এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • নন্দিতা দত্ত | 132.167.***.*** | ২৯ মে ২০১৮ ২০:৫৭375660
  • বেটি বাঁচলে তবে তো পড়বে।

    মেঘনা শ্রীবাস্তব -৪৯৯ খবরের শিরোনাম
    লহরী দেব র্বমা - ৯৬% নম্বর পাওয়া ছাত্রী অপমানে আত্মঘাতী।

    দুটোই খবর।
    দুজনেই মেধাবী। বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও এর বিজ্ঞাপনে আসার মত। না মেঘনা এলেও লহরী কোন দিনই আসবেনা। যে বেটি কে পড়ানোর জন্য অভিভাবক পাঠাবেন,তিনি কি বিশ্বাসে পাঠাবেন! এ প্রশ্ন টাই এখন মুল।ছাত্রীটির পাশে সেদিন দাঁড়া বার মত কি বিগ বাজারে কেউ ছিলেন না।না ছিলেন না।
    বাজারে এখন প্রতিযোগিতা একটা কিনলে তিন্ টে ফ্রি। আমরা পণ্যমুখি ভোগবাদী জীবনে এত টা অভ্যস্ত,অন্যের চেয়ে এগিয়ে থাকার ইঁদুর দৌড়ে পাশের মানুষ টাকে অবলীলায় ধাক্কা মেরে চলে যাই।
    ৯৬% নম্বর পাওয়া মেয়েটা র কথা কি শুনেছিলেন বিদ্যালয় প্রধান? বিদ্যালয় তো জীবন গড়ার কারখানা,তাহলে লহরীকে যে শিক্ষকরা পড়াতেন তারা তার মনের খবর ই রাখেন নি। তর্কের খাতিরে যদি বলি লহরীর ব্যাগের লক ভাঙ্গা ছিল-তাহলে ভাঙলো কে? বিগবাজারে সিসিটিভি থাকে, সেই ফুটেজ কি দেখা গেছে,কত্তৃপক্ষর সাথে কি কথা হয়েছে জানিনা। সংবাদ সূত্র থেকে যতটুকু জেনেছি,পুলিশে খবর দেওয়া হবে না ক্ষতি পূরণ? তাতে স্কুল কর্ত্তৃপক্ষ নাকি চার হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। তারপর স্কুলে ফিরে যাবার পর ওকে গালিগালাজ করে বের করে দেওয়া হয়।এ কোন স্কুল? বেটিকে ভালো মানুষ করার জন্য,শিক্ষিত করার জন্য মা তাকে স্কুলের দিয়েছিল,স্কুলের শিক্ষিকারা কি নমুনা প্রমান দিলেন? প্রতি বছর কত কত ছাত্র ছাত্রী স্কুলে স্কুলে ভর্তি হয়,প্ররতিবছর কত কত ছাত্র ছাত্রী পাশ করে।সব ছাত্র ছাত্রী মেধাবি হয়না। সুকুমার মনোবৃৃৃতি যার যা থাকে তার বিকাশের পাশাপাশি মানুুুষ হতে গেলে যেে নৈতিক শিক্ষা বা বয়সন্ধি কালে তার আচরণ কি হবে,কোনটা স্বাভাবিক কোনটা অস্বাভাবিক এগুলো চর্চা কি স্কুলে হয়? লহরী হোষ্টেলে থাকত। এখানে তাকে আরও কাছ থেকে দেখার সুযোগ ছিল। লহরীর মৃত্যু কি শিক্ষা দিল? যে মেয়েকে পড়তে পাঠিয়ে ছিল মা তার কোল খালি কোন দিন লহরী ফিরে আসবেনা। লহরীর মা অনেক আশা নিয়ে মেয়েকে পড়তে পাঠিয়েছিলেন। মেয়ের মৃত্যু তার কাছে যতটা বিদ্যালয় প্রধানের কাছে কতটা?যদি ধরে নেই লহরী অন্যায় করেছে তার দায় কি বিদ্যালয় প্রধান এড়াতে পারেন? বিগবাজার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান,ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে বিদ্যালয় গুলো। কর্মসংস্থানে বেসরকারি বিদ্যালয় গুলির ভূমিকা অস্বীকার করা যায়না। কিন্তু সমস্যা তখনই যখন বিদ্যালয়ও বানিজ্যিক প্রতিষ্টান হয়ে উঠে। একটু মানবিকতা নিয়ে বিদ্যালয় প্রধান যদি লহরীর সাথে আলোচনা করতেন বা কথা বলার সুযোগ দিত। ওর সাথে যারা ছিল, তাদের বক্তব্যই বা কি? একজন দুজন অন্যায় করে গোটা সমাজ ওই গোষ্ঠীকে গালাগাল করে। এখানে বিগ বাজার কর্ত্তৃপক্ষ,স্কুল কর্ত্তৃপক্ষ, মেয়েটির সাথে যারা ছিল -সবাই যার যার গোষ্ঠীভুক্ত। ঘটনা ঘটে যাবার পর আমরা সেই
    গোষ্ঠীর দিকে আঙ্গুল তুলি। বিগ বাজারের ব্যাবসা বন্ধ হবেনা-কারণ ভূবনায়নে আমরা সব বাজারের শিকলে বাঁধা। স্কুল বন্ধ হবেনা-কারন একজন ছাত্রীর অপমানে আত্মহত্যায় কোথাও এত বড় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা যায়না। কারন স্কুুুলের সংগে অনেকের ভবিষ্যত জড়িত তাহলে কি আমরা নীরবে মেনে নেব? বিক্ষোভ সমাবেশ,যারা আত্ম্যহত্যায় প্ররোচিত করলো তাদের শাস্তির দাবি-এর মধ্যেই আর পাঁচটা ঘটনার মতই পুলিশ ফাইল বন্দী হবে। দুদিন পর আবার সবাই সব ভুলে স্বাভাবিক হয়ে যাব। লহরীর মায়ের কথা মনে থাকবে আমাদের? না লহরীর ঘটনা থেকে শিক্ষা নেব? না ইঁদুর দৌড়ে শামিল হয়ে বিজ্ঞাপন দেখবো ছুটবো।
    সময় অস্থির।আমাদের প্রত্যেকের নিজের দিকে তাকানো দরকার। দরকার পাশে যে আছে যে কেমন আছে। যতই বলি সময় নেই সময় নেই। কিসের সময় নেই। মানুষের যদি হুঁশ না থাকে তবে কিসের জন্য মানুষ আমরা।বিশ্ব অর্থনীতির কালো সুতোয় ঝুলে যে দোল খাচ্ছি,তার জন্য রাষ্ট্র, সমাজ দায়ী।সেই সমাজের মানুষগুলোকে সুস্থ্য জীবনের লক্ষ্যে নিয়ে যাবে কে?

    এই প্রশ্নটাই বার বার আঘাত করে। লহরী বা এই রকম অস্বাভাবিক মানসিক অবস্থার যারা শিকার কেন এই ঘটনা গুলো ঘটে মনোবিদ,সমজবিজ্ঞানীরা প্রচুর গবেষণা করছেন, নতুন তথ্য উঠে আসছে, উপশমে যা বলা হচ্ছে, তাও যেনো বাজারজাতকরনের মোড়কে ভরা। আজকের সমাধান কালকেই পালটে যায়, পালটায় না শুধু সন্তান শোক। তিনি রাজা দশরথই হোন বা লহরীর মা।
  • শক্তি | 116.203.***.*** | ৩০ মে ২০১৮ ১০:০৯375671
  • লহরীর দুঃখজনক মৃত্যু নিয়ে বহুকৌণিক বিবেচনার প্রয়োজন আছে ।নিরাপত্তারক্ষীরা পেটের দায়ে চাকরি করে, শুধু ওদের দোষ দেখলেই হবে না ।দোষ পুরো ব্যবস্থার মধ্যে ।আত্মহত্যাকে গ্লোরিফাই করলে পুরো টীনএজারদের কাছে ভুল বার্তা যাবে ।সন্তানহারা মায়ের কাছে কোনো সান্ত্বনা নেই সেখানে ঠিক কি হয়েছিলো না জেনে কিছু বলাই ভুল ।স্কুল এবং হোস্টেল কর্তৃপক্ষ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে চূড়ান্ত অমানবিক কাজ করেছেন ।সংশোধনের দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন ।
  • | 144.159.***.*** | ৩০ মে ২০১৮ ১১:০৬375674
  • মাসীমা কতগুলো খুব গুরুত্বপূর্র্ণ পয়েন্ট বলেছেন। 'আত্মহত্যার গ্লোরিফিকেশান' এটা ভাবালো বেশ।

    বিগবাজারের সিসিটিভি ফুটেজ সর্বাগ্রে চেক করা দরকার।

    আর এটা এখানেও লিখে রাখি :-
    একটু বেশী রোগা / কমদামী জামাকাপড় পরা / এলেমেলো সাজপোষাকওয়ালা / একটু থতমত খাওয়া মানুষ বিশেষত মহিলা দেখলে বড় দোকান বা ছোট শপিং মলের সিকিউরিটি গার্ডেরা হ্যারাস করার চেষ্টা করে। আমি এটা বেশ কয়েকবার দেখেছি।
  • কান্তবাবু | 132.167.***.*** | ৩০ মে ২০১৮ ১১:৪০375675
  • এদিকে কাগজ, ফেসবুক - লোকজন লাহারি লাহিড়ি লাহরি যা খুশি লিখছে।
    লহরী নামটা তো, অন্তত ত্রিপুরাতে খুব আনকমন কিছু না।

    আর দমদির দ্বিতীয় পয়েন্ট, খুবই হয় এটা।
  • r2h | 132.172.***.*** | ৩১ মে ২০১৮ ২১:২৩375676
  • r2h | 132.172.***.*** | ৩১ মে ২০১৮ ২১:২৬375677
  • লিঙ্কটা ঠিক এল কিনা বুঝতে পারছি না

  • r2h | 132.166.***.*** | ০২ জুন ২০১৮ ২৩:০৪375678
  • এইটা বোধয় চাপা পড়ে গেল। প্রথমদিন কং আর এনেসিউ ধর্না করেছিলো, তারপর এসেফাই, তারপর এবিভিপি। মন্ত্রী বাড়ি গেছে, ক্ষতিপূরণ, পুলিশের প্রেস কনফারেন্স এইসব হলো।

    প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে, আর কি হবে।
  • r2h | 132.166.***.*** | ০২ জুন ২০১৮ ২৩:০৬375679
  • ও, তৃণমূলও তদন্তের দাবী করেছে। তবে খবর অলরেডি সাতের পাতায় এক কলামে চলে গেছে।
  • একক | 53.224.***.*** | ০৩ জুন ২০১৮ ০৩:৫৪375680
  • এই ব্যাপারে রাষ্ট্রের কাছে প্রশ্ন তোলা সবচে যুক্তিযুক্ত বোধ করছি রাদার দ্যান মেয়েটির চরিত্র বিশ্লেষণ ।

    একটার পর একটা ঘটনায় সশীয়লোজিকাল এনালিসিস দেখে দেখে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি । সে মেট্রো তে কাপল কে হেনস্থা করা হোক কী এই বাচ্চা মেয়েটির মৃত্যু । একটা এক্সেপ্টেড ফেইল্ড স্টেট এর মধ্যে আমরা বাস করছি যেখানে রাষ্ট্রের অক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা মানা রাদার নট ফ্যাশনেবল ইনাফ । মেট্রো তে কেন পুলিশ ছিলনা এই প্রশ্নের চেও কাপল বনাম সমাজ এই ছদ্মবিশ্লেষণ জরুরি । পুলিশ না ডেকে রিপোর্টেডলি একজন শপলিফটারকে সোশাল মিডিয়া অস্ত্রাসায়সেসনের ভয় দেখানো হলো , তার পরেও শপিং মলের ম্যানেজার বাহাইনড দ্য বার নয় । রাজনৈতিক দল কী করবে সেই দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্চে ।

    দিস ইস টু মাচ । ইন আ ভেরি পারভার্ট ওয়ে ,ডিরেক্ট ডিমক্রাসী মান্যতা পাচ্চে , যেটা যার কাছেই যত আহ্লাদের হোক না কেন আমার কাছে দুশ্চিন্তার ।
  • Sumit Roy | ০৩ জুন ২০১৮ ১৫:০৭375661
  • কোন মানুষকে অপমান বা বুলিং করা, এবং এরফলে ভিক্টিমের একটা অংশের আত্মহত্যার পথকে বেছে নেয়া - বিষয়টা এখন একটা সাধারণ সামাজিক প্রপঞ্চ। আত্মহত্যাকে গ্লোরিফাই করতে চাইছিনা, বরং এটা নিয়ে মানুষের বৈশিষ্ট্য, তার স্বভাব সম্পর্কে কিছু বলতে চাইছি, হয়তো এখান থেকে এই সমস্যার কিছু সমাধান বের হতে পারে।

    বুলিং করা আর ফলত অপরের বুলিং এর শিকার হওয়া হচ্ছে হিউম্যান কন্ডিশনেরই অংশ। একই সাথে এই বুলিং এর কারণে ভেঙ্গে পড়া আর হতাশাগ্রস্ত হওয়াটাও তেমনই স্বাভাবিক। এর থেকে আমাদের হয়তো রেহাই নেই, সোশ্যালাইজেশনের মাধ্যমে হয়তো নিজেদেরকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা যেতে পারে, কিন্তু তারপরও মানবজাতি এটাকে ভুলে যাবে, এখান থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকে সেটা আশা করা যায় না।

    এটা শুধু আমার কথা না। দার্শনিক নিৎশেও (উচ্চারণ নিচা হলেও আপাতত এটাই উচ্চারণ করছি) তার Human all too human বইতে ফ্রেঞ্চ অ্যাফোরিস্ট রশেফুকোর বরাত দিয়ে বলছেন- আমাদের সামাজিক যোগাযোগে যেসব প্রশ্ন আমরা করি আর যেসব উত্তর আমরা দেই তার তিন চতুর্থাংশই অপরকে কিছুটা আহত করার জন্যই। এই আহত হওয়া আর করার মধ্যে আমরা যে চাঞ্চল্য বোধ করি সেটাই আমাদেরকে সমাজ গঠনে উদ্বুদ্ধ করে।

    জ্য পল সার্ত্রের একটা ছোট ৫০ পৃষ্ঠার নাটিকা আছে যেই নাটিকার চেয়ে নাটিকার শেষের দিকের একটা লাইন বেশি জনপ্রিয়। নাটিকার নাম- No Exit (Huis Clos) আর সেই জনপ্রিয় লাইনটা হচ্ছে- "The hell is- other people" অন্য মানুষেরাই নরক। এই বাক্যটা অনেকেই অনেকভাবে ব্যবহার করে কিন্তু এই নাটিকাতে লাইনটা ব্যবহার হয় খুবই মিনিংফুলভাবে। নাটিকার ঘটনাটা সংক্ষেপে না বললে পুরা লাইনটার গুরুত্ব বোঝা যাবে না।

    নাটিকার শুরুতে দেখায় ফ্রেঞ্চ অ্যারিস্ট্রোকেটিক আমলের একটা রুমে তিনজন মানুষকে আনা হয়েছে- Garcin, Inez আর Estelle নামে, তিনজন এসেছে তিন ধরণের অপরাধের কারণে। এই রুমটাই হচ্ছে আসলে নরক। নরক সম্বন্ধে আমাদেরকে যে ধারণা দেওয়া হয়, আগুন গরম জায়গা, তেলের পাতিলে বন্দিদের সিদ্ধ করা হচ্ছে, আগুনে বারবিকিউ করা হচ্ছে- এমন কিছুই এই রুমে নেই। এই রুমে আছে তিনটা মানুষ মাত্র। কিন্তু এই তিনজনই একে অপরকে নরকের স্বাদ ভোগ করায়।

    ব্যাপারটা হচ্ছে- আমরা মানুষেরা সবাই নিজের মাথায় এক ধরণের ফিল্মের প্লট লাইন নিয়ে ঘুরি, এই গল্পে আমরা সবাই সেন্ট্রাল ক্যারেক্টার, রজনীকান্তের মতন ড্যাশিং, স্মার্ট, অপর লিঙ্গের মানুষদের চোখের মধ্যমণি, দায়িত্বশীল, সৎ, কর্মঠ ইত্যাদি। অন্য মানুষেরা আমাদের ফিল্ম প্লটে ব্যাকগ্রাউন্ড ক্যারেক্টার মাত্র। এমনকি যাদেরকে আমরা অনেক গুরুত্ব দেই জীবনে তাদেরকেও আমরা নিজেদের তুলনায় দেখি খুবই পার্শ্বিকভাবে। এবার ব্যাপারটা ঘুরে গেলে আমরা বুঝি আমরাও অন্য মানুষদের জীবনের ব্যাকগ্রাউন্ড ক্যারেক্টার, তারাও আমাদেরকে দেখে আমাদের সম্পর্কে মতামত দেয় অনেকখানি খন্ডিত আর পার্শ্বিকভাবে। এইবারেই শুরু হয় সমস্যা। আমাদের নিজেদের প্লটের সাথে অন্য মানুষের প্লটের সংঘর্ষ হয়। আমি যেভাবে নিজেকে দেখতে চাই, তারা আমাকে সেভাবে দেখে না, দেখে অন্যভাবে, হালকাভাবে। এই নিজের আর অপরের প্লট লাইনের মধ্যকার যে সংঘর্ষ হয় তার মাধ্যমে যে মানসিক দ্বন্দ্ব ঘটে এটাকেই সার্ত্রে তার নাটিকায় অত্যন্ত চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন আর সেটাই হচ্ছে সত্যিকারের নরক। (নাটকটায় আরো অনেক ডিটেইল ফিলোসফিকাল আলোচনা আছে, পড়ে দেখতে পারেন)।

    বাস্তবতা হচ্ছে এটাই, আপনি নিজেকে চাইবেন অন্যরা আপনাকে সেভাবেই দেখুক যেভাবে আপনি নিজেকে দেখেন, কিন্তু তারা তো সেটা করবে না, তারা দেখবে তাদের মত করে। এমনকি যারা আপনার উপর ক্রাশ খেয়েছে, আপনাকে ভালবাসে তাদেরকেও যদি ঠিক মত ইন্টারোগেট করেন তাইলে দেখবেন- They like you for all the wrong reasons... এমনকি যারা উচ্চকিত কন্ঠে ঘোষণা করে যে আমি সোশ্যাল অ্যাপ্রুভাল চাই না তারাও মেইনলি "একজন Badass ব্যক্তি যিনি কিনা সোশ্যাল অ্যাপ্রুভালের কেয়ার করেন না" এই হিসাবে অ্যাপ্রুভাল চান।

    এই চাওয়া আর পাওয়ার মধ্যে যে দ্বন্দ্ব এইটা নিয়া ফ্রয়েড তার গ্রুপ সাইকোলজি অ্যান্ড অ্যানালাইসিস অফ ইগো বইতে স্টাডি করছিলেন এবং উদাহরণ দিছিলেন জার্মান দার্শনিক শপেনহাওয়ারের বিখ্যাত হেজহগ বা সজারু ডিলেমার সাহায্যে। এক শীতের রাতে একদল সজারু গরম তাপের আশায় একে অপরের কাছে আসার চেষ্টা করছে, কিন্তু যতই কাছে আসছে ততই একে অপরের কাটার মাধ্যমে আহত হচ্ছে এবং করছে। তাই সে দূরে যাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু তাতে আবার পরস্পরের উষ্ণতা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা সোশ্যাল অ্যাপ্রুভালের জন্য একে অপরের নিকটে যাইতে চাই, কিন্তু অপরের বিভিন্ন চিন্তা, ভাব আর এথিকাল সীমাবদ্ধতা আমাদের আহত করে তখন আবার দূরে চলে আসি। এই আঘাত পাওয়া আর আঘাত থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করার মধ্যেই যাবতীয় social interaction এর মূল নির্যাস নিহত। সামাজিক জীবনে তাই প্রত্যেক মানুষের গলাতেই একটা বোর্ড ঝোলানো থাকে- "নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন"। আর সার্ত্রের নরকে থাকা ক্যারেক্টারগুলা যেহেতু এক রুমে আজীবন তিনজনের সাথে বন্দী তাই তাদের এই আঘাত হওয়া আর আহত হওয়ার সাইকেল থেকে সাময়িক নিস্তারটুকুও নাই, তারা সত্যিকার অর্থেই নরকের বাসিন্দা।

