এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সেখ সাহেবুল হক | 212.142.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৭ ০৮:০৮368241
  • কিছু তাৎক্ষণিক কথা...
    -----------------------------------------------------------
    ইনস্ট্যান্ট তিন তালাক আমি আমার পঁচিশ বছরের জীবনে দেখিনি। হয়তো এ আমারই সীমাবদ্ধতা। বনিবনা না হওয়ায় দু একটা মিউচুয়াল তালাক, স্বামীর উপর অভিযোগ এনে স্ত্রীর তালাক চেয়ে বিচ্ছেদ শুনেছি। কড়ায়গণ্ডায় স্বামীকে ক্ষতিপূরণ দিতে দেখেছি।
    সত্যি বলতে তাৎক্ষণিক তালাক নিয়ে যত রাজনৈতিক চেঁচামিচি হচ্ছে, সেই তুলনায় তাৎক্ষনিক তালাকের ঘটনা মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজতে হবে।
    তালাকের অপব্যবহার করাটা অন্যান্য নিয়ম ভাঙার মতোই, সেক্ষেত্রে শাস্তি কড়া হোক। কিন্তু যারা তালাক শব্দটি নিয়ে বিন্দুমাত্র ধারণা রাখেন না, তাঁরাও নারী স্বাধীনতার জয় বলে লাফাচ্ছেন!
    হ্যাঁ, আদালতের রায়কে সকলের দারুণভাবে স্বাগত জানানো প্রয়োজন, কারণ পুরুষশাসিত সমাজে কিছু মানুষ মনগড়া নিয়ম দিয়ে তালাকের অপব্যবহার করে আসছিলেন। যা শরিয়তবিরুদ্ধ।

    একবার এক কাজের মাসির স্বামী চিঠিতে লিখেছিলেন- “মনমিলন না হওয়ায় ছাড়িয়া দিলাম”। তিনি ওই মহিলাকে তালাক দেননি। অথচ আর সংসার করেননি। সেসব মহিলার কথাও আমাদের ভাবা দরকার। এদেশে হিন্দু-মুসলমান বলে নয়, নারীরা অত্যাচারিত শুধুমাত্র নারী হওয়ার কারণে।

    আমার জ্ঞানের পরিমাণ খুবই নগণ্য। তবু তাৎক্ষণিকভাবে কিছু তালাক বৈধ হয় না বলেই জানি - ১)মদ খেয়ে
    ২)তর্ক করে বা বাজী ধরে।
    ৩)রাগের বশবর্তী হয়ে।
    ৪)ইয়ার্কি করে।
    ৫)চিঠি, মেসেজ, ফোনে, হোয়াটস অ্যাপে, ফেসবুকে তালাক চলে না।
    এগুলোকেই তাৎক্ষণিক তালাক বলে।
    ধরুন কোনও মদ্যপ ব্যক্তি, মদ খেয়ে এসে স্ত্রীকে তালাক দিলেন। সেক্ষেত্রে তালাক বৈধ নয়। কারন প্রথমত মদ হারাম, দ্বিতীয়ত অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় তালাক হওয়া সম্ভব নয়।

    ইসলামে ‘কবুল, কবুল, কবুল’ বললেই যেমন বিয়ে হয়ে যায় না, তেমনি ‘তালাক, তালাক, তালাক’ বলে বিচ্ছেদ সম্ভব নয় একেবারে। নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এই ব্যাপারে সার্বিক অজ্ঞানতা, ব্যাপারটিকে জটিল এবং সস্তা করে তোলে। অপপ্রচার এবং ভুল ধারণা ‘তালাক’ শব্দটিকে খুবই বালখিল্য পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে। এতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও রয়েছে।

    তাৎক্ষণিক তালাককে ইসলাম বৈধতা দেয় না, অন্ততপক্ষে সেটাই ইসলামের বিধান। ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা সেটাকেই সাংবিধানিক মান্যতা দিলো। এটা খুব খুশির খবর। কিন্তু এটাকে শরীয়তী বিধানে সরকারি সিলমোহর বলাই যুক্তিযুক্ত।

    কিন্তু এটা নিয়ে অন্যরকম রাজনীতি দেখতে পাচ্ছি। মানে যে সরকার মুসলিম পুরুষ হত্যায় চুপ, অথচ নারীদের তালাক নিয়ে রাজনীতি করতে তৎপর। সেক্ষেত্রে মুসলিম পুরুষ-মহিলাদের মধ্যে অবিশ্বাসের রাস্তা তৈরীর চেষ্টা চলছে।

    কিছু মানুষদের দেখে হাসি পাচ্ছে, যারা সারাবছর মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়িয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধন করেন। আজ তারাই লিখছেন - “আদালতের এই রায় মুসলিম নারীদের জন্য ইতিহাস”। কিন্তু ইতিহাস অনেক দূরে। মুসলিম নারীরা যতদিন না শিক্ষায় এগোচ্ছেন। সার্বিক পরিবর্তন মুশকিল।

    হ্যাঁ, সত্যিই ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু যারা এসব বলছেন, তাঁদের অধিকাংশই তালাকের বিধানগুলো পড়ে দেখার সততা দেখাননি। এমনকি আগামীতেও তাঁরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়ে যাবেন। বিশ্বাস করবেন ‘তালাক, তালাক, তালাক’ বলেই একজন পুরুষ স্ত্রীকে বর্জন করতে পারেন! মানে ইসলামিক বিধান এতোটাই সস্তা।

    তালাক একটি বিচ্ছেদের পন্থা মাত্র। যাতে পুরুষ চাইলেই কাউকে ত্যাগ করতে পারেন না। একেবারে তো নয়ই। এক তালাক, দুই তালাক, তিনতালাক স্টেপ অনুসারে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে তালাক দিতে হয়। তার আগে সাবধান করার ব্যাপারও থাকে। সেগুলো আমরা আমাদের অজ্ঞতার কারণে বা অপপ্রচারে জানলেও ভুল জানি। স্বামী বা স্ত্রী উভয়ের অধিকার আছে তালাকে। এটিই অধিকাংশ মানুষ জেনে উঠতে পারেননি।
    পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের জোরের কারণে হয়তো তালাকটাকে ‘পুরুষের একমাত্র অধিকার’ হিসেবে ভুল হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা অন্য কথা বলে।

    তালাক নিয়ে ছোটখাটো সংস্কার, সচেতনতা ইত্যাদি খুব ভালো জিনিস। কিন্তু রাজনীতি করতে চাওয়া, বা তালাক ব্যাপারটা বিন্দুমাত্র না জেনে তালাক ইস্যু তুলে ব্যর্থতা ঢাকতে চাওয়াটা ঠিক নয়।

    আপনি খুব আশেপাশে কমজনকেই পাবেন, যাঁদের তালাক হয়েছে। আর ফোনে বা ফেসবুকেই যদি তালাক গ্রহণযোগ্য হতো, তাহলে মুসলিম সমাজে বৈবাহিক সম্পর্ক বলে কিছু থাকতো না। চিঠিতে বা টেলিফোনে তালাক কজন দেখেছেন তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

    সবার আগে তালাক নিয়ে অল্পবিস্তর জানার সদিচ্ছা তৈরী করতে হবে। তাৎক্ষণিক তালাকটাই যে ইসলামে নেই, সেটাই অনেকে জানতেন না। হয়তো এখনো না জেনেই তর্ক করে যাচ্ছেন। অনেকে আবার তাৎক্ষনিক তালাক আর বিধিসম্মত তালাক গুলিয়ে ফেলছেন। অনেক নিউজ পোর্টাল অর্ধসত্য খবর ছড়াচ্ছে!

    একজন অমুসলিম ভাই অবশ্যই তালাক নিয়ে বলবেন। ভুল থাকলে সেটা নিয়ে আলোচনা, বা সংস্কার হবে। কিন্তু নারীদের সমস্যাটা শুধু মুসলিম সমাজেই নেই। বৈবাহিক ধর্ষণ, শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার, বিচ্ছেদ না করে পরিত্যাগ করার মতো জঘন্যতম কাজগুলোতে হিন্দু-মুসলিম লাগে না। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখানোর চেষ্টা চলছে যে - “যা কিছু সংস্কার, সব মুসলিমদেরই প্রয়োজন”। এটা বিভাজনের কৌশলমাত্র। এখানে আপত্তি থেকেই যায়।

    পুত্র সন্তান না হওয়ায় গায়ে অ্যাসিড দেওয়া, বাড়ির বউকে কুকুরের মতো ট্রিট করার ঘটনা শুধু ফতেমা বিবিদের ক্ষেত্রে হয় না। পিরিয়ড চলাকালীন মন্দিরে ঢুকতে না দেওয়া নারীর অধিকার ছিনিয়ে আনার বিরুদ্ধেও আমাদের সংবিধান তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নিক।
    পারিবারিক হিংসা হোক আর প্রকাশ্যে ধর্ষণের মতো ঘটনায় সাজা না পাওয়ার পাশাপাশি, প্রচুর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা এদেশে ঝুলে আছে, সেগুলো নিয়েও মানুষ নাজেহাল। সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন। এমনকি ধর্ম নির্বিশেষে বিচ্ছেদ না হওয়া পরিত্যক্তা স্ত্রীদের কথাও ভাবার সময় এসেছে।

    কয়েকটি প্রশ্ন উঠে আসে -
    ১)বিজেপি তালাক নিয়ে যতটা তৎপর, মুসলিম নারীদের সার্বিক উন্নয়নে ততটা দয়াবান নয় কেন?

    ২)সরকার চাপে পড়লেই কেন তালাক প্রসঙ্গ ঘুরে আসে?

    ৩)মুসলিম নারীদের পৃথকভাবে দেখতে গিয়ে আরেকটা বিভাজনের চেষ্টা নয়তো?

    তাৎক্ষণিক তালাক আগেও ছিলো না। তবে এবার অপপ্রয়োগ করাটা কঠিন হবে। এটা একটা ভালো দিক।
    কিন্তু আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে নারীদের উপর অত্যাচার বন্ধ হওয়ার উপর। সেখানে হিন্দু-মুসলমান রাজনীতির চেষ্টাকে প্রতিরোধ করতে হবে।

    বিশ্বের কিছু দেশ পুরোপুরিভাবে তালাকের নিয়ম বাতিল করেছে। আগামীতে ভারতীয় মহিলারা যদি সত্যিই এটিকে অকেজো মনে করেন সেক্ষেত্রে তালাক নিয়ে ভাবা যেতে পারে। হ্যাঁ, একমাত্র সমগ্র ভারতের মহিলারাই এই ব্যাপারে দাবী তুলবেন। শুধুমাত্র তাঁদেরই অধিকার আছে। বাকিটা আদালত বুঝবেন।
    কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের অতিরিক্ত দরদ দেখানোর জায়গা নেই। অতি ভক্তি দেখে কিছুটা হলেও রাজনীতির আঁচ করা যায়।

    তালাকের নির্মূল হওয়া নিয়ে যাঁরা গলা তুলছেন, মুসলিমদের মুন্ডুপাত করার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন। তাঁদেরও নিরপেক্ষ হতে হবে।

    ডাইনি সন্দেহে পুড়িয়ে মারা আদিবাসী মহিলার ছাইয়েও একটা ভারতের মানচিত্র আঁকা হয়, নগ্ন করে পেটানো নিম্নবর্ণের যুবতীর ভ্রষ্ট ইজ্জত সভ্যতার মাইলস্টোন গড়ে, পণের জন্য বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা নববধূর শেষ নিঃশ্বাসে ভারত মহাসাগরে তুফান ওঠে। প্রেমের অপরাধে কিশোরীর টেনে ধরা সালোয়ারের ওড়নায় যে সনাতনী দাদাগিরির অঙ্গীকার, তার দায় নিয়ে ভারত মাতা কি নগ্ন হবেন? এসবের বিচার হতে কতদিন!
    মন্দিরের দ্বার যে ঋতুবতীর জন্য বন্ধ, কিংবা স্বাধীনতা দিবসে ধর্ষিতা কিশোরীর বিচার নিয়েও আমাদের গলা তুলতে হবে। দ্রুত বিচার চাইতে হবে।
    এসব তালাককে ডিফেন্ড করতে চাওয়া নয়। তালাকের সংস্কার চাইলে, শূদ্র রমনীর হাতেও তুলে দিতে হবে পুজোর ডালা...। সেই সাহস কি দেশের বর্ণপ্রথার বাহকদের আছে? খাপ পঞ্চায়েত, অনার কিলিং, দেবদাসী প্রথার বিলুপ্তিও সময়ের দাবি।
    সেদিন আমি অন্ততপক্ষে ভারত মাতা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে দাবী তুলবো না।

    একটি মেয়ে একবার তার মাকে বলেছিলো, - ”মা ছেলেটা মুসলিম তো কি হয়েছে। সে তো ভালো ছেলে…”
    উত্তরে মা বলেছিলেন - “বিয়ে তো করবে, শেষে তালাক দিয়ে ছেড়ে দেবে…।”
    উচ্চবর্ণের শিক্ষিতা বাঙালী হিন্দু মায়ের তালাক সম্পর্কে যদি ধারণা এমন হয়। কি আশা করা যাবে সমষ্টির কাছে?
    সেই মেয়ের হাত ধরে কোনও এক বিকেলে ছেলেটি মজা করে বলেছিলো, চাইলে তুই তালাক দিস আমায়। আমি নাহয় উদাহরণ হবো তোর মায়ের জন্য...।
    এসব গল্পগাথা নয়, লিখতে গেলে অতীতে ফিরে যেতে হয়। পাশাপাশি দুটো ধর্ম রয়েছে। কিন্তু খালা, ফুফু ইত্যাদি যে কাকে বলে আমরা জানি না, সেখানে তালাক বুঝতে চাওয়ার ইচ্ছেটা অনেক অনেক পরে। তাৎক্ষণিক তালাক নিয়ে প্রশ্ন করলেই, চুপ করে যাচ্ছেন...।

    তাৎক্ষনিক তালাকের রায় নিয়ে কোনও মুসলমানের সমস্যা থাকাই উচিত নয়। কিন্তু শুধু মুসলিমদের নিয়মকানুনের সংস্কার দাবি উঠলে, ‘ওদের সব খারাপ’ বার্তাটাকে জোরালো করতে চাওয়ার মতো নিন্দনীয়। অন্যের সমালোচনা করার আগে বিষয়টি নিয়ে সম্যক জ্ঞান এবং নিজের অবস্থানটাও দেখতে হবে। আমি বা আমার রীতিনীতি সমালোচনার উর্ধ্বে তো!
    ফতেমা বিবিকে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে তালাক দিতে চাওয়ার খবরে যেমন চোয়াল শক্ত হয়, তেমনি সুপর্ণা নামের কারো স্বামীর অকাল প্রয়াণে তাঁকে থান পরিয়ে লাথি মেরে বের করে দেওয়াতেও আমরা যেন রুখে দাঁড়াই...।

    দিনের শেষে তালাক একটা বিচ্ছেদের উপায়। পুরুষশাসিত সমাজের প্রভাবের কারণে যার অপব্যবহার হয় কিছু ক্ষেত্রে। এদেশে যে কোনও ধর্মাচরণে পুরুষের প্রভাব অস্বীকার করা যায় না।

    #হককথা
  • ... | 83.15.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৭ ০৯:১১368246
  • বিজেপি খারাপ, ফুটে গেলে ভালো হবে। তিন তালাক খারাপ, উঠে গিয়ে ভালো হয়েছে।
  • সিকি | 158.168.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৭ ০৯:৩৮368247
  • "এদেশে হিন্দু-মুসলমান বলে নয়, নারীরা অত্যাচারিত শুধুমাত্র নারী হওয়ার কারণে"

    দেবেনবাবুর স্টাইলে বলতে ইচ্ছে করছে - দেশের রাজা যদি এই ভাষা বুঝিতেন, তাহা হইলে তোমাকে দেশদ্রোহী বলিতেন।

    খুব দরকারি আর সময়োপযোগী লেখা।
  • amit | 149.218.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৭ ১০:১২368248
  • চমকপ্রদ সব তথ্য জানা যাচ্ছে গত দুদিন ধরে: "তাৎক্ষণিক তালাকটাই যে ইসলামে নেই, সেটাই অনেকে জানতেন না। হয়তো এখনো না জেনেই তর্ক করে যাচ্ছেন। "

    ইসলামে যেটা নেই, তো এপিএলএমবি ঠিক কিসের জন্য কপিল সিবাল কে এতো টাকা দিয়ে মামলা লড়াচ্ছিলেন ? যেটা অলরেডি নেই, সেটা নতুন করে আবিষ্কার করে সেটাকে বেআইনি ঘোষিত করার জন্য ? এতো প্রায় কলম্বাস এর আমেরিকা আবিষ্কারের মতো ঘটনা। সত্যি, মামলা হলে কত কি জানা যায়।

    "তাৎক্ষণিক তালাককে ইসলাম বৈধতা দেয় না, অন্ততপক্ষে সেটাই ইসলামের বিধান। ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা সেটাকেই সাংবিধানিক মান্যতা দিলো। এটা খুব খুশির খবর। কিন্তু এটাকে শরীয়তী বিধানে সরকারি সিলমোহর বলাই যুক্তিযুক্ত।"- ওফ- জাস্ট অসাধারণ পর্যবেক্ষণ। আশা করি সুপ্রিম কোর্ট কে এবার শরিয়া কোর্ট বলা হবে এপিএলএমবি এর তরফ থেকে-?? আর এতো পয়সা দিয়ে বড়ো বড়ো উকিল ধরে মামলা লোৱাৰ দরকার কি ?

    কোথাও কি কেও বলেছেন যে তিন তালাক মামলা সমাধান হলে বাকি সব সমস্যা মিটে যাবে ? বাকি সব সমস্যা আছে অথবা তিন তালাক শতাংশের হিসেবে আসে না, তাই সেটা নিয়ে কিছু করার দরকার নেই। এতো চোর ধরা যায়নি বলে পকেটমার ধরা যাবেনা ধরণের কথা বার্তা।
  • Zakia Soman | 113.246.***.*** | ২৫ আগস্ট ২০১৭ ১২:০৬368249
  • https://mumbaimirror.indiatimes.com/mumbai/cover-story/taaliyan-taaliyan-taaliyan/articleshow/60183712.cms
    Soman, on her part, is one of the early fighters against the practice of triple talaq in the Muslim community and had organised the women of her community and brought them under one banner — Bharatiya Muslim Mahila Andolan — to fight against the practice.
    Today, she stands vindicated, but she believes that more needs to be done. "Legal change alone is not enough.
    There is a lot more that needs to be done. We have to educate the girls of our community above 14 years about their rights. We now expect a lot of people to join us," Soman told Mirror.
    At the same time, she conceded that it was the government's affidavit upholding Constitutional values that went a long way in helping their cause. She is not sure if any other government would have done so. After all, Prime Minister Modi had himself vowed to do away with the practice of triple talaq in his Independence Day address.
  • জিজি | 127.194.***.*** | ২৬ আগস্ট ২০১৭ ১৭:৩২368252
  • এ প্রসঙ্গে বলি, সুপ্রিম কোর্টের বাতিল করা তালাক হলো ইনস্ট্যান্ট তালাক: তালাক-ই-ইদ্দত। কোরআন শরীফে যার বিশদ বিবরণ আছে সেটা কিন্তু তিন মাস ধরে ধাপে ধাপে ঘটা তালাক: তালাক-ই-সুন্নাহ।

    তালাক-ই-সুন্নাহ হতে পারে :
    ১) স্বামীর পক্ষ থেকে - কখনোই মুখে পরপর তিনবার তালাক বললেই তালাক হয়না। তালাক দিতে হলে স্বামীকে তালাক দেওয়ার খবরটি নোটিস মারফত স্ত্রী ও এলাকার চেয়ারম্যানকে জানাতে হবে। নোটিস পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে দুই পক্ষের লোকজন নিয়ে চেয়ারম্যান একটা সালিশি ডাকবে ও দুই পক্ষকে ৯০ দিনের নোটিসপিরিয়ড দেওয়া হয়, পুনর্বিবেচনার জন্য।

    ২) স্ত্রীর পক্ষ থেকে - বিয়ের সময় নিকাহনামার ১৮ নং ঘরে প্রশ্ন থাকে -" স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা অর্পণ করেছে কিনা? করলে কী শর্তে?" (মধ্যযুগীয় মেইল ডমিনেন্স বজায় রাখার এ নিয়মটি এখনো বহাল তবিয়তেই আছে) স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা 'দান' করে থাকে তাহলে তাকে 'তালাক-ই-তৌফিজ' বলে। এক্ষেত্রেও একইভাবে স্বামী ও চেয়ারম্যানকে নোটিস পাঠিয়ে তালাক দিতে হয়।

    ৩) খুলা বিচ্ছেদ- এক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া হয়, খোরপোষ বাবদ।

    ৪) মোবারাত -এটাও একই ধরণের মিউচ্যুয়াল ডিভোর্স। তবে এক্ষেত্রে সম্পত্তি বা অর্থের বিনিময় ছাড়াই বিচ্ছেদ হয়।

    ৫) আদালতে আবেদনের মাধ্যমে

    তালাক-ই-ইদ্দত কিন্তু কোরআন এ নিষিদ্ধ। রাগের মাথায়, টেলিফোনিক যেকোন ক্ষেত্রেই সাক্ষীবিহীন এরকম তালাক 'তালাক' হিসেবে গণ্য হয়না। কিন্তু শরিয়ত আইন, নিজেদের মত করে অনেক ভার্সন করেছে। যেকোন বিষয় নিয়েই তাই পরস্পরবিরোধী প্রচুর কথা হাদিসে পাওয়া যায়। তালাক-ই-ইদ্দত এই হাদিসপ্রসূত। এখানে এক এক মাওলানা এক একভাবে বিষয়টাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। অতএব অল্পশিক্ষিত বা অশিক্ষিত নিম্নবিত্ত পরিবারে অনেক সময়েই এই অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে মেয়েদের তালাক দিয়েছে ছেলেরা। জিজ্ঞেস করলে সেসব মেয়েরা বলেন (যেমন আমার নানির বাড়িতে কাজ করতেন এক মহিলা, যার স্বামী আরবে গেছিলেন কাজ করতে, ঈদের আগে ফোনে একদিন তিন তালাক দিলাম বলে ফোন কেটে দেন। পরে কখনো বাড়ি ফেরেননি, বলাই বাহুল্য।) 'শরিয়ত মেনে' হয়েছে।
    শিক্ষিত মুসলিম পরিবারে তাই এই তালাক-তালাক-তালাক বলে ডিভোর্স হওয়াটা শুনতে সোনার পাথরবাটি। এই আইনের ফলে তো এটা ভাল হয়েছেই , এসব মানুষ যারা শরিয়ত এর কাছে হাত-পা বেঁধে বিকিয়ে দিয়েছেন আর সবই 'আল্লাহর নিয়ম' বলে মুখ খুলতে পারেননি, তারাও প্রতিবাদ করতে পারবেন।
  • DP | 117.167.***.*** | ২৬ আগস্ট ২০১৭ ২০:৪৮368253
  • আমার যেটা মাথায় ঢুকছেনা যে ক্রমাগত তালাক শরিয়ত সম্মত কিনা এই নিয়ে আলোচনা চলছে! ভারত একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। যেকোন সভ্য দেশেই এইসব হাজার বছরের পুরনো ধর্মীয় নিয়মের স্থান ডাস্টবিনে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। একটি আধুনিক সভ্য দেশের আইন যুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরী হবে, তাতে কোন ধর্ম কি বলল তাতে কিস্যু যায় আসেনা। আর অভিন্ন দেওয়ানী বিধী চালুর কথা সংবিধানের নির্দেশাত্মক নীতিতেই আছে এবং একটি সভ্য ও আধুনিক দেশে সবার জন্য এক আইন থাকাটাই বাঞ্ছনীয়।
  • amit | 149.218.***.*** | ২৭ আগস্ট ২০১৭ ০৬:৫৭368242
  • সভ্য দেশের মতো ভারতেও সবার জন্য এক আইনের কথা বললেই তো নকু মাকুরা ঝাঁপিয়ে আসেন এর মধ্যে বিজেপির ষড়যন্ত্র দেখতে পেয়ে।
  • pi | 24.139.***.*** | ৩০ আগস্ট ২০১৭ ২১:০৮368243
  • ভাট থেকে রইল।

    name: j mail: country:

    IP Address : 132.161.232.247 (*) Date:30 Aug 2017 -- 09:05 PM

    যে চারজন মহিলা তাৎক্ষণিক তিন তালাকের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টে লড়াই করেছিলেন, ঐতিহাসিক রায় বেরোনোর পর, তাদের মধ্যে আমাদের এই মহান উদার বাংলার মাটির কন্যা হাওড়া পিলখানার ইসরাত্ জাহান এর অবস্থা সবচাইতে করুন। হুমকি, কুৎসা ও সামাজিক বয়কটের মুখে অসহায় ইসরাত্ মুখ্যমন্ত্রীকে নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি লিখেছেন। হুমকি পাচ্ছেন, ইসরাতের উকিল নাজিয়া ইলাহি খান ও। ইতিমধ্যে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ও মুখ খুলেছেন ইসরাতের বিরুদ্ধে। মুখ খুলেছেন আরেক নেতা ইদ্রিস আলি ও। একটা গোটা সমাজ যেন নেকড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে একটি অসহায় তালাকপ্রাপ্ত দুই সন্তানকে নিয়ে থাকা মহিলার উপর। এই গর্বের উদার বাংলার মাটির ইজারাদাররা, অর্থাৎ কবি শিল্পী সাহিত্যিক মহল আশা রাখবো ইসরাতের পাশে দাঁড়াবেন।

    copied
  • DP | 117.167.***.*** | ৩১ আগস্ট ২০১৭ ১৯:৩৮368244
  • "কবি শিল্পী সাহিত্যিক মহল আশা রাখবো ইসরাতের পাশে দাঁড়াবেন।"

    কেউ থাকবেনা। বঙ্গ বিজেপি যেহেতু ল্যাদখোর, তাই একটু দেরী হবে, কিন্তু আল্টিমেট ইসরাত স্রেফ দক্ষিণপন্থীদের প্রপাগান্ডা টুল হিসেবেই থেকে যাবে। প্রগতিশীল মানুষের এদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বহু আগেই, তসলিমার পাশেও দাঁড়ানোর কথা ছিল। সেসব কথা বলে আর লাভ নেই। আর অন্ততপক্ষে পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে কবি, শীল্পী, সাহিত্যিক বলে যাঁরা নিজেদের দাবী করেন, তাদের থেকে কেন র্যাশনাল থিংকিং আশা করাটাই ভুল।
  • pi | 24.139.***.*** | ৩১ আগস্ট ২০১৭ ২৩:১৮368245
  • ইসরাতের বাচ্চাদের আজ পাওয়া যাচ্ছিল না বলে খবর এসেছিল, এখন আবার শুনলাম পাওয়া গেছে। বাবা নাকি বাজারে নিয়ে গেছিলেন !
    কে জানে , ভয় দেখাতে ন্যে গ্গেছিলেন কিনা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন