এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অর্জুন অভিষেক | ***:*** | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২২382308
  • “প্রত্যাশার চাপ, দায়বদ্ধ জীবন, প্রেমে- অপ্রেমে জেরবার, আজীবন এক সূর্যের পাশে ছায়া হয়ে থাকা এক জীবনের নাম রথীন্দ্রনাথ”

    ‘মীরা,
    ডাক্তার বাবু বলেছিলেন আজ sponging নিতে। সুপূর্ণা ঠিক পারে না তাই তোমার যদি অসুবিধা না থাকে তবে কি একবার ১১টার কাছাকাছি এসে এটা করতে পারবে? আমি সকালে জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গিয়েছিলুম। জানি না তোমার অভ্যাস আছে কি না যদি অসুবিধা না থাকে তো এস মিনিট দশ-পনেরোর জন্য। তোমার উপর খুবই অত্যাচার করছি।
    রথীদা।’

    চিঠির নীচে একটা পুনশ্চঃ ‘‘যদি অভ্যাস না থাকে তো জানিও আমি নিজে ম্যানেজ করে নেব। সঙ্কোচ কর না।’

    কে এই মীরা? আর তাকে এমন একটি চিঠি কেন? বিশ্বভারতীর তৎকালীন উপাচার্য রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঐ বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইংরেজির অধ্যাপক নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী মীরা চট্টোপাধ্যায়কে। বিবাহের আগে মীরা বিশী। চিঠিটা আন্তরিক, আবদারে কিন্তু আবার আছে সংকোচ! আর সংকোচ বোধহয় হবারই কথা! ১৯৫৩ সাল। পত্রলেখকের বয়েস প্রায় ৬৫ আর তিনি চিঠি লিখছেন যাকে সে তার চেয়ে একত্রিশ বছরের ছোট একজন সদ্য ত্রিশোর্ধ মহিলা । মীরা বিবাহিতা এক নারী। তার দুটি সন্তান রয়েছে। রথীন্দ্রনাথও বিবাহিত। তার থেকে কয়েক বছরের বয়েসে ছোট তার স্ত্রী প্রতিমা তার পাশের বাড়িটিতেই থাকেন। গত শতকের পঞ্চাশের গোঁড়াতে তো বটেই এই শতকে, বর্তমান সময়েও এমন চিঠি অস্বস্তির কারণ হবার পক্ষে যথেষ্ট। এক প্রৌঢ তার শারীরিক স্পর্শের জন্যে এক অল্পবয়স্ক মহিলাকে কাছে ডাকছেন, সে আবার বিবাহিত।
    একাকী, ক্লান্ত, দীর্ণ এবং আজীবন একটু ভালবাসার সন্ধানী রথীন্দ্রনাথের কাছে তখন হয়ত কোনো সামাজিক বাধা আর বাঁধতে পারেনি। কেন পারেননি? জানতে হলে জানতে হবে রথীন্দ্রনাথকে।
    ঠাকুরবাড়িতে ছেলেদের কোনো নির্দিষ্ট প্রত্যাশিত কেরিয়ারের জন্যে চাপ ছিলনা। সৃজনশীল সব গুণের পূর্ণ বিকাশের সুযোগ সকলেই পেত জন্ম থেকে, যে যার স্বকীয়তা নিয়ে নিজেকে প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠা করতেন। কিন্তু এর অনেকটা ব্যতিক্রম ঘটেছিল রথীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রে বলা যায় তার জন্মের আগে থেকে। রথীন্দ্রনাথের মেজজ্যাঠামশাই প্রথম ভারতীয় আই সি এস সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বীর্জিতলাওয়ের বাড়িতে (বর্তমান রবীন্দ্র সদন, নন্দন চত্বর) একটি পারিবারিক খাতা থাকত। তাতে বাড়ির সবাই যার যার মনের কথা লিখতেন। ১৮৮৮ র নভেম্বরে হেমেন্দ্রনাথের এক পুত্র হিতেন্দ্রনাথ লিখলেন তার রবিকা’র কন্যা নয়, একটি পুত্র হবে এবং বাবার মত হাসিখুশী না হয়ে মান্যবান গম্ভীর হবে। সেই মাসের ২৭ তারিখে রথীন্দ্রনাথ জন্মালেন।
    এই ব্যাপারটা হয়ত স্রেফ পারিবারিক মজা কিন্তু রথীন্দ্রনাথকে নিয়ে এই এক্সপেকটেশন থেকে মুক্তি দিতে পারেননি তার স্বয়ং পিতাও। বরং রথীন্দ্রনাথের জন্মের পর থেকে যতই উত্তরোত্তর বেড়েছে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিশীল ব্যপ্তি ও খ্যাতি, রথীন্দ্রনাথকে নিয়েও তৈরি হতে শুরু করেছে চাপা আকাঙ্ক্ষা। গায়ের রঙ চাপা নিয়ে জন্মেছিলেন রথী। সেতো সবচেয়ে বড় আপসোস। এ আপসোস তার বাবাকে নিয়েও তার ঠাকুমারও ছিল। জোড়াসাঁকোর পরিবেশে রথী বড় হননি। রথীর এক বছর পূর্ণ হবার সঙ্গে সঙ্গে পদ্মাপাড়ে শিলাইদহে। জোড়াসাঁকো বাড়ির সকলেই শেখানে আসা- যাওয়া করতেন। রথীরাও আসতেন কলকাতায়। খুব ছোটবেলার এক স্মৃতির কথা পড়ন্ত বয়েসে লিখেছিলেন মেজজ্যাঠা- জেঠিমা সত্যেন্দ্রনাথ- জ্ঞানদানন্দিনীর বালিগঞ্জের ষ্টোর রোডের বাড়ীতে এক পার্টিতে। কলকাতার পুরো এলিট সমাজ সেখানে হাজির, ডাবলু সি ব্যানার্জী, স্যার কে জি গুপ্ত, স্যার আশুতোষ চৌধুরী কে ছিল না। পিয়ানোর ঝংকার, বলরুম নাচ, ক্রিস্টাল গ্লাসের ঠুং ঠাং, ইংরেজি কবিতার রেসিটেশ।।।। ঘোড়ার গাড়িতে বাবার কোলে ফেরার পথে রথীর মনে হয়েছিল এ সমাজ থেকে অনেক দূরে তাদের অবস্থান।
    গায়ের রঙ নিয়ে প্রথম খোঁটা শুনতে হল সাত- আট বছর বয়েসে জোড়াসাঁকোয় পাশের বাড়ি গগন- অবন দাদার বাড়িতে জ্যাঠাইমাকে প্রণাম করতে গিয়ে। সৌদামিনী দেবী বলে উঠেছিলেন ‘রবি ছেলেকে একেবারে চাষা বানিয়ে নিয়ে এল’। আর ওই বাড়ি কখনো যাননি রথী। আর সত্যি রথীর আমেরিকা গিয়ে পড়াশোনা আর শান্তিনিকেতনে ফিরে কাজকর্ম আজীবন হয়ে রইল চাষ অর্থাৎ কৃষি।
    ব্রহ্মচর্যাশ্রমের প্রথম পাঁচজন ছাত্রের একজন রথীন্দ্রনাথ। কাঁচের মন্দির আর শান্তিনিকেতন বাড়িটি ছাড়া আর কোনো ইমারত প্রায় ছিলনা। ছোট, ছোট কয়েকটা মাটির কুটির। বাবার নির্দেশে রথীকে ওই চারজন ছাত্রের সঙ্গে গিয়ে থাকতে হল। মা মৃণালিনীর আপত্তি পাত্তা পেল না। পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছেলেটি ও সবচেয়ে ছোট মেয়েটি দীর্ঘজীবি হওয়ায় স্মৃতিকথায় মা মৃণালিনীর কথা লিখে গেছে। কিন্তু মীরার আট বছরে মা প্রয়াত। তাই রথীন্দ্রনাথের কথাতেই মৃণালিনীর কথা বেশী জানা যায়! দিদি বেলা বাবার মত ফরসা, সুন্দর। কিন্তু রথীর গায়ের রঙ চাপা মায়ের মত। ঠাকুরবাড়ির সবাই অসম্ভব গৌরবর্ণ তাই যাদের গায়্বের রঙ চাপা তাদের যেন আলাদা করে সহজেই চিহ্নিত করা যায় এবং তাদের অস্তিত্ব প্রকট হয়ে ওঠে। যশোরের ফুলতলী গ্রামের ভবতারিণী, ঠিক মত মৃণালিনী হবার আগেই কোলে রথী এসেছে। তাই মাকে রথী সবচেয়ে কাছ থেকে দেখেছে। মাকে নিয়ে তার রথীর ছিল এক গভীর সহমর্মিতার জায়গা, বাবার চাইতে মাকে রথীর চিনতে চেষ্টা করতে হত না। তাই পড়ন্ত বেলায় মার স্মৃতিকথায় মায়ের নানা উল্লেখ থাকলেও আবার সচেতন ভাবে নীরব থেকেছেন। বাবা- মার দাম্পত্য নিয়ে রথী বিশেষ কিছু লেখেননি। সারাজীবন ধরে যে ‘ধ্রুবতারা’ সূর্যের মত জ্বলেছেন রথীর জীবন জুড়ে সেই কলকাতা, শিলাইদহ, বোলপুর, কখনো সোলাপুর, দার্জিলিং, পুরীতে দীর্ঘ অবকাশ, রবীন্দ্রনাথের যখন যেমন মুড ও ইচ্ছে, সেই জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল রথীরা।

    শান্তিনিকেতনের বিদ্যালয়ের প্রাথমিক পর্ব। মৃণালিনীর গহনা বন্ধক রেখে চালাতে হচ্ছে স্কুল। সকলেরই চলছে কঠোর পরিশ্রম। ন্যূনতম ব্যবস্থা করতেই হিমশিম। অসুস্থ হয়ে পড়লেন মৃণালিনী। রথীকে আশ্রমে রেখে রবীন্দ্রনাথ অসুস্থ মৃণালিনীকে ও অন্য সন্তানদের নিয়ে চলে গেলেন কলকাতায়। অচিরে রথীর ডাক এল। মারা গেলেন মৃণালিনী। কিছুকালের মধ্যেই বোলপুরে প্রত্যাবর্তন। গুরুতর অসুস্থ হল মেজবোন রেণুকা বা রাণী। রবীন্দ্রনাথ তাকে নিয়ে গেলেন আলমোড়ায়। বোলপুরের বিদ্যালয় তখন অনিয়মিত। রথী কখনো বোলপুরে, কখনো কলকাতায়। মুমূর্ষু রাণীকে নিয়ে কলকাতায় ফিরলেন রবীন্দ্রনাথ। সেই ‘বিচিত্রা’ গৃহেই মারা গেলেন রাণী।
    ১৯০৫ এ উত্তাল বাংলা, বঙ্গভঙ্গ ঘোষনা করেছে কার্জন। এই ঘটনায় রবীন্দ্রনাথের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা আমরা সবাই জানি। রথীও ছিলেন কিন্তু বাবার নেপথ্যে। এই স্বদেশী আন্দোলনের জোয়ারের মধ্যেই তৈরিও হতে হল মেট্রিকুলেশন পরীক্ষার জন্যে। মিলল ভাল ফল।

    ১৯০৬ এ বাবার ইচ্ছেয় রথীন্দ্রনাথকে চলে যেতে হল তখনকার হিসেবে সম্পূর্ণ এক নতুন দেশে- অ্যামেরিকায়। ইলিনয় রাজ্যের আর্বানায়, ইলিনয়ের স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে। একদম একা নয় অবশ্য, সঙ্গে সহপাঠী সন্তোষচন্দ্র মজুমদার। পড়বেন কৃষি বিজ্ঞান।

    বাবার ইচ্ছের ওপর বড় আর কিছু বড় হতে পারে নাকি রথীর জীবনে!

    (ক্রমশঃ)
  • অর্জুন অভিষেক | ***:*** | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৪382309
  • *সারাজীবন ধরে যে ‘ধ্রুবতারা’ সূর্যের মত জ্বলেছেন রথীর জীবন জুড়ে , সেই তিনিই রথীর আত্মজীবনীর প্রটাগনিস্ট।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন