এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:২৯369814
  • বিষন্ন রূপকথা - অয়ন চক্রবর্তী

    কবিতা আর আমার লাভ-হেট সম্পর্ক।
    কবিতা আমাকে কখনো নিশির ডাকের মতো
    আশ্রয়চ্যুত করেছে, কখনো কামে ব্যর্থ
    হস্তমৈথুনের মতো আশ্রয় দিয়েছে। জীবনে
    যখনই আর্থিক নিরাপত্তা (অর্থাৎ শান্তি) এসেছে,
    আমি কবিতার থেকে দূরে চলে গেছি। আবার
    যখনই অর্থসঙ্কট (অর্থাৎ অনিশ্চয়তা) দেখা দিয়েছে,
    কবিতা দৌড়ে এসেছে আমার কাছে। ফলে, ফের
    যদি আমাকে কবিতা লিখতে দেখেন, বুঝবেন,
    ভাল নেই আমি। মানিঅর্ডার করবেন সহৃদয় পাঠক।
    জ্ঞবিষণ্ন রূপকথাঞ্চ হল এক অপরূপ না-পাওয়ার
    ব্যক্তিগত দলিল। যেখানে জ্ঞঅপরূপ না-পাওয়াঞ্চ
    একসঙ্গে পড়তে হবে। এই দলিল না পড়লেও কিছু
    এসে যাবে না আপনার। অথবা পড়লে, ক্ষতিগ্রস্ত হবেন,
    লোভ হবে এক লোকসানের জীবনের।

    <
  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩০369825
  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩১369834
  • সরে দাঁড়ালেন লেন্ডল - অংশুমান কর

    আমি নয়ের দশকের কবি। কিন্তু কবিতা লেখার প্রস্তুতি চলছিল আটের দশকের মাঝামাঝি থেকেই। সেই সময়টায় ছোট ছোট পরিবর্তন আসছিল বাংলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক আর অর্থনৈতিক জীবনে আর তার অভিঘাত পড়ছিল (আমার অনেক বন্ধু-বান্ধবদের মত) আমারও জীবনে। এটা যদি হয় আমার কবিজীবনের প্রস্তুতির শুরু তাহলে সেই প্রস্তুতি-পর্বের একটা শেষও আছে। কেন জানিনা মনে হয়েছে, আমার কবিতা নিজের একটা ছোট্ট জগত তৈরি করতে শুরু করে নতুন শতাব্দীর শুরুর দিকে। তাই নয়ের দশকের কবি হলেও আটের দশকের মাঝামাঝি থেকে শূন্য দশকের প্রথম কয়েকবছর - এই পুরো সময়কালটাই, আসলে, আমার প্রস্তুতির সময়। এই বইতে ধরা থাকল এই সময়কালকে ছুঁয়ে থাকা কিছু প্রকাশিত পুরনো কবিতা।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩২369836
  • সরুচাকলি - চন্দ্রিল ভট্টাচার্য

    কবিতা আর কেউ পড়ে না। তাই কবিতা লেখা হেভি নিরাপদ। ফাঁকা ফ্ল্যাটে বসে নিজের নাক খোঁটার মতো আনন্দময় ও স্বাধীনতা-জমজমে। এক থেকে পঁচাত্তর অবধি নামতা লিখে কবিতা বলে চালালেও কেউ কিচ্ছু বলবে না। তাই কবিতা লেখার শ্রেষ্ঠ সময় এটাই। কবির অবশ্য আর ফোঁটামাত্র গ্ল্যামার নেই, দর, আদর নেই। কবিতা লেখা প্রায় বন্ধ বাড়িতে একা নাক খোঁটার মতোই অতৎপর ও গ্লানিময়। এমনকী এক থেকে পঁচাত্তর অবধি নামতা লিখে কবিতা বলে ছাপালেও কেউ ব্যঙ্গ অবধি করবে না। কবিতা লেখার জঘন্যতম সময় এটাই।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩২369835
  • জলতলের ফোটোগ্রাফি - আর্যনীল মুখোপাধ্যায়

    আর্যনীল তিনি, নিপুণ আঙুলে খুঁটে তোলেন খন্ডদৃশ্য, গন্ধ, ইতিহাস, ভুগোল, কারিগরি ও বিজ্ঞানের মৌলগুলি আর রোপণ করেন কখনো বিষাদশিফন কুয়াশায় কখনো গালে জিভ ঠেসিয়ে এক কলি গানের আঁচলে। আড়াইদশকের এই পরীক্ষাকবির কাছে কবিতা আর পরীক্ষামাত্র হয়ে থাকে না-- ক্যানভাসের ভেতর যে ইনার্ট মৌলগুলির নিস্ক্রিয় প্যাটার্নের সৌন্দর্যমাত্র হয়ে থাকার কথা সেই মৌলগুলির অঙ্কুর বেরোয়, ডালপালা, এই গোলার্ধের ডুমুর শিউরে ওঠে অপর গোলার্ধের জুনিপারশাখায়, জুঁই-চায়ে ঠোট ভিজিয়ে যায় নীল ম্যাগপাই আর ঞ্ছযেভাবে গড়িয়ে কমলালেবুটা, টেবিলের কোণ পর্যন্ত/ তারপর আসে গড়িয়ে /আমাদের যতির অর্থ বোঝাতেঞ্জ - লিখেছেন সব্যসাচী সান্যাল

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৩369838
  • যে গান শোনে না কেউ - কল্পর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়

    ঞ্ছতবু ওই নীলিমাকে প্রিয় অভিভাবিকার মতো মনে হয়,
    হাতে তার তুলাদণ্ড
    শান্ত-স্থির
    মুখের প্রতিজ্ঞাপাশে নির্জন, নীলাভ বৃত্তি ছাড়া কিছু নেই।
    যেন তার কাছে জীবনের অভ্যুদয়
    মধ্য সমুদ্রের ঞ্চপরে অনুকূল বাতাসের প্ররোচনাময়
    কোনো এক ক্রীড়া- ক্রীড়া;-
    বেরিলমণির মতো তরঙ্গের উজ্জ্বল আঘাতে মৃত্যু।
    স্থির-শুভ্র-নৈসর্গিক কথা বলিবার অবসর।ঞ্জ
    নিজের কবিতা পুস্তিকার প্রচারলিপি লেখবার কালে জীবনানন্দের এই পঙতিগুলিই কল্পর্ষি স্মৃতিধার্য করেছেন। এর বেশি নিজের কবিতা সম্পর্কে তাঁর আর বিশেষ কিছু বলবার নেই।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৩369837
  • লেখো আলো লেখো অন্ধকার - হিন্দোল ভট্টাচার্য

