এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • নির্বাক ভালোবাসা.....

    Partha Neogy লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৯৪ বার পঠিত
  • লীলা আজও চোখ যেতেই দেখলো প্রতিদিনের মত আজও ছেলেটি এপ্রন হাতে বাসের স্টপেজে দাঁড়িয়ে বাস এর জন্য অপেক্ষা করছে।

    সে ডাক্তারির ছাত্রদের দুই চোখে দেখতে পারেনা।কেননা, সে নিজে পরীক্ষা দিয়েও ডাক্তারিতে ভর্তি হতে পারেনি।

    কিন্তু প্রতিদিন ছেলেটাকে লক্ষ্য করতে করতে, এই ছেলেটাকে একটু অন্য রকম লাগে তার।

    অন্যান্য ডাক্তারির ছাত্রদের দেখলে তার মাঝে যেমন বিরক্তি আসে, y এই ছেলেটিকে দেখলে তেমন বিরক্তি আসে না।

    বরং এই ছেলেটিকে দেখার জন্যই লীলা প্রতিদিন একই বাস স্টপে আসে। অন্য কোন পথ দিয়ে যাতায়াত না করে শুধু এই পথ দিয়েই আসে সে।

    লীলা মেয়েটা একটু অন্যরকম ছিল।

    অন্যরকম বলতে, সে এমন ভাব করে যেন প্রেম-ভালবাসার ধারে কাছে সে নেই। কিন্তু মনে মনে সে এক ধাপ এগিয়ে।

    বাস স্ট্যান্ড এর ওই ছেলেটার নাম ছিল রানা ।
    রানাও লীলাকে চুপচাপ লক্ষ্য করত।
    মাঝে মাঝেই তাদের একে অপরের সাথে কথা না হলেও চোখাচোখি হত।
    বাসে রানা যখন দেখত লীলা দাঁড়িয়ে আছে আর সে বসে আছে, তখন নিজের সিটটাও ছেড়ে দিত।

    কিন্তু তারা কখনও একে অপরের সাথে কথা বলেনি।

    এমনকি তারা একে অপরের নামটাও জানতোনা।

    লীলা প্রতিদিনই হাজারও বুদ্ধি বের করত রানার সাথে কথা বলার, কিন্তু কাজের সময় আর সেই বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে পারতোনা।

    প্রতিদিনের মত আজও লীলা চিন্তা করতে লাগল ওই ব্যাপারটি নিয়ে।

    যেহেতু লীলা একটু চাপা স্বভাবের, তাই
    সে এই ব্যাপারে কারও কাছে পরামর্শও চায়নি।

    দুদিন বাদেই ১৪ই ফেব্রুয়ারী অর্থাৎ ভ্যালেন্টাইন্স ডে মানে প্রেম দিবস।

    সে ঠিক করল ওই দিনই ছেলেটিকে সব বলবে ও।

    যে লীলা জীবনে কখনও ফুল কেনেনি, সে নিজেই ১৪ই ফেব্রুয়ারী সকালে ফুল কিনতে গেল।

    তারপর নিজের পছন্দের ফুল হাতে নিয়ে সে বাস স্টপে দাঁড়িয়ে আছে ছেলেটির অপেক্ষায়…

    বেশিরভাগ সময় বাস স্টপে ছেলেটিকেই আগে আসতে দেখা যেত।আগে দেখা না গেলেও ১০-২০ মিনিটের মধ্যে চলে আসত। কিন্তু আজ ৪০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পরেও ছেলেটির কোন খবর নেই।

    এরপর আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করল লীলা।
    কিন্তু এর পরেও ছেলেটির কোন দেখা নেই। নিজেকে খুব বোকা মনে হল লীলার।

    মনে মনে ভাবল…
    “ছেলেটির হয়তো প্রেমিকা আছে। না, হয়তো কেন হবে।অবশ্যই আছে। মেডিকেল এ পড়ে, দুই দিন বাদে ডাক্তার হবে। দেখতেও তো খারাপ নয়।
    প্রেমিকা থাকবেনা কেন??আর ১৪ই ফেব্রুয়ারীতে প্রেমিকাকে ছেড়ে সে এই বাস স্টপেই বা আসবে কেন???”

    ওই দিন লীলা চলে গেল। ঠিক করল আর কোন দিন ওই বাস স্টপে আর যাবেনা। না সে আর যায়নি… গেলেও অনিচ্ছাকৃত ভাবে।

    তবে যখনই সে ওই বাস স্টপ পার হয়েছে তখনই বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে থেকেছে।

    কিন্তু রানাকে দেখেনি…

    কিছুদিন পর লীলার বিয়ে ঠিক হল।বিয়েটি ঠিক করল পরিবারের পক্ষে লীলার মা। লীলা কোন আপত্তি করে নি। যদিও সে রানাকে ভুলতে পারেনি।

    বিয়ের পর কিছুদিন ভালই কাটল।
    তারপর একদিন লীলা তার বরের ঘরে একটি ছবি খুজে পেল। ছবিটি দেখে আঁতকে উঠল লীলা।

    এটি সেই ছেলের ছবি।

    লীলা তার বরের কাছে জানতে চায়…

    “ছেলেটি কে?? ”

    জবাবে তিনি জানান…

    “ছেলেটির নাম রানা মেডিকেল এ পড়ত।।
    বছর ২ আগে ১৪ই ফেব্রুয়ারী তে সে রোড এক্সিডেন্ট এ মারা যায়।

    মারা যাওয়ার সময় তার হাতে ফুল ছিল আর ছিল একটি চিঠি…

    তার সাথে নাকি প্রতিদিন এক মেয়ের দেখা হত বাস স্টপে ।

    সে তাকে ওর মনের ভালোবাসার কথা বলার জন্যই ওই দিন বাস স্টপে যাচ্ছিল।
    দুঃখের বিষয় সে মেয়েটির নাম বলতে পারেনি।
    কোন ঠিকানাও দিতে পারেনি…

    সবটা পড়ার পর আপনার অনুভূতি জানাবেন না জানালে মনে করব আমার বলার ধরণ খুব খারাপ তাই সবটা পড়েন নি।দুঃখ টা নিজের বুকেই চেপে রাখবো।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 172.58.***.*** | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০১:৫৭539910
  • লীলার বর রানার ছবি দু'বছর ধরে নিজের ঘরে রেখে দিয়েছেন কেন?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন