এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ভ্যালেন্টাইন'স ডে এবং একটি কল্পিত আখ্যান

    Somnath mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২৯৮ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • ভ্যালেন্টাইন’স ডে এবং একটি কল্পিত আখ্যান।

    বৈঠকখানা ঘরে টাঙানো ক্যালেন্ডারের ফেব্রুয়ারি মাসের পাতাটা উল্টে দিতে গিয়ে ভোলানাথের শরীর আর মন দুটোই কেমন আনচান করে উঠল। পাশের দেয়ালের আয়নায় নিজেকে একবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে নেয় সে। নাহ্, ঠিক‌ই আছে সব। হাতের মুঠোয় আঁকড়ে ধরে রাখা মুঠোফোনটাকে নিজের দিকে তাক করে খটাশ শব্দ তুলে ক্যামেরার শাটারটা টিপে দিল ভোলানাথ। সেলফি ! বেশ হয়েছে! মনে মনে এমনটা ভেবে বেজায় খুশি হয় সে। হাত পা ছড়িয়ে বিশাল কৌচে বসে একটু জিরিয়ে নেয়। সামনে ঝোলানো ক্যালেন্ডারের দিকে আবারও তাকায়। বেশ খুশি হয়। এবার সেই বিশেষ দিনটা শুক্রবারে পড়েছে দেখে তিড়িং বিড়িং করে লাফাতে থাকে আনন্দে। একে উইক এন্ড,তার ওপর পর পর দুদিনের ছুটি। অনেক দিনের সুপ্ত ইচ্ছে, একবার শহরে গিয়ে এমন বিশেষ দিনের হালচাল দেখে আসার। অবশ্য পারো, মানে পার্বতীর ইচ্ছেটাকে জানতে হবে। তারপর খোঁজ করতে হবে ত্রিদেবের বাকি দুজনের। এমন সব ভাবতে ভাবতে ভোলানাথ এক রকম থপথপিয়ে হেঁসেলের দিকে চলে। নাহ্, শরীরের প্রতি এবার একটু যত্ন নিতে হবে।

    বিরিঞ্চি সবে মাত্র বাজার থেকে ফিরেছে, এখনও গায়ের ঘাম শুকোয়নি এর মধ্যেই সারদার নেক নজরে থাকা মরাল আর মরালি প্যাঁক প্যাঁক করতে করতে এসে হাজির – “তোমার বিশ্ব বীক্ষণ যন্ত্রটা খানিকক্ষণ আগে গ্যাক্ গ্যাক্ করে বাজছিল। কেন যে অমন একটা হতচ্ছাড়া রিং টোন লোড করেছো বুঝিনা আমরা। সারদা মায়ের সঙ্গে থেকেও কিছু শিখলে না।” বাজার থেকে ফিরে মেজাজের তারগুলো এমনিতেই বেজায় টং হয়ে ছিল, তার ওপর এইসব পাকা পাকা কথা শুনে মনটা আরও খিঁচড়ে গেল বিরিঞ্চির। রাগত স্বরে সে চিৎকার করে বলে উঠলো - “বেশ করেছি। কাজ নেই, কম্মো নেই সারাদিন এঘর ওঘর ঘুরাঘুরি করছে, আর চুকলি করে বেড়াচ্ছে। যত্তোসব।” আবার‌ও গ্যাক্ গ্যাক্ করে বীক্ষণ যন্ত্রটা বেজে ওঠে। পর্দার দিকে তাকিয়ে দেখে, সেখানে ভোলানাথের নাম ভেসে উঠেছে। নিজেকে খানিকটা সামলে নিয়ে কলটা গ্রহণ করে। “হ্যালো, ভোলা বলছিস ?….

    জনার্দন মানুষটা চিরকালের আয়েসি। রমা এসে বার কতক ডেকে গেছে। সকালের চা- নাস্তা দুজনে একসাথে বসে করা অনেকদিনের অভ্যেস। ইদানিং রমা লক্ষ করে দেখছে জনার্দন মানুষটা কেমন যেন নিদ্রালু হয়ে থাকছে। এর পেছনে কী কারণ তা আন্দাজ করতে পারে না রমা। সঙ্গদোষে নয়তো! কে জানে? আজ‌ও চায়ের পেয়ালা হাতে নিয়ে ঘরে ঢুকে রমা ডাকাডাকি শুরু করতে না করতেই মাথার কাছে রাখা মুঠোফোন হাতে নিয়ে ধরফরিয়ে বিছানার ওপর উঠে বসেছে জনার্দন। রমা চায়ের পেয়ালাটা ছোট টেবিলের ওপর নামিয়ে রাখে। নিজের কাজে ফিরে যাবার সময় দুই বন্ধুর কথোপকথনের কিছু টুকরো কথা কানে ভেসে আসে –

    – দাঁড়া আমি রমার সঙ্গে আগে কথা বলে নিই একটু। ওঁর আবার সুবিধা অসুবিধা কিছু আছে কিনা?

    – এতোকাল সোমসার কচ্চিস শালা,এখনও পর্যন্ত গিন্নিকে ঠিক বুঝে উঠতে পারলিনা? বলিহারি মাইরি। তুই শালা চিরকাল আমাদের মধ্যে গুডি বয় হয়েই রয়ে গেলি। আরে আমাকে দেখ্। ….পারো রাজি না হয়ে পারে? বিরিঞ্চিও ব্যাটা বেড়াতে যাবার কথা শুনে আমতা আমতা করছে। তোরা দুজন শালা, কেমন বুড়িয়ে গেছিস্।

    – সেটাই তো স্বাভাবিক। তোর মতো একতরফা সিদ্ধান্ত তো আর আমি নিতে পারিনা। আমাকে একটা স্থিতাবস্থা বজায় রেখে চলতে হয়।তোর পলিসি হলো সবকিছু ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও। সবজায়গায় অমন বুলডোজার রাজ চালানো যায়? আমি রমার সঙ্গে কথা বলে তোকে জানাচ্ছি।

    ও দিক থেকে কট্ করে একটা শব্দ ভেসে আসে। যন্ত্রটাকে কানের থেকে সরিয়ে রাখতেই রমা জনার্দনকে প্রশ্ন করে –

    – কে কথা ক‌ইলো? ভোলা ঠাকুরপো? কী বলছে?

    ভোলানাথের কথা শুনে বিরিঞ্চি রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে ওঠে। কোম্পানির প্রোডাকশন ডিপার্টমেন্টের হর্তাকর্তা হ‌ওয়ায় যখন তখন এখানে সেখানে যাওয়ার ফুরসৎ মোটেই মেলেনা। তাঁর ওপর চার মাথার কাজ এক মাথাতেই সামলাতে হয়। তবে এমন পড়ে পাওয়া সুযোগ আসায় মনে মনে সে তোরজোড় শুরু করে দেয়। সারদা দুদিন আগেই কোলকাতা ঘুরে এসেছে বলে একটু গাইগুই করছিল বটে, তবে শেষপর্যন্ত ঘাড় নেড়ে সায় দিয়েছে। একরকম হৈচৈ করে গোছগাছের পর্ব শুরু হয়ে যায়।

    বিরিঞ্চি, জনার্দন আর ভোলানাথ - ত্রিদেবের তিন জনে মিলে জল্পনা করে কীভাবে ভ্রমণ পর্ব সুসম্পন্ন হবে। পথতো নেহাৎ কম নয়। সারদা অবশ্য বলেছে – এই উৎসবকে কেন্দ্র করে শহর জুড়ে অনেক আগে থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়েছে। নিজের পুজোর আয়োজন দেখতে গিয়েই সে আগাম আঁচ করতে পেরেছিল এই জাঁকজমকের আগাম বহর। রোজ ডে থেকে শুরু করে সাত দিনের মাথায় মৌতাত একেবারে জমে ওঠে। সেদিন দুজনে ফুলডোরে বাঁধা হয়ে ঝুলতে থাকে প্রেমের রশিতে। দিদি রমাকে এসব কথা বলতেই সে তো আৎকে উঠে বলে – “ আমাদের‌ও এইসব গলাগলি, ঢলাঢলি করতে হবে নাকি? আমিতো বাপু,হৈচৈ, হাঁকাহাঁকি তেমন স‌ইতে পারিনা সেই ছোটবেলা থেকেই। শেষে হয়তো ভিরমি খেয়ে তোদের আনন্দে বাগড়া দিয়ে ফেলবো। দেখিস বাপু, রয়েসয়ে যা করার করিস।”

    দেখতে দেখতে যাবার দিন এসে পড়ে। সবাই মিলে ঠিক করেছে দেবর্ষি ট্রাভেলসের নতুন মডেলের গাড়ি “হাস্কিং পেডালেই” যাওয়া হবে। সাতসকালেই গাড়ি নিয়ে কৈলাস এ্যাপার্টমেন্টের দুয়ারে এসে হাজির হয় দেবর্ষি। একসঙ্গে এতো জন সেলিব্রেটি যাত্রী পেয়ে দেবর্ষিতো রীতিমতো গদগদ হয়ে ওঠে। সবাই ঠিকঠাক উঠে বসতেই র‌ওনা দেয়। ডেস্টিনেশন ভ্যালেন্টাইনস ডের কলকাতা।

    দূর থেকে ইস্পাতের কাঠামোটাকে দেখে সবাই হৈ হৈ করে ওঠে। ভোলানাথ হেঁকে ওঠে – “ ঐ দেখো, আমাদের গঙ্গোত্রী কন্যাকে। এখানে এসে কি হাল হয়েছে আমাদের ঘরের মেয়ের!” পার্বতী অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে আছে দেখে জনার্দন জিজ্ঞেস করে – “হ্যাঁরে! কেমন লাগছে? ভোলা এভাবে তাল না তুললে তো আমাদের কারোরই আসা হোতনা।” পার্বতী বরাবরই ভোলানাথের ভালোবাসায় মজে থাকে। মুচকি হেসে জবাব দেয় – “এখানে তো নিত্যনতুন উৎসব লেগেই রয়েছে। তবে এই প্রেম দিবসের কথা বাপু আগে কখনও সেভাবে শুনিনি। তাই বড়ো সাধ হলো একবার কাণ্ডটা দেখে যাবার।” রমা আর সারদা দুজনেই ঘাড় নেড়ে সায় দেয়।

    দেবর্ষিকে একটু ফাঁকা জায়গা দেখে তার আশ্চর্য ব্যোম যানটিকে নামাতে বলে বিরিঞ্চি। ‘তথাস্তু’ বলে আজ্ঞা পালনের সংকেত দিলেও ফাঁকা জায়গা আর খুঁজে পায়না সে। সর্বত্রই গিজগিজ করছে বিস্তর মানুষ। সবাই আজ এসেছে যুগলে। তাঁদের চলন বলন, হাবভাব দেখে জনার্দন জিজ্ঞেস করে – “আমাদের‌ও কি অমন গা ঘেষাঘেষি করে প্রেমে হাবুডুবু খেতে খেতে চলতে ফিরতে হবে নাকি ?” বিরিঞ্চি এসব দেখে শুনে বেশ গম্ভীর গলায় বলে – “ব্যাপারটা যে এমনটি হবে আমিতো তা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি। তাহলে সারদা,রমা আর পার্বতীকে না নিয়েই আসতাম। ওদের সামনে ইচ্ছেমতো ফষ্টিনষ্টি করবো কি করে?” বিরিঞ্চির কথা শুনে সারদা চোখ কটমট করে তাকাতেই বিরিঞ্চি রীতিমতো গুটিয়ে যায়।

    এসবের মধ্যে দেবর্ষি অতনু আর প্রীতিকে কোথা থেকে পাকড়াও করে নিয়ে আসে। চোখের সামনে ভোলানাথ, জনার্দন আর বিরিঞ্চিকে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কর্তা গিন্নি দুজনেই বেশ অস্বস্তি বোধ করে। আমতা আমতা করে অতনু বলে – আমরা নিজেদের ইচ্ছেয় আসিনি। এখানকার একটা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ আমাদের ডেকে এনেছে। ভোলানাথ এসব শুনে অবাক স্বরে বলে – “আমরা তিন বন্ধু হলাম দুনিয়ার তাবৎ ইভেন্টের পরিচালক, আর সেখানে তুমি আর প্রীতি এসেছো সবকিছু সামাল দিতে? জনার্দন তোর হাতের ফ্লাইং ডিস্ টা দেতো একবার ঘুরিয়ে,দেখি কার ঘাড়ে কটা মাথা? ইয়ার্কি হচ্ছে?” জনার্দন আর বিরিঞ্চি রীতিমতো নাকাল হয়ে যায় ভোলানাথকে শান্ত করতে।

    খোলা মাঠের মধ্যে এমন উত্তপ্ত কন্ঠে বাদানুবাদের দৃশ্য দেখে বেশ কিছু মানুষের ভিড় জমে গেছে তাঁদেরকে ঘিরে। ভোলানাথের রাগত চেহারা দেখে এক ছোকরা এগিয়ে এসে বলে – “গুরু, তোমরা আজকের দিনে এখানে কেন?” তার সঙ্গে থাকা ফড়িং পানা ছুকরিটি হঠাৎ করে খেনো গলায় গেয়ে ওঠে – “এ শুধু পেমের দিন, এ লগন পেম বিলো বার।” গান শুনে ভিড় আরও বেড়ে ওঠে। কেউ কেউ নিজের হাতের গোলাপ ফুল এগিয়ে দেয় এই ছয় জন আশ্চর্য অতিথির উদ্দেশ্যে। খটাশ খটাশ করে মুঠোফোনের ক্যামেরার শাটার পড়তে থাকে।এসব দেখেশুনে ভয় পেয়ে অতনু আর প্রীতি ভেগে পড়েছে কোন কালে কে জানে? রমা, ভগিনী সারদাকে ডেকে বলে– “এসব কি হচ্ছে? কৃষ্টি, সংস্কৃতি, রুচি – এসব কি বেমালুম উবে গেছে? এই যে দুদিন আগে এলি! এসব সামলে যেতে পারিসনি?” সারদাই বা ছেড়ে কথা ক‌ইবে কেন? বড়ো দিদির এমন দপদপানি স‌ইতে না পেরে সেও গলা উঁচিয়ে বলে – “আরও বাছবিচার না করে খয়রাতির টাকায় এদের পকেট ভরে নাম কুড়োতে থাক। দেখো ভরা পকেটের ভক্তদের কি হাল!”

    এরমধ্যেই অন্য একদল হাজির হয়েছে বুম নিয়ে। “দিদি, এদিকে বলুন। দিদি আমার দিকে তাকিয়ে বলুন। আপনাদের এই বাইটটা এক্সক্লুসিভ পোস্ট হবে।” রীতিমতো অসহায় লাগে সকলের। স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে জনার্দনের জুড়ি নেই। সেই সবাইকে আশ্বস্ত করে তখনকার মতো বিদায় করে। ক্ষণিকের স্বস্তি পায় বাকিরা। পার্বতী লড়াকু মেয়ে। বাপের বাড়ির সঙ্গে লড়াই করে তবেই একদিন ভোলানাথকে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিল। সেই বলে – “এখান থেকে একটু তফাতে না গেলে এই বিড়ম্বনা থেকে আমাদের মুক্তি মিলবে না।” কিন্তু তফাতে যাব বললেই তো আর যাবার উপায় নেই। চারিদিকে কেবলই ভালোবাসা পিয়াসীদের ভিড়। বন্যার জলের মতো সমানে আসছে আর আসছে। কার‌ও হাতে লাল গোলাপের থোকা তো কারও মুখে মহার্ঘ্য চকোলেট। আবার অনেকের কোলে কোলে রকমারি টেডিবিয়ার তো অন্যরা চলেছে পরস্পরের নিবিড় আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়ে। এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়।

    চারপাশের এমনসব কাণ্ড হলেও দেবর্ষিকেও ধারেকাছে দেখা যাচ্ছে না। দৌর্দণ্ডপ্রতাপান্বিত ত্রিদেব রীতিমতো অসহায়।এমন সময় সেখানে হাজির হয় একজন মাঝবয়সী মানুষ। পোশাক আশাক অন্যদের মতো নয়। ঘাসের ওপর বিধ্বস্ত হয়ে বসে থাকা ঐ বিশেষ ছয় জনকে দেখতে পেয়ে সে বলে – “বাবা ঠাকুর আর মা ঠাকুরণরা ! যদি অভয় দেন তো একটা কথা নিবেদন করি। আজ্ঞে আমার নাম বিনায়ক। কিছুমাত্র মনে না করেন তাহলে বলি। সামনেই জাহ্নবী দেবীর ঘাট। ওখানেই আমার নাও বাঁধা আছে। আপনারা বরং সেখানেই চলেন। নাও তে বসে বিশ্রাম নিতে কোনো অসুবিধা হবেনা। চলেন মা ঠাকুরণরা। আসেন বাবা ঠাকুরেরা।সায়ম্ কাল সমাগত।”

    চারপাশের ব্যস্ত কোলাহলকে পেছনে ফেলে বিনায়কের সঙ্গে পা মিলিয়ে সকলে জাহ্নবী দেবীর ঘাটে এসে হাজির হয়। ভিড় এখানেও। তবে ওদিকের মতো উদ্দাম উত্তাল নয়। সেই সবকিছুকে পাস কাটিয়ে ওঁরা সকলে বিনায়কের নৌকার পৈঠাতে এসে বসে। বিনায়ক বৈঠা চালিয়ে পাড় থেকে বেশ খানিকটা দূরে সরিয়ে নিয়ে আসে নৌকাটিকে। সকলেই কিছু সময় চুপচাপ বসে থাকে। এক সময় বিরিঞ্চি বলে– “ রমা! একটা গান ধর।” নীরবতা ভেঙে সারদা বলে সেই ভালো। আমি আমার রুদ্র বীণার তারে নতুন করে ঝংকার তুলি।আর পার্বতী ! তুমি নেচে ওঠো সব ভালোবাসা দিয়ে। জাহ্নবীর জলে একরাশ সোনা ছড়িয়ে দিতে দিতে মাঘী কৃষ্ণা দ্বাদশীর ক্ষয়া চাঁদ একটা সোনালী আলোর মতো একটু করে দিগন্তসীমা ছেড়ে গগন পটের ওপরে উঠে আসে। রমা গান শুরু করে —

    চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে, উছলে পড়ে আলো।
    ও রজনীগন্ধা, তোমার গন্ধসুধা ঢালো।।
    পাগল হাওয়া বুঝতে নারে ডাক পড়েছে কোথায় তারে –
    ফুলের বনে যার পাশে যায় তারেই লাগে ভালো।।
    ফুলের বনে যার………..

    রাত গভীর হয়। চাঁদ এখন ঠিক মাথার ওপরে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পৌলমী | 2409:4060:30d:5183:6c20:c0c7:8d94:***:*** | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৩৮541101
  • গুরুর পাতায় আজ প্রেম দিবসের গল্প। এই দিনটার প্রভাব যে কতটা প্রসারী তার আন্দাজ পেলাম এই কাহিনিতে। ভোলানাথ জনার্দন আর বিরিঞ্চি এই তিন দেব ও তাঁদের ভ্যালেন্টিনারাও হাজির এই গল্পে।  আছে দেবর্ষি, অতনু, প্রীতি। এঁরাও উপস্থিত হয়ে অনুঘটকের কাজ করছে।সব মিলিয়ে জমজমাট প্যাকেজ।
  • সৌমেন রায় | 2409:40e1:106d:7834:8000::***:*** | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৫৬541102
  • বেশ বেশ ।দেবতার আড়ালে লেখকও প্রেম দিবসে সামিল।
  • সুস্মিতা মন্ডল | 2409:4060:2d12:7f1a::f49:***:*** | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৫০541103
  • খুব সুন্দর ভাবে আধুনিক প্রেমের নামে যে সৌন্দর্য হীনতার কৃষ্টি হীনতার প্রকাশ তাকে বিদ্ধ করেছেন আপনার কলমের মুন্সিয়ানায় । কিন্তু দাদা কেমন যেন ভয় হচ্ছে আমরা মানিয়ে নিতে বাধ্য হতে হতে বিপন্ন প্রজাতিতে পরিণত হয়ে পড়ছি। প্রেম দিবসে প্রেমময় ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি মনে প্রেমের সঞ্চার হোক প্রেমের প্রতিষ্ঠা হোক
  • #:+ | 2409:4060:30d:5183:4b52:100b:e09c:***:*** | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৫৫541104
  • বসন্ত এসে গেছে।সবাই এখন উতলা নিজেদের প্রেমাস্পদের সঙ্গে সময় কাটাতে। তবে ক্লাইম্যাক্সে চাঁদের হাসি গোটা ব্যাপারটাকে বেশ মাখোমাখো করে দিয়েছে। বেশ মজা পেলাম রমা আর সারদার বাক্য বিনিময়ে। চালিয়ে যান।
  • DrSouravM | 2401:4900:3a0b:8290:8898:1af2:a24c:***:*** | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:১৫541107
  • One of the best short stories I have read here. Thank you
  • অভ্রদীপ | 240a:61:2056:25d4:3a8a:3543:6c7f:***:*** | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৪৮541110
  • একেবারে নতুন স্বাদের লেখা দাদা। অনেকদিন পর এরকম একটা হালকা চালের রম্যরচনা পড়লাম। মন ভরে গেলো! 
  • সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। | 2409:40e0:e:f917:8000::***:*** | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৫৯541119
  • যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রেমেও এসেছে গতি,  গিয়েছে আবেগ। নির্জনে নিভৃতে দুদন্ড ভালবাসা বিনিময়ের মুহূর্ত , একটু হাতের ছোঁয়া , গুটিকয় প্রেমপত্র, প্রেমের কবিতা লেখা - সারা জীবনের  সুখস্মৃতি - সেইসব দিন গেছে চলে। এখন প্রেম নেমে এসেছে রাস্তায়। তার সার্থকতা দেখনদারিতে।  খোলা মাঠে, আমজনতার সামনে, খুল্লমখুল্লা। একদম দিনক্ষণ মেপে,  ক্যালেন্ডার দেখে। বহুজাতিক কোম্পানির দ্বাৰা  নির্ধারিত পণ্যের বিনিময়ে। অসংখ্য ছবিতে মুখবই ভরিয়ে প্রচার করতে পারলে প্রেম সার্থকতা লাভ করে।মর্ত্যে প্রেমের জয়গানের দিনে অনেক আশা নিয়ে পর্যবেক্ষণে এসে স্বস্ত্রীক ত্রিদেব খুবই হতাশ, সন্দেহ নেই। আধুনিক প্রজন্মের জন্য অনেক শুভকামনা রইলো। 
  • শর্মিষ্ঠা লাহিড়ী | 49.37.***.*** | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৩৮541121
  • একেই বলে প্রেম দিবসের অপার মহিমা। ক্রমশই এর বপু স্ফীত হচ্ছে। উপহারের উপকরণের ও   বৈচিত্র্য বৃদ্ধি হচ্ছে। জীবনের আবেগ তার মাধুর্য হারিয়ে আচার সর্বস্ব তায় গা ভাসিয়ে দিচ্ছে। মনের অনুভূতি এখন বিপণনে র অন্যতম উপকরণ। ভালো বাসা র দিন শুধু মাত্র কদিনের অনুষ্ঠানে পর্যবেসিত না হয়ে সারা বছর সবার মনে বিরাজিত হোক। প্রেম দিবস যেন সবার অন্তরে নিভৃতে বেঁচে থাকে। রম্য রচনার আড়ালে লেখক সত্যি ই প্রেম হীন তাকে মুছে প্রেম ময় পৃথিবীর কথাই শোনা লেন।
  • Avijit Chakraborty | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫৪541138
  • বেশ মজা করে একটা বাস্তবিক লেখা আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্যে লেখক মহাশয়কে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা। এই বিশেষ দিনটির কবল থেকে লেখকও যে ছাড় পেলেন না, এটা দেখে আরও বেশি মজা পেলাম। লেখক মহাশয় লোক চক্ষুর আড়ালে থেকে  এই দিনটির কার্যকলাপ যে এতো সামনে থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন বিগত বেশ কিছু বছর ধরে, সেটা ভেবে মজা পাওয়ার মাত্রাটা আরেকটু বৃদ্ধি পেলো। আর হ্যাঁ, অতনু আর প্রীতিকে ঠিক ঠাওর করতে পারলাম না।
  • মিহির মাইতি | 2409:4060:395:1f00:e24f:2e71:7dc4:***:*** | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৩৫541164
  • পড়ে বিলকুল মজা পেলাম। দেবর্ষির ব্যোমযানটি অভিনব। শেষে রবীন্দ্র গানেই স্বস্তি পাওয়ার বিষয়টি কাহিনিটিকে দেবলোকে হারিয়ে যেতে দেয়নি। লেখকের কাছ থেকে এমন হালকা মেজাজের লেখা আরও চাই।
  • Palash Mukherjee | 2405:201:8022:e80a:94f5:fa31:c616:***:*** | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৪৮541195
  • A Beautiful satire, it rememinded me reading ভগবানের টেঁকশাল, you have also touched লক্ষীর ভান্ডার too, great passage to read....
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন