এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • কম্পিউটার, বামপন্থী শ্রমিক আন্দোলন এবং একটি  মিথ

    Sandipan Majumder লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৩ নভেম্বর ২০২৫ | ২৭৬ বার পঠিত
  • ব্যাংকে গেছি একটা কাজে। প্রতিবেশী মানব বাবুর সঙ্গে দেখা। ছেলে ব্যাঙ্গালোরে থাকে। আমরা গুড্ডু বলে ডাকি। 

    আমি বললাম, কিরে গুড্ডু? অনেক দিন পর দেখলাম। কবে এলি? 
    গুড্ডু বলল, এই তো লাস্ট ফ্রাইডে। ভালো আছ আংকল? 

    আমি কিছু বলার আগেই মানববাবু  বললেন, আমার ছেলেকে বোধহয় সারাজীবন বাইরেই কাটাতে হবে। এর জন্য দায়ী লাল ঝাণ্ডার রাজনীতি। 

    মানববাবু বিজেপির ঘোরতর সমর্থক শুধু নন, ওঁর অফিসে বিজেপির ট্রেড ইউনিয়ন বি এম এসের নেতা বলে জানি।

    আমি বললাম, দেখুন পশ্চিমবঙ্গে তো কমপিউটার বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল প্রধানত দুটি। একটি বীমাশিল্পে, কিন্তু সেটা ১৯৬৮ সালে আর সেটা এখনকার কমপিউটার নয়। আর দ্বিতীয়টা হয়েছিল আটের দশকের মধ্যভাগে ব্যাংকশিল্পে। কিন্তু কম্পিউটারের সার্বিক বিরোধিতা কোথাও ছিল না। দাবি ছিল কম্পিউটার বসানোর ফলে কর্মচারী ছাঁটাই চলবে না আর বসানোর বিভিন্ন দশায় কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এটাতো পৃথিবীর সবজায়গায় ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের গণতান্ত্রিক নীতি। এটা তো আপনারও জানার কথা।

    - সে আপনি যাই বলুন। এত লোক যখন জানে যে লাল ঝাণ্ডা কম্পিউটার বসাতে দেয় নি সেকথা কি মিথ্যা?

    সত্য মিথ্যা বিচার আপনি করুন। তবে এটা ঠিক একটি সর্বভারতীয় শ্রমিক সংগঠন ১৯৮৪ সালে গোটা বছরটিকে কম্পিউটার বিরোধী বছর বলে পালন করেছিল। 

    - ওই সিপিএমের যেটা আছে সিটু, ওরা তো? 

    আজ্ঞে না। যে সংগঠনটি আপনি করেন, বিজেপির শ্রমিক সংগঠন বি এম এস।

    মানববাবু এক মিনিট স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকলেন। তারপর থমথমে মুখে বললেন, কোথা থেকে পান এসব তথ্য? 

    আমি বললাম,ঘাবড়াবেন না। হোয়াটসঅ্যাপ থেকে নয়। ভারতে কম্পিউটার আসার অগ্রপশ্চাৎ ইতিহাসের অথেন্টিক বই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত সি আর সুব্রামানিয়ানের 
    ‘India and the Computer’ বইয়ে আছে এই ইতিহাস। তবে কষ্ট করে বই যদি না খুলতে চান তাহলে গুগলে গিয়ে ‘Did BMS observe1984 as anti computer year’ লিখে সার্চ করে দেখতে পারেন।

    মানববাবু হঠাৎ ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। বললেন, গুড্ডু, দেখ তো ড্রাফটটা হল কিনা। বলেই সামনের একটা ফাঁকা চেয়ারে বসে বিড়বিড় করতে থাকলেন কীসব।

    আমি বললাম, আপনি রাগ করলেন নাকি? আমি কিন্তু বি এম এস কে দোষী করছি না। সেই সময়, একটা নতুন প্রযুক্তি যখন আসছে তখন বিরোধিতা স্বাভাবিক। 

    মানববাবু লোকটা এমনিতে সরল। বললেন, তাহলে সবাই লাল ঝাণ্ডাকে দায়ী করে কেন? 

    আমি বললাম, যারা করে তাদেরকে সেভাবেই বোঝানো হয়েছে। তারা খেয়াল রাখে না যে ভারতের আই আই টি গুলোতে কমপিউটার সায়েন্স যখন পড়ানো শুরু হয় সেই ১৯৮১,৮২  নাগাদ সেই একই সময়ে শিবপুর এবং যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও শুরু হয়েছিল আর সেটা করেছিল লাল ঝাণ্ডার সরকার। কম্পিউটারের বিরোধী হলে তারা এই কাজ করত?  আর কম্পিউটার সায়েন্ন্টিস্ট তৈরি না করেই দেশে কম্পিউটার বিপ্লব আসে নাকি? 

    মানববাবু এবার দেখলাম আমার কথায় সমর্থন সূচক মাথা নাড়লেন।

    উৎসাহ পেয়ে আমি বললাম, বামপন্থীরা কখনোই প্রযুক্তির সার্বিক বিরোধিতা করে না। কিন্তু প্রযুক্তির মালিকানা যাদের হাতে থাকে তারা যেহেতু শ্রমিক স্বার্থের কথা মাথায় রাখে না তাই সতর্ক থাকতে হয়, বিরোধিতাও করতে হয় প্রয়োজনে।

    মানববাবু এবার গলা নামিয়ে বললেন, আপনাকে বলি। এই এ আই আসার পর আমার ছেলের চাকরি নিয়েও ভয় পাচ্ছি।

    আমি বললাম, সেই একই কথা। এ আই য়ের সার্বিক বিরোধিতা করে লাভ নেই। কিন্তু তাকে কার স্বার্থে কাজে লাগানো হচ্ছে সেটা দেখা দরকার। সেটা কে দেখবে?  

    মানববাবু বললেন, তাই তো। কে দেখবে?  

    আমি বললাম, আই টি কর্মচারীদেরও ইউনিয়ন হয়েছে। বাড়ছে আস্তে আস্তে। সেকটর ফাইভে শুধু নয়, ব্যাঙ্গালোরেও। কিন্তু সেগুলোও লাল ঝাণ্ডার। 

    মানববাবু যে ভঙ্গীতে বসে থাকলেন তাকে বাংলায় একটি শব্দে প্রকাশ করলে ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’ বলে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কৌতূহলী | 115.187.***.*** | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৩৬735439
  • দারুণ। 
    আমি একটা জিনিস যোগ করি। 
    টেকনোলজির উন্নতির সাথে সাথে রাষ্ট্রকে চাপ দিতে হবে কর্মচারীদের শ্রমঘন্টা কমানোর জন্য।   
    শ্রমঘন্টা কমে এলে কর্মচারীদের ছাঁটাই করতে লাগবে না।
    কিন্তু পুঁজিবাদীরা শ্রমঘন্টা একই রেখে দেয়, আর প্রযুক্তিকে কাজে লাগায় ছাটাইয়ের জন্য,।
    আর শ্রমিক বা কর্মচারীদের ক্ষোভ চ্যানেলাইজড হয় প্রযুক্তির দিকে। 
    আবারও, এখন শ্রমঘন্টা কমানোর দাবি তোলা উচিত, এই এ আই এর যুগে আট ঘন্টা থেকে অনেক কমানো উচিত দৈনিক শ্রমঘন্টা, এবং সাপ্তাহিক শ্রমঘন্টাও। 
  • কৌতূহলী | 115.187.***.*** | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৩৭735440
  • বি এম এস এর তথ্যটা কিন্তু দারুণ দিলেন, একেবারেই জানতাম না। চাড্ডিরা গরুর রচনা আবৃত্তি করতে এলে কাউন্টার করতে কাজে লাগবে laugh
  • dc | 2401:4900:260a:ad9d:1908:68d:719:***:*** | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:০৬735441
  • "কিন্তু কম্পিউটারের সার্বিক বিরোধিতা কোথাও ছিল না"
     
    এইটা একেবারে টোটাল ১০০% ঢপ। আশির দশকে আর নব্বুই এর দশকের শুরুতেও পবতে বামপন্থীরা কম্পিউটারের তীব্র বিরোধিতা করতেন আর কম্পিউটারাইজেশানের বিরুদ্ধে ঢালাও প্রচার করতেন। আশির দশকে আমি বড়ো হয়েছি, আর সেই সময়ে সিটু কম্পিউটারের কিরকম বিরোধিতা করতো সেই সময়ের প্রায় সকলেই হয়তো মনে করতে পারবেন। সেই সময়ে আমি স্টেটসম্যান পড়তাম আর আরেকটু পরে টেলিগ্রাফ, আর মাঝে মাঝেই খোরাকের জন্য পড়তাম গণশক্তি আর আজকাল। তো গণশক্তি আর আজকালে মাঝে মাঝেই আগুন ঝরানো সব প্রবন্ধ বেরতো, যাতে লেখা থাকতো কম্পিউটারকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে পব থেকে বার করে দিতে হবে। আমি সেগুলো পড়তাম আর রাজা কানিউটের কথা মনে করে হাসতাম।  
  • Manali Moulik | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:০১735445
  • সি আর সুব্রামানিয়ানের লেখা বিষয়টি জেনে উপকৃত হলাম। অপূর্ব লেখা।
    Rob Jekins রচিত বইতে Lorraine Kennedy -এর লেখা একটা প্রবন্ধ আছে 'Reform packaging and economic liberalization with political deterrence : Case study of Andhra Pradesh and Tamilnadu.' 
    ওখানে পড়েছিলাম অন্ধ্রপ্রদেশ কেন IT ফার্মের সুযোগটাচে সবার আগে নিতে পেরেছিলো, আমাদের রাজ‍্যের পরিস্থিতির কিছু গন্ডগোল ছিলো। সবটাই রাজনৈতিকভাবে একপাক্ষিক নয়। এসবে অনেক ক্রাইটেরিয়া লাগে। সেটা যদি অন্ধ্রপ্রদেশেও না বিদ‍্যমান থাকতো তবে তেলেগু দেশম বা কারো দ্বারাই ওরকম করে কিছু হতো না। 
  • r2h | 165.***.*** | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:১১735446
  • বামেদের কম্পু বিরোধিতা- এইটা আমার কাছে একটা ঘাঁটা ব্যাপার। গণশক্তিতে কী লিখতো জানি না, তবে ঐ বিরোধিতার ব্যাপারটা যদ্দুর জানতাম, বহুজাতিক ব্যাংকে অটোমেশন ও লোকজনকে কম্পু শিখতে হবে, কর্মীদের গড় বয়স, না শিখতে পারলে কী হবে, চাকরির নিরাপত্তা- এইসব লাইনে ছিল বলে জানি।
    গুরুতে এই নিয়ে বেশ ভালো আলোচনা হয়েছিল অনেক বছর আগে, দেখি খুঁজে পাই কিনা।
    এবং এই লাইনটা আমার খুব ঠিক মনে হয়, আজকাল ঐ লাইনটা উঠে গেছে - বড় বড় কোং গুলি ছাঁটাই করে, লোকে কদিন গজগজ করে, তারপর এমন একটা হয় যাদের চাকরি গেছে তারাই অগা, আপস্কিল আপস্কেল ইত্যাদি হাজার গণ্ডা জিনিস করতে হবে মুহুর্মুহু - এইরকমই দাঁড়িয়ে গেছে।
    তাতে খুব ভালো কিছু হয়েছে বা হচ্ছে বলে তো মনে হয় না।

    এফিশিয়েন্সির শেষ কোথায় কে জানে। এখানে দোকানপাটগুলিতে দেখি ম্যানুয়াল কাউন্টার উঠেই যাচ্ছে, সবই সেল্ফ চেকআউট। কেন রে ভাই, লোকে বাজার করতে গিয়ে দোকানীর সঙ্গে দুটো কথা বলবে - মানুষে মানুষে দুটো বাতচিৎ হবে - এ কী এমন ইনএফিশিয়েন্ট ব্যবস্থা?
  • dc | 2402:3a80:424:ce54:c018:a3d5:127b:***:*** | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:৪৪735447
  • হ্যাঁ এ নিয়ে গুরুতে আগে বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। ডিডিদাও বেশ কিছু পোস্ট করেছিলেন মনে পড়ছে। 
     
    আর গণশক্তি আর আজকালের লেখাগুলোর লিংক তো আর নেই, তবে সেই সময়ে বামেরা পবতে হোলসেল কম্পু বিরোধীতা করতেন সেটা বেশ মনে আছে। আর তার সাথে জুড়ে দিতেন আইবিএম ক্যাপিটালিস্টদের চক্রান্তের অংশীদার, আর ছিল গ্যাট চুক্তি, মনমোহিনী ইকোনমিক্স ইত্যাদি হ্যান ত্যান হাবিজাবি।  
  • dc | 2402:3a80:424:ce54:c018:a3d5:127b:***:*** | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:৪৮735448
  • সেই সময়ে সিপিএম আরও অনেক কিছুর বিরোধিতা করতো - মাইকেল জ্যাকসন, র‌্যাম্বো, জিনস পরা - অপসং্স্কৃতির একটা লম্বা লিস্ট ছিল laugh
  • :/ | 103.107.***.*** | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ২০:৩৩735449
  • ডিসি দেখা যাচ্ছে মানববাবুর মত সরল না।
  • r2h | 134.238.***.*** | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ২১:৩৬735454
  • হ্যাঁ, গ্যাট আইবিএম মনমোহন নিয়ে হ্যাজ যুগ পার হয়ে এখন রাজনীতি বুঝি না কিন্তু মোদিজিকে ভালো লাগে যুগ এসেছেঃ)
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:8e2:aaad:cd79:***:*** | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ২১:৫২735455
  • সে তো অবশ্যই। কিন্তু কুড়ি বছর পর হয়তো মোদিজির যুগ পেরিয়ে অন্য কোন যুগ আসবে, তখন কেউ হয়তো প্রবন্ধ লিখবে বসবে যে মোদিজি আদৌ কখনো গণেশের প্লাস্টিক সার্জারির কথা বলেননি। 
  • r2h | 134.238.***.*** | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ২২:২২735458
  • হাহা, ঐটা বোধয় রিপোর্টিং খুঁজলে পাওয়া যাবে, এমনিতেও আজকাল ইউটিউব ইপেপার ইত্যাদি হয়ে ডকুমেন্টেশন সুবিধেজনক ও সহজলভ্য।

    তবে গণেশের প্লাস্টিক সার্জারিতে মনে পড়লো, আসলে এই সবই ছিল দিনের আলোর গভীরে। প্রতিভা বসু ওঁর মহাভারতের মহারণ্যেতে নানান রকম অনুরূপ তত্ত্ব দিয়েছেন। ওঁরা অগ্রসর সমাজের নীলচক্ষুই ছিলেনঃ)
    মূলধারার রাজনীতি, সরকার জনমনমোহনের বদলে জনকল্যানে বেশি গুরুত্ব দিত বলে এগুলি এত সামনে আসতো না আরকি।
    সেই যুগে দূরদর্শন বিজ্ঞানী প্যানেল বসিয়ে ব্যাখ্যা করেছিল, আজকের দিনে গণেশ দুধ খেলে হয়তো তার জন্য বাজেট বরাদ্দ হবে।
     
    একসময় কঠিন, বোরিং, অপ্রিয় বিষয় নিয়ে লোকে জোরে শোরে বলতো, এখন সেসব শুধু যারা ইংরিজি বই পড়ে তাদের এক্তিয়ারেঃ)
  • | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:১১735460
  • নব্বইয়ের দশকে বিভিন্ন কলেজে ছোট ছোট কম্পিউটার কোর্স চালু হতে শুরু করে কয়েকটা ছোট প্রাইভেট কোম্পানি দ্বারা। এই কলেজগুলোতে সিপিএমের ইউনিয়ন এবং কলেজ প্রিন্সিপাল ইত্যাদিরা সক্রিয় সহযোগিতা করতেন। আমার চাকরিজীবন এরকমই এক সংস্থায় শুরু হয়েছিল। আমি এই কলেজে কলেছে কম্পিউটার পদ্ধতির সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলাম।  এছাড়াও ৯০ - ৯১ থেকে পশ্চিমবঙ্গের অলিগলি কম্পিউটার ইন্সটিটুটে ছেয়ে যাচ্ছিল। সিপিএমের বা সিটুর  সার্বিক বিরোধীতা থাকলে সেটা সেসময় সম্ভবই হত না। ডিসির ৯০ দশক দম্পর্কে বক্তব্যটা ডাহা ভুল। 
     
    আশির দশকে আমি স্কুল কলেজে পড়তাম। সরাসরি বিরোধি কোন মিটিং মিছিল দেখি  শুনি নি।  গণশক্তি বলতে পারব না কারণ কদাচ পড়েছি। 
  • lcm | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৫৩735466
  • বামেরা কম্পুটারের বিরোধীতা করেছেন এরকম একটা খবর মাঝে মধ্যে শুনি, এটা ঠিক নয়। বাম আমলে হাইস্কুলে এবং কলেজে কম্পুটার ইন্সটল করে শেখানোর প্রোগ্রাম চালু হয়েছিল। আমার এক আত্মীয় সেরকম কিছু কন্ট্র‌্যাক্টও পেয়েছিলেন।

    বাম কর্মচারী ইউনিয়ন ব্যাংকে কম্পুটারাইজেশনের অজুহাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের বিরোধীতা করেছেন। যেটা এখন অনেক কোম্পানি করছে - এআই এর অজুহাত দিয়ে ছাঁটাই করছেন।
  • অরিন | 119.224.***.*** | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০০:১৩735467
  • "আর কম্পিউটার সায়েন্ন্টিস্ট তৈরি না করেই দেশে কম্পিউটার বিপ্লব আসে নাকি?"
     
    মোক্ষম যুক্তি। 
    তবে দুঃখের বিষয় বহু কম্পিউটার সায়েনটিস্ট কিন্তু পাশ করে বিদেশে পাড়ি জমাতেন। 
  • lcm | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০১:০০735468
  • না না, সায়েন্টিস্ট না, বিপ্লবও না... কম্পুটার ইউজার ট্রেনিং... ওয়ার্ড, এক্সেল, লোটাস, ডিবেস - এইসব...

    ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে কম্পুটার সায়েন্স আলাদা মেজর তৈরি হল কম্পু প্রফেশন্যাল / অ্যাকেডেমিশিয়ান তৈরির উদ্দেশ্য... যাদবপুর আর শিবপুরে খুব সম্ভবত প্রথম ব্যাচ শুরু হল ১৯৮২-তে, সেই ব্যাচ ১৯৮৬ এ ডিগ্রি নিয়ে বেরোলো ... 
  • <> | 2405:201:802c:7858:f12f:59df:2845:***:*** | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০১:১৭735469
  • সরকারি অফিসের ইউনিয়নের নেতাদের ছেলেপুলেরা গিয়ে কম্পু ট্রেনিং নিত আর তারা কর্মচারীদের সাহায্য করতেন কন্পুর বিরুদ্ধে, কুলোকেরা তো এই বলত, সে যুগে। আর কে না জানে, সরকারি জায়গাতেই ইউনিয়ন সব থেকে বেশী শক্তিশালী ! সেই জন্যই, পুঁজি আর টেক ৮০ - ৯০ সময় জুড়ে (সরকারি পুঁজি, বেসকরকারি তার আগেই গেছে প্রায়) ছোট ছোট টেনিং ইন্স্টি আর ঐ দুটো কলেজ। যারা শিখবে, তারা বাইরে যাবে কাজ করতে, এই তো ব্যাপার, মোটামুটি। পঃবঃ মানব সম্পদ সাপ্লাই দিয়েছে সারা পৃথিবীতে !! ৮০ র দশকেও যে কয়েকটা বেসরকারি কোম্পানি ছিল, সেখানেও, কম্পু ট্রেনিং আর ব্যবহার নিয়ে বাধা ছিল, নেতারা ছেলেদের বাইরে পড়াতেন।

    তো, সরকারি আর বেসরকারি পুঁজি, এর সুবিধে নেয়, অন্য জায়গায় অফিস খুলে বা সদর দপ্তর সরায়। বুদ্ধবাবু তো এই ব্যাপারটা বুঝেছিলেন। ঐ সব কম্পু বিরোধী আন্দোলন যে 'বোকামি' সে কথা তো বলেইছিলেন। বেনিফিট অফ ডাউট দিতে গেলে বলা যায়, নেতারা বোঝেননি, কী ঘটছে। কিন্তু মেজ সেজ নেতারা তাদের ছেলেপুলেদের জন্য যা করার করেছেন।

    পাড়ার বামপন্থী ভদ্রলোক, আমি তো অর্থকরী বিদ্যায় বিশ্বাস অরি না, বলে ছেলেকে engineering না পড়িয়ে আমেরিকায় সায়েন্স পড়তে পাঠিয়েছিলেন। এরকম হাস্যকর কথাও তো তখন শোনা যেত।
  • <> | 2405:201:802c:7858:f12f:59df:2845:***:*** | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০১:২০735470
  • ** সেই জন্যই পুঁজি আর টেক ৮০ - ৯০ সময় জুড়ে সরে গেছে (সরকারি পুঁজি, বেসরকারি তার আগেই গেছেই প্রায়), পড়ে থাকবে ছোট ছোট ট্রেনিং ইন্স্টি আর ঐ দুটো কলেজ।
  • <> | 2405:201:802c:7858:f12f:59df:2845:***:*** | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০১:৩২735471
  • সেক্টর ফাইভে আইটি ইউনিয়ন, সে তো সুভাষ চক্কোত্তির সময়ে হয়েছে, বাড়ছে নিশ্চয়। বেড়ে বেড়ে এআই - এর সঠিক ব্যবহার ঘটাবে, ভোটের আগে তারা নিশ্চয় এআই দিয়ে তৈরী ভিডিও করে ভোটের প্রচার করবে।
  • <> | 2405:201:802c:7858:f12f:59df:2845:***:*** | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০১:৪১735472
  • বিবিধ কারণে ৫০ র দশক থেকে পুঁজি সরে যাওয়া, বাজার ছোট হওয়া, যত এসব হওয়া যাওয়া মালিক পক্ষের তত সুবিধে নেওয়ার চেষ্টা করা, যত সেই চেষ্টা তত কর্মচারীদের মধ্যে anxiety তৈরী হওয়া, যত সেসব হওয়া তত ইউনিয়নের সেই anxiety ব্যবহার করা, দল আর মতাদর্শের ক্ষমতাবৃদ্ধির জন্য, ৭০ দশক থেকেই বা তার আগে থেকে বামপন্থী রাজনীতির আইডিওলজি মূলতঃ কৃষিভিত্তিক হয়ে পড়া, এই এতসব ব্যাপারের সঙ্গে কম্পু - অটোমেশন বিরোধিতা ইত্যাদিকে মিলিয়ে দেখা দরকার মনে হয়।
  • ~ | 42.108.***.*** | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:২৮735481
  • জ্যোতিবাবু শেষদিন পর্যন্ত নিজের অফিস ঘরে কম্পু ঢুকতে দেননি এটা শুনেছিলাম। ঘরের খবর জানিনা। বাড়িতে নিশ্চয় ছিল ছেলের, অনুমান করি।
     
    আমরা সেভেনে থাকতে,  মানে ১৯৯১-৯২ স্কুলে বিবিসি কম্পু ঢুকল। সাদা কালো ফ্লপি ঢুকিয়ে বুট করতে হয়, ডস এ চলে। বেসিক, ডিবেস শেখা যায়। অন্য স্কুলে কম্পু কনটেস্ট হল, ফেস্ট মতো। পার্টিসিপেট করেছিলাম স্কুলের দল হিসেবে। কুইজ, প্রোগ্রামিং তাৎক্ষণিক বক্তৃতা ডিবেট ইত্যাদি৷ বেসিক দিয়ে প্রোগ্রামিং করে গান টান বাজানো হয়েছিল সাউন্ডে, ম্যাপ নকশা ডিসপ্লে হচ্ছিল প্রোগ্রাম করে। আমরা জিতে ফিরলাম। কী ফুর্তি!  সেনা দা শেখাত এইসব, হঠাৎ দু বছরের জন্য জয়েন করেছিল স্কুলে। নিশ্চয় ডিগ্রি নিয়ে এসেছিল। তারপর ছেড়ে দিল স্কুল। ভাল চাকরি পেয়ে চলে গেল কোথাও। স্কুলে কম্পু শেখানো বন্ধ হল। মা ও ওই সময় অন্য পাড়ায় একটা কম্পু সেন্টারে গিয়ে ডিবেস শিখত। গানও শিখতে যেত পাশেই। ইলেভেনে বোধয় আবার কিছুদিন ওগুলোতে বসা হল। বোধয় বিবিসি পালটে আইবিএম এল। নাকি গোলাচ্ছি?  সি তে প্রোগ্রাম করতাম সেটা কোন ক্লাস? ১১/১২? বন্ধুরা লেট আস সি নামের বই কিনেছিল। কানিতকার? সেই বিখ্যাত নাইন কুইন প্রবলেম। বোর্ডে গুটি বসিয়েও সাজাতে পারিনি তখন। প্রোগ্রাম লিখে কী করে পারব? অভিযান সলভ করেছিল প্রথম। অভিযান পরে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন করল এপিসি থেকে সায়েন্স কলেজ।  শুনেছি স্কুলের কম্পুগুলো দীর্ঘদিন পড়ে থেকে থেকে নষ্ট হয়ে গেছিল।
     
    এসব মনে হচ্ছে ৯১ তে সোভিয়েত ভাঙা আর মনোমোহিনী গ্লোবালাইজেশনের ফলে হয়েছিল। সিপিএম এর কম্পু বিরোধিতার মূল এপিসোডটা তার আগের। পোস্ট গ্লোবালাইজেশন ওই লাইন এর বিরোধিতার মাজা ভেঙে যায়। যদিও ১৯৯৭ থেকে ২০০০ তিন বছর কেমিস্ট্রি অনার্সে কম্পু বলে কিছু জানিনা। মিশনে ছিলও না বোধয়।
     
    কেম ইঞ্জ বিটেকে সায়েন্স কলেজে ঢুকে দেখি সিডি/ ডিভিডি তে বুট হওয়া উইন্ডো। রঙিন। একটা না দুটো কম্পুতে বোধয় হার্ডডিস্কে ও ইন্সটল করা ছিল। সিডি লাগত না। মাউস প্রথমবার। ২০০০, বন্ধুদের দু একজন সেসব আগে ব্যবহারও করেছে।  ঘাবড়ে গিয়ে যুব কম্পু প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হলাম ওয়ার্ড এক্সেল পাওয়ারপয়েন্ট ফক্সপ্রো বেসিক ইত্যাদি শিখতে। CITA DITA ছমাস ছমাস করে এক বছরের কোর্স। সফটওয়ার ডেভেলপমেন্ট পাথ। দ্বিতীয়টায় ভিজুয়াল সি প্লাস প্লাস, ভিজুয়াল বেসিক ভিজুয়াল ফক্সপ্রো এসব ছিল। এসব করে কলেজে ফরট্রান করতে সুবিধে হল যত না তার থেকে বেশি ওয়ার্ড এক্সেল দিয়ে প্রজেক্ট প্লান্ট ট্রেনিং ইকুইপমেন্ট ডিজাইন ফিজিবিলিটি সব রিপোর্ট বানানো হল কলেজের কম্পুতে বসেই।
    তারপর তো বাকি জীবন কম্পুতেই কাজকর্ম রুটিরুজি। কোর-এই চাকরি পেলাম। আঙ্কলেশ্বর। প্রথম মাইনে মাসে ন হাজার। সঙ্গীতা বোধয় পাঁচ হাজারেই ব্যাঙ্গালোর চলে গেল একা। আমরা বিশাল অবাক হয়েছিলাম। শ্যামা মানে সৌমিক বিশ্বাস এইচপিএল পেল। হলদিয়া। আঠেরো দিত মনে হয়। অমিত দেবলিনা শিবরাম গেল বাঙ্গালোর এইচএলএল। ওরা বেশি পেত আরো খানিক। দুবছর পর মাস্টার্স করে ঝুমা বিওসি কলকাতায় গেল। তখনও পাঁচ না সাত হাজার। ডেনড্রাইটে পেল একজন, সেও ওই পাঁচ সাত।
     চাকরি জীবন প্রথম তিন বছর গুজরাট তারপর কলকাতা, মাঝে তিন বছর ওমান, বাকি পুরোটা কলকাতাই তো। ব্রেন ড্রেন জিনিসটা সরাসরি দেখলাম যেমন কাঞ্চন বিটেকে ফার্স্ট হয়ে কানপুর আইয়াইটি হয়ে ইউএস চলে গেল। আবার সঞ্জয় ওর পাশের রুমে থেকে এম আতেক করে কলকাতা আইবিএম এ থেকে গেল। ওখানেই আছে। অমিত দেবলিনাও চলে গেল ইউ এস। তনুশ্রী পারমিতাও ছিল বাইরে। তবে এখন তো ভার্চুয়াল ব্রেন ড্রেন। ঘরে বসে বিদেশের জন্য রোজগার করে দেওয়া। তাদের ব্যাক অফিস হয়ে কাজ করা।
    কম্পু বিরোধিতার সরাসরি ভুক্তভোগী বোধয় নই। সেটা আগের চার পাঁচ বছরের সিনিয়াররা হতে পারে। 
    প্রাইমারি থেকে ইংরেজি তুলে দেওয়াও ফেস করেছি। প্রথমেই পাশের পাড়ায় হঠাৎ গজানো ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের কেজি ওয়ানে ভর্তি। চিল্ড্রেন্স হ্যাপি হোম। কৃষ্ণা মিস (পাড়ার পিসি) মা বাবাকে কনভিন্স করে ভর্তি করালো। নইলে পাড়ায় ছিল চিল্ড্রেন্স কোজি নুক। সেটায় বেশিরভাগ পাড়ার বন্ধুরা পড়ত। ছাত্রছাত্রী বেশি ছিল। আমার স্কুলে প্রথম বছরেই যা স্টুডেন্ট। ক্লাসে বোধয় ১৫/১৬ জন। ওয়ান এ তিনজন। টু তে উঠে আমি একা। ওয়ান এর ক্লাসের পাশে বসিয়ে আমার ক্লাস হতো। থ্রি তে গান্ধী স্কুলে ভর্তি হলাম, সরকারী। জবা দিদিমণি ক্লাস টিচার। বাইরে থেকে পরের ক্লাসে ভর্তি হওয়া ছেলেদের খুব অপছন্দ করতেন। আমার  রোল হল ৩০। সব নাম মনে নেই।  কিছুকাল আগেও অনেকটা মনে ছিল।
    সুমন নাগ চৌধুরী ১, 
    সৈকত বসু ২
    সুরজিৎ সুর ৩
    চন্দন সাহা ৪
    ৫ কে ছিল? 
    জয় ৬
    ঋতম জানা কি ৭ না ৮? 
    ৯ কি অনুপম?
    অভিজিৎ দাশগুপ্ত ১১? 
    রাজীব ১০ না ১২? 
    রণজয় ভৌমিক কোন ক্লাসে ভর্তি হল ৪ না ৫? 
     
    থ্রিতে রচনা লেখার ব্যাপার ছিল। সেসব নাকি টুতেই শেখানো হয়ে গেছে। আমি তো শিখিনি। পারিওনি। কোত্থেকে সব গাধা গরু এসে ভর্তি হয় এরকম কিছু বলেছিলেন। প্রথম বা দ্বিতীয় দিনেই। দোতলায় ক্লাস হচ্ছিল। জানলার পাশে বসেছিলাম। এখনও মনে আছে ভেবেছিলাম জানলার গ্রিল না থাকলে নিচে ঝাঁপ দিয়ে মরে যাই।  ফোর এ উঠতে রোল হল ৫।   ফাইভে স্কুলে থাকতে পাবো কিনা টেনশনে আরও একটা স্কুলে অ্যাডমিশন টেস্ট দিতে হয়েছিল। সেটায় বন্দেমাতরম রচয়িতার নাম বঙ্কিমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলাম মনে আছে। শেষে স্কুলেই থেকে গেছিলাম। টুয়েলভ অবধি। টু এর পরে আবার ইংরেজি সিক্স এ। লার্নিং ইংলিশ। মনে আছে পাড়ার দোকানে বই কিনতে গেলে মানেবই কেনা বাধ্যতামূলক ছিল। একসাথেই দাম নিত। ইংরেজি পারতাম না তা নয় তবে পছন্দ করতে পারিনি কখনো। এখনো ইংরেজি গল্পের বই পড়তে ইচ্ছে করে না। মেয়ের প্রবল চাপেও হ্যারি পটার বা রোয়াল্ড ঢাল পড়ে উঠতে পারিনি। ইংরেজি টিনটিন অ্যাস্টেরিক্স ও পড়ে আছে। মেয়ে গিলেছে, আমি পারিনি। তবে ওকে পড়া ধরাতেই ইজনোগুড অ্যাস্টেরিক্স একসাথে পড়া শুরু করেছিলাম। একটা বই পুরো দ্বিতীয় বই অর্ধেক তৃতীয়টা কয়েক পাতা এরকম একসাথে পড়ে বাকিটা ওর নিজে পড়ার জন্য রেখে আর পরে পড়া হয়নি। মিশনে দুটো সেমিনার সায়েন্স কলেজে একটা খুব ধেরিয়েছিলাম মনে আছে। বলেছিলাম সবই কিন্তু ফ্লুয়েন্ট ছিল না বলা। শুনতে খুবই খারাপ লাগছে বুঝতে পারছিলাম। সেটা পাবলিক স্পিকিং এর সমস্যাও হতে পারে, যেজন্য পাড়ার নাটকে পার্ট ভুলে গিয়ে ডুবিয়েছিলাম। চিচিঙ্গে অ্যান্ড কোং ছিল সেই নাটক। কিন্তু ইন্টারভিউ বা এই এতবছর চাকরি জীবন বিদেশি ক্লায়েন্ট কলিগ,  ইউকে ইউএসের অফিসের সাথে মিটিং কোথাও সমস্যা হয়নি কখনও। টেকনিকাল ডিসকাশন বলেই হয়তো। 
     
    রাজ্য সরকার যে রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রাইমারি থেকে ইংরেজি তুলে দিল সেই গাব্দা বাঁধানো রিপোর্ট হাতে নিয়ে দেখেছি। এক সদস্যের কমিটি রিপোর্ট। কমিটি মেম্বারের নাম পবিত্র সরকার। এত অবাক লেগেছিল ভাবা যায় না। বাড়িতেই ছিল বইটা। টাইপ করা রিপোর্ট জেরক্স করে বাঁধানো বা ওইরকম ফন্টে ছাপা। যাঁর সংগ্রহের তিনি ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক। মারা যাওয়ার অনেকদিন পর সমস্ত বই আগলে রেখে রেখে যখন পোকা লেগে নষ্ট হতে শুরু করল তখন প্রাণে ধরে বেচতে না পেরে মেয়ে দিয়ে দিল আমায়।  টেম্পো ভাড়া দিয়ে পাঠিয়ে দিল আমার বাড়ি। মূলত প্রচুর সোভিয়েত বই ছিল বলে। সেই বই রাখতে লোহার ৫×৮ ফুটের র‍্যাক বানালাম। সেই দুশোর বেশি দড়ি বাঁধা বইয়ের স্ট্যাক খুলে খুলে বই গোছাতে গিয়ে হাতে পেয়েছিলাম সেই রিপোর্ট।  স্ক্যান করব ভেবেওছিলাম। পাঁচ ছ বছর পর আমার পছন্দের বইগুলো রেখে বাকি সব আবার দড়ি বেঁধে বেঁধে র‍্যাকশুদ্ধু ইন্দ্রদাকে দিয়ে এলাম আরেক টেম্পো ভাড়া দিয়ে। সেও তিন চার বছরের বেশি হল। এখন বাড়িতে যেটুকু আছে তাতে আর সে রিপোর্ট দেখছি না। ইন্দ্রদা এখনও সব প্যাকেট খুলে উঠতে পারেনি। খুললে, আর সে রিপোর্ট পেলে এখনও স্ক্যান করার ইচ্ছে আছে যদি না কোনো আর্কাইভে অলরেডি সেটা পাবলিক করা থাকে। 
     
    বাম সরকারের কম্পু আর প্রাইমারিতে ইংরেজি বিরোধিতার এটুকুই ব্যক্তিগত এক্সপি।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:1041:d47a:fc2a:***:*** | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:০১735482
  • "নব্বইয়ের দশকে বিভিন্ন কলেজে ছোট ছোট কম্পিউটার কোর্স চালু হতে শুরু করে কয়েকটা ছোট প্রাইভেট কোম্পানি দ্বারা। এই কলেজগুলোতে সিপিএমের ইউনিয়ন এবং কলেজ প্রিন্সিপাল ইত্যাদিরা সক্রিয় সহযোগিতা করতেন। আমার চাকরিজীবন এরকমই এক সংস্থায় শুরু হয়েছিল। আমি এই কলেজে কলেছে কম্পিউটার পদ্ধতির সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলাম।  এছাড়াও ৯০ - ৯১ থেকে পশ্চিমবঙ্গের অলিগলি কম্পিউটার ইন্সটিটুটে ছেয়ে যাচ্ছিল। সিপিএমের বা সিটুর  সার্বিক বিরোধীতা থাকলে সেটা সেসময় সম্ভবই হত না। ডিসির ৯০ দশক দম্পর্কে বক্তব্যটা ডাহা ভুল। "
     
    দ দি, আরেকটু বিশদে লিখি, যদিও আমার আগের পোস্টে ~ আমি যা লিখদ ভেবেছিলাম তার অনেকটাই লিখে ফেলেছেন। প্রথমত, বাম সরকার আর বামপন্থীরা তীব্র কম্পু বিরোধিতা করতেন (বা করতে পারতেন) আশির দশকে। আমি মোটামুটি ১৯৮৮ ৮৯ ৯০ থেকে, অর্থাত যখন আমি ক্লাস এইট নাইনে পড়ি তখন থেকে রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে আস্তে আস্তে সচেতন হতে শুরু করি। সেই সময়ে গণশক্তি আর আজকালে কম্পিউটার আর পুঁজিবাদ বিরোধিতা করে, আইবিএম আর কোকাকোলার সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র ইত্যাদি নিয়ে বহু বহু প্রবন্ধ বেরতো, বামপন্থী নেতারাও ভাষণ ইত্যাদি দিতেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সাধারন মানুষ কম্পিউটার শিখতো না, কারন ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে বা যুবসমাজে কম্পিউটার নিয়ে আগ্রহ ঠিকই তৈরি হতে শুরু করেছিল। বাম সরকার তো প্রাথমিকে ইংরেজি বিরোধিতাও করেছিল, কিন্তু সেটা করে ইংরেজি মিডিয়ামে ছাত্রভর্তি আটকাতে পারেনি। বামপন্থীদের হরেক রকম অপসংস্কৃতি নিয়েও শুচিবাই ছিল, কিন্তু সেসব করে কি সাধারন মানুষকে আটকাতে পেরেছিল? আমি ৯২ তে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম, আর প্রথমেই আমরা ফার্স্ট ইয়াররা ছুটেছিলাম আমাদের ডিপ এর কম্পু রুমে। বামেরা বিরোধিতা করলেও কম্পু আটকাতে পারেনি।  
     
    ~ এর মতো আমারও প্রথম চাকরি ছিল গুজরাটে :-) 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন