‘সিঁদুরের‘ বদলা নিতে মক ড্রিলের ধোঁয়াশায় চলছে অপারেশন ‘সিন্দুর‘! ৮ই মে এর কালরাত্রি! ছুটে আসছে পাক – ড্রোন! ভারতীয় সেনা সেগুলো চুটকি মেরে ভূপতিত করছে ‘সুদর্শন‘ এর কেরামতিতে। গোটা রাত সারা ভারত জেগে! মানচিত্র থেকে মুছে গেছে করাচি বন্দরের চিহ্ন! আই. এন. এস বিক্রান্ত স্বমহিমায় ফিরে আসছে তেরঙ্গা টাঙিয়ে! আবারও অ্যাটাক! আবারও ভারতীয় ডিফেন্স পরাজিত করেছে পাকিস্থানের জঙ্গিসুলভ মানসিকতাকে! ছুটিতে থাকা সৈনিকেরা ফিরে আসছে সীমান্তে! বন্ধ হয়েছে সীমান্ত লাগোয়া সমস্ত স্কুল কলেজ! রাত ৮ টা থেকে সকাল ৬ টা অবধি ব্ল্যাকআউট! কমানো হয়েছে পর্যটকদের ইতিউতি ঘোরা! শুধু রাজধানী নয়, সমুদ্রতীরবর্তী শহর মুম্বাইয়েও বাড়ানো হয়েছে সতর্কতা! প্রাণ যাচ্ছে কত মানুষের, শহীদ হচ্ছেন বীর যোদ্ধারা!
গত ২২ শে এপ্রিল পাহেলগাঁও এ হাড় হিম করা দৃশ্য দেখে গা ঘিন ঘিন করে উঠেছিল আমাদের মত সাধারণ মানুষের! ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছিল কীভাবে গুলির শব্দ হতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ছিল তাজা প্রানগুলো! ‘ধর্ম‘ জিজ্ঞেস করে চালানো হয়েছিল গুলি! প্রফেসর ‘ভট্টাচার্য্য‘ আধো আধো ‘কলমা‘ পড়ে বেঁচে গিয়েছিলেন সৌভাগ্যক্রমে! নিম্নাঙ্গের পরিচয়েই ঠিক হয়েছিল বাঁচা – মরার ‘স্কুইড গেম‘! সিথির ‘সিঁদুরের‘ হয়েছিল বলিদান!
কোনো যুদ্ধই কাম্য নয়। কোন সুস্থ মানসিকতার দেশই বিনা কারণে বা প্ররোচনায় যুদ্ধ চায় না। কিন্তু ভীরু, কাপুরুষ, অমানুষ, স্বার্থপর, দেশদ্রোহী, পাষাণ, নিষ্ঠুর, জঙ্গিরা যখন ঘরে ঢুকে খুন করে নিতান্ত সাধারণ মানুষদের – তখন কোন আমজনতার পক্ষে যুদ্ধকে ‘না‘ বলা সম্ভব নয়!
এ যুদ্ধ হোক! যে দেশের মূল পরিচয় সন্ত্রাসবাদ সে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হোক! যে দেশের মানুষ ধর্মের ভিত্তিতে দেশে থাকার আইন প্রণয়ন করে, সে দেশের বিরুদ্ধে একশো বার যুদ্ধ হোক! যে দেশে জঙ্গিদের মৃতদেহ ঘিরে শোকপালন করে সেই দেশেরই সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক নেতারা – সে দেশের প্রত্যেকটা জায়গা তছনছ হয়ে যাক! যে দেশে জন্ম নেয় ওসামা, মাসুদ, কাসভের মত নৃশংস শকুনেরা – সে দেশের ভিত্তি হয়ে যাক শূন্য! যে দেশে মানুষের মনুষ্যত্ব বলে কোন ধর্ম নেই – সে দেশের সীমানা ভেঙে মানচিত্র থেকে মুছে দিক ‘সুদর্শন‘ চক্র! যারা সিঁদুরের দাম জানে না, বোঝে না – তাদের খুঁজে বের করে সিঁদুরের মাহাত্ম্য বুঝিয়ে দিক ভারতীয় বীর সেনাবাহিনী! বন্ধ হোক সেদেশের সাথে সমস্ত যোগাযোগ! ঘুরিয়ে দেওয়া হোক সিন্ধুর জলরাশি! ওরা নিজেরাই জানে না যে ওরা কি চায়? ওরা গীতা পড়ে না, পড়ে না কোরানও! ছুঁয়ে দেখেনি বাইবেল বা জেন্দ আবেস্তা! ওরা কীকরে বুঝবে মনুষ্যত্বের দাম? সিঁদুরের ঐশ্বর্য্য? প্রাণের মায়া? শুধু ব্রেনওয়াস করে ওদের মগজে ভরে দেওয়া হয় মিথ্যে জিহাদের ভুয়ো সারমর্ম!
শুধু হিন্দু বা মুসলিম বা কোনো একক ধর্মের বিরুদ্ধে এ যুদ্ধ নয়! এ যুদ্ধ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, অমানুষদের বিরুদ্ধে, হিংসার বিরুদ্ধে, জঙ্গিদের আর তাদের যারা সমর্থন করে তাদের বিরুদ্ধে!
আমরা গর্বিত যে আমরা ভারতীয়! আমাদের কোন একক ধর্মের দেশ নয়, ভেদাভেদও নেই। সাংবিধানিক ভাবেই আমরা ধর্মনিরপেক্ষ! আমরা ভেদাভেদ মানিনা! আমাদের দেশে রহিমের চায়ের দোকানে রাম চা খায় আড্ডার ঠেকে! সীতার জামা কোন কোন দিন ফারিয়া পরে কলেজ যায়! আবার ব্যোমিকার কাঁধে হাত রেখে সোফিয়ারা যুদ্ধ করে দেশের হয়ে! আমাদের স্কুলে রবীন্দ্রনাথের সাথে নজরুল পড়ানো হয়! প্রণব বাবুর সাথে কালাম স্যারের নিপাট বন্ধুত্বই আমাদের গর্ব! ‘মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান‘ – আমাদের ট্যাগলাইন!
আমাদের যুদ্ধ ধর্মের নয়, মানবিকতার! আমরা যুদ্ধ চাইনা কিন্তু সেই সব ইতর, ছোটলোক, অমানুষদের জন্য নামতে হয় উরিতে বা বালাকোটে! ছুটিতে থাকা সৈনিকদেরও পরিবার ছেড়ে ফিরতে হয় টেন্টে! যুদ্ধ হয়! আমরা জিতি! কার্গিল এ জিতি, উরি তে জিতি, গাজি অ্যাটাকে ছিন্ন ভিন্ন করে দি তাদের। তবু তাদের শিক্ষা হয়না! বারংবার বিনা কারণে আক্রমণ করে নির্দোষ, সাধারণ ‘কলমা না পড়তে পারা‘ ভারতবাসীর ওপর! এবারও জিতেছি, জিতবো – কারণ আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে আঘাত হেনেছি। আঘাত করেছি সত্যের আশ্রয় নিয়ে, মিথ্যের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে।
যুদ্ধ বিরোধীরাও এ যুদ্ধ চায়। তারা চায় ধ্বংস হোক পাকিস্থান, ধ্বংস হোক হিংসা, শেষ হোক রেষারেষি, ধরে ধরে বুকে গুলি করে কেটে ফেলে দেওয়া হোক সারা পৃথিবীর প্রত্যেকটি সন্ত্রাসবাদীকে। পি. ও. কে নিয়ে সমস্ত কলহ মুছে যাক! কাশ্মীর আমাদের ছিল, আছে, থাকবে – এ নিয়ে আমাদের কোন সন্দেহ নেই, বিন্দুমাত্র নেই! কারণ, আমরা জানি যে আমাদের অতন্দ্র প্রহরীর মত সারাক্ষণ পাহারা দিচ্ছে ভারতীয় সেনা, নৌ বাহিনী আর ব্যোম-জনেরা! পাহারা দিচ্ছেন এক সদাজাগ্রত দেশপ্রধান! জেগে আছেন অজিত দোভালের মত বিচক্ষণ মানুষেরা! সাথে আছে ‘সুদর্শন‘ এর মত রাশিয়ান আগ্নেয়াস্ত্র! সর্বোপরি আছে ১৪০ কোটি ভারতবাসীর সাহস আর প্রার্থনা!
এ যুদ্ধ আমরা চাই, না চাইলেও চাই, কারণ এ যুদ্ধ আমরা জিততে চাই। বিনাশ চাই সাম্প্রদায়িকতার, নাশকতার, সন্ত্রাসবাদের। কাশ্মীরের বাকিটুকুও যোগ করতে চাই ভূস্বর্গের মুকুটে! মুছে ফেলতে চাই শাহবাজের ‘শরীফ‘ এর জঙ্গিঘাঁটি! এ যে প্রত্যেক ভারতবাসীর মনের কথা, প্রাণের কথা! ভারত মায়ের কথা!
জয় হিন্দ!
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।