এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  নাটক

  • কণ্ডোম, কবিতা, এফ আই আর ইঃ

    pi
    নাটক | ২৫ মার্চ ২০১৭ | ৮৫৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | 192.66.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৭ ১৯:৪১364903
  • এদিক ওদিক নানা জায়গায় এত লেখালেখি হচ্ছে, সাইটেও ছড়িয়েছিটিয়ে। এখানে থাক কিছু। কথাও হোক।

    সৈকতদার ফেবুর পোস্টগুলো আপাততঃ রইল।

    -----------------
    ধুর ধুর। ফেসবুক খুলেই "আপনি কি ইসলামী মৌলবাদেরও বিপক্ষে?" জাতীয় এই একই কথা পড়ে পড়ে বোর হয়ে গেলাম। পরিষ্কার করে লিখে দিই।
    ১। হ্যাঁ, আমি চাই তসলিমা নাসরিনকে ভারত সরকার চিরস্থায়ী আশ্রয় দিক। একদম নাগরিকত্ব। কিন্তু বাকতাল্লাই সার, মোদী সরকার তিন বছরে সেটা দিয়ে ওঠার ধক অর্জন করতে পারেনি। বাকতাল্লাই তাদের প্রথম এবং শেষ ইস্টিশান।
    ২। হ্যাঁ, আমি চাই ঘরছাড়া কাশ্মীরি পন্ডিতরা ঘরে ফিরুন। বেচারি মোদী সরকার তিন বছরে তারও কোনো ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি।
    অবশ্য এখানে শুধু বাক্যবীর বলা যাবেনা। সরকার কাশ্মীরে বহু কিছু করেছে। রেটে কার্ফু জারি করেছে, থেকে থেকেই ইন্টারনেট বন্ধ করেছে গোটা উপত্যকায়। গুলি চালিয়েছে বিস্তর, আর পেলেট গান ব্যবহার করে অন্ধ করেছে আরও বহু মানুষকে। সবই মানুষের কল্যাণে। তাতে বহু লোক ঘর হারিয়েছে, কিন্তু একজনও ঘরে ফিরেছে? না।
    ৩। হ্যাঁ, আমি চাই ইসলামী মৌলবাদ ধ্বংস হোক। বাংলাদেশে যখন নারকীয় ব্লগার হত্যা চলছিল, তখন, বাকিদের মতো আমিও কেঁপে গিয়েছিলাম। অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর বাবু, দেখিনি কখনও, কিন্তু পাশাপাশিই তো থাকতাম, চেনাজানা দীর্ঘদিনের। বেচারি মোদী, অন্য দেশে সরাসরি কিছু করণীয় নেই, কিন্তু তিন বছরে হাসিনার সঙ্গে যৌথ কাজকর্ম করে, এবং/অথবা চাপ দিয়ে, সন্ত্রাসদমনে যৌথ কোনো কাজকর্ম করা হয়েছে? হয়নি।
    বাংলাদেশের ইসলামী মৌলবাদের উত্থান, মোদীর পুষে রাখা জুজু। লক্ষীপ্যাঁচা। ভয় দেখিয়ে ভোট পাওয়া যায়, কাজেই ওটা থাকা দরকার।
    ৪। এবং হ্যাঁ, আমি গুজরাটের নারকীয় নরমেধ যজ্ঞে জড়িত প্রত্যেকের শাস্তি চাই। যারা সরাসরি জড়িত, তাদের শাস্তি। আর যাঁরা সরকারি পদে থেকেও এটা বন্ধ করতে পারেননি, মতান্তরে সক্রিয় মদৎ দিয়েছেন, তাঁদের রাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে মাথা মুড়িয়ে ঘোল ঢেলে চিরনির্বাসন।
    বলাবাহুল্য, তিন কেন তিরিশ বছরেও মোদীর পক্ষে এটা করা সম্ভব না।

