বেশিদূর না, আমাদের বাড়ি থেকে মেরেকেটে সাতমিনিটের ড্রাইভ, পেছনের একটা পাহাড়ে আফিফির বাড়ি। কিন্তু প্রায় বছর বারো ঐদিকে যাওয়াই হয় নি। বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছলেও বাড়ির সামনেটায় যেতে পারছে না গাড়ি। উৎরাই বরাবর যাচ্ছেতাই করে খুঁড়ে রেখেছে জুরিখ মিউনিসিপালিটি। রাস্তা সারাই হচ্ছে। গরমকাল পড়লেই এদের কেবলই রাস্তা খুঁড়বার ইচ্ছে হয়! অতয়েব খানিকটা হেঁটে গিয়ে ভদ্রলোকটিকে ডেকে আনতে হবে। বাবুকে বললাম, তুমিই প্লিজ গিয়ে ডেকে আনো। - সেকি! কেন? তোমার মাস্টারমশাই, তুমিই যাও।
- আরে না না, বুঝতে পারছো না, আমার মত সুন্দরী ওঁকে ডেকে নিয়ে যাচ্ছে দেখতে পেলে আফিফির বৌ কি আর ওঁকে আস্ত রাখবে?
যুক্তি দিয়ে বোঝালে জিনিস সহজ হয়ে যায়। বাবু তখুনি রাজি হয়ে আফিফিকে আনতে গেল। আমি অপেক্ষা করছি তো করছিই, আসেই না, আসেই না, কী হলো রে বাবা! প্রায় দশ মিনিট পরে ওদের দেখা গেল গলির মোড়ে। আফিফিকে দেখে আমার চক্ষু চড়কগাছ। দুহাতে লাঠি নিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে আসছেন। গত বারো বছরে বয়স গিয়েছে অন্ততঃ তিরিশ বছর বেড়ে। টোটাল বৃদ্ধ অশীতিপর লুক। নামাজে বসেছিলেন, তাই অপেক্ষা করতে হয়েছিল, সেইসঙ্গে পায়ের ঐ অবস্থা।
আমরা একটা রেলস্টেশনের ধারে কাফেতে গিয়ে বসলাম।
আমার হাতে খাতা পেনসিল। মোটামুটি একটা খসড়া নোট করে এনেছি, টু দ্য পয়েন্ট কোশ্চেন করব। সঙ্গে মিশরের একটা মোটামুটি মানচিত্রের প্রিন্টাউট।
এক্সপ্লোরার শিবাজির মিশরভ্রমণের ভ্লগ দেখে সবকিছু পরিষ্কার হয় নি। ভারত থেকে বেড়াতে যাওয়া এবং পশ্চিম থেকে যাবার মধ্যে বেশ কিছু ফারাক আছে। প্রচুর ওয়েবসাইট আছে যেগুলো ভারতে চলে, এদিকে ব্লক করা থাকে।
উদাহরণস্বরূপ মেকমাইট্রিপ এবং আরও অনেক সাইট। আমার চাই সরাসরি গ্রাউন্ড লেভেলে চেনা লোক। টানা একমাসের প্ল্যান। দৌড়ে দৌড়ে দেখবার মত পাবলিকও নই মোরা। গুরু থেকে শুচিস্মিতার মিশরভ্রমণের ওপর লেখা পড়লাম। প্রত্যেকেই ইনফরমেশন দিচ্ছে, কিন্তু কেমন যেত খুঁত খুঁত করছে মন। ঠিক যেটা চাছি, সেটা পাচ্ছি না।
এবং আফিফি যেটা জানালেন, সেটা আরও মারাত্মক! ২০০৬ সালের পর উনি মিশরে যান নি। মানে লাস্ট ট্রিপ ছিল সতেরো বছর আগে! হে খোদা, হায় ভগোমান, ওগ্গড! অথচ আফিফির ধারণা মিশর উনি বেশ চেনেন। মানে আজকের মিশর।