লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে, সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। পাক হানাদার ও তার সহযোগীদের হাতে অসংখ্য পরিবার ধ্বংস হয়েছে। তাদের আত্মত্যাগের মূল্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামী ও শহীদদের উদ্দেশ্যে সশ্রদ্ধ প্রণাম! আপনাদের মতো অগণিত বীর ও বীরাঙ্গনাদের আত্মোৎসর্গ বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে, ধর্মীয় মৌলবাদী শক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেছে।
এই ইতিহাস যেন আমরা ভুলে না যাই।
এইরকম একটি পরিবার নিয়ে আলোচনা করলেন তাঁদের বংশধর সোনম সাহা। সবার সঙ্গে সেই অতীতের কাহিনী ভাগ করে নিলাম।
--------------------------------------------------------------------
১. একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার দাদু বিশ্বম্ভর চন্দ্র সাহার কাকাতো ভাই প্রতাপচন্দ্র সাহা সপরিবারে থাকতেন শাঁখারী বাজারে, সেখানে তাঁদের তেজারতি ব্যবসা ছিলো৷ ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শাঁখারী বাজারে আক্রমণ করে প্রতিটি হিন্দু বাড়িতে। সেই রাতে হানাদার বাহিনীর দেয়া আগুনে এই পুরো পরিবারটি পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। প্রতাপচন্দ্র সাহা, ভাতৃবধু হেমনলিনী সাহা, তাদের দুই পুত্র, পুত্রবধূ, দৌহিত্র, ব্যবসায়িক কর্মচারী সহ মোট ১৫ সদস্যের পরিবারের নৃশংস মৃত্যুর সেই সংবাদ আমার দাদু জানতে পারেন মে মাসে৷
২. প্রতাপচন্দ্র সাহার কনিষ্ঠ সন্তান ধনঞ্জয় কুমার সাহা, যিনি জগন্নাথ কলেজের নাইট শিফটের ছাত্র ছিলেন, একাত্তরের বিক্ষুব্ধ মার্চে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য অধিকাংশ সময়ই তিনি থাকতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে৷ পঁচিশে মার্চ রাতেও তিনি জগন্নাথ হলেই ছিলেন বলে জানা যায় এবং ধারণা করা হয় জগন্নাথ হলের গণকবরে তিনিও হয়তো সমাহিত হয়েছেন। কারণ ২৫ মার্চের পরে তাঁর আর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি৷
৩. আমার দাদু, তাঁর বাবা, এবং তাঁর বাবা, পর পর তিন পুরুষে তাদের ঘরে কোন কন্যাসন্তান জন্ম নেয়নি। তাই আমার দাদুর পিতা স্বর্গীয় রামচন্দ্র সাহা এক কন্যাসন্তান দত্তক নিয়েছিলেন, নাম রেখেছিলেন মহামায়া। আমার বাবার এই পিসি মহামায়া দেবী অকালবিধবা ছিলেন, তার একমাত্র ছেলে জয়দেব সাহা আমার দাদুর সাথে ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। একাত্তরের মে মাসের শেষ এর দিকে কুটিরহাট বাজারে পাকিস্তান আর্মি আক্রমণ করলে সেই বাজারের সবচেয়ে বড় তেজারতি ব্যবসায়ী আমার দাদুর দোকানে এসে প্রথমে দোকান লুট হয়, তারপর আর্মির গুলি চলে, তারপরে দোকানে রাজাকাররা আগুন দেয়। সেদিন গুলিবিদ্ধ জয়দেব সাহার প্রাণ থাকা অবস্থাতেই প্রতিবেশী দোকানীদের শত অনুরোধ উপেক্ষা করে রাজাকাররা তাকে ভেতরে রেখেই দোকানে আগুন দেয়৷ গুলিবিদ্ধ কিন্তু জীবিত অবস্থায় জয়দেব সাহা অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান।