    -----------------------------------------------

    কবিতা তো একরকম করে হল। সে যাই হোক চেয়েও ভয়াবহ হল সোশাল মিডিয়ায় তার ইন্টারপ্রিটেশন। ওরে বাবা। একদিকে তো আছে বানরসেনার দল। তারা পানু পড়তে বা লিখতে ভালোবাসে কিন্তু কন্ডোম শুনলে কানে আঙুল দেয়। যাদের পেটে বোমা মারলে 'আমাদের ছোটো নদী' ও বেরোবেনা, যাদের মুখের ভাষা শুনলে "ওরে ভাই প্যান্টুল নিচে কেন মুখে পর, এই লজ্জাস্থান আর বার করিসনা" বলতে ইচ্ছে করে, স্রেফ ত্রিশূল আর কন্ডোম শুনেই তাদের কবিতা বোঝা সম্পূর্ণ। ত্রিশূলে কন্ডোম পরাবে বলেছে? সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতির আর রইল টা কী? চলো করি এফ আই আর। যেন সনাতন হিন্দুধর্ম স্রেফ ত্রিশূলের ডগায় দাঁড়িয়ে আছে। আর কবিতার ভারি দায় পড়েছে তাকে রক্ষা করার।
    তারপরে এল পাল্টা কবিতার স্রোত। ওরে বাবা। সে কী জিনিস। একদিকে "কবি তোমার নাই দম/তুমি মাথায় পরো কন্ডম" জাতীয় অন্ত্যমিল সমৃদ্ধ আবেগী উচ্চারণ। অন্যদিকে "সত্তরের সেই দুর্দিনে এক কন্ডোম গিয়েছিল ফেটে, সেদিনই কি তোমার জন্ম?" জাতীয় অমিত্রাক্ষর মেঘনাদবধকাব্য। এ জিনিস একটার বেশি দুটো পড়লে সুস্স্থ লোকের সেরিব্রাল থ্রম্বোসিস হতে পারে, জন্ডিসাক্রান্ত রোগির গন্ডদেশে হরিদ্রাভা মুছে গিয়ে লালের প্রকোপ দেখা দিতে পারে, মৃত্যুপথযাত্রী হঠাৎ আইসিইউতে ফ্যাক করে হেসে দিতে পারেন। এক কথায় যা খুশি হতে পারে।
    এ তো তবু মূর্খের কারবার বলে কাটিয়ে দেওয়া যায়। এর পরে পাল্লা দিয়ে পন্ডিতরা যা শুরু করলেন তা আরও ভয়াবহ । খাজা লাগলে কবিতাকে খাজা বলুন, বিচ্ছিরি বলুন, পাতে দেওয়া যায়না বলুন, রেগে বাকরুদ্ধ হয়ে বাথরুমে গিয়ে বসে থাকুন, সব ঠিক আছে। কিন্তু এঁরা সে পথে যাবেননা। কন্ডোম শুনলেই একদলের যেমন চোখে ঘোর লাগে, ধর্ষণ শুনলেই আরেকদলের পিতৃতন্ত্র কমন পড়ে যায়। ধরুন, আপনি প্রেমিকার বিরহে কাতর হয়ে এরকম একটা খাজা কবিতা লিখলেনঃ
    একা ঘরে, পথেঘাটে/ তুমি ছুঁলে গাঁটে গাঁটে/ হয়ে যাই পাগলাটে/ একাকী ও উন্মাদ ষন্ডম।
    নাই যদি দাও ধরা/ হাতে নেব হাতকড়া/ তুলে দিয়ে লেখাপড়া/ কলমে পরিয়ে দেব কন্ডম।
    খুবই খাজা ও গভীর বেদনায় পরিপূর্ণ এ কবিতা। নেহাৎই অন্ত্যমিল দিয়ে 'কলম বন্ধ করে দেব' বোঝাতে কন্ডম এঁটে দেব বলেছিলেন। উৎরোয়নি বললে ঠিকই ছিল। কিন্তু ওই, কলম আর কন্ডোম আছে, যৌনতা আছে, পুরুষ ষন্ড আছে, যৌন চিত্রকল্প আছে, আর যাবে কোথায়, ঘোর পিতৃতন্ত্র। এখানেও সেই কেস হল। কবি ত্রিশূলের ধার কমে যাবে বোঝাতে, আর পপুলার পাঞ্চ আনতে, কন্ডোম লিখেছিলেন, কিন্তু ওই, একদলের ত্রিশূল পড়েই কবিতা বোঝা হয়ে যায়, আরেকদলের মানেবই পড়ে। ব্যস আরেকদফা বাণীর ঝরনা। সেসব পড়লে অন্ধজনে আলো দেখতে পাবে, মৃতজনে পাবে প্রাণ।
    উফ। বাপরে বাপ। কবিতা বাজে লেগেছে বলুন। কবিকে অপছন্দ বলুন। অনেকেই বলছেন। বেশ করছেন। কিন্তু এই ইন্টারপ্রিটেশন আর নেওয়া যাচ্ছেনা। উফ। উফ। উফ। আর হ্যাঁ, বাজে হোক ভালো হোক, কবিতা লেখা কিন্তু বাকস্বাধীনতা। সেটা গেলে আপনার ফেসবুকে চুটিয়ে লেখাও ভোগে যেতে পারে কিন্তু।
  • PT | 125.187.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৭ ২৩:০১364904
  • "Facebook removes Srijato's controversial poem"
    এবারে বাকস্বাধীনতাকামী বাঙালীর ক্ষমতার পরীক্ষা হবে। সরকার নাটক বন্ধ করলে সরকার বদলে দেওয়া যায়। কিন্তু মুখ্সর্ব্স্ব ফেসবুক? তাকে ওল্টাবে কে? উল্টে ফেবুর নেশা আপিংএর চাইতেও মারাত্মক!
    একটা কবিতার জন্যে কি আর ফেবু পরিত্যাগ করা যাবে?
  • dc | 120.227.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৭ ২৩:০৩364905
  • ফেবু প্রোফাইল ডিলিট করে দিন, কদিনেই নেশা ঘুচে যাবে।
  • Ekak | 53.224.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৭ ২৩:০৫364906
  • হ্যাঁ , গোপনে ফেসবুক ছাড়ান ।
  • PT | 125.187.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৭ ২৩:৪৫364907
  • যে বাঙালী এক সময়ে "বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা" কিংবা "পুলিশ তুমি যতই মার/মাইনে তোমার একশবারো" ইত্যাদি পদ্য গেয়ে/বলে বলে রাজপথে দাপিয়ে বেড়াত তাদের উত্তরসূরীরা কি নিজেদের ঘরে বন্দী করে রেখেছে?
    আমি তো ভেবেছিলাম যে বিপ্লবী বুজীরা "আমি অখ্যাত, তুমি অখ্যাত/কিন্তু আমরা সবাই শ্রীজাত" জাতীয় পদ্য বলে হাজারে হাজারে মোমবাতি মিছিল করবে। অথবা অরো সাহসী হয়ে নগরীর সমস্ত দেওয়াল ঐ কবিতায় লেখা পোস্টারে ভরে দেবে।
    কিন্তু সেসব কিছুই তো হলনা.........বিপ্লবী বাঙালীর হলটা কি?
  • Ekak | 53.224.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৭ ২৩:৫৪364908
  • এভিয়ান ফ্লু । সবাই লক্ষী প্যাঁচা হয়ে গ্যালো ।
  • pi | 57.29.***.*** | ২৭ মার্চ ২০১৭ ১০:৪১364909
  • ফেবু কবিতা ফেরত দিয়েছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন