এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • গুপ্ত সমিতি, আনন্দমঠ এবং হিন্দুত্ব

    Surajit Dasgupta লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ৪৬২ বার পঠিত
  • পৃথিবীর ইতিহাসে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণচেতনার উন্মেষ, গণজাগরণ, গণসংগ্রাম কতবার হয়েছে তার সংখ্যা গুনে শেষ করা যাবে না। আবার সহিংস আন্দোলন ছাড়া যে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বা রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া যায়নি কোনদিনই তার প্রমাণও হাতে গুনে শেষ করা যাবে না। বরং গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনের মত অহিংস আন্দোলনের সংখ্যা পৃথিবীর ইতিহাসে সেরকম খুঁজে পাওয়া যায়না বললেই চলে (দক্ষিণ আফ্রিকার কথা বাদ দিয়ে)। ১৭৫৭ সালে পরাধীনতার শুরুর মাত্র তিন বছর পর থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে সশস্ত্র আন্দোলনের সূত্রপাত ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহের মাধ্যমে। এই ধারা বজায় ছিল ক্ষমতা হস্তান্তর অব্দি। গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনের সাথে অনেকেই যে সহমত ছিলেন না তার প্রমাণ হাজারো আছে। তাবড় তাবড় কংগ্রেসী নেতার সাথে গান্ধীজির অমত হয়েছে, কালক্রমে সেইসব নেতারা কংগ্রেস ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন অথবা কংগ্রেস থেকে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিশেষ করে বঙ্গদেশে আর পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্রে এই সংখ্যা হাতে গুনে শেষ করা যাবে না। আবার সশস্ত্র সংগ্রামের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হলো অর্থ। আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গোলা, বারুদ সংগ্রহের অসুবিধার পাশাপাশি প্রভূত অর্থের প্রয়োজন। সেই অর্থের জোগানদার না পাওয়া গেলে এবং নিয়মিত অস্ত্রের যোগান না পাওয়া গেলে সশস্ত্র বিপ্লব সফলতার মুখ দেখতে পারে না। সেইকারণে পরাধীন ভারতবর্ষে সশস্ত্র সংগ্রাম বারে বারে হোঁচট খেয়েছে, আবার নিজের পায়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। আবার সশস্ত্র সংগ্রামের প্রধান শর্ত হলো তার কার্যকলাপের গোপনীয়তা। অহিংস আন্দোলনের মিছিল, জমায়েত করা যায় অহরহ, কিন্তু সশস্ত্র সংগ্রামের প্রতিটি পদক্ষেপ অতি গোপনে এবং অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নিতে হয়। নইলে সেই সংগ্রামের যেমন ইতি ঘটবে তেমনি অস্ত্র বা গোলা বারুদের আমদানির পথও রুদ্ধ হবে। এতে সেই সংগ্রামী গোষ্ঠী শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, অন্য আরও গোষ্ঠীও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার সশস্ত্র সংগ্রামের সদস্য সংখ্যা যেহেতু কম সেইহেতু তাদেরকে জীবিত রেখে সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যও পূরণ করার কথা মাথায় রাখতে হতো নেতৃস্থানীয়দের। এইরকম বিভিন্ন কারণে সশস্ত্র সংগ্রামীদের কার্যপ্রণালী খুবই গোপনীয় ছিল। সেই গোপনীয় কার্যকলাপের ইতিহাস সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল চিরকাল, এমনকি আজও আছে। শুধু কোনো সশস্ত্র বিপ্লবী মারা গেলে বা কোনো সংগ্রাম সফল হলে বা ব্রিটিশ পুলিশ ধরতে পারলে সেই খবর বাইরে আসতো।

    এই সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য সংঘঠিত দলগুলোকেই গুপ্ত সমিতি বলা হতো। এদের কার্যকলাপের গোপনীয়তার কারণেই এই নামে ডাকা হতো সেই দলগুলোকে। ব্রিটিশদের আগমনের পরে পরেই আন্দোলন শুরু হলেও সেই আন্দোলনে ধারাবাহিকতার অভাব ছিল স্পষ্ট। আবার দু একটি আন্দোলন ছাড়া সেইসব আন্দোলনের ফলে ব্রিটিশদের কপালে ভাঁজও দেখা দেয়নি। বিক্ষিপ্ত কিছু ক্ষেত্রে বাদ দিলে সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি কেউ। এই অসফলতার কারণেই রাজনৈতিক দল তৈরী করার চিন্তা মাথায় আসে ভারতবাসীর মনে। সেইমত রাজনৈতিক দল তৈরী শুরু হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু এর কিছুদিনের মধ্যেই, বিশেষ করে ১৮৮৫ সালে কংগ্রেস দলের প্রতিষ্ঠার পরে বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বুঝতে পারেন দেশের সমগ্র আন্দোলনকে থিতিয়ে দেওয়াটাই মূল লক্ষ্য এইসমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর। রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের ফলে ব্রিটিশদের পলায়নের কোনো আশু সম্ভাবনা নেই। এই কারণেই কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছে বিভিন্নজনের বিভিন্ন সময়ে। ফলস্বরূপ বহু নেতৃবৃন্দ সশস্ত্র সংগ্রামের দিকে ঝোঁকেন, তৈরী হতে থাকে বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি। আবার সব গুপ্ত সমিতিই যে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য তৈরী হয়েছিল তাও নয়। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ বা গণচেতনা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি তৈরী হয়েছিল। ভারতবর্ষের প্রথম গুপ্ত সমিতি তৈরীর কৃতিত্ব কোলকাতার ঠাকুরবাড়ির। নবগোপাল মিত্র, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং রাজনারায়ণ বসু তৈরী করেন "হিন্দু মেলা" ১৮৬৭ সালে। ওই একই বছর অর্থাৎ ১৮৬৭ সালেই জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং রাজনারায়ণ বসু তৈরী করেন "সঞ্জীবনী সভা"। বিভিন্ন ভাবে স্বদেশিক চেতনায় ভারতবাসীকে উদ্বুদ্ধ করাই এই সমিতিগুলোর উদ্দেশ্য ছিল। এরপরে আসে মহারাষ্ট্রে চাপেকর ভাতৃদ্বয়ের তৈরী "হিন্দু ধর্ম অন্তরায় বিনাশী সংঘ" নামক গুপ্ত সমিতি, সেটা ১৮৯৫ সাল। চাপেকর ভাতৃদ্বয়েরা আবার তৈরী করেন "ব্যায়াম মন্ডল" নামক গুপ্ত সমিতি, সেটা ১৮৯৬-১৮৯৭ সাল। এরপরে ধীরে ধীরে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় সশস্ত্র সংগ্রামের উদ্দেশ্যে গড়ে উঠতে থাকে বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি। তবে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক গুপ্ত সমিতি ছিল এই বঙ্গদেশে যাদের জন্য ব্রিটিশদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিল। এদের মধ্যে অনুশীলন সমিতি, বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স, শ্রী সংঘ, যুগান্তর দল, ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগ, ঢাকার অনুশীলন সমিতি, আত্মন্নতি সমিতি, মানিকতলা গুপ্ত সমিতি উল্লেখযোগ্য।

    সবচেয়ে আশ্চর্য্যের বিষয় হলো, বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবীদের লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ বিরোধিতার পাশাপাশি হিন্দু রাজত্বের পুনরুদ্ধার। বিপ্লবীরা ব্রিটিশ বিরোধিতার সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু উত্থানের লক্ষ্য নিয়েই আন্দোলন করেছিলেন। বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষ হোক বা কমরেড মুজাফফর আহমেদ প্রত্যেকেই নিজ লেখনীর দ্বারা এই বক্তব্য সমর্থন করে গিয়েছেন। ব্যারিস্টার প্রমথনাথ মিত্র প্রতিষ্ঠিত বিখ্যাত বিপ্লবী সংগঠন ‘অনুশীলন সমিতি’র সদস্যপদ নেওয়ার প্রথম শর্তই ছিল হিন্দু হওয়া। দীক্ষা নিতে হতো বুড়োশিব মন্দির, রমনা কালীমন্দিরের মতো যেকোনো মন্দিরে। “হিন্দু নয় কিংবা যার মধ্যে হিন্দুদের বিরুদ্ধে কোনো বিদ্বেষ আছে এমন কোনো ব্যক্তিকে সমিতিতে ভর্তি করা হবে না।” [“No one is to be admitted who is a non-Hindu or who has any spite against the Hindus.”] ‘অনুশীলন সমিতি’র আরও একটি অনুশাসনের উল্লেখ পাই আমরা James Campbell Ker, I.C.S. (Political Trouble in India 1907-17, Printed in Calcutta, 1917.) -এর লেখায়:-“…যদি হিন্দুরা তাঁদের দৃঢ়তা ও জাতীয় গৌরব পরিত্যাগ করে এবং মুসলমানদের সঙ্গে গলায় গলায় ভাব করে তাদের বন্ধুত্ব যাচনা করার মতো অধঃপাতে যায় তাতে মুসলমানদের বাড় বেড়ে যাবে, আর তা থেকে ভালো কিছু বার হয়ে আসবেই না, শুধু মন্দই ছড়িয়ে পড়বে চারদিকে। যে জাতি তাদের জাতীয় গৌরব, জাতীয় মহত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব, জাতীয় দৃঢ়তা, অচল অটল ভাব ও অহঙ্কারেব সংরক্ষণ করতে পারে না, পক্ষান্তরে, চপলতা, হীনতা ও অবাধ্যতা প্রদর্শন করে বেড়ায় সে জাতি কখনও অন্য জাতিদের দ্বারা সম্মানিত ও পূজিত হতে পারে না।…” “…But if the Hindus then abandon their firmness and national glory, and sink so low as to court friendship with the Mahomedans by being hand in glove with them, the Mahomedans will be puffed up and no good but only evil will be brought about. That nation which cannot preserve its national glory, national greatness and dignity, and national firmness, steadfastness and pride, and on the contrary exhibits levity, baseness and waywardness can never be respected and worshipped by other nations…” এই হিন্দু পুনরুত্থানবাদী ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবীরা অনুপ্রেরণা লাভ করেছিলেন অন্যান্য পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে সাথে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকেও। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের লেখা ‛আনন্দমঠ’ হিন্দু পুনরুত্থানে বিশ্বাসী ব্রিটিশ বিরোধী এই বিপ্লবীদের কাছে ছিল এক পবিত্র গ্রন্থ। এছাড়াও বঙ্কিমের অনুশীলন তত্ত্ব প্রবল প্রভাব ফেলেছিল বিপ্লবীদের মধ্যে। এবং স্বাভাবিক ভাবেই কমিউনিস্ট তাত্ত্বিকদের দ্বেষ ছিল সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি। ‛মার্কসবাদী’ পত্রিকার যষ্ঠ সংকলনে (ডিসেম্বর ১৯৪৯, পৃ ১৭২-১৯৪) গণেন বন্দ্যোপাধ্যায় মিথ্যাচার করেছেন:-“…বঙ্কিমচন্দ্রের শিক্ষার উদ্দেশ্য ছিল বৃটিশ-বিরােধী গণতান্ত্রিক কৃষি বিপ্লবকে বানচাল করা; তার শিক্ষার ফলে তাই বৃটিশ শাসনের বুনিয়াদটাই হয়েছিল শক্তিশালী।…”
    “…বঙ্কিমের আবেদন শুধু প্রগতির পথরোধকারীদের কাছেই।…” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য কমিউনিস্টরা এই সশস্ত্র বিপ্লবীদের হতাশাগ্রস্ত ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে উল্লেখ করতেন। কমিউনিস্ট লেখক দ্বারা ‘সন্ত্রাসবাদী’ শব্দটির ব্যবহারকৌশল কিন্তু প্রণিধানযোগ্য বিষয়। ব্রিটিশদের কাছে তাঁরা ‘সন্ত্রাসবাদী’ হতেই পারেন। কিন্তু ভারতীয়দের কাছে তাঁরা কেন ‘সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে পরিগণিত হবেন? যদিও কমিউনিস্টরা কোনোদিনও নিজেদের ভারতীয় ভেবেছেন কিনা সেটিও প্রশ্নযোগ্য বিষয়। এদিকে বিপ্লবীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলার ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কমরেড মুজাফফর আহমেদ অত্যন্ত নির্লজ্জভাবে।

    “…কিন্তু একটা বড় মুশকিল হয়েছে এই যে সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবীরা আজও মনে করেন তাঁরাই “একমাত্র বিপ্লবী”, তাঁরা ছাড়া আর কেউ বিপ্লবী নন। তাঁরা যে পন্থা গ্রহণ করেছিলেন তাতে তাঁদের সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবী নামই দেওয়া যায়। আমার লেখায় আমি এই কথা ব্যবহার করি। অন্য শত শত লোক তাই লেখেন। নিজেদের একমাত্র বিপ্লবী বলা গোঁড়ামি ছাড়া আর কিছুই নয়। এখন তাঁরা বৃদ্ধ হয়েছেন, একদিন তাঁদের সকলেই মরে যাবেন, তখন দেশে কি কোনাে জীবিত বিপ্লবী থাকবেন না? “বিপ্লবী” কথাটি কি শুধু তাঁদের স্মৃতিতেই ব্যবহার করতে হবে ?…”
    “…আপনারে বড় বলে, বড় সেই নয়
    লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়।…”

    আসলে ভারতবর্ষের প্রেক্ষাপটে কংগ্রেস এবং বাংলার প্রেক্ষাপটে কমিউনিস্টরা নিজেদের গায়ের দুর্গন্ধকে সুগন্ধী করে তোলার লক্ষে এইরকম কাজ হাজারো করেছে, ইতিহাসকে বিকৃত করেছে বারবার। কমিউনিস্টদের চেয়ে বড় বিপ্লবী এদেশে জন্মায়নি, এটা বোঝানোর এবং জানানোর জন্যেই বাংলাদেশের সশস্ত্র বিপ্লবীদের বারবার হেয় করা হয়েছে, তাদের কীর্তিকে ইতিহাস বইয়ে স্থান দেওয়া হয়নি বা দু চার লাইনের বেশী বরাদ্দ করা হয়নি। মুজাফফর আহমেদের মত বিশিষ্ট নেতারা বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবী বা সংগ্রামীদের, সন্ত্রাসবাদীর সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে গুলিয়ে দিয়েছেন বারবার। আবার ভারতবর্ষের প্রেক্ষাপটে কংগ্রেস দলও চাপেকর ভাতৃদ্বয়, সাভারকার, শ্যামজী কৃষ্ণভার্মা, লালা হার্ডওয়াল, সুখদেব থাপার, বাল গঙ্গাধর তিলক সহ হাজারো বিপ্লবীদের নাম ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দিয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে বা তাদেরকে ভারতবাসীর চোখে হেয় প্রতিপন্ন করেছে।

    ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়ে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে আদি ভারতবর্ষকে দুই ভাগে ভাগ করা হলো, একটি ভাগ মুসলমানদের জন্য গড়ে দেওয়া হলো, যার নাম হলো পাকিস্থান। কিন্তু হিন্দুদের জন্য কোনো এলাকা দেওয়া হলো না। পাকিস্থান থেকে হিন্দুরা প্রাণ নিয়ে এদেশে চলে আসতে বাধ্য হলো। পশ্চিমবঙ্গ ও পাঞ্জাবে লাখ লাখ হিন্দু, শরণার্থী হয়ে স্থান পেল বিভিন্ন শিবিরে। লাখ লাখ হিন্দু কোতোল হলো মুসলমানদের হাতে। এদেশে সেই লাখ লাখ হিন্দুদের রিফিউজি হয়ে নতুন করে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের সংস্থান করতে দুই তিন পুরুষ বিপন্ন হয়ে পড়লো। এদেশ থেকে কিন্তু কোনো মুসলমানকে পাকিস্থানে চলে যেতে বাধ্য করা হলো না। তারা নির্দ্বিধায় এদেশে আরামে বসবাস করতে থাকলো। কিছু মুসলমান কেবল ধর্মের টানে পাকিস্থানে চলে গেলো। কিন্তু তারাও পাকিস্থানে গিয়ে মোজাহের হয়ে গেলো। আসল পাকিস্থানবাসীরা কোনদিনই তাদের ভালো চোখে দেখে না। ফলে তাদের অবস্থা না ঘরকা না ঘাটকার মতো। এই ভাগ বাটোয়ারার হিসেবটা সম্পূর্ণই নেহেরুর মস্তিষ্কপ্রসূত। গান্ধীজীর মদত প্রথমদিকে থাকলেও থাকতে পারে, কিন্তু পরবর্তীতে তিনিও চাননি এই বাটোয়ারা। আর মৌলানা আজাদ বা বল্লভ ভাই প্যাটেল সহ বাকী কংগ্রেসী নেতারা অন্য মত দেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না। কারণ ততদিনে মাউন্টব্যাটেনের সাথে যোগসাজশে নেহেরু লাগামটা পুরোপুরি নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছেন। গান্ধী - সুভাষের মতবিরোধের কথা ফলাও করে প্রচার করা হয় এবং অধিক প্রচারে তা সর্বজনবিদিত। কিন্তু গান্ধী - নেহেরু বিবাদ বা মতবিরোধের কথা কোনোভাবেই প্রকাশ করা হয়না। আসলে ইতিহাস লিখেছেন তো নেহেরু, আজাদ, প্যাটেল প্রমুখেরা, তাই সেইসব ইতিহাস সর্বসমক্ষে আসেনি কোনোভাবেই।

    আবার পাকিস্থানে বলা হয়, পাকিস্থান এবং বাংলাদেশকে ভারতবর্ষ থেকে আলাদা করে দেওয়াটা হিন্দুদের একটা চাল ছিল। কায়েদ এ আজম, মানে জিন্না কোনদিনই চাননি এই দেশভাগ। হিন্দুরা তাদের ভারতবর্ষে রাজ করবে, মুসলমানদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রাখবে আর অধিক সংখ্যায় মুসলমানেরা পাকিস্থান আর বাংলাদেশে ধীরে ধীরে অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবে। হালফিলের পাকিস্থান আর বাংলাদেশের চিত্র দেখলে কথাটাকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়াও যায়না। দেশভাগ যদি জিন্না না চেয়ে থাকে, গান্ধী না চেয়ে থাকে, নেতাজী না চেয়ে থাকে তবে কে চেয়েছিল? এর উত্তর ব্রিটিশরা আর তার বংশদবদ গোলাম নেহেরু। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে ক্ষমতা হস্তান্তর অব্দি নেহেরুর গতিবিধি লক্ষ করলেই কথার সত্যতা অনুমান করা যায়। প্রায় দুই বছরের এই সময়ে নেহেরু কয়েকশত বার মাউন্টব্যাটেনের সাথে মিটিং করেছেন, এমনকি তার ভারতবর্ষের গভর্নর জেনারেল হিসেবে আসার কথা জানা মাত্রই সিঙ্গাপুরে গিয়ে তার সাথে মিটিং করেছেন, লেডি মাউন্টব্যাটেনের সাথে প্রণয়ে জড়িয়ে পড়েছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। ব্রিটিশদের লক্ষ ছিল ভারতবর্ষের কোমর ভেঙে দেওয়া যাতে আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন না নিতে পারে আর নেহেরুর লক্ষ ছিল ক্ষমতা, উচ্চাভিলাষ। হিন্দু, মুসলিমদের মধ্যের ভাগাভাগি শেষ অব্দি অযাচিতভাবে চলে এসেছে কারণ দেশভাগের কোনো না কোনো মাপকাঠি প্রয়োজন। আবার অযাচিতভাবে চলে এসেছে বলাটাও বোধহয় সম্পূর্ণ সত্যি বলা হলো না কারণ ইতিমধ্যে ব্রিটিশদের মধ্যে এজাতীয় চিন্তার উদ্রেক হয়ে গেছে এবং পরীক্ষামূলকভাবে ১৯০৫ সালে তারা বঙ্গভঙ্গের নামে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে দেখেছে। ক্ষমতার লোভে ব্রিটিশদের ইচ্ছেটাকে কার্যকর করতে নেহেরু হয়তো নিজেকে গিনিপিগ বানিয়ে ফেলেছিলেন - এমনটার সম্ভাবনাকেও বাতিল করা ঠিক হবে না। কারণ শুধুমাত্র দ্বিজাতি তত্ত্বের প্রভাব থাকলে ভারতবর্ষ থেকেও তো মুসলমানদের তাড়িয়ে দেওয়া হতো।

    মোঘল যুগ এবং তারপরের ইংরেজ ঔপনিবেশিক যুগের প্রভাবে ভারতবর্ষের ইতিহাস থেকে ক্রমশঃ তার নিজের স্বর্ণযুগের ইতিহাস হারিয়ে যাচ্ছিল। স্পষ্ট ভাষায় বললে মুছে দেওয়া হচ্ছিল। কুষাণ যুগ, মৌর্য যুগ, পাল যুগ, সেন যুগ, গৌড়ের ইতিহাস পাল্টে ভারতবাসীদের এক নিরীহ, পরাধীন ক্রীতদাসের ন্যায় অমেরুদণ্ডী গোত্রের প্রাণীর সাথে মিলিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। ভারতবাসী, বিশেষ করে বাঙালি তার শৌর্য, বীর্যের ইতিহাস ভুলতে বসেছিল। এই প্রেক্ষাপটেই বিভিন্ন গুপ্ত সমিতিগুলোর উদ্দেশ্য শুধুমাত্র ব্রিটিশ পরাধীনতার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া ছিল না, ভারতবাসীর তথা বাঙালির গৌরবের ইতিহাসকে ফিরিয়ে আনাও ছিল। আদি ভারতবর্ষের ধর্ম ছিল সনাতন ধর্ম, যাকে আমরা চলতি ভাষায় হিন্দু ধর্ম বলে থাকি। আদপে হিন্দু ধর্ম বলে কিছু নেই, সিন্ধু সভ্যতায় যে জাতির বসবাস ছিল তাদের হিন্দু বলা হতো। সিন্ধু থেকেই হিন্দু শব্দের উৎপত্তি। তাদের আচরিত ধর্মকে সনাতন ধর্ম বলা হতো। কিন্তু কালক্রমে হিন্দু জাতির আচরিত ধর্ম হিসেবে সনাতন ধর্মকে হিন্দু ধর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করা হতে থাকে। বৌদ্ধ, জৈন, ইসলাম প্রভৃতি ধর্মগুলো অনেক পরের এবং সনাতন ধর্ম থেকেই বিভাজিত হয়ে তৈরী হয়েছে এইসব ধর্মের গোষ্ঠী।

    আবার বিভিন্ন ধর্মের বিস্তারের ইতিহাস যদি ঘাঁটা যায় তাহলে দেখা যায়, এক ধর্ম ছেড়ে অন্য ধর্মকে মানুষ আঁকড়ে ধরেছে মূলতঃ রাজরোষ বা রাষ্ট্ররোষ থেকে বাঁচার জন্য এবং বাণিজ্যে বেশী লাভ করা বা সুবিধা পাওয়ার জন্য। ভারতীয় উপমহাদেশ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখা যায় বৌদ্ধ, জৈন, ইসলাম ধর্মের লোকেরা আদিতে সনাতন ধর্মের পূজারী ছিল। ইসলাম ধর্মের কিছু অংশ কেবল পাওয়া যায় যারা সুদূর প্রাচ্য থেকে কোনো না কোনো কারণে এই উপমহাদেশে এসেছে এবং তাদের সাথে ভারতীয় সনাতন ধর্মের কোনো সম্পর্ক কোনোকালেই ছিল না। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক ধর্ম ছেড়ে অন্য ধর্মকে আপন করে নেওয়ার ঘটনাকে কোনদিনই খারাপ চোখে দেখা হয়নি। মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছে বা কোনো চাপের কাছে বাধ্য হয়েছে অন্য ধর্ম গ্রহণ করতে। আদিকাল থেকেই এই ধারা চলে আসছে। কেবল বর্তমান কালেই ধর্মান্তরিত বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করা হয়। তাহলে তো হিন্দু প্রধান ইন্দোনেশিয়া মুসলিম রাষ্ট্রে পরিণত হতো না কোনোদিন আবার কম্বোডিয়ায় আঙ্করভাট হিন্দু মন্দির বৌদ্ধ মন্দিরে পরিণত হতো না কোনোদিন।

    তাই গুপ্ত সমিতিগুলোর হিন্দুয়ানী চমকে যাওয়ার মত কোনো তথ্য নয়। বরং যারা পৃথিবীর ইতিহাস জানেন তাদের কাছে খুব স্বাভাবিক এই ঘটনা। সনাতন ধর্মেই একমাত্র দেশকে মাতৃরূপে পূজা করা হয়, সেই কারণেই স্বাধীনতা আন্দোলনে আহ্বান জানানো হয়েছিল দেশমাতৃকাকে শৃঙ্খলামুক্ত করার। ধর্মের সাথে দেশভক্তিকে জুড়ে দিলে দেশের কি হতে পারে তার উদাহরণ জাপান। শিন্তো ধর্মের সাথে জাপানের ইতিহাস মিলেমিশে একাকার। সুতরাং যারা গুপ্ত সমিতি বা ভারতের স্বাধীনতার আন্দোলনের সাথে ধর্মকে যুক্ত করার প্রয়াসকে খাটো করে দেখার চেষ্টা করেন, তারা পৃথিবীর ইতিহাস জানেন না। এই উপমহাদেশের আদি ধর্ম হলো সনাতন ধর্ম যা আমাদের এই পুণ্যভূমি থেকেই সমগ্র এশিয়া ও ইউরোপ, আফ্রিকাতেও ছড়িয়ে পড়েছিল। এই উপমহাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের আচরিত ধর্ম হলো সনাতন ধর্ম, স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিপ্লবীর ধর্ম হলো সনাতন ধর্ম। আবার যে সমস্ত লেখা পড়ে বীর বিপ্লবীরা উদ্বুদ্ধ হতেন সেই লেখাগুলোতেও দেশমাতৃকার বন্দনা পাই। স্বদেশীদের উদ্বুদ্ধ করতো "বন্দে মাতরম" ধ্বনি আর "আনন্দমঠ" বিবেচিত হতো পবিত্র গ্রন্থ হিসেবে। পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অতুলপ্রসাদ, রজনীকান্ত সহ অনেকেরই হাজারো কবিতা, গান উদ্বুদ্ধ করতো তাদের। সেইসব কবিতা বা গানের কথায় কোন সাম্প্রদায়িকতা জ্বলজ্বল করছে সেই নিয়ে কেউই চুলচেরা বিচার করেনি। দেশমাতৃকার শৃঙ্খলামুক্তিই তখন অগ্রাধিকার পেত, সাম্প্রদায়িকতা নয়। কিছু বিক্ষিপ্ত উদাহরণ নিশ্চয়ই আছে সাম্প্রদায়িকতার, কিন্তু বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিক অব্দি সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প আমাদের ঘায়েল করতে পারেনি। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ এবং ১৯০৬ সালে ঢাকার নবাবের (খাজা সলিমুল্লাহ) মুসলিম লীগ তৈরী এবং অর্থ সাহায্য প্রথম এই দেশ তথা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার আমদানি করে।

    সুতরাং বোঝাই যায় কংগ্রেস এবং কমিউনিস্টদের গুপ্ত সমিতিগুলো সম্পর্কে অপপ্রচারের বিষয়টি। এরপরের সমস্যা হলো গুপ্ত সমিতিগুলোর কার্যকলাপের গোপনীয়তা। সেইসব কার্যকলাপ এতটাই গোপনীয় ছিল এবং যে কোনো পর্যায়ে গুপ্ত সমিতিগুলো সম্পর্কিত নবুদের অভাব চূড়ান্ত পর্যায়ের। ফলে সেই গুপ্ত সমিতিগুলোর এবং তার নেতৃস্থানীয়দের বিপক্ষে কিছু বলা হলে সেই বক্তব্যের বিরোধীতা করার লোক খুঁজে পাওয়া যায় না। পারিপার্শ্বিক ইতিহাস, প্রেক্ষাপট যাচাই করলে আবার বোঝা যায় সেইসব অপপ্রচারের ইতিকথা। আসলে গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলন যে ব্রিটিশদের কাছে নিতান্তই গোঁফের ওপর একটি মাছি ছাড়া কিছুই ছিল না (একটা নিঃশ্বাস ছাড়লেই কোনদিকে উড়ে যাবে ঠিক নেই) এবং সেই সত্যটা সামনে এসে যাবে বলেই বিভিন্ন সশস্ত্র সংগ্রামকে, (তা সে গুপ্ত সমিতিগুলোর সংগ্রামই হোক আর আজাদ হিন্দ ফৌজের সংগ্রামই হোক) ইচ্ছাকৃতভাবে খাটো করে দেখানো হয়েছে। অপপ্রচার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের মহান নেতা এবং জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর উক্তি ছিল, “ব্রিটেনের বিনাশের বদলে আমরা আমাদের স্বাধীনতা চাই না”। আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে কংগ্রেস ব্রিটিশদের পক্ষ অবলম্বন করেছিল এবং ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে দলে দলে কংগ্রেসিরা যোগ দিয়েছিল।

    পাশাপাশি স্বাধীনতার সংগ্রামে কমিউনিস্টদের অবদান সম্পর্কে যত কম বলা যায় ততই ভালো। কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ ঘোষণা হওয়ার পরে অনেক কমিউনিস্ট নেতাই জেল খেটেছেন। কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনে কজন কমিউনিস্ট জেল খেটেছেন তার হিসেব পাওয়া মুশকিল। ইতিহাস অনুযায়ী কমিউনিস্টরা নিজেদের ভারতীয় ভাবেন কিনা সেই সম্পর্কেই যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তাদের কিছু বললেই ফরওয়ার্ড ব্লকের ইতিহাস টানবেন, যা নেতাজীর তৈরী এবং কোনোভাবেই কমিউনিস্ট পার্টি নয়। ফরওয়ার্ড ব্লক পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের শরিক হয়েছে কিন্তু কোনোভাবেই তা বামপন্থী দল নয়। নেতাজী কোনদিনই কোনো বামপন্থী দল তৈরী করেননি বরং ভগবানজীর কথায় বামপন্থীদের সম্পর্কে ঘৃণাই পাওয়া যায়। ফলে গুপ্ত সমিতি বা তার সদস্যবৃন্দ যারা নিজেদের প্রাণ হাতে নিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, ব্রিটিশদের সাথে যুদ্ধ করেছে, হাসিমুখে প্রাণ দিয়েছে দেশমাতৃকার নামে, তাদের কাজের স্বীকৃতি বা সুনাম কংগ্রেসী বা বামপন্থীদের কাছ থেকে পাওয়ার কোনো প্রশ্ন নেই। ভারতমাতার সেইসব বীর সন্তানদের জন্য বরং তোলা থাক একটি করে তাজা লাল গোলাপ ফুল, একরাশ ভালোবাসা আর সমস্বরে উচ্চারিত হোক "বন্দে মাতরম" মন্ত্র। 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সনাতন ধর্মেই একমাত্র দেশকে মাতৃরূপে পূজা করা হয় | 173.49.***.*** | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৪৪523738
  • তাই? সেই সনাতন আমলেও দেশ ছিল? তার পুজো ছিল? 
    একটু তথ্যসূত্র পেলে সুবিধা হয়। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন