এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপঙ্কর | 116.203.***.*** | ২৭ জুলাই ২০১৭ ২২:৩৮368436
  • নীতিশকুমারকে তেড়ে গাল দিচ্ছে বিজেপি বিরোধী জনতা। আচ্ছা, নীতিশকুমারের কাছে কি আশা ছিল? উনি নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে লালুর দাবী মেনে নিয়ে সেকুলার ভারতবাসীর আইকন হিসেবে নিজেকে তুলে ধরবেন? নীতিশের প্রায়োরিটি কি? বিহারের মুখ্যমন্ত্রী থাকা, না কি রাহুল গান্ধী আর সীতারাম ইয়েচুরির মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছবির পোজ দেওয়া? যদি বিহারের কথা ভাবি, লালুর গোয়ালের প্রতিটি গরু জানে রাজ্যের রাজনীতিতে দুজনের সম্পর্ক ভারত-পাকিস্তানের মতই। তা সত্ত্বেও নীতিশ দুবছর আগে হ্ঠাৎ চেগে উঠে মহাজোট না কি একটা যেন, তাতে পাখার বাতাস করেছিলেন কেন? একটাই কারন, নরেন্দ্র মোদী। নীতিশকুমার এবং নরেন্দ্রমোদী দুজনে মোটামুটি একই সময়ে ভারতের দুই প্রান্তের দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। দুজনেই প্রশাসক হিসেবে নাম কিনেছেন। মোদীকে আপনি গুজরাট দাঙ্গা এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতির জন্যে তেড়ে গালাগাল দিতে পারেন, কিন্তু গুজরাটে গিয়ে সেখানকার সাধারণ মানুষ ( মুখ্যত হিন্দু) -এর সাথে কথা বললে বুঝবেন প্রশাসক নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা। ভারতবর্ষে দক্ষ প্রশাসকের অভাব প্রতিটি রাজ্যেই বেশ অনুভূত হয়। কিছু কিছু ব্যাতিক্রম আছে, যেমন জয়াললিতা, যেমন নরেন্দ্র মোদী, যেমন নীতিশকুমার। শুনেছি, মায়াবতীও প্রশাসক হিসেবে বেশ কড়া ছিলেন। এর সাথে দূর্নীতি গুলিয়ে লাভ নেই। ভারতের রাজনীতির তথা ভারতবাসীর দুর্ভাগ্য যে বেশীর ভাগ রাজনীতিক দূর্নীতিতেই এত মত্ত হয়ে পড়ে যে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ত্বের কথা একেবারে ভুলে যায়। অনেকে আবার দূর্নীতিগ্রস্ত না হলেও প্রশাসক হিসেবে একেবারে ব্যার্থ। এমন অবস্থা আমাদের রাজ্যেই দেখেছি 2006-11 এই পাঁচ বছরে। রাজ্যে কোথায় কি ঘটছে, সরকারের কোন রাশই নেই তার ওপর। এদিকে সিঙ্গুরে গন্ডগোল চলছে, তাই সামলাতে বেহাল অবস্থা, ওদিকে আবার সেই সময়ে কে গিয়ে নন্দীগ্রামে জমিদখলের নোটিস দিতে চলে গেল ! মুখ্যমন্ত্রী এক বলেন, দলের লোকেরা অন্য কথা বলে। প্রোমোটার আর দালালে ছেয়ে গেছে বামদল। কিছু বললেই শোনা যায় "বেনো জল" ঢুকেছে !

    বলছিলাম নীতিশকুমারের কথা। সেদিন NDTV তে রামচন্দ্র গুহের একটি সাক্ষাতকার। রাম গুহ নি:সন্দেহে বিজেপি বিরোধী, বাম ঘেঁষা। সম্প্রতি মোদী সম্পর্কে কিছু কথা বলেছিলেন যা বাম মহলে সমালোচিত হয়েছিল। সেদিনও বললেন, মোদী যে ভাবে নিজের ইমেজ তৈরি করেছেন কড়া প্রশাসক হিসেবে তার সাথে তুলনা করার মত নেতা বিরোধী শিবিরে একেবারেই নেই। রাহুল গান্ধী প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্যের সাথে অনেকেই একমত হবেন। বললেন, রাহুল কংগ্রেসের সবচেয়ে উপকার করবেন যদি তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে নেন। তা, নীতিশকুমার কে বিরোধী নেতা হিসেবে গুহ'র খুব পছন্দ। নীতিশ হচ্ছেন, leader without party, and congrss is party without leader। ঠাট্টাচ্ছলেই বলে ফেললেন মোদীর প্রতিদ্বন্দী হিসেবে কংগ্রেস যদি নীতিশ কে তুলে ধরে তাহলেই একমাত্র বিজেপিকে রোখা সম্ভব।

    এই যে মোদীর পরিবর্ত হিসেবে নীতিশ - এ স্বপ্ন সবচেয়ে বেশি দেখেছিলেন নীতিশ নিজে। বিজেপি নিয়ে অছ্যুত ভাব নীতিশের কোনদিনই ছিল না। বিজেপিকে সঙ্গী করেই তিনি এতগুলো বছর রাজ্যপাট সামলেছেন। নীতিশের সাথে মোদীর ছিল এক অন্য লড়াই। দুই রাজ্যের দুই মুখ্যমন্ত্রী - একজন বিজেপি বলেই প্রধানমন্ত্রী হয়ে যাবেন, এ নীতিশের সহ্য হয়নি। যে কারনে আজকাল আঞ্চলিক দলের এত রমরমা, তা হল কংগ্রেস দলের নেহেরু-গান্ধী পরিবার কেন্দ্রীকতা। কংগ্রেস দলে থাকলে বড়জোর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। রাহুল গান্ধী যত অযোগ্যই হোক না কেন, তার পায়ের তলায় পাগড়ি খুলে রাখতে হবে। কোন মান-সম্মান এবং উচ্চাশা সম্পন্ন নেতার পক্ষেই এ মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। শরদ পাওয়ার বা ভি পি সিংহ মানেন নি। নীতিশ তো জেপি'র চেলা ছিলেন। বরাবর কংগ্রেস বিরোধী শিবিরে। তখন জনসংঘ তথা বিজেপির এই রমরমা ছিল না। থাকলে হয়তো তখন থেকেই বিজেপি করতেন। কে বলতে পারে, তাহলে নীতিশ আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতেন না?

    মোদী প্রধানমন্ত্রী পদের দাবীদার হতেই নীতিশ ভেবেছেন এসব কথা। নিজের দূর্ভাগ্যের জ্বালা থেকেই তার মোদী বিরোধীতা। নইলে, মোদী খারাপ, বিজেপি ভাল - এ বলার মত মানুষ নীতিশ নন। এখন যেমন অনেকের কাছে শুনি, মোদী খারাপ, আদবানি ভাল। আগে শুনতাম, আদবানি খারাপ, বাজপেয়ী ভাল। এসব স্রেফ ন্যাকামো। বিজেপির মত দল সব সময়েই খারাপ। সে তার নেতা বাজপেয়ী হোক বা মোদী হোক। কিন্তু ঘটনা হল, রাজনৈতিক শৃঙ্খলা থাকার জন্যে বাজপেয়ী বা মোদীরা প্রশাসক হিসেবে ভাল, শৃঙ্খলাহীন কংগ্রেস নেতাদের থেকে। কংগ্রেস নেতারা জানেন, তারা যতই দক্ষ হোন না কেন, গান্ধী পরিবারের ভৃত্য মাত্র।

    এই সব ভেবে চিন্তেই নীতিশের মোদীর ওপর রাগ দেখিয়ে NDA ছাড়া, আবার রাহুল গান্ধী তথা বিরোধীদের দিশাহীন অবস্থা দেখে ফিরে আসা। নীতিশ বুঝে গেছেন, তীর ছোঁড়ায় সমান দক্ষ হলেও প্রধানমন্ত্রীত্ব রূপী পাঞ্চালী তাঁর কণ্ঠলগ্না হবে না। এখন শুধুশুধু রাহুল-সীতারামের কাছে বার খেয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীত্ব খোয়ানোর মানে হয়না।

    তবে, একটা চিন্তা তিনি করেছেন কি? একবার বিদ্রোহ করলে রাজা মুখে যতই মিস্টি হাসুন না কেন, বিশ্বাস আর করেন না বিদ্রোহীকে। এর পরের রাজ্য নির্বাচনে নি:সন্দেহে অমিত শাহের টার্গেট হবে নীতিশের দলের থেকে বিজেপির বেশী বিধায়ক সংখ্যা রাখা। লালু নিজের বেশি বিধায়ক সত্ত্বেও নীতিশকে মুখ্যমন্ত্রী মেনে নিয়েছিলন। অমিত শাহ কি সেটা করবেন?
  • দেব | 57.***.*** | ২৯ জুলাই ২০১৭ ০০:৩২368437
  • হুঁ ডানদিকেও চোর বাঁদিকেও চোর। বেশী ভেবে লাভ নেই একটু হালকা ভেসে আর কটা বছর গদিতে থাকলে আমিও দোষ দেব না। যে দেশের যা ধর্ম।
  • মোদী | 182.58.***.*** | ২৯ জুলাই ২০১৭ ০০:৪৪368438
  • কড়া প্রশাসক হিসেবে মোদী কি করেছেন? আচ্ছে দিন কি হল? সেই কালো টাকা ফেরত আনা? ডিমনিটাইজেশন, কাশ্মীর কোনোটাই তো সামলাতে পারে না। ট্রাম্পের পীড়িক খেয়ে চীনের লাথি খেয়েছে। এর কোনটা দক্ষ প্রশাসকের লক্ষন?

    দুকান কাটা না হলে কি আর গোবৎস হওয়া যায়?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন