্রিল ২০১৮ | ৩৯০৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৬
কলকাতা টেলিফোন ভবন। ডালহৌসি স্কোয়ার, যাকে এখন বিবাদী বাগ বলা হয় সেইখানে লালদীঘির পাড়ে সুউচ্চ অট্টালিকা। তার সাত তলায় ট্রাঙ্ক এক্সচেঞ্জ। যে সময়ের কথা বলছি তখন কলকাতা থেকে দুবরাজপুর কথা বলতে হলেও ট্রাঙ্ক কল বুক করে অপেক্ষা করতে হত কখন টিলিফোনের ঘন্টি বাজবে। আবার কানেকশন লাগলেও শান্তি ছিল না, কেন না যান্ত্রিক গোলযোগে প্রায়ই লাইন কেটে যেত। সেইসব দূরবর্তী ফোন ও মনের কানেকশন জোড়ার কাজ যারা দিনে রাতে ২৪ ঘন্টা করতেন তাঁদের পোষাকি নাম ছিল টেলিফোন অপারেটরস। কোনো এক অজ্ঞাতকারণবশত: তাঁরা সবাই ছিলেন মহিলা। যার মধ্যে আমার মা ছিলেন একজন। তাই সেইসব অপারেটররা সবাই ছিলেন আমার অমুক মাসি, তমুক মাসি। সংখ্যায় প্রায় তিনশো ছুঁই ছুঁই। অজস্র নাম আর তাঁদের জীবনের অজস্র গল্প। হাসি-কান্না-লড়াই। জয়ের গল্প। হারেরও। সেই সব গল্পই মায়ের মুখে শোনা। মায়ের তেত্তিরিশ বছরের চাকরি জীবনে, অর্থাৎ বিংশ শতকের শেষ তৃতীয়াংশে টেলিফোন ভবনের ট্রাঙ্ক এক্সচেঞ্জে কাজ করা মানুষীদের জীবনের সেই সব সিনেমাকে হার মানানো টুকরো-টাকরা সত্যি গল্প নিয়ে এই সিরিজঃ "এক ট্রাঙ্ক গল্প"। পাত্রপাত্রীদের নাম পরিবর্তিত।
বিছে : অভিজিৎ মজুমদার
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ০৭ নভেম্বর ২০১৮ | ২২৪৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
প্রায় এক সপ্তাহ সেই ফোনের অপেক্ষা করেছিল শতদ্রু। আসে নি।
আর এই এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে ওই অজানা অবয়বটা আকৃতি নিয়েছিল ওর মাথায়। সেই অবয়বটার দেহ সুগঠিত ও পিচ্ছিল, দুটো বাড়ানো সরু হাতের শেষে আঁকশির মত দাঁড়া, ঘন ভুরুর নীচে দীঘল চোখে মায়া ও মোহ, আর শ্রীলেখা মিত্রর মত ভারী ঠোঁঠের তলায় তীক্ষ্ণ মাদকভরা একটা লুকোনো হুল।
শতদ্রু এরপর আর দেরি করে নি। বহুদিন ধরে লুকিয়ে রাখা সেই বিছের ছবিগুলো এয়ারমেলে পাঠিয়ে দিয়েছিল কলকাতায় রাজীব ঘোষের অফিসের ঠিকানায়। এক ঝটকায় বিছেটার সমস্ত চিহ্ন মুছে দিয়েছিল নিজের জীবন থেকে।
তখন কে জানত, আবার ন বছর বাদে এভাবে বিছেটা ওর সামনে এসে দাঁড়াবে? এই রকম করুণ, থ্যাঁৎলানো, মৃতপ্রায় অবস্থায়?
করোনা ও আমরা : অভিজিৎ মজুমদার
বুলবুলভাজা | আলোচনা : স্বাস্থ্য | ২৩ এপ্রিল ২০২১ | ৩২৫৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
আরেকদল বলে চলেছে, সরকার কী করবে? মানুষগুলোই বদ। মানুষগুলোই কোনও কথা শোনে না। তাই তো বটে। রাজনৈতিক প্রচার থেকে কুম্ভমেলা, তাতে তো সরকারের কোনও দায় নেই। যাবতীয় সচেতনতার প্রচার যে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসে শূন্যে পৌঁছে গিয়েছিল, তাতে সরকারের দায় নেই। দাবাই ভি আওর কড়াই ভি বলে চলা নেতা মাস্ক না পরে ব্রিগেডে সভা করছে, সরকারের কোনও দায় নেই। কোভিড টাস্কফোর্স যে গত দু-মাস কোনও মিটিং করে নি তাতেও সরকারের দায় নেই। মানুষ যে আজ লকডাউন শব্দটা শুনলে রেগে যাচ্ছে, তাতেও রাষ্ট্রের দায় নেই। অক্সিজেন বিদেশে এক্সপোর্ট হল, সরকারের কোনও দায় নেই। খাদ্য থেকে ওষুধ, কোনও কিছুতেই সুরক্ষা দেওয়ার কোনও দায় রাষ্ট্রের নেই। সব মানুষদের দোষ।
এর বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে আছে আরেক যুযুধান পক্ষ। মাস্ক পরতে বললে তারা নিয়ে চলে আসছে গরীব মুটে-মজুরদের অসহায়তার কথা। তারা দুটো কথা ভুলে যাচ্ছে। এক, মহামারীতে সব থেকে বেশি কষ্ট সহ্য করবে ওই নীচেরতলার মানুষগুলোই। যে যত ওপরে, তার চিকিৎসা পাওয়ার সুরক্ষা তত বেশি। দুই, একথা অর্থনীতিতে প্রমাণিত সত্য যে গরীবদের চিকিৎসা ও তৎসংক্রাম্ত আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা কম।
দেবীর সাজে সৌরভ গোস্বামী : অভিজিৎ মজুমদার
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব | ১২ নভেম্বর ২০২১ | ৪৩৬৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৪
দুর্গাপুজোর সময় থেকেই আপনারা নিশ্চই এরকম অনেক ছবি দেখেছেন যেখানে মডেলরা বিভিন্ন দেবীর সাজে ছবি তুলেছেন। সেরকম কিছু ছবি দেখে আপনারা নাক সিঁটকেছেন, কিছু দেখে ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন. কিন্তু আমি বাজি রেখে বলতে পারি, এই লেখার সঙ্গে যে ছবিগুলি আছে সেরকম আপনারা আগে কোথাও দেখেননি। কেন বলুন তো? এই ছবিগুলোর যিনি মডেল তিনি কোনো মহিলা নন বরং একজন পুরুষ। তাঁর নাম সৌরভ গোস্বামী। কী, একটু চমকে গেলেন তো? চমকানোরই কথা!
এই চমক, এই ব্যতিক্রম দিয়েই শেষ হল এবারের উৎসব সংখ্যা।