এই পোস্টগুলো তুলে রাখলাম। যদি সিএস লেখেন কখনও, একটা কন্টিনিউটি পাওয়া যাবে। :-)
সিএস | 162.158.118.245 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:৪০431545
দ্যাখেন, বিয়াত্রিচেতেও 'ব' আছে, বনলতাতেও 'ব' আছে। জীবনানন্দ, দান্তে ভালো করেই পড়েছিলেন আর দান্তের লেখায় তো বিয়াত্রিচেই পথহারা দান্তেকে সঅর্গপানে নিয়ে যায়। কিন্তু জীবননান্দ অনেক পরের যুগের মানুষ হয়ে জানেন যে সঅর্গ ব্যাপারটা আর নেই, ফলতঃ অনেক ঘুরে, অনেক হাল ভেঙ্গে শেষ পর্যন্ত বিয়াত্রিচেকে আর পাওয়া যাচ্ছে না, বড়জোড় পড়ে থাকছে নাটোরের 'সাধারণ' বনলতা সেন।
(দান্তে অ্যাংগেলটা আনতে পারলে, জীবনানন্দর কবিতা নিয়ে খানকতক লেখা সহজে নামানো যাবে।
(আর, টাইপ করতে গিয়ে ঝামেলা, স এ ব এ সঅর্গ লিখতে পারলাম না)
সিএস | 162.158.118.185 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:৩১431560
জীবনানন্দ প্রসঙ্গে দান্তেকে আনা, মজা করে বলিনি। জীবনানন্দের কাছে পশ্চিমি সাহিত্যের তিনটে প্রধান (মহৎ) বিন্দু ছিল। হোমার-্দান্তে-জয়েস, এই তিনজনের এক যোগ ছিল। কিন্তু শুধু জীবনানন্দই নয়, আধুনিকেরা দান্তের নরক থেকে যত নিয়েছে স্বর্গ থেকে নিশ্চয়ই বিশেষ কিছু নয়। এলিয়ট যখন ওয়েস্ট্ল্যান্ডে দান্তে কোট করেন (I had not thought death had undone so many), তখন লণ্ডন ব্রীজের ওপর যুদ্ধ পরবর্তী নতমুখ মানুষের হেঁটে যাওয়াকে দান্তের নরকের সাজাপ্রাপ্ত আত্মাদের সাথে তুলনা করেন। তো, দান্তের স্বর্গকে যে আধুনিকেরা নিতে পারছেন না (যদিও এলিয়টের ক্যাথলিক পর্বে, Four Quartrets ? এর ছোঁয়া আছে), তার কারণ দান্তের স্বর্গে আলোরই প্রাধান্য, আত্মাগুলির রূপ অনেক ক্ষেত্রেই থাকে আলো বিচ্ছুরণের মধ্যে, স্বর্গে ঈশ্বরের কোন মনুষ্যরূপ তো দেখানো হয়নি, সেও ছিল আলোই। কিন্তু দুই যুদ্ধের মধ্যবর্তী পর্যায়ে বা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধর পরবর্তী পর্যায়ে, জীবননন্দের মত আধুনিকদের কাছে, আলো-টালো বিশেষ থাকছে না, বাণী-ফাণীও বিশেষ আসছে না , বড়জোর "চারিদিকে মহাপুরুষের উক্তি কোলাহল করে", তার বেশী কিছু নয়, ঈশ্বরের তো কোন উল্লেখই নেই, বাসমতীর উপাখ্যানে প্রধান চরিত্রটি লুক্রেশিয়াসের বইটি খুঁজে বেড়াচ্ছে, বইয়ের নাম হচ্ছে 'সাতটি তারার তিমির', অনেক জ্ঞানের পরও অন্ধকারই থাকছে, বড়জোর মানুষকে আশা দেখানোর জন্য রয়ে যাচ্ছে অনুসূর্য, পূর্ণ সুর্য কদাপি নয়।
সিএস | 162.158.118.107 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:২৩431570
ডিভাইন কমেডির তিনটে ভাগ তো সমমাপের, প্রতিটিতেই তেত্রিশটি ক্যান্টো, প্রতি ক্যান্টোতেই সমসংখ্যক পংক্তি। ফলে, স্বর্গ অংশটি ছোট করে বলা নয়, বরং প্যারাদিসো থেকে ধরলে, স্বর্গ বা স্বর্গের ছোঁয়া লাগা বিষয়ই বেশী।
আর এই হল অনুসূর্যের গানঃ
https://sites.google.com/site/mohaprithibi/Home/sattitarartimir/onusurjergaan
সিএস | 162.158.118.39 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:২৪431608
খ লিখেছে দেখলাম, আধুনিক সাহিত্যের মূল অবস্থানটাই হলো, কনটেম্পোরারিকে অ্যাড্রেস করা, এই নিয়ে দু'টো কথা লেখা যায়। মানে দান্তেকে টেনে এনে আর কি । ঃ-)
সিএস | 162.158.119.46 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:৪৫431614
লিখব বলেছি, কখন লিখব বলিনি । ঃ-)
একোর মত না হলেও, এটা মনে করি, যে মডার্নিস্টদের সম্বন্ধে বলতে গেলে, এদেশ হোক বা ওদেশ, দান্তেকে এড়িয়ে যাওয়া মুশকিল; বিনা কারণে, এনারা দান্তেকে রেফার করেননি। পাঁচশো-ছশো বছরের আগে হলেও দান্তের সাথে এনারা যুগসখ্যতা খুঁজে পেয়েছিলেন হয়ত, জীবনান্দের প্রবন্ধে তো দান্তের প্রসঙ্গ আছে, মহাভারতের সাথেই।
সিএস | 172.69.34.179 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৪:৫৪431638
poetry of trance মনে হতে পারে কিন্তু তা বলে ট্রান্সের মধ্যে বসে লেখাগুলো লেখেননি, বা ব্রেঁতোদের মতো অটোমেটিক রাইটিংও নয়। শব্দ খুঁজে পেতে বসাতেন, পান্ডুলিপির কাটাকুটি সেটাই প্রমাণ করে। সমসময়ে এটাই প্রচলিত ছিল যে জীবনানন্দর কাছে কবিতা ঘোরের মতো আসে, কিন্তু মারা যাওয়ার পরে বিষ্ণু দে কবিতার পান্ডুলিপি দেখে বলেছিলেন, একি ইনি তো আমাদের মত করেই কবিতা লিখতেন, শব্দ খুঁজতে হত। এরকম উদাহরণও আছে যে প্রথমে ইংরেজী শব্দ বসিয়েছেন তারপর বাংলা শব্দ বসিয়েছেন। এটা আসলে ক্রাফটের ব্যাপার, এমনই সেই ক্রাফ্ট আর লেগে থাকা যে শেষে যে বস্তুটি দাঁড়ায় সেটি ঠিক যে বিষয়কে প্রকাশ করতে চাইছে অবিকল যেন তারই মতো। মৃত্যুর কথা লিখলে, স্বপ্ন অথবা বেদনার কথাও, যেন মনে গয় ঐসবের ভেতরেই ঢুকে যাওয়া গেছে। মৃত্যুর আগে কবিতাটি এর একটি বড় উদাহরণ, লোর্কা কথিত দুয়েন্দে যেন আমাদের হাতে ধরে দেখিয়ে দেওয়া হয়। আর্ট এটাই, আর্টিস্টের হাতটি দেখা যাচ্ছে না, শুধু হাতের কাজটি উপস্থিত।