এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • রাষ্ট্র, রাজনীতি, প্রতিষ্ঠান, ক্রিয়েটিভিটি ইত্যাদি

    সৈকত
    অন্যান্য | ১০ জুন ২০১৯ | ৬৬৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:২৯383568
  • বোধিঃ
    ========

    দমু/সৈকত, আবুল বাশার, জয়দেব বসু, ভগীরথ মিশ্রের একটা অদ্ভুত ট্রাজেকটরি আগে লক্ষ্য করেছিলাম, কিন্তু অসীম দার কাজের উপরে প্রবন্ধ টা লেখার সময়ে সেটা আরেকবার মনে পড়ে খানিকটা মজাই লেগেছিল।

    মূলতঃ বাম / ডান, বাঙালি ন্যাশনালিস্ট বনাম বাম এই টা ফল্ট লাইন হলেও, এটার নানা স্ট্র্যান্ড একে অন্যকে জড়িয়ে ছিল।

    কোন সময়টা আনন্দ পাবলিশার এর ইন্টেলেকচুয়াল প্রতিষ্ঠান হিসেবে লেজিটিমেসির চুড়ান্ত কনসোলিডেশন এর সময়ের শুরু সেটা নিয়ে একটা বিতর্ক আছে। সমরেশ বসু ফাইনালি স্টেবল এ এলেন সে সময় থেকে নাকি বাংলাদেশ যুদ্ধের পর থেকে? আমার ব্যক্তিগত মত, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের পরের সময়টা থেকে, কারণ তার আগে পর্যন্ত আবাপ র মধ্যে মোনোপোলিস্টিক টেন্ডেন্সি অপেক্ষাকৃত কম, যেটা আবার ৯০ এর দশকের পরে নতুন রিফর্ম হচ্ছে, ব্রডশীট, টেলিভিশন ইত্যাদি ফর্ম আসছে। যাই হোক, নব্বই এর মাঝা মাঝি থেকে একটা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে, বাজারে বিশ্বায়ন, গণশক্তি/নন্দন স্টেবল এবং আনন্দ স্টেবল এর মধ্যে ব্যক্তি র আনাগোনা আরো ফ্লেক্সিবল হচ্ছে, এটার একটা কারণ হতে পারে লোকের নতুন অ্যাসপিরেশন আসছে অন্যদিকে হতে পারে, লোকে মনে করছে, আর রাজনৈতিক ডিবেট এর অবশিষ্ট কিছু নেই। সেটা ভালো করে এভিডেন্স না পেলে বলা মুশকিল। কিন্তু বেসিকালি যেটা হচ্ছে, একদিকে আজীবন বামপন্থী ভগীরথ মিশ্র বড় সিরিয়ালাইজ্ড লেখা লিখছেন, আবুল বাশার ও লিখছেন, জয়দেব দা (শান্তিনিকেতন পাঠভাবন সূত্রে) ও কবিতা দিয়ে শুরু করে তার পরে ইয়ুথ থিমের একটা গোছের উপন্যাস লিখছে। অনেক দিন ধরেই আমাদের অভ্যেস ছিল, বাবা দের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া, শারদীয় দেশ এমনিতে পড়া হত না, প্রতিবাদে নন্দন পড়া হত, কিন্তু প্রথমটা কারো বাড়িতে থাকলে, উংকি পেরে সুভাষ মুখোপাধ্যায় এর কবিতাটি দেখে নেওয়া হত, আর ঠিক সেভাবেই, উল্টো শিবির চকিতে দেখে নিত, শারদীয় গণশক্তি বা নন্দনে, নীরেন বাবু কি কবিতা দিলেন, কাকে বড় দিলেন কাকে ছোটো দিলেন। জয়দেব দার যখন লেখা বেরোলো, দীর্ঘ কবিতা, আমরা কান্তো জেনেরাল এর প্রভাব লক্ষ্য করলাম, একেবার আর্লি নাইন্টিজ হবে, আর মন খারাপ হল , দেশ কবিতা পেল বলে। আর দেখছিলাম রেটোরিকাল লেখা সর্বত্রই লিখছে, তাই খানিকটা শান্তি পেলাম। এবং এই সময় টাতেই অসীম দা কিছু পত্রিকা তে রবি বার করে গল্প লেখার সুযোগ পেল, তাতে আমাদের মন খারাপ বাড়লো, কিন্তু আমরা এও দেখলাম, শারদীয় নন্দন অসীম দার সেরা লেখা গুলো পাচ্ছে। অতএব পাওয়ার হায়ারর্কি টা যেটা হল, কলকাতা যাদবপুর লিবেরেলে বামপন্থী অল্প বয়সী পড়ুয়া দের অ্যাড্রেস করতে আনন্দ পেলেন জয়দেব দা কে, আর জেলায় প্রতিভা খোঁজার নতুন উদ্যোগে নন্দনের পাওয়ার সেন্টার খুঁজে পেল অসীম দা কে। ইতমধ্যে আবুল বাশার ফুল বউ নিয়ে এলেন, এবং মূল বিষয় টা হল গ্রামে সিপিএম এর পাটোয়ার ছোটো নেতা দের কে নিয়ে সমস্যা উপন্যাসের বিষয় হলে, বা খাদান এ ট্রেড ইউনিয়নিজম টাই সমস্যা হলে বা অন্তত ব্যর্থ সমাধান প্রচেষ্টা হলে জায়গা পেতে অসুবিধে হচ্ছে না।

    নন্দীগ্রাম পরবর্তী পর্বে, বাশার বুদ্ধ বাবুর নতুন ফ্যান হয়ে ওঠেন, সম্ভবত রংগনাথ মিশ্র কমিশন প্রসঙ্গে থিয়োরেটিকাল লেখা লিখেও, বাম অবস্থান কে সমর্থন করলেন, ভগীরথ মিশ্র রেটোরিক অন্তত বড় মঞ্চে করা থেকে বিরত থাকলেন, মূলত শিল্পটা করাতেই ব্যস্ত থাকলেন, জয়দেব দা যে আমাদের অনেক কেই লেখা পড়া করতে শিখিয়েছিল, তৈরী হাত নিয়ে এসেছিল, হঠাৎঅ চলে গেল, অসীম দা লেখা প্র্যাকটিকালি ছেড়ে দিল। বাশার কাজ করে চলেছেন। একটা রাইটার কখনো ভালো লিখবে কখনো খারাপ লিখবে সেরকম চলছে।

    ফানি থিং ইজ, এই ছোটো সাইড স্টোরি টা, সাহিত্য জগতের সেই আমলের ক্ষমতার বিন্যাসের গল্প যখন টিভি অ্যাপিয়ারেন্স জিনিসটা গুরুত্ত্বপূর্ণ হয় নি, আর স্টেবল জিনিস্টা প্রথম বাজার দ্বারা প্রভাবিত হতে আরম্ভ করেছিল এবং বাংআলি সাংবাদিকতার রাজনৈতিক মতাদর্শের ঐতিহ্য থেকে সরে সরে আসছিল, এবং পার্সোনালি একজন লেহক কখন কি করবে তার ব্যাপার, সরকারের সঙ্গে থাকবে না সেটাই স্বাভাবিক, এবং থাকলে বিশেষ পরিস্থিতিতে থাকবে সেটাও স্বাভাবিক, বিষয়/ফর্ম নিজের মত একেকটা ইনটেলেকচুয়াল ডিসকভারি তে বেছে নেবে সেটা স্বাভাবিক, কিন্তু যেটা লক্ষ্যনীয়, সত্তরের দশক থেকে আজ অব্দি , শহরের বাইরের প্রতিভা , শহুরে পাওয়ার সেন্টার এর আশীর্ব্বাদ না পেলে আত্মপ্রকাশ এখনো প্রায় অসম্ভব। একেবারে যে বদলায় নি তা না, নানা রকম কাজ তো হচ্ছে, নন ফিকশনে বেশি, ফিকশনে পাছি না, কবিতার খবর সেভাবে রাখা হয় না, আর কবিতা সত্যি বলতে কি, মোটামুটি যা দাঁড়িয়েছে, বড় শহর ছাড়া কবিতার চর্চা ক্রমশ ভোগে।

    এই সব মনে পড়ল।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৩০383580
  • সৈকতঃ
    ======

    আমি যেভাবে দেখি, সেটা হল এই তর্কটা সাহিত্যে এস্টাবলিশমেন্ট, তার প্রভাব আর অন্যদিকে একজন লেখকের লেখা ছাপাবার অন্তত একটা কাগজ চাই, তার দ্বন্দ। এটা আজকের সমস্যা নয়, মাণিকবাবুর ক্ষেত্রেই বোঝা গেছিল, ডায়েরী পড়লেই দেখা যায়, যে প্রকাশক ওনার একটা উপন্যাস ছাপিয়ে আর ছাপাচ্ছে না, কারণ বিভিন্ন জায়্গা থেকে চাপ আসছে, ফলতঃ লেখা ছাপাবার জায়্গা ঢের কমে আসছে। অনেক বেশী করে এই দ্বন্দ্টা সত্যি হয় জীবনানন্দের ক্ষেত্রে, মাণিকবাবুর তবু পরিছয় পত্রিকা ছিল, জীবনানন্দের পূর্বাশা, কবিতা ইত্যাদি পত্রিকা থাকছে কিন্তু খুব একটা স্থায়ী হচ্ছে না, গদ্য ছাপাবার কথা তো ভাবাই যাচ্ছে না।

    তো এই ব্যাপারটা পঞ্চাশের কবি-লেখকদের কাছে খুব বেশী করে জানা ছিল, সেইজন্য নিজেদেরই পত্রিকা, নিজেদেরই আন্দোলোন আর নিজের মধ্যেই লেখার সমালোচনা। ঐসব করে উপায় ছিল না, কারণ সাহিত্যের এস্টাবলিশ্মেন্ট তখন প্রায় পুরোমাত্রায় তৈরী হয়ে গেছে, সাক্ষরতা বেড়েছে, ফলে যেসব পত্রিকা/প্রকাশনা লোকেদের কাছে তাড়াতাড়ি পৌছতে পারছে, ব্যবসার বিবিধ উপায়ের মাধ্যমে, তারাই সফল হচ্ছে। ক্রমশঃ দেশানন্দ মূল এস্টাবলিশমেন্ট হয়ে উঠল, কিছু ক্ষমতাবান লেখকদের দলে নিল, ঐ পঞ্চাশের লেখকদের থেকেই, ব্যবসা আর ডিস্ট্রিবিউশনে ভাল করল, আবারও সাক্ষরতা বৃদ্ধি পাওয়া একটা রোল প্লে করল মনএ হয়। কিন্তু পাল্টা হিসেবে, ছোট কিছু এস্টাবলিশমেন্টও তৈরী হল, যেমন আশির দশকে আজকাল, যারা আনন্দ থেকে বাদ পড়ে গেল, তারা ওখানে গেল বা প্রতিক্ষণ, অল্প কয়েকদিন চলে বন্ধ হয়ে গেল, অন্তত অল্প কিছুঅদিনের জন্য কিছু লেখক লেখার কাগজ পেলেন। খুব যে সাহিত্যের ধারা তৈরীতে এদের উৎসাহ ছিল, সেরকম না, কিন্তু কিছু লেখকদের লেখার সুবিধে করে দেওয়ার একটা দিক ছিলই বলে মনে হয়। এর পাশাপাশি কেউ কেউ থাকছেন যারা কোন গোষ্ঠীরই সাথে পুরোপুরি মিশছেন না, যেমন অমিয়ভূষন বা মহাশ্বেতা কিছুটা, অমিয়ভূষনের লেখা আনতে বারোমাসের সম্পাদক কোচবিহার যাছেন, আনন্দের সেরকম ইচ্ছে নেই, হয়ত অনেক আগে সতীনাথের লেখা আনতে পূর্ণিয়া গেছিলেন। ফলে সদর্থে, সাহিত্যের এস্টাবলিশমেন্ট আর গড়ে উঠছে না, সবারই কিছু না কিছু উদ্দেশ্য থাকছে বা ক্ষমতারও অভাব থাকছে। ছোট কিছু পাবলিশার আসছে, রক্তকরবী বা প্রমা (নবারুণের হারবার্ট সেখানেই ছাপা হচ্ছে, বইও হচ্ছে সেখান থেকে, সেই কবে), নবারুণ নিজে প্রকাশনা করছেন (সুভাষ ঘোষালের প্রথম উপন্যাস ছাপাচ্ছেন, সেন্সিবিলিটির দিক দিয়ে যিনি নবারুণের বিপরীতে, হয়ত বন্ধুকৃত্যই করছেন)।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৩০383579
  • বোধিঃ
    =========

    আসলে এটা পার্সোনাল ট্রাজেকটরি ই না। এটা একটা সময়ের অভিঘাত। ভগীরথ মিশ্রের প্রায় এক ই থিমে লেখা টিলা, অসীম দা, ৯০ এর দশকে লিখেও ছাপতে দিচ্ছে ২০১২ ১৩ নাগাদ, এটা ওর নিজের স্ট্রাগল, এবং সেটাও সময় সম্পর্কে নিজের প্রতিক্রিয়া, এ কিসু করার নেই। এটা তে প্রতিষ্ঠানের কিসু করার নেই, যেটা দুঃখের, মতাদর্শের ভিত্তিতে ফল্ট লাইন, আর রাশ্ট্রের প্রশাসন চালানোর জন্য করা এলাকা বিভাজন, সদর জেলা রাজধানী ইত্যাদি, কি ভাবে বাজার ও অেস্স এর বিন্যাস কে প্রভাবিত করে ভাবা যায় না, ইট ইজ নো মোর অ্যান ইন্ডিভিজুয়াল চয়েস দেন। এবার মজাটা হল মুক্তি তাইলে কোথায়, মুক্তি র একটা পদ্ধতি আদর্শ গণতন্ত্র, ইকুয়াল অপরচুনিটি, আরেকটি হল ব্যাপক নগরায়ন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই দ্বিতীয়টি ই হচ্ছে। শান্তিনিকেতন সিউড়ি তে লোকাল পাবলিশার দের বেছে নিচ্ছেন অনেক লোক, কারণ তাঁরা মনেই করছেন না, এরিয়া র বাইরে তাঁদের বিষয়ে কেউ আগ্রহ পাবে, আর স্থানীয় একটা বাজার ও তৈরী হয়েছে, যদিও ক্ষুদ্র। প্লাস বদান্যতার জ্বালা থেকে মুক্তি চাইছেন সেটাও হতে পারে। ইত্যাদি, অথবা এসব কিসুই না , যে যেখানে পারছে ছাপাচ্ছে, টেকনোলোজি খরচ কে কমিয়ে ছে, ডিস্ট্রিবিউশন কে কিছুটা সোজা করেছে, বিজ্ঞাপন কেও নিখরচা করেছে , এবং একটা ব্যাপারে নিশ্চিত কেউ ই কিসু পড়ছে না, ঃ-)))))) খ
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৩১383581
  • সৈকতঃ
    =======

    যেটা হচ্ছ্হ, যে একটি পত্রিকা পড়লে বা একটি প্রকাশনা থেকে বই কিনলে, বা তারাই সাহিত্যের প্রধান ধারা সে ব্যাপারটা থাকছে না। ভালই হচ্ছে না থেকে - যখন কিনা নব্বইয়ের দশক থেকেই, দেশ বলছে যে সাহিত্য আর কেউ পড়ে না, ফলে সাহিত্য পত্রিকা সাপ্তাহিক থেকে পাক্ষিক হয়ে মাসিক পত্রিকায় (এখন মাসিক তো ?) পরিণত হয়, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সে ভর্তি হচ্ছে - অজস্র ছোট পত্রিকা বা প্রকাশনা তৈরী হচ্ছে, টেকনোলজির সুবিধের জন্যই, উঠেও যাচ্ছে হয়ত, যেখানে বিবিধ জায়গা থেকে, মূল কলকাতার বাইরে থেকে, সে লেখকের বাসস্থান হোক বা লেখার বিষয় হোক, লেখা ছাপা হচ্ছে। এতে পাঠকদের অসুবিধে হচ্ছে, অত সহজে কোথায় কী লেখা হচ্ছে সেটা ঠাহর হচ্ছে না। সাদিক হোসেনের লেখা বা হামিরুদ্দিন মিদ্যার গল্প বা ইভেন রাঘববাবুর বা রবিশংকর বলের লেখাপত্তরও একটা পর্যায় পর্যন্ত খুঁজেপেতে পড়তে হচ্ছে, অত সহজে আর বলা যাচ্ছে না যে হ্যা, বাংলা ভাষার লেখালেখি যা হচ্ছে, তার অনেকটাই জানা আছে।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৩৩383583
  • সৈকতঃ
    ======

    আরও ক'টা কথা -

    হারবার্ট প্রকাশের পরে, আখ্যান নামে একটি পত্রিকার একটি সংখ্যা হাতে এসেছিল, ঐ উপন্যাসকে নিয়ে। নবারুণের সমসাময়িকদের লেখা উপন্যাসটিকে নিয়ে আর দেবেশ রায়ের নেওয়া নবারুণের সাক্ষাতকার, এই নিয়ে সংখ্যাটি। তো ঐ সাক্ষাতবারে নবারুণ বলেছিলেন, যে আশির দশক পর্যন্ত মনে করা যেত যে মানুষকে কোথাও নিয়ে যাওয়া যাবে, শেষ পর্যন্ত রাশিয়া ভেঙ্গে পড়ার পরে যে শোক, সেই শোক থেকে হারবার্ট লেখা হয়েছিল। লক্ষ্য করার যে হারবার্টের একশো পাতার টেকস্টে সময়কালটা অনেক বড়, কিন্তু পরে নবারুণই আর বড় সময়কালে ফিরে যাননি, এক-আধটা উপন্যাসের আকার যদিও বড়। বলার যে ন্যারেটিভটি ভেঙে গেছে, অনেকদিনই গেছে আর তজ্জনিত শোকও আর নেই, ফলতঃ দেশ/কাল জুড়ে লেখা আর বিশেষ হবে না বলেই মনে হয়। এটা ভাবা অনর্থক যে হাঁসুলিবাঁকের মত উপন্যাস আর লেখা হবে, কারন সমাজ আর মানুষের মন সম্পূর্ণ বদলে গেছে, মানে ঐরকম সামন্ত্রতন্ত্র থেকে ধনতন্ত্র, তার দ্বন্দ আর হতাশা, এগুলো তো একটা পর্যায়ের গল্প, মানুষের দেখারই ধরণ, হয়ত কাছ থেকেই বা ধর ভগীরথ মিশ্ররই মৃগয়া, সেও তো বড় সময় জুড়ে লেখা, যা সময়ের দূরত্ব দূর থেকে দেখা, সমাজ-ইতিহাসের বড় সব পরিবর্তন, আই ডাউট যে আদৌ ঐরকম লেখা আর সম্ভব কিনা। ফলে কালজয়ী সাহিত্য বলে যদি এরকম লেখা ভাবি, তাহলে, নাঃ আমার সেরকম আশা নেই, ইভেন দরকারও নেই আমার কাছে।

    অন্যদিকে, হ্যাঁ, এটা ঠিকই যে সবকিছু লেখকের হাতে নেই, কোনকালেই ছিল না, কোথায় লিখবে বা লেখার সুযোগ পাবে, সেরকম আর তার নিজের চয়েসে নেই। কিন্তু তুমি লেখার জগতে গণতন্ত্রের কথা বলছিলে। হ্যাঁ, বড় পত্রিকা/প্রকাশনায় হয়ত সেই জিনিসটা নেই, কিন্তু আমার ইন্টারেস্টিং লাগে , বিভিন্ন ছোট প্রকাশনার উপস্থিতি, এটা যেন মাটির ওপর দিয়ে আনুভুমিকভাবে লেখার জগতে গনতন্ত্র আসা, উল্লম্বভাবে এক/একাধিক গোষ্ঠীর মাধ্যমে কিছু একটা বহুতল তৈরী হওয়ার বদলে !! এবং এইসব পত্রিকা বা প্রকাশনা মারফত আকারে বড় উপন্যাস ছাপানো সম্ভব না, কারণ পত্রিকগুলি নিয়মিত নয় বা বড় লেখা ছাপবার রিস্ক নিতে চাইবে না, কারণ পুঁজি কম, কিন্তু সেটাই হয়ত সুযোগ লেখকদের ক্ষমতা জাহির করার (ঐ যে আগের দিন বলেছিলাম ১২০ পাতার উপন্যাস)। যেটা ছোট পত্রিকাগুলি করতে পারে, সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও, যে অন্তত উপন্যাস লেখার জন্য কিছু পাতার সংস্থান রাখা।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৩৩383582
  • দঃ
    ===

    হামিরুদ্দিন মিদ্যা - সৃষ্টিসুখ থেকে গল্পের বই যেটা বেরিয়েচে, কয়েকটা গল্প দুর্দান্ত। কিন্তু পুরো বৈট পড়তে একটু একঘেয়ে মত লাগে। দেখা যাক ভবিষ্যতে কী লেখেন।

    সৈকত, সোন্মাত্রানন্দকে নিয়ে কিছু বলবে? আমি ঐ একটাই পড়েছি। কিন্তু তিনতে বিভিন্ন সময়ের গল্পকে একসাথে বোনা, তিনরকম ভাষার ব্যবহার (দুই এক জায়গায় স্লাইট সমস্যা আছে যদিও) এইটা চমৎকার লেগেছে।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৩৪383584
  • বোধিঃ
    ======

    সৈকত, আমি আসলে যে ভাবে ভাবছি, তাতে একটা প্যাটার্ন পাচ্ছি। সেটা হল লেখালিখির মোটিভেশন টা তো থাকছে, কিন্তু মতাদর্শ জিনিশটা ওভারল প্রক্ষিপ্ত হয়ে যাচ্চ্ছে, এবং সেটা শুধু রাজনৈতিক মতাদর্শের বেলাতেই না, সামাজিক মতাদর্শের বেলাতেও হচ্ছে, এই বাজারে লেপ্ট লিবেরেল দের বাড়ার কথা, কিন্তু তা না হয়ে কমছে। আমি ভাবার চেষ্টা যেটা করছি, রাফলি যেটা মনে হচ্ছে, রাজনৈতিক মতাদর্শ টা কে রাষ্ট্রের মতাদর্শ রিপ্লেস করছে। এটা আর শিক্ষিত মানুষের চয়েস থাকছে না। এটা অনেকদিন ধরেই হচ্ছে, কখন প্রকট হচ্ছে আলাদা করে বলা মুশকিল, কিন্তু আমি লেখা লিখির ক্ষেত্রে, বাংলায়, এটা ৯০ দশক পরবর্তী সময়ে দেখছি। একটা উদা দেই, ধরো দীপেন বন্দ্যো। পাওয়ারফুল স্টাফ, কিন্তু আমার মতে স্ট্রেট কনজারভেটিভ, এবং সেটা সামাজিক এবং চোজেন রাজনৈতিক মতাদর্শ কে কোন টাকে প্রভাবিত বেশি করছে বলা মুশকিল, কিন্তু ঘটনাটা হচ্ছে, রাজনৈতিক ভাবে র‌্যাডিকাল হলেও, মূল্যবোধে বেশ কনজারভেটিভ থাকছেন, যদিও দেখা টা যেহেতু ডিটেলে, তাই সত্যের অপলাপ কিসু করছেন না, রিয়েলিজম এর ট্রেনিং ও রয়েছে। এই লেখক ই ধরো বামপন্থী ভ্যালুজ নিয়ে যদি ৯০ বা দুহাজারের পরে লিখতেন, আই অ্যাম শিয়োর আর্বান স্পেস কে শুধুই বাধ্যতামূলক সংস্থান হিসেবে দেখতেন না, মেল্টিং পট হিসেবে দেখতেন। এখন এটার সবটাই যে ঠিক ঠাক তা না, কারণ বাজার রয়েছে, বাজার মানুষ কে চয়েস দিচ্ছে, কিন্তু তার পূর্ব শর্ত হিসেবে রয়েছে ক্রমশ তর্কহীন হয়ে ওঠা রাষ্ট্রীয় মতাদর্শ, যেটা ধরো ইন্ডিভিজুয়াল কে এমপাওয়ার করলেও, মূলত কনজিউমার হিসেবে করছে। আমি যেটা এতক্ষন বলছিলাম, সেটা এই প্রসেস টার পার্ট বলে মনে হচ্ছে আপাতত। এর সঙ্গে ত্রিশের দশক আর মুদ্রন সংস্কৃতি তে , জাতীয়তাবাদ থেকে ক্রিটিকাল রাজনৈতিক মতাদর্শ বা তার প্রতিক্রিয়া এবং অবশেষে মূলত আত্মপ্রকাশেচ্ছা র একটা যাত্রা আছে, তবে বড় করে যত দেখবো, আমার বড় গল্পে ততই এক্সসেপশন লাগাতে হবে , কিন্তু তাই বলে থ্যাওরি করবো না তাই কখনো হয়, তাছাড়া এমন মাল এর হাতে পড়েছি, কিছুতেই ডিবাগ করতে পারছি না ঃ-))))))
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৩৬383585
  • সৈকতঃ
    ======

    দ, হ্যাঁ, সৃষ্টিসুখেরই বই। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর দৈনন্দিন হয়ত ওনার লেখায় এখনও বেশী আসছে, সেটাই স্বাভাবিক, কিন্তু জোর করে লেখার পরিধি বাড়াতে গেলে, 'বড়' কিছু লিখব ভাবলে, উল্টো ফল হয়ে যেতে আরে।

    আর সন্মাত্রানন্দর লেখা আমি পড়িনি, তোমরাই এখানে যা লেখালেখি করেছ, তার ভিত্তিতে ধারনা করেছি। তবে দুটো কথা বলার। ইন জেনারেল, উপন্যাসের মাধ্যমে ইতিহাসে চলে যাওয়াটাতে আমার আপত্তি আছে, তথাকথিত ঐতিহাসিক উপন্যাসে। মনে হয়, লেখক পিছু হঠলেন বর্তমান থেকে, যদি না ইতিহাসকে ব্যবহার করে বর্তমানের প্রতি কমেন্ট করেন। আর দ্বিতীয় কথাটি হল, বর্তমানে দাঁড়িয়ে যে আর দেশকাল নিয়ে বড় কিছু লেখা যাচ্ছে না, তার পরিবর্তে কেউ হয়ত ইতিহাসে আশ্রয় নিচ্ছেন, বিশেষ করে তখনই যখন বাঙালীর ইতিহাসটিও, ন্যারেটিভগুলিও ভেঙ্গে ভেঙে পড়ছে। কিছু যেন ছিল, কিছু হওয়ারও ছিল, সেটা আর হচ্ছে না বা হবে না, সেই জায়গা থেকে হয়ত অতীতমুখী হওয়া। তবে, এসবই ওনার লেখা না পড়ে বলা।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৩৭383586
  • S:

    লিবারিলিজম ব্যাপরাটা বাঙালী ইন্টেলেকচুয়াল সমাজ কি আদৌ কোনওদিনও ঠিক করে বুঝতে পেরেছে? সন্দেহ আছে।

    আর দুনিয়াজুড়ে কমিউনিকেশন বাড়ার পরে এইযে কথায় কথায় আম্রিগা/পস্চিমী সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের ভুত দেখিয়ে মেটিরিয়াল তৈরী করা হতো সেটার প্রাসঙ্গিকতা অনেক কমে গেছে। ৯০এর পরে এইসব দেশে লেফট লিবারিলিজমের যে বান এসেছে সেটা সবাই দেখতেই পাচ্ছে। উল্টে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক অপ্রিয় সত্য সামনে এসে গেছে। ফলে সাদা-কালো দেখানোর খেলাটায় সমস্যা তৈরী হয়েছে।

    টেকনলজিরও একটা বিশাল রোল আছে। প্রথমতঃ বিগত ২০-৩০ বছরে যেধরনের টেক তৈরী হয়েছে সেটা আগের হিস্টরিকাল কন্টিনিউটিতে বিশাল ধাক্কা দিয়েছে। আর এই প্রথম বড়লোক দেশগুলোর পকেট থেকে বেড়িয়ে টেকনলজির যে দুনিয়াজোড়া প্রসার ঘটেছে, সেটা আগে কখনও ঘটেনি। ফলে পুরোনো লেফ্ট ন্যারেটিভ ক্রমশই ইরিলেভ্যান্ট হয়ে পড়ছে।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৩৮383569
  • সৈকতঃ

    খ, উদাহরণ দিয়ে দেখাও, দীপেন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোন জায়্গাটা কনজার্ভেটিভ । তোমার বক্তব্যটা বোঝার জন্য বলছি। আর আমাদের দেশে, বামপন্থী লেখকের কন্ট্রাডিকশন থাকবেই, রাজনৈতিকভাবে র‌্যাডিকাল আর কিছু ক্ষেত্রে কনজার্ভেটিভ। আর তদুপরি উনি তো সিপিআই। ঃ-)
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৩৯383570
  • বোধিঃ

    আসলে মতাদর্শ শব্দটা স্ট্যান্ডার্ড ইউসেজ ধরে কথা বলা হয়েছে, এ বিষয় লিটেরেচার(সাধারণ অর্থে) প্রচুর আছে, শব্দার্থ নিয়ে এই মুহুর্তে এনগেজ করছি না।

    সৈকত, হ্যাঁ ঠিকাছে। কয়েকটা উদা মনে পড়ছে, কিন্তু দেখে নিয়ে আরো কনফার্ম করে বলছি। নবারুণ যেটা বলছেন, এটা সাক্ষাৎঅকারে কয়েক জায়গাতেই বলেছেন, নাকি ব্যক্তিগত ভাবে কোথাও কখনো বলেছেন মনে পড়ছে না, কিন্তু এ জাতীয় কথা নান কনটেক্স্টে বলা খুব ই সম্ভব। সোভিয়েতের পতন টা কে কাথারটিক এক্সপেরিয়েন্স হিসেবে দেখছেন, সেটা আমিও অনেক সময়ে দেখি, কিন্তু সেটা রাষ্ট্রের চেহার সম্পর্কে বিতর্কহীন তা এর এখনকার পর্যায় কে বোঝার জন্য যথেষ্ট কিনা আমার সন্দেহ আছে। কেন আছে বলতে গেলে আবার দু প্যারা লিখতে হবে ঃ-(( খ
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৪০383572
  • বোধিঃ
    =====

    কন্ট্রাডিকশন তো থাকবেই, লিখতে গেলে ফাইনাল সলিউশন নিয়ে লেখা মুশকিল। , যদিও কল্প জগতে ফাইনাল সলিউশন অপেক্ষাকৃত সহজলভ্য।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৪০383571
  • সৈকতঃ
    =======

    বোধি বিভিন্ন জিনিস মনে পড়িয়ে দিচ্ছে !!

    ধর দীপেন বন্দ্যোপাধ্যায়ই, তাঁর তো লেখার কাগজ বলতে ছিল মূলতঃ দুটো, পরিচয় আর কালান্তর।তো ঘাম নামে যে গল্পটা, বিষ্টুচরন নামে চরিত্রটি, কমদামী শ্রমিক যে, বস্তিতেই থাকে তো, তার গল্প। তার সঙ্গিনী আর শরীর আর যৌনতার গল্প। তুমি যে মেল্টিং পটের গল্প বলছ, মনে হয় অল্প হলেও সেটা ঐ গল্পে আছে, অনেক চরিত্রের মধ্যে দিয়ে হয়ত নেই, কিন্তু বিষ্টুচরণের চিন্তা-ভাবনা আর অভিজ্ঞ্তার মধ্যে দিয়ে। এখন এই গল্প তো শ্রমেরই গল্প কিন্তু পরিচয়তে বেরোবার পরে তো দীপেনকে পার্টি অফিসে যেতে হয়েছিল, দেবেশ রায়ও সাথে ছিলেন। যাওয়ার কারণ যে, পরিচয় যেহেতু পার্টির কাগজ, অতএব ঐরকম লেখা কেন পরিচয়তে লেখা হয়েছে, তার কৈফিয়ত দিতে হবে ! জ্যোতি বসু ছিলেন আর কেউ কেউ ছিলেন। ঘটনাটি নিয়ে দেবেশ রায়ের লেখা পড়লে বোঝা যায়, জ্যোতিঅবাবুই মনে হয় কিঞ্চিত উদার মনোভাব নিয়েছিলেন যে, ওসব কিছু নয়, শিল্প-সাহিত্যে ওরকম হয় ইত্যাদি। তো বলার কথা এই যে কনজার্ভেটিভ মনোভাব বিভিন্ন জায়্গা থেকে আসছে বা তৈরী হয়, রাজনৈতিকভাবে যে পত্রিকা নিজেকে ভ্যানগার্ড ভাবছে সেই পত্রিকাই লেখককে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য করছে। হয়ত ভাবছে, অন্য সামজিক/রাজনৈতিক শক্তিগুলি ঐ পত্রিকা এবং বামপন্থী রাজনীতিকে দায়ী করবে, নাম খারাপ করবে। এখন, দেবেশ-দীপেনকে এই পজিশনের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে, দেবেশ রায়ের কথামত যা রক্তক্ষয়ী। বা ধর, দেবেশ রায়ই, অনেক পরে, আত্মজীবনীমূলক যে লেখাটি, 'জলের মিনার জাগাও' সেখানে তো লিখবেন যে যৌনতার কথা, ছোটবেলা থেকে বোধপ্রাপ্ত যৌনতার কথা লিখতে পারেননি, কোনোদিন হয়ত লিখবেন। কেন পারেননি, সেটা স্পষ্ট করেননি, হয়ত নিজের রাজনীতি আর অন্য নিষেধের জন্যই, নিজের মধ্যবিত্ত অবস্থানের জন্যই যদিও দেখা যাচ্ছে, গল্প সমগ্রর দ্বিতীয় খন্ডটা উৎসর্গ করছেন সন্দীপনের উদ্দেশ্যে, যৌনতা যার লেখায় থরথর করছে !!

    (এটা তোমার আগের পোস্টের উত্তর কদাপি নয়, মতাদর্শজনিত সাংঘাত ইত্যাদি সংক্রান্ত, হয়ত বা অপ্রাসঙ্গিক। কিন্তু অপ্রসঙ্গও তো প্রসঙ্গ। ঃ-) )
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৪১383573
  • বোধিঃ
    =======

    একদম, থ্যাংক্স। নানা যা মনে হয় ল্যাখো।
    ওসব প্রশ্নোত্তর কিসু না। লেখা লিখি র ব্যক্তিগত মোটিভেশন কে আমার রাজনৈতিক ঘটনা , দাবী চাহিদা, সমাজের কন্ডিশনের রিয়াকশন হিসেবে দেখার অভ্যেস টা খুব স্বাভাবিক ভাবেই, সোশাল হিস্টরির পারসপেক্টিভ থেকে এসেছে, যেখানে আর্টিস্টিক আউট্পুট সরাসরি ইতিহাসের সোর্স আর ইতিহাস হল, লিট ক্রিটের উপাদান। এবার তোমার এই প্রসঙ্গে যা মনে পড়বে লেখো। একটু এক জায়্গায় কোরো। দমুর জন্য ও একটা টই বানিয়ে দিচ্ছি। দমু আর ইন্দ্রানিদিদির কনভারসেশন টা ভালো ছিল বিভূতি ইত্যাদি প্রসঙ্গে।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৪২383574
  • দঃ
    ===

    এই বিভিন্ন পত্রিকায় নিজেকে প্রকাশ করা বা নিজের লেখার জন্য পত্রিকা খুঁজে বের করা প্রসঙ্গে অনলাইন লেখালিখিটা তোমরা ইগনোর কোরো না। এটা গেম চেঞ্জার বলে মনে হয় আমার। হ্যাঁ প্রচন্ড লেখা বিস্ফোরণ ঘটছে যে যা পারচে লিখে ফেলছে সবই সত্যি। এইগুলো একটু থিতোতে দাও। ইমপ্যাক্ট বোঝা যাবে তখন।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৬:৫৬383575
  • বোধিঃ
    =====

    ইগনোর তো করি নি। মজাটা হল, ডেমোক্রাসির সুবিধে হওয়ার কথা, এত লোকে নানা ভাবে নিজের মতামত জানাতে পারছে বলে, কিন্তু হচ্ছে না, উল্টোটাই হচ্ছে। এটা কেন। ধরো আরব স্প্রিং এর সময় লোকে খুব চেচালো, দিস ইজ টুইটার রিভোলিউশন। তার আগেই টুইটারে সেই কোন দিক দিয়ে পুলিশ আসছে বোঝার জন্য জিপিএস বেসড অ্যাপ্লিকেশন লিখে দিয়েছে ব্রিটিশ ইউনি র ছাত্ররা নিজেদের প্রোটেস্টের সময়, কিন্তু টিউনিশিয়া , মিশরে সে সব কাজে লাগছে। এইবার যখন রিপ্রেসন হল, এবং বড় পাওয়ারের সহযোগিতাতেই হল, মিশরে এখনো রিপ্রেসন চলছে, তো কোন উচ্চ বাচ্চ নাই, পরে ব্রেক্সিট ট্রাম্প , কেমব্রিজ অ্যানালিটিক্স সব ই হল, আমাদের দেশে অমিত শাহ ঢপ দেবার জন্য আই টি সেল এর ব্যাপক মেশিনারি বানিয়ে ফেললেন, সেট ইতপূর্বে ইতিহাসে ব্যবহৃত প্রোপাগান্ডা মেশিনারির থেকে কম সিগনিফিকান্ট না, কারণ এটা আপাতত গণতন্ত্র র মধ্যেই হচ্চ্ছে। এবার এটাকে ধরো আমরা একসেপশনালিজম দিয়ে এখনো প্রোগ্রেসিভ রাখতে চাইছি। বলছি যে ধরো আলপনা মন্ডল, এতো আগে হয় নি, বা সিটিজেন জার্নালিজম সেটাও আগে হয় নি, এবং রাইট উইং রিয়াকশন আসলে ইনক্লুসিভ স্টেট গড়তে না পারার ফেলিওর, কিন্তু সেটা হওয়ার পথে যে সেই এক ই দক্ষিন পন্থা বাধা দিয়েছে সেটা ধরছি না। তো যাই হোক, যে কোনো বড় চেঞ্জের মতই এটা ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস এবম নানা জায়্গায় না না ভাবে আসবে। এবং সবটাই এক ই জিনিস হবে না। কিন্তু এটাকে আপাতোতো ডেমোক্রাটাইজেশনের টুল বলা যাবে না জাস্ট পার্সোনালাইজ্ড অ্যাড এর মাধ্যম বলা হবে বোঝা যাচ্ছে না।
  • সৈকত | ***:*** | ১০ জুন ২০১৯ ১৭:৫৩383576
  • বোধি যেটা বলছে, যে লেখালেখির জগতে, ৯০এর দশকে রাশ্ট্রীয় মতাদর্শকে সমর্থনের দিকে লেখাপত্তর বা চিন্তাভাবনা ঘুরে যাচ্ছে। আর এইটার সাথে লিংক করছে আনন্দর মত প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাকে। এখন, আমি এই যোগটা সহজে খুঁজে পাচ্ছি না। হ্যাঁ, বড় প্রতিষ্ঠানের প্রভাব থাকছে, দীর্ঘদিনেরই অভিযোগ যে লেখালেখিতে তারা চিন্তাভাবনার কথা কম রাখতে চায়, কিন্তু অন্যদিকে এটাও দেখি যে তারা দেখছে দেশ পত্রিকা আর চলছে না, চালাতে পারছে না, ফলতঃ চরিত্র পরিবর্তন করছে। নতুন লেখক কেউ বিশেষ আসছে না যাদের লেখা দিয়ে দীর্ঘদিন চালানো যায়, , লেখার ক্ষেত্রে একরকমের কনজার্ভেটিজমকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়ত তাদেরই দিকে ফিরে আসছে। ক্রমশঃ পুরুস্কারপ্রাপ্ত ইংরেজী লেখারই অনুবাদ প্রকাশ করছে, বাঙালী বলেই হয়ত, ঝুম্পা লাহিড়ী বা অমিতাভ ঘোষ, কিংবা আর কারোর। এখন আমি এই ব্যাপারটাকে কোন দিনই বড় করে দেখিনি, তার কারণ এই হয়ত যে লেখাপত্তর যা পড়েছি, তার বেশীটাই দেশানন্দের বাইরে, আর অন্য পত্রপত্রিকা পড়েই দিন কেটে যাচ্ছে কিংবা ছোট পাবলিশারের দোকানে বা বইমেলায়, দেশ পত্রিকার অভাব অনুভব করছি না। এমন হতেই পারে,যে বড় প্রতিষ্ঠানের এই যে প্রোজেক্ট সেটা শেষের দিকে , নব্বইয়ের দশকে বোধি যা দেখছে বা ভাবছে সেগুলো হয়ত ঐ প্রজেক্টের ফল।

    কিন্তু কিছু ব্যাপার থাকছে। যদি আরোও একটু পিছিয়ে গিয়ে দেখি তাহলে দেখব, আনন্দবাজারের প্রথম পূজাবার্ষিকীতেই মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা থাকছে কিন্তু তারপর আর তাঁকে ডাকা হচ্ছে না, বোঝাই যাচ্ছে কীরকম লেখা তারা ছাপাতে চাইছে। দ্বন্দটা থাকছেই, নো ডাউট, চল্লিশের দশকেই সুবোধ ঘোষ হয়ত তাদের প্রধান লেখক হয়ে উঠছেন, ঐ সময়েই 'তিলাঞ্জলি' উপন্যাস বেরোচ্ছে, কমিউনিস্টদের সমালোচনা করা হচ্ছে,ফলে এক সময়ের প্রগতিমুখী সুবোধ ঘোষ কমিউনিস্টদের অপছন্দের হয়ে উঠছেন, আনন্দবাজারের সমর্থন পাচ্ছেন। একই রকমের ব্যাপার সমরেশ বসুর ক্ষেত্রেও ঘটছে, বামপন্থী সহযাত্রীদের থেকে আনন্দের দিকেই ঘুরে যাচ্ছেন, হাংরী ইত্যাদি আন্দোলন হয়ে যাওয়ার পরে, বিবর বেরোচ্ছে, আনন্দ সেই বই ছাপাচ্ছে, সন্তোষকুমার ঘোষ বলছেন যে হাংরিরা যা করতে পারেনি, সেটাই সমরেশ করে ফেলেছেন। প্রতিষ্ঠানটি যেটা করছে সেটা, অন্য প্রতিষ্ঠানের মতই যারা ব্যবসা, চিন্তাভাবনা ইত্যদিকে কন্ট্রোল করতে চায়, অনেক কিছুকে কো-অপ্ট করছে। সমরেশ বসুর আনন্দতে লেখালেখির শুরু, বিবর ইত্যাদির সাথে সাথে বা তার পরে পরেই, কৃত্তিবাসের লেখকরাও অনেকেই সেখানে যোগ দিচ্ছেন। এই ষাটের দশকের শেষ দিকটা আনন্দবাজার মনে হয় ব্যবসাগতভাবে খারাপ অবস্থায় পড়েছিল, মূল্তঃ অন্য কাগজ অমৃতবাজার ইত্যাদির সাথে। সেটা থেকে বেরোবার জন্যও হয়ত নতুন কিছু করার দরকার ছিল। সন্তোষকুমার ঘোষ পঞ্চাশের শেষের দিকেই দিল্লীর হিন্দুস্তান স্ত্যান্ডার্ড থেকে আনন্দবাজারে ফিরেছিলেন, কৃত্তিবাসীদের সাথে ভালমতই চেনাজানা ছিল, তারাও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা কমবয়সী, চাকরির সংস্থান হলে তারা অন্তত লেখালেখিটা ভালভাবে করতে পারবে এই ছিল সন্তোষকুমারের মত। অন্যদিকে নতুন লেখক না পেলে, কাগজটিকে আকর্ষণীয় করা যাবে না, ফলে দুয়ে আর দুয়ে চার হয়।

    তো এতসব ইতিহাস, এই জন্যই যে এই যে লেখকগোষ্ঠীর যোগ আনন্দ-দেশ ইত্যাদির সাথে, এর প্রভাব তো নিশ্চয় এসেছে, কিন্তু সেই প্রভাব আমার ধারনা সত্তর আর আশির দশক, সিরিয়াল সাহিত্য থেকে শিশু সাহিত্য (গুণাগুণের মধ্যে যাচ্ছি না), কিন্তু নব্বইতে এসে সেটার প্রভাব আর আমি অন্তত বিশেষ পাচ্ছি না, কিন্তু বোধি হয়ত এই তিনটে দশককেই লিঙ্ক করছে। উপরন্তু নব্বইয়ের দশক থেকেই লোকজনের চিন্তাভাবনার স্তরে কিছুটা ভেতরে ঢুকে যাওয়া, এটাকে নিতান্ত একটি খবরের কাগজ ও তার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহার দিয়ে মনে হয়না পুরোপুরি বিশ্লেষন করা যায়।
  • Atoz | ***:*** | ১১ জুন ২০১৯ ২১:২৭383577
  • @সৈকত, এই টই টা খুলে খুব কাজের কাজ করেছেন। এখান থেকেই সব পড়ে নিতে পারলাম। ধন্যবাদ।
  • Atoz | ***:*** | ১৩ জুন ২০১৯ ০৫:৪৪383578
  • @সৈকত,
    যতদূর জানি "দেশ" এখনও পাক্ষিক, মাসিক নয়। প্রতি মাসের ২ তারিখ আর ১৭ তারিখ প্রকাশিত হয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন