আশির দশকের বুড়ুদের মফস্বলি ছেলেবেলা, সত্তরের স্বর্ণযুগ আর নব্বইয়ের আধুনিকতার মাঝে "মাতাল হাওয়ারই মত হয়ে, যেতে যেতে পায়ে পায়ে" গেছে জড়িয়ে। উত্তম-সুচিত্রার "ঘুম ঘুম চাঁদ, ঝিকিমিকি তারা, এই মাধবী রাতে"র সাদা-কালো পর্দা ছেড়ে সবে রঙিন পর্দার জগতে উঁকি মারছে। সাদা-কালো পোর্টেবল টিভি আসছে ঘরে ঘরে। একটাই চ্যানেল। বেশীরভাগ সময় সাদা-কালো পোকা ওড়ে শোঁ শোঁ শব্দ করে। "রুকাবট কে লিয়ে খেদ হ্যায়।" তবুও তখন ছুটির দিনের দুপুরের ভাতঘুম কামাই করে বালিশের নীচে 'শ্রীকান্ত'। ... ...
আপনি নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন,স্কুল-কলেজ বাদে অফিস কাছারি, সিনেমাহল, প্রেক্ষাগৃহ সবই একে একে খুলে যাচ্ছে। সন্তানকে স্কুল-কলেজে পাঠানো নিয়ে সমাজ দ্বিধা বিভক্ত হয়েছে। যাঁদের সামর্থ্য আছে, যাঁরা কিঞ্চিৎ সুবিধাজনক অবস্থানে বিরাজ করেন, তাঁরা অনলাইন শিক্ষাকেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন। যাঁদের সামর্থ্য নেই, নিষ্ফল আক্রোশে মাথা কুটে মরলেও শেষমেষ ধার করে হোক, জমি বিক্রি করে হোক, মোবাইলের বন্দোবস্ত করার পরেও, কেউ পাহাড়ের মাথায়, কেউ গাছের উপর চড়ে 'শিক্ষাব্যবস্থা' জারী রাখবার চেষ্টা করছেন। গত দু'দিন আগে বাঁকুড়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবী জানানোর জন্য কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে নন-বেলেবল ধারায় আটক করা হয়েছে। মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের অনলাইন সেমিস্টার পরীক্ষা দিতে লুংলে ও মায়ানমার সীমান্তের সিয়াহায় ছাত্রছাত্রীদের খাতা পেন ... ...
আপনি কিন্তু পারবেন না, স্যার। আপনি হেরে যাবেনই। আপনার সমস্ত ভাগাভাগির চেষ্টা ব্যর্থ হবেই। আসলে আপনি তো জানেনই না এই দেশের, এই উপমহাদেশের আসল চরিত্র। আপনি জানেনই না, ইউরোপ-আমেরিকার কোনো দেশে কোনো ভারতীয়-পাকিস্তানির দেখা হলে তাঁরা কতটা আন্তরিকভাবে "একবার গলে মিলনা হ্যায়, ইয়ার"- বলে থাকেন। বাংলাদেশী ভাই ভারতীয় দিদির কাছ থেকে ট্যাক্সি ভাড়া না নিয়ে, "রেখে দেন আপা, আমার নাম করে কফি খেয়ে নিবেন" বলে থাকেন। টুইটারে '#helpindia' লিখে চাপ সৃষ্টি করা আর এমন কি! গত বছরও আমরা দেখেছি, তিরিশ ঘন্টা পরে সামনে খাবার দেখে কেঁদে ফেলা পরিযায়ী শ্রমিক ছেলেটির পিঠে একটি হাত এসে পড়েছিল ঠিক, "মাত রোও বেটা, পহঁছ যাওগে সহিসালামত। খা লো।" এবারও ... ...
২১শে ফেব্রুয়ারী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ফেসবুকে বড়সড় হ্যাজ নামাব... এঃ! দেখেছ? ফের 'হ্যাজ নামাব'!! আজকের দিনেও? ছিঃ! শেম অন মি... হ্যাঁ, যতই চেষ্টা করি, আমাদের আবেগ-টাবেগ সব এখন হিন্দি কিম্বা ইংরেজিতেই প্রথমে আসে। দরকারে- অদরকারে বাঙালী এখন হিন্দি কিম্বা ইংরেজীতেই গ্ল্যামার খোঁজে। কিন্তু, তাতে দোষের কী? ছেলেপুলেরা হিন্দিতে কথা বলুক, ইংরেজিতে ভাবনাচিন্তা করুক, ফরাসী কায়দায় হাঁচুক-কাশুক, অসুবিধে কী? ভাষাই তো। একটার জায়গায় পাঁচটা শিখলেই-বা ক্ষতি কী? ক্ষতি নেই। কিন্তু, বাংলাটা পড়তে পারাটা যে বড্ড জরুরী। বাংলা সাহিত্যের মত ধনী সাহিত্য খুব কম ভাষায় আছে। আমি নিজে চেষ্টা করে চলি, বাচ্চাদের বাংলা গল্প-উপন্যাস-নাটক পড়ে শোনাতে। সপ্তাহে একটা ক্লাস অফ করেও ওদের দিয়ে কবিতা পড়াতে, নাটক করাতে। ... ...