    ফ্রয়েড তাই বলেছেন আমাদের প্রতিটা সম্পর্কের মাঝেই sediment of feelings of aversion and hostility অর্থাৎ ঘৃণা আর শত্রুতার তলানি থেকে যায়। যারা একটু সেন্সিটিভ টাইপের তারা এই আঘাত সহ্য করতে না পেরে হতাশা, মাদক, আত্মহত্যার দিকে পা বাড়ায়। আর যারা একটু শক্তিশালী টাইপের তারা এই আঘাত করা আর আহত হওয়ার মাঝেই জীবনের অর্থ খুঁজে পায়। আবার যারা একটু ঘরের খেয়ে বনের মোষ চড়ানো টাইপের তারা মানব জীবনের আঘাত করা আর আহত হওয়ার ফেনোমেনন অ্যানালাইসিস করে সুখে শান্তিতে দিনাতিপাত করে।

    যাই হোক, এতকিছু লেখার উদ্দেশ্য একটাই যে, আমরা যদি আমাদের অপরকে আহত করার মানব বৈশিষ্ট্যগুলোকে নিজে মেনে নেই আর এভাবেই নিজেদের সন্তানকে সোশ্যালাইজেশনের মাধ্যমে বড় করে তুলি যেখানে সে প্রতিটি আক্রমণে টিকে থাকতে পারবে, একে স্বাভাবিক মানব বৈশিষ্ট্য হিসেবে ভাববে আর উল্লেখ্য তৃতীয় ক্যাটাগরির মানুষগুলোর মত নিজের জীবনের আঘাত করা ও আঘাত পাওয়ার বিষয়গুলো এনালাইসিস করে তাহলে হয়তো এরকম আত্মহত্যা, মাদক ব্যবহার ইত্যাদি অনেক কমে আসবে। সেই সাথে আমাদের এই বিষয়েও কিছুটা সচেতন হওয়া জরুরি যে আক্রমণ আমাদের নিজেদের থেকেও আসতে পারে।

    লেখাটা সার্ত্রের No Exit এরই একজন ক্যারেক্টার Inez এর একটা মুখনিঃসৃত বানী দিয়ে শেষ করতে চাই- "I like to choose my hell; I prefer to look you in the eyes and fight it out face to face"
  • π | ০৩ জুন ২০১৮ ১৬:০৫375662
  • একে অপরের প্রতি আক্রমণটাই স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য, এটা কি স্বতঃসিদ্ধ?

    চিন্তার বিভিন্নতা, মতপার্থক্য থাকবেই, তার মানেই একে অন্যকে ছিঁড়েখুড়ে খাওয়া তো নয়, তথাকথিত নিরাপদ দূরত্ব না রাখলেই। আর ঘনিষ্ঠতা মানেই বিপদ এও উইনিভার্সাল কিছু সত্য নয়, কতটা দূরত্ব হলে নিরাপদ সেটাও আবসলিউট কিছু নয়। ব্যক্তি, সময় ও বিষয় সাপেক্ষ। বস্তুতঃ, এই দূরত্বের নিরাপদ থ্রেশহোল্ড বিভিন্ন মানুষের কম্বিনেশনের জন্য বিভিন্ন হয়, বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন বিষয়ে, আর এই সবগুলোর পসিবল কম্বিনেশনের জন্য আলাদা হয়।

    শিক্ষা দিলে বড়্জোর সেই শিক্ষা দেওয়া যায়। কেউ কোন অপরাধা না করলেও তাকে চোর বলে সবার সামনে অপরাধী করে সেই খবর ভাইরাল করে দেয়ার মত বুলিঙ্গ খুব স্বাভাবিক কিছু ঘটনা নয়, এটা ঐ কোন নিরাপদ দূরত্বের ল্লক্ষ্নণরেখা অতিক্রম করে অন্যের এলাক্কায় অনুপ্রবেশের ঘটনাও নয়, যে এর জন্য এই ধরণের প্রতিক্রিয়াতেও অভ্যস্ত হতে হবে। হ্যাঁ এই আঘাতেই জীবন শেষ হয়ে গেল বা শেষ করে দিতে হবে, সেটুকু জোর আসার শিক্ষার কথা বলতে পারেন। কিন্তু এখানে মূল সমস্যা আঘাত দেওয়ার মত সিস্টেম, মানুষের, যে আহত হল, তার সমস্যা, সীমাবদ্ধতার চেয়ে।
  • Sumit Roy | ০৩ জুন ২০১৮ ১৭:৫৮375663
  • হ্যাঁ ওগুলোর এবসোল্যুট কোন ভেল্যু নেই, বিভিন্ন হবেই। কেউ কোন অপরাধ না করেও চোর বদনাম দিলে তার লিগাল একশন নেয়া উচিৎ। সেগুলো করা হোক, কিন্তু এখন আমার আত্মহত্যা কমানোটাই প্রধান ফোকাস হওয়া উচিৎ মনে হয়েছে, স্বাভাবিক ভেবে কোপিং স্ট্র‍্যাটেজি ডেভলপ করাই বেটার। অন্য কিছুর প্রয়োজন অস্বীকার করিনা।
  • | ০৩ জুন ২০১৮ ১৮:০৬375664
  • ধুউউউসসস
  • r2h | 132.166.***.*** | ০৩ জুন ২০১৮ ১৯:৫৩375665
  • আমি এখানে একেবারেই, প্রশাসন এখানে কি ব্যবস্থা নিতে পারে, প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজ এক্ষেত্রে কি আচরন করতে পারে এবং করতে বাধ্য সেসব নিয়ে চিন্তিত, এবং ওটাই প্রাথমিক ফোকাস হওয়া উচিত বলে মনে করি।

    ইন্ডিভিজুয়ালের যদি আত্মহত্যা প্রবণতাও থাকে, যদি সে ইমোশনালি ফ্র্যাজাইলও হয়, যদি সে অপরাধ করেও থাকে, তবুও প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজ, বিগ বাজার, অক্সিলিয়াম স্কুল এখানে কোথায় দায়িত্ব, ক্ষমতার সীমা অতিক্রম ও ভায়োলেট করেছে এবং আইনত তাদের কি শাস্তি হতে পারে, এবং কিভাবে স্ট্রং ম্যান্ডেট দেওয়া যেতে পারে, এরকম যেন আর না হয়, সেইসব। ইন্ডিভিজুয়ালের ট্রেইট বিচার কিন্তু চরিত্র বিশ্লেষনের দিকেই নিয়ে যাবে। এই নির্দিষ্ট ঘটনায়, মনে করি সেটা আলোচ্য নয়, এই স্কোপ দিলে অপরাধী প্রতিষ্ঠানগুলো একে আঁকড়ে ধরবে।
  • paps | ***:*** | ০৮ জুন ২০১৮ ০৩:১২375666
  • তুললাম
  • pi | ***:*** | ০৮ জুন ২০১৮ ১৯:৩৫375667
  • 'ফ্রয়েড তাই বলেছেন আমাদের প্রতিটা সম্পর্কের মাঝেই sediment of feelings of aversion and hostility অর্থাৎ ঘৃণা আর শত্রুতার তলানি থেকে যায়। যারা একটু সেন্সিটিভ টাইপের তারা এই আঘাত সহ্য করতে না পেরে হতাশা, মাদক, আত্মহত্যার দিকে পা বাড়ায়। আর যারা একটু শক্তিশালী টাইপের তারা এই আঘাত করা আর আহত হওয়ার মাঝেই জীবনের অর্থ খুঁজে পায়। আবার যারা একটু ঘরের খেয়ে বনের মোষ চড়ানো টাইপের তারা মানব জীবনের আঘাত করা আর আহত হওয়ার ফেনোমেনন অ্যানালাইসিস করে সুখে শান্তিতে দিনাতিপাত করে।
    '
    এরকম দুটো সাদাকালো বিভাজন কি হয় বাস্তবে ? আর এটার মানে তাহলে দাঁড়ায়, যারা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ায়, তারা তেমন সেনসিটিভ না ?

    এই আঘাত করা আর আহত হওয়ার মাঝেই জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়া আর ঘরের খেয়ে বনের মোষ চড়ানোদের মানব জীবনের আঘাত করা আর আহত হওয়ার ফেনোমেনন অ্যানালাইসিস করার মধ্যেই বা কী তফাত ? এঁরা অ্যানালিসিস করে কোন অর্থ খুঁজে পাননা, আর শক্তিশালীরা অ্যানালিসিস না করেই অর্থ খুঁজে পান ?
    এজায়গাটা ঠিক বুঝলাম না।
  • পার্থিব | ***:*** | ০৯ জুন ২০১৮ ০১:৩৪375668
  • লহরীকে নিয়ে সুতোতে যা আলোচনা হয়েছে আর সেরকম নতুন কিছু বলার থাকতে পারে না । সি আই ডি এর কাছে কেস । বছর খানেকের মধ্যে ফাইন্যাল রিপোর্ট জমা হয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক । লহরীর মা কে পাঁচ লক্ষ টাকার চেক সরকারি তরফে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। টিভির পর্দায় ওনাকে প্রেজেন্ট করিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া যে উনি নিজেকে অনেকটাই সামলে নিয়েছেন , সেই ব্যাপারটাও সফল । সরকারী সিদ্ধান্তে তিন খুশীই ! হয়তো চাকুরিও পাবেন । আত্মহত্যাকে গ্লোরিফাই করার মত রাজনৈতিক / administrative সিদ্ধান্ত সফল । রাজনৈতিক ভাবে আই পি এফ টি যতটা সরব ছিল , এখন চুপচাপ । স্থানীয় গির্জা , ফাদার সবাই পুরো ব্যাপারটা সরকার এখন পর্যন্ত যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই ম্যানেজ করতে যথেস্ট ওভারটাইম খেটেছে । সব দিকেই উইন উইন সিচুয়েশন । শুনতে খারাপ লাগলেও অবস্থা তাই । এরকম হতেই পারে এটা আত্ম হত্যার কারণ হিসেবে অন্য কোন থিওরী প্রজেক্ট হবে । স্থানীয় গির্জার মাধ্যমে , স্কুলও আর্থিক সহায়তা করেছে । ওপেন সিক্রেটই । সুইসাইড নোট , ফেব্রিকেটেড এই ধরণের একটি বিষয়কে সামনে এনে লহরীর মা'র ওপরও চাপ সৃষ্টি করার মত বিষয়ও অস্বাভাবিক না । স্থানীয় , একটি ছেলের সাথে ওর সম্পর্ক , ঘটনার দিন রাত্রিবেলা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া হওয়া ইত্যাদি বিষয় হয়তো সি আই ডি এর ফাইন্যাল রিপোর্টে আসবে । বিগ বাজার বা স্কুল আদৌ সেরকম সমস্যায় পড়বে বলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে না ।

    ****লহরীর বাড়ি লেফুঙ্গা ব্লক এলাকায় । এমনিতেই এখানে বি জে পি এবং আই পি এফ টি সংঘর্ষ প্রতিদিন চলছে। মেয়েটির পরিবার আই পি এফ টি সমর্থক । এই ঘটনাকে নিয়ে আই পি এফ টি যাতে কোনোধরনের ইস্যু তৈরি করতে না পারে সেনিয়ে সরকারের ওপর একটা চাপ তো ছিলই। বাট এভরিথিং ইজ ম্যানেজেড স্মার্টলি সো ফার ।
  • Atoz | ***:*** | ১২ জুন ২০১৮ ২৩:০৩375669
  • এখন কী অবস্থা?
  • বাঙাল | ***:*** | ১৩ জুন ২০১৮ ০৩:৪২375670
  • এখন কি অবস্থা?
  • Sumit Roy | ১৫ জুন ২০১৮ ২০:০৪375672
  • pi,
    ইভোল্যুশনারি বায়োলজিস্ট র‍্যান্ডি থর্নহিল আর ক্রেইগ টি পালমার তাদের একবার তাদের লেখায় ইভোল্যুশনারি কাউনসেলিং এর কথা বলেছিলেন। একটি অন্যায়ের ভিক্টিমকে যদি সেই অন্যায় এর ইভোল্যুশনারি বা প্রাকৃতিক কারণ সম্পর্কে বলা হয়, যেকারণে মানুষ সেই অন্যায় আচরণ করবার প্রবণ হয়ে ওঠে, তাহলে ভিক্টিম এর কাউন্সেলিং (অন্যায়ের ফলে তার ভেতরের ট্রমা সহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যার জন্য) কার্যকরী হতে পারে। এটা আমার মনে সন্দেহ তৈরি করেছিল, কিন্তু পরে দেখলাম এটা সম্ভব, কারণ মানুষ বায়াজ, তারা একটা ফ্যালাসিতে সহজেই আক্রান্ত হয় যার নাম ন্যাচারালিস্টিক ফ্যালাসি।

    ব্রিটিশ ফিলোসফার জি ই মুর তার প্রিন্সিপিয়া ইথিকা গ্রন্থে এটার প্রথম উল্লেখ করেন। এটার কারণে মানুশ মনে করে যা প্রাকৃতিক তাই নৈতিক, প্রাকৃতিক কোন কিছু হতেই পারে, এখানে বিরোধের কিছু নেই। এই ফ্যালাসিটি অবশ্যই খারাপ, কিন্তু এর কারণ হিসেবে মানুষের মধ্যে যে বায়াজ থাকে তা মানুষকে ভাবায় যে, প্রকৃতি একটি ইতিবাচক বিষয়, তাই কোন কিছু যদি নেচারাল হয় তাহলে সেটা স্বাভাবিক, সেটা হতেই পারে, এরকম একটা ইমপ্লিকেশন চলে আসে, আর তাই মানুষ সেটা মেনেও নেয়। অপরাধীর শাস্তি হোক সেটা চাইতে পারে, কিন্তু সে এটাও ভাবে যে তার সাথে যেটা হয়েছে তা অস্বাভাবিক নয়, প্রকৃতিতে এরকম কিছু ঘটা সম্ভব, আর এটা তার মধ্যে একরকম কোপিং স্ট্র্যাটেজি তৈরি করে। এটা অপরাধের বা তার সাথে হওয়া অন্যায় এর একটা এক্সপ্লানেশন, আর এভাবেই এক্সপ্লানেশনগুলো মানুষকে শান্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়, তার ভেতরের বায়াজের জন্য।

    যারা এইরকম বায়াজে আক্রান্ত এভাবে এটা তাদের হেল্প হতে পারে, কিন্তু যারা এই বায়াজ নিয়ে জানে, নেচার নিয়ে ভেতরে আদিখ্যেতা কাজ করে না, তারা জাস্ট ওয়ার্ল্ড হাইপোথিসিজ নামে আরেকটা বায়াজের বিরুদ্ধে লড়তে পারে বলে এক্ষেত্রে উপকৃত হতে পারে। মানুষের ভেতরে জাস্ট ওয়ার্ল্ড হাইপোথিসিজ নামে আরেক রকম বায়াজ থাকে যেকারণে সে মনে করতে চায় প্রকৃতিতে খারাপ কিছু হতে পারে না, যে কখনও কোন খারাপ কাজ করে না, তার সাথে কখনও খারাপ হয় না, এই বায়াজটি তাকে এরকম ভাবতে শেখায়। এটাও হয়তো সাহায্য করে শান্ত হতে, কেন মানুষ এরকম অপরাধপ্রবণ, কেন এরকম অপরাধ হচ্ছে এসব তার এটে ওঠায়, কাউন্সেলিং এ সাহায্য করছে। আর একারণে আমার মনে হয় এনালিসিসগুলো মানুশকে সাহায্য করতে পারে। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ায় বলতে যে এনালিসিস-কারীদের কথা বলেছি তারা সেন্সিটিভ হয়েও এগুলো সহ্য করতে শিখতে পারে। আমি নিজেই অনেক সেন্সিটিভ, লোয়ার সেলফ এস্টিমে ভুগি। এরকম এনালিসিসই আমাকে হেল্প করে টিকে থাকতে। অন্যদেরকেও তাই পরামর্শ দেই বিষয়টা বুঝতে। আর এটার সাথে অপরাধের শাস্তির কোন সম্পর্ক নেই, অপরাধী অপরাধের শাস্তি পাবে, কারণ কাজটি অনৈতিক ছিল। এক্সপ্লানেশন কখনও এক্সকিউজ হতে পারে না, সেটা ভাবাও একরকম ইনফরমাল লজিকাল ফ্যালাসি, আর অপরাধ ঘটা স্বাভাবিক বলে অপরাধ নৈতিক এটা ভাবাটা একটু আগেই বললাম ন্যাচারালিস্টিক ফ্যালাসি হয়ে যায়।

    নরডিক দেশগুলোতে অপরাধের হার অনেক কম, সেখানে রেস্টোরেটিভ জাস্টিস বা সংশোধনমূলক বিচারের প্রচলন রয়েছে। একটা প্র্যাক্টিস সেখানে দেখা যায় যার নাম হচ্ছে ভিক্টিম অফেন্ডার মেডিয়েশন (VOM) যেখানে ভিক্টিম ও অফেন্ডারের মধ্যে মিট করানো হয়, দেখা গেছে এতে অপরাধীর ক্রিমিনাল বিহ্যাভিয়র কমে আসে, আর ভিক্টিম এর মধ্যে ভয় দূর হয়, কাউন্সেলিং হয়। এখানেও একই বিষয় কাজ করে বলে আমার মনে হয়। ভিক্টিম বাস্তবকে বুঝতে শেখে, সে এনালিসিস করে।

    π,
    আক্রমণ করা স্বাভাবিক এসবে আমি নিজেও খুব একটা বিশ্বাস করি না। এগুলো তাই সাইকোলজিকাল বা নিউরোলজিকাল ব্যাখ্যা তেমন পাইনি, তাই চলে গিয়েছি ফিলোসফির দিকে। কিন্তু একটা কনসিডারেবল পরিমাণ মানুষের মধ্যে, একটা ক্রিটিকাল লেভেল পরে, কোন ক্রিটিকাল সিচুয়েশনের পরে অন্য সব সিচুয়েশন এরকম আক্রমণাত্মক স্টেন্স চলে আসতেই পারে, বা নন-ইনটেনশনালি মানুষ কেবল নিজেকে নিয়ে ভাবতে যাবার কোন সাইড এফেক্ট হিসেবে আক্রমণ আসতে পারে - এটা হওয়া খুব সম্ভব। তাই বেনিফিট অফ ডাউটের জন্য আমরা যদি নেচারের ক্রুয়েলটিকে স্বীকার করে নিজেকে কিছুটা প্রস্তুত করে নিতে পারি, তাহলে হয়তো ভিক্টিমের ভেঙ্গে পড়ার হার অনেকটাই কমে যাবে, আর সেই সাথে কমতে পারে সুইসাইড রেটও। এটা স্বল্পমেয়াদী কোন সমাধান না, আমি সেটা নিয়ে এখানে বলছিও না, দীর্ঘমেয়াদে সমাধান দিতে পারে এমন কিছু পরিকল্পনার কথা বলছি, দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি সাজেশন দিচ্ছি যার ফলে সন্তানদেরকে, শিক্ষার্থীদেরকে এই সমস্যাগুলোর সাথে কোপ আপ করাটা আস্তে আস্তে শিখতে পারে, যাতে তারা জীবনের ক্রিটিকাল টাইমে ভেঙ্গে না পড়ে।
  • | ***:*** | ২৭ আগস্ট ২০১৯ ১৪:০৬375673
  • তুললাম
  • r2h | 192.139.***.*** | ০১ নভেম্বর ২০২২ ০১:২৮738722
  • ...বাবা রতন ঘোষ বলেন, ‘‘ও আমার বড় মেয়ে। কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ২৯ সেপ্টেম্বর জয়গাঁর একটি শপিং মলে গিয়েছিল ছোট বোনকে নিয়ে। সেখানে ভুল করে একটা চকোলেট নিয়ে নেয়। শপিং মলের কর্মচারীরা ওকে প্রায় ২ ঘণ্টা আটকে রাখেন। টাকা মিটিয়ে ক্ষমাও চায় মেয়ে। কিন্ত পরবর্তীতে সেই ছবি শপিং মলের কর্মচারীরা নেটমাধ্যমে ভাইরাল করে দেন। তার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিল মেয়ে। শেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নিল ও।’’
     
  • সপ্র্র | 77.48.***.*** | ০৩ নভেম্বর ২০২২ ১৩:৫০738752
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন