CD কি? যা DC নয়। তাহলে DC কি? যা AC নয়। তাহলে AC কি CD না CD নয়? এইটা নিয়ে সমস্যা আছে। উপপাদ্য, সম্পাদ্য ইত্যাদি হলে প্রতিপাদ্য বিষয় অন্য হত। কিন্তু কমপ্যাক্ট ডিস্ক সিডি হলে আজ থেকে আনুমানিক পঁচিশ বছর আগে কী ছিল আমার মনে, তা-ই স্বপনপুরের দূরগত অতীতের মতো ভেসে ওঠে। AC, DC কারেন্ট তখন শোনাই যেত, সেই নিয়ে তামাশাও ছিল নানা রকম। AB বললেই মনে পড়ে অনেক স্যার অ্যাটেনডেন্সের খাতায় অনুপস্থিত লিখতেন ওটা দিয়ে। অনেকে ডট দিতেন। আমি এখন ডিজিটাল অ্যাটেনডেন্সে ভরসা করি। BA বললে যা যা মনে হয় তার বয়স তখনও আসেনি। BA করতে পরে যাদবপুরে আসব। ... ...
স্বর্গের রত্নখচিত প্রধান ফটকটি উন্মোচিত করে বিরস বদনে দ্বাররক্ষী একটি গভীর আরমোড়া ভেঙে নিল। নাহ! আর পারা যাচ্ছে না। ভারতভূমির পুণ্যক্ষেত্রে আরব্ধ ভারতযুদ্ধ স্বর্গবাসীর ঘুম কেড়ে নিয়েছে। যুদ্ধ শুরুর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই স্বর্গতঃ বীরগণের ঠেলাঠেলিতে প্রধানদ্বার ভেঙে পড়ার উপক্রম। অথচ প্রথমে পরিকল্পনা অন্যরকম ছিল। আয়োজনের ত্রুটি ছিল না। যুদ্ধ শুরুর খানিক পূর্ব থেকেই স্বর্গদ্বারে তূর্য-ডিন্ডিম-আতোদ্য নিয়ে বাদকরা ছিল প্রস্তুত। বন্দীরা প্রস্তুত রেখেছিল শ্রুতিসুখকর ভাষ্য। স্বর্গীয় বরনারীগণ শোভনদর্শনা হয়ে দ্বারে মঙ্গলশঙ্খ নিয়ে সমাগতা। মান্য দেবগণের নির্বাচিত মণ্ডলী পুষ্পবর্ষণের দায়িত্বে, দেবরাজ ইন্দ্র স্বয়ং আপ্যায়ন করে নেবেন আগত বীরগণকে। শাস্ত্রকারগণ বলে গেছেন, সম্মুখযুদ্ধে নিহত বীর স্বর্গস্থ হবেন। ... ...
গাড়ি থেকে নামতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্যবাহিনীর প্রতিনিধিরা আপ্যায়নে ভরিয়ে দিলেন। বুথে ঢুকে কলারটা একটু ঝেড়ে নিলাম। ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়ার। ম্যাজেস্টিক বিষয়। পাওয়ার এক্সারসাইজ করার জন্য ঝাড়ু আর স্যানিটাইজার নিয়ে একটু কসরত্ করে নিলাম। বসব কোথায়? ঘরের ম্যাজিস্ট্রেট কি দাঁড়িয়ে থাকবে সারারাত? স্কুলে লো বেঞ্চ আছে। হাই বেঞ্চ নেই। কিন্তু একটা চেয়ার না থাকলে তো মুশকিল। ছাত্র বেঞ্চে বসলে কি শিক্ষক মাটিতে বসেন? ... ...
রত্নাকর অনন্ত সম্পদে চিরকাঙ্ক্ষিত, সাগরের টানে টানে কত কত যে হৃদয় পাগলপারা হয়! কালিদাস রঘুবংশমের প্রারম্ভে বলছেন, সুমহান রঘুবংশ প্রায় দুষ্প্রবেশ্য, বুদ্ধি আর জ্ঞানের সূক্ষ্মতায় তাকে উপলব্ধি করতে হয়। সেই বংশভূত খ্যাতনামা নৃপতিরা সাগরের মতই ক্ষেত্রবিশেষে করাল ও চির আকর্ষণীয়। তাই তো কালিদাসের মতো কবিরা তাঁদের মায়ায় বাঁধেন বারবার। রত্নাকর বনের পথে ইতস্ততঃ ঘোরাফেরা করছিল। হাতে শাণিত দাত্র। জঙ্গল এখানে ঘন, নিবিড়। ঘনায়মান অন্ধকার ছেয়ে ফেলছে বনভূমি। ক্রমে ক্রমে জেগে উঠবে অন্ধ তমিস্রা। তমঃ। মানুষের অন্তঃকরণের মতই যেন দুষ্প্রবেশ্য এই অরণ্য। এখানে একস্থানে পোঁতা আছে লুঠের ভার। ভূমির গভীরে সুপ্ত আছে মাণিক্যের দীপ্তি। ... ...
সুবর্ণলতা জীবনে বেশী কিছু চায়নি। একটা বারান্দা, দখিন খোলা বারান্দায় খানিক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বহমান জীবনকে চেয়ে চেয়ে দেখবে। কিছু চাওয়া থাকে, ভাত-কাপড়ের প্রয়োজনের বাইরে সেগুলো। মৌলিক প্রয়োজনের বাইরে যাদের চাওয়ার কিছু থাকে না, বাধ্যতঃ যারা জীবনের দাবির বাইরে আর কিছু চাইতে পারে না বা জানে না, সুবর্ণলতার চাওয়া-না চাওয়া তাদের কাছে খানিক বেশী বেশী মনে হয়। তাকে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়তে হয় না, তার লড়াই নিজের সঙ্গে, পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে। ... ...
নচিকেতা অনেকক্ষণ ধরেই খেয়াল করছিল ব্যাপারটা। ছোট ছেলে, কিন্ত কী টনটনে জ্ঞান তার। অনুভূতির সূক্ষতায় বুঝে নিয়েছিল, এটা ভাল দেখায় না। ঋগ্বেদে দানের প্রশংসা করে এত কথা বলেছে, আর এখানে কী না এই! কী অন্যায় কথা। ... ...
আমি উত্তমকুমারকে দেখিনি। সত্যজিৎ রায়কেও দেখিনি। একজন আমার জন্মের অনেক আগে, আরেকজন কয়েক বছর পরে প্রয়াত হন। আমার ছোটবেলার খুব উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা ছিল সত্যজিতের প্রয়াণ, রাজীব গান্ধীর হত্যা এবং বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা। প্রথম দুটি ঘটনার সময় আমার এক নিকটাত্মীয় প্রয়াত হন, তখন আমি নিতান্তই ছেলেমানুষ। বিশেষ করে রাজীব গান্ধীর ঘটনাটি মনে আছে। তখন সাদাকালো টিভির দৃশ্য মনে বরাবরের মত দাগ কেটে গেছে।সত্যজিতের ছবির সঙ্গে পরিচয় আমার ছোটবেলাতেই ঘটেছিল। কিন্তু তাকে উপলব্ধি করতে পেরেছি নিশ্চিতভাবেই, অনেক পরে। টিভি বস্তুটি যেহেতু আজন্মই দেখার সুযোগ হয়েছে, ... ...