৪. কল্যান্দী গ্রামে মিলিটারি আসে তার তিন দিন পর। সেদিন একদিকে গ্রাম ছেড়ে আগরতলা শরনার্থী শিবিরে যাবার প্রস্তুতি চলছিলো আর অন্যদিকে হচ্ছিলো জয়দেব সাহার শ্রাদ্ধের কাজ। এই অবস্থায় শ্রাদ্ধের কাজ অসমাপ্ত রেখেই বাড়ির মেয়েরা যে যেদিকে পারে লুকিয়ে যায়। আমার বাবার পিসি মহামায়া দেবী আশ্রয় নেন খড়ের গাদার ভেতরে, কিন্তু রাজাকাররা তাকে দেখে ফেলে। তিনি অত্যন্ত সাহসী নারী ছিলেন, খড়ের গাদার গায়ে গেঁথে রাখা দা দিয়ে তিনি রাজাকারদের এলোপাতাড়ি আঘাত করেন, কয়েকজন আহত হয়। পরে মহামায়া দেবীকে রাজাকাররা মিলিটারি ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়৷ পরে আমার দাদু রাজাকার কমান্ডারের কাছে তার বোনকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনেক অনুনয় করে, আমার ঠাকুমার সব গহনা দিয়ে আসে রাজাকারদেরকে, বোনের মুক্তিপণ হিসেবে, কিন্তু মহামায়া দেবী আর কখনো বাড়ি ফিরে আসেননি। চারলক্ষ বীরাঙ্গনার একজন হয়ে মিশে গেছে তাঁর নাম।
৫. আমার জ্যাঠামশাই অরবিন্দ বিকাশ সাহা। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন৷ কল্যান্দী থেকে আগরতলার শরনার্থী শিবিরে যাবার পর তিনি যুদ্ধে যোগ দেবার জন্য মেলাঘর যান৷ দুই নাম্বার সেক্টরে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। বয়সের তুলনায় শীর্ণ শরীরের ছিলেন বলে তিনি রাইফেল চালানোর অনুমতি পেতেন না, কিন্তু গেরিলা আক্রমণের আগে রেকি করা, দেশের ভেতরে ঢুকে লুকিয়ে তথ্য আদানপ্রদান, নিপুন হাতে নিশানা বরাবর গ্রেনেড নিক্ষেপ, এসব কাজে তিনি ছিলেন দুই নং সেক্টরের জন্য এক ভরসার নাম। আগস্ট মাসের ২৮, ২৯ ও ৩০ তারিখ দুই নং সেক্টরের অনেক গেরিলা পাকিস্তান আর্মির হাতে বন্দী হবার পর অক্টোবরে নতুন করে যে গেরিলা দল দুই নং সেক্টরের যোদ্ধা হিসেবে প্রাণ তুচ্ছ করে যুদ্ধ চালিয়ে যান, আমার জ্যাঠামশাই অরবিন্দ বিকাশ সাহা সেই অকুতোভয় গেরিলা যোদ্ধাদের একজন৷
৬. আমার বাবা শংকর কুমার সাহা৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্লাস সিক্সের ছাত্র৷ এই মানুষটা যুদ্ধ করেন নি৷ সে বয়স তাঁর ছিলোনা৷ কিন্তু ভাইয়ের পিছু পিছু মায়ের চোখ এড়িয়ে ঐ বয়সে শরনার্থী শিবির থেকে হেঁটে হেঁটে মেলাঘর পৌঁছেছিলেন৷ সে সময় বাবার বয়সী অনেকেই যুদ্ধের ট্রেনিং দিতে গিয়েছিলেন। মেজর খালেদ মোশাররফ এই কিশোরদের হতাশ করতেন না। বলতেন যুদ্ধ কত দীর্ঘ হবে তা কেউ জানেনা৷ তোমরা ভবিষ্যত যোদ্ধা হিসেবে তৈরি হও। বাবা এবং বাবার বয়সীরা কয়েকজন ক্যাম্পে থাকতেন, মুক্তিযোদ্ধাদের যেভাবে যে প্রকারে সাহায্য করা সম্ভব তা করতেন, অবসর সময়ে যোদ্ধাদের কাছেই অনানুষ্ঠানিক ট্রেনিং চলতো, কীভাবে থ্রি নট থ্রি রাইফেল চালায়, ক্রলিং কীভাবে করে, গ্রেনেডের পিন কীভাবে খুলে, বারুদের পুলটিশ কীকরে বানায়৷ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে নয় মাসেরও দীর্ঘ হলে পরবর্তী যোদ্ধাদলটি এভাবেই তৈরি হচ্ছিলো৷
৭. আমার বাবার মামা মুরারী চন্দ্র সাহা ছিলেন আগরতলা এগারো নং শরনার্থী শিবিরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে৷ সেখানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন আমার দাদু বিশ্বম্ভর চন্দ্র সাহা, ঠাকুমা চিনুবালা সাহা এবং ঠাকুমার অন্য দুই ভাই নির্মলকান্তি সাহা ও ক্ষিতীশচন্দ্র সাহা৷
৮. আমার মায়ের বাবা অটল কৃষ্ণ সাহা ছিলেন বারোগ্রামের ন'আনি জমিদার। বেসিক ডেমোক্রেসির আমলে তিনি এলাকার চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন। অঢেল সম্পত্তি ছিলো, ব্রিটিশ আমল থেকে পরিবারের এক অংশ কোলকাতায় এবং আরেক অংশ নোয়াখালীতে প্রতিপত্তি গড়েছিলেন৷ একাত্তরের যুদ্ধ শুরু হলে আমার দাদু অটল কৃষ্ণ সাহার বাড়িটি শহর থেকে মিলিটারির অত্যাচারে পালিয়ে আসা মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত হয়৷ দাদু তার প্রভাব ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান পরিচয় ব্যবহার করে পাকিস্তান আর্মির সাথে একধরনের সুসম্পর্ক করেন, আর্মি ক্যাম্পে নিয়মিত সুগন্ধী চাল, ডাল, মাংস, সবজি পাঠাতে থাকেন এবং তার আড়ালে বাড়িতে আশ্রয়প্রার্থী মানুষদের নিরাপদে বর্ডার পার করার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের অর্থ সাহায্য করা, গেরিলাদের আত্মগোপনের ব্যবস্থা করা, এসব কাজেও তিনি যুক্ত হন। তার উপর পাকিস্তান আর্মির সন্দেহ বাড়লে এক পর্যায়ে তিনি আমার দিদা, মা,ছোট মামা ও মেজ মামাকে কোলকাতার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন৷ নিজে সেজ মামাকে নিয়ে নোয়াখালীতেই থাকেন যাতে করে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। আগস্ট মাসে পাকিস্তান আর্মি দাদুর বাড়িতে আগুন দেয়, দোমহলা বাড়ি পুড়ে ছাই হয়। আহত হয় আমার সেজ মামা। এক কাপড়ে দাদু সেজ মামাকে নিয়ে কোলকাতা পৌঁছান৷ সেখানে গিয়ে যুক্ত হন শরনার্থী শিবিরের ব্যবস্থাপনা ও স্বেচ্ছাশ্রমের কাজে। আমার মেজ মামা হরিপদ সাহাও এই কাজে যুক্ত হন।
৯. আমার বড় মামা কালীপদ সাহা কোলকাতায় পড়াশোনা করতেন। এসময় তিনি জড়িয়ে পড়েন বাম রাজনীতির সাথে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান আর্মির বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি বামপন্থীদের যে স্বতন্ত্র যুদ্ধ সেই দলের তিনিও ছিলেন একজন৷
১০. আমার মায়ের কাকা ভুবনবিহারী সাহা ব্রিটিশ সরকারের চাকুরী সূত্রে সাতচল্লিশ পূর্ববর্তী সময় থেকেই কোলকাতায় বাস করতেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের জন্য অর্থ সংগ্রহের যে উদ্যোগ সেখানে অগ্রনী ভূমিকায় ছিলেন তিনি। ঋত্বিক ঘটকের উদ্যোগে পথে পথে গান গেয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এবং শরনার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহের দলে ছিলেন আমার মায়ের কাকাতো বোনেরা অর্থাৎ ভুবনবিহারী সাহার দুই কন্যা সবিতা সাহা ও বিধুমুখী সাহা।
...........
বাংলাদেশের জন্ম এবং স্বাধীনতায় এ কেবল আমার পরিবারের অবদানের নির্মোহ নির্মেদ সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। আমার পরিবারের মতো এমন হাজার হাজার পরিবারের ত্যাগ তিতিক্ষা শ্রমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। জ্ঞান হবার পর থেকে আমি জেনে এসেছি বাংলাদেশের জন্মদাগে মিশে আছে আমার পরিবারের মানুষের আত্মদান৷ আমার কখনো সেই ইতিহাস নিয়ে উচ্চকন্ঠ হতে ইচ্ছে হয়নি, কারণ আমাকে এই ইতিহাস পাঠের সাথে সাথে এটাও শেখানো হয়েছে যে ত্রিশ লক্ষ মানুষের প্রাণ যে দেশটার স্বাধীনতার মূল্য, সেখানে নিজেদের পারিবারিক অবদান অতিসামান্য অংশ কেবল। এই নিয়ে গর্ব, শ্লাঘা, অহংকার, বেদনা সবই ব্যক্তিগত, বাগাড়ম্বরের নয়৷ ফলে এই দেশের স্বাধীনতায় আমার পরিবারের অনেক ত্যাগ আর তিতিক্ষা আছে, এই বাক্যের বেশি কিছু আমার কখনো লেখা হয়নি ধারাবাহিক ভাবে, বিচ্ছিন্নভাবে কাছের মানুষেরা আর বন্ধুরা জানে অনেকে৷
আমার দাদু বাবা মামারা দেশ স্বাধীনের পরদিনই বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন। কোনদিন তাদের ভারতে থেকে যাবার কথা মনে হয়নি। দোমহলা জমিদার বাড়ির বদলে টিনের চৌচালা ঘরে থাকা মেনে নিয়েছেন হাসিমুখে। স্বাধীন বাংলাদেশে আমার ঠাকুমা ধনী ব্যবসায়ীর স্ত্রী থেকে রাতারাতি দরিদ্র গৃহিণীতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন, কিন্তু কখনো আক্ষেপ করেন নি, দেশ তাকে কী দেয়নি, কী পেলেন না সে হিসাব করেন নি৷ আমার বাবা কাকা জ্যাঠারা প্রচন্ড দারিদ্র্যের সাথে সংগ্রাম করে আবার সব গড়ে নিয়েছেন। ১৯৭১ এর রাজাকাররা চোখের সামনে সবসময় সরকারি দলের লোক হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে, ২০০১ সালে আমরা আমাদের পৈতৃক ভিটে হারিয়েছি, আমার দাদু ঠাকুমা এক কাপড়ে দ্বিতীয়বার উদবাস্তু হয়ে ঢাকা শহরে উঠে এসেছেন, কিন্তু মাথা নোয়াননি৷ রাজাকারের ছেলেকে বলে এসেছেন, "যা তোকে এই ভিটা ভিক্ষা দিলাম!" আমার জ্যাঠামশাই কখনো মুক্তিযোদ্ধার সম্মান-সম্মানী কিছুই দাবী করেন নি, আমার বাবা নিজেকে নিয়ে বড়াই করেনি, আজীবন বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত আমার মুক্তিযোদ্ধা বড়মামা, ছাত্র ইউনিয়ন সদস্য হিসেবে বিপ্লব সংগ্রামে অংশ নেয়া আমার মা, সেজমামা; এরা কখনো আত্মপ্রেমে বা আত্মপ্রশংসায় মশগুল হন নি৷ দেশের জন্য কিছু করা এই মানুষগুলোর কাছে এতো স্বাভাবিক ছিলো যে আমরা বহুকাল বুঝিইনি এই সাধারণ মানুষগুলো আসলে ইতিহাসের নায়ক।
কিন্তু এখন আমি উচ্চকন্ঠে বলি। আমাকে যখন পাশের দেশে চলে যেতে বলা হয় আমি পা দাবিয়ে বলি এই দেশ আমার বাপ-দাদা চৌদ্দগুষ্ঠির, আমি যাবোনা৷ আমার ধর্মীয় পরিচয় মুখ্য হয়ে গেলে আমি মাথা উঁচু করে আমার নৃতাত্ত্বিক পরিচয় আরো উঁচুতে তুলে ধরি। আমার পরিবার এই দেশের জন্য কাজ করার সময় নিজের ধর্মের মাপজোখ তো করেনি! তাহলে আমি কেন করবো? আমি বুক ঠুকে বলতে পারি আমি এদেশের ভূমিজ সন্তান। এদেশ আমার। আমার চৌদ্দপুরুষের রক্তের দানে কেনা এই দেশ, রক্তের দামে কেনা এই দেশ৷
বীরাঙ্গনা শহীদ মহামায়া সাহা, বীর মুক্তিযোদ্ধা অরবিন্দ বিকাশ সাহা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কালীপদ সাহা, শহীদ ধনঞ্জয় সাহা, শহীদ জয়দেব সাহা, শহীদ প্রতাপচন্দ্র সাহা, শহীদ হেমনলিনী সাহাদের গর্বিত উত্তরাধিকারি আমি৷ আমি এবং আমার মতো আরো অনেক শহীদ এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উত্তরাধিকার এখনো জীবিত৷ আমাদের ধমনীতে রক্তের সাথে সাহস প্রবাহিত হয়। আমরা যতদিন বেঁচে আছি বাংলাদেশ হারবেনা।
আমার দুখী দেশ, তোমার জন্মলগ্নে এই প্রতিজ্ঞা মা, তোমার সন্তানদের ত্যাগ বৃথা যেতে দেবোনা। তোমারে স্বর্গের চেয়ে শ্রেষ্ঠ জেনে আমরা দীক্ষামন্ত্র নিয়েছি মা।
"জননী জন্মভূমি স্বর্গাদপী গরিয়সী।"
(লিখেছেন Sonam Saha)