    ব্যক্তিত্বই আসল কথা। এই ব্যক্তিত্বকে খুঁজতে খুঁজতে এমন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে বুড়ো হওয়া, যার এক হাতে ভোগ আর আরেকহাতে চাবুক। সামনে নিয়তির হাতছানি, অর্থহীনতার শব্দ। এর মধ্যেই আমাদের দিনযাপন আর সেই সব টুকরো টুকরো অপ্রত্যাশিতের সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়া। খুব ছোট ছোট সব জার্নি। হয়ত কোথাও যাচ্ছে। কে জানে কোথায়! সময় বলবে।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৫369840
  • উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা বান্ধবীকে - প্রসূন ভৌমিক

    এই লেখাগুলো একদম প্রথমদিকের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙলা বিভাগ থেকে তখন সাপ্তাহিক কবিতার কাগজ জ্ঞধারাপাতঞ্চ শুরু হয়েছে। ওখানেই প্রথম প্রকাশ এই সিরিজের কবিতা। তারপর থেকে ওদের তাগাদায় নিয়মিত গুচ্ছ কবিতা। বহিরাগত হয়েও আপন হয়ে গেলাম যাদবপুরে। দেশ, বিজল্প সহ অন্য কিছু পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয় এই সিরিজের কবিতা। কিন্তু সেসব আর নেই আমার কাছে। কৃতজ্ঞতা ভ্রাতৃসম অধ্যাপক শুভেন্দু দাশমুন্সীর প্রতি। জ্ঞধারাপাতঞ্চ-এ প্রকাশিত কিছু লেখা বিস্মৃতির আর্কাইভ থেকে ও উপহার না দিলে এই পুস্তকা সম্ভব হত না। কৃতজ্ঞতা সৈকত, ঈপ্সিতা আর গুরুচণ্ডা৯-র সবাইকে জ্ঞএক ব্যাগ নব্বইঞ্চ সিরিজ-এর এই প্রকল্পে আমার মতো অলস কবিতালেখকের থেকে এই কাজ আদায় করে নেওয়ার জন্য।
    সামান্য কাটাকুটি করলাম। ছন্দ, বাক্যগঠন খুব একটা পরিবর্তন করিনি। আজ লেখা অনেক বদলে গেছে, যেমন বদলেছে জীবনও। কিন্তু কুঁড়িবেলার লেখাগুলি অস্বীকার করার উপায় তো নেই! ধরা পড়ে গেলাম...

    রচনাকাল- ১৯৯৫
    -প্রসূন ভৌমিক

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৫369839
  • উইকএন্ড - মিতুল দত্ত

    ঝরে পড়া চুলের দিক থেকে যখন নিজেকে দেখি, পাতার ওপর মায়া নেই এমন একটা গাছের মতো মনে হয়। অস্তিত্বসংকটের দিক থেকে নিজেকে দেখব না বলেই বন্ধ ঘরের মধ্যে ছুটোছুটি করি। মাঝেমধ্যে খাতাপেন নিয়ে বসি। চা-বিস্কুট খেতে দিই নিজেকে। বলি, তুমি ফুরিয়ে যেও না।
    খাতাপেনের দিক থেকে কেউ আমাকে দেখে না। এইসব অনর্থক শব্দ জোড়ার খেলা, ঘুম পাড়িয়ে দেয় কখন যে। ঘুম থেকে উঠে আমি চোখ আঁকতে বসি। পাতাজোড়া চোখ। চোখের নীচে নাক বসাই। চোখের ওপরে ভুরু এঁকে দিই। সেই ভুরু কুঁচকিয়ে, শব্দ আর কাটাকুটিরা চেয়ে থাকে আমার দিকে। তাদের মুখখারাপের জবাব দেব না বলে চটপট বন্ধ করি। কাঠের আলমারিতে চালান করে দিই।
    এইভাবে আমার অনেকগুলো খাতা হয়েছে। এমনকি তারা, সেই খাতারা, তাদের নাম অব্দি জানে। 'ভালো না বাসলে ঢিল ছুঁড়ব' মার্কা চিঠি-চালাচালি যেদিন বন্ধ হয়ে গেল, আমার অমরত্বের খাতার নাম সেদিন থেকে 'মায়ের দিব্যি'। আমার নির্ঝর আর লিবিডোর নাম, সেদিন থেকে, সানস্ক্রিন আর জিভছোলা। এইসব খাতা, তাদের ভেজা ভেজা অস্তিত্ব নিয়ে, ইউরিক অ্যাসিড আর ব্লাডসুগার নিয়ে, আধখানার বেশি দানাদার খেতে না পারার মেজাজখারাপ নিয়ে, তাকাতে পারে না আর আমার দিকে। শুধু যেসব মাথাখারাপের বীজ আমি চারাপোনার মতো ছেড়ে দিয়েছিলাম প্রথমদিকের পাতাগুলোতে, তাদের ঘাইয়ের শব্দ, লেজ নাড়ার শব্দ, মাঝেমধ্যে ঘুম ভাঙিয়ে দেয় আজও।
    আর আজও, 'মায়ের দিব্যি'র পেটের ভেতরে, টর্চ নিয়ে, আমি আমার অমরত্বকে খুঁজতে বসি।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৬369816
  • ১৯৮৯ - রোশনারা মিশ্র

    ১৯৮৯-এ খুব শীত পড়েছিল। ভারসাম্য পাল্টাচ্ছিল পৃথিবী। অক্ষ সরে যাচ্ছিল সূর্যের থেকে দূরে। আলো না ঢোকা আমাদের কামরার আদলও ছিল গুহার মতই। শীতযুদ্ধ ফুরোল। আপাত শান্ত এই ডেকাডেন্ট ডিকেডের গোড়াতেই সেই যে ঘুমোতে গেলাম, তারপর হিমযুগও জাঁকিয়ে বসল। পূর্বপরিচিত স্পিসিসগুলো এখনও আছে কোথাও, ফসিল হয়ে আছে। নাতিপুতির জন্য কুড়িয়েও আনছি, কিছু কিছু ওরাও চিনুক। না চিনলেও ক্ষতি নেই - জ্বালানির কাজ দেবে।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৬369815
  • কূর্মাবতার - পারমিতা মুন্সি

    কবিতা বলতে আমার কাছে কিছু দৃশ্য। দৃশ্যের অন্তরে কিছু দৃশ্যকে বুঝতে চাওয়া, গাছের পাতার মধ্যে দিয়ে ক্লোরোফিল সংশ্লেষ'কে বুঝতে চাওয়া। কবিতা মানে আমার কাছে জীবনানন্দ দাশ, বিনয় মজুমদার, ভাস্কর চক্রবর্তী, জয় গোস্বামী, প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। আমার ভাবনা এই উক্ত অগ্রজদের দ্বারা প্রভাবিত, ঋণগ্রস্ত। মৃত্যুর আগে অবধি লেখা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে। মৃত্যুর আগে অবধি সিনেমা করার ইচ্ছে। কবিতা আর সিনেমা আজ আমার কাছে সমার্থক। এক দু'মুখো বাইনোকুলারে চোখ রেখে এক মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে অন্য মাধ্যমকে দেখার চেষ্টা করি। লিখতে চাই পোয়েটিক ভিশন। আর বানাতে চাই ভিসুয়াল পোয়েট্রি।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৭369817
  • যে বয়েস হরিনের নয় - শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়

    সে গুহায় যুগপৎ আলো ও অন্ধকার বলে, কয়েকটি মাতাল, একঘর উকিল, সরকারি চাকুরে, ওষুধ কোম্পানির লোকের মধ্যে একজন কবিও জন্ম নেয়। নেহাতই শহরের দোষে। ব্যর্থ প্রেম-টেম হয় তার, আর সিলেবাস শেষ করতে গিয়ে সে দেখে তার পিতা একটি সরু ল্যাডার বেয়ে ক্রমেই উপরে উঠছেন। উড়োচুল মিশে যাচ্ছে সাদা ধোঁয়ায়, ঘুমের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে অক্ষরকুচি, আগুনের আঁচ ও একটি অগ্নিনির্বাপক গাড়ির মৃত ঘন্টা...

    অতঃপর সে এক শহর থেকে অন্য শহর, এক দেশ থেকে অন্য দেশে নিয়ে যায় তার পোষা পাহাড়টিকে। ছেলেকে বলে খোকা পাহাড়ে ওঠা শেখ। আরো কত কি শেখার কথা বলে যা তার শেখা হয়নি। সে পাহাড়ের সাথে একটি সেলফি তুলে গুহার দেওয়ালে টাঙায় আর নেহাতই পুরোনো অভ্যেসে মাঝে মাঝে লিখে ফেলে কিছু পদ্য। এরপর ছেলেটির আর বিশেষ কিছু বলার থাকে না, কারণ সে জানে, গুহা অর্থে অন্ধকার, গুহা অর্থে যেখানে আলোক ঢোকে, আর কজন নিয়ানডার্থাল এ ওকে আদর করে, পরস্পরকে খায়।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৭369818
  • উহ্য - শমিত রায়

    নব্বইয়ের তরুণ-তুর্কীদের মধ্যে অল্পসংখ্যক যে-কজন, একটি লেখার হয়ে-ওঠার প্রক্রিয়াটি নিয়ে ভাবিত হয়েছিলেন, বুঝতে চেয়েছিলেন একটা লেখা ঠিক কীভাবে, কোন ভাষিক কিমিতির অলৌকিক জারণকৌশলে, গদ্য বা পদ্যের চেহারায় পাঠকের সামনে উপস্থিত হয়, শমিত রায় তাঁদের অন্যতম। তাঁর কবিতা তাই, সংক্ষেপে ও সাঁটে, একটি কবিতার জন্মের কথাই পাঠককে শোনাতে এসেছে বলে মনে হয়।

    শমিত রায়ের লেখার উপরিতলে যে-পৃথিবীর ছায়াটিকে ভেসে থাকতে দেখা যায়, তা আমাদেরই যাপিত পৃথিবী--তার গায়ে আমাদের রক্ত-ঘাম-থুতু, স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার দাগ ওতপ্রোত লেগে আছে। শমিত তাঁর আশ্চর্য মায়াবী ভাষায় ও শব্দের গোপন আঁতাতে, আমাদের শহুরে যাপন আর তার তাবৎ অর্থহীন উপচারকে ক্রমশ বেআব্রু করে ফেলতে থাকেন। যদিও তাঁর উচ্চারণে, লাগামহীন ক্রোধ বা ক্ষোভ নয়, বরং এক আলতো ভালবাসা ও তির্যক রসিকতার সুরটিই প্রধান হয়ে দেখা দেয়।

    অতএব, বলার কথা এটুকুই যে, এই এক-ফর্মার বইটি, তার জিরো ফিগারের ভাঁজে, লুকিয়ে রেখেছে বিপজ্জনক সব চোরাটান, ধরে রাখতে চেয়েছে শমিত রায়ের লেখকজীবনের অনধিক আড়াইদশকের আখ্যানকে। নির্দ্বিধায় বলতে পারি, বইটি শেষ করার পর, শুধু একটাই আপশোষ রয়ে যাবে পাঠকের, তিনি ভাববেন--শমিত রায় এত কম লেখেন কেন? কেন তিনি এতটাই কুণ্ঠিত, কৃপণ তাঁর লেখার ব্যাপারে?

    - শৌভ চট্টোপাধ্যায়

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৮369819
  • যখন ফানুসেরা ওড়ে - সাম্যব্রত জোয়ারদার

    ঝিলের নিকটে গিয়ে দেখি ফানুসেরা পেরিয়ে যাচ্ছে এক রাত নক্ষত্রের আলো। ফাঁকা ঝিলপথ। বাস স্ট্যান্ড। আর তাঁর মুখের অবয়ব ভাসমান লন্ঠনের মতো। হেমন্তের জানালার পাশে সন্ধেবেলা মুখোমুখি বসি। অশ্রু পান করি। তাঁর গলার খাদের আলোড়ন। বঁড়শি আটকিয়ে। দেহঘ্রাণের ভিতর ছাতিমের ফুল ফোটে। মাথা খারাপের জ্বর ধরা পড়ে। লাল মেঝে। ভোরের সবুজ মানিপ্ল্যান্ট। লম্বা গ্রিলের পিছনে শ্যাওলা মাখা দেওয়াল। তাঁর শৈশবের রেলিং। কাঁধের ঢাল বেয়ে গড়িয়ে নামছে দীপাবলির আলো। মৃতের স্মরণে বহুদূরে ফানুসেরা উড়ছে। সেই ঘরের কড়িকাঠ ছাড়িয়ে। পুরনো আয়না। দরজার পিছনে সাঁটা শ্বাপদের ছবির ভিতর পড়ে থাকে যাবতীয় লেখালেখি। এক ঝিলকে আশ্রয় করে আরেক ঝিলের শরীরে আত্মহত্যা হয়। ভয় হয় বিচ্ছিন্নতার সংক্রমণ ঘটে যাবে। সর্বস্ব হারিয়ে বসে ফের কোনও দুর্যোগের নির্ভর হয়েছি মনে হয়। বোবা স্তব্ধ মৃত সেলফোনগুলি সব সারিবদ্ধ পড়ে থাকে। শুরু হয়েছিল শেষে ভেঙেচুরে দেয়। ঝিলের নিকট থেকে ঝিল সরে যেতে থাকে।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৯369821
  • ফোনঘর - সুমন মান্না

    সেইসব দিনকালে সারি সারি অ্যান্টেনা দেখতাম ছাতে। তাতে কাক বসলে নিচের ঘরে ছবি ঝিরঝিরে হত। অতি কষ্টে বেড়ে ওঠা ঘুড়ি অ্যান্টেনা নিজেরাই ওড়াত। তাই জয়েন্টের প্রস্তুতি চলে সকালে বিকেলে কোচিং-এর ছলে বলে কৌশলে এক ঝাঁক ছেলেমেয়েদের ভিড় থেকে দুঞ্চজন দুঞ্চজন করে একলা হয়ে যায়। বাকিদের জন্য থাকে সসাগরা পৃথিবীর যমুনার পাশে রোল, বৃষ্টিতে ভিজে কলেজ স্ট্রিট জুড়ে একলা হেঁটে যাওয়া তার ইস্কুলের বন্ধুদের থেকে বেশ খানিকটা দূরে।
    এদিকে গাঁইতির ঘায়ে এক শতাব্দী প্রাচীন সৌধ ভেঙে গেলে গণতন্ত্রের ভিত নড়ে ওঠে। কার্পেটের নিচ থেকে সহজেই বেরোয় ঘৃণাগুলি সাজানো ঘরে ঘরে। ডিলান শেখান সুমন কলামন্দিরে, গিরিশ মঞ্চে। কিছু পরে দেখি চাঁদ ওঠে ঝিলপাড়ে এক দোল পরবর্তি সন্ধ্যায় মহীনের গানের সুরে। কবিতারা ছুঁতে আসে আবৃত্তির আসর থেকে ধর্মতলার বাসস্টপে কবিতার বইয়ের ফিরিওলার ঝোলা থেকে। প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনগুলি একে একে ছেড়ে গেলে পালিয়ে গিয়েছি সুবর্ণরেখার ধারে। অপেক্ষা থেকেছে শুধু রাত্রির। রাত্রি এগারোটার পরে এসটিডি বুথে রেট কোয়ার্টার হয়ে যায়। অন্যদিকে সারাদিন ল্যাব, অ্যাসাইনমেন্ট আর সেমেস্টারের চাপ সামলে হোস্টেলের রিসেপশনে পূজাবার্ষিকী ও সে আনমনে দেখে পরস্পর।

    নব্বই যাপনে ছিল অ্যান্টেনা থেকে এক ঘুপচি ফোনঘর।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩৯369820
  • পাখিয়াল - সায়ন কর ভৌমিক

    এখানে কিন্তু পাখির কোন গল্প নেই। তবে কিনা এই সবই ব্যক্তিগত ডাইরির পাতা, তাই নাম দিতে গিয়ে পক্ষীবিষয়ক নব্বইয়েরই কুৎসাসমূহ মনে পড়ে গেল, তাছাড়া পাখি নিয়ে ব্লার্ব লেখাও সোজা। গল্প যা আছে তা গত পঁচিশ বছরের পাল্টে যাওয়া সময়, শহর, জীবন, লোকজনের, আগরতলা থেকে কলকাতা হয়ে ইতিউতি, গোমতী এবং বুঢ়া লুঈ, হুগলী এবং হাডসন, এসটিডি বুথের বাইরে শনিবারের লাইন এবং স্মার্টফোনে ক্রমবর্ধমান জি এইসবের, আর যা নেই তা হলো পাড়ায় পাড়ায় বসে আঁকো থেকে মোহল্লায় মোহল্লায় মাতা কি চৌকি, আধুনিকতা এবং দক্ষিণপথের কাটাকুটি খেলা, হাঁটুজল থেকে ফ্লাইওভারের উন্নয়ন এবং নানাবিধ মজদুরীগত ও শৌখিন এক্সোডাসে কাস্তে আর হাতুড়ির বিরোধের রীতিমতো নাইভ অলঙ্কার ইত্যাদি। এই বদলের খতিয়ান রাখা কঠিন, এই যাত্রার বিশ্বাসযোগ্যতা যেন সন্দেহজনক। উড়ান ছাড়া কীই বা বলা যায় একে, খাদ্য এবং উষ্ণতার সন্ধানে, চোখে চোখ রেখে দেখতে পারিনা এই সময়ের স্রোতকে, পাখির চোখে দেখতে চাওয়া নাকি ওপরে তাকিয়ে ঠাহর করা ঋতুবদলের ডানার শব্দ। অযত্নের টবে উড়ে আসা পালক কুড়িয়ে তুলে রাখার পাখিয়ালি এই।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৪০369822
  • পড় শুধু স্মৃতি - শান্তনু রায়

    নব্বইয়ের দশকে জনপ্রিয় গীতিকার অনেক। তুলনায় সেলিব্রিটি কবির সংখ্যা কম। ৯০তে বাংলা কবিতার বিক্রিয়া বিপরীতমুখী। একদিকে, বৃহৎ প্রকাশন সংস্থা এবং সাধারণ পাঠকের (কে ডিম? কে মুরগি?) অন্ত্যমিল সর্বস্ব কবিতার প্রতি নতুন করে আসক্ত হয়ে পড়া, যার ফলস্বরূপ 'কশ্চিত কান্তা' এবং 'বাবুদের তালপুকুরে' কবিতাদুটির অজস্র রিমেক-এর সৃষ্টি । অপরদিকে, ৭০-৮০ দশকের প্রতিকবিতার ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে একঝাঁক তরুণ কবির নতুন কিছু ফর্মের তলাশ- এটাই ৯০-এর দশক। বার্লিন দেয়ালের ফাটল দিয়ে উড়ে আসা মৃদুমন্দ পেরেস্ত্রৈকায় এই দশকের কবিতার পাতা উড়ে গিয়েছে মুক্তলিখনির অবাধ প্রান্তরের দিকে। ৯০-এর কবিতাদর্শন নিউটন আর ইউক্লিডকে পেরিয়ে এসেছে। সাইবারযুগের প্রভাতে দাঁড়িয়ে থানইঁট সেলফোন হাতে ৯০-এর কবিরা দেখেছেন উত্তর-আধুনিক সূর্যের মায়া বিচ্ছুরণ। এই ৯০-তেই প্রথম গিটার বাজিয়ে পারফর্ম করা হয়েছে কবিতা। লেখা হয়েছে ভার্চুয়াল চ্যাটরুমে বসে ইন্ট্যার-অ্যাকটিভ কবিতা। কবিতায় এসেছে অতিচেতনার দর্শন। 'নতুন কবিতা' নিয়ে লেখালিখির সূত্রপাত এই দশকেই (অবশ্য এই কবিতা আন্দোলনে ৮০-র কবিদের অবদান সবচাইতে বেশি)। এইসময়ের কবিতায় অত্যন্ত শক্তিশালী নারীবাদ এবং অন্য যৌনতার কথা। এই দশকের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানকে আরো উদার ও প্রসারিত করেছে। খঝট ও ঊঝট-ময় এই দারুণ মস্তিবাদী দশকে বাংলা কবিতার ঝাঁ-চকচকে শপিং মলে আমি আমার স্বাক্ষর খুঁজতে এসেছিলাম।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৪১369824
  • আত্মার আশ্চর্য সেলফি - সার্থক রায়চৌধুরী

    যে পালাচ্ছে... সেই সব জানে...
    যারা ধাওয়া করছে তারা
    -এ বিষয়ে কিছু জানে না...
    জন্মঃ ১৯৬৯,১লা নভেম্বর। স্থান কলকাতা। প্রকাশিত বই একটি। নাম অন্ধকারের অনুবাদ। প্রকাশিত হয় ২০০০ সালে।
    অতঃপর এতদ্‌অবধি-
    কাম, ক্রোধ, মোহ, মাৎসর্য, লোভ, লিপ্সা, ক্ষোভ, ক্ষুধা, বিষোদগার, শিক্ষা, শ্লাঘা, অপমান, অভিমান, আমিষ ও নিরামিষ সবই এই ভবানীপুর চক্রান্তে। ... পেশা সুড়ঙ্গ আবিষ্কার। নেশা শিক্ষকতা। দায় বর্তায়। স্বপ্ন তৈরি করে নেন। মূলত ভাবুক। স্বেচ্ছানির্বাসিত স্বঘোষিত দার্শনিক। সিলিং নীচু হলে কল্পনা খাটো হয়ে যায়,... এই বিশ্বাসে এখনও অটল সেঞ্চুরি করা একটা নিশ্চল বাড়িতে হাফ গেরস্ত। সামাজিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে কমিটেড। নিয়মিত বাজার করেন। পার্টি করেন না। ব্রাজিলের হয়ে ওয়ার্ল্ডকাপ ফাইনাল তিনবার রাইট আউটের পজিশনে খেলেছেন। মাছ, বিড়াল, কুকুর, পরিচিত কাক-পক্ষীদের পাশাপাশি পাহাড় ও জঙ্গল তার নিকটতম প্রতিবেশী। একটা নতুন জলপ্রপাত আবিষ্কার করতে চান। টিভির-বিরুদ্ধে একটা মুভমেন্ট করতে পারেন বলে জানিয়েছেন। বদভ্যাস মিসড কলের উত্তর না দেওয়া, বাসের গেটে ঝুলে বা দাঁড়িয়ে যাওয়া, পোস্ট বক্সে চিঠি খোঁজা, ঠান্ডা জলের বোতলের কাচ বেয়ে গড়িয়ে পড়া জলের দিকে অনাবশ্যক তাকিয়ে থাকা....

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৪১369823
  • রেলিং জড়িয়ে প্লাস্টিক - সোমনাথ রায়

    আমাদের ইতিহাসে একানব্বই সালটার গুরুত্ব হয়ত পলাশী-বক্সার যুদ্ধের পরেই, যখন গোটা দেশটাই কোম্পানির স্পেশাল ইকোনমিক জোন হয়ে উঠেছিল। পার্থক্য, কোম্পানি এখন অনেক বেশি অ্যাবস্ট্রাক্ট আর মন্বন্তরগুলো হচ্ছে উন্নয়ন নামক পর্দার আড়ালে। নব্বই-এর দশক সেই কারণে একটা যুগসন্ধি, যার পরথেকে হুড়মুড় করে ভেঙে যেতে শুরু করেছিল যৌথতা, কৌম, সমাজ, সমাজ বদলের স্বপ্নেরা, এমনকি প্রকৃতিও। আর সেইজন্যেই নব্বই নিয়ে যেরকম নস্টালজিয়া দেখা যাবে, অন্য কোনও দশক, শতক বা সহস্রাব্দ নিয়ে তেমনটা হবে না । সেই নস্টালজিয়ার রাজনীতি থেকে গেছে ফেলে আসা পুরনো পতাকার প্রতি মৃত অনুরাগে, বাগবাজারের প্রাচীন সিঁড়ির নতমুখ বিকেলে, অথবা পরিত্যক্ত কোনও এক প্রেমের আহত দুই চোখের মধ্যে। আর এই সমস্ত প্রেম ও বিস্মৃতির মনোরম মেলাংকলি দিয়েই তৈরি হয়েছে এই বইয়ের শরীর।
    - শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৪২369826
  • সাক্ষরতা মিশন - যশোধরা রায়চৌধুরী

    আমাদের ওপর আছড়ে পড়ছিল বাহাত্তর চ্যানেল, বিকিনি পরা মেয়েদের সারি, বে ওয়াচ সিরিয়ালে, সেই প্রথম। যা নাকি বেডরুমেও ঢুকে আসছিল, কেননা টিভিও ততদিনে চ্যাপ্টা হয়ে গেছে, চিপকে গেছে দেওয়ালে দেওয়ালে।
    এর কিছুদিনের মধ্যেই সংস্কৃতি মানে রেণুকা সাহানে, খবর মানে প্রণয় রায়, ফুটবল মানে চিয়ার লিডার আর ক্রিকেট মাঠের আলোচনায় নুডল স্ট্র্যাপ পরিহিতা মন্দিরা বেদি।
    সব মানে এইভাবে পাল্টে যাবে আর আমার আর আমার সম সময়ের লেখায় আসবে মসৃণ ধাতুর শব্দ, মেট্রোরেলের সুড়ঙ্গে দ্রুতগামী ট্রেনের অনুষঙ্গ, আসবে এফ এম তরঙ্গ থেকে হাহাকার তরঙ্গমালায় ভেসে ভেসে যাওয়া প্রেমবিরহ।
    আসবে সাক্ষরতা মিশনের জিপের চাকায় বেঁধে যাওয়া গ্রামীণ অ আ ক খ। শ্যারন স্টোনের সঙ্গে শ্যামাসঙ্গীত মিলেমিশে যাবে বন্ধুদের লেখায়। অনিন্দিতা বাসস্টপ আর শ্রীহরি মিষ্টান্নভান্ডার। মিনার বিজলী ছবিঘর।
    কিছুদিন বাদে আমি সত্যিই মনে করতে পারব না কোন লেখা আমার আর কোন লেখা অন্যের। সবটা মিলেমিশে আমার মননে চেতনায় পড়ে থাকবে শুধুই নব্বইয়ের চিহ্নগুলি।

  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৪৭369827
  • নব্বইয়ের রূপকথাদের উদযাপনের একটি অধ্যায় এক ব্যাগ নব্বই - একসঙ্গে ঊনিশটি কবিতার বই, চিরঞ্জিত সামন্তের প্রচ্ছদে ধরা বদলাতে থাকা, বদলে যাওয়া সময়ের সাক্ষ্য এবং হাওয়ার শব্দ।

    এখানে থাকলো কিছু টুকরো ছবি। পড়া হোক, নীরবতাপরবর্তী কথা হোক।
  • খাতাঞ্চী | 132.167.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৭:১৫369828
  • ফেসবুক পেজ থেকে কল্পর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখাঃ

    ---

    চেয়েছি তোমার বাতাস কে ছুঁতে/ কল্পর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়

    শ্রীরামপুর পাবলিক লাইব্রেরির উল্টো দিকে যে রেললাইন সেটা পেরোলেই রেল কলোনি পুকুরের পাশ দিয়ে যে ইট পাতা গলি সেটা সোজা ঢুকে গেছে হাড়ি পাড়া লেন এর দিকে । একটা একতলা সবুজ রঙের বাড়ি, চার পাশ পলকা নিচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা । ছোট্ট গ্রিলের দরজা খুলে বাঁধানো উঠান ,আর পাঁচিল ঘেঁসে যত্নে লাগানো ফুলগাছ । চন্দ্রমল্লিকা ,গোলাপ , পটুলেখা ও আরো নানা ফুলের গাছ । বাড়ির পিছনেও একটা ছোট বাগান । সেখানে অবশ্য সবজি । লাউ কুমড়ো সিম পেঁপে । বাড়ির সামনে এদিক ওদিক একটা দুটো পুকুর পাতা । শোবার ঘর লাগোয়া লম্বা ফালি বারান্দা থেকে বসে দেখা যায় দুটো একটা ছন্ন ছাড়া হয়ে বেড়ে ওঠা নারকেল গাছ । আর আছে তাল গাছ । বাজ পড়া । পাখিও আছে অজস্র । এখনো কি আছে ? প্রমোটার আর মুঠোফোন কোম্পানিদের তাড়া খেয়ে দলে দলে সমুদ্রের ভিতর হয়তো এত দিনে নেমে গিয়ে শুয়ে আছে তারা, যেমন করে শুভেন্দুর বাবা একদিন মৃত্যুর অজ্ঞানে নেমে গিয়েছিলেন|

    আমার একসময়ের সর্বক্ষণের কবিতা সহচর ও বন্ধু শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় -এর ২০০০ সালে প্রকাশিত কবিতা গ্রন্থীকা "রুটির শিস ও আশ্চর্য চিরাগ " এর পাঠ প্রতিক্রিয়াটুকু বোঝাতেই এই ধান ভানতে শিবের গীত ।কেননা কবি শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় এর কবিতার পরতে পরতে উঠে এসেছে এই একশো মিটার বিস্তৃত হাড়ি পাড়া লেনের বস্তু পৃথিবী ও মধ্যবিত্ত দমকল কর্মী বাবা ও একসময়ে নিশ্চয় খুব ডাকসাইটে সুন্দরী ছিলেন এমন একজন মা এর কথা । কিন্তু শুভেন্দু সেটা কি ভাবে লিখেছে সেটা স্তব্ধ হয়ে দেখার । একদম প্রবেশক কবিতাটির কথাই ধরা যাক - "আমার অগ্নিনির্বাপক পিতা, মা সসাগরা এইমাত্র / হেঁসেলে গেলেন আর তাওয়ার ওপর শিস দিয়ে উঠলো রুটি " অগ্নি নির্বাপক পিতার সাথে মিলিয়ে মা শব্দের পর সসাগরা বিশেসনটি বসিয়ে ও তৈরী করে নিল ব্যান্জনা । মধ্যবিত্ত পরিবারের আমাদের সবাইকার বাবা অগ্নি নির্বাপক আর মা সসাগরা নয় কি ? এই ভাবেই বার বার উঠে এসেছে ইস্ট পাকিস্তান থেকে শুধু মাত্র প্রাণ টুকু নিয়ে পালিয়ে আসা অমৃত্তু কমিউনিসম এর আদর্শ নিয়ে বেঁচে থাকা একজন বাবার কথা । "খুব রাতে আমার বাবার আত্মা নেমে যায় বাগানের দিকে ,আমরা গোটা পরিবার তখন ঘুমে বিভোর । অসুস্থ চন্দ্রমল্লিকাটির দিকে তিনি তাকিয়ে থাকেন আর সন্ধান করেন অদ্ভুত দর্শন পোকাটির ,দেখি তার সানাই বাদকের মত ফোলা গাল ,হাঁটু অব্দি হাফ প্যান্ট ...." ( বেশী রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি )

    আমাদের গোটা নয় -এর দশক জুড়ে ছিল অনিস্চয়তা । বিশ্ব রাজনৈতিক ,আর্থ সামাজিক ,এবং বলাই বাহুল্য এখনকার দিনের ছেলে মেয়েদের মত সামনে প্রচুর কেরিয়ার তৈরী করার সুযোগ ছিল না । এখনকার দিনের মত ব্যঙ্গের ছাতার মত চারিদিকে গজিয়ে ওঠা সেলফ ফাইনানস ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ , ফার্মাসি কলেজ আর ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট ছিল না , আর না ছিল তখন আমাদের বাবা -মা দের র পয়সা । এখন সুযোগ বাড়ার ফলে মেরিট না থাকলেও চলে ,শুধু মাত্র বাবা -মা র অর্থের জোরে ছেলে -মেয়েরা কেরিয়ার বৈতরণী উতরে যায় । উচ্চমাধ্যমিক এ সাতশোর উপর পাওয়া মেধাবী শুভেন্দু তখন পদার্থ বিদ্যার সাম্মানিক। তবু শুভেন্দু কবিতা লিখতে চায়নি । যত দূর মনে পড়ে বখা চোখরার দলে মিশে গিয়ে তাস খেলত খুব আর কবি সোমনাথ মুখোপাধ্যায় এর মেয়েকে দেখতে পাওয়ার লোভে লোভে কবিতা টুকত, বড় প্রধান কবিদের এড়িয়ে, পুরনো দেশ ঘেঁটে ঘেঁটে ও বার করত অখ্যাত সব কবিদের লেখা ।হুবহু টুকে নিজের বলে নিয়ে যেত সোমেনাথ দা র বাড়ি ।সেটাই ছিল ওর পাসপোর্ট, সোমনাথদার বাড়ি ঢুকতে পারার, আর সেই সুযোগে উদ্ভিন্নযৌবনা সহেলি কে দেখতে পাওয়ার সুযোগ। কোনো দিন যদি কবি কন্যার আচড়ে ফেলে দেওয়া চুলের কুন্ডলী বা ব্যবহৃত ন্যাপকিন কুড়িয়ে পাওয়া যেত, ও সেদিন ডবল খুশি, - ও লিখেছে " সে ছিল ছলাকলার অন্তর্বর্তী ঋতু /সে হেতু বাগান পথ ঘন লাল রং /চুলের কুন্ডলী আমি পেয়েছি কুড়িয়ে /এই তুক মন্ত্র পাশে ঘুমিয়ে পড়েছ "(অশরীরী) একেবারে হুবহু টুকে লেখা থেকে অক্ষরবৃত্তের এমন নিখুঁত দুলুনি, মিথ আর ফ্যাক্ট এর অনায়াস মিশেল ,তা শুধু সম্ভভ হয়ে ছিল শুভেন্দুর জেদের কারণে । একদম খাঁটি কবিদের মতই ও একদম শুরু থেকে জানত ,যে ও পারে ঘুরিয়ে দিতে আখ্যানের শেষ অংশটুকু । কেননা সে ধরে সমস্ত ছন্দ ,ধরে কনিষ্ঠায় গিরি গোবর্ধন ।

    সহেলি বুঝতে পারে নি শুভেন্দু কে । মেয়েরা নিরাপত্তা চায় । তাই একদিন প্রজাপতি আঁকা বিবাহঋতু মাড়িয়ে আমরা সদলবলে গিয়েছিলাম সোমনাথদা-র বাড়ি ,তখন সহেলির ভুরু আঁকা হচ্ছে ,নতুন করে কেউ চিবুক তুলে ধরে ঘন পল্লব দিচ্ছে চোখে , ঘৃণার ঘিন ঘিনে লাল রং দিয়ে আঁকা হচ্ছে ঠোঁট ... আমাদের মধ্যে শুভেন্দু ছিল একদম নিরুত্তাপ । পেট পুরে খেয়ে সেদিন রাতে ও একটানা লিখে যায় গুচ্ছ কবিতা ,যা পরে বিজল্পতে ছাপা হয় । তখনও charles bukowski পড়িনি ,তখনও জানতাম না ,তিনি কত আগেই লিখে রেখে গিয়েছেন- I ”I loved you like a man loves a woman he never touches, only writes to, keeps little photographs of. I would have loved you more if I had sat in a small room rolling a cigarette and listened to you piss in the bathroom, but that didn’t’ happen. Your letters got sadder your lovers betrayed you, kid, I wrote back, all lovers betray”. কিন্তু আমার মনে হয়েছিল সহেলির একটা ফোটোগ্রাফ অন্তত শুভর কাছে থাকা দরকার | সেই প্রথম বন্ধুর জন্য ,সোমনাথদার বাড়ি থেকে সদ্য বিবাহিতার মধুচন্দ্রিমার অ্যালবাম থেকে খুলে নিয়েছিলাম একটা ছবি ,সহেলি পাহাড়ে ঝরনার ধারে তার পুরুষের সাথে । শুভ আবার কিছু কবিতা লেখে ,একটা নমুনা এখানে পেশ করতে ইচ্ছে করছে - সন্তর্পনে উঠেছি একদা পাহাড়ি ছায়ার উপত্যকায় / চেয়েছি তোমার বাতাস কে ছুঁতে বৃষ্টির মত ইষৎ ক্লিষ্ট / ভেসেছে বাতাসে পতনের কাল ধুলোয় অম্লে লতানে পুস্প /ঘিরে আছে পথ ভাঙ্গা নুড়ি আর পাতার শব্দ ( সন্তর্পনে উঠেছি একদা )

    প্রেম ছাড়া আর একটি বড় উপজীব্য শুভেন্দুর কবিতায় যা আছে তা হলো ক্ষুধা । অসামান্য উপমা আর মেটাফোরে বার বার ধরেছে তাকে কবিতায় । "যেমন পিপড়ের শ্রম নিয়ে তোমাকে চিনতে শিখি মহান খাবার এক " ( তোমাকে চিনতে শিখি ) টিউসন করে সংসার ঠেলে নিয়ে যাওয়া " /নগরীর উপাচার শিক্ষাদান শেষে /আমি ভীরু ভিক্ষুপুত্র তুলে ধরি শির /বগলে ধরেছি চেপে তালপত্র পুঁথি /ক্ষুধা ভিন্ন অন্য কোনো শব্দ নেই তাতে " ( সংসার সোনালী কিছু )

    কিন্তু এসব আমি কি লিখছি ? বন্ধুর কবিতা বই-এর আলোচনা করতে বসে , এই সব স্মৃতি -বিস্মৃতি র চেয়ে যা আরো বেশি তা তো ওর লেখা কবিতা ,যার প্রচ্ছদ স্বয়ং কবি সোমনাথ মুখোপাধ্যায় ,মানে আমাদের সোমনাথদা করে দিয়েছিলেন ।বইটার ছাপা কপি শুভ কবে খবরের কাগজওলা কে বেচে দিয়েছিল ,আমার কাছে ই-কপি পাওয়া যায় ,লাগলে চেয়ে নেবেন । আর গুরু এই বছর বইমেলায় শুভেন্দুর নতুন বই বার করেছে , নাম - যে বয়েস হরিণের নয় - চট করে কিনে ফেলুন , বইটি আউট অফ মার্কেট হওয়ার আগেই ।
  • খাতাঞ্চী | 132.172.***.*** | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১১:০৩369829
  • ফেসবুক পেজ থেকে কল্পর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখাঃ
    ---
    শরীর, -শরীর শুধু । মন পোড়ে মনস্কামনায ।/ কল্পর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়

    কোনো এক পূর্নিমার রাতেই কি এক দিন হিন্দোল এর বাবা মারা গিয়েছিলেন ! জানি না । কিন্তু মিথ ও ঈশ্বর নামক হিন্দোল এর এই অপ্রকাশিত বই এর প্রথম কবিতা"বসন্তপূর্নিমা " পড়তে গিয়ে আমার এরখমই মনে হল । বন্ধুদের নিয়ে লেখার সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো এই যে লিখতে বসলেই বন্ধু অনুসঙ্গ আমাকে তাড়া করে ফেরে ,বডসাধ হয় ,কবি আর বন্ধু কে এক সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে পড়ি ,ভালোলাগা গুলো পাঠকদের বুঝিয়ে বলি ,বলি এই যে লাইনটি সে লিখেছে " রথের চাকাও বসে গেছে আজপাঁচমাথার মোড়ে ,-/তোমাকে কোথাও আর দেখি না সারথি ।"এই লাইনটি একান্ত নব্বইদশক গন্ধি । কিন্তু যেহেতু কারুবাসনা আছে , যেহেতু হৃদয়ের জ্যোত্স্নার আলো আছেতাই সে লেখে " আমার সময় কম চিঠি লিখতে হবে , তাই / সামান্য কয়েক ঘন্টা অবসর ফাঁকি দিয়ে নেব .../ আকাশ দপ দপ করছে চাঁদের ছায়ায় ।

    গোটা নব্বই দশক অনিশ্চিয়তার দশক । আর সেই দশকের সময়চিহ্ন লেগে আছে, এই অপ্রকাশিত কবিতা বইয়ের পাতায় পাতায় ।"হোচট খেয়েছি রাস্তা ,তোমার কি মা-বাপকেউ নেই?/ গরীব ট্রামের মত ফাঁকা মন নিয়ে /কলকাতাও কষ্ট হয়ে আছে । আর ঠিক তারপরেই দুই অনুচ্ছেদের শ্বেত শূন্যতার পর হিন্দোল লেখে ..." এখানেই জন্ম হয়েছিলতাই সমাধি রয়েছে ... আমার মুখ খারাপ করতে ইচ্ছে করে কোন ......( ছাপার অযোগ্য ) বলে যে নব্বই এর নিজের কাব্যভাষা নেই, নিজস্ব মনন নেই । আইজেসটাইনদেখানো সেই ছোট ছোট দৃশ্য জুড়ে জুড়ে এক আশ্চর্য মন্তাজ । মাত্র কযেকটি শর্ট এর নিখুত এডিটিং এ হিন্দোল ধরে ফেলল গোটা নব্বই এর সময় কাল ? কিন্তু কেশেখালো এই নিখুত এডিটিং তোকে, হিন্দোল ? অরূপরতন ?ভাস্কর দা ?

    প্রথমে যাকে অপ্রেম ভেবেছিলাম পরে দেখলাম তা আসলে বিরহ । প্রেম ভেঙ্গে গেলে ,প্রেম চলে গেলে ,যেমন নতুন করে আবিস্কার করি আমরা ,সবটাই তার দোষ ছিল না ,দোষ ছিল আমাদের ও ,আমরাই আরো ভালো প্রেমিক হয়ে উঠতে পারিনি ,পারিনি সার্থক স্বামী হয়ে উঠতে ...সেই হাহাকার ,কখনো যা স্বান্তনা হয়ে ফেরে,আমরা নিজেইনিজেকে প্রবোধ দি , আবার জন্ম নেয় চিন্তার বৈপরিত্য ,পাশাপাশা রাখা দুটি কবিতা " মোক্ষ " আর "কাম " পড়লে তা বোঝা যাবে । মোক্ষ কবিতায় যে প্রেম কিনা টলমলনেশা, যা তাকে কিনা মরীচিকার মত টেনে নিয়ে গেছে,তবু তার জন্য তার কেন চিন্তা হয় ? কেন স্বপ্নে তার কাপাকাপা হাতে লেখা চিঠি ফিরে আসে ? একদিন তো এই জীবনশেষ হয়ে যাবে ,কিন্তু তার আগে পাশাপাশি শোবার মত অনেক রাত পড়ে আছে । আবার কাম কবিতায় হিন্দোল স্বগতোক্তির মত করে বলে " যা নয় ,জীবন তার জন্য কেনকান্নাকাটি হবে ? কিন্তু কি অসামান্য সেই সব আত্মপ্রবোধ , আমি মন্ত্র কবিতা টি তুলে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছি না ।

    যেটুকু বিষাদ জানো ,ভোর বেলা বলে ফেলো সব ।

    অযথা আযনার দিকে তাকিয়ে থেকো না ...

    এত চিঠি লিখো না নিজেকে

    হাঁ -করে তাকিয়ে থাকা

    বিছানায় শরীর সাজাও

    মনে করো সমুদ্রের ধারে শুয়ে আছ যেন

    সমুদ্রও জোয়ার হয়ে তোমাকেই ফিরিয়ে দিয়েছে

    সেই কবে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন " শরীর শরীর , তোমার মন নাই কুসুম " আর হিন্দোল এর এই অপ্রকাশিত "মিথ ও ঈশ্বর " পড়তে পড়তে ,সেই মনকেই মনস্কামনায় হু হু পুড়ে যেতে দেখলাম ।দেখলাম মৃত্যু আর মন খারাপের মেঘ ঝুলে রয়েছে বই এর পাতায় পাতায় ।

    পাঠক সেই মন খারাপ আপনাকেও স্পর্শ করবে । গুরু এই বছর বইমেলায় হিন্দোলের নতুন কবিতা গ্রন্থিকা - "লেখো আলো লেখো অন্ধকার" প্রকাশ করেছে । - চট করে কিনে ফেলুন , বইটি আউট অফ মার্কেট হওয়ার আগেই ।
  • r2h | ***:*** | ২৯ জুলাই ২০১৯ ১০:২৫369831
  • r2h | ***:*** | ২৯ জুলাই ২০১৯ ১০:২৬369832
  • r2h | ***:*** | ২৯ জুলাই ২০১৯ ১০:২৬369833
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন