এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • নিবন্ধ : বঞ্চনার আবর্তে বুদ্ধদেব গুহ মহাশয়

    Supriya Debroy লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৬ অক্টোবর ২০২১ | ৭৮৪ বার পঠিত

  • ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত

    “বাঘের মতোই জীবনযাপন করেছিলেন বুদ্ধদেব গুহ মহাশয়, সারা জীবন। কিন্তু সাহিত্য জীবনে বিপুল জনপ্রিয়তা স্বত্বেও, স্বীকৃতির দিক থেকে বঞ্চনা বোধহয় ওনাকে চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছিলো। “

    ২০শে সেপ্টেম্বর ভোররাতে অফিসের কাজে জামনগর যাওয়ার জন্য তৈরী হচ্ছি। রূপালীর সাথে চা খেতে খেতে গুগুল খুলে দেখি, আমাদের একজন বাঙালি কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় মহাশয়কে সাহিত্য আকাদেমির সর্বোচ্চ পুরস্কার জানানো হয়েছে 'সাহিত্য আকাদেমি ফেলোশিপ'। মনটা আনন্দে নেচে ওঠে। এটা শীর্ষেন্দু বাবুর সর্বোচ্চ সম্মান প্রাপ্তি - আশাপূর্ণা দেবী (১৯৯৪), সুভাষ মুখোপাধ্যায় (১৯৯৬), নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (২০১৬) প্রমুখ গুণীজনদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে। শীর্ষেন্দু বাবু মহাশয় অবশ্য এর আগে আনন্দ পুরস্কার (দু'বার), সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার-এ ভূষিত।

    বুদ্ধদেব গুহ মহাশয় শুধু একজন সফল চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, সংগীত শিল্পী, অঙ্কণ শিল্পী, শিকারী ছিলেন না - ছিলেন একজন জনপ্রিয় লেখক। ওনার পরিচয় শুধু একজন শিকার কাহিনি বা অরণ্যপ্রেমিক লেখক হিসেবে নয়, অরণ্যানীর জীবন বা শিকার ছাপিয়ে তার রচনা ধারণ করেছে এক প্রেমিক সত্তাকে। তার সৃষ্টি বাবলি, মাধুকরী, কোজাগর, হলুদ বসন্ত, একটু উষ্ণতার জন্য, কোয়েলের কাছে, চাপরাশ, জঙ্গল মহল, ঋজুদার সঙ্গে জঙ্গলে, মান্ডুর রূপমতী, ঋভু, পামরি, সবিনয় নিবেদন, মহুল সুখার চিঠি - ইত্যাদি গ্রন্থসমগ্র - বাংলা কথাসাহিত্যের জগতকে সমৃদ্ধ করেছে তুলনারহিত আঙ্গিকে।

    কিন্তু বুদ্ধদেব গুহ ১৯৭৭-এ পাওয়া 'আনন্দ পুরস্কার' ছাড়া আর কোনও বড় পুরস্কারই পান নি। 'আনন্দ পুরস্কার' পেয়েছিলেন ওনার প্রথম বড় প্রেমের গল্প 'হলুদ বসন্ত' লিখে। পরে সন্তোষকুমার ঘোষের অনুরোধে এটা বাড়িয়ে উপন্যাস হিসেবে বের করে এবিপি প্রকাশনী। এছাড়া পেয়েছিলেন আর দুটো পুরস্কার - শিরোমণি এবং শরৎ পুরস্কার। কিন্তু পান নি আর বড় কোনও পুরস্কার, না 'সাহিত্য আকাদেমি' না 'বঙ্কিম পুরস্কার'। 'সাহিত্য আকাদেমি' পুরস্কার কবি, সাহিত্যিকদের জগতে একটা বড় মাপের স্বীকৃতি, একটা মেজর মাইলস্টোন।

    সাত থেকে নয়ের দশকে বাংলা সাহিত্যে বিরাজমান একগুচ্ছ তারকা - সমরেশ মজুমদার, সুনীল গাঙ্গুলি, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রমাপদ চৌধুরী, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, শংকর, দেবেশ রায়, মতি নন্দী প্রমুখ। 'সাহিত্য আকাদেমি' পুরস্কার পেলেন সমরেশ মজুমদার ১৯৮৪-তে 'কালবেলা' উপন্যাসের জন্য, সুনীল গাঙ্গুলি ১৯৮৫-তে 'সেই সময়' লিখে, রমাপদ চৌধুরী 'বাড়ি বদলে যায়' লিখে ১৯৮৮-তে, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় পেলেন ১৯৮৯-এ 'মানবজমিন'-র জন্য, দেবেশ রায় ১৯৯০-এ 'তিস্তা পাড়ের বৃত্তান্ত' লিখে, মতি নন্দী পেলেন ১৯৯১-এ 'সাদা খাম' লিখে।

    'মাধুকরী' উপন্যাসটি 'দেশে' ধারাবাহিকভাবে বেরিয়েছিল। এবং বুদ্ধদেব গুহর লেখা এই একটিমাত্র উপন্যাস 'দেশ' পত্রিকা থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। ঐসময় 'দেশ'-এ এক-এক করে কালজয়ী উপন্যাস গুলো ধারাবাহিকভাবে বেরোচ্ছিল। সুনীল গাঙ্গুলি-র আত্মপ্রকাশ, সেই সময়, প্রথম আলো, পূর্ব-পশ্চিম, একা এবং কয়েকজন - অর্ধেক জীবন ২০০৪ সালে বেরোয়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়-এর ঘুনপোকা, দূরবীন, মানবজমিন, পার্থিব, কাগজের বৌ, সমরেশ মজুমদার-এর উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ, সাতকাহন, রমাপদ চৌধুরী-র বন পলাশীর পদাবলী এবং আরও অনেক ছোট গল্প। ওরই মধ্যে রমাপদ চৌধুরী-র উদ্যোগে এক ফাঁকে বেরিয়ে যায় 'মাধুকরী'। কারণ 'দেশ'-এর দরজা চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো বুদ্ধদেব বাবুর সাহেবি মেজাজের জন্য। 'মাধুকরী' ওই-সময়কার বেস্টসেলার উপন্যাস। একটি বিতর্কিত উপন্যাস। 'আরণ্যক' এর পর আরেকটা বই যেখানে অত সুন্দর করে প্রকৃতির বর্ণনা, মধ্যপ্রদেশের পাহাড় বন-জঙ্গল যেন চোখের সামনে। বইয়ের আসল বিষয় যদিও প্রকৃতি না, কয়েকটা মানুষের (পৃথু, রুষা আর কুর্চি) দৃষ্টিতে জীবন অথবা সম্পর্ক !

    প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, 'মাধুকরী' উপন্যাসে অন্যান্য অনেক কবিতা, দোহা-র সাথে সুনীল গাঙ্গুলি-র কবিতা উনি উল্লেখ করেছিলেন।

    যিনি ‘কোজাগর’ 'কোয়েলের কাছে', 'মাধুকরী', ঋজুদার গল্প সৃষ্টি করে বাংলার পাঠকের মন ভরিয়ে দিয়েছেন, তাঁকে কেন 'সাহিত্য আকাদেমি' পুরুস্কারের জন্য যোগ্য মনে করা হল না, সমস্ত বাঙালি পাঠককূলের প্রশ্ন এটা থাকতেই পারে।

    তবু একটা স্বান্তনা বাঙালি পাঠক মহলের, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় এবং শংকর বাবু মহাশয়েরা তাঁদের জীবনের প্রায় শেষ বেলায় 'সাহিত্য আকাদেমি' পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন যথাক্রমে ২০১৮ এবং ২০২০ সালে।

    'মাধুকরী'-তে বুদ্ধদেববাবু খুব সুন্দরভাবে রুষার দ্বন্দ্বময় অবহেলায় ভরা জীবন কে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। রুষার চরিত্র হয়তো অনেকেরেই পছন্দ নাও হতে পারে, যখন রুষা পৃথুকে ছেড়ে চলে যায় – এমন একটা সময়ে যখন পৃথু তার একটি অঙ্গ পা হারিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফেরে।

    পৃথু যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিল, রুষা আসে দেখা করতে।

    ঘর ফাঁকা হতেই রুষা পৃথুর কপালে আর গালে চুম-ম-ম-ম আওয়াজ করে চুমু খেয়ে, মিছিমিছি চোখ মুখ বিকৃত করে বলে - ইঃ দাড়ি ! খোঁচা-খোঁচা ! লাগে !

    এত সুন্দর প্রকাশ অভিব্যাক্তি রুষার ভালবাসা পৃথুর প্রতি, যখন রুষা ঠিক করে ফেলেছে পৃথুকে ছেড়ে চলে যাওয়ার।

    রুষা কুর্চির খোঁজ পাওয়ার জন্য উদগ্রীব তখন, জানতে পেরে পৃথু বোকার মতো তাকিয়ে থাকে রুষার দিকে। পৃথু ভাবে, রুষার এই সত্তাকে বোঝার ক্ষমতা কোনোদিনই তার ছিল না।

    যেদিন পৃথু হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরে, রুষা ঘর ছেড়ে চলে যায় তাদের দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে। পৃথুকে একটা বড় চিঠি লিখে যায়। চিঠির কয়েকটি লাইন পড়লেই বোঝা যায় রুষার ভালবাসা পৃথুর প্রতি, তার দ্বন্দ্বময় জীবনের কথা।

    'প্রথমেই কটি কথা বলে নিতে চাই। তোমাকে আমি ভালবাসি। বিশ্বাস করো, আজও তোমাকে আমি ভালবাসি। ভবিষ্যতেও তুমি আমাকে ভালবাসতে দেবে আশা করব।'

    'সমাজকে তুমি কোনোদিনও মানোনি, তুমি তো বনের বাঘ। আমি মেনেছিলাম। মেনেছিলাম নিজেকে আমি একজনের স্ত্রী এবং তার ছেলেমেয়েদের মা বলে। সমাজে থাকলে, সমাজকে মানতেই হয়। নইলে বনে গিয়েই থাকতে হয়। সে কথাটাই তোমাকে কোনোদিন বোঝাতে পারিনি। বিবাহিত জীবনকে তুমি বিনামূল্যেই পেতে চেয়েছিলে, তাই সে-জীবন হাতের আঁজলা গলে গড়িয়ে গেল ।'

    'পৃথু। তুমি আমাকে যাইই মনে করো, করতে পারো। আমি কুর্চি নই, বিজলীও নই। আমি সৎ। ছিলাম অন্তত দীর্ঘদিন। এবং যখন অসৎ হলাম, তখনিই বাঁধন ছিড়লাম।'

    'তোমাকে পুজো করা যায়। তুমি একটা রিয়েল ডার্লিং, কিন্তু তোমাকে নিয়ে ঘর করা যায় না। অথবা আমি তেমন অসাধারণ নই ; তাইই হয়তো পারলাম না ।'

    এই দীর্ঘ তিন পাতার চিঠি যেন 'মাধুকরী' উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দু। এই চিঠি থেকেই বুঝতে পারা যায় পৃথু, রুষা আর কুর্চির চরিত্র। এত সুন্দর করে একজন এরিস্ট্রোক্রেট, স্বভিমানী, ব্যক্তিত্বময়ী কিন্তু সাধারণ হাউসওয়াইফ-এর চরিত্র অঙ্কণ যেন বুদ্ধদেব বাবুর পক্ষেই সম্ভব।

    এরপর রুষাকে কি ভুল বোঝা যায় ! জীবনকে এতো সুন্দর সৎ ভাবে উপলব্ধি করা, রুষাকে কি করে ঘৃণা করা যায় দোষ দেওয়া যায় পৃথুকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য !

    ওই চিঠিতেই রুষা লেখে, 'তুমি একদিন জানবে যে, কুর্চিরা, বিজ্লীদের চেয়ে অনেকই নিচুদরের প্রস্টিটিউট। তুমি আমাকে আর যাইই মনে করো, করতে পার, আমি কুর্চি নই, বিজলীও নই।'

    এটা কি রুষার, কুর্চির প্রতি রাগ, ঈর্ষা, বিদ্বেষ। মনে হয় না। এটা একজন সাধারণ অভিমানী স্ত্রীর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, যার সারা মন জুড়ে আছে তার সংসার, স্বামী, সন্তান। কারণ সে পৃথুর মতো অসাধারণ নয়। সে একটা সাধারণ সংসারী জীবন চেয়েছিলো তার স্বামী এবং সন্তানদের জড়িয়ে আঁকড়িয়ে ধরে।

    চিঠিটার নিচে পুনশ্চ বলে লেখা : 'ডিভোর্স-টিভোর্স নিয়ে এখন আলোচনা করা প্রিম্যাচিওর। তাছাড়া, ফিরে যদি আসি আবার কখনও ? তুমি ছাড়া, আফটার অল, কে আর আমার আছে বল ?'

    চিঠিটা শেষ কোরে, গভীর এক ভালোবাসায় রুষার প্রতি স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো পৃথু। ও নিজেকেই পাগল বলে জানতো কিন্তু এ যে উন্মাদ।

    ৩৫ বছর আগে যখন 'মাধুকরী' পড়ি তখন পৃথু, রুষা, কুর্চি-কে যে চোখে দেখেছিলাম, এখন যখন পড়ি তখন সব আগের চিন্তা-ভাবনা ওলট-পালট কোরে দেয়। যেমন হতাম শরৎচন্দ্র-এর 'চরিত্রহীন' পড়ে, বার-বার। এই-কারণেই 'মাধুকরী' একটি বিতর্কিত উপন্যাস, এবং বোধহয় বুদ্ধদেব বাবু এই কারণেই এই বইটি একবিংশ শতাব্দীর নারী-পুরুষদের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন।

    এই উপন্যাসটি যখন ১৯৮৫ সালে বই আকারে প্রথম প্রকাশ পায় এবং উৎসর্গ করেন 'একবিংশ শতাব্দীর নারী ও পুরুষদের জন্য', তখন অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন, 'দশ বছর পরে এই উপন্যাসের অস্তিত্ব থাকবে তো ?' অগণ্য পাঠক-পাঠিকারা উষ্ণ হৃদয়ের ও বিনম্র শ্রদ্বার যে পুরস্কার দিয়েছেন, তার প্রমাণ ১৯৯৭ সালে পুনঃমুদ্রণ করে এই বইটি আবার প্রকাশিত হয়।

    ওনার মনের কোনো এক কোণায় হয়তো আশা ছিল - এই উপন্যাসটির জন্য অবশ্যই উনি 'সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার' পাবেন। তাই হয়তো পুনঃমুদ্রণের সময় ক্ষোভ লুকিয়ে রাখতে পারলেন না। লিখলেন নতুন মুদ্রণের ভূমিকাতে - 'মাধুকরী' হারিয়ে যাবার উপন্যাস নয়। কোনও পুরস্কারই কোনও উপন্যাসকে কালজয়ী করে না, করেন শুধু পাঠক-পাঠিকারাই।

    কিছুটা একই ধাঁচে উনি নর্দান কোলফিল্ডস রেনুকুট ঘুরে এসে লিখলেন আর একটি মন-ভোলানো উপন্যাস 'পামরি', আর সাউথ ইস্টার্ন কোলফিল্ডস ঘুরে এসে ছত্তিশগড়ের মানুষদের নিয়ে লিখে ফেললেন 'পরদেশিয়া'।

    'মাধুকরী' লেখার প্রাক্কালে বুদ্ধদেব গুহ মহাশয় মধ্য প্রদেশের বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন গল্পের রসদ জোগাড় করতে। ঐসময় চলে যান ইন্দোর থেকে মান্ডু। অভিভূত হয়ে যান মান্ডুর পার্বত্য দুর্গ দেখে। লিখে ফেলেন আর একটি ঐতিহাসিক প্রেমের কাহিনী 'মান্ডুর রূপমতী'। সুলতান বাজ বাহাদুর এবং হিন্দু গাইয়ে রূপমতীর প্রেমের কাহিনী। বুদ্ধদেব গুহ নিজেই বলেছেন - আমি একজন কম্পালসিভ লেখক নই, আমি ইম্পালসিভ লেখক। লেখার মতো কোনো কিছু জমে না উঠলে লিখতে পারি না। যদিও মান্ডুর স্থানীয় লোকের মুখে নানারকম কাহিনী প্রচলিত আছে, কী করে রূপমতি এসে পড়লেন বাজ বাহাদুরের প্রাসাদে, এক কাহিনীর সাথে আরেক কাহিনীর মিল নেই। বুদ্ধদেব গুহ বোধহয় একমাত্র বাঙালি লেখক যিনি মান্ডুর রূপমতীকে নিয়ে একটি বই লিখেছেন। আর লিখেছেন আর একজন লেখক মালাথী রামচন্দ্রণ। বুদ্ধদেব গুহ বোধহয় কোনো এক জায়গায় লিখেছিলেন, লোকে নিকটবর্তী উজ্জয়িনী এবং মহেশ্বর-এ যান - কিন্তু এতো সুন্দর ঐতিহাসিক ঘটনায় ভরপুর এবং মান্ডুর দুর্গ দেখতে যান না অনেকেই।

    প্রায় ৩৫/৩৬ বছর আগে মান্ডু ঘুরে আসলেও, ওনার শেষ উপন্যাস এবং ঋজুদা কাহিনী 'জ্যোৎস্না রাতে বেতলাতে' লিখতে গিয়ে গল্প প্রসঙ্গে মান্ডুর উল্লেখ আবার করেন। একটি পাহাড়ের উপর এই দুর্গ বানানো হয়। একটি চবুতরা বানানো হয়েছিল - রুপমতি ভোরে স্নান করে চবুতরা-র উপর দাঁড়িয়ে দূরে উপত্যকার মধ্যে দিয়ে চিক চিক করে বয়ে যাওয়া নর্মদা নদীর দিকে চেয়ে সূর্য্য প্রণাম করে দিন শুরু করতেন। দুর্গের মধ্যে একটি সুইমিং পুল বানানো হয়েছিল, জল নিচ থেকে ইজিপ্সিয়ান হুইলে করে তোলা হয়েছিল। রুপমতি যখন জলক্রীড়া করতেন ওনার সখীদের সাথে, বাজে বাহাদুর তখন মগ্ন হয়ে আফগান রুবাব বাজিয়ে গান করতেন। বর্ষার মরশুমে খেলে ওঠে এই মান্ডুর পার্বত্য দুর্গর একটা নয়ন-ভোলানো সৌন্দৰ্য্য। সৌন্দর্য্য যেন খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে দু'পাটি সুন্দর দাঁত বিকশিত কোরে।

    সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের 'পালামৌ' যারা পড়েছেন, এবার ঋজুদার সাথে আর একবার পালামৌ ঘুরে আসতে পারেন 'জ্যোৎস্না রাতে বেতলাতে' পড়তে পড়তে। যেমন 'একটু উষ্ণতার জন্য' পড়তে পড়তে আমরা মাকলাক্সীগঞ্জ ঘুরে আসি তন্নতন্ন করে।

    বুদ্ধদেব গুহর বেশিরভাগ গল্প পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এবং অন্যান্য রাজ্য বিশেষ করে ঝাড়খন্ড-এর ম্যাকক্লস্কিগঞ্জ, পালামৌ এবং অন্যান্য বন-জঙ্গলকে ঘিরে। উনি নিজেই বলেছেন - প্রকৃতি আমার প্রথম প্রেম। প্রকৃতির পটভূমি আমার সমস্ত লেখার প্রধান পরিবেশ থাকবে। জঙ্গলে পশু, পাখি দেখতে পাওয়া ছাড়াও - জঙ্গল যে একটা প্রেম, একটা অনুভূতি সেটা তিনিই আমাদের দেখিয়েছেন ওনার গল্পের মাধ্যমে। বিভূতিভূষণ মহাশয়ের পরে উনিই বোধহয় একমাত্র বাঙালি লেখক যিনি জঙ্গলকে ভালোবাসতে অনুভব করতে শিখিয়েছেন আমাদেরকে। বাঙালি পাঠক-পাঠিকাদের ভারতের নানা অজানা বন-জঙ্গল, নদী-নালা, পশু-পাখির সাথে পরিচয় করিয়েছেন, অরণ্যে লালিত-পালিত সাধারণ মানুষদের ভালোবাসতে শিখিয়েছেন। ওনার নিজের ভাষাতেই - বিভূতিবাবু জঙ্গলের সৌন্দর্য্য মাধুর্য্য দুচোখ ভরে দেখেছেন, উপভোগ করেছেন, আকণ্ঠ পান করিয়েছেন সমস্ত পাঠক-পাঠিকাগণকে। আর উনি জঙ্গলের সাথে শুয়েছেন, কথা বলেছেন।

    বুদ্ধদেব গুহ ওনার 'মহুল সুখার চিঠি' বইটাতে এই-কারণেই বোধহয় লিখেছিলেন,

    'মদের নেশা, প্রেমের নেশা, কামের নেশা, টাকার নেশা, নামের নেশা, ক্ষমতার নেশা - কোনো নেশাই মাতাল করে না মানুষকে প্রকৃতির নেশার মতো।'

    'জঙ্গলের গন্ধ নাকে গেলেই, জঙ্গলের শব্দ কানে গেলেই, দু চোখ সবুজ হলুদ লাল এবং কালোর সবরকম সমাবেশে সমাহিত হলেই, সে দৌড়ে ফিরে আসবে তার আদি এবং চূড়ান্ত প্রেমে। তার প্রথম এবং শেষ প্রেমিকার কোলে। তার বুকে।'

    ওনার সময় শিকার অবৈধ হয়নি বলে উনি যেতেন শিকার করতে। বহু চরিত্র সৃষ্টি করেন শিকারের অভিজ্ঞতা থেকেই।

    রমাপদ চৌধুরী মহাশয় যখন আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয় পাতার সম্পাদক, বুদ্ধদেব গুহ ওনার সাথে দেখা করেন একটা নিজের লেখা গল্প নিয়ে। রমাপদ বাবু লেখাটা পড়েই বুঝতে পারেন, পাকা হাতের লেখা এবং অনেকদূর যাবেন। দু'-আড়াই বছর ধরে লিখছেন বুদ্ধদেব বাবু, কিন্তু সব শিকারের গল্প। ছটফট করছেন অন্য ধাতের কোনো গল্প লিখতে। রমাপদ বাবু সুযোগ দিলেন প্রেমের গল্প লিখতে। লিখে ফেললেন 'হলুদ বসন্ত'। হৈ চৈ ফেলে দিলো পাঠক জগতে। সেই ওনার শুরু প্রেমের গল্প লেখা। নিজের প্রেমের কাহিনী ওনার স্ত্রী ঋতু গুহকে নিয়ে লিখে ফেললেন 'খেলা যখন' এরপর। সমরেশ মজুমদার নিজেই বলেছেন - বুদ্ধদেব বাবুর মতো ভালোবাসার কথা এতো সহজ সরল ভাবে বোধহয় আর কেউ লেখেননি।

    গাড়োয়াল আর কুমায়ুন দেবভূমির দর্শন করে বুদ্ধদেব গুহ লিখে ফেললেন আর-একটি অন্য স্বাদের অনবদ্য উপন্যাস 'চাপরাশ'। 'প্রতিদিন' পত্রিকাতে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। পরে বই আকারে এবিপি পাবলিশার্স প্রকাশিত করে ১৯৯৮ সালে। এই উপন্যাস ধর্ম, ঈশ্বর ও অনেক বিষয়ে নতুন তাৎপর্যে উদ্ভাসিত। এই বইটি লিখতে গিয়ে বেদ, উপনিষদ, মনুসংহিতা, কোরাণ এবং নানা সাধক-সাধিকাদের অসংখ্য বইয়ের সাহায্য নিয়েছেন। ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার সময়ে কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করলেও, এই বিশাল ও গভীর উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে এক বিশিষ্ট সম্পদ।

    এরপর নিজের আত্মকথা নিয়ে লিখে ফেললেন 'সারস্বত'। অনেকেরেই পছন্দ হলো না। হয়তো নিজের মনের ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেললেন ওনার নিজের মেজাজে এবং লেখায়। ওনার প্রতি বঞ্চনা অবহেলা, যতটা মর্যাদা পাওয়ার যোগ্যতা ওনার সেটা না পাওয়া - প্রকাশ করতে গিয়ে হয়তো একটি বিশিষ্ট গোষ্ঠীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করা, অনেকের পছন্দ হয়নি হয়তো। কিন্তু এটাতো অস্বীকার করা যায়না - রমাপদ চৌধুরী যদি ওনাকে সাহিত্য জগতে নিয়ে না আসতেন, পরিচয় করিয়ে না দিতেন - বাঙালি পাঠক-পাঠিকাগণ হয়তো ওনাকে লেখক হিসেবে পেতেন-ই না। যখন বুদ্ধদেব বাবু অস্থির হয়ে পড়েছেন 'শিকারী বুদ্ধদেব গুহ' তকমা থেকে বেরিয়ে আসতে, বারবার রমাপদ বাবুকে বলছেন অন্য কিছু লিখতে দিতে শিকারের গল্প ছাড়া - রমাপদ বাবু বলছেন - পাঠককুলকে আর একটু সময় দাও 'বুদ্ধদেব গুহ' নামের সঙ্গে পরিচিত হতে। যখন সুযোগ এলো - বাঙলা পাঠক-পাঠিকাগণের জগতে আলোড়ণ পরে গেলো, বিশাল বিপুল জনপ্রিয়তা ভাগ্যে জুটে গেলো, এবং তারপর ইতিহাস। এটাতো আমাদের মানতে হবে, বুদ্ধদেব গুহকে লেখক হওয়ার পথ সৃষ্টি করে দেন রমাপদ চৌধুরী। 'কোয়েলের কাছে' প্রকাশের সকল ব্যবস্থা করেন রমাপদ চৌধুরী। বুদ্ধদেব গুহর আত্মকথা 'সারস্বত' নিয়ে নানাজনের নানা রকম অভিমত থাকতেই পারে, সেটা নিজস্ব। কিন্তু তাঁর স্পষ্টবাদিতা এবং সাহস নিয়ে কিচ্ছু বলার থাকে না।

    ২০১২ সালে সুনীল গাঙ্গুলি-র তিরোধানের পর, 'বেঙ্গল সংঘটন' - যার প্রেসিডেন্ট ছিলেন সুনীল গাঙ্গুলি নিজে, ২০১৩ সাল থেকে 'সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়' নামাঙ্কিত একটি পুরস্কার চালু করে সাথে দুই লক্ষ টাকা। গৌতম ঘোষ এখন প্রেসিডেন্ট এবং শ্রী সিমেন্ট লিমিটেড কোম্পানি পুরো খরচ-টা বহন করে। এর আগে এই পুরস্কার দেওয়া হয় - নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (২০১৩), শঙ্খ ঘোষ (২০১৪), শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (২০১৫), জয় গোস্বামী (২০১৬), প্রফুল্ল রায় (২০১৭)। গতবছর ২০১৮ সালের জন্য বুদ্ধদেব বাবুর নাম ঠিক হয়, এবং ২০১৯ সালের জন্য সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। কোভিড-এর কারণে 'বেঙ্গল সংঘটনের' লোকেরা বাড়িতে গিয়ে এই পুরস্কার দিয়ে আসেন। শোনা যায় বুদ্ধদেব বাবু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, পুরস্কারটা গ্রহণ করছেন স্রেফ সঙ্গে দুই লক্ষ টাকা আছে বলে - পুরস্কারে আর এই বয়সে আগ্রহী নন।

    বুদ্ধদেব গুহ জন্মেছেন এক অভিজাত বিত্তশালী পরিবারে। ছিলেন সফল চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, ফার্ম শুধু চালাতেনই না, দেশজুড়ে ক্লায়েন্ট ছিল তাঁর। রবীন্দ্র সংগীত শিখেছেন টেগোর স্কুল অফ মিউজিক দক্ষিণীতে, পরে রামকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং চন্ডীদাস মল-এর থেকে শেখেন ক্লাসিকাল মিউজিক আর টপ্পা গান। খুব ভালো ছবি আঁকতেন। ওনার অনেক বইয়ের প্রচ্ছদ উনি নিজেই এঁকেছেন। শিকারের কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। পছন্দের ক্লাব ক্যালকাটা ক্লাব। ভালো টেনিস আর স্কোয়াশ খেলতেন। স্কচ ছাড়া অন্য পানীয় খেতেন না বলে শোনা যায়। অত্যাধুনিক শহুরে জীবনধারা ছিল ওনার। ওনার কলম থেকেই বেরিয়ে এসেছে মন বিভোর করে রাখা এক-একটি চির-স্বরণীয় গল্প আর উপন্যাস। যোগ্যতা স্বত্বেও যে-কোন কারণেই হোক 'সাহিত্য আকাদেমি' পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হলেও, এই একক বুদ্ধদেব গুহ মহাশয়কে বাঙালি পাঠক-পাঠিকাগণ কোনোদিনই তাঁদের স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে পারবেন না।

    আর বুদ্ধদেব গুহর আসল সম্পদ ওনার বিশাল বিপুল জনপ্রিয়তা যা খুব কম লেখকের ভাগ্যে জোটে এবং সেটা যে কোনও পুরস্কারের চেয়ে অনেক দামি।

    ফুটনোট : বিগত প্রায় তিন বছর যাবৎ, বুদ্ধদেব বাবু দৃষ্টি শক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলেছিলেন - অত্যধিক ডায়াবেটিস রোগের কারণে। কিন্তু উনি লেখা বন্ধ করেননি। উনি বলে যেতেন এবং ওনার দু'জন সাহায্যকারী ওনার নারেশন নথিভুক্ত করতেন। বুদ্ধদেব বাবুর শেষ উপন্যাস 'জ্যোৎস্না রাতে বেতলাতে' এবছরের শারদীয় 'বর্তমান' পত্রিকাতে বেরিয়েছে। এটি ওনার শেষ 'ঋজুদা' কাহিনী। যারা বুদ্ধদেব বাবুর লেখা পড়তে, ঋজুদার কাহিনী পড়তে ভালোবাসেন - অবশ্যই পড়বেন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন