১সকাল সকাল সদর দরজায় দুমদাম ঘা আর তার সঙ্গে একটি মেয়ের ডাকাডাকি শুনে, অন্বেষাদেবী উঠোনে নামলেন। দরজার দিকে যেতে যেতে বেশ গলা তুলেই বললেন, “ওফ্ কি ডাকাতে মেয়ে রে, বাবা। দরজাটাই না ভেঙে পড়ে। দাঁড়া দাঁড়া, আর দরজা বাজাস না মা, খুলছি”। তাঁর আচরণে বা কণ্ঠস্বরে কোথাও বিরক্তির লেশমাত্র নেই, বরং যথেষ্ট প্রশ্রয়ের সুরেই বললেন কথাগুলো। দরজা খুলতেই দেখলেন, ফুটকি কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চোখেমুখে গভীর রাগরাগ ভাব, কিন্তু ঠোঁট থেকে হাসির আভাসটা পুরো মুছতে পারেনি। ফুটকি রাগত স্বরে বলল, “তুমি আমাকে ডাকাতে মেয়ে বললে, কাকিমা? এর ফল কিন্তু ভালো হবে না। একদিন দেখো সত্যিই তোমাদের বাড়ি ডাকাতি করতে আসবো, ... ...
খেরোর খাতা ছেড়ে হরিদাস পাল হয়ে ওঠাতে মনে হয় আপনাদের অনেকে আমায় ভুলতে বসেছেন, তাঁদের জন্যে এই গল্পটি শেয়ার করলাম ক্লিক করলেই পড়া যাবে। ... ...
এখন থেকে আমার সব লেখা হরিদাস পাল বিভাগে প্রকাশ পেতে থাকবে। ভুলে যাবেন না, এখনকার মতোই দয়া করে একটু নজর দেবেন ওদিকে। ... ...
লাজবন্তী মালতীমায়ের কাঁধে বাঁ হাত রেখে, মা যেমন সমবেদনায় মেয়ের ঘনিষ্ঠ হয় সেভাবেই, ডানহাতে মালতীমায়ের চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে আবার গলা নামিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “কী হয়েছে, রে, কানছিস কেন?” মালতীমা লাজুক হেসে সব কথাই মনে হল বললেন, আমি শুনতে পেলাম না, কিন্তু লাজবন্তী মাঝেমাঝেই আমার দিকে যেভাবে তাকাচ্ছিলেন, তার থেকেই বুঝতে পারলাম, আমার কথার পিঠে যা সব কথা হয়েছে, সে সবই রিপোর্ট হল লাজবন্তীর কাছে। ... ...
[প্রথম পর্ব - ১৭/১১/২০২১, দ্বিতীয় পর্ব ১৯/১২/২০২১ এবং তৃতীয় পর্ব ০৭/০১/২০২২ তারিখে প্রকাশিত] হামিদভাই ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা চলে গেলেন, কিন্তু একটা খোঁচা রয়ে গেল আমার মনে। এমন তো হবার কথা ছিল না। আমি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বালাইয়ের মুখের দিকে তাকালাম। বালাই এতক্ষণ কোন কথা না বলে চুপ করে শুনছিল, এখন ঘাড় কাত করে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, “কথাটা মন্দ বলেনি কিন্তু - রাজধানীর লোকেদের পেটে আর মুখে আনকথা”, তার চোখেমুখে ফিচেল হাসি, ... ...
[প্রথম পর্ব - ১৭/১১/২০২১ এবং দ্বিতীয় পর্ব - ১৯/১২/২০২১ তারিখে প্রকাশিত] “তা বাবুর কোথা থেকে আসা হচ্ছে? কলকাতা থেকে বুঝি?” “আজ্ঞে হ্যাঁ”। “কলকাতার কোথায় বটে?” আমি বললাম। “অ। আমি অবিশ্যি কলকাতার তেমন কিসুই চিনি না। এমনি জিগ্যেস করলাম। দুবার মাত্র কলকাতায় গেছি, পেথমবার ময়দানে । আরেকবার আলিপুরে। আলিপুরে পুলিশদের টেনিং দেওয়ার ইস্কুল আছে না? চেনেন?” ... ...
১ ভোরের কুয়াশা মাখা মায়াবি আলোয়, লেকের ধারে বেঞ্চে বসে, অনামিকা মন দিয়ে শুনছিলেন, কথকতার কথা, “আজকেই ফিরে গিয়ে বোমাটা ফাটিয়ে দাও, অনু”। অনামিকা হাসলেন, স্নিগ্ধ দৃষ্টি মেলে কথকতার দিকে তাকিয়ে বললেন, “বৌমাকে বোমা? ঠিকই বলেছেন। বলবো, আজই বলবো। আগে পেতাম না, আজকাল মনের মধ্যে বেশ একটা জোর পাচ্ছি। ... ...
ক্লাব ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে ভূষিকাকা হুংকার ছাড়ল, “বুনো ওলের যম যদি হয় বাঘা তেঁতুল, তাহলে বাঘা তেঁতুল ঢিট হবে বুনো ওলে, তাই তো? তোরা কী বলিস?” ক্লাবঘরে বসে আমরা চারজন ক্যারাম পিটতে পিটতে বোর হচ্ছিলাম, ভূষিকাকার গলা শুনে আমরা আনন্দে হামলে উঠলাম, “ওফ, ভূষিকা, আজকের দিনে তুমি ছাড়া আর কাউকে ভাবাই যায় না, মোক্ষম দিনে মোক্ষম সময়ে এসে পড়েছ।” এরকম মাঝপথে শুরু না করে, গল্পটা শুরুর থেকেই আরম্ভ করা যাক। ... ...
বোল্ডার আর মাটিতে বানানো পোক্ত বাঁধের ডানদিকের কোল বরাবর শালবল্লা গেঁথে সুরক্ষার ব্যবস্থা। নামটা “শাল-বল্লা” ঠিকই, কিন্তু সভ্য মানুষের ভদ্র কামড়ে শালগাছ আর কোথায়? যেটুকু পাওয়া যায় তাও অগ্নিমূল্য। মানুষের বিজ্ঞান আর লোভের গুমোরে প্রকৃতিতে অন্য কারো টিকে থাকার জো আছে? প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে জঙ্গল সাফ হয়ে চলেছে, পাহাড় সাফ হয়ে চলেছে নগর সভ্যতার পাথরে আর কংক্রিটে। আজকাল বিপন্ন পশুপাখিদের জন্যে সুসভ্য মানুষ কেঁদে ভাসায়। অনন্ত লোভে মানুষ যেদিন নিজেদেরই শেষ করবে, সেই দিনই মানুষ পৌঁছবে সভ্যতার চূড়ায়। রিক্ত প্রকৃতি সেদিন হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে।নামে শালবল্লা হলেও, এখন এসব কাজে ইউক্যালিপ্টাসের লগ ব্যবহার করাই দস্তুর। এই গাছ বাড়ে তাড়াতাড়ি, অতএব বনসৃজনের ... ...
পরি বাড়িতে ছিল না, অণুদি সদর দরজা খুলে দিতে, ঢুকতে ঢুকতেই সে অণুদিকে জিগ্যেস করল, “দাদা, কোথায় গো?”অণুদি চোখ উলটে বলল, “আঁদার ঘরে মুখ গুঁজে পড়া করতিসে”। কথাটা শুনেই খুব বিরক্ত হল পরি, জিভে “চুক” আওয়াজ করে, দৌড়ে গেল দাদার ঘরে। অণুদি ঠিকই বলেছে, ঘরের ভেতরটা সত্যিই আধো অন্ধকার। শেষ বিকেলের এই আলোয় বই পড়া চলতে পারে না। অথচ তার মধ্যেই টেবিলে ঘাড় নিচু করে তার দাদা গাব্দা একখানা বই পড়ে চলেছে। পরি খটাস্ শব্দে আলোর সুইচ অন করে, একটু রাগত স্বরেই বলল, “তুই কী রে, দাদা?”পরির ডাকে পরির দাদা, কড়ি জ্ঞানের সমুদ্র থেকে ভুস করে উঠে এল, তারপর শুশুকের ... ...